অনুভূতিরা_শব্দহীন লেখনীতে: #ইসরাত_জাহান_তন্বী ঊনপঞ্চাশৎ পর্ব (৪৯ পর্ব)

0
337

#অনুভূতিরা_শব্দহীন
লেখনীতে: #ইসরাত_জাহান_তন্বী

ঊনপঞ্চাশৎ পর্ব (৪৯ পর্ব)

রাত নয়টা, রাস্তার জ্যামের কারণে বাসায় পৌঁছাতে অনেক দেরি হয়ে গেছে মৃত্তিকার । বাসায় এসে দরজা খোলা দেখে বুঝতে পারে ইমতিয়াজ ইতিমধ্যে বাসায় চলে এসেছে। মৃত্তিকা একটা ঢোক গিলে দরজা খুলতে গিয়ে বুঝলো ভেতর থেকে ছিটকিনি লাগানো।

বাধ্য হয়ে কলিং বেল বাজায় মৃত্তিকা। ইমতিয়াজ বোধহয় দরজার কাছেই দাঁড়িয়ে ছিল, সঙ্গে সঙ্গেই দরজা খুলে দেয় সে।

ইমতিয়াজ মাথা হেলিয়ে বলে,
“আসো।”

মৃত্তিকা ধীরে ধীরে ভিতরে আসে। ইমতিয়াজ শব্দ করে দরজা বন্ধ করে দিয়ে ভিতরে আসে। মৃত্তিকা বেডরুমে যাওয়ার সময় ইমতিয়াজ বলে,
“দাঁড়াও।”

মৃত্তিকা থমকে দাঁড়ায়, তবে ফিরে তাকায় না। ইমতিয়াজ একটু শ°ক্ত ভাষায় বলল,
“কোথায় গিয়েছিলে?”

মৃত্তিকা আবারো ঢোক গিলে। ফিরে দাঁড়িয়ে বলল,
“আশেপাশেই ছিলাম, একটু ঘুরাঘুরি করেছি। একই জায়গায় বসে থেকে আর ভালো লাগছে না।”

ইমতিয়াজ হেসে এগিয়ে আসে। বলে,
“আমাকে বলতে পারতে, ঘুরতে নিয়ে যেতাম।”
“কোথায় নিয়ে যেতেন?”

ইমতিয়াজ ঠোঁট উলটে মাথা নেড়ে বলল,
“চট্টগ্রামে, আমার গ্রামে ঘুরে আসতে।”

মৃত্তিকা এগিয়ে এসে দুই হাতে ইমতিয়াজের গলা জড়িয়ে ধরে বলল,
“তবে কি আগামী মাসে যাওয়া হতে পারে?”
“এ মাসে কি সমস্যা?”
“তেমন কিছু না, তবে পরে হলে ভালো হয়।”
“ঠিক আছে।”

ইমতিয়াজ একটু সি°গা°রেটের গন্ধ পায়। মৃত্তিকার হাতটা কাছে আসতে গন্ধটা পেয়েছে সে। নিজের অনুমান যাচাই করার জন্য সে মৃত্তিকার দুহাত টে°নে হাতের তালুতে চুমো দেয়। এ সময় আরো তীব্রভাবে গন্ধ অনুভব করে।

“কি হচ্ছে এসব?”

মৃত্তিকার কথায় ইমতিয়াজ মাথা নেড়ে বোঝায়, কিছু না। মৃত্তিকা ফ্রেশ হতে চলে যায়।

ইমতিয়াজ এখনো স্থির দাঁড়িয়ে আছে। নিজে নিজেই বলে,
“কি করছো তুমি?”

আবারও সে ফাহাদের নাম্বারে ডায়াল করে। সারাদিনে কয়েকবার চেষ্টা করেও ফাহাদের সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ করতে পারেনি সে। শুধু আজ নয় গত তিনদিন থেকে ফাহাদ লা°পাত্তা। না ফোন ধরছে, আর না কল ব্যাক করছে।

এবার সে বাধ্য হয়ে কল দেয় শরীফকে। সবটা জানানোর পর শরীফ বলে,
“আচ্ছা আমি ফাহাদের সাথে কথা বলছি।”
“আমার সাথে জলদি দেখা করতে বলুন। আমি চাই না মৃত্তিকা নতুন করে কোনো ভুল করুক।”

কিছুক্ষণ চুপ থেকে শরীফ বলে,
“ওর ভুল আমারও কাম্য নয়।”
______________________________________

আহনাফ কোনো একটা বিষয় নিয়ে ব্যস্ত আছে। কলেজের কয়েকজন স্যার ম্যাডামের সাথে ফোনে কথা বলেছে। সারাহ্ কয়েকবার ওর আশেপাশে ঘুরে গেল, কিন্তু কারণটা বুঝতে পারলো না।

“ঐশী?”

