খোলা_জানালার_দক্ষিণে #পর্ব_২২ #লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

0
455

#খোলা_জানালার_দক্ষিণে
#পর্ব_২২
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

ভারাক্রান্ত হৃদয়, বিষন্ন মন, ছন্নছাড়া মস্তিষ্ক নিয়ে মেহেভীন নিজের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুছিয়ে নিচ্ছে। যে বাড়িতে তার মতামতের গুরুত্ব নেই। সেই বাড়ির গুরুত্বও তার কাছে নেই। কালকে সকালেই এই বাড়ি ছাড়বে সে। অশান্ত মস্তিষ্ককে শান্ত করার জন্য পরিবারের কাছে এসেছিল সে। কিন্তু ঘরের লোক যদি পরের মতো আচারের করে। তখন বেঁচে থাকা মুসকিল হয়ে যায়। মেহেভীনকে বিষাদগ্রস্ত হয়ে কিছু ভাবতে দেখে রাইমা বেগম মেয়ের পাশে বসলেন। মায়ের চোখের ভাষা বুঝতে বেগ পেতে হলো না মেহেভীনের।

–আমি তোকে এখন যা বলব একটা কথাও বলনি না। শুধু চুপচাপ শুনে যাবি। ভেতরটা যে বহু বছর ধরে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে আছে রে মা। শরীরের আঘাত মানুষ দেখতে পায়। কিন্তু হৃদয়ের আঘাত কেউ দেখতে পায় না। বহু আগেই আমার হৃদয়টা রক্তাক্ত করে দিয়েছে তোর বাবা। তুই তোর যে বাবাকে চিনিস। তার ভেতরের রুপ বাহিরে আসলে সহ্য করতে পারবি না৷ নিজের ভালো চাস তো এখানে আসিস না। মায়ের মন তো তাই মেয়ের জন্য বুকটা খাঁ খাঁ করে। তাই বারবার তোকে এখানে আসতে বলি। কিন্তু সময় যত সামনের দিকে আগাচ্ছে। তোর জন্য পরিস্থিতি ততই জটিল হচ্ছে। তুই বুদ্ধিমান মেয়ে আশা করি কি বোঝাতে চেয়েছি। সেটা তুই বুঝবি। আগের সময় আর এখানকার সময়ের অনেক তফাৎ। মেহেভীন হতবাক হয়ে বসে রইল। মায়ের এমন জটিল কথা তার মস্তিষ্কে ঢুকলো না। সে নিষ্পলক দৃষ্টিতে মায়ের দিকে দৃষ্টিপাত করে আছে। মেয়েকে ধোঁয়াশার মধ্যে রেখে রাইমা বেগম চলে গেলেন।

সূর্যি মামা বিদায় নিয়েছে কিছুক্ষণ হলো। ধরনীর বুকে প্রাকৃতিক নিয়মে আঁধার নেমে এসেছে। নির্বাচনের সময় হওয়ায় পাড়ার মোড়ে আড্ডা নিত্যদিনের তুলনায় একটু বেশিই বেড়েছে। কথায় আছে না অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো না৷ আড্ডার মাঝেই দুই দলের ঝামেলা লেগে গেল। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে ঝামেলা গুরুতর হয়ে উঠল। মুখের ঝামেলা মা’রা’মা’রিতে পরিনত হলো। এক দল আরেক দলকে বেদম পে’টা’চ্ছি’ল। আশেপাশের মানুষ ঝামেলা এড়াতে দ্রুত স্থান ত্যাগ করল। কেউ কেউ ভয়ে দোকান বন্ধ করে ভেতরের মধ্যে বসে থাকলো। কিছুক্ষণের মধ্যে এক দলের এক লোকের র’ক্তা’ক্ত দেহ মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। সেটা দেখে বিরোধী দল দিগুন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলো। কয়েকজনকে ফোন দিয়ে প্রয়োজনীয় অ’স্ত্র নিয়ে আসতে বলা হলো। মুহুর্তের মাঝে গু’লা’গু’লি’র শব্দ কর্ণকুহরে ভেসে আসলো। মানুষ ভয়ে জড়সড় হয়ে বাসার মধ্যে থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে সবকিছু দেখছে। প্রাণের ভয়ে কেউ বাহিরে বের হচ্ছে না৷ এসব ঝামেলার কথা তাইয়ানের কর্ণে আসতেই তাইয়ান হন্তদন্ত হয়ে মুনতাসিমের কাছে গেল। উত্তেজিত হয়ে বলল,

