#খোলা_জানালার_দক্ষিণে
#পর্ব_১৩
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu
পরিবেশের সাথে থমকে গিয়েছে মেহেভীনের মস্তিষ্ক। ঘটে যাওয়া ঘটনা স্মরন করতেই আশ্চর্যের চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেল। নতুন করে মানুষটাকে জানছে মেহেভীন। মানুষটার মধ্যে তার জন্য কতটা অধিকারবোধ! সে কি কোনো ভাবে মেহেভীনকে নিজের দখলে করে নিতে চাইছে! সমস্ত ভাবনাকে দূরে ঠেলে দিয়ে মনের শহরে বিষাদ খেলা করতে লাগল। সে কখনো কল্পনাও করতে পারেনি। মুনতাসিম তার সাথে এতটা রাগান্বিত হয়ে কথা বলবে। সে নিজেই তো মুনতাসিমের অন্য রুপের সাথে পরিচিত হতে চেয়েছিল। কিন্তু তা এত তাড়াতাড়ি বাস্তবায়িত হয়ে যাবে। তা মেহভীনের ভাবনার বাহিরে ছিল।
জারিফ নিজের কক্ষে বসে ছিল। একটু পরে অফিসে যাবার জন্য তৈরি হচ্ছিল। তখনই তার বোন আর্শিয়া আসে। ধরণীর বুকে এই মানুষটা নিয়ম করে তার খোঁজ খবর নেয়। মানুষটাকে যখন তার বাবা-মা বাসা থেকে বের করে দিয়েছিল। তখন এই ছোট বোনটাই তার হাতে টাকা গুঁজে দিয়েছিল। তার ভাই টা যেন কয়টা দিন ভালো থাকতে পারে। আর্শিয়া ভাইয়ের মুখশ্রীর দিকে নিষ্পলক চাহনিতে দৃষ্টিপাত করে আছে। মানুষটা একটা মেয়েকে ভালোবেসে, নিজের গোটা জীবনটাই বিসর্জন দিয়ে দিল। নিজের নাম খারাপ করল। নিজের শরীরে লাগিয়ে দিল ধ’র্ষ’ক উপাধি। তবুও মেয়েটাকে পাবার আশা ছাড়ল না। একটা মানুষ কতটা ভালোবাসলে, একটা মেয়েটা পাবার জন্য এতটা নিকৃষ্ট হতে পারে! সমাজের দৃষ্টিতে এই ছেলেটা ভিষণ খারাপ। কিন্তু আর্শিয়ার চোখে সে একজন উন্মাদ প্রেমিক। যে কি-না নিজের প্রেয়সীকে পাবার জন্য জঘন্যতম কাজ করে বসল। হয়তো নিজের ভাই বলেই সে ভাইয়ের অন্যায় টা চোখে দেখছে না। ভালোবাসা কি জোর করে পাওয়া যায়। ভালোবাসা অর্জন করে নিতে হয়। ভালোবাসা একটা স্নিগ্ধ পবিত্র জিনিস। জারিফ সেই পবিত্রতায় কলঙ্ক লাগাতে চেয়েছে। শাস্তি তো তাকে পেতেই হবে। সে পেয়েছে শাস্তি। কয়েকবছর আগে না থাকার শূন্যতা কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছিল। আজ সবকিছু থেকে-ও সে ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত। জারিফ তৈরি হয়ে মেহেভীনের ছবির সামনে গেল,
–দেখেছ মেহেভীন আমি প্রতিদিন নতুন ভাবে পুড়ছি। জানো আমার ভেতরটা পুড়তে পুড়তে ছারখার হয়ে গিয়েছে। আমার ভেতরটায় আমার অস্তিত্ব বলতে কিছু নেই। আমার সমস্ত অস্তিত্ব জুড়ে শুধু তোমার বিচরণ। তুমি আমার শিরা-উপশিরায় বসবাস কর। তুমি এভাবে আমাকে জ্বালিয়ে না দিলেও পারতে। জ্বালতে তো সবাই পারে। কিন্তু প্রেম দিতে সবাই পারে না। আমাকে প্রেম দিলে কি তোমার খুব ক্ষতি হয়ে যেত। আমিও দেখতে চাই। আমি থাকতে তোমাকে কোন পুরুষ স্পর্শ করে। তোমার শরীরে কলঙ্ক লাগিয়ে হলে-ও আমি তোমাকে আমার করে নিব। একবার কলঙ্ক লাগাতে ব্যর্থ হয়েছি। এবার আর ব্যর্থ হবার কোনো সম্ভবনা রাখব না।
