#অনুভূতিরা_শব্দহীন
লেখনীতে: #ইসরাত_জাহান_তন্বী
অষ্টচত্বারিংশ পর্ব (৪৮ পর্ব)
মৃত্তিকা অনেকক্ষণ ধরে বেশ কয়েকবার গরম শি°কের ছ্যাঁ°কা দেয়ার পরও অপরূপা কিছুই বলে না। মৃত্তিকার রাগ তড়তড় করে বেড়ে গেল। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে যত রাগবে, ততই হার নিশ্চিত হবে।
অপরূপার ব্যাগ ঘে°টেঘু°টে মৃত্তিকা সি°গা°রেট আর একটা ড্রা°গের প্যাকেট পায়। সাদা পাউডারের মতো গুড়া জিনিসের প্যাকেটটা ফাহাদকে দেখিয়ে মৃত্তিকা নিশ্চিত হয় এটা সম্পর্কে। অর্থ যা দাঁড়ালো তা হচ্ছে অপরূপা একইসাথে ধুম°পা°য়ী আর মা°দ°কা°সক্ত।
চট করে একটা বুদ্ধি আসে মৃত্তিকার মাথায়। মা°দ°কাস°ক্ত মানুষকে অতিরিক্ত ড্রা°গ প্রয়োগ করে বা ড্রা°গ একেবারেই না দিয়ে কাবু করা সম্ভব। তবে অতিরিক্ত ড্রা°গে মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকায় মৃত্তিকা তা করবে না। অপরূপা মরে গেলে শাফিন হাতছাড়া হবে।
মৃত্তিকা অপরূপার সামনে গিয়ে সি°গা°রেটের প্যাকেট থেকে একটা একটা করে সি°গা\রেট বের করতে থাকে।
অপরূপা ওকে দেখে বলল,
“তুমিও কি স্মো°ক করো?”
মৃত্তিকা বাঁকা হেসে বলে,
“না করলেও এখন তো করা যাবে? কি বলো?”
মৃত্তিকা মুখ বাঁকিয়ে বেশ ব্য°ঙ্গ করে অপরূপাকে বলে,
“মামানী।”
সবগুলো সি°গা°রেট একসাথে মুঠোবন্দি করে মৃত্তিকা। তারপর আ°গুন জ্বা°লায়। অপরূপা অবাক চোখে মৃত্তিকার কর্মকাণ্ড দেখছে।
সি°গা°রেট সবগুলো একসাথে জ্ব°লে উঠলে মৃত্তিকা ফুঁ দিয়ে আ°গুন নিভায়। অপরূপার হাত টে°নে ধরে তালুতে বসিয়ে দেয়। জ্বলন্ত সি°গা°রেটে ওর চামড়া পু°ড়ে, পো°ড়ার য°ন্ত্র°ণায় চিৎকার করে অপরূপা।
মৃত্তিকা থামেনা, বরঞ্চ সে সি°গা°রেটগুলো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আরো গভীর করে বসাতে থাকে। একসাথে বাধা পা দুটো নাড়তে থাকে অপরূপা। একটু নিস্তার পাওয়ার জন্য ছটফট করেছে
ওর অসহায়ত্ব দেখে মৃত্তিকার মায়া হয় না। আরো ক°ড়া ভাষায় বলে,
“এখন তো বলতেই পারো আর কে ছিল?”
“ডা. আরিফা।”
একপ্রকার অতিষ্ঠ হয়ে আরিফার নামটা বলেই দেয় অপরূপা।
মৃত্তিকা উঠে দাঁড়িয়ে সি°গা°রেটগুলো ফেলে দেয়। মমতাজের চিকিৎসা করেছিল এই আরিফা, একজন সাইক্রিয়াটিস্ট। একজন ডাক্তার এতটা জ°ঘন্য কাজে কিভাবে যুক্ত হতে পারে? ভাবতেই অবাক লাগে ওর। আর মমতাজ বেগম? মেয়েদের মৃ°ত্যুর পর এমন শো°কে চলে যাওয়ার অভিনয় করেছিল, এতটাই গভীর আর নিখুঁত অভিনয় করেছিল যে কেউ বুঝতেই পারেনি সে আসলেই মানসিক সমস্যায় ভুগছিল নাকি না?