আহনাফের ডাকে সারাহ্ রুমে আসে। বলে,
“কি?”
“তুমি কি কিছু বলবে?”
“না তো।”
সারাহ্ মাথা নেড়ে জবাব দিল।

আহনাফ হেসে হাত দিয়ে ইশারা করে বলল,
“কাছে আসো।”

সারাহ্ সরে দরজার কাছে চলে গেল। বলল,
“কি বলবেন বলেন?”

আহনাফ হো হো করে হেসে উঠে,
“আরে, ভ°য় পাচ্ছ কেন?”
“কারণ আপনি লোক ভালো না।”

আহনাফ উঠে এসে ওকে টে°নে কাছে এনে বলল,
“তোমার ছুটির ব্যবস্থা করছিলাম।”
“ছুটির ব্যবস্থা? আমি বললাম তো এতো তাড়াতাড়ি ছুটি দেওয়া হয় না।”

সারাহ্ চেঁ°চিয়ে উঠলে আহনাফ ওর মুখ চেপে ধরে। আহনাফ বলে,
“চেঁ°চামেচি করবা না।”

সারাহ্ নিচুস্বরে বলল,
“মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাসের হয়, আর এখন আমার মাত্র সাড়ে তিন মাসের কিছু বেশি চলছে। এখন থেকে ছুটি শুরু হলে কতদিন আমার ছুটি শেষ হবে? সে খেয়াল আছে?”

আহনাফ ডানহাতের তর্জনী আঙুল দিয়ে সারাহ্ কপালে গালে স্পর্শ করে বলে,
“খুব খেয়াল আছে। সেটার জন্য কথা বলছিলাম। দ্বিতীয়বারে নেওয়া সম্ভব কিনা? যতটুকু জানা গেছে কিছুদিন বেশি নেওয়া যাবে।”

সারাহ্ ওর আঙুলে কা°ম°ড় দেয়। আহনাফ “এই” বলে আঙুল সরায়। সারাহ্ হেসে বলে,
“কিছুদিন-টিছুদিন আমার হবে না। আমি আরো পরে ছুটি নিবো। (একটু থেমে) প্রয়োজনে আমি চাকরি ছেড়ে দিবো।”

আহনাফ কপাল কুঁচকে তাকালে সারাহ্ বলে,
“মায়েরা সন্তানের জন্য সব করতে পারে। আর আমি তো সামান্য চাকরি ছাড়বো। এটা কোন ব্যাপার না আমার জন্য।”

আহনাফ অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো সারাহ্-র দিকে। এ এক অচেনা সারাহ্।
______________________________________

সকালে অফিসে না গিয়ে ইমতিয়াজ বাসার কাছেই একটা চায়ের দোকানে বসে থাকে। উদ্দেশ্য মৃত্তিকা কোথায় যায়, কি করে তা দেখা।

মৃত্তিকাকে বাসা থেকে বের হতে দেখে সে বুঝতে পারে তার উদ্দেশ্য সফল হওয়ার পথে। হেঁটে কিছুদূর গিয়ে মৃত্তিকা দোকান থেকে এক প্যাকেট সি°গা°রেট কিনে। ইমতিয়াজ আগ্রহ নিয়ে তাকায়। মৃত্তিকা সি°গা°রেট খায় তা এতদিনে সে টের পায়নি। হঠাৎ করে এ অভ্যাস শুরু হওয়ার কোনো কারণ নেই।

মৃত্তিকা আবারও বাসায় চলে যায়। ইমতিয়াজ শরীফকে কল দেয়।
“ফাহাদের কোনো খোঁজ পাওয়া গেছে?”
“না, আমার কল রিসিভ করেনি।”

ইমতিয়াজ মাথা নেড়ে জিজ্ঞাসা করে,
“মৃত্তিকা সি°গা°রেট খায়?”

