খোলা_জানালার_দক্ষিণে #পর্ব_২৩ #লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

0
264

#খোলা_জানালার_দক্ষিণে
#পর্ব_২৩
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে রৌদ্রের প্রখরতা বেড়ে চলেছে। মেহেভীন ফ্রেশ এসে খেতে বসেছিল। রাইমা বেগম গম্ভীর হয়ে বসে আছেন। মেহেভীন মাকে প্রশ্ন করলে উত্তর আসে না। মুখের সামনে খাবার রেখে বসে থাকা যায় না। মেহেভীন বিলম্ব করল না। দ্রুত খাবার খেতে শুরু করল। খাবার খাওয়া শেষ হয়ে গেলে রাইমা বেগম গম্ভীর কণ্ঠে বলল,

–তোর লজ্জা শরম বলতে কিছু নেই। এতটা নির্লজ্জ হয়ে গেলি কি করে! নাকি সরকার তোকে চলার মতো অর্থ প্রদান করে না। কাল রাতে দূর থেকে জার্নি করে এসেছিস। তাই রাতে কথা গুলো বলতে আমার বিবেকে বাঁধা দিয়েছে। না হলে কালকে দরজা থেকে বিদায় করতাম৷ তোর মতো আত্মসম্মান বিহীন আমার মেয়ে ভাবতেই বিরক্ত লাগছে। যে চাকরি করে খেতে পাস না। সেই চাকরি ছেড়ে দে। চাকরি করেও যদি খাওয়ার জন্য বাবার বাসায় আসতে হয়। তাহলে এখানেই পড়ে থেকে মেরুদণ্ডহীনতার পরিচয় দে। বেহায়া মেয়ে মানুষ কোথাকার। মায়ের কথা মেহেভীন বিস্ময় নয়নে মায়ের দিকে তাকিয়ে আছে। পৃথিবীতে কথার আঘাত বড়ো মারাত্মক জিনিস। ভেতরটা চূর্ণবিচূর্ণ করে দিয়ে যায়। মায়ের কথা গুলো মেনে নিতে পারল না মেহেভীন।

–তুমি আমার সাথে এভাবে কথা বলছ কেন আম্মু? কতটুকু খেয়েছি তোমাদের? আমাকে একটা টাকার হিসাব দিও। আমি তোমাদের সব টাকা ফিরিয়ে দিব। তবুও খাবারের খোঁটা দিও না। ভেতরটা জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যায়। মেহেভীনের কথায় জ্বলে উঠল রাইমা বেগম। আগের চেয়ে দিগুন ক্রোধ নিয়ে বলল,

–তোকে আমি এখানে আসতে কতবার নিষেধ করেছিলাম। তবুও বাবা ডাকলো আর বেহায়ার মতো চলে আসলি। তোর কি ভেতর লজ্জা টুকুও নেই। মায়ের আদেশ পালন করতে পারিস না। তোর মতো মেয়ে থাকার থেকে না থাকা অনেক ভালো। তুই আমাকে টাকার গরম দেখাস। ভুলে যাস না প্রাপ্তির কথা শুনে পালিয়েছিলি। তোর এই মা তোকে সব বিপদ থেকে আগলে রেখেছে। এই যে চাকরি করে খাচ্ছিস। এর পেছনে আমার একটা বড় অবদান আছে। আমি চেয়েছিলাম। তুই যেন অনেক বড় হোস। তোর যেন কারো পায়ের কাছে আসতে না হয়। তুই নিজের সুন্দর ব্যক্তিত্ব নিয়ে বাঁচতে পারিস। সেজন্য আমি তোকে সব রকম সাহায্য করেছি। আর তুই মুর্খতার পরিচয় দিয়ে দিলি। এখানে কেন এসেছিস তুই?

–আমি আসতে চাইনি আম্মু। আব্বু আমাকে অনেক বার ফোন দিয়েছে। তুমি জানো বাবা-মা মেয়েদের একটা আবেগের জায়গা। যেখানে তারা কঠিন অপরাধ করার পরে একটু ভালোবেসে দিলেই মেয়েরা সব ভুলে যায়। বাবার আদুরে ডাক আমি অপেক্ষা করতে পারিনি। যে বাবা জন্ম দিয়েছে তার সাথে কিভাবে বেয়াদবি করতে পারি বলো?

