#গহন_কুসুম_কুঞ্জে
৩০.
স্বরূপ ভোরের দিকে বারান্দায় রকিং চেয়ারে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল। যখন ঘুম ভাঙল তখন রোদ উঠে গেছে। তড়িঘড়ি করে ঘরে ঢুকে ঘড়ি দেখে মাথায় হাত দিল। দশটা বাজে! কত দেরি হয়ে গেল! কিভাবে টের পেল না বুঝতে পারল না স্বরূপ। এমন কখনো হয় না তার সাথে। অবশ্য একটা কারন আছে, সে খুব অদ্ভূত একটা স্বপ্ন দেখছিল।
স্বপ্নে সে একটা ঝর্ণার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। ঝর্ণার পানি অত্যন্ত স্বচ্ছ। নিচের কালচে পাথর দেখা যাচ্ছে। ঝর্ণার পাশে চমৎকার শুভ্র রঙের একটা ফুল ফুটে আছে। জায়গাটায় তার মতোই অসংখ্য দর্শনার্থী। তারা সবাই ফুল তোলার চেষ্টা করছে। কিন্তু ফুলটা এমন জায়গায় ফুটেছে যেখানে যাবার পথ অসম্ভব পিচ্ছিল। কেউই সফল হচ্ছে না৷ স্বরূপ নিজেও গেল। বেশ কয়েকবার পিছল খেতে খেতেও আশ্চর্যজনকভাবে ফুলটা পর্যন্ত পৌঁছে গেল সে। তুলে নিল হাতে। তার চারপাশ যেন আলোকিত হয়ে উঠল ফুলের সৌন্দর্যে। সে জিজ্ঞেস করল, “এই ফুলের নাম কী?” কেউ একজন উত্তর দিল, “তনয়া।” স্বরূপ তনয়াকে নিয়ে ফেরার চেষ্টা করল। কিন্তু এবার আর আগের মতো পথটা সহজ মনে হচ্ছে না। মনে হচ্ছে ফিরতে গেলেই সে পিছলে যাবে। ফুলটা পড়ে যাবে হাত থেকে। কিছুতেই এটাকে হাতছাড়া করা যাবে না।
ড্রাইভ করতে করতে স্বপ্নটাই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল স্বরূপের। এত জীবন্ত স্বপ্ন সে বহুদিন দেখেনি। স্বপ্ন এত স্পষ্ট মনেও থাকে না, এটা মনে আছে। যেন একটু আগেই সে সেই পাহাড়ের পাশে ঝর্ণার ধারে ছিল।
অফিসে ঢুকে একগাদা কাজের মধ্যে ডুবে যাবার আগ পর্যন্ত স্বপ্নটা স্বরূপকে ভাবাল। তারপর একসময় ভুলে গেল সবকিছু।
লাঞ্চটাইমে স্বরূপের মনে পড়ল গতকাল তনয়ার মা ফোন করেছিলেন। তাকে কলব্যাক করা দরকার। সে করিডোরে একাকী একটা কোন বেছে নিয়ে কল করল। কিন্তু কলটা কেটে দেয়া হলো। সে আরও কয়েকবার চেষ্টা করল। প্রতিবারই একবার রিং বাজার পর কেটে দেয়া হচ্ছে। স্বরূপের মনে হলো কাজটা তনয়ার। সে এবার তনয়ার মোবাইলে কল করল। একই ঘটনা ঘটল। কল কেটে দিচ্ছে বারবার। “আচ্ছা, বলো না কথা। দেখি কতদিন না বলে থাকতে পারো।” নিজের মনেই বলল স্বরূপ৷ তারপর খেতে চলে গেল। সকালে না খাওয়ায় প্রচন্ড ক্ষুধা লেগেছিল। কিন্তু ক্যান্টিনের খাবার আজ একেবারই খাওয়া যাচ্ছে না।
মাঝে অনেকদিন তনয়া তাকে বাসার খাবার প্যাক করে দিয়েছে৷ তাতেই অভ্যাস খারাপ হয়ে গেছে। নইলে এই ক্যান্টিনের খাবার সে গত কয়েক বছর ধরে সোনামুখ করে খেয়ে আসছিল৷ স্বরূপের মনে হলো, মানুষের বেশি আরাম পাওয়া উচিত না। আরাম তার স্বভাবচরিত্র বিগড়ে দেয়। মাছের কাটলেটের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলল সে। এই জিনিস তনয়া একটু বেশিই ভালো বানায়।
*
তনয়ার জ্বর ভোরের দিকে কমেছে। সারারাত মা জেগে পাশে বসেছিলেন। তনয়া ভোরের দিকে উঠে দেখেছে মা খাটের রেলিংয়ে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে আছেন। মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে তনয়ার মনে হয়েছে, পৃথিবীতে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা শুধুমাত্র মা বাবার পক্ষেই সম্ভব। এরা না থাকলে আর কেউই রইবে না তার।
