অনুভূতিরা_শব্দহীন লেখনীতে: #ইসরাত_জাহান_তন্বী সপ্তবিংশ পর্ব (২৭ পর্ব)

0
389

#অনুভূতিরা_শব্দহীন
লেখনীতে: #ইসরাত_জাহান_তন্বী

সপ্তবিংশ পর্ব (২৭ পর্ব)

আজ বেশ কয়েকদিন পর গো°র°স্থানে এসেছে ইমতিয়াজ। ফজরের পর মসজিদ থেকে বেরিয়ে সোজা এখানে চলে এসেছে। রিপা বেগমের কবরের পাশের দুটো কবরের দিকে তাকায় সে।

“এগুলোই কি ওইদিন খু°ন হওয়া দুজনের কবর?”
কথাটা ভেবে এগিয়ে যায় তাহমিনার কবরের কাছে।

আজ সে নিরব, অনুভূতিহীন। কোনো কথা সে বলছে না, বলে চাচ্ছেও না। মেয়েটার কি এমন দোষ ছিলো আর ওই বেবিটার কি দোষ ছিল, যে পৃথিবীর আলোই দেখেনি। কি দোষ থাকতে পারে ওদের? শত্রুতা যদি রিপা বেগম আর তার মেয়ের সাথে থাকে, তবে তাহমিনা আর তাহসিনার এ অবস্থা কেন?

লোহার দরজায় গড়গড় শব্দ করে ভিতরে আসে শরীফ। ইমতিয়াজ একবার তার দিকে তাকায়।

রিপা বেগমের কবরের সামনে এসে দুহাত মেলে দোয়া করে। তারপর ইমতিয়াজের দিকে তাকিয়ে বলল,
“অবাক হচ্ছো কেন? তুমি যেমন তোমার স্ত্রীর কবরে এসেছো, তেমন আমিও এসেছি।”

ইমতিয়াজ মাটির দিকে তাকিয়ে থেকে বলে,
“যখন বেঁচে ছিল, তখন স্ত্রীর দাম দেননি। এখন এসব করে কি লাভ?”

শরীফ এসে ওর পাশে বসে বলল,
“মানুষ একটা সময় নিজের ভুল বুঝতে পারে। (একটু থেমে) মিউকো আর তোমাকে কিন্তু আমি সেদিন উ°দ্ধা°র করেছি।”

ইমতিয়াজ বুঝতে পারে লোকটা কথা ঘুরাতে চাচ্ছে। মুখ বাঁ°কিয়ে হেসে বলল,
“আমার সন্দেহ হয়েছিল। (একটু থেমে) পল্লবী কে?”
“আমার বোন, মিউকোর ফুফু।”

ইমতিয়াজ মাথা নাড়ে। শরীফ বলে,
“তোমার হাত ঠিক হতে সময় লাগবে। এই কয়েকদিন অফিসে যাবে?”

ইমতিয়াজ কিছুই বলে না। মুখ ঘুরিয়ে তাহমিনার কবরের দিকে তাকিয়ে থাকে। শরীফের সব কথার উত্তর দেয়ার ইচ্ছা তার নেই।

শরীফ বলে,
“তুমি মিউকোকে বিয়ে করবে? বিষয়টা কি সত্য?”

ইমতিয়াজ উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
“আমি একবারও বলেছি আপনার মেয়েকে আমি বিয়ে করবো?”

ইমতিয়াজ চলে যেতে নিলে শরীফ পেছন থেকে বলল,
“আমার মেয়ে বলো না, ও রিপার মেয়ে।”

থমকে দাঁড়িয়ে ইমতিয়াজ বলল,
“তবে তার পিছনে স্পা°ই লাগিয়েছেন কেন?”
“না হলে আর এসব খবর আসতো না। আর না তোমাকে চিঠি দিতে পারতাম।”

ইমতিয়াজ আর ফিরে তাকায় না। হনহনিয়ে হেঁটে চলে যায়। শরীফ কিছুক্ষণ একই জায়গায় স্থির দাঁড়িয়ে থাকে। শুধু শুধুই রাগ হচ্ছে তার। নিজের প্রতি রাগ হচ্ছে তার, আবার নিজের রাগের প্রতিও রাগ হচ্ছে। বাইরে এসে সি°গা°রেট জ্বা°লায় সে। নাকমুখ দিয়ে অনবরত ধোঁ°য়া নির্গত করতে থাকে।
______________________________________

