হৃদকোঠোরে_রেখেছি_তোমায়🖤(৪৭) #Maisha_Jannat_Nura (লেখিকা)

0
876

#হৃদকোঠোরে_রেখেছি_তোমায়🖤(৪৭)
#Maisha_Jannat_Nura (লেখিকা)

(১১৬)
সাবরিনা হনহনিয়ে নিজের রুমে প্রবেশ করে রাগের বশে হাতে থাকা ফোনটা বিছানার উপর ছুঁ*ড়ে ফেলে দিয়ে ডান হাত মুষ্টিবদ্ধ করে বাম হাতের উপর আলতো ভাবে বা*রি দিয়ে মুখ দিয়ে ‘সিট’ শব্দটি উচ্চারণ করলেন। সেইসময় কামীনি এক ছুটে সাবরিনার রুমে প্রবেশ করে দরজা ভিতর থেকে আটকে দিয়ে সাবরিনার সামনে এসে দাঁড়িয়ে বললেন….

—“ভাবী প্রতিবার যদি তোমার এই ছেলে আমাদের সব পরিকল্পনার উপর এভাবে জল ঢেলে দেয় তাহলে তো আমাদের কোনো পরিকল্পনাই সাকসেসফুল হবে না। শরীফ ইসলামের মতো এতো বড় একজন বিজনেস পার্টনার আজ আমাদের থেকে হাতছাড়া হয়ে গেলো।কোথায় আজ তাদের সাথে সম্পর্কের বাঁধনটা আরো মজবুত হওয়ার কথা ছিলো সেখানে সারাজীবনের জন্য সম্পর্কের ইতি টানার মতো পরিস্থিতি তৈরি করলো তোমার ঐ ছেলে।”

সাবরিনা রাগী স্বরে বললেন….
—“বারবার আমার ছেলে.. আমার ছেলে বলছিস কেনো তুই ছোট? তুই জানিস না কুশল আসলে র….!”

সাবরিনা পুরো কথা শেষ করার আগেই কামিনী একহাতে সাবরিনার মুখ চে*পে ধরে তাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন…

—“চুপ করো ভাবী…দেওয়ালের ও কান আছে। এসব কথা মুখে এনো না। অ*ন*র্থ হয়ে যাবে তাহলে।”

এই বলে কামিনী সাবরিনার মুখের উপর থেকে হাত সরিয়ে ফেলে। সাবরিনা জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলে নিজের ভিতরে জমে থাকা রাগ গুলোকে দমিয়ে ফেলার চেষ্টা করতে থাকে।

(১১৭)
তরুনিমা ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বের হতেই কুশলকে সোফার উপর বালিশ ঠিক করে রাখতে দেখে শান্ত স্বরে বললো…

—“আপনি বিছানায় এসে শুইতে পারেন, আমার কোনো সমস্যা নেই।”

তরুর মুখে এরূপ কথা শুনে কুশল শান্ত দৃষ্টি নিয়ে তরুর দিকে তাকিয়ে রয় কিছুসময়। অতঃপর বললো…

—“সোফায় শুয়ে শুয়ে এখন আমি অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি। আর সমস্যা হয় না এখানে শোয়া নিয়ে। আমি এখানেই শুইতে পারবো। তুমি আরাম করে বিছানায় ঘুমাও।”

—“আজ থেকে আপনাকে আর সোফায় ঘুমাতে হবে না। এই বিছানাটা যথেষ্ট বড় আছে। দু’জন মানুষ নিজ নিজ জায়গায় আরাম করে ঘুমাতে পারবো। কথা না বাড়িয়ে বিছানায় এসে শুয়ে পড়ুন।”

—“আমি এখানেই মানিয়ে নিতে পারবো। তুমি ঘুমাও বিছানায়।”

এই বলে কুশল সোফায় বসে পড়ে। তরুনিমা চোখ ছোট ছোট করে কুশলের দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুসময়। অতঃপর মুখে কিছু না বলে দ্রুত পায়ে কুশলের সোফার কাছে গিয়ে সোফার উপর রাখা বালিশ গুলো একএক করে বিছানার উপর ছুঁ*ড়ে ফেলতে শুরু করে। তরুর এমন কাজে কুশল তরুর আড়ালে মিটমিটিয়ে হাসে। তরু কুশলের দিকে তাকিয়ে কিছুটা রাগ বিয়ে উচ্চস্বরে বললো……

—“ভালো কথার মানুষ আপনি না। ভিষণ রকমের ঘাড়*ত্য*ড়া হয়ে গিয়েছেন। আপনার ঘাড়ে থাকা এই ত্য*ড়া র*গ গুলো সব কেটে একদম সোজা বানিয়ে….!”

