_প্রেমের_সম্মোহন💞 #পর্ব_ ০৫ Writer_Nusrat_Jahan_Sara

0
193

#_প্রেমের_সম্মোহন💞
#পর্ব_ ০৫
Writer_Nusrat_Jahan_Sara

(৬)
সকালে চোখে মুখে পানির ছিটে পরতেই ধরফরিয়ে ঘুম থেকে উঠলো অনু৷ভালো করে চোখ ডলে দেখলো ওর সামনেই আরুহি,সামান্তা,ছোঁয়া,রিংকি দাঁড়িয়ে আছে৷ আর রিংকির হাতে একটা গ্লাস৷ অনু কিছুক্ষণ ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলো ওদের দিকে৷

রিংকিঃএভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো?
.
অনুঃতোরা হঠাৎ এতো সকালে আমার বাসায় কী করিস৷ আর পানি দিয়ে ঘুম কেনো ভাঙালি কতো সুন্দর একটা স্বপ্ন দেখতেছিলাম৷
.
আরুহিঃওকে আপনি বরং স্বপ্ন দেখুন আর আমরা সবাই ভার্সিটিতে গেলাম৷ আজ যে অনুষ্টান সেটা কী তোর মনে আছে?
.
সামান্তাঃকী করে মনে থাকবে বেচারি তো আবিরের মধ্যে বিভোর৷
.
অনুঃ তোর পিঞ্চ করা অফ যা৷ আমি কোন দুঃখে আবিরের মধ্যে বিভোর হতে যাবো৷ তুই তো আদনানের মধ্যে বিভোর থাকিস তাই অন্যেরটাও ভালো করেই জানিস৷
.
ছোঁয়াঃওই তোরা থামবি৷ দেখ অনু লেট হয়ে যাচ্ছে কিন্তু৷
.
অনুঃহুম আমি এক্ষুনি ফ্রেশ হয়ে আসছি৷

অনু ফ্রেশ হয়ে এসে দেখলো মিতা হাতে একটা প্লেট নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে৷

অনুঃপ্লেটে কী আপু?
.
মিতাঃরুটি বানিয়েছি৷ না বানালে তো তুই আবার না খেয়েই চলে যাবি৷
.
অনুঃএকা করেছো?আমাকেও ডাকতে পারতে৷
.
মিতাঃকখনো কী তোকে সকালে ডেকে তুলেছি যে এখন তুলবো৷ যতদিন আমি আছি ততদিন তোকে সকালে উঠতে হবেনা যদি না আমি অসুস্থ থাকি৷ এখন তারাতাড়ি হা কর৷

মিতা অনুকে খাইয়ে দিচ্ছে আর আরুহি,সামান্তা, ছোঁয়া,রিংকি ওরা চেয়ে চেয়ে দেখছে মিতা অনুকে কতো ভালোবাসে৷ মিতা সবার দিকে তাকিয়ে হাল্কা হেঁসে ওদের কাছে গেলো৷

মিতাঃনাও তোমারও হা করো৷
.
সামান্তাঃআমরা!!!
.
মিতাঃহুম৷
.
মিতা ওদের চারজনকেও খাইয়ে দিলো৷

আরুহিঃআপু আমরা কিন্তু সাথে করে শাড়ি নিয়ে এসেছি অনু একদিন বলেছিলো যে তুমি নাকি খুব সুন্দর করে শাড়ি পরিয়ে দিতে পারো তাই আমরাও শাড়ি না পরে তোমার কাছে চলে এসেছি তুমি আমাদের শাড়ি পরিয়ে দিবে৷

মিতা ওদের সবাইকে শাড়ি পরিয়ে দিলো৷

ওরা সবাই নীল শাড়ি পরেছে সাথে নীল কাঁচের চুড়ি৷ চুল গুলোও ছেড়ে দিয়েছে হাল্কা লিপস্টিক। সবাইকেই খুব সুন্দর লাগছে৷ মিতা ওদের কাছে এসে সবার কানের পিছনে কাজল লাগিয়ে দিলো৷

