#তোমার_হতে_চাই ২
part : 12
writer : Mohona
.
হিয়া : আই লাভ ইউ… খুব ভালোবাসি তোমায় নীড়। তুমি আমায় নাই বা ভালোবাসলে। তুমি আমার হলেই যথেষ্ট। আমি তোমাকে এতো ভালোবাসবো যে একটা সময় তুমিও আমাকে ভালোবাসতে বাধ্য হবে।
মেরিন মনেমনে : ক্ষীরবাদুর কেনো বারবার নিজেকে আর আমাকে পাপের ভাগীদার করতে উঠেপরে লেগেছে! ও এমন করতে থাকলে তো আমি নিজের ওপর নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলবো। যা হবার নয় তা নিয়ে ভেবে তো লাভ নেই। মিথ্যা স্বপ্ন দেখা যে বড্ড ভয়ংকর ।
প্রহর-নিহারিকা দুজন দুজনকে আংটি পরিয়ে দিলো। মেরিন নিজের হাতের আংটির দিকে তাকালো। নীড় গলার চেইনের মধ্যে থাকা আংটিটা বের করে দেখতে লাগলো। সেটাতে চুমু দিলো। এরপর মেরিনের দিকে তাকালো।
নীড় : তুমিই আমার প্রথম ও শেষ ভালোবাসা ।
মেরিন মনেমনে : মিথ্যা হয়তো ছিলো সেই আংটিবদল কারন আমাদের মনবদল হয়নি সেদিন। কিন্তু সময় নিয়ে যে সম্পর্কটা গড়ে উঠেছিলো সেটা… আই লাভ ইউ ক্ষীরবাদুর। ইয়েস আই লাভ ইউ ক্ষীরবাদুর। আফসোস… সেই ভালোবাসার কথা তোমাকে কখনো বলতে পারবোনা। প্রহর-নিহারিকা তোমরা সবসময় ভালো থাকো। মধুর হোক তোমাদের সম্পর্ক।
.
পরদিন…
রবিন : আহ… শীট ম্যান…
রবিনের হঠাৎ করে মাসল স্ট্রেইন করেছে। হাত তুলতে পারছেনা।
নীড় : মে আই হেল্প ইউ স্যার?
রবিন : ডোন্ট কল মি স্যার।
নীড় : তাহলে মামা বলে ডাকবো!
রবিন : শাট আপ।
নীড় : স্যার আপনাকে আমি শাট আপ কি করে বলতে পারি?
রবিন : ১টা থাপ্পর দিবো তোমাকে।
নীড় : ওকে স্যার।
রবিন : বলেছিনা স্যার ডাকতে না।
নীড় : তো কি বলে ডাকবো স্যার!
রবিন : মিস্টার রবিন অথবা মিস্টার মাহমুদ।
নীড় : স্যার আপনি আমার জিহ্বা কাটিয়ে ফেলুন তবুও আপনার নাম বা সারনেইম নিয়ে ডাকতে বলবেননা। প্লিজ স্যার।
রবিন : লিভ মি অ্যালোন।
নীড় : সরি স্যার।
বলেই নীড় রবিনের কাধে হাত রাখলো। রবিন সরে গেলো।
রবিন : ডোন্ট টাচ মি। আহ…
নীড় আবারও ধরলো।
নীড় : স্যার যেখানে আপনার সুস্থতার প্রশ্ন সেখানে আপনার ধমক-থাপ্পরও আমাকে আটকাতে পারবেনা।
নীড় রবিনের হাতের মাসাজ করে দিতে লাগলো।
নীড় : নাও স্যার ফলো মাই স্টেপ।
নীড় কিছু এক্সারসাইজ দেখাতে লাগলো। কিন্তু রবিন করলোনা।।
নীড় : প্লিজ স্যার।
রবিন নীড়কে ফলো করতে লাগলো।
নীড় : স্যার জানেন আমার সব রাগ , সব জারিজুরি আপনার সামনে এসে বেরিয়ে যায়। যেমন করে টায়ার পাংচার হলে হয় ঠিক তেমন করে ।
রবিন কোনো কথা বলছেনা ।
নীড় : স্যার ১টা কথা বলি যদি ঘুষি না মারেন ।
রবিন কিছু না বলে চলে গেলো।
নীড় : স্যার তো শোনার আগেই চলে গেলো ।
হিয়া : ক্ষীরবাদুর… ক্ষীরবাদুর ।
নীড় : তোমাকে বলেছিনা আমাকে ক্ষীরবাদুর বলে ডাকবেনা।
হিয়া : ডাকবো। এই নামটা আমার ভীষন ভালো লাগে।
নীড় : আর নামটা শুনলে আমার রাগ ওঠে। কালকে থেকে যদি লালঝুটি কাকাতুয়া আমাকে নীড় বলে ডাকে তবে কি করবে তুমি? নিশ্চয়ই নীড় বলে ডাকবে। ডোন্ট কপি হার। ওর মতো হতে গিয়ে তুমি নিজের সৌন্দর্য্য হারিওনা। সো প্লিজ নীড় বলেই ডাকো।
হিয়া : তাহলে আমার ১টা শর্ত আছে।
নীড় : শর্ত !