ইমতিয়াজের প্রশ্নে শরীফ খুব অবাক হয় এবং অবাক হওয়াটা খুব স্বাভাবিক। মেয়েকে এতটা খারাপ অভ্যাসের দিকে ছুঁ°ড়ে ফেলার মতো মানুষ তো রিপা বেগম ছিলেন না। তবে মৃত্তিকা এটা কেন করবে?

শরীফ একটু বি°ভ্রা°ন্তি নিয়েই উত্তর দেয়,
“আমার জানামতে তো না।”
“আমি মাত্র ওকে সি°গা°রেট কিনতে দেখেছি।”

শরীফ চুপ থাকে। কিছু বলার মত অবস্থায় সে নেই, এতোটাই অবাক হয়েছে সে। ইমতিয়াজ আবারও জিজ্ঞাসা করে,
“ফাহাদ কি আপনাকে বোকা বানানোর কোনো সম্ভাবনা আছে?”
“সে অনেক বছর ধরে আমার সাথে আছে। এরকম কিছু সে কখনোই করেনি। আমার সবচেয়ে বিশ্বস্ত মানুষ ফাহাদ। এজন্যই মিউকোর সাথে আমি ওকে পাঠিয়েছি।”
“বুঝেছি, তাহলে এখন যা করার আমাকে করতে হবে।”

ইমতিয়াজ ফোন রাখে। এবারে নিরবে মৃত্তিকার উপর নজর রাখা ছাড়া আর কোনো উপায় সে খুঁজে পায় না। সে তো আর শরীফের মত মা°ফি°য়া নয় যে নিজের লোক লাগিয়ে দিবে। তার হাতে মৃত্তিকার জন্য বিশ্বস্ত লোক একমাত্র সে নিজে।
______________________________________

দুইদিন পার হয়, জামিলকে সিআইডি হেড কোয়ার্টারে না রেখে নিজের বাসায় রেখেছে গালিব। নিয়মিত প্রচন্ড মা°র°ধর আর ক্ষুধার য°ন্ত্র°ণায় শেষ পর্যন্ত সত্য বলতে রাজি হয় জামিল। আহনাফকে এজন্য খবর দেয় গালিব, আহনাফের সামনেই সত্য প্রকাশ পাওয়া উচিত।

সকাল সকাল খবর পেয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় আহনাফ৷ যতদ্রুত সম্ভব ঢাকায় আসা দরকার, অথচ আজই রাজ্যের জ্যাম রাস্তায় পড়েছে। সামান্য দাউদকান্দির অংশ পার হতেই ঘন্টার পর ঘন্টা সময় যাচ্ছে।

বিরক্তির চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছে আছে আহনাফ। আর কোনো উপায় না দেখে গালিবকে কল দেয় সে।

“রাস্তায় প্রচুর জ্যাম। মনে হয় না আমি বিকালের আগে ঢাকায় পৌঁছাতে পারবো। এক কাজ করেন আপনি সব কথা জেনে নেন। বলা তো যায় না কখন তার মত পাল্টে যায়।”

আহনাফের প্রস্তাবটা খুব একটা খারাপ নয়। গালিব তাই করবে। ফোন রাখতেই তার বাসার কলিং বেল বেজে ওঠে।

গালিব দরজা খুলে দেখে তার খবর দেওয়া দুজন সহকর্মী চলে এসেছে। একজনের সাথে ক্যামেরা আছে। এমনসময় সামনের বাসায় প্রচন্ড চেঁ°চামে°চি শুরু হয়। তিনজনে বেরিয়ে যায়। গালিব বেশ ভালো করেই দরজায় তালা দিয়ে যায়। একটা নয়, দুটো নয়, তিনটা তালা দিয়েছে। ঘরের বাকি দরজা জানলা আগে থেকেই বন্ধ করা। এক কথায় পুরো বাসা সিল করে দিয়েছে।

সামনের বাসার গ্যারেজে আ°গুন লেগেছে। সেটা নেভানোর জন্যই লোক জড়ো হয়েছে আর শোরগোলের উৎস এটাই। ওরাও আ°গুন না নেভানো পর্যন্ত সেখানে থাকে।

তারপর বাসায় ফিরে এসে ওরা অবাক হয়। তিনটা তালা ভা°ঙা, ভেতরে জামিল নেই। জামিল যতদিন বাসায় ছিল, বাসায় এভাবেই তালা দিয়ে অফিসে যেতো গালিব। কোনোদিন কোন সমস্যা হয়নি। তবে আজ কেন?