দুইমাস পর,
ক্লাসে এসে সামিহা পুরো রুমে চোখ বুলায়। তানজিম কোথাও নেই, তার অর্থ সে এখনো আসেনি বা আসবে না। আজকাল ক্লাসে খুব একটা তাকে দেখা যায় না, আসলেও পিছনের সারির কোনো একটা বেঞ্চে বসে থাকে।

সামিহা বেঞ্চে বসে এখনো চেয়ে আছে দরজার দিকে। কিন্তু তানজিম আসেনা।

ক্লাস শুরুর দশমিনিট পর তানজিম দৌড়ে এসে ক্লাসে ঢুকে।
“মে আই কাম ইন স্যার?”
“কাম ফাস্ট।”
স্যার ধ°ম°ক দিয়ে কথাটা বলে।

তানজিম এসে সামিহার পাশেই বসে পড়ে। জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে আর মুখ দিয়ে “হু, হু” বলে অদ্ভুত একটা শব্দ করছে। সামিহা ওর দিকে তাকিয়ে আছে।

তানজিম ফিসফিস করে বলল,
“ক্লাস শেষে বাইরে আসিস, কথা আছে।”

হুট করে যেন তার কথায় বিশাল পরিবর্তন এসেছে। সামিহা খুশি হয়ে যায়। তার চোখেমুখে খুশি উপচে পড়ছে। তানজিম ওর হাতটা ধরে, সামিহা বোর্ডের দিকে তাকিয়ে থাকলেও পড়া আর তার মাথায় ঢুকছে না।

সামিহার আঙ্গুলের ভাঁজে আঙ্গুল দিয়ে শক্ত করে ওর হাত ধরেছে তানজিম। শতশত পারিবারিক অশান্তি আসবে, সহস্র সমস্যা থাকবে, জীবনে হাজারো ঝ°ড় আসবে যাবে, তাই বলে কি প্রিয় মানুষের হাতটা এতো সহজে ছাড়া যাবে।

সামিহাকে নিজের মনের কথা জানিয়ে সারাজীবন সাথে থাকার প্রস্তাব দিবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে তানজিম। বহুবার যা বলতে গিয়েও আটকে গেছে তা আজ বলেই দিবে সে।
______________________________________

শারিরীকভাবে বেশ সুস্থ হয়েছে মৃত্তিকা, তবে মানসিক অবস্থা এখনো ভালো নয়। কলরবের বাবার হঠাৎ ব্যবসা ম°ন্দা ও নানান কারণে কোম্পানির তিনটা শেয়ার বিক্রি করতেই হয়েছে। মৃত্তিকা একটা শেয়ার কিনেছে, বাকি দুটো কে কিনেছে তা ওর জানা নেই। আপাতত তা জানান দরকারও তার নেই।

হঠাৎ করে এমন ব্যবসা ম°ন্দা হওয়া ও মৃত্তিকার শেয়ার কেনা কলরবের কাছে একটা ষ°ড়°যন্ত্র মনে হলেও উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে সে কিছুই করতে পারেনি।

ইসরাতের বাবার কোম্পানি আছে, বাবার সাথে সে নিজেও প্রায় আড়াই বছর কোম্পানির অনেক কাজ শিখছে। এসব কু°ট কা°চা°লি সম্পর্কে ইসরাতের জ্ঞান ভালো। সেই ব্যবসা ম°ন্দা করার মূল নেতা ছিল। না না, নেতা নয় নেত্রী।

সারাদিন মিরপুরের অফিসে কাটিয়ে সন্ধ্যায় বাসায় আসে সে। এখনো সে উত্তরা মামার বাসায় থাকে। এতো বড় ঘটনার পরও সে মামার বাসায়ই থাকার সিদ্ধান্তে অটল।

বাসায় আসতেই দেলোয়ারাকে ব্যস্ত দেখে মৃত্তিকা বলল,
“মামানী, কোনো সমস্যা?”

সুরভি নিজের রুমের দরজায় দাঁড়িয়ে চকলেট খেতে খেতে বলল,
“ভাবখানা দেখো যেন আমার ডেলিভারি পে°ই°ন উঠেছে।”

মৃত্তিকা জোরে হেসে দেয়। দেলোয়ারা রাগ করে বলল,
“ইমতিয়াজ আসবে, শুনোনি?”