ওরা সবাই মিতার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলো৷
🍁
ভার্সিটি আজ খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে৷ গেট বেলুন দিয়ে সাজিয়েছে৷ গেটের সামন থেকে একেবারে অডিটোরিয়াম রুম পর্যন্ত রেড কার্পেট বিছানো৷

অনু, আরুহি,সামান্তা,রিংকি,ছোঁয়া ওরা গেটের পাশে দাঁড়িয়ে গেট দেখছে৷

রিংকিঃ সামু, রুহি,অনু,ছোঁয়া দেখ কদম ফুলের পাপড়ি পরছে বাতাসে৷
.
ওরা তিনজন তাকিয়ে দেখলো ওদের থেকে একটু দূরেই একটা গাছ থেকে হাল্কা বাতাসে কদম ফুলের পাপড়ি পরছে৷

অনু দৌড়ে গাছের নিচে চলে গেলো৷ দুই হাত মেলে ঘুরছে আর সব পাপড়ি ওর চোখে মুখে পরছে৷ অনুর দেখাদেখি আরুহিরাও কদম গাছের নিচে গিয়ে ঘুরতে লাগলো৷
🍁

হঠাৎই শু করে ওদের সামন দিয়ে একটা কার ঢুকে গেলো৷ অনুরা একবার তাকিয়ে সেদিক থেকে চোখ সরিয়ে নিলো৷

আবির,আদিল, আদনান,শ্রাবন,আহিল ওরা পাচঁজন ভার্সিটির একটা এক্সট্রা রুমে বসে আছে৷তখন কার দিয়ে ওরাই এসেছিলো আদিল জানালায় হেলান দিয়ে স্মোক করছে৷ নিচে একটা গাছের তলায় কয়েকটা মেয়েকে হাসাহাসি করতে দেখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো৷ আদিলের দৃষ্টি আরুহির দিকে৷আরুহি যেনো ওকে সম্মোহন করে ফেলেছে৷ আদিলকে বাইরে তাকিয়ে থাকতে দেখে শ্রাবন আদিলের কাছে এসে সেও আদিলের দৃষ্টি অনুসরণ করে নিচে তাকালো৷ আবির আদিলকে ডাকছে কিন্তু সে শুনছেই না এক ধ্যানে নিচে তাকিয়ে আছে৷ আবির উঠে গিয়ে ওদের পাশে দাঁড়ালো৷ শ্রাবন কিছুক্ষণ বাইরে তাকিয়ে আবিরের দিকে তাকালো৷

ছোঁয়াঃআবির দেখ মেয়েগুলোকে৷
.
আবিরঃতোদের তো খেয়েদেয়ে কোন কাজ নাই তাই শুধু মেয়েদেরই দেখিস৷
.
আদিলঃকিন্তু এই মেয়েগুলো বাকি মেয়েদের চাইতে আলাদা৷চেয়ে তো দেখ একবার৷

আবিরও বাইরে তাকালো৷আরুহি ,সামান্তা, ছোঁয়া,রিংকি ওরা চারজন মিলে ফোনে কিছু একটা করছে আর অনু নিচে বসে বসে কদম ফুলের পাপড়ি দিয়ে লাভ বানাচ্ছে৷ বাতাসে অনুর চুল উড়ছে আর অনু মিষ্টি হেঁসে আশেপাশে তাকাচ্ছে আর লাভ বানাচ্ছে৷
আবিরকে অনুর দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে আদনান এসে ওর কাঁধে হাত রাখলো৷

আদনানঃব্রো তুই কোনদিন থেকে আবার মেয়েদের দিকে তাকানো শুরু করেছিস৷
.
আদিলঃএতো পাকনামু করিস না আদনান তুইও একবার ভালো করে নিচে চেয়ে দেখ৷
.
আদনান ওদের টেলে এগিয়ে এসে সেও নিচে তাকালো৷ সামান্তা তখন শাড়ি ধরে দৌড়াচ্ছে আর আরুহিদের দিকে খিলখিল করে হেঁসে হাতের দিকে কিছু ইশারা করে দেখাচ্ছে৷