–আমি ঠান্ডা মাথায় তোকে কিছু কথা বলি। আমার কথা গুলো মনোযোগ দিয়ে শুনবি। বাবা নামটা ছোট হলে-ও এর দায়িত্ব অনেক বড়। বাবা আমাদের আবেগের জায়গা। বাবা নামটা শুনলেই প্রতিটি মেয়ের হৃদয়ে একটা স্নিগ্ধ অনুভূতি কাজ করে। কিন্তু তোর বাবা সেই আবেগের জায়গা নয়। সেটা তুই আজই ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারবি। তোর বাবা সাপের চেয়েও বেশি বিষাক্ত। তার স্বার্থে আঘাত লাগলে রঙ বদলাতে এক সেকেন্ড সময় নিবে না। এখনো সময় আছে যদি নিজের ভালো চাস। তাহলে এখনই এই বাসা থেকে বেড়িয়ে যা। আমি চাইনা তুই একটা তিক্ত সত্যের মুখোমুখি হোস।

–সত্য কোনোদিন চাপা থাকে না আম্মু। তোমাকে আজ বলতেই হবে। তুমি আমার সাথে এত ধোঁয়াশা রেখে কেন কথা বলো। আমি সবকিছু জানতে চাই। আমার আব্বু কি করেছে। নিজের বাবা হয়ে কেউ কখনো নিজের মেয়ের ক্ষতি করে। ধরনীর বুকে মেয়েরা সবচেয়ে নিরাপদ তার বাবার কাছে। সেই বাবা কি করে কারো ক্ষতির কারন হতে পারে!

–তোর বাবা আরিয়ানের সাথে তোর বিয়ে দেওয়ার জন্য তোকে এখানে নিয়ে এসেছে। আরিয়ানকে বিয়ে করে সংসার করার এজন্য এখানে এসেছিস তুই! আমার কোনো আপত্তি নেই। তুই যদি আরিয়ানের সাথে সংসার করে খেতে পারিস। তাহলে আমার নিশ্চুপ থাকাই ভালো।

–তুমি চিন্তা করো না আম্মু। আব্বু এত সহজে আমাকে আরিয়ান ভাইয়ের সাথে বিয়ে দিতে পারবে না। এসব কথা তুমি আমাকে আগে জানালে, আমি কখনো এখানে আসতাম না৷ এসে যখন পড়েছি আব্বুর সাথে লড়াই করেই বের হয়ে যাব।

–তুই যতটা সহজ ভাবে তোর আব্বুকে নিচ্ছিস। তার ভেতরের রুপ বেড়িয়ে আসলে, তোর রুহু পর্যন্ত কেঁপে উঠবে। মেহেভীন চিন্তায় পড়ে গেল। শত্রুর সাথে লড়াই করে জেতা যায়। কিন্তু ঘরের লোকের সাথে লড়াই করে, ঘরের লোককে সে কিভাবে আহত করবে!

–তুমি আমাকে এতদিন ফোন দিয়ে জানাওনি কেন?

–সুযোগ পেলে অবশ্যই জানাতাম। মেহেভীন কিছু ভাবতে শুরু করল। তখনই তাহিয়ার আগমন। তাহিয়াকে দেখেই বিরক্তিতে মুখশ্রী কুঁচকে এল। তাহিয়া রাইমা বেগমকে সালাম দিয়ে মেহেভীনের পাশে গিয়ে দাঁড়াল। রাইমা বেগম তাহিয়াকে দেখে গম্ভীর মুখশ্রী করে নিজের কক্ষ চলে গেলেন। এই কয়দিনে মেয়েটাকে হারে হারে চিনেছে। সে-ই মেহেভীনের বাবার মাথা খেয়েছে। নিজের মেয়ে এমনিতেই চোখের বি’ষ হয়েছিল। সময়ের সাথে আরো একটু বি’ষ যোগ করে ভয়ংকর রকমের বিষাক্ত করে তুলছে। তাহিয়া হাসোজ্জল মুখশ্রী করে বলল,

