#তোমার_হতে_চাই ২
part : 16
writer : Mohona
.
নিহালতো সবটা জানে।
মেরিন : ইয়েস ইউর অনার সেদিন মিস্টার নীড় চৌধুরী এবং তার তৎকালীন মিসেস দুজন দুজনকে নয় ২টো পরিবারকে দিয়েছিলো। সেই হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ এব়ং ছবি ।যেখানে নীড় চৌধুরীর সাথে সেই হোটেলে চেক ইন করতে তার প্রাক্তকেই দেখা যাচ্ছে। আপনি অনুমতি দিলে ফুটেজ প্লে করা হবে।
রেজাউল করিম : অনুমতি দেয়া হলো।
মেরিন প্লে করলো।
রেজাউল করিম : মেরিন এটা তো স্পষ্ট যে চেক ইন করার সময় তুমি আর নীড় ছিলো। কিন্তু বের হওয়ার সময় তোমার সাথে কে ছিলো।
মেরিন : ইউর অনার চেক ইন করার সময় আমার ক্লাইন্টের হাতে থাকা এনগেজমেন্ট রিংটা দেখুন। আর আমার সাথে দারিওয়ালা যে লোকটা আছে তার ডানহাতে আংটিটা দেখুন।
রেজাউল করিম : দ্যাট মিনস এটাও নীড়ই ছিলো। ছদ্মবেশে।
মেরিন : ইয়েস ইউর অনার। এর সাথে প্রমান হয়যে আমার ক্লাইন্টের অতীতে কোনো খারাপ রেকর্ড নেই। আজও পর্যন্ত সে কোনো মেয়েকে অসম্মান করেননি।
জাবির হুদা : ইউর অনার কেউ অতীতে ভালো হলেই যে বর্তমানেও ভালো হবে সেটার কিন্তু কোনো মানে নেই।
মেরিন : কেউ অতীতে খারাপ হলে যে বর্তমানেও খারাপ হবে সেটারও কোনো মানে নেই।
তখন ৫টা বেজে গেলো। আদালতের সময় শেষ।
রেজাউল করিম : আদালত আগামী ২৫ তারিখ পর্যন্ত মুলতবি করা হলো।
জজ চলে গেলো। খান-চৌধুরী , মেরিন , তামিম ছারা সবাই চলে গেলো। পুলিশও নীড়কে নিয়ে চলে গেলো। রবিন মেরিনের দিকে এলো। মেরিন মাথা নিচু করে দারিয়ে আছে। রবিন ঠাস করে মেরিনকে থাপ্পর মারলো ।
রবিন : আমাকে আর কখনো মামা বলে ডাকবেনা।
বলেই রবিন চলে গেলো।
কবির : তুমি তোমার মামার কোথায় আঘাত করেছো সেটা যদি ভাবতে… তোমার মামার কষ্ট ভেবে আমি আমার রাগ-অভিমান ভুলে গিয়েছি ।
কবির নিহালের সামনে গেলো।
কবির : ক্ষমা করে দিস আমাকে।
নিহাল : তু…
কবির চলে গেলো।
কনিকা : যদি আজকে আমার ভাই নিজের কোনো ক্ষতি করে তাহলে আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারবোনা।
কনিকা চলে গেলো। নীলিমা কিছু বলার তো দূরের কথা উঠে দারানোর অবস্থাতেও নেই।
নিহাল : প্রনয়-পলক কাকিমাকে নিয়ে যাও।
পলক : হামম কাকা।
ওরা নীলিমাকে নিয়ে গেলো। নিহাল মেরিনের কাধে হাত রাখলো ।
নিহাল : মামনি…
মেরিন : হামম।
নিহাল : বাবা টু আছি তোমার সাথে।
মেরিন : হামম। আই নো। বাবা আসছি। ইনভেস্টিগেশনে যেতে হবে।
মেরিন আর না দেরি না করে দ্রুত বেরিয়ে গেলো।
নিহাল : আল্লাহ কেনো আমার বাচ্চাদের সাথেই এমন হচ্ছে! রবিনের অভিমান জায়েজ। কিন্তু মামনির পক্ষে মেনে নেয়া খুব কঠিন। কি করি?