জ্বর আর এলো না। সে সকালে ঘিয়ে ভাজা পরোটা আরাম করে খেল। তারপর এক কাপ চা খেল টেলিভিশন দেখতে দেখতে। স্বরূপের চিন্তা জোর করে মাথা থেকে সরিয়ে রাখল।
মায়ের সাথেও অনেকক্ষণ গল্প হলো এরপর। কিন্তু স্বরূপের কথা না সে তুলল, না মা এই নিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করলেন। স্বস্তি পেল তনয়া। স্বরূপের ব্যবহারের কথা তাদের বললে তারা মোটেও খুশি হবেন না। আরও চিন্তায় পড়ে যাবেন। তারচেয়ে ভাবুক না সে ঝগড়া করে এসেছে৷
দুপুরের দিকে মায়ের মোবাইলে স্বরূপের কলটা দেখে চমকে গেল তনয়া। মা তখন গোসলে। সে মায়ের ঘরের জানালার পাশে বসে আচার খাচ্ছিল। হঠাৎ জনাবের ফোন। ওর নামটা দেখেই গা জ্বলে গেল তনয়ার। তাকে ফোন করার প্রয়োজন মনে করেনি। ওই ছেলে তো জানেও না সে বাপের বাড়িতে এসেছে নাকি মরে গেছে! জানার চেষ্টাও করেনি। এখন এসেছে ফোন করতে। কোন দুঃখে করেছে কে জানে! কিছু জানতে হবে না ওর। ও থাকুক ওর স্পেস নিয়ে, রাগ নিয়ে, অতীত নিয়ে। তনয়া কল কেটে দিল।
বিকেলের দিকে সে আকাশ দেখছিল। পাশের বাড়ির একঝাঁক কবুতর তখন আকাশজুড়ে ঘুরে ঘুরে উঠে যাচ্ছে। কখনো অনেক ওপরে উঠে যাচ্ছে, আবার কখনো নিচে নেমে আসছে। এদের দেখতে দেখতে হঠাৎই সেই রাতের ঘটনা চোখের সামনে ভেসে উঠল। আবারও যেন সে ফিরে গেল সেখানে। স্বরূপের হাত ধরার পর সে তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল তাকে। চমকে উঠল তনয়া। ফিরে এলো বাস্তবে। বাবার বাড়ির বারান্দায়, যেখান থেকে কবুতরের ওড়াউড়ি দেখা যায়। না, স্বরূপ কোথাও নেই।
*
সন্ধ্যার মুখে বাসায় ঢুকল স্বরূপ৷ ব্যাগ রেখে ফ্রেশ হয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে সন্ধ্যেটা দেখল মনোযোগ দিয়ে। কোনো পরিবর্তন হয়েছে কি তার জীবনের? পুরো ফ্ল্যাটটা খাঁ খাঁ করছে। যেন ভেতরের দিকে তাকালে তাকে গিলে খেতে আসবে৷ সে একা একা বহুদিন এখানে থেকেছে। কখনো এমন লাগেনি।
একটা গোলাপ গাছে নতুন ফুল এসেছে৷ চমৎকার প্যাটার্ন! শৈশবে এর রঙ থাকে হলদেটে আর কমলার মিশেলে, মাঝবয়সে হতে থাকে গোলাপি আর ঝরে যাবার আগে হয় রক্তের মতো টকটকে। তনয়া প্রতিটা ফেজের ছবি তুলে রাখে। সেও তুলে রাখল। তনয়া ফিরতে ফিরতে হয়তো রঙটা অন্যরকম হয়ে যাবে৷ সে মোবাইলটা হাতে নিয়ে আরেকবার কল করল। এবারও কলটা কেটে দেয়া হলো।
স্বরূপের আজ আর রাঁধতে হলো না। দূরী খালাকে বলে রেখেছিল, তনয়া যতদিন না থাকে ততদিন আগের মতো রেঁধে রেখে যেতে। সে শুধু সবকিছু গরম করে নিল। একটা কাঁচামরিচও ধুয়ে নিল প্লেটে। এটার অভ্যাস তাকে কে করিয়েছে? মনে করতে চাইল না স্বরূপ। একটা জিনিস নিয়ে সারাক্ষণ ভাবার তো কোনো মানে নেই।
সে আগে টিভি দেখতে দেখতে খেত। তনয়া জোর করে টেবিলে বসে খাওয়ার অভ্যাস করিয়েছে৷ এখন আর খাবার সময় টিভি দেখতেও ইচ্ছে করে না৷
আবারও তনয়া! জোর করে চিন্তাটা দূর করার চেষ্টা করল সে। অফিসের কাজগুলোর কথা ভাবতে লাগল। মা কেমন আছেন? ক’দিন মায়ের সাথে কথা হচ্ছে না। মাও কল করছেন না, কারন কী?
