আমৃত্যু_ভালোবাসি_তোকে #লোখনীতে_সালমা_চৌধুরী #পর্বঃ১৩

0
1086

#আমৃত্যু_ভালোবাসি_তোকে
#লোখনীতে_সালমা_চৌধুরী
#পর্বঃ১৩
#পেইজঃSalma Chowdhury – সালমা চৌধুরী (scsalma90)

মেঘ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে মনে মনে আবির ভাইকে খুব করে বক*লো। তারপর মন শান্ত করে সিঁড়ি দিয়ে নেমে চলে গেলো মীমের রুমে। মীম এখনও নিচেই আছে৷ ২-৩ দিনের মধ্যে উপরের রুমে চলে আসবে।

মেঘ মীমের রুমের দরজায় দাঁড়াতেই মীম চোখ তুলে তাকালো। মেঘ কে দেখে উত্তে*জনায় চোখ বড় বড় করে তাকালো সহসা উঠে এলো কাছে,

মীম: আপু মাশাআল্লাহ তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে! মুক্তার মালাতে তোমার মুখ টা চকচক করছে।

মেঘ দাঁত বের করে হাসলো,

মীম তৎক্ষনাৎ ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ার থেকে শপিং ব্যাগ বের করে মেঘের হাতে দিলো। মেঘ জিনিস গুলো বের না করেই দেখার চেষ্টা করলো, মীমের জন্য আনা জিনিস মেঘের তিনভাগের এক ভাগ হবে।

মেঘ স্বাভাবিক কন্ঠে বললো,
” সবগুলো সুন্দর হয়েছে । তুই একসেট পড় তারপর আমরা ছবি তুলবো নে”

মীম ও হাসি মুখে রাজি হয়ে গেলো। মীম হালকা সাজুগুজু করে নিলো। তারপর দুই বোন সোফায় বসে ছবি তুলায় ব্যস্ত হলো । ওদের হাসির শব্দ শুনে আদিও রুম থেকে ছুটে এসেছে। আদিকে সহ ৩ ভাই বোন বেশ কিছু ছবি তুললো, তারপর ছবি দেখে খুনসুটি করতে লাগলো, কাকে কোন ছবিতে কেমন লাগছে এসব নিয়ে৷

আবির সিঁড়ি দিয়ে ব্যস্ত পায়ে নামছে। মেঘের চোখে পরতেই অকস্মাৎ হাসি থেমে গেলো মেঘের ।
মাথা নিচু করে বিড়বিড় করে বললো,

“তোরা রুমে গিয়ে পড়তে বস, আমিও রুমে চলে যায়”

আবির দ্রুত পায়ে হেঁটে ডাইনিং টেবিলের কাছে এসে মাকে জিজ্ঞেস করলো,

“আম্মু, রান্না হয়েছে?”

মালিহা খান: হ্যাঁ রান্না শেষের দিকে। খেতে দিব তোকে?

আবির: হ্যাঁ।

ঐদিকে মেঘ চুপিচুপি সিঁড়ি দিয়ে উঠতে থাকে। বিকেলেই আবির ভাই পড়া নিয়ে কথা শুনাইছে।এখনও আড্ডা দিচ্ছে দেখলে নিশ্চিত মা*ইর দিবে। এই ভ*য়ে রুমে যেতে নেয় মেঘ।
৪-৫ টা সিঁড়ি উঠলো কি না!

অকস্মাৎ আবির ডেকে উঠলো,
“মেঘ, এদিকে আয়”

আবির ভাইয়ের কথায় থমকে দাঁড়ায় মেঘ, মনে মনে আল্লাহ আল্লাহ করছে। ধীরগতিতে নিচে নেমে ডাইনিং টেবিলের কাছে আসলো।আবির পকেটে হাত দিয়ে টেবিলে হালকা ধাক্কা দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

দাঁড়ানোর স্টাইল দেখে মেঘ পুরাই ফিদা!অষ্টাদশীর মনের ভেতর ধুকপুক শুরু হয়েছে। মাথা নিচু করে দাঁড়ালো মেঘ।

আবির গম্ভীর কন্ঠে বললো,
“খেতে বস!”

