তোমার_হতে_চাই ২ part : 2 writer : Mohona

0
320

#তোমার_হতে_চাই ২
part : 2
writer : Mohona

.

নীড় : আর ইউ ব্লাইন্ড?
মেরিন : আমি কি আপ…
দুজনই থেমে গেলো । তাকিয়ে রইলো দুজন দুজনের দিকে।
ডক্টর কেইন : ডক্টর নীড়…
হানি : মেরিন …
দুজনের কানে কোনো কথা ঢু্কছেনা। ওরা কোথায় আছে কি করছে আশেপাশে কি আছে কি হচ্ছে কিছুই ওদের মাথায় নেই।
হানি : মেরিন উই আর গেটিং লেইট।
হানি মেরিনের হাত ধরে টেনে সরালো। মেরিন এখনো নীড়ের দিকে তাকিয়ে আছে । নীড়ও মেরিনের দিকে।
হানি : আমরা অলরেডি লেইট। চলো।
হানি মেরিনকে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো। নীড়-মেরিনের হুশ এলো।
মেরিন : হানি তুমি গাড়িতে বসো। আমি আসছি।
হানি : কিন্তু…
মেরিন : প্লিজ হানি।
হানি ১বার নীড়ের দিকে তাকিয়ে গাড়িতে গিয়ে বসলো। নীড় মেরিনের বলা কথা গুলো শুনলো।
ডক্টর কেইন : ডু ইউ নো হার?
নীড় : এক্সকিউজ মি।
দুজন দুজনের দিকে এগিয়ে গেলো। দুজনই মুখোমুখি দারালো। দুজন দুজনকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখছে । নীড়ের কালো ওভারকোট , মেরিনের ব্রাউন। দুজন দুজনকে কি বলবে , কিভাবে শুরু করবে কথা ভেবে পাচ্ছেনা । দুজনই শুকনো ছোট হাসি দিলো।
নীড় : হাই…
মেরিন : হ্যালো…
কি বলবে কিছুই খুজে পাচ্ছেনা।
হানি : মেরিন প্লিজ কাম না প্রানু।
নীড় হানির দিকে তাকালো ।
মেরিন : কামিং…
মেরিন নীড়ের দিকে তাকিয়ে উল্টো হয়ে হাটতে হাটতে গাড়ি পর্যন্ত গেলো।
নীড় : স্টে। ব্যাথা পাবে । হোচট খাবে।
মেরিন থেমে গেলো। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে এখনই গাড়ির কাছে পৌছে গিয়েছে। হানি টেনে মেরিনকে ভেতরে ঢোকালো।
হানি : লেটস গো।
মেরিন চলে গেলো হানির সাথে। মেরিন চোখ বন্ধ করে গাড়িতে পুরো হেলান দিয়ে বসলো। ওদিকে নীড় দারিয়েই রইলো। গাড়িটার দিকে অপলক তাকিয়ে রইলো। বুঝতে পারলো যে চোখের কোনে পানি ।
কেইন : ডক্টর নীড় আর ইউ অলরাইট?
নীড় চুপ।
কেইন : ডক্টর নীড়…
নীড় : আই অ্যাম ফাইন। আপনি ল্যাবে যান। আমি কালকে আসবো। শরীরটা বিগরে গেলো।
বলে নীড় চলে গেলো। কোথায় যাচ্ছে কোন দিকে যাচ্ছে , গাড়ি আছে নাকি নেই কোনে খেয়াল নেই। নীড়ের এমন বেসামাল অবস্থা দেখে কেইন নীড়কে একা ছারলোনা। দেখলো নীড়ের অ্যাক্সিডেন্ট হতে নিলো । কেইন ওকে বাঁচিয়ে নিলো।

.