তরু পুরো কথা শেষ করার পূর্বেই কুশল বসাবস্থা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে তরুর দুই ঠোঁটের মাঝবরাবর নিজের শাহাদত আঙুল ঠেকিয়ে ওকে থামিয়ে দিয়ে বললো….

—“শুউউউউপ….!”

পরক্ষণেই কুশল নিজের আঙুল সরিয়ে নিয়ে বিছানার কাছে গিয়ে নিজের জন্য বালিশ গুলো ঠিকঠাক করে নিতে শুরু করে। অতঃপর তরুও আর কিছু না বলে ধীরপায়ে বিছানার অন্যপাশে গিয়ে বালিশ ঠিক করে নিয়ে কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে পরে। কুশলও শুয়ে পড়ে।

(১১৮)
সকালবেলা…….
তাহির চোখ মেলে তাকাতেই দেখে হুমায়রা ওর বাম হাতের উপর মাথা রেখে বসাবস্থাতেই ঘুমিয়ে গিয়েছে। হুমায়রার মুখের উপর ওর ছোট ছোট চুলগুলো এসে পড়ছে। তাহির আলতোভাবে ডান হাতটা এগিয়ে এনে হুমায়রার মুখের উপর পড়া চুলগুলো সরিয়ে ওর কানের পিছনে গুঁ*জে দেয়। হুমায়রার মায়া মাখানো ঘুমন্ত মুখশ্রী তাহিরকে ওর দিকে আকর্ষিত করছে। তাহির একবার দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো….

—“আমার পক্ষে কি ২য় কাওকে ভালোবাসা সত্যিই সম্ভব হবে! কখনও তোর দিকে ভালোভাবে তাকিয়েও দেখি নি আমি হিমু। আজ নিজের এতোটা কাছে তুই অবস্থান করছিস। তোর এই মায়া মাখানো মুখশ্রী আমাকে তোর দিকে এতোটা আকর্ষিত কেনো করছে! তবে কি তোর ভালোবাসার জোড়ই পারবে আমার মনেও তোর জন্য ভালোবাসার সৃষ্টি করতে!”

তাহিরের কথা বলার মাঝেই হুমায়রার ঘুম ভেঙে যায়। হুমায়রা চোখ মেলে তাকাতেই তাহিরের চোখে চোখ পড়ে যায় ওর। তাহির নিজের দৃষ্টি অন্যত্র সড়িয়ে নেয়। হুমায়রা সোজা হয়ে বসতেই তাহির নিজের বাম হাতটা একটু নাড়াতে নাড়াতে বললো….

—“আহহহ…আমার হাতের উপর মাথা রেখে আরাম করে ঘুমিয়ে তো এখন আমাট হাতের পুরো বারোটা বাজিয়ে দিয়েছিস দেখছি। কোথায় আমার সেবা করে আমাকে দ্রুত সুস্থ করে তুলবি তা না আমার সমস্যা আরো বাড়িয়ে দিচ্ছিস।”

হুমায়রা বসাবস্থা থকে উঠে দাঁড়িয়ে বললো…..
—“হাতির মতো একটা শরীর বানিয়েছো কি জন্য? সামান্য একটা মাথার ওজন কিছুসময়ের জন্য সহ্য করতে পারো না এতেই তোমার হাতের বারো-তেরোটা বেজে যায় একেবারে।”

—“তোকে কানাডায় রেখে পড়াশোনা করিয়ে খালা-খালু শুধু শুধু তাদের মূল্যবান অর্থগুলো ন*ষ্ট না করলেই পারতেন।”

হুমায়রা চোখ ছোট ছোট করে বললো….
—“মানে!”

—“মাথায় তো এতোটুকু পরিমান ভালো জ্ঞান বুদ্ধি আছে বলে মনে হয় না। যদি থাকতো তাহলে আমার সিক্স প্যক বডিকে তুই হাতির শরীরের সাথে তুলনা করতে পারতি না। আর না আমার এতোসুন্দর নামটাকে পঁ*চি*য়ে ওমন বি*শ্রী একটা নাম রাখতি।”