হিয়া : হামম শর্ত । তুমি আমাকে ঘুরতে নিয়ে যাবে। আমি কখনো বাংলাদেশে আসিনি । ঢাকা তো ঘুরালেইনা। সিলেটটা একটু ঘুরাওনা।
নীড় : ওকে ফাইন। যাও গিয়ে এখন সবাইকে রেডি হতে বলো।
হিয়া : সবাই!
নীড় : হামম সবাই।
.
মেরিন : হালুম…
নীলিমা : আ।
মেরিন : হাহাহা।
নীলিমা : ইটস ইউ!
মেরিন : হামম। হিহি।
নীলিমা : সরো যেতে দাও আমাকে।
মেরিন : আমি কি তোমাকে ধরে রেখেছি বলো? যাও যাও।
নীলিমা : ইউ…
মেরিন : হিহি।
মেরিন নীলিমার হাত ধরে টেনে টেনে হাটতে লাগলো।
নীলিমা : এই মেয়ে আমাকে টানছো কেনো?
মেরিন : না টানলে তো তুমি জায়গা থেকে নরবেনা । তাই টানছি।
নীলিমা : অসহ্যকর মেয়ে।
মেরিন : থ্যাংক ইউ। এখন সত্যি করে বলো কালকে হিয়াকে তুমি সাজিয়েছিলেনা।
নীলিমা : হিয়া কি তোমার মতো অকর্মা নাকী যে ওকে সাজিয়ে দিতে হবে?
মেরিন : তুমি যে ক্ষীরবাদুরের পছন্দের কালার ড্রেস হিয়াকে পরিয়ে ক্ষীরবাদুরের পছন্দমতো সাজিয়েছো সেটা আমি দেখেই বুঝেছি।
নীলিমা : যদি সাজিয়েও থাকি তাহলে তোমার কি?
মেরিন : আরে আমারই তো সবকিছু।
নীলিমা :কিহ?
মেরিন : আরে চেতছো কেনো? পুরো কথাটা তো শোনো। তোমার মোটিভ কি? নীড়ের হিয়ায় হিয়ার জন্য জায়গা বানানো। আমার মোটিভও সেটাই। আমিও তো চাই ক্ষীরবাদুর হিয়ার সাথে জরিয়ে যাক। দেখো তোমার ছেলের মাথাপ তার ছিরেছে আমার মাথার তার ছেরার জন্য। ডিভোর্সের দিন, ডিভোর্সের পর আমরা লুকিয়ে এয়ারপোর্টে দেখা করি। সেখানে আমি ওর মাথায় ১টা বারি মেরেছিলাম। ও সেটার প্রতিশোধ নেয়ার জন্যই আমার সাথে প্র্যাংক করছে ।
নীলিমার কপালে ভাজ পরলো।
মেরিন : আমাকে কতো জ্বালিয়েছে জানো? তাই আমিও এখন ওর ওপর প্রতিশোধ নিতে চাই । হিয়াকে ক্ষীরবাদুরের সাথে জরিয়ে দিতে চাই। ক্ষীরবাদুরও গায়ে পরা আর ওই হিয়া টিয়াও গায়ে পরা । দুই চিপকুকে চিপকে দিতে চাই। আছো তুমি আমার সাথে?