গালিবের বুঝতে বাকি থাকে না সামনের ঐ আ°গুন পরিকল্পিত। শুধুমাত্র ওদেরকে বাসা থেকে বের করে নেওয়ার জন্য এটা একটা শান্ত মস্তিষ্কের পরিকল্পনা।

“গালিব, ইউ ফুল।”
রাগে নিজেকেই গা°লাগা°লি করছে সে।

এদিকে জামিলকে বাঁচিয়ে নিয়ে এসেছে শাফিন। জামিল শাফিনকে বলে,
“অনেক ধন্যবাদ। ওরা আমাকে যে পরিমাণ মা°রছিল, তাকে আমি ম°রেই যেতাম।”

নিজের চোখ ইশারা করে জামিল বলে,
“এই যে দেখো আহনাফ কি করেছে? আমার চোখটাকে সারা জীবনের মতো অ°ন্ধ করে দিয়েছে।”

শাফিন শান্তভাবে ওর কথা শুনে বলে,
“কিছু বলে দাও নি ওকে?”
“আরে না, তেমন কিছুই বলিনি।”
হাত নেড়ে জবাব দেয় জামিল।

শাফিন ওকে বলে,
“ঠিক আছে, তবে এখন কিছুদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকো।”

জামিল কৃতজ্ঞতা দেখিয়ে শাফিনকে জড়িয়ে ধরে,
“সত্যি তোমার এই ঋণ আমি কোনোদিনও শোধ করতে পারবো না।”

সুযোগটা শাফিন হাতছাড়া করতে চায়নি। ধা°রা°লো ছু°ড়ি জামিলের ঘাড়ে ঢুকিয়ে দেয়, তারপর একই স্থানে ঘুরাতে থাকে। জামিল চিৎকার করে উঠলে, শাফিন তাকে ধা°ক্কা দিয়ে সরিয়ে সেই ছু°ড়িটাই আবার তার গলায় ঢুকিয়ে দেয়। কিছুক্ষণ ছটফট করে শান্ত হয় জামিল। আবারো নড়ে ওঠে। গলা দিয়ে একটা চিকন শব্দের সাথে কিছু পরিমাণ র°ক্ত মুখ ও কা°টাস্থান দিয়ে বের হয়ে আসে।

শাফিন ছু°ড়িটা ফেলে হেসে বলল,
“নিজেকে বাঁচাতে বন্ধুকে মা°রাও অপরাধ নয়। সুতরাং আমি কোনো অপরাধ করিনি।”
______________________________________

দুপুর তিনটা বাজে গালিবের বাসায় এসে সবকিছু শুনে আহনাফ প্রচন্ড রেগে যায়। বেশ উচ্চস্বরে গালিবকে বলে,
“এতোটা বোকা আর কেয়ারলেস কেন আপনারা? ঠিক যে কারণে আমি ওকে আমার বাসায় রাখিনি, সেই ভুলটাই আপনারা করেছেন। আমি আপনাকে বলেছি ওকে বাঁচাতে কেউ আসতে পারে, আমার কথা কি বুঝেননি?”

নিজের বোকামির জন্য নিজেই অনুতপ্ত গালিব। সে এতটা কখনোই ভাবেনি। প্রতিদিন যে অবস্থায় জামিলকে বাসায় রেখে যায়, সে অবস্থায় রেখেছিল। সে কি করে জানবে সামনের ওই ঘটনা পরিকল্পিত?

“আপনাকে সিআইডি অফিসার বানিয়েছে কে? মাথায় গোবর নিয়ে এত উচ্চপদে কিভাবে এসেছেন? লজ্জা থাকলে পদত্যাগ করা উচিত।”

কথা শেষ করে আহনাফ চুপচাপ বের হয়ে যায়। গালিব সত্যিই অনুতপ্ত, মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে সে পদত্যাগ করবে এবং তারপর জামিলকে খুঁজে বের করবে। সাথে এটাও খুঁজে বের করবে জামিলকে পালাতে সাহায্য করেছে কে কে?