হুমায়রা মুখ বাঁকিয়ে বললো….
—“তোমার সাথে যেটা মানায় সেটাই বলেছি আমি। আমার সামান্য মাথার ওজন সহ্য করতে না পেরে নিজের সিক্স প্যক বডির মান তো রাখতে পারলে না। তাই তোমার শরীরকে হাতির শরীরের সাথে তুলনা করে আমি একটুও ভু*ল করি নি। আর রইলো নামের বিষয়টা। তোমার মতো লোককে এতো সুন্দর নামে ডাকাটাও বেমানান লাগে। তোমার সাথে ঐ ধলা ইঁ*দু*র নামটাই মানায়। বাসায় ফেরার পর খালা-খালুকে বলে তোমার জন্ম নিবন্ধন থেকে শুরু করে সব সার্টিফিকেট ও ভোটার আইডি কার্ড থেকে ঐ তওকির তালুকদার তাহির নামটা পরিবর্তন করে ধলা ইঁ*দু*র নামটাই পার্মানেন্ট করার ব্যবস্থা করবো।”

হুমায়রার কথাগুলো হজম করে নিতে তাহিরের কয়েক সেকেন্ড সময় লাগে। তাহির চোখ ছোট ছোট করে নিজের দু’হাত হুমায়রার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো…..

—“হিমুর বাচ্চা…..আর একটা উল্টো পাল্টা কথা বলবি তো তোকে আমি আমার মাথার উপরে তুলে আ*ছা*ড় মা*র*বো।

হুমায়রা আরো দু’কদম পিছনের দিকে পিছিয়ে গিয়ে বললো….
—“আগে তো আমাকে নিজের কাছে টেনে নাও। তারপর একটা কিউটি বাচ্চা গিফট করো। তখন হিমুর বাচ্চার ডায়েপার পরিবর্তন করতে করতেই তোমার অর্ধেকের বেশি সময় চলে যাবে। আর রইলো হিমুর বাচ্চাকে মাথার উপর তুলে আ*ছা*ড় মা*রা*র বিষয়টা! বাচ্চাটাতো শুধু আমার একার হবে না, তোমারও হবে। নিজের বাচ্চাকে আ*ছা*ড় মা*র*বে কি করে তুমি!”

হুমায়রার মুখে এমন কথাগুলো শুনে তাহির যেনো প্রতিত্তুর করার ভাষাই হারিয়ে ফেলেছে। হুমায়রা তাহিরের দিকে তাকিয়ে হাসি দিয়ে পিছনে দরজার দিকে অগ্রসর হচ্ছিলো সেইসময় দরজা খুলে একজন সুদর্শন পুরুষ ডাক্তার তাহিরের কেবিনে প্রবেশ করায় তার বুকের সাথে ধাক্কা খেয়ে হুমায়রা পরে যেতে নেয়। ডাক্তারটি সাথে সাথেই দু’হাতে হুমায়রার কমোর জড়িয়ে ধরে ওকে পড়া থেকে বাঁচিয়ে নেয়। হুমায়রা কিছুটা ভ*য় পেয়ে চোখ-মুখ কুঁচকে ফেলেছে। ডাক্তারটি অপলক দৃষ্টি নিয়ে হুমায়রার দিকে তাকিয়ে আছে।

বেডে বসে তাহির হুমায়রাকে অন্য কোনো পুরুষের বাহুডোরে আবদ্ধ হয়ে থাকতে দেখে রাগে বিছানার চাদর মুষ্টিবদ্ধ করে নেয়। পরক্ষণেই তাহির ওর বেডের পাশে থাকা ছোট্ট টেবিলের উপর থাকা কাঁচের পানির গ্লাসটি হাতে নিয়ে রাগের বশে মেঝের উপর ছুঁড়ে ফেলে দেয়। গ্লাস ভা*ঙা*র শব্দ হুমায়রা আর ঐ ডাক্তারটির কর্ণপাত হতেই হুমায়রা চোখ মেলে তাকিয়ে নিজেকে ডাক্তারটির বাহুডোরে আবব্ধ হয়ে থাকতে দেখে দ্রুততার সাথে সরে দাঁড়ায়। হুমায়রা তাহিরের দিকে তাকাতেই দেখে তাহির অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে রেখে জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলছে।

হুট করে তাহিরের এভাবে রেগে যাওয়ার কারণটা আন্দাজ করতে হুমায়রার কয়েক সেকেন্ড সময় লাগে। হুমায়রা ঠোঁট চেপে নিজের হাসি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে মনে মনে বললো….

—“তোমার মনে আমার জন্য ভালোবাসার অনুভূতি কাজ করছে কিনা তা বোঝার জন্য একটা বিশেষ উপায় পেয়ে গিয়েছি। তারপর তোমার মুখ থেকে আমাকে ভালোবাসার কথাও বের করেই ছাড়বো আমি।”

ডাক্তারটি হুমায়রাকে উদ্দেশ্য করে বললো….
—“আপনি ঠিক আছেন তো!”