______________________________________
তানজিম আজ বেশ কয়েকদিন পর বাসা থেকে বের হয়েছে। এসেছে মতিঝিল সামিহার বাসার কাছে। গতরাত থেকে সামিহাকে একের পর এক মেসেজ দিলেও কোনো উত্তর আসে না। কয়েকবার কল দিলেও সে রিসিভ করেনি।
বাসার সামনে দাঁড়িয়ে আবারো কল দেয় ওকে, এবারেও কোনো সারা পায়নি। আরেকবার কল দিতেই সামিহা রিসিভ করে। তবে রিসিভ করেই একটা বড় ধ°ম°ক দেয়,
“তুই না আমার সাথে আর কথা বলবি না? তবে কল দিয়েছিস কেন?”
তানজিম ওর রাগের কারণ বুঝতে পারে। তাই বেশ শান্ত গলায় বলে,
“সামি, আমার কথাটা বোঝার চেষ্টা কর…”
তানজিমের কথা শেষ হওয়ার আগেই সামিহা বলে,
“হ্যাঁ, যথেষ্ট বোঝার চেষ্টা করেছি। আর বোঝার চেষ্টা করেছি বলেই তোর সাথে আর কোনো কথা বলছি না।”
“একটু বাইরে আয়, আমি তোর বাসার সামনে।”
এই অসুস্থ শরীরে তানজিম ওর সাথে দেখা করতে এসেছে। সামিহা ফোন না কে°টেই ছুটে বাইরে আসে। তানজিম ওদের বাসা থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়েছিল। সামিহা ধীর পায়ে ওর কাছে যায়।
সরাসরি প্রশ্ন করে,
“হ্যাঁ, বল কি বলবি? আমার হাতে বেশি সময় নেই।”
তানজিম একটু হেসে বলে,
“বেশি সময় চাইছি না, শুধু পাঁচ মিনিট।”
নিজের ফ্যামিলি সম্পর্কে কথা বলতে খুব কষ্ট হয় তানজিমের। তাই পারিবারিক খু°নের কথাটা গোপন থাকে। সামিহাকে এটা বলার মত সাহস কিংবা ইচ্ছা কোনোটাই আসেনা তানজিমের।
সে সত্য ও মিথ্যার মিশ্রণের কিছু কথা সামিহাকে শুনিয়ে দেয়,
“একটা কথা একটু বুঝিস। তুই এডাল্ট, আমিও এডাল্ট। তাই আমরা একসাথে ঘুরাঘুরি করলে, লোকে সম্পর্কটা অন্যভাবে নিবে এবং তা খুবই স্বাভাবিক। আম্মুর ক্ষেত্রেও বিষয়টা তাই হয়েছে। এতে আম্মুর দোষ দেওয়া যাবে না। (একটু থেমে) তবে কালকে ওভাবে আমার বাসায় গিয়েছিস, আবার আমার রুমে গিয়েছিলি। বিষয়টা একটু দৃষ্টিক°টু।”
“আমাদের সম্পর্কটা কি শুধুই বন্ধুত্বের? অন্য কিছুই কি নেই এখানে?”
সামিহার ইচ্ছা করছিল তানজিমকে এটা জিজ্ঞাসা করতে। তবে জিজ্ঞাসা কর হলো না। সে নিরবে তানজিমের প্রতিটা কথা শ্রোতার মতো শ্রবণ করছে।
তানজিম একটু চুপ থেকে আশেপাশে তাকিয়ে বলে,
“বন্ধুত্বটা বাসার বাহিরে পর্যন্তই থাকুক, আমাদের বাসায় এটা না যাক। ভার্সিটিতে একসাথে থাকি, একসাথে ঘুরতে যাই, কোনো সমস্যা নেই। তবে প্লিজ কোনোদিন আমার বাসায় আসিস না। প্রয়োজনে আমাকে কল করিস, আমি চলে আসব।”
“আমার তো সব সময় তোকে প্রয়োজন।”
এই কথাটা সামিহার মনের গহীনে থেকে যায়।
অপ্রকাশিত উপন্যাসের পাতায় যা খুঁজে পাওয়া যায়, তা কখনোই প্রকাশ করতে নেই। অনুভূতি প্রকাশ করলে পুরোনো হওয়ার ভয় পায় সামিহা।
ওকে চুপ থাকতে দেখে তানজিম বলে,
“তুই বুঝেছিস আমার কথা?”