–ভালোবাসা একটি পবিত্র জিনিস ভাইয়া। তুমি যাকে জোর খাটিয়ে আঁকড়ে ধরতে যাবে। সে ততই তোমার থেকে দূরে সরে যাবে। তোমাদের মধ্যে তৈরি হবে গভীর দুরত্ব। আর তুমি যাকে ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখতে চাইবে। সে ততই আদুরে বিড়ালের মতো তোমার হৃদয়ের গহীনে লুকিয়ে পড়বে। শত চেষ্টা করে-ও কেউ তাকে বের করতে পারবে না। মেয়ে মানুষ অল্পতেই খুশি। তাদের বেশি কিছু লাগে না ভালোবাসা পেলে হয়ে যায় অবুঝ বাচ্চা। আর অবহেলা পেলে হয়ে যায় পাথরের ন্যায় কঠিন। একটা মেয়ের কাছে শ্রেষ্ঠ সম্পদ তার সন্মান। তুমি মেহেভীন আপুর সন্মানের দিকে নজর দিয়েছিলে ভাইয়া। যে পুরুষ একটা নারীকে কলঙ্কিত করতে চায়। সেই পুরুষ অন্তত অর্ধাঙ্গ হবার যোগ্যতা রাখে না। একটা নারী একটা পুরুষকে তখনই ভালোবাসে, যখন নারীটি সেই পুরুষের কাছে নিজেকে নিরাপদ মনে করে। তুমি তো আগেই মেহেভীন আপুর সমস্ত বিশ্বাস চূর্ণবিচূর্ণ করে দিয়েছ। তারপরেও কোন বিবেকে আশা কর সে তোমার হবে।
–তাকে আমার হতেই হবে। জারিফ এতকিছু বুঝে না। মেহেভীনকে আমার ভালোবাসতে হবে না। আমি তো মেহেভীনকে ভালোবাসি। এর থেকে বড় পাওয়া মেহেভীনের কাছে কি হতে পারে। কয়েক বছর আগে আমার কিছু ছিল না। আজ আমার সব হয়েছে অর্থ, সম্পদ, ক্ষমতা। কি নেই আমার! সবকিছু আছে এবার আমি এবার মেহেভীনের সামনে যাব। জোর করে নিয়ে করব সংসার ও করব।
–ক্ষমতার অপব্যবহার করতে চাচ্ছ! তুমি তোমার অতীত ভুলে যেও না ভাইয়া। তার আশা তুমি ছেড়ে দাও। আমি বাবা-মাকে বুঝিয়েছি। তুমি বাসায় ফিরে চলো। আর এসব বাজে কার্ম ছেড়ে দাও। আমাদের জীবনটা ভিষণ সংলিপ্ত ভাইয়া। এসব রেষারেষি বাদ দিয়ে, এই ছোট্ট জীবনটাকে আমরা সুন্দর ভাবে উপভোগ করতে পারি না ভাইয়া।
–আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষটা তুই। তোর জায়গায় অন্য করেই হলে, এতক্ষণে মাটির নিচে থাকত। ভাইয়াকে জ্বালাস না। বাসায় ফিরে যা আমার কাজের দেরি হয়ে যাচ্ছে। কথা গুলো বলেই জারিফ স্থান ত্যাগ করল। আর্শিয়া ভাইয়ের যাওয়ার দিকে দৃষ্টিপাত করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। এই যুদ্ধের শেষ কোথায়? হতাশ হলো আর্শিয়া। বিষণ্ণ মন নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেল।
প্রভাতের আলো ফুটতেই মুনতাসিমের নিদ্রা ভেঙে যায়। কাল রাতের কথা স্মরন করতেই বুকটা মোচড় দিয়ে উঠল। ক্রোধের বশে মেহেভীনকে সে আঘাতপ্রাপ্ত করেছে। এই যন্ত্রনা সে সহ্য করবে কি করে। মুহুর্তের মধ্যে মন জুড়ে হাহাকার নেমে এল। হালকা শীতের মাঝে-ও সমস্ত শরীর ঘামছে। মুখশ্রী রক্তিম বর্ন ধারণ করেছে। চরিত্র মানুষের অমূল্য সম্পদ। সেই চরিত্রে আঘাত আসলে মুনতাসিম কেন জানি সহ্য করতে পারে না। এখানে মেহেভীনের কোনো দোষ নেই। দোষ তো তার নিজের সে নিজেই অন্য মেয়ের কথা মেহেভীনের সামনে বলছে। মেহেভীনের তাকে চরিত্রহীন ভাবাটা স্বাভাবিক নয় কি! অপরাধবোধ মুনতাসিম কে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। নিজের ওপরে ভিষণ রাগ হচ্ছে তার। সে রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে নিজের হাতে প্রহার করল। আজকে উঠতেও দেরি হয়ে গিয়েছে। সে উঠে ফ্রেশ হয়ে নামাজ আদায় করে, না খেয়েই বাহিরে বের হলো। আজকেও মেহেভীনের বাসায় থাকার কথা। প্রতিদিন সকালে মেহেভীন হাঁটতে বের হয়। সে মেহেভীনের জন্য অপেক্ষা করছে। মেহেভীন মুনতাসিমকে দেখেই গৃহে চলে গেল। সে মনে মনে পণ করল। সে মুনতাসিমের সামনে যাবে না। মানুষটা তাকে বুঝিয়ে বললেই সে বুঝত। আচমকা এমন বিশ্রী ব্যবহার করার কি দরকার ছিল! মানুষটাকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়ে গিয়েছে। সেজন্য মানুষটা মস্তকে উঠে গিয়েছে। তাকে কিভাবে মস্তক থেকে নামাতে হয়৷ সেটা আমার ভালো মতোই জানা আছে। অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হয় না। সূর্যমামা তার কিরণ চারদিকে ছড়িয়ে দিয়েছে। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে রৌদ্রের প্রখরতা বেড়ে চলেছে। উত্তপ্ত হতে শুরু করে মস্তক। মুনতাসিম হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল নয়টা বাজে। সে ধরেই নিল মেহেভীন আজ আসবে না৷ হতাশ হয়ে ফিরে গেল নিজ গৃহে। মুনতাসিম বের হতেই মেহেভীন তাড়াহুড়ো করে বের হয়ে গেল। আজকে তার অফিসের অনেক কাজ আছে। প্রচুর দলিল এসে জমা হয়েছে। নিজের কাছেই নিজেকে বিরক্ত লাগছে মেহেভীনের৷ সে একটা পুরুষ মানুষের জন্য নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছে, চোরের মতো গৃহ থেকে বের হচ্ছে। কেন করছে সে এসব? তার মন কি চায়। মানুষটা আবার আসুক। তার রাগ আবার ভাঙাক! মানুষটার কিসের এত দায় পড়েছে। যে সে রাগ করবে আর মানুষটা বেহায়ার মতো তার কাছে এসে আত্নসমর্পণ করবে। মানুষটার নিজস্ব অভিমান বলতে কিছু নেই। আমাকে নিয়ে তার কোনো অভিযোগ নেই। এই আমি তার সম্পর্কে না জেনে, তাকে চরিত্রহীন উপাধি দিলাম। আমার জন্য কেন তার মনে ক্ষোভ জমল না। মানুষটার বন্ধুত্বের বন্ধন কি তার থেকে গাঢ়! সেজন্য মেহেভীন তার কাছে হেরে যাচ্ছে। মানুষটা তাকে একটু বেশিই মূল্য দেয়! এতটা মহামূল্যবান সে নয়। সে তার মনের কথা আমায় বলবে। না হয় সবকিছু এখানেই স্থগিত হয়ে যাবে। এভাবে দু-টানায় ভুগতে ভালো লাগে না।
মুনতাসিম রজনীগন্ধা আর গোলাপ ফুল হাতে নিয়ে আসছিল। তখনই আঁখিযুগল স্থির হয়ে গেল। মুখশ্রীতে ক্রোধের ছাপ স্পষ্ট। মিরাজুল মেহেভীনের সাথে দাঁড়িয়ে কথা বলছে। মুনতাসিমের চোয়াল শক্ত হয়ে এল। সে গম্ভীর মুখশ্রী করে সামনের দিকে অগ্রসর হলো। মনটা বিষাদে ভরপুর হয়ে গেল। সমস্ত ফুলগুলো ছুঁড়ে ফেলে দিল। কারো দিকে দৃষ্টিপাত না করেই চলে গেল। মিরাজুল ডাকলেও তাকে ইগনোর করে চলে গেল। মিরাজুল মেহেভীনের সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়ে এসেছিল। তাই নিজের বাবার জমিকে নিজের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করল। মেহেভীনের সাথে কথা বলে ভিষণ আনন্দ লাগছে তার। মেহেভীন তাকে সাহায্য করবে বলছে। প্রয়োজনের বাহিরে একটা কথাও বলেনি মেহেভীন। মিরাজুল চলে যেতেই মেহেভীন ফুলগুলো হাতে তুলে নিয়ে বাসার মধ্যে চলে গেল। মুনতাসিমে ওভাবে যেতে দেখে, মেহেভীনের মনটা ভিষণ খারাপ হয়ে গেল। মানুষটা কি তাকে ভুল বুঝল!
