খোলা_জানালার_দক্ষিণে #পর্ব_১২ #লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

0
315

#খোলা_জানালার_দক্ষিণে
#পর্ব_১২
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

গোধুলী আলো মনোমুগ্ধকর পরিবেশ গড়ে তুলছে। চারদিকে শীতের আভাস জানান দিচ্ছে। আজ শুক্রবার মেহেভীন প্রতি শুক্রবারে নিজের বাসার পাশে, খোলা মাঠে গাছের নিচে থাকা বেঞ্চটায় বসে থাকে। মাঠের সাথেই আঁকাবাকা নদী। বাতাসের সাথে তাল মিলিয়ে স্রোত ভেসে যায়। সে কি অপরূপ নদীর সেই দৃশ্য। গোধুলি আলো মেহেভীনের মুখশ্রীতে আঁচড়ে পড়ছে। মেহেভীন বসে বাচ্চাদের ফুটবল খেলা দেখছে। এই মাঠে রোজ বাচ্চারা খেলতে আসে। মেহেভীন গভীর ভাবে খেলা দেখছিল। তখনই নিজের পাশে কারো উপস্থিত অনুভব করে। পাশে তাকিয়ে দেখল মুনতাসিম। তার থেকে বেশ দুরত্ব বজায় রেখে বসেছে। মেহেভীন বাহিরে আসলে মানুষটা টের পায় কিভাবে? সেটাই মেহেভীনের মাথায় আসে না।

–আপনাকে আজকে একটু বেশিই সুন্দর লাগছে ম্যাডাম।

–কেন আমার রুপ কি আগের থেকে বেশি হয়ে গিয়েছে। যার কারনে আজকে আমাকে একটু বেশি সুন্দর লাগছে।

–আপনার রুপ বেশি হয়নি। এটা আমার দৃষ্টির দোষ আমার দৃষ্টি রোজ আপনাকে নতুন ভাবে দেখে, নতুন ভাবে জানে, নতুন করে বোঝার চেষ্টা করে। আপনিতে পুরাতন বলতে কিছুই নেই। মুগ্ধতার আরেক নাম আপনি। আপনি রোজ দেখি আর রোজ নতুন করে তৈরি করি। আমার দৃষ্টি যে আপনিতেই সীমাবদ্ধ। তাই আপনিতেই নতুনত্ব খোঁজার প্রচেষ্টায় থাকি সারাক্ষণ।

–একটা মানুষের পেছনে সারাক্ষণ আঠার মতো লেগে থাকেন। বিরক্ত হন না!

–বিরক্ত হব না। তবে হঠাৎ করে না জানিয়ে একদিন থেমে যাব। সেদিন চাইলেও আর বিরক্ত করা মানুষ টাকে খুঁজে পাবেন না। সে চলে যাবে আপনার ধরা ছোঁয়ার বাহিরে। মেহেভীনের বুকটা হঠাৎ করে মোচড় দিয়ে উঠল। ভেতরে অদ্ভুত এক শূন্যতা অনুভব করল। মস্তিষ্ক থম মে’রে গিয়েছে। কাজ না করার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে সে। মেহেভীনকে স্থীর হয়ে যেতে দেখে মুনতাসিম শীতল কণ্ঠে বলল,

–চুপ করে গেলেন যে ম্যাডাম!

–আজকে আমাকে সত্যি করে একটা কথা বলবেন? আপনি সামনে থেকে যা দেখান, সেটাই আপনি নাকি আপনার ভেতরে অন্য কোনো রহস্যময় চরিত্র বসবাস করছে। আমি একটা জিনিস প্রায় খেয়াল করি। আপনার আশেপাশে কিছু লোক সব সময় আপনাকে ঘিরে রাখে। তারা যেন আপনাকে রক্ষা করার দায়িত্ব পালন করছে। কে আপনি? তারা কেন আপনাকে ঘিরে রাখে?