সামিহা উপরে নিচে মাথা নাড়ে, যার অর্থ সে তানজিমের সব কথাই বুঝে নিয়েছে। তানজিম একটা মলিন হাসি দেয়। ওর নিরব আর্তনাদ কেবল ও জানে, আর জানে সৃষ্টিকর্তা।
______________________________________
দুইদিন পেরিয়েছে। জামিলকে সিআইডি অফিসার গালিবের কাছে হস্তান্তর করেছে আহনাফ। এছাড়া আর কোনো বিশ্বস্ত মানুষ সে খুঁজে পায়নি। শাফিন যেভাবে এতজনের মাঝখান থেকে উধাও হতে পেরেছে সেখানে এদের ওপরেও বিশ্বাস করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবুও বিশ্বাস করতে হয়েছে তাকে।
জামিলের কাছ থেকে শাফিন সম্পর্কে কোন তথ্য আহনাফ পায়নি। অনেক চেষ্টা করেছে সে। তবে এটাও জানতে পারেনি নার্গিস পারভিনের সাথে শাফিনের শ°ত্রুতা ঠিক কোথায় এবং কি নিয়ে।
এখন গালিব পারলে ভালো আর না পারলে সারাহ্-র শত চিন্তার মাঝেও জামিলকে আবারও বাসায় এনেই তুলতে হবে। তবে এখানেও একটা দু°শ্চিন্তা থেকে যায়। যদি জামিলকে বাঁচাতে শাফিন এসে হাজির হয়? তবে এখানেও সারাহ্-র বি°পদ।
ক্লাস শেষে বেরিয়ে আহনাফ গালিবকে কল দেয়। গালিব রিসিভ করে, বেশ কিছুক্ষণ জামিলের ব্যাপারে কথা বলে কল রাখে সে।
তারপর আবারো কল দেয় ইমতিয়াজকে। ইমতিয়াজ অফিসের কাজে ব্যস্ত আজ তাই ফোন সাইলেন্ট মুডে করে রেখেছে। দুই-তিনবার কল আসলেও ইমতিয়াজ তা টের পায় না।
আহনাফ ফোন পকেটে রেখে দেয়। টিচার্স রুমে যাওয়ার সময় সারাহ্ কোথা থেকে যেন ছুটে এসে ওর হাত ধরে বলল,
“লাইব্রেরীতে যাবো, চলেন।”
আহনাফ আশেপাশে তাকায়। তারপর বলে, “এখন লাইব্রেরী?”
“হ্যাঁ, কিছুক্ষণ বই পড়বো। টানা তিনটা ক্লাস নিয়েছি।”
আঙুল উঁচিয়ে তিন দেখায় সারাহ্।
আহনাফ হেসে জিজ্ঞাসা করে,
“খুব টায়ার্ড?”
“অনেক।”
“তবে চলো।”
দুজনে লাইব্রেরীতে যায়। সারাহ্ গল্প উপন্যাসের বই খুঁজে বেড়াচ্ছে। আহনাফ পাশে দাঁড়িয়ে বলে,
“রসায়নের ম্যাডাম রস না খুঁজে সোজা খেজুর খুঁজতে শুরু করেছে।”
সারাহ্ কপাল কুঁচকে তাকায়। বলে,
“আমার অবস্থা আপনি কিভাবে বুঝবেন? আপনি জানেন আমার দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হয়? এসব তো আপনি বুঝবেন না।”
“না, আমি তো কিছুই বুঝিনা।”
সারাহ্ আবারো বই খুঁজতে শুরু করে। আহনাফ বলে,
“আমি কি তোমার ছুটির ব্যবস্থা করব?”
“কিসের ছুটি?”
“কিসের আবার? মাতৃত্বকালীন ছুটি।”
সারাহ্ অবাক চোখে ওর দিকে তাকিয়ে বলে,
“পাগল হয়েছেন? এত তাড়াতাড়ি ছুটি দেয়? লোকে কি বলবে?”
“ওমা, লোকে কি বলবে মানে? লোকের কথা লোকে বলবে তোমার তাতে কি আসবে যাবে?”