হঠাৎ করে আকাশটা মেঘলা হয়ে আসলো। মেঘেরাও কি জেনে গিয়েছে। দুটি মানুষের মন ভিষণ খারাপ। তাদের সঙ্গ দিতেই সে চলে এসেছে। মেহেভীন বেলকনিতে এসেছেই খোলা জানালার দক্ষিণে দৃষ্টিপাত করল। তখনই আঁখিযুগলের সামনে ভেসে উঠল একটা জোড়া বিধস্ত আঁখিযুগল। মানুষটা কেমন ছন্নছাড়া হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। হয়তো সে মেহেভীনের জন্যই অপেক্ষা করছিল। মেহেভীন দ্রুত নিজের কক্ষে যেতে চাইল। কিন্তু মুনতাসিম আঁটকে দিল।
–কালকের ব্যবহারের জন্য দুঃখিত ম্যাডাম। রাগের বশে আপনার সাথে বাজে ব্যবহার করে ফেলছি। আপনাকে আঘাত করে ফেলছি। আমি আপনাকে আঘাত করতে চাইনি। আপনাকে আঘাত করা মানে, নিজেকে আঘাত করা। কোনো মানুষ নিশ্চই নিজেকে আঘাত করতে চাইবে না। মেহেভীনের অভিমানের পাল্লা ভারি হয়ে আসতে শুরু করল। মেহেভীন গভীর ভাবে উপলব্ধি করতে পারছে। সে মানুষটার প্রতি ভিষণ ভাবে দুর্বল হয়ে গিয়েছে। মানুষটার নাম করে যে কেউ তাকে কাবু করতে পারবে। মেহেভীন নিরুত্তর রইল। এর মাঝেই ঝুম বৃষ্টি শুরু হলো। অসময়ে বৃষ্টি আসার কারন জানে না মুনতাসিম। তবে এই বৃষ্টিটা তার ভিষণ ভালো লাগছে। তার মনের গহীনে জমানো কষ্ট গুলো বৃষ্টির পানির সাথে ধুয়েমুছে যাক। প্রকৃতির মতো তার হৃদয়টাও ঝকঝকে হয়ে উঠুক। মেহেভীন গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
–নিজের কক্ষে যান। অসময়ে বৃষ্টির পানিতে ভিজলে ঠান্ডা লেগে যাবে। খুব সহজে শরীর সুস্থ হতে চাইবে না। প্রেয়সীর বিষাদে ভরা মুখশ্রীর দিকে তাকিয়ে আহত হলো মুনতাসিম। ভেতরটা জ্বলে পুড়ে দগ্ধ হয়ে যাচ্ছে। প্রেয়সীকে বুকের মধ্যে নিয়ে গভীর ভাবে আলিঙ্গন করতে ইচ্ছে করছে। দু’জনে একাকার হয়ে গিয়ে বলতে ইচ্ছে করছে, আপনি কষ্ট পাবেন না ম্যাডাম। আপনি কষ্ট পেলে আমার পুরো দুনিয়ায় এলোমেলো হয়ে যায়। আমার ভেতরে অস্থিরতার ঝড় বয়ে যায়। আমার হৃদয়টা অশান্ত নদীর মতো উথাল-পাতাল ঢেউ খেলতে থাকে। বুকের মধ্যে অসহনীয় যন্ত্রনা করে। আমি মৃত্যু যন্ত্রনায় ছটফট করতে থাকি। আপনার মন খারাপ থাকলে, আমার পুরো পৃথিবীর মন খারাপ হয়ে যায়। মন খারাপ করার আগে, একটা বার আমার কথা অন্তত ভাবুন মেহেভীন। মনের কথা গুলো আড়াল করে মুনতাসিম বলল,