নীলিমা : এই মেয়ে তুমি কি চাও ? পাগল হয়ে গিয়েছো? কি যা তা বলছো?
মেরিন : আরে যা তা না। ঠিক বলছি। তুমি কি চাওনা নাতিপুতি নিয়ে খেলতে? বয়স হয়েছে তো তোমার তাইনা? তারওপর শরীরের কন্ডিশনও ভালোনা। আর তুমিও সুস্থ হতে চাও না। তাই দ্রুত নাতিপুতি দেখতে চাইলে দ্রুত ছেলের বিয়ে দিয়ে দাও।
নীলিমা : এই মেয়ে আমি একদম সুস্থই আছি।
মেরিন : হ্যা হ্যা তা তো দেখতেই পাচ্ছি। শোনো তুমি তো এটা ভালোমতোই জানো যে তোমার ছেলেকে আমার থেকে ভালো কেউ জানেনা। ১৬ আনা চিনি । তাই আমার সাথে হাত মিলালে লাভই আছে তোমার।
নীলিমা : তুমি আমার ছেলেকে ১৬ আনা নয়। ১৫আনা চেনো।
বলেই নীলিমা চলে গেলো।
মেরিন : তোমার ছেলেকে ১৬ আনাই চিনি মামনি । ১৬ আনাই চিনি। যাইহোক শুরুর জন্য এতোটুকু ভালো। কিপ ইট আপ লালঝুটি কাকাতুয়া।
প্রহর : আপি…
মেরিন : কটন ক্যান্ডি! থ্যাংক ইউ ভাইয়া।
প্রহর : ওয়েলকাম।
মেরিন : আমার নিহারিকারটা কোথায় শুনি?
প্রহর: ওরটা কি করে আনবো? ও তো বেরিয়েছে ।
মেরিন : বেরিয়েছে!
প্রহর : হামম সব কাজিনরা বেরিয়েছে।
মেরিন : তুমি যাওনি কেনো?
প্রহর : আপি এটা কোনো কথা বললে আপি? আচ্ছা আমরা ভাইবোনেরা কেনো পিছিয়ে থাকবো? চলো বের হই।
মেরিন : চলো।
প্রহর : চলো।
মেরিন : দারাও ফোনটা নিয়ে আসি।
প্রহর : ওকে।
মেরিন ছুটে গিয়ে মোবাইল নিয়ে এলো। কোমড়ে হালকা ব্যাথা উঠলো। মেরিন সেটাকে অবহেলা করে প্রহরের সাথে বের হলো।
.
হিয়া মনেমনে : নীড় এতো চালাকির সাথে নিজের কথা মানিয়ে নিলো । হায়রে বুদ্ধিরে। বিশ্বাসই হচ্ছেনা এমন একজনের বউ হতে চলেছি আমি। আমি কি লাকি!
নিলা : এই হিয়া এখানে আসো।ফুচকা খাবেনা?
হিয়া : ফুচকা!
নিলা : হামম খাবে এসো।
হিয়া গেলো।
নিলা : খেয়েছো কখনো ফুচকা?
হিয়া : হামম খেয়েছিলাম ।
রিসা : ঝাল কেমন ?
হিয়া : অনেকবেশি।
নিহারিকা : তুমি এতো ঝাল খাও?
নিলা : ওর ঝাল খাওয়া দেখলে মাথা নষ্ট হয়ে যাবে তোমার।
নিহারিকা : মেরিন ভা… আপি আর যাই ছিলো অভ্যাস-আচরণে একদম নীড় ভাইয়ার মতো ছিলো। পারফেক্ট ছিলো। কেবল ক্যারেক্টারটাই … হিয়া কি ভাইয়াকে ভালো রাখতে পারবে!
