অনুভূতিরা_শব্দহীন লেখনীতে: #ইসরাত_জাহান_তন্বী ষোড়শ পর্ব

0
460

#অনুভূতিরা_শব্দহীন
লেখনীতে: #ইসরাত_জাহান_তন্বী

ষোড়শ পর্ব

অনলাইন ক্লাস শেষে রুমেই বসে আছে আহনাফ। সারাহ্-র সাথে নিজের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টা করে যাচ্ছে সে।

বিয়ে, নিকা, শাদি, বিবাহ- যে নামেই একে ডাকা হোক না কেন মূলত সবটাই এক। দুটো মানুষের মনের মিলন, আ°ত্মার মিলন, ভালোবাসার বন্ধন। পবিত্র এ সম্পর্কের ভালোবাসা নিয়ে কোরআনের অনেক ব্যাখ্যা জানা আছে আহনাফের৷

সারাহ্-র সাথে খারাপ ব্যবহারে সম্পর্ক শুরু করলেও দিনদিন সে একে স্বাভাবিক করে নিয়ে আসতে চেষ্টা চালাচ্ছে।

কিন্তু আজকে সারাহ্-র ঘটানো এমন অপ্রীতিকর ও অপ্রয়োজনীয় ঘটনায় আহনাফ বি°র°ক্ত। প্রচন্ড রেগে আছে সে।

“ঐশী।”
জোর গলায় সারাহ্-কে ডাকে আহনাফ।

রুমে উঁকি দিয়ে সারাহ্ বলে,
“জি।”
“এদিকে এসো।”

সারাহ্ চুপচাপ ভিতরে যায়। আহনাফ নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করছে। সারাহ্ ওর সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই সে উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
“বোর্ডে ওসব কেন লিখেছো?”

সারাহ্ কিছুই হয়নি এমন একটা ভাব দেখিয়ে বলল,
“দেখুন, জাস্ট একটা কথাই তো লিখেছি আর তো কিছু না আর…”

সারাহ্ কথার মাঝেই ধ°ম°ক দেয় আহনাফ।
“আমি একজন সিনিয়র টিচার সারাহ্। ওরা আমার স্টুডেন্ট, বন্ধু না।”

আহনাফের মুখ থেকে ঐশী নাম শুনেই সারাহ্ অভ্যস্ত। হঠাৎ করে সারাহ্ শুনে থতমত খায়। সে আসলে এমন কি বড় অপরাধ করেছে তা বুঝতে পারেনা। মাথানিচু করে ফেলে সারাহ্। আহনাফ বেরিয়ে যায়।

“এই লোক জীবনেও ভালো হবে না। কেমন খিটখিটে মেজাজের লোক।”

আপন মনে আহনাফকে ব°ক°তে থাকে সারাহ্। মুহূর্তের মধ্যেই হেসে উঠে সে। তবুও যে এই রাগি মানুষটাকেই ভালোবাসে সে।
______________________________________

পরদিন সকাল ৮ টা,
সামিহার জন্মদিন আজ। সামিহার নিজের কাছে দিনটা বেশ স্পেশাল। যদিও এখনো পর্যন্ত বাবা ছাড়া আর কেউ তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানায়নি। বিষয়টা বড় কিছু নয়, কারণ কখনোই এসবের জন্য ওর মা ওকে উৎসাহ দেয় না।

কালো আর লালের মিশ্রণের সুতির শাড়ি পড়েছে। ঘন চুলের মোটা বিনুনি একপাশে নিয়ে এসেছে। কালো ও লালের কাচের চুড়ি ডান হাতে পড়েছে আর বাম হাতে পড়েছে কালো ঘড়িটা। চোখের মোটা কাজল, ঠোঁটে লাল লিপস্টিক, যেন কোন বাঙালি বধু সদ্য স্বামীর বাড়ি এসেছে।

“মা, আমি যাচ্ছি।”
নার্গিস পারভিনের থেকে অনুমতি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে ভার্সিটির উদ্দেশ্য। মেট্রোরেলে করে ভার্সিটিতে যেতে ও খুব একটা সময় লাগে না তার, মতিঝিল থেকে সরাসরি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