আদনানঃওয়াও শি ইজ সো বিউটিফুল৷
.
আহিলঃআদনান ওই দেখ একটা মেয়ে যে সেল্ফি তুলছে ও কিন্তু বেশ মায়াবী৷(রিংকির দিকে ইশারা করে)
.
আবিরঃহুম এখানের সবাই মায়াবী বাট সবচাইতে মায়াবী আর অনন্যা হলো যে নিচে বসে কিছু একটা করছে৷
.
শ্রাবনঃচল নিচে যাই৷ অনুষ্ঠান শুরু হতে আরও সময় লাগবে৷ এর ফাঁকে এদের সাথে পরিচয় হয়ে আসা যাবে৷

আবির,আদিল,আদনান, শ্রাবন,আহিল ওরা সবাই নিচে গেলো৷ অনু,আরুহি,সামান্তা,ছোঁয়া,রিংকি তখন সেল্ফি তুলছিলো৷

ছোঁয়াঃওই চেয়ে এঁদেরকে আবিরের গ্যাংয়ের মতো লাগছেনা৷
.
ছোঁয়ার কথা শুনে সবাই পাশে তাকালো৷ আবিররা অনুদের দিকেই আসছে৷

আরুহিঃহ্যাঁ তাইতো এরা তো আবির,আদিল,আদনান,শ্রাবন,আর আহিল৷ ও মাই গডন্যাস ওরা আমাদের দিকেই আসছে৷
.
আবির অনুর সামনে দাঁড়িয়ে সানগ্লাস খুলে অনুর দিকে হাত বাড়িয়ে দিলো৷

আবিরঃহাই আ’ম আবির,,,,
.
অনু আবিরকে আর না বলতে দিয়ে সে আবিরের সাথে হ্যান্ডশেক করে বললো,,,

অনুঃআই নো৷ আপনি সেলেব্রিটি আবির রায়হান চৌধুরী৷ আমরা চিনি আপনাকে৷

আদিল আরুহির দিকে তাকিয়ে বললো,,,,

আদিলঃআমি আদিল খান৷
.
আরুহিঃআই নো৷ আপনি আদিল,খান উনি,শ্রাবন,উনি,আদনান,আর উনি আহিল৷ রাইট?
.
আদিলঃএকদম৷
.
ছোঁয়াঃতা আপনারা আমাদের ভার্সিটিতে হঠাৎ?
.
শ্রাবনঃইনভাইট করা হয়েছে আজকের অনুষ্টানে থাকার জন্য৷
.
রিংকিঃওয়াও তার মানে আপনারা গান গাইবেন৷
.
আহিলঃনা আমরা না জাস্ট আবির৷
.
আরুহিঃকিন্তু আপনারা গান গাইবেননা কেনো৷
.
সামান্তাঃবুঝিস না রুহি এদের মেবি একজনের হাঁসের কন্ঠ, আরেকজনের বাঁশের আরেকজনের গরুর, আরেকজনের হাতির এমন কন্ঠ নিয়ে কী গান গাওয়া যায় নাকি৷ আর আবিরের তো কোকিলের কন্ঠ তাই উনি গান গাইতে পারেন৷ চল এখন সবাই৷

সামান্তা সবাইকে নিয়ে ক্লাসে চলে গেলো৷

আদনানঃওয়াট এই মেয়ে আমাদেরকে কী অপমান করে গেলো?

সামান্তা পিছনে তাকিয়ে আদনানের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো৷

আদনান বুকের বা পাশে হাত দিয়ে বললো,,,

“এক্কেবারে এখানে গিয়ে লাগে৷

আবিরঃআমি জানি আদনান তুই এখন ওর সাথে ফ্লার্ট করার চেষ্টা করবি বাট একটা কথা বলে রাখছি সবার সাথে ফ্লার্ট করা ঠিক না৷
.
আদনানঃ ভাই ওকে দেখে আমার মনে অনুভূতি জেগেছে৷ ওর সাথে ফ্লার্ট করতে পারবোনা৷

আদনান দৌড়ে সামান্তা সামনে গিয়ে দাঁড়ালো৷আবিররাও আসছে৷

সবাইকে আবারো ওদের কাছে আসতে দেখে ওরা অবাক হয়ে গেলো৷ আদনান সামান্তার দিকে তাকিয়ে বললো,,,