–স্যার পাড়ার মোড়ে আমাদের লোক আর বিরোধী দলের লোকের মধ্যে বিশাল ঝামেলা হয়ে গিয়েছে। বিষয়টা গু’লা’গু’লিতে পরিনত হয়েছে। পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা আসবে আসতে একটু সময় লাগবে। তাইয়ানের কথায় মুনতাসিমের ক্রোধে মস্তিষ্ক টগবগ করে উঠল। কোনো কথা না বলে সোজা কক্ষ থেকে হনহন করে বের হয়ে গেল। তাইয়ান হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হয়ে মুনতাসিমকে বলে দিয়েছে। এখন মুনতাসিম নিজের জীবনের পরোয়া না করে, ওদেরকে বাঁচাতে চলে যাবে। তাইয়ান চিন্তিত হয়ে বলল,

–স্যার আপনার ওখানে যাওয়া উচিৎ হবে না। পুলিশ আসলে আমরা পুলিশের সহায়তায় নিয়ে যাব। এভাবে নিজের বিপদ ডেকে নিয়ে আসবেন না। আপনাকে মা’রা’র জন্য সবাই পা’গ’লা কু’কু’র হয়ে আছে। হতেও পারে ওরা ইচ্ছে করে এমন করছে। আপনাকে বাহিরে বের করে আপনার ক্ষতি করে দিবে। তাইয়ানের কথায় মুনতাসিমের চোয়াল শক্ত হয়ে এল। সে গর্জন করে উঠল,

–তুমি আমাকে মৃত্যুর ভয় দেখাচ্ছ তাইয়ান। নিজের লোকের বিপদ জেনেও ঘরে বসে থাকার মতো কাপুরষ আমি না। আমার দেহে যতক্ষণ প্রাণ আছে ততক্ষণ আমি সবাইকে নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে আগলে রাখার চেষ্টা করব। তুমি আমাকে এত দেরি করে খবরটা দিলে কেন? না জানি কতজনের ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। ওদের কাউকে আমি ছাড়ব না। মুনতাসিম ফুয়াদ মৃ’ত্যু’র ভয় করে না। মৃ’ত্যু হবে জেনেও আমি স্বেচ্ছায় মৃ’ত্যু’র দিকে অগ্রসর হই।

–আপনি কারো কথা না ভাবতে পারেন। আপনি আপনার পরিবারের কথা ভাবুন। আপনি আপনার পরিবারের ওপরে কতবড় ছাদ হয়ে আছেন। আপনি সরে গেলে আপনার পরিবারের ওপর কিরূপ ঝড় বয়ে আসবে৷ সেটা সম্পর্কে আপনি আমার চেয়েও অধিক অবগত আছেন।

–তুমি স্বার্থপরের মতো আমার কথা কেন ভাবছ! আমি যেমন কারো ছেলে কারো ভাই। তারাও কারো স্বামী, বাবা, ভাই। টাকা দিলেই কি তার জীবন ফিরে পাওয়া যাবে! আমার সামনে অন্তত এমন স্বার্থরের মতো কথা তুমি বলবে না। ফলাফল ভালো হবে না। কথা গুলো বলেই মুনতাসিম বেড়িয়ে গেল। মুনতাসিমের সুরক্ষার জন্য কয়েকজন গার্ড তার পেছনে পেছনে ছুটলো।