–আপনি আমাকে ক্ষমা না করা পর্যন্ত আমি কোথাও যাব না। হে আকাশ তুমি আল্লাহ তায়ালার হুমুকে সারারাত বৃষ্টি দাও। আমি তোমার ছোঁয়ায় ভিজে একাকার হতে চাই। তোমার এতটুকু উপকারে আমার প্রেয়সীর মন গলে যাক। তাহলে নিজের জান কুরবান করতেও রাজি আছি। হে আল্লাহ তুমি নারাজ হইও না৷ কারো জন্য কারো জীবন থেমে থাকে না। নিজের জীবন অন্য কারো নষ্ট করতে হয় না। তবুও আমরা আবেগের বশে বলে ফেলি। আমি ছাড়া তোমার বান্দার অভাব নেই। কিন্তু তুমি ছাড়া আমার কোনো রব নেই। আমার ভুল গুলো তুমি ক্ষমা করে দিও। কথা গুলো বলেই বিলম্ব করল না। কক্ষ থেকে বের হয়ে বাহিরে এসে মেহেভীনের জানালার কাছে দাঁড়াল। তখন কথা গুলো ধীরে বলায় মেহেভীন শুনতে পাইনি। মুনতাসিম বলল,
–আমাকে ক্ষমা করবেন কি না ম্যাডাম। আপনার উত্তর যদি না আসে। তাহলে আমি আজ সারারাত এখানে দাঁড়িয়ে পার করে দিব। হাতে সময় বেশি নেই। উত্তর দিয়ে নিজের কক্ষে চলে যান। এই বৃষ্টির পানি আপনাকে গভীর ভাবে আলিঙ্গন করছে। আমার ভিষণ হিংসে হচ্ছে। একে তো মনটাকে ভিষণ বাজে ভাবে পোড়াচ্ছেন। এখন আবার হিংসের আগুনে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েন না। আমার অস্তিত্ব খুঁজে পাবেন না। বিরক্তিতে মুখশ্রী কুঁচকে এল মেহেভীনের। এত বড় মানুষের এমন পাগলামি শোভা পায়! সে বিরক্তি মাখা মুখশ্রী করে বলল, আপনি সারারাত বৃষ্টিতে ভিজে পার করে দিন। তাতে আমার কোনো যায় আসে না। কথা গুলো বলেই মেহেভীন নিজের কক্ষে চলে গেল। মনের অজান্তেই ভেতরে অসহনীয় যন্ত্রনা অনুভব করল মুনতাসিম। সে মলিন মুখশ্রী নিয়ে দাঁড়িয়ে রইল। জেদ যেন তার সবকিছুকে কাবু করে ফেলছে। সে দেখবে তার কষ্টে মেহেভীনের কষ্ট হয় নাকি। মুহুর্তের মধ্যে কাঁপুনি শুরু হয়ে গেল মুনতাসিমের।
চলবে…..
(আজকে গল্প দেওয়ার ইচ্ছে ছিল না। কিন্তু তোমাদের কথা দিয়েছি রাখতেই হবে। যত তাড়াতাড়ি এক হাজার রেসপন্স হবে। সেদিন আমি সুস্থ থাকলে গল্প দিতে আমি বাধ্য। এত তাড়াতাড়ি অধৈর্য হবেন না। গল্পের এখনো কিছুই শুরু হয়নি। যে প্যাচ লাগাচ্ছি গল্পে। কিভাবে প্যাচ ছাড়াব পরে আমি সেটাই ভাবছি। সেই প্যাচে আমি না আবার কেটে যাই। সবাই আমার জন্য দোয়া কর। আর হ্যাঁ যারা আনন্দে আছ বেশি করে আনন্দ করে নাও। কিছুদিন পর থেকেই গল্পে বিষাদ প্রবেশ করবে। সবাই প্রস্তুত থাকবে বুঝছ। সবাই রেসপন্স করবে। তোমাদের রেসপন্সের ভিত্তিতে পরবর্তী আসবে ইনশাআল্লাহ। শব্দসংখ্যাঃ১৮২০)