প্রনয় : নিহারিকা ওই যে দেখো তোমার প্রহর।
রিসা : নিহারিকার বিরহ আর থাকতে দেয়নি রিসোর্টে।
নিহারিকা : ও নির্ঘাত ওর আপুর সাথেই এসেছে। কাকে খুজছে!
তিন্নি : যাও গিয়ে ডেকে নিয়ে আসো।
প্রহর : আরে আপি গেলো কোথায়? এখানে লুকোচুরি খেললে কাউকে খুজে পাওয়া যায়! আপি পারেও বটে। আরে নিহারিকারাও দেখি এখানে।
প্রহর নিহারিকার আর নিহারিকা প্রহরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তখন ১টা ট্রাক আসতে লাগলো।
প্রহর : নিহারিকা সরে যাও।
নিহারিকা : হ্যা কি…
প্রহর নিহারিকার দিকে দৌড় লাগালো আর নীড়ও দৌড় লাগালো নিহারিকার দিকে। ট্রাক ভীষন কাছে চলে এসেছে। কোথায় থেকে মেরিন লাফিয়ে এসে নিহারিকাকে টান দিয়ে সরিয়ে নিলো।
নীড় : কাকাতুয়া… নিহারিকা…
নিহারিকা-মেরিন দুজনই পরে গেলো। মেরিন নিহারিকার কপালে আঘাত লাগতে দিলোনা। ওর কপালে হাত রাখলো। সবাই ছুটে আসছে ওদের দিকে।
মেরিন : খুব বেশি ব্যাথা পেয়েছো?
প্রহর : নিহারিকা , আপি…
নিহারিকা তাকিয়ে আছে । নীড় ছুটে এসে এক হাত মেরিনের গালে অন্যহাত নিহারিকার গালে রাখলো।
নীড় : তোমরা দুজন ঠিক আছো তো!
মেরিন নীড়ের হাত সরাতে সরাতে বলল হামম। এরপর খানিকটা সরে গেলো। নীড়ের খুব অভিমান হলো। ও অন্যদিকে মুখ করে রাখলো। প্রহর নিহারিকাকে জরিয়ে ধরলো।
প্রহর : কানে শোনোনা তুমি? বয়রা ১টা।
প্রনয় : আল্লাহর কাছে লাখলাখ শুকরিয়া যে দুজনই ঠিক আছে।
মেরিন জ্ঞান হারিয়ে পরে যেতে নিলো।
প্রহর-নিহারিকা : আপি…
দুজন মিলে মেরিনকে ধরে ফেলল। প্রহর নিহারিকার দিকে তাকালো। প্রশান্তির এক ছোট্ট হাসি দিলো। ও মেরিনকে কোলে তুলে নিলো। এরপর কাছেই ১টা হসপিটালে নিয়ে গেলো। হালকা একটু ছুলে যাওয়া আর একটু ব্লিডিং হওয়াতে মেরিন জ্ঞান হারিয়েছে।
নীড় মনেমনে : তোমার মতো কেউ হয়না লালঝুটি কাকাতুয়া… কেউ হয়না। কি করে আমি আমার মন থেকে বের করবো বলো তো? অন্যকাউকে কি করে জায়গা দিবো? কি করে ভালোবাসবো? তোমাকে ভালোবেসেই তো মন ভরেনা।
.
২ঘন্টাপর…
কবির : মামনি… তোমার মাথায়-হাতে ব্যান্ডেজ কেনো? কি হয়েছে? বলোনা মা … ওমা কি হয়েছে তোমার?
মেরিন : ঠিক আছি বাবা আমি।
কবির : একদম মিথ্যা কথা বলবেনা । প্রহর বাবা কি হয়েছে?
নিহারিকা : আমি বলছি আংকেল।
নিহারিকা সবটা বলল। কবির মেরিনের মাথায় হাত রাখলো।
কবির : আমার বাহাদুর বাচ্চাটা।
নিহারিকা : সরি আংকেল আমার জন্য আপির…
কবির : নিহারিকা মা তুমি কেনো নিজেকে দোষ দিচ্ছো বলো তো? এটা মেরিন… কেবল মেরিন কেনো প্রতিটা মানুষেরই কর্তব্য । কারো জান বাঁচানো ফরজ কাজ। আর তারওপর তুমি তো মেরিনের কলিজার কলিজা। তুমি ঠিক আছো তো মা? কোথাও ব্যাথা পাওনিতো?