মেঘ ভয়ে ভয়ে তাকিয়ে নরম স্বরে বললো,

“খিদে নেই,পরে… ”

এতটুকু বলতেই চোখ পরলো আবির ভাইয়ের চোখের দিকে,
চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে আছে।

মেঘের হাতপা কাঁপতে শুরু করেছে। আর কিছু বলার সাহস করলো না। চুপচাপ চেয়ার টেনে বসে পরলো।

আবিরও এবার টেবিল ঘুরে নিজের চেয়ার টেনে বসলো। মেঘ মাথা নিচু করে চুপচাপ বসে আছে৷
আবির একবার মেঘের দিকে তাকাচ্ছে আবার ঘাড় ঘুরিয়ে রান্নাঘরে দেখছে।

মালিহা খান আর হালিমা খান টেবিলে খাবার রাখতে ব্যস্ত হলো।

আবির একটা প্লেটে ভাত দিয়ে এগিয়ে দিলো মেঘের দিকে।

ছোট করে বললো,
“নে খা”

মেঘ কোমল হাতে প্লেট ধরতে হাত বাড়ায় কিন্তু হাত পায়ের সাথে শরীরের কাঁপাকাঁপির তীব্রতায় প্লেট পড়ে যেতে নেয়। আবির ছেড়ে দিতে নিয়েও মেঘের এ অবস্থায় আবার প্লেট ধরতে ব্যস্ত হলো।

রাগান্বিত কন্ঠে বললো,
“তোর শরীরে কতটুকু শক্তি বুঝ এখন”

হাত বাড়িয়ে মেঘের সামনে প্লেট রেখে নিজে খাওয়াতে মনোযোগ দিলো৷

আবির ভাইয়ের কথায় মেঘ মাথা নিচু করে ছোট করে ভেঙছি কাটলো, আর বিড়বিড় করে বললো,

“আপনি সামনে আসলেই তো আমার সব শক্তি বিলীন হয়ে যায়! আমি কি করবো?”

আবির তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালো মেঘের দিকে, কন্ঠ দ্বিগুণ ভারি করে বললো,

“তুই কি ভাত খাবি? নাকি থা*প্পড় খাবি?”

মেঘ আবির ভাইয়ের কথায় আঁতকে উঠে, আস্তে আস্তে খাওয়া শুর করে৷ মেঘের এই ধীরস্থির গতিতে খাওয়া দেখে আবির বেশ কয়েকবার তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়েছে কিন্তু কিছু বলছে না। নিজের খাওয়া শেষ করে বেসিন থেকে হাত ধৌয়ে এসে পুনরায় চেয়ারে বসলো৷

মেঘ তখনও আস্তে আস্তে খাচ্ছিলো কিন্তু আবির ভাইয়ের আবার বসা দেখে বুকটা কেঁ*পে উঠে, খাওয়ার গতিটা কিছুটা বাড়িয়ে দিয়েছে।

আবির বিস্ময়কর চোখে তাকিয়ে আছে অষ্টাদশীর দিকে। গলায় মুক্তার মালাতে জ্বলজ্বল করছে মুখটা । খুব মনোযোগ দিয়ে দেখছে মেঘের খাওয়া। মেঘ একপ্রকার নাকে মুখে খাবার শেষ করছে। কিন্তু শেষ হওয়ার আগেই আবির ভাই আবারও প্লেটে খাবার দিলো,

মেঘ থাপ্প*ড়ের ভয়ে বলতে চেয়েও কিছু বলতে পারছে না।

বাধ্য মেয়ের মতো চুপ করে খাচ্ছে, এদিকে আবির মেঘের দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে।

হালিমা খান আর মালিহা খান রান্নাঘরে কাজ করছিলেন কিন্তু আবিরের এমন কর্মকাণ্ডে তারাও যেনো খুশিই হয়েছেন। মেঘ বাড়ির কারো কথা শুনে না। বড় আব্বুর সামনে একটু সম্মানার্থে লক্ষী মেয়ের মতো থাকে। তাছাড়া বাবা মা, কাকামনি, কাকিয়া কারো কথায় শুনে না। তানভির এত বছর ধ*মকে একটু আধটু খাওয়াতো কিন্তু সারাদিন মুখ ভোঁ*তা করে রাখতো। তানভির সারাদিন শেষে রাতের বেলা বোনের জন্য এটা সেটা কিনে এনে বোনের রাগ ভাঙাতো। এতবছর পর, আবির যেনো দ্বিতীয় ব্যক্তি যে মেঘকে শা*সন করে, জো*র করে খাওয়ায় আর মেঘ ও যেনো বাধ্য মেয়ের মতো সবকিছু মেনে নেয়। তানভির ভাইয়ার সামনে তে*জ দেখালেও আবির ভাইয়ের সামনে মেঘ একেবারে নিশ্চল হয়ে যায়।

মেঘের দূর্দ*শা দেখে মালিহা খান রান্নাঘর থেকেই বলছেন,

“মেয়েটাকে ছেড়ে দে বাবা, আর খেতে পারছে না তো!”