কোনোরকমে মিটিং শেষ করে মেরিন দ্রুত ফ্ল্যাটে পৌছালো। গিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে শাওয়ার অন করে শাওয়ারের নিচে বসে রইলো। হাতে থাকা এনগেজমেন্ট রিংটার দিকে তাকালো। ডিভোর্সের ৫বছর হয়ে গিয়েছে। তবুও এই রিংটা হাত থেকে খোলেনি । সবাই যতোবার খুলতে বলেছে ততোবার বলেছে এটা ওকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। এসব বলে এটা খোলেনি। কিন্তু আসল কথা হলো এই যে এটা ও খুলতে চায়নি । তাই খোলেনি।
মেরিন : কেনো তুমি এলে সামনে? কেনো কেনো কেনো… আমি যে তোমাকে খুব ভালোবাসি ক্ষীরবাদুর। খুব বেশি। খুব ভালোবাসি। কিন্তু এখন এই ভালোবাসা যে অবৈধ । নাতো এর বৈধতা আছে আর নাতো এর কোনো ভবিষ্যৎ। তবে কেনো সামনে এলে? কেনো? দিব্যি ছিলাম তোমার স্মৃতি নিয়ে । তবে কেন এলে? খুব কি প্রয়োজন ছিলো? কাকাতুয়া তুই বোধহয় স্বপ্ন দেখছিস। হ্যা হ্যা। এটা হয়তো হবে। আমি স্বপ্নই দেখছি। খুবই ভয়ংকর স্বপ্ন।
বলতে বলতে মেরিন হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো।
মেরিন : আই হেইট ইউ দ্যা মোস্ট ক্ষীরবাদুর। আই হেইট ইউ দ্যা মোস্ট। চাইনা আমার জীবনে তুমি ফিরে আসো। চাইনা তোমাকে আমি । কারন এখন তুমি কখনো কোনোদিনো আমার হবেনা। কিন্তু আমি যে তোমার হতে চাইবো। আমি যে আজও কেবল আর কেবল #তোমার_হতে_চাই । খুব করে চাই।তোমার হতে চাই । কিন্তু তুমি তো আমার হবেনা । আর হতে চাওনি-ও কখনো। না না । বেশি ভাবছি আমি। দেখা হয়েছে তো হয়েছে । সো হুয়াট। আমার কিছুনা। আল্লাহ ওকে আর আমার সামনে এনোনা প্লিজ । এনোনা। দম আটকে মরে যাবো। নীড় মেরিনের পথ যেনো সর্বদাই বিপরীত হয়। ওর সামনে আর এনোনা । নতুন করে ওকে পাওয়ার সাধ জাগবে। আর সেটা হতে পারেনা। বাবা-মামাকে আর কষ্ট দিতে পারিনা আমি। আর হয়তো ও মুভ অন করেছে। ভালো করেছে। হাতে তো এনগেজমেন্ট রিংও দেখলাম।

.