মৃত্তিকা সুরভির দিকে তাকিয়ে নিচুস্বরে বলে,
“উনি আবার কেন আসবে?”
“তোমাকে দেখতে।”

মৃত্তিকা কপাল কুঁচকায়।
“দেখতে? আগে দেখে নাই নাকি?”

মৃত্তিকা রুমে চলে যায়। স্কার্ফ খুলে বাচ্চা ছেলেদের মতো সদ্য গজানো চুল আঁচড়াতে শুরু করে। সুরভি বিছানায় বসে বলে,
“সত্যি, বাবার সাথে বিয়ের কথা বলেছে। আজকে তোমার মত নিতে আসবে।”

মৃত্তিকা ঠোঁট উলটে বলল,
“মত নিতে আসবে, ওকে ফাইন। তো মামানী এমন করছে কেন?”
“জামাই আসবে এজন্য।”

মৃত্তিকা চিরুনি রেখে ওয়াশরুমে চলে যায়। এতো ধরনের সমস্যার মাঝে এরকম ঘটনা অ°প্রত্যাশিত।

সন্ধ্যার পর সময়মতো ইমতিয়াজ আসে। শাফিন সাহেব আর দেলোয়ারার সাথে কথা হয়, তাদের অনুমতি নিয়ে মৃত্তিকার সাথে আলাদা কথা বলার সুযোগ পায় ইমতিয়াজ।

ড্রইংরুমেই কথা বলছে ওরা, বাকিরা নিজেদের রুমে চলে গেছে।

সবাই চলে যেতেই মৃত্তিকা সরাসরি প্রশ্ন করলো,
“হঠাৎ বিয়ের পি°নি°ক উঠছে কেন আপনার?”

ইমতিয়াজ চোখ কুঁচকে বলল,
“ভদ্রভাবে কথা বলুন। এটা কোনো পি°নি°ক না, জাস্ট কাউকে বাঁচাতে চাচ্ছি।”
“আহা, উ°দ্ধা°র করছেন।”
ব্য°ঙ্গ করে কথাটা বলে মৃত্তিকা।

ওইযে বলেছিল মৃত্তিকা, সে চাইলে আবেগ অনুভূতি কবেই মে°রে ফেলতে পারতো। সেটাই করেছে সে। মে°রে ফেলেছে, ইমতিয়াজকে ভুলে যাওয়ার জন্য যা যা করার সব করেছে। ভুলতে না পারলেও অন্তত ওর অবস্থা কেউ বুঝতে পারে না।

“বিয়ে করবো মানে বিয়ে হচ্ছে। আপনি রাজি নন কেন?”

মৃত্তিকা আড়চোখে তাকিয়ে বলে,
“কারণ আমার কারণে একবার জীবিত কবরে গিয়েছেন, নেক্সট হয়তো ম°রে কবরে যাবেন।”

ইমতিয়াজ হেসে বলল,
“আপনি আমাকে মৃ°ত্যুর ভয় দেখাচ্ছেন?”
“ধরে নিতে পারেন।”

দরজার ওপাশে কাউকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ইমতিয়াজ। সে সোফা থেকে উঠে এসে মৃত্তিকার পাশে বসলো। মৃত্তিকার হাত ধরতেই চমকে উঠে সে। ইমতিয়াজ শুধু হাত ধরেনি, মৃত্তিকার হাতের মুষ্টিতে কোনো একটা কাগজ দিয়েছে।

“মৃ°ত্যু যেখানে চরম সত্য, সেখানে তা স্মরণে রাখাই ভালো আর আপনি তা স্মরণ করাতে পারলে আপনাকে সাথে রাখাও ভালো।”
ইমতিয়াজ হাত ছাড়লে মৃত্তিকা কাগজটা ওড়নার নিচে লুকিয়ে ফেলে।

রাতে খাবার একসাথে করে সবাই, এখানেই বিয়ের জন্য বৃহস্পতিবার রাতের সময়টা নির্ধারিত হয়ে যায়। ইমতিয়াজের বাসায় যেহেতু কেউই নেই তাই মমতাজ বেগম আর লুৎফর রহমানই আসবেন অভিভাবক হয়ে। যদিও এসব শুধুই আনুষ্ঠানিকতা।