“আপনি আস্ত পাগল।”
সারাহ্ চলে যেতে নিলে আহনাফ ওর হাত ধরে বলল,
“হুশ, আর কলেজে এসে কষ্ট করতে হবে না।”
আহনাফ সারাহ্-র কাছে চলে আসলে সারাহ্ বলে,
“দূরে থাকেন, এখানে যেকোনো সময় যেকোনো কেউ আসতে পারে।”
“এখন ক্লাসটাইম, সো কেউ আসবে না।”
আহনাফ আরো কাছে চলে আসে। সারাহ্ ওর বুকে ধা°ক্কা সরিয়ে বলে,
“কেউ দেখলে কে°লে°ঙ্কারি হবে।”
আহনাফ মাথা নুইয়ে ওর কপালে কপাল ঠেকিয়ে বলে,
“কিসের কে°লে°ঙ্কারি? তুমি আমার বাচ্চার মা।”
“বউ নই?”
আহনাফ হেসে উঠে বলল,
“না, বউ না। বউ হলে তো আর কে°লে°ঙ্কারির ভয় থাকতো না।”
“তবে এখানে কেন? কলেজের মাঠে চলেন। লজ্জা শরম তো নিজেরটা খুই°য়েছেন আবার আমারটাও।”
আহনাফ আলতোভাবে ওর কোমড়ে হাত দিয়ে বলে,
“ঐশী, তোমার লজ্জা কবে ছিল গো?”
সারাহ্ ওকে ধা°ক্কা দিয়ে সরিয়ে বেরিয়ে যায়৷ বই পড়ে মাথা ঠান্ডা করা তার আর হয়ে উঠে না। আহনাফ মাথানিচু করে হেসে উঠে৷
ভালোবাসার পুরোনো সংজ্ঞা নতুনরূপে জেনেছে সে। শান্ত, ভদ্র ছেলেটাকে অশান্ত সমুদ্রে পরিণত করার ক্ষমতা কেবল ভালোবাসারই আছে। আবার অশান্ত সমুদ্রের সু°নামিকে শান্ত করতেও ভালোবাসারই প্রয়োজন।
সারাহ্-র চোখে থাকা লজ্জা দেখে সে প্রতিদিন নতুন করে প্রেমে পড়ছে। এ প্রেমের কাব্য কি সারাহ্ জানে? থাকুক না সে কাব্য গোপনে। আহনাফের দেয়া লজ্জায় তার ওষ্ঠদ্বয় কেঁপে উঠুক বারে বারে।
এমন সময় ইমতিয়াজ আহনাফকে কল দেয়। আহনাফ একটু ঘোরের মধ্যে ছিল ফোন বাজায় চমকে উঠে রিসিভ করে।
“কল দিয়েছিলে? সরি, আমি একটু ব্যস্ত ছিলাম।”
“কোনো সমস্যা না। আসলে একটা বিষয় নিয়ে আলাপ করতে চাইছিলাম। সময় হবে?”
“হ্যাঁ, বলো।”
আহনাফ কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে,
“আমার ছোট ফুপা, জামিল, উনি শাফিনের সাথে অনেক আগে থেকে ইনভলভ। উনি নিজ মুখেই স্বীকার করেছে তিনটা খু°নের সময় উনি সামনে ছিল। (একটু থেমে) এমনকি তাহসিনাকে (আবারো বিরতি নেয়) তাহুকে পি°টিয়েছিল উনি। তাহুর..”
বাকিটা আহনাফের বলা হয়ে উঠে না। বুকের কোথাও কষ্টগুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠে।
ইমতিয়াজ ফোনটা শক্ত করে ধরে বলে,
“উনি কি এখন তোমার কাছে আছে?”
“ছিল কয়েকদিন, ধরেছিলাম, বেশ কয়েকদিন আটকে রেখেছিলাম। বেশ ট°র্চা°রও করেছিলাম। তবে ঐশীর নিরাপত্তার কথা ভেবে উনাকে সিআইডির হাতে তুলে দিয়েছি।”
ইমতিয়াজ মাথা নেড়ে বলে,
“ভুল করেছো, চরম ভুল।”
“এছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।”
“এখন কি সে ঢাকায়?”