হুমায়রা হাসি দিয়ে বললো….
—“ভাগ্যিস আপনি সঠিক সময়ে এসে আমাকে ধরে নিয়েছিলেন নয়তো আমার কি যে হতো! অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ডাক্তার সাহেব।”

—“প্লিজ অন্য সবার মতো আপনি আমাকে ‘ডাক্তার সাহেব’ বলে ডাকবেন না। আপনি আমাকে আমার নাম ধরে ডাকলেই আমি খুশি হবো। আমার নাম নিলয়।”

—“ঠিক আছে, আমি আপনাকে আপনার নাম ধরেই ডাকবো কিন্তু আমার একটা ছোট্ট শর্ত আছে।”

—“কি শর্ত বলুন!”

—“আমার কাছে এই আপনি সম্বোধন করে কথা বলার বিষয়টা একদমই ভালো লাগে না। তাই আপনি আমাকে তুমি সম্বোধন করে কথা বললে আমিও খুশি হতাম।”

—“ঠিক আছে তাহলে তোমাকেও আমায় তুমি সম্বোধন করেই কথা বলতে হবে।”

হুমায়রা নিলয়ের সাথে কথা বলছে আর আঁড়চোখে তাহিরের সাথে কথা বলছে। তাহিরকে অত্যাধিক পরিমাণে জেলাস ফিল করতে দেখে হুমায়রার মনের ভিতর যেনো আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। হুমায়রা হাসিমুখে নিলয়কে বললো…

—“আচ্ছা ঠিক আছে নিলয়।”

—“আচ্ছা একটু ওয়েট করো। আমি পেশেন্টকে একবার চেক-আপ করে নেই। তারপর আমার সাথে আমার কেবিনে নিয়ে যাবো তোমায়। সেখানে বসে আমরা আমাদের বাকি পরিচয় পর্বটুকুও সেরে নিবো না হয়।”

হুমায়রা তাহিরের দিকে তাকাতেই দেখে তাহিরের ফর্সা মুখশ্রী রাগে লালচে বর্ণ ধারণ করেছে। নিলয় তাহিরকে চেক-আপ করতে ওর দিকে অগ্রসর হতে নিলেই তাহির হাত উঠিয়ে নিলয়কে থামিয়ে দিয়ে বললো…..

—“আমি ঠিক আছি। আমাকে আর চেক-আপ করার প্রয়োজন নেই। আপনি এখন আসতে পারেন।”

নিলয় অবাক স্বরে বললো…
—“কিন্তু…!”

—“আপনাকে এখান থেকে যেতে বলেছি।”

নিলয় তাহিরের এমন আচারণের মানে বুঝতে না পেরে হুমায়রার দিকে তাকায়। হুমায়রা নিলয়কে ইশারা করে চলে যাওয়ার জন্য। নিলয়ও আর কথা না বাড়িয়ে কেবিন থেকে বেড়িয়ে যায়। পরক্ষণেই হুমায়রা বললো…..

—“নিলয় তো আমাকে ওর কেবিনে যাওয়ার কথা বলেছিলো। তুমি আরাম করো আমি ওর কেবিন থেকে ঘুরে আসছি।”

এই বলে হুমায়রা দরজার দিকে অগ্রসর হতে নিলে তাহির রাগ নিয়ে উচ্চস্বরে বললো….

—“আর একপা যদি সামনের দিকে বাড়িয়েছিস তবে তোর দুই পা কে*টে আমি হাতে ধরিয়ে দিবো বে*য়া*দ*ব।”

হুমায়রা তাহিরের দিকে তাকিয়ে বললো…
—“তুমি নিজেও আমার ভালোবাসা গ্রহন করবে না আর অন্য কোনো পুরুষের সাথেও আমাকে আবব্ধ হতে দিবে না এমনটা তো হতে পারে না। হয় তোমাকে আমার ভালোবাসা গ্রহন করে আমাকে ভালোবাসতে হবে নয়তো আমাকে অন্য কোনো পুরুষের সংস্পর্শে যেতে…..!”