কালো পিচ ঢালাই করা রাস্তা রক্তের স্রোতে ভেসে যাচ্ছে। ছয় সাতজন মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। মুনতাসিমকে দেখে কয়েকজন একটু দুর্বল হয়ে পড়লে বিরোধী দল এই সুযোগ টাই লুফে নিতে চাইলো। মুনতাসিম শান্ত মস্তিষ্কে কথা বলতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা শুনতে চাইনি৷ মুনতাসিমকে রক্ষা করার জন্য কয়েকজন গার্ড মুনতাসীমের সামনে এসে দাড়ালো। প্রত্যেক জনের হাতে বন্দুক। মুনতাসিমকে আঘাত করার সাথে সাথে বিপরীত পক্ষের মানুষ গুলো ছিন্ন বিছিন্ন হয়ে যাবে। তারাও কয়েকজন বন্দুক তাদের দিকে তাক করে আছে। তবে তাদের ভেতরে ভয় ঢুকে গিয়েছে। হালক করে হাত কাঁপছিল। তখনই পুলিশ এসে সবাইকে পেছনে থেকে ধরে ফেলে। মুনতাসিম যেন এই সময়ের জন্যই অপেক্ষা করছিল। কিছু সময়ের জন্য হয়তো মা’রা’মা’রি বন্ধ রাখতে পারলে, কয়টা প্রাণ বেঁচে যাবে। কিছু আঘাত কমে যাবে। পুলিশ এসে সবাইকে গাড়িতে তুলল। ঠিক এমন সময় মুনতাসিমের কর্ণের পাশ কাটিয়ে একটা গু’লি গিয়ে গার্ডের হাতে লাগলো। মুনতাসিম দ্রুত পেছনের দিকে ঘুরে তাকালো৷ গাছের আড়াল থেকে খুব সাবধানতার সাথে মুনতাসিমকে গু’লি করা হয়েছে। যে গার্ডের হাতে গুলি লাগছে। সেই গার্ড হৃদয়বিদারক চিৎকার দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। মুনতাসিম আগেই এম্বুলেন্সকে ফোন দিয়ে আসতে বলেছিল। নিজের প্রাণ সংশয়ের কথা চিন্তা না করে, দ্রুত সবাইকে হসপিটালে পৌঁছে দেওয়ার জন্য অস্থির হয়ে উঠল। সে কে? যে এত যত্ন করে মুনতাসিমকে মারতে চাইলো। সেটা না হয় পরেই জানা যাবে। আগে তার কাছের মানুষ গুলোকে চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন।

সারাদিন খাওয়া হয়নি মেহেভীনের। তার চেনা বাবা কিভাবে এতটা অচেনা হয়ে গেল। সেটা মানতেই মেহেভীনের ভিষণ কষ্ট হচ্ছে। সে প্রভাতের আলো ফুটতেই বাড়ি ছেড়েছে৷ ঐ বাড়িতে থাকলে হয়তো দম বন্ধ হয়ে মা’রা যেত। তার বাবা তাকে মুখের ওপরে বাসায় যেতে নিষেধ করেছে। মনে মনে শপথ গ্রহণ করল৷ সে কিছুতেই এই বাড়িতে আসবে না। যেদিন তার বাবা আবার আগের মতো হয়ে যাবে। সেদিন না হয় আবার ফিরবে সেই চিরচেনা গৃহে। মনটা কেমন হাহাকার করে উঠল। কাল রাতে মুনতাসিমের সাথে কথা হয়নি। কথা হলে বোধহয় একটু শান্ত পেত। কিন্তু মুনতাসিম তাকে কালকের সব ঘটনা জানিয়েছে। এতকিছু জানার পরে-ও মানুষটার সাথে কঠিন হতে পারেনি মেহেভীন। মানুষটাকে সামলে নেওয়ার সময় দিয়েছে। মাথাটা ভিষণ ঘুরছে মেহেভীনের। শরীর প্রচন্ড দুর্বল লাগছে৷ হয়তো না খাওয়ার কারনে শরীরটা নিস্তেজ হয়ে গিয়েছে। ড্রাইভারকে একটা দোকান দেখে দাঁড়াতে বলল মেহেভীন। কিছু খাবার কিনে আবার উঠে বসলো। পেটের আর কি দোষ রাগ করে শুধু শুধু নিজের রুহুকে কষ্ট দেওয়ার কোনো মানে হয় না। মনের দোষ পেটের ওপরে চাপিয়ে দিয়ে কতদিন চলবে? তার থেকে ভালো খেয়ে শান্ত মস্তিষ্কে চুপ থাকা৷

ক্লান্ত শরীর নিয়ে মেহেভীন নিজের বাসায় ফিরলো। রুপা মেহেভীনের মুখশ্রীর দিকে তাকিয়ে হতভম্ব হয়ে গেল। বাড়ি থেকে গেল এক হাসোজ্জল মুখশ্রী। আর বাসায় ফিরলো এক বিষাদগ্রস্ত মুখশ্রী। ব্যাপারটা রুপার মোটেও হজম হলো না। সে মেহেভীনকে কিছু বলার জন্য প্রস্তুত হতেই মেহেভীন দ্রুত নিজের কক্ষে চলে গেল।