প্লেট ধুয়ে রেখে এসে মোবাইল হাতে নিল মাকে কল করতে। ডায়াল করে কানে দিতেই কয়েকবার রিং হয়ে কেটে গিয়ে নারীকণ্ঠ বলতে থাকল, “The number you have dialled is busy now…” অবাক হয়ে সে স্ক্রিনের দিকে তাকাল। মায়ের বদলে তনয়াকে ফোন করেছে। সবকিছুর একটা লিমিট থাকে। সে ফোনটা বিছানায় ছুঁড়ে ফেলল।
*
রং নাম্বারে কলটা আজ তৃতীয়বারের মতো এলো। মিলি ঘুম জড়ানো গলায় রিসিভ করে বলল, “কে বলছেন?”
ওপাশ থেকে মৃদু একটা স্বর বলল, “ডিসটার্ব করলাম?”
মিলি নাম্বারটা খেয়াল করল। হ্যাঁ এটাই৷ ফোন করে হাবিজাবি বকবক করে। সম্ভবত এই লোকের কোনো কাজকর্ম নেই। তার নাম্বার কোথায় পেয়েছে কে জানে? দুনিয়াটা ফালতু লোকে ভরে গেছে। সে কথা বাড়াল না। কল কেটে দিয়ে নাম্বারটা ব্ল্যাকলিস্টে ফেলে দিল।
আজকের ঘুমটা তার ভালো হয়েছে। সেই পুরানো ঘর, পুরানো বিছানা, নরম কোলবালিশ, এসির পছন্দমতো টেম্পারেচার, দক্ষিণের জানালা, হালকা রঙের পর্দা, ড্রেসিং টেবিলের বিশাল আয়না, সব আগের মতোই আছে। গত দু’রাত মা বাবার চিন্তায় ঘুম হয়নি। তবে আজ আর চিন্তা নেই। তাদের সে বলে ফেলেছে, সাফাতের সাথে থাকতে ভালো লাগছে না৷ কয়েকদিন আলাদা থাকবে মনের দূরত্ব কমিয়ে নিতে। বাবা মা এত স্বাভাবিকভাবে নিলেন যে মিলির বিশ্বাস হতে চায়নি। সে আবারও বলেছিল, যতদিন ইচ্ছে থাকব কিন্তু! প্রশ্ন করতে পারবে না। ওরা খুশি হয়ে রাজি হয়েছে। মেয়েকে কাছে পাবার লোভেই হয়তো। কেন যে এতদিন শুধু শুধু ভয় পাচ্ছিল!
ফোনটা আরেকবার চেক করল সে। তনয়ার পাঠানো ফিরতি মেসেজটা সে কতবার পড়েছে জানে না। তবুও পড়তে ইচ্ছে করে। তনয়া লিখেছে,
“আপু, তোমার দুঃখিত হবার কিছু নেই। আমি তোমার ওপর কোনো রাগ করিনি, রাগ পুষে রাখার প্রশ্নই আসে না। তোমার জন্য আমাদের মধ্যে কিছু হয়নি এটা যেমন বলা যায় না, আবার তোমার জন্যই সব হয়েছে সেটাও বলা যায় না। তুমি পরোক্ষভাবে ছিলে, তবে সমস্যাটা তোমার উপস্থিতি নয়, তোমার পরিস্থিতি ছিল। তোমার ঘটনাটা আমার সাথে তোমার বন্ধুর সম্পর্কটার আসল চেহারা বুঝিয়ে দিয়েছে। ওপর দিয়ে সেটা ভীষণ সুন্দর মোড়কে ঢাকা হলেও ভেতরটা ফাঁপা ছিল। তুমি না এলে বুঝতেই পারতাম না। ধোঁকায় থেকে যেতাম। তুমি বরং আমার উপকার করেছ। সেদিন যে বললে, ভালো হয়ে থাকলে মানুষ সস্তা ভেবে বসে। তুমি জানো কথাটা কত দামি?