আদনানঃআপনার নামটাতো বললেন না৷
.
সামান্তাঃআমার নাম সামান্তা,৷ আর ওর নাম অনু ওর নাম আরুহি,ওর নাম ছোঁয়া আর ওর নাম রিংকি৷এক সাথে সবার নাম বলে দিলাম৷

ওরা সবাই যেনো নাম মুখস্ত করছে মুখের রিয়াকশন দেখে সেটাই মনে হচ্ছে৷

আহিলঃঠিকাছে আপনারা যেতে পারেন৷

ওরা চলে গেলো৷

আদিলঃএদের নাম কিন্তু এদের মতোই কিউট৷
.
ওরা সবাই এটা ওটা বলছে কিন্তু আবির চুপ করে আছে৷ আদিল কিছুক্ষন আবিরের দিকে তাকিয়ে বললো,,,

আদিলঃআবির তুই এতো চুপচাপ কেনো কিছু কী হয়েছে৷
.
আবিরঃনাথিং আদি৷আচ্ছা তোরা অনু নামের মেয়েটাকে চিনতে পেরেছিস৷
.
আহিলঃনা তো৷ ওকে কী তুই আরও দেখেছিস৷
.
হুম কালকে রাতে যে মেয়ে বৃষ্টিতে ভিজে বোনের জন্য ইনহ্যালার আনতে যাচ্ছিলো ও সেই মেয়ে৷ আমি খুব ভালো করে লক্ষ্য করার পর চিনতে পারলাম৷
.
শ্রাবনঃওহ৷
🍁
আরুহিঃভাব মারস৷ তখন এভাবে টেনে আনলি কেনো এদের কাছ থেকে?কতো দিনের স্বপ্ন পূরন হয়েছে কোথায় একটু তাদের সাথে গল্প করবো তা নয় টেনে ছেচরে নিয়ে এলি৷

(৭)
সামান্তাঃআদনানকে এতো কাছে দেখে আমার দম বন্ধ হয়ে আসছিলো৷ ওকে আমি সামনাসামনি দেখতে চেয়েছিলাম বাট এতোটা কাছে দেখতে চাইনি৷ ওকে কাছে দেখে আমার কেমন যেন অস্বস্তি হচ্ছিলো৷ মনে হচ্ছিলো সেন্সল্যাস হয়ে যাবো৷
.
অনুঃসত্যি বলতে আমারও তখন আবিরকে কাছে দেখে এরকমি মনে হয়েছিলো৷
.
ছোঁয়াঃ আমারও৷
.
রিংকিঃআমারও৷
.
আরুহিঃআমারও৷
.
সামান্তাঃতাহলে যে বললি কেনো তোদের টেনে নিয়ে এসেছিলাম৷ ওওওও বুঝতে পেরেছি তুই চাইছিলিস সেন্সল্যাস হয়ে পড়ে যাবি আর আদিল খান তোকে হিরোদের মতো কোলে তুলে পুকুরে ছোড়ে মারবে তাই-না৷
.
ছোঁয়াঃএই এইটা কোন মুভির সিন রে৷ আমাকে একটু বল আমি মুভিটা দেখবো৷
.
সামান্তাঃ মুভির সিন মানে?
.
ছোঁয়াঃতুই যে এখন বললি হিরোদের মতো কোলে নিয়ে পুকুরে ছুড়ে মারবে৷
.
সামান্তাঃধুত এটা কথার কথা বলসি৷
.
অনুঃতোদের কথা বলা শেষ হয়ে থাকলে অডিটোরিয়ামে চল নাহলে মেয়েরা সিট নিয়ে নিবে৷ অনুষ্ঠান শুরু হলো বলে৷
🍁
আবিরকে দেখে সব মেয়েরা তার অটোগ্রাফ নেওয়ার জন্য ওর পিছন পিছন ছুটছে৷ মেয়েদের দেখাদেখি অনুরাও ওদের পিছন পিছন আসছে৷ আবির মেয়েদের অটোগ্রাফ দেওয়ার সময় ওর চোখ পড়লো অনুর দিকে অনু ওর লেখা দেখছে মনোযোগ দিয়ে৷ আবির মেয়েদের সরিয়ে অনুর সামনে গিয়ে দাঁড়ালো৷
.
আবিরঃঅটোগ্রাফ লাগবে?
.
অনুঃহুম৷
.
আবির অনুর হাত ধরে এনে ওর হাতে আবিরের নাম লিখে দিলো৷