নীড় মেঝেতে চিত হয়ে শুয়ে আছে । এক হাত থেকে রক্ত ঝরছে। অন্যহাত দিয়ে গলার চেইনে ঝুলিয়ে রাখা মেরিনের পরিয়ে দেয়া এনগেজমেন্ট রিংটা ধরে রেখেছে। সেটার দিকে তাকিয়ে আছে।
নীড় : আমি আজও পর্যন্ত কারো হতে পারলামনা। আর তুমি … বিয়ে করেছো। মুভ অন করেছে। হাজবেন্ডকে এতোটাই ভালোবাসো যে হানি বলে ডাকো । কেনো আমার মুখোমুখি হলে আমার? কেনো? যেমনই ছিলাম যেভাবেই ছিলাম ভালোই তো ছিলো। সবার সামনে অন্তত গোছালো ছিলাম। কিন্তু তুমি যে আমাকে নারিয়ে দিলে । সবকিছু লন্ডভন্ড করে দিলে। এই পুরো ৫বছরে তীলে তীলে নিজেকে গড়েছিলাম খুব কষ্টে । তুমি এসে সব বিগড়ে দিলে। আমাকে ভেঙে দিলে। এখন আমি কি করবো? আমি যে তোমাকে ভালোবাসি। খুব ভালোবাসি। আমার সবটা জুরে যে কেবল আর কেবল তুমি। আমার মধ্যে যে ২টা সত্ত্বা বিরাজ করতো। ১টা আমার নিজের। আর আরেকটা তোমার।তোমাকে যে আমি নিজের মধ্যে ধারন করে বেঁচে ছিলাম। বেশ ছিলাম নিজের মতো করে। তবে কেনো এলো? কেনো দেখা দিলে? এখন যে বারবার তোমাকে দেখতে ইচ্ছা করবে। তোমাকে আরো ভালোবাসতে ইচ্ছা করবে। কি করবো আমি? আমি যে নিজের ভালোবাসার কাছে হেরে যাবো। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলবো। তখন কি হবে? কি করবো আমি? আর এসোনা আমার সামনে। প্লিজ এসোনা। আমি সহ্য করতে পারবোনা।
নীড়ের চোখের সামনে থেকে থেকে সব স্মৃতি ভেসে উঠছে । এই স্মৃতিগুলোই তো ওর প্রান হয়েছিলো।
নীড় : তুমি যা দিয়েছো সেগুলোই বেঁচে থাকার জন্য যথেষ্ট ছিলো। কেনো নতুন করে এসে পুরোনো স্মৃতি কেরে নিতে চাইছো? কেনো? তোমার স্মৃতিগুলোই যে আমার সব। সেই স্মৃতিতে ঝগড়া ছিলো। কিন্তু তৃতীয় কেউ ছিলোনা। কিন্তু এখন… আর এসোনা আমার সামনে। আল্লাহ ওকে আর আমার সামনে এনোনা। প্লিজ এনোনা।

.