তামিম মনেমনে : ম্যামের জীবনে এতো কিছু ঘটেছে! তাই তো সে এতো বিচিত্র। এখন কি হবে !
.
নীড় : কি হচ্ছে ওখানে কে জানে? পুলিশটাকে বললাম একটুখানির জন্য থাকতে দিতে। কিন্তু দিলোইনা। শি নিডস মি। রবিন মামার রিয়্যাকশনই বলে দিচ্ছিলো যে মামা কতোটা কষ্ট পেয়েছে… আই হোপ বাবা ওকে সামলে নিবে…
নিহাল : সুযোগটাই পাইনি।
নীড় : বাবা… লালঝুটি কাকাতুয়া কোথায়? ও ঠিক আছে তো? কি হয়েছিলো তখন? ওকে নিশ্য়ই আম্মু-বাবা খুব বকেছে।
নিহাল : সেটাও হয়তো ভালো হতো। কিন্তু যেটা হয়েছে সেটা খুবই ভয়াবহ ছিলো।
নীড় : কেনো কি হয়েছে?
নিহাল সবটা বলল।
নীড় : তুমি ওকে একা ছারলে কেনো?
নিহাল : সুযোগ দেয়নি আমাকে। আর আম ভেবেছিলাম ওকে একটু একা থাকতে দিলে ভালো হবে।
নীড় : মামনিও কি ওকে কিছু বলেছে?
নিহাল : তোমার মামনি এই পর্যন্ত ১টা কথাও বলেনি। তোমরা যা করেছো ভালোই করেছো। রাগ-জেদেরও ১টা সীমা থাকে। তোমরা সব সীমা লঙ্ঘন করেছো। একটুখানি চেষ্টা করতে পারতে বিয়েটা মেনে নেয়ার। সেই তো ভালোবাসলে কিন্তু সব হারিয়ে। ভুল ভুলই হয়। তোমরা যে ভুল করেছো সেটা… কেইস থেকে তো তুমি মুক্তি পেয়ে যাবে। কিন্তু তোমার মামনির অভিমান থেকে নয়। আসছি।
নিহাল চলে গেলো।
.
পরদিন…
মেরিন নীড়ের সাথে কথা বলতে গেলো।
মেরিন : ক্ষীরবাদুর যা যা জিজ্ঞেস করবো তা ভেবেচিন্তে উত্তর দিবে। তোমাদের ফার্ম হাউজের কেয়ারটেকার গায়েব। এখন বলো তো এ্যানির সাথে তোমার প্রথম দেখা কবে হয়…
নীড় মেরিনের মাথায় হাত রাখলো।
নীড় : বি ইউর সেল্ফ। ইটস মি। আমরা দুজন কখনোই একে অপরের প্রতি আমাদের ভালোবাসা ছারা কিছুই লুকাইনি। চোখের পানি , মন খারাপ … কিছুইনা। সো ডোন্ট ডু দিস।
মেরিনের চোখে পানি চলে এলো কাঁদতে লাগলো। অনেক কান্না করলো।
নীড় : চিন্তা করোনা। স্যার তোমার সাথে বেশিদিন রাগ করে থাকতে পারবেননা। অভিমান একটু করেছেন। যাকে আমরা সবথেকে বেশি ভালোবাসি তার ওপর অভিমানটাও সবথেকে বেশি করি। তাই মন খারাপ করে আর থেকোনা । সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
নীড় মেরিনকে সামলে নিলো।
মেরিন : এখন বলো এ্যানির সাথে তোমার দেখা কবে আর কোথায় হয়েছিলো?
নীড় : থার্ড ইয়ারে যখন ছিলাম তখন একবার। আর ইউএসএ তে একবার। লাস্ট হয়েছে প্রহর-নিহারিকার বিয়ের জন্য সিলেট যাওয়ার আগের দিন।ওকে ১টা চড় মেরেছিলাম আমি।
মেরিন : কেনো?