আবিরঃবেস্ট অটোগ্রাফ অফ দ্যা ইয়ার৷

অনু মুচকি মুচকি হাসছে৷ মেয়েরা সবাই অনুকে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে৷ তাদের কাগজেই আবির নাম লিখছেনা আর অনুর নাকি হাতে লিখে দিয়েছে৷ 🍁
রাতে~~~~~

ব্যালকনিতে বসে বসে অনু নিজের হাত দেখছে৷ আবিরের নাম এখনো ওর হাতে আছে মুছে যায়নি৷অনু ইচ্ছে করেই মুছেনি৷

অনুঃআবিরকে দেখা নিতান্তই আমার স্বপ্ন ছাড়া আর কিচ্ছু ছিলোনা৷ কে চায়না সেলেব্রিটিকে দেখতে৷ সবাই চায়৷ কিন্তু একজন সেলেব্রিটি আমার হাতে নিজের নাম লিখে দিয়ে দিয়েছে সেটা যেনো বিশ্বাসই হচ্ছেনা৷ কোনো প্রেসের লোক সেখানে থাকলে নিশ্চয় আজ একটা নিউজ বানিয়ে নিতো৷ আর পত্রিকার হেডলাইনে থাকতো সিঙ্গার আবির রায়হান চৌধুরী একটা মেয়ের হাতে অটোগ্রাফ দিচ্ছে৷ সেলেব্রিটি মানুষদের লাইফে শান্তি নেই৷ কদমে কদমে পাবলিক ওদের ভুল ধরে৷ কিন্তু একটা জিনিস খুব ভাবাচ্ছে আমাকে৷ আবির অন্য কোনো মেয়েদের সাথে পারসোনালি দেখা করে কী না জানিনা তবে আজ আমাদের সামনে এসে আমাদের সাথে কথা বলেছে এমনকি হ্যান্ডশেক করার জন্য হাতও বাড়িয়ে দিয়েছে৷মেয়েরা আবিরের পিছন পিছন অটোগ্রাফের জন্যে ছুটেছে কিন্তু আবির ওদের টেলে আমার হাতেই নিজের নাম লিখে দিয়েছে৷ হুয়াই?
অনু এসব ভাবছে আর ফোনের স্ক্রিনে তাকাচ্ছে৷ আজ নীল প্রজাপতি মেসেজ দিচ্ছেনা খুব মিস করছে সে৷

অনু দেয়ালে মাথা টেকিয়ে বসে আছে৷ আবির,নীল প্রজাপতি,আকাশ ওদের সবাইকেই আজ প্রচন্ড মনে পরছে৷

মেসেজ টুনের আওয়াজ কানে আসতেই অনু তারাতাড়ি ফোন হাতে নিতেই নীল প্রজাপতি নাম দেখেই অনুর মুখে অজান্তেই হাসি ফুটে উঠলো৷

“হাই৷
.
হ্যালো৷
.
বাহ আজ এতে তারাতাড়ি রিপ্লাই দিলে যে মিস করছিলে বুঝি৷
.
একদম না৷
.
ওহ আচ্ছা৷ আজ কিন্তু তোমাকে খুব প্রেটি লেগেছে৷
.
আপনি কী করে দেখলেন৷
.
তোমাকে দেখা কোন ব্যাপার না৷ তোমাকে আমি প্রত্যেকদিন ওই দেখি৷
.
আচ্ছা আপনার নামটা একটু বলবেন প্লিজ৷
.
নাম দিয়ে কী করবে
.
যদি আজ আপনার প্রমান না দেন তাহলে আমি এখন থেকে আর ব্যালকনিতে আসবোনা৷ আপনার পরিচয় জানা আমার দরকার
🍁
আরুহি বিছানায় বসে কোলে একটা টেডি নিয়ে আদিলের কথা ভাবছে৷