আহনাফ বাইরে এসে ইমতিয়াজকে কল করে সকল ঘটনা জানায়। ঘটনা শুনেই ইমতিয়াজ বেরিয়ে পরে আহনাফের সাথে দেখা করার জন্য। গালিব আর তার সহকর্মীরা এখনো কোনো একটা চিহ্নের আশায় হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে। তবে কোনো চিহ্ন শাফিন রেখে যায়নি।
______________________________________

গত দুইদিন মৃত্তিকা বাসা থেকে কোথাও যায়নি, এমনকি অফিসেও না। নিজেকে সে ঘরব°ন্দী করে রেখেছে। কারণ ওর অনুমান যদি ভুল না হয়, তবে ইমতিয়াজ ওকে সন্দেহ করছে।

এ সন্দেহ দূর না হওয়া পর্যন্ত সে কোথাও যাবে না। ফাহাদ ভালো করে অপরূপার উপর নজর রাখছে এ বিষয়ে সে একশ শতাংশ নিশ্চিত। তাই ওদিকে চিন্তা খুব একটা তার নেই। তার সমস্ত চিন্তা ইমতিয়াজকে নিয়ে।

অবশেষে আজ বাসা থেকে বের হয়। ইমতিয়াজ আহনাফের সাথে দেখা করতে গেছে। এরচেয়ে বড় সুযোগ আর পাওয়া যাবে না। দুপুরের সময় হওয়ায় রাস্তায় খুব একটা জ্যাম ছিল না, খুব সহজেই ধানমন্ডি চলে আসে মৃত্তিকা।

বাসায় এসে অপরূপাকে ফ্লোরে শুয়ে ঘুমাতে দেখে। ওর সামনে বসে ফোনে গেমস খেলছিলো ফাহাদ। মৃত্তিকাকে দেখে ফোন রেখে চটপট উঠে যায় দাঁড়ায় সে।

মৃত্তিকা তাকে বলে,
“অন্য রুমে যাও।”
“জি।”
বলে ফাহাদ চলে যায়।

একমগ পানি এনে অপরূপার মুখে ছুঁড়ে মা°রে মৃত্তিকা। হুড়মুড় করে উঠে বসে অপরূপা।
“কে? কে?”

মৃত্তিকা মগ ফেলে দিয়ে বলে,
“কেন হবে তোমার ভাগ্নি ছাড়া? (ব্য°ঙ্গ করে) মামানি।”

“ডোন্ট কল মামানি।”

অপরূপার কথায় মৃত্তিকা হাসে। বলে,
“বিয়ে করেছে মামাকে, তবে মামানি বলবো না? (একটু থেমে) বাই দ্যা ওয়ে, তুমি কে? তোমার পরিচয় কি?”

অপরূপা মৃত্তিকার দিকে তাকিয়ে থাকে। মৃত্তিকা ওর পরিচয় জানতে চাইছে। ও তো একটা পাখি, সুন্দর পাখি, যে সারাটা জীবন টাকার পেছনেই কা°টিয়ে দিয়েছে। নিজের এই রূপ, এই সৌন্দর্য, সবকিছু টাকার জন্য বিলিয়ে দিয়েছে।

“আমার পরিচয় গোপন রাখতেই আমি পছন্দ করি।”

মৃত্তিকা সি°গা°রেটের প্যাকেটটা বের করে সামনে রেখে বলল,
“দেখো, আমার কাছে কিছুই যে গোপন রাখতে পারবে না তা তুমি ইতিমধ্যে বুঝে গেছো। তবে কেন আবার গোপন করতে চাইছো?”

সি°গা°রেট দেখে শুকনো ঢোক গিলে অপরূপা। মৃত্তিকা আবারো হয়তো এগুলো জ্বা°লিয়ে ঘাড়ে, গলায় বা হাতে য°ন্ত্র°ণা দিবে।

“আমি বলবো। তবে আগে একটু পানি দাও।”

মৃত্তিকা বলে,
“একটু আগেই পানি ছুড়ে মে°রেছিলাম। পারলে ওটাই চেটে চেটে খাও।”
“এত নি°ষ্ঠু°র কেন তুমি?”

মৃত্তিকা ফিক করে হেসে বলে,
“আমি নি°ষ্ঠু°র? আর তোমরা কি করেছ? ব°র্ব°রতার সর্বোচ্চ স্তরে চলে গিয়েছো। তোমাদের জন্য এটা কিছুই না। সুতরাং যা জানতে চাইছি, তা না বললে পানির পরিবর্তে আ°গুন পাবে।”

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here