নিহারিকা : না আংকেল । আপি আমাকে ব্যাথা পেতে দেয়ইনি।
মেরিন : মামা কি ফিরেছে?
কনিকা : হামম। রেস্ট করছে।
মেরিন : ভালো হয়েছে। না হলে পাগল হয়ে যেতো।
সনি : আমার দুই মা-ই যে সুস্থ আছে সেটার জন্য আল্লাহকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
নীলিমা মনেমনে : মেয়ে তোমার সবই ভালো। কিন্তু… যদিনা আমার ছেলেটাকে ধোকা না দিতে। একটু চেষ্টা করতে ভালোবাসার। যদিনা আমি সেদিন ওই কাজটা করতাম তাহলে হয়তো ওদের ডিভোর্সটা হতোনা। ১টা সংসার ভেঙেছি আমি। সংসার ভাঙা আর মসজিদ ভাঙা এক কথা। ১টা তালাকে আল্লাহর আরশ পর্যন্ক কেপে ওঠে। আর আমি সেই পাপটাই করেছি। নিজের জেদের কাছে হেরে ভুলেই গিয়েছিলাম সন্তানেরা ক্ষমার যোগ্য । কিন্তু আমি ক্ষমা করতে পারিনি।
নিহাল মনেমনে : মেয়েটার কাছে গেলে তো এই ব্যাটা কবির এখন ক্যাচাল করবে । হায়রে বাচ্চারারে… ঝুকিতে বোঝোই না যে বাবা-মা ভুল সিদ্ধান্ত নেয়না সন্তানদের জন্য।
কনিকা মনেমনে : আমার মেয়েটাতো কখনো কারো কোনো ক্ষতি করেনা আল্লাহ। কারো জন্য ভালো কিছু যদি নাও করে তবুও খারাপ কিছু করেনা। তাও কেনো আমার মেয়ের ভাগ্যেই এমন কষ্ট লিখলে? সুখ ফিরিয়ে দাও আমার মেয়ের জীবনে। এটা এক মায়ের ফরিয়াদ।
সনি মনেমনে : যাক নিহারিকার মন থেকে হয়তো এবার সব রাগ মিটে যাবে। আসলেই ভালোদের সাথে বেশিদিন খারাপ কিছু হয়না । কবে যে বাচ্চাটার জীবনে সবটা ঠিক হবে কে জানে?
কবির মনেমনে : দেখ নিহাল দেখ। আমার মেয়ের মহানতাকে দেখ। আমার মেয়ে ভালোবাসতে জানে। ধোকা দিতে না। অথচ তোরা নিজের ছেলের দোষ ঢাকতে আমার নির্দোষ মেয়েটার নামে কতোবড় অপবাদ দিয়েছিলি। ছিঃ ।
কবির : মামনি গিয়ে আরাম করো। চলো আমি তোমাকে রুমে দিয়ে আসছি।
মেরিন : বাবা আমি একা যেতে পারবো তো।
কবির : কোনো কথা না। চলো।
কবির মেরিনকে ধরেধরে রুমে নিয়ে গেলো।
রিসা মনেমনে : আমার মন ঠিকই বলতো যে এই মেয়েটার কোনো দোষ নেই। আরে আজকাল যুগে কোন মেয়ে জোর করে বিয়ে দিলে সেটা মেনে নেয়? নিবে কেনো মেনে? সে তো অন্যকাউকে ভালোবাসবেই।
.
রাত ১১টা..
মেরিন : কে?
নিহারিকা : আপি ইটস মি। নিহারিকা।
মেরিন গিয়ে দরজা খুলল। নিহারিকা ভেতরে ঢুকলো।
নিহারিকা : আজকে রাতটা আমি তোমার সাথে ঘুমাবো।
মেরিন : হামম কেনো নয়? এসো।
নিহারিকা : খুব গল্প করবো।।
মেরিন : সে তো করবোই।
দুজনে গিয়ে বেডে বসলো।
নিহারিকা : আপি আজকে তোমার সাথে একটা সিক্রেট শেয়ার করবো । যেটা প্রহরও জানেনা।
মেরিন : কি সিক্রেট?