আবির গম্ভীর কন্ঠে বললো,
“ও যদি ঠিকমতো খেতো তাহলে আমার এভাবে বসে থেকে ও কে খাওয়াতে হতো না। ”

কেউ আর কোনো কথা বললো না, মেঘ চুপচাপ খাওয়া শেষ করলো। মেঘের খাওয়া শেষ হওয়া মাত্রই আবির উঠে বের হয়ে গেলো বাড়ি থেকে।

মেঘ নিষ্পলক তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ দরজার দিকে। তারপর উঠে নিজের রুমে চলে গেলো। একটু রেস্ট নিয়ে পড়তে বসলো। রাত ১২ টার উপরে বাজে মেঘ পড়তেছে কিন্তু আবির ভাই এখনও আসছে না। চিন্তা লাগছে মেঘের, বারবার উঠে বারান্দায় যাচ্ছে মেঘ।

পেইজঃ Salma Chowdhury – সালমা চৌধুরী
★★★

তানভির ইদানীং খাওয়াদাওয়া বাদ দিয়ে কাজ করছে। মনোনয়নের ফলাফল ঘোষণা করবে আগামীকাল৷ কারো চোখে ঘুম নেই। দল থেকে মনোনয়ন পেয়ে গেলে আলহামদুলিল্লাহ। তারপর প্রচারণা চালাতে হবে। তারা কোনোভাবেই আজ রাতে তানভিরকে ছাড়ছিলো না, গো*পন মিটিং চলছে এমপির বাড়িতে । রাজনৈতিক মিটিং মিছিল থেকে ভাইকে আনতে বাধ্য হয়ে আবিরকেই যেতে হলো । এমপির বাড়ির হলরুমে মিটিং চলছিলো। আবির এমপির বাড়ির সামনে বাইক থামিয়ে হলরুমের দিকে যেতে নিলেই পথ আটকে দাঁড়ায় এমপির মেয়ে।

আবির চোখ গোল গোল করে তাকালো মেয়ের দিকে, রাশভারি কন্ঠে বললো,

“পথ আটকে দাঁড়িয়েছেন কেনো?”

মেয়ে হাসিমুখে উত্তর দিলো,
“আপনাকে আমার অনেক ভালো লাগে ভাইয়া! প্লিজ আপনার নাম্বার টা দিবেন?”

আবির কন্ঠ দ্বিগুণ ভারি করে বললো,
“আপনাকে তানভির বলে নি, আমি একজনকে ভালোবাসি? ”

মেয়ে এই কথা পাত্তায় দিলো না, হাসতে হাসতে উত্তর দিলো,
“আমি তো তানভির ভাইয়ার কথা বিশ্বাস করি নি। ওনি আমার সাথে মজা করছেন!”

আবির গম্ভীর কন্ঠে বললো,
“তানভির সত্যি কথা বলেছে”

মেয়ে এমনভাবে হাসছে যেনো মনে হচ্ছে আবির জোক বলছে।

আবির এবার দীর্ঘশ্বাস ফেলে রাগান্বিত কন্ঠে বললো,

“শুনো মেয়ে, এই আমিময় আবির অন্য কারো মালিকানায় বন্দি। আমার জীবনের অস্তিত্ব জুড়ে শুধু তার রাজত্ব চলে। ”

এমপির মেয়ে অবিশ্বাস্য চোখে তাকালো আবিরের দিকে। কোমল কন্ঠে বললো,
“আপনি সত্যি সত্যি কাউকে পছন্দ করেন?”

আবির সহসা বলে উঠলো,

“সে আমার পছন্দ বা ভালো লাগা নয়, সে আমার ভালোবাসা৷ আমি আমৃত্যু ভালোবাসবো তাকে”

মেয়েটার চোখ টলমল করছে,

এটা দেখে আবির এবার বিরক্তি নিয়ে বললো,

“শুনো, আমি শুধুই তোমার মোহ। দুদিন পর সব মোহ কেটে যাবে। আর যে সত্যি সত্যি তোমার জন্য আসবে সে তোমাকে কখনো অজুহাত দিবে না। তার কাছে তোমার প্রায়োরিটি থাকবে সবার প্রথমে। যেমন আমার কাছে সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি আমার প্রেয়সীর। আশা করি তুমি আমার কথাগুলো বুঝতে পেরেছো। তাই ভবিষ্যতে এমন কোনো কাজ করবা না বা এমন কোনো কথা বলবা না যে কারণে তোমার এই পা*গলামি গুলো নিয়ে আমার সিরিয়াস হতে হয়। ভালো থেকো।”

গম্ভীর কন্ঠে কথা গুলো বলেই হলরুমের দিকে পা বাড়ায় আবির।

পিছন থেকে এমপির মেয়ে ডেকে উঠলো,
“সরি ভাইয়া, আর কখনো এমন হবে না। প্লিজ আব্বুকে কিছু বলবেন না, প্লিজ!”