–আমার প্রেমে পাগল হয়ে যাননি তো ম্যাডাম। ভর সন্ধ্যা বেলায় কি সব ভুলভাল বকছেন! আশেপাশে নানা রঙবেরঙের মানুষ চলাচল করে। কে আমার আশেপাশে আছে। সেটা তো আমি জানিনা। আপনি কাকে নাতে কাকে দেখে, আমাকে দোষারোপ করছেন। আমি নিত্যান্তই একজন সাধারণ মানুষ। আমাকে রক্ষা করার জন্য আমার আল্লাহ আছেন।

–আমাকে আপনি বোকা পেয়েছেন! তাই বলে একই মানুষ সারাক্ষণ আপনার আশেপাশে ঘুরঘুর করবে। নাকি আপনার মনে হচ্ছে আমি মিথ্যা কথা বলছি। আপনাকে আমার প্রচুর সন্দেহ হয়। পৃথিবীতে এত এত মানুষ থাকতে, আপনি কেন শুধু আমার পেছনেই পড়ে থাকেন বলেন তো। আশা করছি আজকের পর থেকে আপনার সাথে আমার আর কোনো কথা হবে না। মেহেভীনের কথায় বুকটা ব্যথায় চিনচিন করে উঠল। মনের অন্তরালে হাহাকার শুরু হয়ে গিয়েছে। মনের শহরের অলিতে-গলিতে বিষাদের মিছিল শুরু হয়ে গিয়েছে। মেহেভীন বিলম্ব করল না। মুহূর্তটাকে বিষাদে পরিপূর্ণ করে দিয়ে স্থান ত্যাগ করল। সে দোষও দিল আবার দুঃখও দিল! মুনতাসিমের কেন জানি ছুটতে ইচ্ছে করল না। তার পেছনে ছুটতে ছুটতে জীবন ফুরিয়ে যাবে। তবুও মেহেভীনের মনের গহীনে নিজের নামে এতটুকু স্থান দখল করতে পারবে না। নিস্তব্ধতায় ছেয়ে যাচ্ছে পরিবেশ। বাচ্চারা মাঠ থেকে চলে গিয়েছে। সূর্যকে বিদায় জানিয়ে চারদিকে আঁধার ঘনিয়ে আসছে। মশার জ্বালায় বসে থাকা দুষ্কর হয়ে গিয়েছে।

মেহেভীনের বাবা-মায়ের সামনে বসে আছে আরিয়ান। দৃষ্টি তার নত। মুখশ্রীতে অপরাধবোধের ছাপ স্পষ্ট। সমস্ত শরীর অবশ হয়ে আসছে। কথা বলার শক্তি হারাচ্ছে সে। ভেতরটা ভয়ে কাবু হয়ে আছে। কণ্ঠনালি দিয়ে শব্দ উচ্চারিত হবার আগেই, কণ্ঠনালি কেঁপে কেঁপে উঠছে। এত বড় জঘন্যতম কাজ করার পরে-ও সে নিজের মনের ভাব কিভাবে প্রকাশ করবে? মস্তিস্ক নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছে। সে আজ আরিয়ানের সঙ্গ দিতে চাইছে না। তবে সে যে ভুল করেছে। সেই ভুলের প্রায়শ্চিত্ত নিশ্চই করবে। সে বিলম্ব করল না। মেহেভীনের বাবা-মায়ের চরণের কাছে বসে, কান্নায় ভেঙে পড়ল। অনবরত ক্ষমা চেয়েই যাচ্ছে সে। ক্ষমা না করা পর্যন্ত চরণ জড়িয়ে রাখার পণ করেছে সে। পানি দুইভাগ করলে যেমন আলাদা হয় না। ঠিক তেমনই রক্তের সম্পর্কের মানুষকে কখনো আলাদা করা যায় না। এতদিনের জমানো সমস্ত রাগ, ক্ষোভ, অভিমান নিমিষেই হাওয়া হয়ে গেল। বরফের ন্যায় গলতে শুরু করল দু’জন মানুষের মন। তারা কি এটা জানে না। জীবনে খুব সহজে সহজ-সরল হতে নেই। কারন এই পৃথিবীতে সহজ-সরল মানুষ গুলো ভিষণ বাজে ভাবে ঠকে যায়।