“হ্যাঁ ঢাকায়। তোমাদের বাসার কাছাকাছি। সিআইডি হেড কোয়ার্টারে আছে।”
ইমতিয়াজ মাথা নাড়ে। বলে,
“ঠিক আছে। আমি দেখছি।”
“জামিল একা নয় সাথে আরো তিনজন আছে মোট চারজন এসেছিল ঐশীকে তুলে নিয়ে যেতে।”
ইমতিয়াজের পাশে বসে মৃত্তিকা সব কথাই শুনেছে। হালকা করে মাথা নাড়ে সে। জামিলে হাতের কাছে পাওয়া গেছে, এটা একটা বড় সুযোগ।
______________________________________
অপরূপাকে গত দুই দিনে তন্নতন্ন করে খুঁজেছে শাফিন। কিন্তু কোথাও পায়নি। অপরূপা কোথায় গেছে? কি অবস্থায় আছে? তা সে জানে না। জানার চেষ্টা করেও কোনো লাভ হয়নি।
যাত্রাবাড়ী গিয়ে দেখেছিল সেখানে মেয়েগুলো নেই। তার আগের দিন একজনের আহত হওয়ার খবর অপরূপা তাকে দিয়েছিল। তবে কেউ এই ঠিকানা পেয়েছে?
কে হতে পারে? সন্দেহের তী°রটা মৃত্তিকার দিকে যায়। তবে আরো একজন আছে যাকে শাফিন সন্দেহ করতে থাকে, সে হলো ইমতিয়াজ।
আজকের দিনটাও কে°টেছে, বিকাল গিয়ে সন্ধ্যা হলো। অপরূপার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। মৃত্তিকার প্রতি রাগ তার বেড়েই যাচ্ছে।
রুমে বসে সি°গা°রেটের ধোঁয়া ছাড়ছে সে, এমনসময় ফোন বেজে উঠে। অপরূপা কল করেছে। হন্তদন্ত হয়ে রিসিভ করে শাফিন।
“হ্যালো।”
“অপরূপা, কোথায় আছো?”
ধ°ম°ক দিয়ে প্রশ্ন করে সে।
বিপরীত দিকে থেকে অপরূপার স্বাভাবিক কণ্ঠ ফিরে আসে,
“একটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জোগাড় করেছি।”
“কি?”
শাফিনের কপাল কুঁচকায়।
“জামিল সিআইডির হাতে ধরা পড়েছে। যে পরিমাণ মা°র পড়ছে, তাতে হয়তো এ থেকে জেড সব বলে দেবে। (একটু থেমে) বিশেষ করে এডভোকেট বিথী যদি ধরা পড়ে, তবে বি°পদ বাড়বে।”
শাফিন মাথা নাড়ে। বলে,
“খবর কোথা থেকে পেয়েছো? সত্য না মিথ্যা?”
“পাকা খবর, আহনাফ তাকে ধরেছিল আর হস্তান্তর করেছে।”
“আহনাফ? তার মানে তুমি ঠিক সন্দেহ করেছিলে?”
“হ্যাঁ।”
শাফিন বেশ অনেকটা সময় নিয়ে ভাবনা চিন্তা করে, কিন্তু যুতসই কোনো বুদ্ধি পায় না। অপরূপা বলে,
“আমার কাছে খুব ভালো একটা প্ল্যান আছে।”
“তাড়াতাড়ি বলো।”
“জামিলকে পৃথিবী থেকে বিদায় দিয়ে দাও। না থাকবে বাঁশ, আর না বাজবে বাঁশি।”
শাফিন ঠোঁট বাঁকিয়ে হেসে মাথা নেড়ে বলল,
“ইউ আর রাইট।”
কল রাখতেই মৃত্তিকা অপরূপার ফোনটা হাতে নেয়। এতক্ষণ মৃত্তিকার শেখানো বুলিগুলো আওড়ে গেছে সে।
ঘাড়ের কাছে চেপে ধরা একগুচ্ছ জ্ব°ল°ন্ত সি°গা°রেটের য°ন্ত্র°ণা থেকে বাঁচার জন্য আর খানিকটা ড্রা°গের আশায় এ কাজ করতে রাজি হয় অপরূপা। দুইদিন ধরে ড্রা°গ না পেয়ে সে অস্থির হয়ে উঠেছে আর সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে মৃত্তিকা।
মৃত্তিকা ফোনটা রেখে বলে,
“শাফিনকে আমি সহজে ধরবো না, খেলিয়ে ধরবো। কা°টা দিয়ে কিভাবে কা°টা তুলতে হয় তার শরীফের মেয়ে মিউকো ভালো করেই জানে।”
চলবে….