আবির মুচকি হাসলো, মেয়েটা যে তার কথা বুঝতে পেরেছে এতেই ভালো লাগলো আবিরের।

হলরুমে ঢুকেই সালাম দিলো এমপি কে। আবিরকে দেখে হ্যান্ডসেক করলেন এমপি।
হাসিমুখে জিজ্ঞেস করালেন,
“কেমন আছো, আবির?”

আবির স্বাভাবিক কন্ঠে বললো,
“জ্বী, আলহামদুলিল্লাহ ভালো। আপনি কেমন আছেন? ”

এমপি এবার চিন্তিত স্বরে বললেন,
“আলহামদুলিল্লাহ ভালো তবে নির্বাচন নিয়ে একটু ঝামেলায় আছি। তা তোমার কোনো দরকার ছিল?”

আবির ঠান্ডা কন্ঠে বললো,
“আসলে তানভির কে নিতে এসেছিলাম। এত রাতে কিভাবে যাবে এজন্য। ”

এমপি আবারও হাসিমুখে বললেন,
“মিটিং শেষ, খাওয়াদাওয়া করে চলে যেয়ো! ”

আবির বললো,
“আমরা খাবো না, অনেক রাত হয়ে গেছে। অন্য কোনো সময় খাবো ”

এমপিও আর জোর করলেন না। আবির তানভিরকে নিয়ে বের হলো বাড়ি থেকে। বাইকে আবিরের পিছনে চুপচাপ বসে আছে তানভির ।।

অনেকটা পথ যাওয়ার পর তানভির ভয়ে ভয়ে বললো,

“ভাইয়া এমপির মেয়ের সাথে দেখা হয়ছিলো?”

আবির বললো,
“হ্যাঁ”

তানভির আস্তে আস্তে বললো,
” তাকে কি বুঝাতে পারছো?”

আবির গম্ভীর কন্ঠে বললো,
“আমার বুঝানো তো বুঝিয়েছি কিন্তু সে কতটা বুঝেছে এটায় এখন মূল বিষয় “‘

তানভির এবার অভিযোগের স্বরে বললো,

“”আমি কি করবো বলো ভাইয়া, কোনো দরকারে এমপির সাথে দেখা করা, গুরুত্বপূর্ণ মিটিং সবকিছু এমপির বাড়িতে হয়। আমার দেখা যায় প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ২-১ বার এমপির বাড়িতে আসতেই হয়। আর এই মেয়ে যেনো বসেই থাকে কখন আমি আসবো। দেখলেই ছুটে আসে, তোমার কথা জিজ্ঞেস করে শুধু । আমি কতবার বলেছি তুমি একজনকে পছন্দ করো, বিয়ে ঠিক, মেয়ে কোনো কথায় পাত্তা দেয় না। আমি এড়িয়ে গেলেও মেয়ে পথ আটকে দাঁড়ায়। এমপির চোখে এটা পড়লে তো আমাকে কালারিং বানাবে। ভাববে মেয়ের সাথে আমার কিছু চলে। তখন তো ঝামে*লায় আমি ফাঁ*সবো তাই তোমাকে বলেছি। “”

একদমে কথাগুলো বললো তানভির।

আবির স্বাভাবিক কন্ঠে বললো,

“সমস্যা নাই মেয়ে আশা করি আর কিছু বলবে না তোকে৷ তুই তোর কাজে মনোযোগ দিস। ”