–চাচা আমি জানি আমি জঘন্যতম অপরাধ করেছি। তার ক্ষমা হয়তো কখনো হবে না। তবে একটা কথা কি চাচা জানেন? ক্ষমা মানুষের মহৎ গুন। ক্ষমাশীল ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ তায়ালা ভিষণ ভালোবাসেন। আপনারা চাইলে আমাকে ক্ষমা করে দিতে পারেন। আবার ক্ষমা করতে না চাইলে, আমাকে আমার উপযুক্ত শাস্তি দিন চাচা। আমি এই অপরাধের বোঝা বয়ে বেড়াতে পারছি না। রজনীর শেষ প্রহরে আমার নিদ্রা ভেঙে যায়। হৃদয়টা বড্ড ছটফট করে অতীতের অপরাধের কথা স্মরন করে, আমার ভেতরটা হাহাকারে কাঁদে। আমাকে শেষ একটা সুযোগ দিন চাচা। আপনারা চাইলে আমি মেহেভীনকে বিয়ে করতে রাজি আছি। তার জন্য আমাকে যা বলবেন আমি তাই করব। ফরিদ রহমান কিছুটা গম্ভীর গলায় বলল,

–তুমি আমাদের বংশের ছেলে। তাই হয়তো এ যাত্রায় ক্ষমা পেয়ে যাবে। তা না হলে তুমি এত জঘন্যতম অপরাধ করার পরে-ও কখনো ক্ষমা পেতে না। তোমার ভাগ্য হলো আমাদের মতো একটা পরিবার পেয়েছ। তোমার লজ্জা করল না মেহেভীনকে বিয়ে করার কথা বলতে! কোন মুখে বিয়ের কথা বললে তুমি? তোমার মতো ছেলেকে পায়ের তলায় ফেলে পিষে মা’রা উচিৎ। অপমানে আরিয়ানের সমস্ত শরীর কেঁপে উঠল। দু-হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নিজের ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ করছে। এখন বি’ষ খেয়েও সহ্য করে নিতে হবে। আরিয়ান খুব সহজে দমে যাবে না। সে শেষ পর্যন্ত পৌঁছে যাবে।

মুনতাসিম নিজের কক্ষে বসে কিছু একটা পকেটে তুলে নিল। তখন ক্ষনিকের জন্য প্রেয়সীর উপর অভিমান হয়েছিল। সেজন্য প্রেয়সীর রাগ ভাঙানোর জন্য ছুটেনি। বাসায় আসার পর থেকে ভিষণ অস্থিরতা কাজ করছে। যন্ত্রনায় ভেতরটা ছটফট করছে। আজকাল নিজেকে বড্ড অসহায় মনে হয়। মেয়েটা তার ভালো থাকার কারন হয়ে গিয়েছে। মেয়েটাকে ছাড়া তার দম বন্ধ হয়ে আসে। সমস্ত শরীর মন জুড়ে শুধু মেয়েটারই বিচরণ। মেয়েটা নিশ্চয়ই কোনো জাদুকরী। তা না হলে তার মতো পাষাণ মানুষের হৃদয়ে দুঃখ পুরে দিতে পারে! কি মায়ায় জড়াল মেয়েটা। মনটা নিজের হয়েও ভালো থাকটা তার ওপরে নির্ভর করে। তার সমস্ত আবেগ মেহেভীনের সামনে এসে কার্যক্রম শুরু করে দেয়। মাঝে মাঝে সে ভিষণ অবাক হয়। সে আগে কি ছিল আর এখন কি হয়ে গেল! মুনতাসিমের ভাবনার মাঝেই মুঠোফোনটা বেজে উঠল। নিজের বেস্ট ফ্রেন্ডের নামটা ফোনের স্ক্রিনে জ্বলজ্বল করছে। মুনতাসিম মুঠোফোনটা কর্ণে ধরতেই মিরাজুল বলল,

–মুনতাসিম জানিস কি হয়েছে? তোর বন্ধু প্রেমে পড়েছে! একজন রাজকুমারী তোর বন্ধুর হৃদয়হরন করে নিয়ে গিয়েছে। তাকে দেখার পর থেকে আমি খেতে পারছি না। রাতে ঠিকমতো ঘুমোতে পারছি না। আমার মন মস্তিষ্ক জুড়ে শুধু সেই রমনীর ভাবনা। সুন্দরী রমনী আমাকে গ্রাস করে ফেলছে। আমি তার মুগ্ধতা থেকে বের হয়ে আসতে পারছি না। তুমি মেয়েটাকে আমার কাছে এনে সে। তা না হলে আমি শ্বাসরুদ্ধ হয়ে পরকালে গমন করব। মেয়েটার সাথে কথা বলে না পারার যন্ত্রনায় বাকরুদ্ধ হয়ে যাব। মেয়েটাকে না পাবার শূন্যতায় পাগল হয়ে শহরের অলিতে-গলিতে ঘুরে বেড়াব। আমার জীবনের কোনো ইচ্ছে তুই অপূর্ণ রাখিসনি। অপূর্ণতার জীবনে আমার সবকিছু পরিপূর্ণ করে দিয়েছিস তুই। শেষ বারের মতো তুমি আমাকে আমার মুগ্ধতাকে আমার কাছে এনে দে। মিরাজুলের কথায় দু-হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নিল মুনতাসিম। সে মনে মনে যা আশঙ্কা করেছিল। সেটাই হলো। সেদিন মিরাজুলই মেহেভীনকে পিছু করতে করতে এসেছিল। মুনতাসিম নিজের ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ করল। চোয়াল শক্ত করে বলল,