তোমার সাথে আমার একটা মিল আছে। তুমি আমি দুজনেই বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। আদরটা তাই অনেক বেশি। সেজন্যই হয়তো বুঝেছিলে আমি কষ্ট পাব। খুব দ্রুতই বুঝে গেছি বলে বেঁচে গেছি নাকি হেরে গেছি জানি না, তবে ভালোই হয়েছে৷ অন্ধ হয়ে কতদিন থাকতাম বলো! তোমার জন্য আমি অনেক দোয়া করি৷ তুমিও আমার জন্য দোয়া করো।”
মোবাইল রেখে আরেকবার চোখ বুজবে, তখনই আবার ফোন বাজল। অচেনা নম্বর। ধরল সে, “হ্যালো।”
কোনো কথা শোনা গেল না। তার পছন্দের একটা মিউজিক শোনা গেল। গিটার বাজাচ্ছে কেউ। সুন্দর সুর। গুনগুন করছে সেই সাথে। কিছুক্ষণ পর কথা বলল লোকটা। সেই একই লোক। “ব্লক করে দিলেন যে তখন? এবারও যাতে না করেন সেজন্য ঘুষ দিয়ে নিলাম৷ পছন্দ হয়েছে?”
মিলি জিজ্ঞেস করল, “কে আপনি?”
“পরিচয় না জানলে কথা বলা যায় না?”
“না।”
“ধরুন আমার নাম হিমালয়।”
“নাম ধরাধরির কোনো প্রয়োজন দেখছি না৷ ফালতু কথা বলতে আমাকে ফোন করবেন না। বাজে কথা বলে নষ্ট করার মতো সময় সবার থাকে না।”
কল কেটে এই নাম্বারটাও ব্লক করল মিলি। এরকম গাদাগুচ্ছের রং নাম্বার, লাইন ধরে পড়ে থাকা ছেলে সামাল দেবার অভ্যাস তার আছে। ছোটোবেলা থেকে এই কাজ করে সে অভ্যস্ত এবং বিরক্ত৷ কিন্তু বিয়ের পর এসব একেবারেই কমে গিয়েছিল। সে কারো দিকে ফিরে চেয়েও দেখত না। লোকে তাকে অহংকারী ভেবে দূরে দূরে থাকত। কিন্তু হঠাৎ এই লোক উদয় হলো কোথা থেকে? লোকটা কি জানে সে এখন সাফাতের সাথে থাকছে না? জানল কেমন করে জানে? এই কথা তার কাছের বন্ধুরা ব্যতীত আর কারোই জানার কথা নয়। লোকটা তবে কে?
*
আজ তার নবম নির্ঘুম রাত। সময়ের সাথে সাথে প্রতি রাতে তার দীর্ঘশ্বাস ভারী হয়েছে। তনয়াকে সে আনতে যায়নি, দুদিন ফোন করার পর প্রতিবারই কেটে দিলে আর ফোনও করেনি। সে অভ্যস্ত হবার চেষ্টা করছে। আগের মতো হয়ে যাবার প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না। এতটাই জুড়ে বসেছিল মেয়েটা? প্রতিরাতে প্রায় ভোরের দিকে আবছা তন্দ্রামতো আসে। তন্দ্রার ঘোরে সে তনয়াকে ছুঁতে হাত বাড়ায়। কিন্তু হাতে ঠেকে শূন্য বিছানা। একটা কাঁটার মতো বুকে বিঁধে জেগে উঠছে মেয়েটা। বাকি রাত স্বরূপের কেটে যায় বারান্দায় রকিং চেয়ারে।
দুদিন ঘুমের ঔষধ খাবার চেষ্টা করেছিল। তাতে হিতে বিপরীত হয়েছে। দুঃস্বপ্ন দেখে বারবার ঘুম ভেঙেছে তার। সাথে মাথায় জমা হয়েছে তীব্র ব্যথা। প্রতিবার একই স্বপ্ন। সে একটা পাথরে পা দিয়ে পিছলে পড়ে যাচ্ছে অতলে। কেউ একজন তাকে টেনে তুলছে। কিন্তু হাতের ফুলটা ভেসে যাচ্ছে স্রোতের টানে।
স্বরূপ আজও স্বপ্নটা দেখল। ঘুমিয়েছিল কখন মনে পড়ছে না। ঘড়িতে তিনটে দশ বাজে। এত রাতে কি তনয়া জেগে? একবার কথা বলতে ইচ্ছে করছে। সে ডায়াল করল তনয়ার নাম্বারে। একবার বাজল, তারপর সেই চিরচেনা স্বর জানিয়ে দিল ওপাশের মানুষটি ব্যস্ত। পরে চেষ্টা করতে। তনয়া কি জেগে ছিল তবে? সে কি মেয়েটাকে একটু বেশিই কষ্ট দিয়ে ফেলেছে?
স্পেস চেয়েছিল সে। কিন্তু সেই স্পেস তাকে হা করে গিলে খেতে আসবে তা কে জানত!
(চলবে)
সুমাইয়া আমান নিতু