৫দিনপর…
মেরিন হানির ভাগ্নি চিনিকে নিয়ে শপিং মলে এসেছে। চিনি ভীসন বায়না করছিলো মেরিনের কাছে। তাই মেরিন নিয়ে এসেছে। আজকে ক্লাসও ছিলোনা। চিনির বয়স চার কি সাড়ে চার বছর। চিনি মেরিনকে মিমি বলে ডাকে।
চিনি : মিমি মিমি …
মেরিন : হ্যা বলো ।
চিনি : আমি চমা খাবো।
মেরিন : চমা! চমা কি ?
চিনি : চমা মানে চমা।
মেরিন : ওরে বাবা… আমি তো চমা চিনিনা। আচ্ছা চমা দেখতে কেমন?
চিনি : চমার মতো।
মেরিন : আরে আমি তো চমাই চিনিনা। তোমার মাম্মি চিনে?
চিনি : হামম।
মেরিন : আমি তোমার মাম্মিকেই কল করি। এখানেই দারাও। হ্যালো ব্রাউনী আপু।
ব্রাউনী : হ্যা বলো মেরিন। চিনিকি খুব বিরক্ত করছে?
মেরিন : না আপু । বাট চমা খেতে চাইছে। চমা কি?
ব্রাউনী হেসে দিলো।
মেরিন মনেমনে : এই ফাজিল মহিলা না বলে দাঁত দেখাচ্ছে কেনো? ঢং।
ব্রাউনী : চমা মানে চকোমো।
মেরিন : ওহ আই গট ইট। রাখছি আপু।
মেরিন ফোন রেখে পাশ ফিরে দেখে চিনি নেই ।
মেরিন : চিনি… চিনি কোথায় গেলো? চিনি চিনি? ওহ নো যদি চিনিকে না পাওয়া যায় তবে সবাই ঠিক বুঝে যাবে যে আমি ঠিক আগের মতোই কেয়ারলেসই আছি। নেহি… এটা হতে পারেনা। সার্চ কাকাতুয়া সার্চ।
মেরিন চিনিকে খুজতে লাগলো।
চিনি : ওই তো চমা। মিমি তো বোঝেইনা। বোকা । হিহি।
চিনি ওর চমার দিকে দৌড় লাগালো। গিয়ে ধাক্কা লাগলো নীড়ের পায়ের সাথে। ছোট মানুষ তাই নীড় দেখতেই পারেনি । নীড় চিনিকে দার করালো। ১হাটু গেরে বসলো।
নীড় : সরি বেবি। সরি।
চিনি : উহুহু…
চিনি ঠোঁট উল্টিয়ে রেখেছে। সামনের চুল গুলো কাটা। কপালে পরে আছে। গুলুমুলু পুতুলের মতো একেবারে।
চিনি : তুমি ১টা ভূতু । আমাকে ব্যাথা দিলে কেনো?
নীড়ের মনে হচ্ছে ২০০১ এ ফিরে গিয়েছে। সেই পুচকু মেরিনকে দেখছে। নীড় হেসে দিলো।
নীড় : সরি বেবি। তোমার মাম্মি কোথায়? কার সাথে এসেছো?
চিনি : আমি মিমির সাথে এসেছি।
নীড় : কোথায় তোমার মিমি?
চিনি : জানিনা। আমি চমা খাবো।
নীড় মনেমনে : বেবিটা বোধহয় হারিয়ে গিয়েছে। অ্যানাউন্সমেন্ট রুমে নিয়ে যাই।
নীড় : তোমার নাম কি বেবি? তোমার বয়স কতো জানো?
চিনি : চিনি । ৪বছর।
নীড় : হামম দেখে তো তাই মনে হচ্ছে। পাঁচ কি সাড়ে চার । চলো আমি তোমাকে তোমার মিমির কাছে নিয়ে যাই।
চিনি : হামম। কিন্তু আমি চমা খাবো।
নীড় : চমা কি?
চিনি : ওই যে ওগুলো।
চিনি চকোমোর দিকে ইশারা করলো। নীড় চিনিকে কোলে নিলো। চকোমো কিনে দিলো। মেরিন দূর থেকে দেখলো চিনি কারো কোলে । লোকটার পেছনটাই দেখা যাচ্ছে। চিনির হাতে চকোমো।
মেরিন : কিডন্যাপার! চকোমো কিনে দিয়ে চিনিকে কিডন্যাপ করছে! ওহ নো। ভাগ কাকাতুয়া ভাগ।
মেরিন ছুটে যেতে লাগলো ।
চিনি : মিমি…
নীড় পেছনে ঘুরতে না ঘুরতেই মেরিন পৌছে গেলো। খপ করে চিনি কে কোলে নিয়ে দৌড় লাগালো। দুজন দুজনকে দেখলোনা পর্যন্ত ।
নীড় : ওহ নো কিডন্যাপার।
নীড় ছুটে গিয়ে মেরিনের সামনে দারালো । দুজন দুজনকে দেখলো। মেরিন থামতে গিয়ে পরে যেতে নিলো। নীড় ধরে ফেলল।
নীড়-মেরিন : তুমি কিডন্যাপার হয়ে গিয়েছো?
দুজনই অবাক হলো।
নীড়-মেরিন : নো…
চিনি : মিমি… এই আংকেলটা না খুব ভালো । আমাকে তোমার কাছে নিয়ে যাচ্ছিলো।
মেরিন : ওহ থ্যাংক ইউ। ক্ষ… মিস্টার নীড়।
নীড়ের চোখ ভরে এলো ।
নীড় : ওয়েলকাম ।মনেমনে : তারমানে এটা কাকাতুয়ার মেয়ে? আর সে কারনেই ওর মতো।
মেরিন খানিকটা সংকোচ নিয়ে চকোমোর পাউন্ড নীড়ের দিকে এগিয়ে দিতে নিলে নীড় রেগে মেরিনের দিকে তাকিয়ে চলে গেলো। মেরিন পাউন্ডটা ভরে রাখলো। নীড় আর দেরি না করে গাড়ির কাছে গেলো। তুফান উঠেছে মনে। গাড়িতে লাথি মারলো। চোখের সামনে ভেসে উঠলো ডিভোর্সের আগের রাতটা। রেগে লাল হয়ে গেলো। গাড়ি স্টার্ট দিলো। তখন নীড়ের মাথায় বারি খেলো চিনির বয়সটা।