তানজিমকে ডিপার্টমেন্টের সামনে অপেক্ষা করতে বলে ইতোমধ্যে একটা মেসেজও করে দিয়েছে।

তানজিম ডিপার্টমেন্টের সামনের ফুটপাতে হাঁটছে৷ সামিহা যেহেতু বাইরে থাকতে বলেছে সুতরাং ভিতরে গেলে আজ একটা মা°ই°রও মাটিতে পড়বে না।

আর কারো মনে না থাকলেও তানজিমের ঠিকই ওর জন্মদিনের কথা মনে আছে। একগুচ্ছ লাল গোলাপ নিয়ে অপেক্ষা করছে সামিহার জন্য। সাথে সাথে মনের মধ্যে সাহস যোগাচ্ছে আজ সামিহাকে সে মনের কথা বলবে৷

কিভাবে বলবে তা বারবার অনুশীলন করছে সে। হঠাৎ চোখ পড়ে ওর দিকে হেঁটে আসা সামিহার দিকে। শাড়ির কুঁচি একহাতে একটু উঁচু করে রেখেছে, অন্যহাতে আগলে রেখেছে আঁচলটা।

শাড়ি, চুড়িতে এমন এক অচেনা রূপে সামিহাকে দেখে তানজিমের হৃদপিণ্ড ব°ন্ধ হওয়ার যোগাড়।

সামিহা ওর সামনে এসে বলে,
“চল, চল।”

সামিহা ভিতরে চলে গেল। তানজিম এখনো ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। বুকের বামপাশে হাত দিয়ে বলে,
“এখনো থামিসনি তবে, চলতেছিস?”

সামিহা ফিরে দাঁড়িয়ে বলে,
“তানজিম, আয়।”
“আসি।”

তানজিম ওর পাশাপাশি হলে সামিহা বলে,
“ফুল কার জন্য?”
“এক পাগলীর জন্য।”

সামিহা হেসে বলে,
“ইশ, আজ প্রথমবার পাগলী না হওয়ার জন্য আফসোস হচ্ছে।”

সামিহা এগিয়ে গেল। তানজিম নিজে নিজেই বলে,
“ওফ, আমার পাগলী, এই দোকানের ফুল তোমাকে দেয়া যাবে না।”

ফুলগুলো রাস্তায় অবহেলায় ফেলে দিলো তানজিম। সামিহাকে সারপ্রাইজ দিতে গিয়ে আজ নিজেই সারপ্রাইজ পেয়ে গেছে।

সামিহাকে কিভাবে কি বলবে, প্রায় সবই ভুলে গেছে তানজিম। তালগোল পাকিয়ে গেছে সব। ক্লাস শেষে বাইরে এসে রাস্তার মাঝের ব্যবধায়কে থাকা কাঠগোলাপের গাছ থেকে ফুল সংগ্রহ করতে থাকে তানজিম।

সামিহা ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ওকে ডেকে বলে,
“তানজিম, কি করিস?”

তানজিম ফুলগুলো এনে সামিহার বেনিতে গেঁথে দেয়। সামিহা চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে। তানজিম কাজ শেষে বলে,
“তোকে আজ মুগ্ধ হয়ে দেখেছি সামি। পুরো ক্লাস আমি মনোযোগ দিতে পারিনি। তুই বারবার আমাকে কেন এলোমেলো করছিস?”
______________________________________

কাল থেকে সারাহ্-র সাথে কোনো কথা বলেনি আহনাফ। সারাহ্ও এতোটা জোর করেনি। নিজের ভুল বুঝতে পেরে চুপচাপ ছিল সারাক্ষণ। বোর্ডের লেখাটা এভাবে আহনাফের লজ্জার কারণ হবে তা সারাহ্ বুঝেনি।

কলেজে দুজনে একসাথে এসেছে। তবুও পুরো রাস্তা নিরব ছিল। প্রথম পিরিয়ডে আহনাফের যেখানে ক্লাস ছিল আর দ্বিতীয় পিরিয়ডে সারাহ্-র সেখানেই ক্লাস আছে।

ক্লাসের দিকে যাওয়ার সময় আহনাফের সামনে পড়ে সে। মাথানিচু করে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় আহনাফ বলে,
“ঐশী, আজকে বাসায় যেতে দেরি হবে। ক্লাস শেষে মিটিং আছে। তুমি কি অপেক্ষা করবে?”