সময় কারো জন্য থেমে থাকে না। জীবন আগের ন্যায় চলতে শুরু করেছে। মাঝেমধ্যে মনটা শুধু থেমে যায়। বাবা-মায়ের কথা ভিষণ মনে পড়ে। যার হাত ধরে হাঁটতে শিখেছে। যার মুখ থেকে শব্দ শিখেছে। সেই বাবা-মার থেকে দূরে থাকা কতটা কষ্টকর। তা একমাত্র পিতামাতাহীন সন্তানই অনুভব করতে পারে। কিন্তু মেহেভীনের বাবা-মা থেকে-ও মেহেভীন সেই অনুভূতি অনুভব করছে। সাতদিন ধরে মেহেভীনের বাবা মেহেভীনকে বাসায় যেতে বলছে। মেহেভীন মুখের ওপরে না করে দিয়েছে। তবুও শেষ বারের মতো তিনি কথা বলতে চান৷ মেহেভীন না করতে পারেনি। মুনতাসিমও মেহেভীনকে অনুরোধ করেছিল। ভোটের দিন সে যেন মুনতাসিমের পাশে থাকে। কিন্তু মেহেভীন ছুটি পাচ্ছিল না দেখে যেতে পারছিল না। বৃহস্পতিবার কাজ করে রাতে যাবে। অবশেষে কাঙ্খিত সময় চলে এসেছে। মেহেভীন আঁধারে আচ্ছন্ন বিষন্ন রাতের সাথে তাল মিলিয়ে বিষাদগ্রস্ত মন নিয়ে বাড়ির দিকে ছুটে চলছে। মনটা ভিষণ কু ডাকছে বারবার ঘুরে যেতে ইচ্ছে করছে। তবুও মনের বিরুদ্ধে যেতে হচ্ছে। রাতের শেষ প্রহরে মেহেভীন বাসায় গিয়ে পৌঁছালো। মেয়ের ক্লান্ত মুখের দিকে তাকিয়ে মায়ের হৃদয় কেঁপে উঠল। মেহেভীন কোনো কথা না বলে ফ্রেশ হয়ে নিল। মেহেভীনের মা মেহেভীনের জন্য খাবার নিয়ে বসেছিল। মেহেভীন আসতেই মেহেভীনকে খাইয়ে দিল। মেহেভীন আবারও মাকে নতুন ভাবে জানলো। যে মা ধরণীর বুকে আঁধার নামার কিছুক্ষণ পরেই নিদ্রা চলে যায়। সেই মা সারারাত মেয়ের জন্য জেগে পার করে দিল। মনের অজান্তেই মেহেভীনের আঁখিযুগলে অশ্রুকণা এসে জমা হলো। তা দেখে রাইমা বেগম মেহেভীনের ললাটে চুমু খেয়ে মেয়েকে বুকে আগলে নিল। কিছুক্ষণ পরে মেহেভীন ঘুমিয়ে পড়লে রাইমা বেগম চলে গেল।

পরের দিন মেহেভীনের বারোটায় ঘুম ভেঙে গেল। তা দেখে মেহেভীনের চক্ষু চড়কগাছে উঠে গেল। সে দ্রুত উঠে ফ্রেশ হয়ে ফোন হাতে নিল। আজকের দিনটা মুনতাসিম তার পাশে থাকতে বলেছিল। তাকে ভরসা জোগাতে বলেছিল। কিন্তু অর্ধেক বেলা ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিল। ভেতরে ভেতরে ভিষণ অপরাধ বোধ কাজ করছিল তার। ফোন হাতে নিতেই দেখলো মুনতাসিম তাকে বিশ বারের মতো ফোন করেছে। পঞ্চাশ টার মতো মেসেজ দিয়েছে। সে বিলম্ব করল না দ্রুত মুনতাসিমকে ফোন দিল। মুনতাসিম ভোট কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে কয়েকজনের সাথে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করছিল। সে দ্রুত মেহেভীনের কল কেটে দিয়ে মেসেজ দিল। ” ব্যস্ত আছি অবসর হয়ে ফোন করছি। মেসেজটা দেখে মেহেভীনের মুখশ্রীতে বিষাদ এসে ধরা দিল। কেন পারলো না মানুষটাকে একটু শান্তি দিতে, প্রিয় মানুষকে শান্তি না দিতে পারলে ভেতরটা বুঝি এভাবে পোড়ায়। মেহেভীন ভিষণ করে বুঝতে পারছে। অজানা কারনে ভেতরটা অস্থির হয়ে উঠছে। মেহেভীন দুই ঘন্টা ধরে ফোনের কাছে বসে আছে। মেহেভীনের বাবা ভোট দিতে গিয়েছে সেই সকালে এখনো বাড়ি ফিরেনি। যাবার সময় মেহেভীনকে বাসা থেকে বের হতে নিষেধ করেছে। অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে মুনতাসিমের ফোন আসলো। ফোন কর্ণে ধরতেই গম্ভীর কণ্ঠস্বর কর্ণকুহরে এসে পৌঁছাল।