নিহারিকা : প্রহরের জীবনে এন্ট্রি নেয়ার সিক্রেট। মানে ওর সাথে মুখোমুখি হওয়ার সিক্রেট।
মেরিন : সেটা তো ১টা অ্যাক্সিডেন্ট ছিলো।
নিহারিকা : না আমি অ্যাক্সিডেন্ট নয় প্রিপ্ল্যানড ছিলো। গেস করো কার প্ল্যান!
মেরিন : কার?
নিহারিকা : শ্বশুরবাবার।
মেরিন : মামার!
নিহারিকা : হামম।
মেরিন : সিরিয়াসলি?
নিহারিকা : সিরিয়াসলি।
মেরিন : মামা এক পিস।
নিহারিকা : মাস্টার পিস। প্রহরের প্রতি ১টা ভালো লাগা তো ছিলো কিন্তু তোমার প্রতি ১টা অন্যরকম মায়া হয়ে যায়। ভাবি হিসেবে পার্ফেক্ট। আমি তোমাকে ভীষন ভালোবাসতাম। আর নীড় ভাইয়া তো আমার নিজের ভাইয়ার চেয়েও বেশি । তাই মাথাগরম করে আজও পর্যন্ত তোমাকে বাজে কথা শুনিয়েছি।
মেরিন : বাদ দাও তো পুরোনো কথা।
নিহারিকা : না আপি আজকে আমাকে বলতে দাও। তোমাকে কতো কি বলেছি অথচ সেই তুমিই প্রহরকে ফিরিয়ে দিলে। তবুও তোমার সাথে সোজামুখে কথা বলিনি। অথচ সেই আমাকেই তুমি আজকে বাঁচালে…! আজকে বুঝতে পারলাম তোমাদের মধ্য যা হয়েছে সেটা তোমাদের ব্যাপার। সেটা নিয়ে কেনো আমি তোমাকে কথা শুনাবো? ক্ষমা করে দাও আপি আমাকে। জানি অনেক পঁচা পঁচা কথা বলেছি। তবুও ক্ষমা চাইছি।
মেরিন : ধ্যাত পাগলি…
মেরিন নিহারিকার কপালে চুমু দিলো।
মেরিন : নিয়তি আমাদের হাতে নেই নিহারিকা। তোমাকে আগেও আমি নিজের ছোটবোন ভাবতাম আর আজও তাই ভাবি। বড়বোন কি করে তার ছোটবোনকে একা ছেরে দিতো হামম?
নিহারিকা মেরিনকে জরিয়ে ধরলো। মেরিনও নীড়কে আগলে নিলো।
মেরিন : নতুন জীবন শুরু করতে যাচ্ছো। একটা কথা মাথা রাখবে প্রহর তোমার হবে। তোমার সবথেকে আপন। কখনো প্রহরের কাছে নিজের অনুভূতি লুকাবেনা। কেমন?
নিহারিকা : হামম।
মেরিন : আমার সোনা বোনটা।
.
হিয়া বসে বসে কান্না করছে।
হিয়া : কেনো আমার সাথে হচ্ছে আল্লাহ? কেনো? আমি নীড়কে ভালোবাসি সেটাই কি আমার অপরাধ ?
নিহাল : ভালোবাসা কখনো অপরাধ হয়না হিয়া ।
হিয়া : বাবা তুমি এখানে?
নিহাল : হামম। মেয়ে নিজের হোক বা অন্যকারো বাবারা মেয়েদর মন খারাপটা ঠিক ধরে নেয়।
হিয়া কাঁদতে লাগলো।
নিহাল : কাঁদেনা হিয়া কাঁদেনা। কান্না করলে কি সমস্যার সমাধান হয়? হয়না। সমাধান চাইলে সবার আগে কান্না বন্ধ করতে হবে! সো কান্না বন্ধ …
.
চলবে…