নীড় : রাগিয়ে দিয়েছিলো আমাকে।
মেরিন : ফার্ম হাউজে গিয়ে কি করলে?
নীড় : গেলাম পর আমাকে কেয়ারটেকার কাকা পানি দিলো। এরপর আর কিছু মনে নেই।
মেরিন : হামম।
ইন্সপেক্টার নয়ন : চলুন ম্যাডাম মেরিন দেখা করার সময় শেষ।
মেরিন : তুমি খুব রুড নয়ন।
নয়ন : তুমি আমাকে বলছো রুড?
মেরিন : হামম। আমরা কলেজ লাইফ নো নো স্কুল লাইফ থেকে বন্ধু তবুও কখনো কোনো ক্লাইন্টের সাথে ২মিনিট বেশি কথা বলতে দাওনা।
নয়ন : ডিউটি ইজ ডিউটি।
নীড় : ও আমাদের কলেজে কবে এলো? কখনো তো তোমাদের ক্লাসে , সেকশনে দেখিনি।
মেরিন : তুমি কলেজ থেকে বের হবার পর ও ভর্তি হয়েছিলো।
নীড় : ওহ।
নয়ন : চলো এখন এখান থেকে।
মেরিন : যাচ্ছিতো। চলো।
মেরিন বেরিয়ে এলো।
মেরিন : এই নয়ন বন্ড ১টা কাজ করে দিবে?
নয়ন : আমি নয়ন বন্ড নই।
মেরিন : ওই একই । দেখো আদালতে দাড়িগোফ ওয়ালা ১টা মানুষকে দুদিন দেখলাম। না তো সে কোনো সাক্ষী না কিছু। তার ঠিকুজি গুষ্ঠি বের করে দিবে।
নয়ন : ওকে।
.
হিয়া নিজের এনগেজমেন্ট রিংটা হাত থেকে খুলে সেটার সাথে কথা বলছ।।
হিয়া : মেরিন তোমাকে জেইল থেকে বের করে আনবে। তুমি ওকে আরো ভালোবাসবে। আমার কি হবে? আমি যে তোমাকে খুব ভালোবাসি। এই পরিবারের সবাই তো তবুও এতোদিন মেরিনকে ঘৃণা করতো। এখন তো ঘৃণার কারনও নেই। কি হবে আমার!
হিয়া আংটিটার সাথে কথা বলতে বলতে হাটছে। তখন হোচট খেয়ে আংটিটা বাড়ির মেইলবক্সে ঢুকে গেলো।
হিয়া : ওহ নো মাই রিং। এটাতো তালা মারা। যাই গিয়ে চাবির খোজ নেই।
নিলা : মেইল বক্সের চাবিটা পাওয়া যায়নি বলে ওটা এখনো খোলা হয়নি গো হিয়া। আর এখন এখানে থাকা হয়না। তাই মেইল বক্স খোলার প্রয়োজনও নেই। কি হয়েছে?