–তুই যেটা চাইছিস। সেটা আমার পক্ষে দেওয়া কখনোই সম্ভব না। তুই তার থেকে ভালো মেয়ে পাবি। চেনা নেই জানা নেই। হঠাৎ করে একটা মেয়েকে দেখলি আর প্রেমে পড়ে গেলি। মেয়েটার সম্পর্ক খোঁজ খবর নিবি না। মেয়েটা বিবাহিত নাকি অবিবাহিত। মেয়েটা ভালো নাকি খারাপ। কোনো কিছুই তুমি জানিস না। তুই সেই মেয়ের আশা বাদ দে। আর নিজের আশেপাশে দেখে ভালো মেয়ে খুঁজে নে।

–তুই বুঝতে পারছিস না। আমার ঐ মেয়েকেই চাই। ও মেয়ে যদি আমার না হয়। তাহলে আমি কারো হতে দিব না। আমার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত তাকে ভালোবেসে যাব। তার মুগ্ধতা আমার হৃদয়ের গহীনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছে। আমি সেই মুগ্ধতা কিভাবে কাটিয়ে উঠব ভাবছিস। আমি থাকতে ও মেয়ে অন্য কারো হতে পারবে না মিলিয়ে নিস।

–তাহলে তোকেই সরিয়ে দেই। কি দরকার শুধু শুধু ঝামেলা রেখে। মুনতাসিনেম কথায় ক্ষোভ দেখাল। নিজের প্রেয়সীর প্রতি অন্য কারো অধিকারবোধ সহ্য হচ্ছে না তার। হারিয়ে ফেলার ভয় কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে তাকে। না পেয়ে হারানোর যন্ত্রনা সহ্য করা যায়। কিন্তু পেয়ে হারানোর যন্ত্রনা সহ্য করার চেয়ে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করা ঢের ভালো। মুনতাসিম কল কেটে দিয়ে দ্রুত বাসা থেকে বের হয়ে গেল।

মেহেভীন বেলকনিতে বসে কিছু কাগজপত্র দেখছিল। তখনই পেছনে আরো উপস্থিতি টের পায়। আজকাল মানুষটাকে চিনতে তার বেশি সময় লাগে না। মানুষটা তার আশেপাশে থাকলে অদ্ভুত এক অনুভূতি কাজ করে। মুনতাসিম কিছুটা নম্র কণ্ঠে বলল,

–আমি আপনার পাশে বসতে পারি ম্যাডাম?

–বিকেলে আপনাকে কি বলেছিলাম। আমার কথা আপনি বুঝেননি নাকি বুঝেও না বোঝার ভান ধরছেন।

–আপনি বললেই আপনার পিছু নেওয়া ছেড়ে দিব। এত ভালো ছেলে আমি না বুঝছেন।

–কেন এসেছেন এখানে?

“যদি পারতাম আপনাকে বুকের মধ্যে লুকিয়ে রাখতাম। যেন অন্য কারো দৃষ্টি আপনার উপরে না পরে। আপনাকে হারানোর ভয়ে হতাম পাষাণ। বেঁধে রাখতাম আমার ভালোবাসার শিকলে। যেন অভিমান হলে-ও আপনি আমায় ছেড়ে যেতে না পারেন।” হতভম্ব হয়ে গেল মেহেভীন। তবে একটু সুখানুভূতি হচ্ছে হৃদয়ের গহীনে। এই যে সে রাগ করে আর মানুষটা তার রাগ ভাঙাতে চলে আসে। এই জিনিসটা মেহেভীনের ভেতরটা বেশি করে কাবু করছে। মানুষটা সব সময় এমন থাকবে তো। পরে পরিস্থিতির দোহাই দিয়ে দূরে সরে যাবে না তো আবার। আমার ভিষণ ভয় হারিয়ে ফেলার ভয়। আমি মানুষকে ভিষণ ভাবে ভয় করি। তারা নির্মম ভাবে আঘাত দিয়েও অপরাধ বোধে ভুগে না।