আরুহিঃআই জাস্ট কান্ট বিলিভ দিস৷ আদিল খান আমার সামনে দাঁড়িয়ে আমার সাথে কথা বলেছে৷ সবসময় শুধু তাকে টিভিতে আর ফোনেই দেখে এসেছি আরেকবারও সামনাসামনি দেখেছি বাট এতোটা কাছে দেখেনি৷ আদিলের কী চাহনী আমি তো একেবারে ফিদা৷কী সুন্দর আমার দিকে বাঁকা হেঁসে থাকালো৷ উফফ

এদিকে আদিল ফেইসবুকে আরুহির নাম লিখে সার্চ করছে বাট আইডি আসছেনা৷ অনেক খুঁজাখুঁজির পর সামান্তার নাম লিখে সার্চ করলো৷ সামান্তার নাম লিখে দিতেই সামান্তা নামের অনেক আইডি এসেছে৷ আদিল এক এক করে খুজে সামান্তার আইডি চিনলো প্রোফাইলে সামান্তার পিক দেখে৷৷ সামান্তার ফ্রেন্ডলিস্টে ফ্রেন্ড মাত্র পাঁচজন৷ রুমি নামক একটা আইডি দেখে আদিল ফুল শিওর যে ওটাই আরুহি৷ রুহি দিয়ে আইডি খুলার জন্য সে আইডি খুজে পায়নি৷ আদিল একটা ফেক আইডি থেকে আরুহিকে মেসেজ করলো৷

“হাই, আরুহি৷
🍁
তোমার নামে রোদ্দুরে, আমি ডুবেছি সমুদ্দুরে, জানিনা যাবো খুব দূরে আজ আবার৷

সামান্তা মনের সুখে পর্দা দিয়ে খেলছে আর গান গাইছে৷

“উফফ আদনানের সাথে কথা বলতে পেরেই ওতো খুশি লাগছে যদি ও আমার বয়ফ্রেন্ড বা হাসবেন্ড হতো কতোটা খুশি হতাম৷ উফফ ভাবলেই শরীরে কেমন শীতল শিহরন বয়ে যায়৷
🍁
শ্রাবনের মা সোফায় বসে বসে সিরিয়াল দেখছেন শ্রাবনও ওর মাকে দেখে এসে পাশে বসে পরলো৷

মাঃশ্রাবন বসে থাকো বাট কথা বলোনা৷ আমি সিরিয়াল দেখছি৷ তুমি সবসময় এসে আমার সিরিয়াল দেখার বারোটা বাজাও৷
.
শ্রাবনঃআচ্ছা মা ছোঁয়া নামটা কেমন?
.
শ্রাবনের মা শ্রাবনের দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বললেন,,,

মাঃহঠাৎ৷
.
শ্রাবনঃমনে হলো তাই বললাম আরকি৷
.
মাঃছোঁয়া নামটা খুব সুন্দর৷ তোমার নামের সাথে খুব সুন্দর মানাবেও৷

শ্রাবনঃশ্রাবনের ছোঁয়া৷ ওয়াও আগেতো ভেবে দেখিনি৷ ছোঁয়া সিলেক্টেড৷

শ্রাবনের মা ছেলের কথা শুনে একবার তাকিয়ে আবারও সিরিয়াল দেখায় মন দিলেন৷ আপাতত উনার আলো ছায়া দেখাটা দরকার৷
🍁
বুঝাবো কী করে তোকে কতো আমি চাই৷ তোর কথা মনে হলে নিজেকে হারাই৷

“কী ব্যাপার আদনান আজ আাসার পর থেকেই দেখছি তোর মুখে হাসি আটকে আছে৷ তা নাহলে এতোক্ষনে তো তোর বাড়ি মাথায় তুলে ফেলার কথা৷
.
আই ডোন্ট নো আপু৷ কেনো জানিনা আজ নিজেকেই নিজের কাছে খুব আনন্দিত মনে হচ্ছে৷ মনে চাচ্ছে যেনো আকাশে উড়ি৷
.
তা কার জন্য এমন মনে হচ্ছে৷
.
আজকে ভার্সিটিতে একটা মেয়েকে দেখেছি মেয়েটা খুব মায়াবী৷ চোখে মুখে কেমন মায়া লেপ্টে থাকে৷
.
তারপর৷
.
তারপর,,,,আদনান ওর বোনকে সব খুলে বললো৷ ওর বোন তো হাঁসতে হাঁসতে শেষ৷