হিয়া : আমার এনগেজমেন্ট রিংটা ভুল করে ওটার ভেতরে চলে গিয়েছে।
নিলা : ওহ। দারাও কাউকে বলছি তালাটা ভেঙে দিতে।
হিয়া দারোয়ানের সাথে গেলো । দারোয়ান তালা ভাঙলো। আংটি বের করে দিলো। সেই সাথে আরো ১টা এনভেলপ ।
দারোয়ান : আপামনি এই খামটা।
হিয়া : দাও আমি নিয়ে যাচ্ছি।
দারোয়ান : এই নিন ।
হিয়া দেখলো বুঝলো যে এটা কোর্ট থেকে পাঠানো। কৌতুহলে হিয়া সেটা খুলল। পড়ে বুঝলো যে এটা নীড়-মেরিনের তালাক খারিজ হওয়ার কাগজ। হিয়ার হাত থেকে কাগজটা পরে গেলো।
হিয়া : নীড়-মেরিনের ডিভোর্স হয়নি? না না এটা কি করে হতে পারে? তবে কি এটাও ওদের নাটক ছিলো! না না এটা ভুলও হতে পারে। কি করে জানা যাবে? কোর্ট। হ্যা কোর্টে গিয়ে খোজ নিতে হবে।
হিয়া কাগজটা নিয়ে কোর্টে পৌছালো। এরপর একজনের সাহায্য নিয়ে পুরোনো ফাইল ঘাটিয়ে নীড়-মেরিনের ফাইল বের করালো। ডিভোর্স পেপারটাতে ওরা দুজন নিজনিজ নামের জায়গায় ক্ষীরবাদুর ও লালঝুটি কাকাতুয়া লিখে দিয়েছিলো। আর তাই জজ এটা অ্যাপ্রুভ করেননি। ২বাড়িতেই এই নোটিশটা পাঠানো হয়েছিলো। কিন্তু দুই পরিবারই দেশ ত্যাগ করায় নোটিশটা পায়ইনি। কাঁদতে কাঁদতে ছুটে বেরিয়ে গেলো হিয়া। নীর ওকে বেরিয়ে যেতে দেখলো।
নীর : আরে মিস ফিওনসে ম্যাডাম কাঁদতে কাঁদতে বের হচ্ছে কেনো? নীড় ওরফে ক্ষীরবাদুরের ফাঁসির সাজা হয়েছে নাকি? লেট মি ফলো হার।
নীর হিয়ার পিছু নিলো। হিয়ার গাড়ি চলছে তো চলছেই।
নীর : ম্যাডাম ফিওনসে তো থামার নামই নিচ্ছেননা।
.
বেশকিছুক্ষন পর…
হিয়া বসে বসে কাঁদছে। নীর এসে ওর পাশে বসলো।
নীর : বাদাম খাবেন? কাঁচা নয়। পাকা বাদাম।
হিয়া কোনো কথা বলল না।
নীর : আপনি কি প্রকৃত সুন্দরীর ব্যাখ্যা জানেন?
হিয়া চুপ।
নীর : জানতাম জানেননা। ওকে আমিই বলে দিচ্ছি। শুনুন তবে। হাসলে সবাইকে সুন্দর লাগে। কিন্তু যেই নারীকে কান্নারত অবস্থাতেও সুন্দর লাগে সেই নারীই হলো প্রকৃত সুন্দরী । আপনি কল্পনাও করতে পারবেননা আপনাকে কতোটা সুন্দর লাগছে।
হিয়া চলে যেতে নিলো। নীর ওর হাত ধরলো। এরপর ওকে বসিয়ে দিলো।
নীর : জানিনা আপনি কেনো কাঁদছেন? কিন্তু এটা বলতে পারি যে …সুখ এবং দুঃখ ২টাই আমাদের জীবনের অংশ। যদি সুখকে আমরা আপন করে নিতে পারি তবে দুঃখকে কেনো পারবোনা আপন করতে? দুঃখকে আপন না করলে সেটাকে সুখে কি করে পরিনত করবো বলুনতো?
হিয়া নীরের দিকে তাকালো।
নীর : মিস্টার নীড় চৌধুরীকে নিয়ে চিন্তা করবেননা। মেরিন বন্যা খান যখন কেইসটা হাতে নিয়েছেন তখন ফাঁসির মঞ্চ থেকে হলেও তাকে বাঁচিয়ে আনবে। দরকার হলে ইনভেস্টিগেশনে আমিও তাকে সাহায্য করবো। আপনি কান্না বন্ধ করুন। এই নিন রুমাল। চোখের পানিটা মুছে নিন।
হিয়া মুছে নিলো।
নীর : চৌধুরী সাহেব ভীষন লাকি। কারন আপনার মতো একজন সুন্দরী রমনী তাকে খুব ভালোবাস । সুন্দরীদের ভালোবাসা পাওয়ার ভাগ্য সবার হয়না। এই আমাকেই দেখুননা । সুন্দর তো সুন্দর বাদরও আমার প্রেমে পরলোনা।
হিয়া ফিক করে হেসে দিলো।
নীর : আপনি হাসতেও পারেন! যাক দেখে ভালো লাগলো।
হিয়ার কপালে ভাজ পরলো।
নীর : মজা করছিলাম। সরি।
হিয়া : ইটস ওকে।
.