–আপনি সারাদিন কোথায় ছিলেন? একটা দিন আপনাকে আমার পাশে থাকতে বলেছিলাম। সেটাও পারলেন না। এখন কেন ফোন করেছেন? আপনার আমার সাথে কথা বলতে হবে না। আপনি যেখানে ছিলেন। সেখানে যান৷

–আপনার জন্য সারারাত জার্নি করে বাসায় আসলাম। ভোরের দিকে ঘুমিয়েছি। বুঝতে পারিনি এতটা বেলা হয়ে যাবে। আপনি অনুগ্রহ করে রাগ করবেন না। আমি আপনার কথা রাখতে পারিনি। তার জন্য আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। আপনার মতো শক্তপোক্ত মানুষের এমন দুর্বল হলে চলবে।

–আমার ভিষণ ভয় করছে মেহেভীন।

–জনগণ কি জানে তারা একটা ভীতু ছেলেকে তাদের নেতা হিসবে গ্রহণ করছে। আপনি আমাকে শিখিয়েছেন। কিভাবে দুঃসময়ে শান্ত মস্তিষ্কে থাকতে হয়। তাহলে আপনি কেন এতটা অস্থির হচ্ছেন। চিন্তা করে লাভ নেই। আল্লাহ ভাগ্যে যা রাখছে তাই হবে। ভাগ্যের লিখন কেউ খন্ডাতে পারবে না৷ এভাবে দুশ্চিন্তা করে নিজের মনকে দুর্বল করবেন না। আমি জানি এমন সময় চিন্তা করতে হয় না। তারা নিজ দায়িত্বে এসে হাজির হয়ে যায়। আমাদের উচিৎ যথাসম্ভব চিন্তাকে উপেক্ষা করা। জনগণ আপনাকে ভিষণ ভালোবাসে। আর জনগণ যাকে ভালোবাসে সেই মানুষটা কিছুতেই হেরে যেতে পারে না। এভাবে আপনি অস্থির হবেন না। আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন। তিনি উত্তম পরিকল্পনা কারী। আপনি যতটুকু ভেবে রেখেছেন। আল্লাহ তায়ালা তার থেকে দশগুন আপনার জন্য ভেবে রেখেছে। এবার একটু শান্ত হোন মন্ত্রী সাহেব। মেহেভীনের কথায় মুনতাসিমের উথাল-পাতাল করা হৃদয়টা শান্ত নদী হয়ে গেল। এই জন্যই বুঝি প্রিয় মানুষটাকে মন ভালো করার ঔষধ বলে উপাধি দেওয়া হয়েছিল। এক নিমিষেই মেয়েটা কেমন তার অশান্ত হৃদয়কে শান্ত করে দিল। ক্ষণিকের জন্য সমস্ত দুশ্চিন্তা দূরে পালিয়ে গেল। মস্তিস্ক সচল হয়ে গেল এই মুহুর্তে মেহেভীনকে সে কি বলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে। সেই ভাষা জানা নেই মুনতাসিমের। মনটা ডেকে বলছে। আপনাকে আমার লাগবেই লাগবে।

চলবে…..

(পর্বটা ভিষণ এলোমেলো হয়েছে। রাইটিং ব্ল’কে’র মতো ফা’ল’তু জিনিস দু’টো নেই। ভুল হলে মানিয়ে নিবেন। আর বলে দিবেন আমি শুধরে নিব ইনশাআল্লাহ। সবাই রেসপন্স করবেন। ১০০০ রেসপন্স হলে পরবর্তী পর্ব কালকে পাবেন। পেজের রিচ কমে গিয়েছে। সবাই বেশি বেশি রেসপন্স করবেন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here