নীড় : চচিনি আমার মেয়ে নয়তো? হ্যা হ্যা। ও হয়তো আমারই মেয়ে। বায়োলজি লজিক তো তাই বলছে।
নীড় গাড়ি থেকে বের হয়ে দৌড়ে ঢুকলো শপিং মলে। খুজতে লাগলো মেরিন-চিনিকে। একটা পর্যায়ে দেখলো যে মেরিন চিনিকে নিয়ে গাড়িতে উঠছে। নীড় ছুটে এলো । মেরিনের গাড়ির পিছু নিলো। মেরিন লুকিং মিররে তাকালো।
মেরিন: কারটা সেই তখন থেকে আমার পিছু নিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। একটু স্লো করে দেখি তো দেখা যায় কিনা কে? ওহ মাই গুডনেস। ক্ষীরবাদুর! স্পিড বারা কাকাতুয়া স্পিড বারা।
স্পিড দ্বিগুন করাতো নীড়ের সন্দেহ আরো গাড় হলো । ১টা সময় নীড় মেরিনকে ধরে ফেলল। চিনি তো সেই কখন ঘুমিয়ে পরেছে।
নীড় : নেমে আসো।
মেরিন নামলো।
মেরিন : ফলো করছো কেনো আমাকে?
নীড় : তুমি আমার মেয়েকে ৫বছর ধরে আমার আর আমার পরিবার থেকে দূরে রেখেছো । এখন আমি দেখে ফেলায় পালিয়ে যাচ্ছো। আর আমি চুপচাপ বসে থাকবো?
মেরিন : তোমার মেয়ে!
নীড় : হ্যা আমার মেয়ে।
মেরিন মনেমনে : ছিঃ ছিঃ ব্রাউনী আপুর ক্ষীরবাদুরের সাথে সম্পর্ক! পরকীয়া?
মেরিন : তোমারই মেয়ে!
নীড় : ওকে ফাইন তোমার আর আমার মেয়ে । আমাদের মেয়ে।
মেরিনের মাথা আরো গুলিয়ে গেলো।
মেরিন : ওয়েট অ্যা মিনিট। কি বলছো তুমি? পাগল হয়ে গিয়েছো তুমি? নিজেও পাগল হয়েছো আমাকেও পাগল বানাচ্ছো।
নীড় : তুমি তো জন্মগতই পাগল। তোমাকে নতুন করে আর কি পাগল বানাবো? তুমি কি ভেবেছো যে তুমি চিনিকে তোমার হানির মেয়ে বলবে আর আমি মেনে নেবো?
মেরিন : তবা তবা বলছো কি!
নীড় : ঠিক বলছি। ১জন ডক্টরকে তুমি এভাবে বোকা বানাতে পারবেনা। ডিএনএ টেস্ট বলেও কিছু আছে। আর আমি তো ডিএনএ টেস্ট ছারাই বলতে পারি যে ও আমার মেয়ে।
মেরিন : এর মানে ব্রাউনী আপুর সাথে তোমার সম্পর্ক চলছে। তাও অবৈধ।
নীড় : ব্রাউনী আপু কোথায় থেকে এলো? আর কে এই ব্রাউনী আপু?
মেরিন : হানির বড় বোন।
নীড় : বাদ দাও তো তোমার হানিকে। হানি হানি হানি… এতো শো অফ করা ভালোনা।
মেরিন : শো অফ! হানিকে হানি ডাকার পেছনে শো অফের কি আছে? ওর নাম হানি তো ওকে আমি হানি না ডেকে কি মধু বলে ডাকবো?
নীড় : নাম হানি মানে?
মেরিনের ইচ্ছা করছে নীড়ের মাথাটা ফাটিয়ে দিতে ।
মেরিন : নাম মানে নাম। নেইন। ‘N’ ‘A’ ‘M’ ‘E’ ।
নীড় : নাম তো আমি বুঝি । বাট চিনি , হানি , ব্রাউনী এসব কি?
মেরিন : এর নাম চিনি ।এর মামার নাম হানি , এর মায়ের নাম ব্রাউনী।
নীড় : তুমি নাম বলছো নাকি সুইটস হাবের সুইটের নাম।
মেরিন : দুটোই । এরা বংশ পরম্পরায় মিষ্টিওয়ালা। এর নানুর নাম চকোলেট। এর নানুর বাবার নাম মিঠাই। বাংলাদেশে আদিকালে ময়রা ছিলো। লন্ডনে এসে সুইটস হাবের মালিক হয়েছে।
নিজের বোকামোতে নিজেই হেসে দিলো।
মেরিন : এখন কাইন্ডলি এক্সপ্লেইন করবা তোমার মাথার কোন তার ছিরেছে। কেনো ছিরেছে?
নীড় : একচুয়ালি চিনির বয়স সাড়ে চার বছর।
মেরিন : তো?
নীড় : তাই ভাবলাম চিনি আমাদের মেয়ে।
মেরিন : সাড়ে চার বছর হলে ও আমাদের মেয়ে কেনো হবে? কোন লজিকে?
নীড় : মেডিকেল সাইন্সের লজিকে।
মেরিন : আমার মাথা ঘুরছে। আমার মাথায় কিছু ঢুকছেনা। বোঝাবে প্লিজ ?
নীড় : কেনো অবুঝের মতো কথা বলছো বলো তো? এমন করে বলছো যেনো আমাদের মধ্যে কিছু হয়ইনি।
মেরিন : আমাদের মধ্যে অনেক কিছু হয়েছে তুমি কোনটার কথা বলছো!
নীড় : ইইই… তুম…
চিনি : মিমি কি হয়েছে? ওই আংকেলটা এমন করছে কেনো?
মেরিন : আংকেলটা পাগল তাই। হুহ।
মেরিন গাড়িতে বসে চলে গেলো।