–আপনি আমার কাছে প্রমাণ চেয়েছিলেন না৷ আমি সব প্রমাণ জোগাড় করেছি। সেই কবে থেকে আপনার জন্য অপেক্ষা করছি। আপনার আব্বু আম্মু জানে কতদিন আপনাদের বাসায় এসেছি। কথা গুলো বলেই কিছু কাগজ মেহেভীনের হাতে ধরিয়ে দিল। মেহেভীন কাগজ গুলো পর্যবেক্ষণ করল। এগুলো দেখার পরে যে কারো বিশ্বাস হবে না। যে তাহিয়া মিথ্যা কথা বলছে। নিপুণ দক্ষ হাতে মুনতাসিমের সাইন দেখেই বুঝতে পারলো। তাহিয়া সত্যি কথা বলছে। সে জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়লো। বিশাল আকাশটা যেন তার মস্তকে এসে পড়েছে। তাহিয়া তৃপ্তির হাসি হেসে বলল,

–এরপরেও বলবেন আমি মিথ্যা কথা বলছি।

–আমার ওপরে ভরসা রাখুন। আমি আজকের পর থেকে আপনার স্বামীর সাথে কথা বলব না। তাহিয়া কাগজ গুলো মেহেভীনের হাত নিয়ে চলে গেল। মেহেভীনের সবকিছু এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল। তাহিয়ার হাতের সব কাগজ দেখে সর্ব শান্ত হয়ে গেল। দৌড়ে নিজের কক্ষে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিল। সারারাত আর দরজা খুলেনি। তাকে সবাই ডাকতে গেলে বলছে সবার সাথে সকালে কথা বলবে। সবাই মেহেভীনের কথা মেনে নিয়েছে। এখন মেহেভীনকে রাগানো উচিৎ হবে না। সারারাত নির্ঘুম কাটিয়ে দিয়েছে মেহেভীন। মুনতাসিম বিপুল পরিমাণ ভোট পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। চারদিকে ঈদ ঈদ আমেজ লেগে গিয়েছে। সমস্ত এলাকা জুড়ে মুনতাসিমের স্লোগান দিয়ে যাচ্ছে। রাতভর আনন্দ উল্লাস মেতে উঠেছিল এলাকাবাসী। এত আনন্দের মাঝে নিজের প্রেয়সীর জন্য ভেতরটা ছটফট করেছে। শতবার ফোন দিয়েও মেহেভীনকে পাওয়া যায়নি। অজানা কষ্টে বুকটা হাহাকার করে উঠছে। হঠাৎ মেয়েটার কি হলো ভাবতে ভাবতে রজনী পার করল মুনতাসিম৷ সকালে হলেই মেহেভীনের বাসায় চলে আসবে। মেয়েটাকে ছাড়া একটা মুহুর্ত সে শান্তিতে থাকতে পারে না। সবকিছু জেনেও মেয়েটা কেন তাকে এভাবে পোড়াচ্ছে। সেসব ভেবে পায় না মুনতাসিম।

ভোরের আজান কর্ণকুহরে আসতেই মেহেভীন উঠে বসলো। আঁখিযুগল রক্তিম বর্ন ধারণ করেছে। আঁখিযুগল দিয়ে গড়িয়ে পড়া অশ্রুকণা গুলো পরম যত্নে মুছে নিল। অজু করে এসে নামাজে দাঁড়িয়ে গেল। এতদিনের জমিয়ে রাখা সব শক্তি দুর্বল হয়ে পড়েছে। আঁখিযুগল দিয়ে অনবরত অশ্রু গড়িয়ে যাচ্ছে। নিজের প্রিয় মানুষদের নতুন নতুন রুপ সে সহ্য করতে পারছে না। সব সময় তার জীবন থেকেই সবকিছু হারিয়ে যায় কেন? সে কি কারো ভালোবাসা পাবার যোগ্যতা রাখে না। তবে কেন বারবার সবার ছলনার স্বীকার হয়। দীর্ঘ সময় কান্না করার ফলে মনটা হালকা লাগছে বেশ৷ নিজের কষ্ট হলে নিজেই নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার অনুভূতিটা ভিষণ সুন্দর। মেহেভীনের চেহারায় মলিনতা এসে ধরা দিয়েছে। মেয়ের এহেন বিধ্বস্ত চেহারা দেখলে যেকোনো বাবার রুহু কেঁপে উঠবে। কিন্তু ফরিদ রহমান মেয়ের মনের অবস্থা বুঝবে? মেহেভীনের ভাবনার মাঝেই দরজায় কেউ কড়া নাড়লো। মেহেভীন দরজা খুলে ফরিদ রহমানকে দেখে চমকে গেলে। তার বাবা সচরাচর এত সকালে তার কাছে আসে না। তবে আজ হঠাৎ কি মনে করে আসলেন? মেয়ের বিধস্ত অবস্থা দেখে রাইমা বেগমের ভেতরটা হুঁ হুঁ করে উঠল। ফরিদ রহমান মিষ্টি হেসে মেয়ের হাত ধরে ড্রয়িং রুমে নিয়ে আসলো। মেহেভীন বিস্মিত কণ্ঠে বলল,