সারাহ্ ফিরে তাকিয়ে বলে,
“হুম, করবো।”

আহনাফ মুচকি হেসে হাত দিয়ে ওকে হাসতে ইশারা করে চলে যায়। মনের অজান্তেই হেসে দেয় সারাহ্।

ক্লাসে আজ রসায়ন দ্বিতীয় পত্রে ডু°ব দিয়েছে সে। জৈব রসায়নের কঠিন কঠিন বিক্রিয়া তু°ড়ি মে°রে সহজ করে দিলো সারাহ্। কঠিন বিষয় সহজ করে উপস্থাপন করার কারণেই সারাহ্-কে ছাত্রছাত্রীরা বেশিরভাগই খুব পছন্দ করে।

ক্লাস শেষে বের হওয়ার সময় এক মেয়ে ওর দিকে এগিয়ে এসে বলে,
“মিস?”

সারাহ্ একটু হেসে বলল,
“মিস না বলে ম্যাডাম বলো।”

মেয়েটিও হেসে দেয়। ওদের ম্যাডাম যে এখন মিসেস হয়ে গেছে তা ওরাও জানে। সারাহ্ বলল,
“কি বলবে? বলো।”

মেয়েটি হাতের চকলেট সারাহ্-র দিকে এগিয়ে দেয়। মুখে বলে,
“আপনার জন্য ম্যাডাম।”
“থ্যাংক ইউ। (একটু থেমে) নাম কি তোমার?”
“মাহি।”

সারাহ্ মিষ্টি হাসে। মাহির গাল টে°নে দিয়ে চলে যায়।

সবকিছু এখন তুচ্ছ লাগছে আহনাফের সেই হাসি আর ইশারার কাছে। থাকুক তাহসিনা আহনাফের মনে, কিন্তু এককোনায় সারাহ্-র স্থান হোক।

কলেজের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকায় সে। ধীরে ধীরে মেঘ জমছে, যেকোনো সময় বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।
______________________________________

দুপুরের পর মৃত্তিকা বাসা থেকে বের হয়েছে৷ কাকরাইলে আসাই তার প্রধান উদ্দেশ্য। মামের কবরের কাছে সময় কা°টাবে। উদ্দেশ্য সফল হলো, মামের কবরটা একবারের মতো দেখা হলো তার।

“মাম, তুমি তো জানো নিজের ইচ্ছার বি°রু°দ্ধে গিয়ে বিয়েটা করছি আমি। ওই লোকটা তোমাকে কষ্ট দিয়েছিল, তোমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছিল আর এখন আমারটাও শেষ করে দিয়েছে।”

গলা কান্নায় ভারি হয়ে আসে। খানিকক্ষণ থেমে আবারো বলল,
“ওই লোকটাকে আমি কখনোই ক্ষমা করতে পারবো না, তাকে কখনো বাবার মর্যাদা বা সম্মান দিতে পারবো না। কিন্তু সত্য হলো উনি আমার বাবা।”

একটু থেমে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে মৃত্তিকা।
“আরেকজন মানুষ আমাকে প্রতিনিয়ত কষ্ট দিচ্ছে, ইমতিয়াজ। সে আমাকে বিন্দুমাত্র বুঝে না, কিন্তু জানো তো আমার জীবনের অপূর্ণতাগুলো একমাত্র সেই পূরণ করতে পারবে।”

মৃত্তিকা ফোন বের করে কলরবের সিভি বের করে বলে,
“কলরব, যার সাথে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে। (একটু থামে) জানো মাম, ইমতিয়াজ আমার সাথে আর একবারের জন্যও কথা বলেনি। সেদিন শপিংমলে তাকে শেষবারের মতো দেখেছিলাম। সে আমাকে কলও দেয় না আর আমি কল দিলে ফোন বন্ধ পাই।”

“আমার সিম নষ্ট হয়ে গেছে, তাই ফোন বন্ধ পেয়েছেন।”

মৃত্তিকা চমকে উঠে পিছনে ফিরে। ইমতিয়াজ প্যান্টের পকেটে হাত দিয়ে একটু হাসে। তারপর তাহমিনার কবরের কাছে চলে যায়। মৃত্তিকা কান্না ভেজা চোখে অপলক চেয়ে থাকে তার দিকে, যেন কোনো এক নে°শা তাকে পেয়ে বসেছে।

ইমতিয়াজ দোয়া শেষে বেরিয়ে গেল। মৃত্তিকা পিছুপিছু দৌড়ে গিয়ে বলে,
“দাঁড়ান।”

ইমতিয়াজ দাঁড়ায় না, তবে হাঁটার গতি একটু ধীর করে। মৃত্তিকা কাছে এসে বলে,
“অফিস নেই?”
“তাড়াতাড়ি ছুটি হয়েছে।”
“ওহ, সিম নষ্ট বলে হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ কেন?”