রাতে…
মেরিন রবিনের বাসার বাহিরে দারিয়ে আছে। ভেবে পাচ্ছেনা ভেতরে ঢুকবে কি ঢুকবেনা। মামার কাছে ক্ষমা চাওয়ার দরকার। কিন্তু সাহস হচ্ছেনা। ১ঘন্টা ধরে দারিয়ে আছে । ভেবেই পাচ্ছেনা কি করবে।
নিহারিকা : আপি তুমি এখানে দারিয়ে আছো কেনো? ভেতরে চলো।
মেরিন : মামা কেমন আছে? খুব কি রেগে আছে?
নিহারিকা : তুমি ভেতরে তো চলো ।
মেরিন : বলোনা প্লিজ।
নিহারিকা : বাপী কারো সাথে একটা কথাও বলেনি। সকাল হতেই হসপিটালে চলে গিয়েছে। ফিরে এসে সোজা রুমে ঢুকে শুয়ে পরেছে।
মেরিনের চোখ থেকে পানি গরিয়ে পরলো ।
মেরিন : আম্মু-বাবা এসেছিলো?
নিহারিকা : হামম। আসো ভেতরে আসো।
মেরিন : মুখ নেই নিহারিকা… আসছি।
নিহারিকা : আপি…
মেরিন দারালো।
নিহারিকা : তোমরা দুজন দুজনকে কি একটুখানিও কখনো ভালোবাসোনি!
মেরিন কিছু না বলে চলে গেলো।
নিহারিকা : সবকিছু এতোটা অগোছালো হয়ে গেলো যে… কে জানে কবে সব ঠিক হবে? সব হাসিখুশিতে ভরে ছিলো। একটা দমকা হাওয়া সব শেষ করে দিলো।
নিহারিকাও ভেতরে চলে গেলো ।
.
পরদিন…
নীড় অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রবিনের দিকে। ও ভাবতেও পারেনি যে রবিন ওকে দেখতে আসবে।
নীড় : সস্যার আপনি…
রবিন : হামম আমি। তোমার গায়ে হাত তোলার জন্য আই অ্যাম সরি।
নীড় : ছিঃ ছিঃ স্যার আপনি কেনো ক্ষমা চাইছেন? ভুল আমার। ক্ষমা আপনি কেনো চাইবেন? প্লিজ ক্ষমা করে দিন।
রবিন : তোমাদের কারো কোনো ভুল নেই। ভুল তো আমার। কারন আমি নিজেকেই সবথেকে বেশি বিজ্ঞ বলে মনেকরি। আই মিন করতাম । কিন্তু আমি তো কলুর বলদের থেকেও বোকা। তোমাকে আমি আর কি বলবো ? কিছুই বলার নেই। যেখানে … যখন প্রথমবার মেরিনকে কোলে নিলাম সেদিন মনে হলো ও আমার ভাগনী না। ও আমার মা। আমার ভূবন আমার জীবন। কিন্তু… যাই হোক ক্ষমা করে দিও এই বোকা লোকটাকে।
নীড় : প্লিজ স্যার এমন করে বলবেননা। প্লিজ না। আপনার যতো বকার আমাকে বকুন। কিন্তু কাকাতুয়ার ওপর রাগ-অভিমান করে থাকবেননা। ও সহ্য করতে পারবেনা।
রবিন : আমার কারো ওপর কোনো ক্ষোভ নেই। কোনো রাগ নেই। আসছি।
নীড় : স্যার আমার কথাটা তো শুনুন । স্যা…
রবিন চলে গেলো।
.
মেরিন ওর অফিসে গেলো। দেখলো ওর পছন্দের সব খাবার টেবিলে রাখা। কপালে ভাজ পরলো।
মেরিন : এতো খাবার এখানে কোথায় থেকে এলো!
নীলিমা : মামনির হাতের রান্নার চেহারাটাও ভুলে গিয়েছিস?