রাত সাড়ে নয়টায় ইমতিয়াজ বিদায় নেয়। যাওয়ার আগে মৃত্তিকার কানের কাছে বলে যায়,
“কাগজটা দেখার পর এনিহাউ নষ্ট করে দিয়েন। আর কারো হাতে যেন না পড়ে।”

ড্রেস পালটানোর নাম করে ঘরের দরজা লাগিয়ে কাগজ খুলে মৃত্তিকা। দুইটা কাগজ, একটা বড় আর একটা ছোট। ছোট কাগজে লেখা,
“মৃত্তিকাকে বিয়ে করো বা না করো, ওই বাসা থেকে বের করে আনো। হয়তো আজ রাতটাই হয়তো ওর জীবনের শেষ রাত।”

মৃত্তিকা চমকে উঠে। বড় কাগজের হাতের লেখাগুলো ইমতিয়াজের।

“আমি জানি না বিষয়টা আপনি কিভাবে নিবেন। তবে ছোট কাগজটা আপনাকে যেদিন খুনের চেষ্টা করা হয়েছিল সে রাতে অচেনা কেউ পাঠিয়েছিল। পরে বুঝতে পারি চিঠির মালিক আপনার বাবা, আপনার বাবা আমাকেও বাঁচিয়েছে। বিয়ের বিষয়ে আপনি চিন্তিত আছেন জানি। তবে অমত করবেন না। আপনার বাবা আমাকে জানিয়েছে শুক্রবারে হয়তো আপনাকে গুম করা হবে, তবে তার আগে কোম্পানির শেয়ার নিবে আপনার কাছ থেকে। তো আমার কথাটা মেনে নিন আর কিছু অন্যরকম হোক।”

কাগজটা দু°মড়ে মু°চড়ে ফেলে মৃত্তিকা। বাবা নামক ওই লোকটা আবারো ওর জীবনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে আর ইমতিয়াজ তাকে বিশ্বাস করছে। একটা ভ°য় জেগে উঠে মৃত্তিকার মনে, ইমতিয়াজ আবার শরীফের মতো হবে না তো?
______________________________________

পরদিন সকালে,
প্রথম পিরিয়ডে কোনো ক্লাস না থাকায় কলেজের সামনের রাস্তায় হাঁটছে আহনাফ। বেশ আরামে সকালের রোদে ঘুরে বেড়াচ্ছে সে।

আহনাফের ফোন বেজে উঠে। পকেট থেকে ফোন বের করে আননোন নাম্বার দেখেও রিসিভ করে।

“আসসালামু আলাইকুম।”

অপরপাশ থেকে তানজিম বলল,
“ওয়া আলাইকুমুস সালাম ভাইয়া। আমি তানজিম।”

আহনাফ রাস্তার একপাশে দাঁড়িয়ে পড়ে। একটু ইতস্তত করে বলল,
“আরে তানজিম, কেমন আছো?”
“ভালো আছি ভাইয়া। তুমি ঢাকায় আসো না?”
“মাস দুয়েক হয়েছে গিয়েছিলাম।”
“ওহ, (একটু থেমে) আসলে ইমতিয়াজ ভাইয়ার বিয়ে, তুমি আসলে ভালো লাগতো।”

আহনাফ কলেজের দিকে যেতে যেতে বলল,
“ইমতিয়াজ ভাইয়া বিয়ে করছে?”
“হুম, মিউকো আপুকে।”

মিউকো নামটার সাথে আহনাফের পরিচিতি নেই। তবুও এ ব্যাপারে প্রশ্ন না করে বলল,
“ভালো সিদ্ধান্ত। বিয়ের তারিখ কবে?”
“এইতো বৃহস্পতিবার। তুমি আসতে পারবে?”
“ওহ, তবে তো পরশুদিন। আমি চেষ্টা করবো, কিন্তু কথা দিতে পারলাম না।”

তানজিমের ক্লাসের সময় হয়ে যাওয়ায় তাড়াহুড়ো করে বলল,
“আচ্ছা ভাইয়া, আমার ক্লাস আছে। পড়ে কথা হবে।”
“ওকে, ভালো থেকো।”