ইমতিয়াজ থেমে বলে,
“আপনি আমার সাথে কি এমন জরুরি কথা বলবেন মৃত্তিকা?”

মৃত্তিকা ইমতিয়াজের দিকে তাকিয়ে বলে,
“আপনি কি কিছুই বুঝতে পারছেন না?”

ইমতিয়াজ মাথা নেড়ে না বোঝায়। মৃত্তিকা চোখ ছোট করে তাকিয়ে বলে,
“বিয়ের ব্যাপারটা বলতাম।”

ইমতিয়াজ ওর কাছে চলে আসে। একদম কাছাকাছি দুজনে। ইমতিয়াজ ভারি কন্ঠে বলল,
“আমাকে বিয়ের কথা বলতে পারছেন না বলে আমি আপনাকে প্রতিনিয়ত কষ্ট দিচ্ছি বুঝি?”

মৃত্তিকা চমকে উঠে দুইপা পিছিয়ে যায়। কতক্ষণ ইমতিয়াজ তার পিছনে কখন থেকে ছিল কে জানে? মৃত্তিকা দ্রুত গতিতে চলে যেতে যেতে একবার পিছনে ফিরে ইমতিয়াজকে দেখে। ইমতিয়াজ এখনো কপাল কুঁচকে চেয়ে আছে ওর দিকে।
______________________________________

মাহির দেয়া চকলেটটা খেতে খেতে কলেজ মাঠের একপাশ ঘেঁষে হাঁটছে সারাহ্, মূলত আহনাফের জন্য অপেক্ষা করছে সে। আকাশটা আরো অন্ধকার হয়ে আসলো। সারাহ্ ঘড়ি দেখলো, তিনটা ত্রিশ বেজে গেছে।

“মানুষটা এখনো আসেনি।”

ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পড়তে শুরু করলো। সারাহ্ আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল,
“হে আল্লাহ্, তার মনে একটুখানি জায়গা দিও আমাকে।”

আহনাফ দৌড়ে এসে ওকে বলল,
“জলদি চলো বৃষ্টি নামছে।”

কথা শেষ করার আগেই ঝুম বৃষ্টি নেমে গেল। দুজনে জলদি গিয়ে উঠলো কলেজের বারান্দায়। আহনাফ শার্ট, ব্লেজার ঝারতে ঝারতে বলল,
“দূর, অ°সময়ের বৃষ্টিই ভালো লাগে না।”
“বৃষ্টিকে গা°লি দিতে নেই। এটা রহমত।”

আহনাফ সারাহ্-র দিকে তাকালো। সারাহ্ মুচকি হেসে বলল,
“অ°সময় নয় তো এটা, আমরাই বের হতে দেরি করেছি।”

আহনাফ হাত বাড়িয়ে ওর ঠোঁটের কোণায় লেগে থাকা চকলেট সরিয়ে বলল,
“ম্যাডাম চকলেট খাচ্ছে তাও মুখ ভরিয়ে?”

সারাহ্ খিলখিলিয়ে হেসে দিলো। তারপর আহনাফের হাতে চকলেটটা দিয়ে নিজে চলে গেল মাঠে। দুহাত মেলে বৃষ্টিতে ভিজতে শুরু করলো। খোলা বারান্দার পিলারের সাথে হেলান দিয়ে আহনাফ ওকে দেখছে। থ্রিপিজটা ভিজে শরীরের সাথে লে°প্টে লেগেছে, সারাহ্ খেয়াল করেনি এসব।

আহনাফ এগিয়ে এসে ওকে কোলে তুলে নিয়ে গেল একটা ক্লাসে। উঁচু বেঞ্চে বসিয়ে বলল,
“বাইরে যাবে না।”