–এত সকালে ডেকে নিয়ে আসার কারন কি আব্বু?

–আমি তোর সাথে আরিয়ানের বিয়ে দিব। রাতে দরজা খুলিসনি। কাজী সাহেব রাগ করে চলে গিয়েছে। তাই ভোরের আজান শেষ হবার সাথে সাথে নামাজ শেষ করে, সবাই মিলে তোর জন্য অপেক্ষা করছি। এবার আর আমাকে হতাশ করিস না মা। তুই আরিয়ানকে বিয়ে করে ফেল৷ তাহলে জীবনে তুইও সুখী হবি। আর আমিও তোর সুখ দেখে দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করতে পারব। মেহেভীনের বিষণ্ণতা মুহুর্তের মাঝে কেটে গেল। সে রাগান্বিত হয়ে বলল,

–তুমি আবার সেই এক গান গাইছো কেন আব্বু । তোমাকে আর কিভাবে বোঝালে বুঝবে। আমি আরিয়ান ভাইকে বিয়ে করব না। তোমার জায়গায় অন্য কেউ থাকলে, তার কি অবস্থা আমি করতাম। সেটা আমি নিজেও জানিনা৷ আমারই ভুল হয়েছে। কেন যে আম্মুর কথা শুনলাম না। তুমি শুধু নিজের কথাই ভাবছ। প্রাচীন সভ্যতার ইতিহাস পড়লে দেখা যায়। পৃথিবীর সমস্ত শক্তিশালী মানুষ গুলো শত্রু দ্বারা নিহত হয়নি। হয়েছে আপন মানুষের বেইমানি কারনে। যেমন তোমার কথার মায়ায় পড়ে ছুটে আসলাম তোমার কাছে। আর তুমি আমাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে পাঠাচ্ছ। এবার যদি আমি এই বাড়ি থেকে বের হই। তাহলে আমার লা’শ আসবে এই বাড়িতে, তবুও আমি জীবিত থাকতে এই বাড়িতে আসব না।

–আরিয়ানকে বিয়ে করবি না কাকে বিয়ে করবি। ঐ মুনতাসিম ফুয়াদকে যে কি-না বিবাহিত সন্তানের বাবা হতে চলেছে। একটা কথা ভালো করে শুনে রাখ। যাকে তুই স্বামী বানানোর চেষ্টা করছিস। সে তোকে রক্ষিতা বানানোর চেষ্টা করছে। এসব এমপি মন্ত্রীরা ভালো হয় নাকি। এরা কখনো এক নারীতে আসক্ত থাকে না। এরা প্রতিদিন কাপড় বদলের মতো একটা করে মেয়ে বদল করে। প্রতি রাতে নতুন নতুন মেয়ে লাগে। সেখানে তোর মতো মেয়েকে বিয়ে করে ঘরের বউ করবে। এত মহান আশা নিয়ে বাঁচিস না। মুনতাসিম ফুয়াদের রক্ষিতা হয়ে থাকবি তুই। ফরিদ রহমানের কথায় মেহেভীনের মস্তিষ্ক অকেজো হয়ে গেল। ঘৃণায় পুরো শরীর রি রি করছে। ক্রোধে পুরো শরীর থরথর করে কাঁপছে। কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে পরিবেশ গরম করে তুলল রাইমা বেগম। স্বামীর মুখশ্রীতে একদলা থুতু ফেলে পায়ের জুতা খুলে পর পর চারটা বাড়ি মা’র’লে’ন মুখে। স্বামীর গলা চেপে ধরে বললেন,