.

রাতে…
মেরিন : ক্ষীরবাদুর কি সব বলছিলো? কেনো বলছিলো ? মেডিকেল সাইন্সের লজিক! ক্ষীরবা…
তখন মেরিনের মাথায় ঢুকলো।
মেরিন : ওহ গড। এই ছেলেরা এতো বেশই বোঝে কেনো? কোন দিক দিয়ে কি ভেবে নিয়েছে। ছিঃ । এক মিনিট হানি হানি কি বলছিলো যেনো? হানিকে আমার হানি বলে মেনশন করেছিলো। আল্লাহ ও হানিকে আমার হাবি মনে করেছিলো তবে! মনে করেছে আমি বিয়ে করেছি লালঝুটি কাকাতুয়াও তাহলে বিয়ে করে নিয়েছে। মনে তো করবেই। সে তো আর লালঝুটি কাকাতুয়াকে ভালোবাসেনা। কিন্তু লালঝুটি কাকাতুয়া ক্ষীরবাদুরকে আজও ভালোবাসে। ভীষন ভালোবাসে

.

নীড় : লালঝুটি কাকাতুয়ার তবে বিয়ে হয়নি। আর আমি কি কি ভাবছিলাম। হাহাহা । পাল্টায়নি আমার কাকাতুয়াটা । একটুখানিও পাল্টায়নি। সেই পাগলিই আছো। লালঝুটি কাকাতুয়া। সেই হেয়ার কাটিং , সেই কালার। সেই চোখ , সেই নাক , সেই ঠোঁট ,সেই গাল। তোমার তুলনা কেবল তুমি। কি যে খুশি লাগছে তোমার বিয়ে হয়নি জেনে। থ্যাংক ইউ আল্লাহ । দেখি তো ম্যাডামের খোজখবর নিয়ে। সে কি এখানেই শিফ্ট হয়েছে নাকি?
নীড় খোজখবর নেয়া শুরু করলো।
নীড় : ও কি আগের মতোই আজও ঘুম কাতুরে? আগের মতোই দুষ্টু!

.

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here