–ছন্দটা সুন্দর ছিল না ম্যাডাম। আমার একটা বান্ধবী আমাকে পাঠিয়েছে। আমার ভালো লেগেছে। তাই আমি আপনাকে শোনালাম। মুহুর্তের মাঝে মেহেভীনের মুখশ্রী গম্ভীর রুপ ধারন করল। সে উৎসুক দৃষ্টিতে মুনতাসিমের দিকে দৃষ্টিপাত করে আছে। কিছুটা গম্ভীর কণ্ঠে বলল,

–আপনার আবার বান্ধবীও আছে। ছেলে মানুষ মানেই তো চরিত্রহীন। এজন্য ছেলে মানুষকে আমার একদম বিশ্বাস হয় না। কতগুলো মানুষের সাথে এভাবে ফ্লাট করে বেড়ান। চরিত্রহীন কথাটা কর্ণকুহরে আসতেই ক্রোধে সমস্ত শরীর হুংকার দিয়ে উঠল। একজন চরিত্রবান মানুষ সব সহ্য করতে পারে। কিন্তু তার চরিত্র নিয়ে কথা বললে, কলিজায় আঘাত লাগে। মুনতাসিমের হুংকারের মেহেভীনের সমস্ত শরীর কেঁপে উঠল। মুহুর্তের মাঝে অন্য এক মুনতাসিমকে আবিষ্কার করল মেহেভীন। এই মুনতাসিমের সাথে সে পরিচিত না। মুনতাসিম মেহেভীনের কিছুটা কাছে এগিয়ে গেল। মুনতাসিমের উত্তপ্ত গাঢ় নিঃশ্বাস সে খুব কাছ থেকে অনুভব করতে পারছে। মুনতাসিম কিছুটা শাসানোর ভঙ্গিতে বলল,

–আমাকে মেরে রক্তাক্ত করে দিন। তবুও কণ্ঠনালি দিয়ে একটা বাক্য বের হবে না। যদি কেউ আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলে, তাহলে আমার সমস্ত শরীর দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে। সেই আগুনে সানের মানুষটাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দিতে ইচ্ছে করে। আপনি এমন কিছু করবেন না মেয়ে। আপনার জ্বালিয়ে দেওয়া আগুনে, আপনাকেই জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দগ্ধ করে দিব। আজ প্রথম বলেছেন। তাই ক্ষমার যোগ্য মনে করে ক্ষমা করে দিলাম। দ্বিতীয় দিন এমন ভুল করলে আপনাকে ধংস করে দিব। সাথে নিজেও ধংস হয়ে যাব। আপনার দু’টি পা এগিয়ে দিন মেয়ে। মেহেভীন বাকরূদ্ধ হয়ে গেল। ক্ষণে ক্ষণে কথা বলার শক্তি হারাচ্ছে সে। মুনতাসিম আবার হুংকার ছাড়লে কাঁপা কাঁপা শরীর নিয়ে পা দু’টি এগিয়ে দিল। মুনতাসিম মেহেভীনের দিকে না তাকিয়ে মেহেভীনের পায়ে নুপুর পড়িয়ে দিয়ে চলে গেল। যাবার আগে বলে গেল। এসেছিলাম ভালোবাসা নিয়ে, বিষাদ সাথে দিয়ে ফেরত পাঠালেন কাজটা আপনি ঠিক করলেন না ম্যাডাম।

চলবে…..

(আজ অন্তত বলবেন ছোট হয়েছে। আর বলব না এক হাজার রেসপন্স করে দাও। এর জন্য আমাকে কথা শোনাও তোমরা। চুপ থাকব। যেদিন এক হাজার রেসপন্স হবে। আমার কথা মতো সেদিনই তোমরা গল্প পাবে। সেটা আজ হোক বা কাল কি’বা তিন দিন পর। যেদিন হবে সেদিনই গল্প দিব ইনশাআল্লাহ। শব্দসংখ্যাঃ১৮০০)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here