–জা’নো’য়া’রে’র বাচ্চা বহু বছর ধরে তোর নাটক আমি সহ্য করছি৷ তোর কলিজা কে’টে আমি সিদ্ধ করে পা’গ’লা কু’ত্তা’কে খাওয়াব। তুই নিজে একটা নষ্ট হয়ে, আমার ফুলের মতো পবিত্র মেয়ের দিকে নোংরামির কাঁদা ছুঁড়ে দিস। আমি বেঁচে থাকতে এসব সহ্য করে চুপ থাকতে হবে। তোকে আমি বাঁচতে দিব না। তোর মতো অমানুষের না আছে বাবা হবার যোগ্যতা আর না আছে স্বামী হবার যোগ্যতা। তোর বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই। তুই ম’রে গেলে আমি দুধ দিয়ে গোসল দিব। আমার মেয়েকে নোংরা কথা বলার আগে তুই ম’র’তে পারলি না। প্রাণ প্রিয় প্রেয়সীর এমন রুপ দেখে হৃদয় থমকে গেল ফরিদ রহমানের। তার শান্ত শিষ্ট অর্ধাঙ্গিনীর ভেতরে এমন ভয়ংকর রুপ আছে। সেটা সে কোনোদিন কল্পনাতেও ভাবতে পারেনি। নিজের জীবন দিতে প্রস্তুত সে তবুও অর্ধাঙ্গিনীকে আঘাত করবে না। কারন মানুষটা তার ভিষণ শখের। রাইমা বেগম মেহেভীনের দিকে দৃষ্টিপাত করে বজ্র কণ্ঠে বলল,

–কি রে হতভাগা এখনো দাঁড়িয়ে আছিস কেন? নাকি আরো কিছু শোনার বাকি আছে। জেদ ধরে এখানে থেকে গিয়েছিলি না। এখন নিজের প্রাণ প্রিয় বাবার আসল রুপ দেখ। তোর মতো মেয়ে আমার পেটে হলো কিভাবে তাই ভাবছি। বে’য়া’দ’বে’র মতো দাঁড়িয়ে না থেকে এখনই এই বাসা থেকে বের হয়ে যা। এই বাড়ির আশেপাশে যেন তোকে না দেখি।

–আমি তোমাকে রেখে যাব না আম্মু। তুমিও আমার সাথে যাবে। এই লোকটা যদি আমার বাবা না হতো। তাহলে একদলা থুতু তার মুখে ছুঁ’ড়ে ফেলতাম। ভাবতেও ঘৃণা হচ্ছে এত ভালো মানুষির পেছনে জঘন্যতম রুপ লুকিয়ে আছে। তোমাকে আমি এই মানুষটার সাথে সংসার করতে দিব না। তোমাকে শেষ করে দিবে এই মানুষটা। এতটা যন্ত্রনা বুকে নিয়ে ঘুরে বেড়াও। আমাকে একটা বার জানালে কি হতো।

–আমি তোর মতো দুর্বল নই। নিজেকে রক্ষা করার মতো ক্ষমতা আল্লাহ আমাকে দিয়েছে। তাছাড়া এই জা’নো’য়া’র টা আমার শরীরে একটা ফুলের টোকাও দিবে না। বড্ড শখের মানুষ বলে কথা। তুই আমার চোখের সামনে থেকে যাবি নাকি তোর চোখের সামনেই একে রক্তাক্ত করে ফেলব। মেহেভীন মায়ের এমন রুপে স্তব্ধ হয়ে গেল। তার সহজ সরল মায়ের মধ্যে এমন ভয়ংকর রুপ লুকিয়ে আছে। সেটা গুন অক্ষেরও টের পায়নি। সমস্ত শরীর অবশ হয়ে আসছে। ফল কাটা ছুরিটা হাতে নিয়ে ফরিদ রহমানের গলায় ধরে আছে রাইমা বেগম। একটু নড়লে ফরিদ রহমানের মৃত্যু যেন নিশ্চিত। তা দেখে মেহেভীনের শরীর থরথর করে কাঁপতে লাগলো।

চলবে…..

(এতদিন আপু ছিল। তাই নিয়মিত গল্প দিতে পারিনি। আপু চলে গিয়েছে। এবার থেকে নিয়মিত গল্প দেওয়ার চেষ্টা করব। সবাই রেসপন্স করবেন। ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here