“লাইক সিরিয়াসলি এই মেয়েটা তোর কন্ঠকে হাঁসের কন্ঠ বলেছে৷ একদম ঠিক কথা বলেছে৷ নাম কী মেয়েটার৷
.
সামান্তা৷
.
ওয়াও নাইস নেম৷ এখন ওর সাথে ফ্লার্ট করবি তাই তো৷
.
না আপু৷ ওকে দেখে আমার মনে ঘন্টা বেজেছে ওর সাথে ফ্লার্ট করতে পারবোনা৷ এই প্রথম কোনো মেয়েদের দেখলাম যারা কিনা আমাদের অবাক হয়নি৷
.
হয়তো ওরা বাকিদের মতো লুজার না৷ তবে মনে মনে ঠিকই ওদের লাড্ডু ফুটেছে৷
.
তুমি কী করে জানলে?
.
ইউ নো ওয়াট আমি একজন মেয়ে৷
.
থ্যাংক ইউ
.
কেন৷
.
আমি জানতাম না তুমি যে মেয়ে এখন নতুন করে জানিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ৷ বাই দ্যা ওয়ে তোমারও কী কাউকে দেখে মনে লাড্ডু ফুটে৷
.
দূর৷
.
আদনানের বোন মুচকি হেসে উঠে চলে গেলো৷
🍁
এটা গল্প কার দেখো পড়ছে কে৷ আলো অন্ধকার দেখো শিকছে কে৷

“অন্ধকার আলো শিকার জন্য কী কেউ এসে গেছে নাকি
.
আহিল রুমে ভেস নিয়ে বসে বসে গান গাইছিলো তখুনি ওর মা কথাটা বলে রুমে ঢুকলেন৷
.
মা!!!!
.
হুম৷ এখন বলো বলো অন্ধকার, আলো শিকার জন্য কেউ এসে গেছে নাকি৷
.
না৷ (মুচকি হেঁসে)
.
বলতে না চাইলে বলার দরকার নেই৷
.
এখন না পরে কোন একদিন বলে দিবো৷
🍁
মন মানে না,মানে না, মন মানে না৷
.
কী মন মানে না৷
.
রিংকি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গান গাইছিলো তখুনি ওর ভাই কথাটা বলে ওর পাশে গিয়ে দাঁড়ালো৷
.
আব কিছু না ভাইয়া এখন গান গাইলেও কী তোমাকে কৈফিয়ত দিতে হবে আজব৷
.
রিংকির আহিলের কথা মনে হতেই মুচকি হাসলো৷
🍁
অনুঃকী হলো বলছেননা কেনো কে আপনি?
.
নীলাদ্রি৷
.
দেখুন নীল প্রজাপতি,নীলাদ্রি এসব নামে কাউকে চিনিনা৷ তাই হেয়ালি না করে বলুন কে আপনি৷
.
তুমি আমাকে চিনো৷
.
না আমি আপনাকে চিনিনা৷
.
মনে করার চেষ্টা করো৷
.
না মনে হচ্ছেনা তবে এমন ক্লু দেন যাতে চিনে ফেলি৷
.
কেন যে মন খারাপে নেমেছে রাত পাড়াতে
বসেছি সব হারাতে খুঁজে দাও খুঁজে দাও

যে পথে এগিয়েছে পা সেও আমায় চেনেনা,
আমি তো ফিরে যেতে চাই আমাকে ফিরিয়ে নাও

আমি যে কে তোমার তুমি তা বুঝোনা,আমি চিরদিন তোমারই তো থাকবো৷

“ক্লু দিয়ে দিলাম এখন চেনা না চেনা তোমার ব্যাপার৷ আমি গেলাম৷

অনু ধপ করে নিচে বসে গেলো৷

না এটা হতে পারেনা আমি এটা বিশ্বাস করিনা৷

#চলবে…………

[ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here