তানজিম ফোন রেখে দৌড়ে ডিপার্টমেন্টে যায়। কাল বলবো বলবো করেও সামিহাকে কিছুই বলা হয়নি, আর এই মেয়েটাও হয়েছে একটা বোকা। কিছুই যেন বুঝে না। তানজিম তো আর জানে না সামিহা সব বুঝেও শুনতে চাচ্ছে।

দিনটুকু পেরিয়ে এখন শেষ দুপুর, কলেজের ক্লাস শেষে আহনাফ বের হয়৷ সারাহ্ এখনো টিচার্স রুমে আছে। হয়তো কোনো ম্যাডামের সাথে গল্পে মজেছে।

কিছুক্ষণের মধ্যেই দৌড়ে দৌড়ে এসে আহনাফকে বলে,
“তাড়াতাড়ি চলেন।”
“এতো তাড়া এখন। এতোক্ষণ তো নিজেই ঘুমাচ্ছিলে।”

দুজনে হাঁটতে শুরু করে। সারাহ্ বলল,
“ঘুমাইনি তো, একটা গল্প শুনছিলাম। অনেক রোমাঞ্চকর।”

আহনাফ একটা হাই তুলে বলে,
“মেয়েদের গল্প স্বামী, সন্তান ছাড়া আর কি?
“আরে না, ওসব কিছু না। (একটু থেমে) আমাকে শুক্রবারে গোমতী পাড়ে নিয়ে যাবেন?”
“আমি ঢাকায় যাবো।”

সারাহ্ অবাক হয়ে আহনাফের দিকে তাকায়। অনেকদিন হয়েছে ওই কথোপকথন ছাড়া আর কোনো সমস্যা হয়নি, সিআইডি থেকেও কিছুই জানায়নি। বুকের ভেতর অজানা ভ°য় জেগে উঠে সারাহ্।

“ঢাকায় কেন যাবেন?”
“চিন্তা করো না, তেমন কিছু না।”

সারাহ্-র সামনে তাহসিনা বা তার পরিবারের কথা বলা যে অনুচিত তা আহনাফ বুঝে। তানজিমকে না করলে বিষয়টা যেমন খারাপ দেখাবে, তেমনি সারাহ্-কে বলাও হয়তো ঠিক হবে না। অদৃশ্য টা°না°পো°ড়েনের মাঝে পড়ে থাকে আহনাফ।
______________________________________

মৃত্তিকা অফিসে আছে। নিজের কেবিনে পায়চারি করছিল এতোক্ষণ। এখন সে চেয়ার টেনে বসে। ইমতিয়াজকে বিয়ে করা না করা নিয়ে বেশ সুন্দর একটা সংশয় তার।

চোখ বুঝলে একদিকে যেমন একটা গোছানো সুন্দর সংসার দেখে, তেমনি অন্যদিকে নিজের মায়ের সংসারের কথা মনে পড়ে। সেখানে তো শুধু অ°শান্তিই ছিল।

চেয়ালে হেলান দিয়ে বসে ইমতিয়াজকে কল দেয়।

“আপনি কাল ওসব কি লি…”

মৃত্তিকার কথার মাঝেই ইমতিয়াজ বলে,
“কিছুই বলিনি আপনাকে, শুধু বিয়ে করতে বলেছি। আর কিছু না।”

মৃত্তিকা আশেপাশে তাকায়। ইমতিয়াজ কাগজে সব লিখে দিয়েছে, আবার এখন ওকে বলতে দিচ্ছে না। এর অর্থ একটাই এমন কেউ আছে যে ওদের কথা শুনছে।

মৃত্তিকা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
“আমার মত ছাড়াই তো বিয়ের তারিখ ঠিক হয়ে গেল।”

ইমতিয়াজ একটু চুপ করে থেকে বলে,
“লাল শাড়ি পড়বেন না, এই অনুরোধ রইলো।”

মৃত্তিকা সোজা হয়ে বসে। ইমতিয়াজ কল কেটে দিলো। মৃত্তিকার ঠোঁট কাঁ°পছে, চেহারা একটা লাবন্যতা এসেছে, একটু লাজুকতা ভর করেছে। সামনের গ্লাস থেকে ঢ°কঢ°ক করে পানি পান করে নেয় সে, তারপর নিরবে চোখ বুজে।

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here