এরমধ্যে বাসায় চলে আসছে দুজন। প্রায় রাত দেড় টায় আবির ভাই বাড়িতে ঢুকলো বাইক নিয়ে পিছনে তানভির ভাইয়া। আবির ভাইকে দেখে মেঘের চিন্তিত মলিন মুখটা তৎক্ষনাৎ জ্বলজ্বল করে উঠেছে। সেই ১২ টা থেকে অপেক্ষা করছে আবির ভাইয়ের জন্য। বারান্দায় দাঁড়িয়ে আকাশের তারা গুনে শেষ করে ফেলছে মনে হয় কিন্তু আবির ভাই আসছিল না। মেঘ দীর্ঘশ্বাস ফেলে প্রফুল্ল মেজাজে দেখতে লাগলো আবির ভাইকে, বাসায় ঢুকার আগ পর্যন্ত যতটা দেখা যাচ্ছিলো৷ তারপর চুপচাপ শুয়ে ঘুমিয়ে পরলো।

★★★★

সকালে আবির রুম থেকে বের হয়ে করিডোর থেকে নিচে তাকালো ডাইনিং টেবিলে মেঘ নেই। এত রাত করে ঘুমানোর জন্য মেঘ সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারে নি। আবির মেঘের দরজায় টুকা দিলো। ২ বার শব্দ হতেই ঘুমের মধ্যে টলতে টলতে এসে দরজা খুলে দিলো মেঘ। হাত দিয়ে চোখ কচলাতে কচলাতে তাকালো, সহসা অক্ষি যুগল বিপুল হলো মেঘের,

আবির বিমোহিত লোচনে চেয়ে আছে অষ্টাদশীর মুখের পানে। সদ্য ফুটে উঠা পদ্ম ফুলের ন্যায় সুন্দর লাগছে মেঘকে। খুব করে চাইছে দৃষ্টিতে সরাতে কিন্তু পারছে না।

আবির ভাইকে দেখে মেঘের বুকের ভেতর সেই টিপটিপ আওয়াজ স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে। মেঘ মুখ ফঁ*সকে ডেকে উঠলো,

“আবির ভাই”

তৎক্ষনাৎ ঘোর কাটলো আবিরের, কিছুটা নড়েচড়ে উঠলো৷

আবির ঠান্ডা কন্ঠে শুধালো,
“এত রাতে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে ছিলি কেনো?”

আবির ভাইয়ের প্রশ্ন শুনে আঁতকে উঠে মেঘ, অকস্মাৎ চিরচেনা গতরের কাঁপা কাঁপি তীব্র হয়ে উঠে। বুকের ভেতর হাঁ*সফাঁ*স শুরু হয়েছে। হৃদস্পন্দন অনেক বেশি জোড়ালো হলো।

চিবুক নামিয়ে চাপা কন্ঠে বললো,
“রাতে ঘুম ভেঙে গেছিলো! ”

আবির ভ্রু কুঁচকে তাকালো, সহসা গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠলো,
“ঘুম ভেঙেছিল নাকি ঘুমাইতেই যাস নি, সত্যি করে বল!”

আবির ভাইয়ের সামনে দাঁড়িয়ে মিথ্যা কথা বলার সাহস অষ্টাদশীর এখনও হয়নি।

ভ*য়ে ভ*য়ে বললো,
“ঘুম আসছিলো না!”

আবির এবার ভ্রু নাচিয়ে শুধালো,
“কেনো?”

“মেঘ আর কিছু বলতে পারছে না। মনে হচ্ছে কথা আটকে আসছে গলায়। কোনো আওয়াজ বের হচ্ছে না মুখ থেকে। ”

আবির শ্বাস ঝাড়ে, ভারি স্বরে বললো,
“কি হলো?”

আবির ভাইয়ের ভারি কন্ঠে চুপসে গেলো মেঘ, বিড়বিড় করে বললো,

“আপনার জন্য! ”

আবির তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকায়, কয়েক মুহুর্ত নিরব থেকে, কন্ঠ তিনগুণ ভারি করে বললো,

“কেনো মেতেছিস ধ্বং*সের খেলায়,
মেঘ, কখনো অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পিছনে ছুটবি না। নিজের লক্ষ্য স্থির না করলে, জীবনে কখনো সফল হতে পারবি না। ”

চলবে……

📌 গল্প কপি না নিষেধ। শেয়ার করলে সালমা চৌধুরী পেইজ থেকে করবেন।

#বি.দ্র: ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। রিচেক করতে পারি নি। ভুল গুলো বুঝে পড়বেন প্লিজ। আমি গতকাল পরীক্ষা দিয়ে নির্বাচনের জন্য বাড়িতে আসছি। ব্যস্ততার মধ্যে পার্ট লিখার সময় ই পাচ্ছিলাম না। পড়ে জানাবেন কেমন হয়েছে🥲।ধন্যবাদ।
পেইজ: Salma Chowdhury

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here