হুমায়রা পুরো কথা শেষ করার পূর্বেই তাহির উচ্চস্বরে হুমায়রাকে একটা ধমক দেয়। তাহিরের ধমক শুনে হুমায়রা কিছুটা কেঁপে উঠে। তাহির যে এতোটা রেগে যাবে হুমায়রা তা বুঝতে পারে নি। এখন হুমায়রার মনে কিছুটা ভ*য় কাজ করতে শুরু করে। তাহির ধমকের স্বরে বললো…

—“মুখ বন্ধ রেখে আমার পাশে এসে বোস। যদি মুখ থেকে আর একটা শব্দ বের করেছিস বা এই কেবিন থেকে বাহিরে যাওয়ার চেষ্টা করেছিস তবে এই কেবিনের মেঝেতেই তোকে জী*ব*ন্ত পুঁ*তে ফেলবো আমি।”

হুমায়রা নিজের মুখশ্রী জুড়ে ভ*য়ে*র ছাপ স্পষ্ট রেখে ধীরপায়ে তাহিরের বেডের দিকে অগ্রসর হয়। অতঃপর বেডের পাশে থাকা চেয়ারটা টেনে সেখানে মাথা নিচু করে বসে রয়। তাহির বেডের অন্য পাশে থাকা টেবিলের উপর থেকে নিজের ফোনটা হাতে নিয়ে কাওকে কল করে দ্রুত ক্লিনিকে আসার কথা বলে কল কেটে দেয়।

(১১৯)
নিজরুমে কুশল আর তরু দু’জনেই রেডি হচ্ছে। তরুনিমা ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে কানে পাতলা দুটো ঝুমকো পড়তে পড়তে বললো….

—“সকাল সকাল কোথায় যাওয়ার জন্য তৈরি হতে বললেন আপনি আমায় আর সন্ধ্যাকে!”

কুশল ওর শার্টের হাতা দু’টো ফোল্ড করতে করতে বললো….
—“একটা শুভ কাজের উদ্দেশ্যে বিশেষ একটা জায়গায় নিয়ে যাবো তোমাদের।”

—“জায়গাটার নাম টাও কি বলা যায় না!”

—“বলা গেলে তো বলতাম ই। এতোসময় অপেক্ষা করাতাম না তোমাদের।”

তরুনিমা কুশলের কথা শুনে কোনো প্রতিত্তুর না করে হালকা ভাবে মুখ বাঁকায় মাত্র। অতঃপর তরু আর কুশল একসাথে ওদের রুম থেকে বের হয়ে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসে। ড্রয়িংরুমে সোফায় বসেছিলো সন্ধ্যা সহ চৌধুরী পরিবারের বাকি সদস্যরা। কুশল আর তরুকে আসতে দেখে সন্ধ্যা কামিনীকে উদ্দেশ্য করে বললো….

—“ঐ তো মেজো ভাইয়া আর ভাবী এসে গিয়েছে। এবার মেজো ভাইয়ার থেকেই জেনে নাও কি কারণে সকাল সকাল সে আমাকে আর মেজো ভাবীকে রেডি হতে বলেছে। আর কোথায় নিয়ে যাবে! এতোসময় তো এটা জানতে প্রশ্ন করতে করতে আমার মাথা ন*ষ্ট করে ফেলছিলে।”

কামিনী তরু আর কুশলের দিকে তাকিয়ে বিনুনি নাড়াতে নাড়াতে বললেন….
—“কি এমন বিশেষ কাজে সকাল সকাল বের হতে হচ্ছে তোমাদের যে সেই কাজের বিষয়ে আমাদের কাওকে অবগত করা যাবে না!”

কুশল কামিনীর জানার আগ্রহকে এড়িয়ে শান্ত স্বরে বললো…
—“আমি বাহিরে গাড়ি বের করছি। তুমি সন্ধ্যাকে নিয়ে এসো দ্রুত তরুনিমা।”

এই বলে কুশল মূল দরজার দিকে অগ্রসর হতে শুরু করে। কামিনী কিছুটা অ*প*মা*ন বোধ করে ঘনঘন করে নিজের বিনুনি নাড়াতে শুরু করে। সন্ধ্যাও বসাবস্থা থেকে উঠে তরুর সাথে বাহিরের দিকে অগ্রসর হয়। তরু আর সন্ধ্যা বাহিরে আসতেই দেখে কুশল মূল গেইটের সামনে গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তরু আর সন্ধ্যা গাড়ির কাছে এসে দাঁড়ায়। অতঃপর সন্ধ্যা গাড়ির পিছনের দরজা খুলে সেখানে বসে পরে আর তরু সামনের দরজা খুলে কুশলের পাশের সিটে বসে পরে। ওদের দু’জনকে বসতে দেখে কুশল গাড়ি স্টার্ট করে।

#চলবে ইনশাআল্লাহ……….

(১৮৫৫ শব্দ আছে এখানে 🥹)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here