মেরিন : মমামনি…
নীলিমা : খবরদার আমাকে মামনি বলে ডাকবিনা। একদম না। কেনো ডাকবি তুই আমাকে মামনি বলে? বল কেনো ডাকবি?
মেরিন : কারন আমার ২টা মা। ১টা আম্মু আরেকটা মামনি।
নীলিমা : অ্যাহ ১টা আম্মু আরেকটা মামনি। আম্মু রাগ করলে কি কথা না বলে থাকতে পারতে?
মেরিন হাসলো।
মেরিন : তো আমি কি তোমার সাথেও কথা বলা বন্ধ করেছি বলো? এখন কান্না বন্ধ করো। আমারও ভীষন কান্না পাচ্ছে।
নীলিমা : তো করো কান্না। অনেক অনেক কান্না করো। মায়েদের সাথে এমন করেছো কেনো? কান্না করো।
মেরিন নীলিমাকে জরিয়ে ধরলো। নীলিমাও জরিয়ে ধরলো মেরিনকে ।
নীলিমা : ক্ষমা করতে পারবে কখনো এই মামনিটাকে?
মেরিন : উহু। প্রশ্নই আসেনা। আমি তো মামনির ওপরে কখনো রাগ করে ছিলামই না।
বাকী সবাই : আর আমাদের ওপরে!
মেরিন তাকিয়ে দেখে পুরো চৌধুরী পরিবার উপস্থিত। মেরিনের যেনো আনন্দের শেষ নেই।
একটুপর ম্যাম ম্যাম ডাকতে ডাকতে অস্থির হয়ে তামিম এলো। আর সবাইকে দেখে মহাঅবাক।
মেরিন: কি হয়েছে তামিম?
তামিম : ম্যাম দেখুন স্পটে কি পেয়েছি? লেভেল ছারা ১টা মেডিসিন।
মেরিন : এটা ফরেনসিকে পাঠাও । এখনই।
পরের শুনানীতে ওই ছোট্ট মেডিসিন বোতলটার জন্য মেরিনের সুবিধা হলো। কারন ওটাতে যে মেডিসিন ছিলো সেটা এ্যানির শরীরে পাওয়া গিয়েছে । কিন্তু বোতলটাতে নীড়ের আঙ্গুলের ছাপ পাওয়া যায়নি।
.
নীর : আরে বাপরে এটাতো দেখি সাংঘাতিক জটিল কেইস।
হিয়া : হামম।
নীর : একারনেই তো আমি সেদিন মেরিনকে নিয়ে নীড়ের জেলাস হওয়ার কারন খুজে পাচ্ছিলামনা । এক কাজ করো। তুমি আমার বউ হয়ে যাও। আমিও তো নীরই।
হিয়া : শাট আপ।
নীর : সরি। হিহি।
হিয়া : থ্যাংক ইউ। আমার বন্ধু হওয়ার জন্য । তুমি না থাকলে আমি কিছু ১টা করে ফেলতাম।
নীর : ধ্যাত বোকা। এই এক মিনিট… তুমি কিন্তু এখনো সেদিনের কান্নার কারন বললেনা।
হিয়া : বেশি যাওয়া ভালোনা। আসছি।
.
নয়ন : মেরিন।
মেরিন : হামম?
নয়ন : ১টা দারুন খবর আছে।
মেরিন : কি?
নয়ন : ওই যে ওই ছদ্মবেশী আছেনা।
মেরিন : হামম। কে ওইটা।
নয়ন : ফাহিম। সন অ…
মেরিন : আ আ বলতে হবেনা। আই নো হিম।
নয়ন , তামিম ও প্রহরের সাহায্য নিয়ে মেরিন ফাহিমকে অপরাধী আর নীড়কে নিরপরাধী প্রমান করে দিলো। নীড় মুক্তি পেলো।
জাবির হুদা : অভিনন্দন ম্যাডাম।
মেরিন : ধন্যবাদ।
.
( আমি সূত্র আগেই দিয়েছিলাম। অনেকে আন্দাজও করেছিলো।)
চলবে…