হঠাৎ ওর এমন কাজে হতবাক সারাহ্। আহনাফ ব্লেজার খুলে সারাহ্-র উপর দিয়ে দিলো। ওর কাছে এসে ফিসফিসিয়ে বলল,
“আবেদনময়ী হয়ে সবার কাছে ধরা দিও না।”

আহনাফ বাইরে গিয়ে দরজা চাপিয়ে দিলো। বাকি স্যারেরা চলে যাচ্ছে। আহনাফকে দেখে বলল,
“স্যার, যাবেন না?”
“যাবো, একজন আসবে তাকে নিয়ে যাবো।”
“আচ্ছা স্যার, আসি।”
“জি।”

স্যাররা আসছে দেখেই সারাহ্কে সকলের আড়ালে এনেছে আহনাফ। সারাহ্ ব্লেজারটা গায়ে দিয়ে দরজার ফাঁক দিয়ে বাইরে তাকালো। আহনাফ ওখানেই দাঁড়িয়ে আছে।

কিছুক্ষণ পর আহনাফ ভিতরে আসলো।
“এখন বাসায় যাবে কিভাবে?”

সারাহ্ কিছু বলতে নিলেই কারেন্ট চলে যায়। দুজনেই চমকে উঠে। আহনাফ ফোনের ফ্লাশলাইট জ্বালিয়ে দেয়। সারাহ্ ওড়না দিয়ে ধীরে ধীরে নিজেকে আবৃত করছে। আহনাফ ফোনটা পাশে রেখে সারাহ্-র হাত সরিয়ে ওড়নাটা নিজেই ওর শরীরে দিয়ে দিলো।

সারাহ্ অপলক তাকিয়ে আছে ওর দিকে। আহনাফও দেখলো ওকে। বলল,
“কি দেখো?”

সারাহ্ চমকে উঠলো। এ কেমন বেরসিক মানুষ। আহনাফ বেঞ্চের দুপাশে হাত দিয়ে দাঁড়ালো। সারাহ্কে যেন মাঝে ব°ন্ধি করেছে।

“ঐশী, তুমি যথেষ্ট ম্যাচিউর বলেই আমি জানি। কিন্তু আমাকে বিয়ে করার সময় তোমার বুদ্ধিটা বোধহয় ঠিকমতো কাজ করেনি।”

সারাহ্ অন্যদিকে তাকালো। আহনাফ ওর মুখটা নিজের দিকে ঘুরিয়ে বলল,
“তোমাকে এতোভাবে ইশারা দিলাম কিন্তু তুমি বুঝলে না আমি কি বোঝাতে চেয়েছি।”
“আমি বুঝেছিলাম।”

সারাহ্ নেমে দাঁড়ালো। আহনাফ একটু সরে এসে বলল,
“তবে জীবনটা কেন নষ্ট করেছো?”

সারাহ্ কিছু বলল না। হৃদয়ের গোপন কথা গোপনে রইলো, আহনাফ বুঝলো কিনা জানা নেই। সারাহ্ বেরিয়ে আসতে নিলে আহনাফ ওকে কাছে টে°নে আনলো। শুধু কাছে না, দুহাতে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো ওকে।

বেশ কিছুক্ষণ পর আহনাফ সারাহ্-র মুখটা উপরে তুলে বলল,
“সবকিছু অন্যরকম হতে পারতো আর হয়েছেও তাই।”

ভেজা ঠোঁটে শক্ত পুরুষের ভারী ঠোঁটের স্পর্শ অনুভব করলো সারাহ্। সরে আসতে চেয়েও সরে আসতে পারলো না, আহনাফ যে তাকে একহাতে জড়িয়ে রেখেছে। আহনাফের শার্টের কলার খা°ম°চে ধরেছে, প্রত্যেকটা সেকেন্ডে নিশ্বাস ফেলতে কষ্ট হচ্ছে সারাহ্-র।

চলবে….

(অনেকেই উপন্যাসের কাহিনীতে পরিবর্তন চাচ্ছেন। আমি আগে থেকেই প্লট ভেবে লেখা শুরু করেছি, তাই এখন পরিবর্তন আনলে উপন্যাস মূল ধারা থেকে ছিটকে যাবে।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here