তোমার_হতে_চাই ২ part : 3 writer : Mohona

0
317

#তোমার_হতে_চাই ২
part : 3
writer : Mohona

.

নীড় : আগের মতোই দুষ্টু! আজকে রাতে গিয়েই কি ওকে একটু দেখে আসবো? না না সকালের অপেক্ষা করি। আমারই তো কাকাতুয়া। ইয়ার কালকে সকাল কখন হবে? যদি মোবাইলের অ্যালার্মে ঘুম না ভাঙে তাহলে কি হবে? আরো কয়েকটা হলে ভালো হতো। এই হোটেলে তো আর নেই। ব্যাপারনা এখনই গিয়ে কিনে নিয়ে আসি।
নীড় গিয়ে ৩টা অ্যালার্ম ক্লক কিনে নিয়ে এলো ।
নীড় : এবার ঠিক আছে। এবার আর ঘুম নিয়ে সমস্যা নেই। সাড়ে ১০টায় ক্লাস । ততোক্ষনে এই অ্যালার্ম গুলো আমাকে ঠিক তুলে দিবে।
নীড় সবগুলোতে অ্যালার্ম তো সেট করলো কিন্তু ১টাতেও ব্যাটারী লাগাতে মনে নেই।

.

পরদিন সকাল ৯:৪৫…
নীড়ের ঘুম ভাঙলো।
নীড় : ওহ শীট। ৯টা ৪৫? স্টুপিড অ্যালার্ম ক্লকস ।
বলেই নীড় ঘড়িগুলো ছুরে মারলো। এরপর দ্রুত ফ্রেশ হয়ে পৌছালো মেরিনের ফ্ল্যাটের সামনে। গাড়ি থামিয়ে চুপচাপ বসে রইলো।
নীড় : আরে ধ্যাত অলরেডি ১০টা বেজে ১৫মিনিট।এখানে না এসে সরাসরি ল’স্কুল গেলে ভালো হতো। ড্যাম ইট।
নীড় গাড়ি স্টার্ট দিতে নিলো তখন মেরিন ছুটে বের হচ্ছে। পরেই গেলো ধপাস করে পরে। নাতো চুল ব্রাশ করা আর নাতো মুখের পানি মোছা। চুল গুলো ভেজা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। টুপটুপ করে পানি পরছে। নীড় ঠিক বুঝে গেলো যে মেরিনের ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গিয়েছে । ফ্রেশ হয়ে শাওয়ার নিয়ে ১মিনিটও দেরি করেনি । নীড় হেসে দিলো।
মেরিন : ট্যাক্সি… ১টা ট্যাক্সিও নেই। ধ্যাত। হানি বলল ওদের ১টা গাড়ি রেখে দিতে । কেনো রাখলামনা! ধ্যাত। লেইট হচ্ছে। আগে বারি। ওখানে পেতে পারি ট্যাক্সি।
মেরিন ছুটে যেতে লাগলো। নীড়ের গাড়িটা থেমে ছিলো। যেতে যেতে গাড়ির কাঁচে নিচের হুলিয়া দেখে দারিয়ে পরলো মেরিন।
মেরিন : ইজ ইট মি! ১০বাচ্চার মা লাগছে তোকে । ল’স্কুল থেকে বেগার বলে তোকে বের করে দিবে। ল’স্কুল তো দূরের কথা বেগার ভেবে কোনো ট্যাক্সি ড্রাইভারও ট্যাক্সি থামাবেনা।।
নীড় তো হেসে কুটিকুটি।
মেরিন ক্লিপ বের করে কোনোরকমে চুল গুলো আটকে দিলো। এরপর লিপস্টিক দিলো। আর তখন নীড় গাড়ির কাঁচ নামালো। মেরিন ভূত দেখাপ মতো চমকে গেলো।
মেরিন : আ…📢
নীড় : হেই ইটস মি। কুল কুল।
মেরিন থামলো । আবারো দিলো চিল্লানি।
নীড় : হায়র কপাল।
মেরিন : তুমি এখানে কি করছো?
নীড় : যাচ্ছিলাম। হুট করে গাড়ি থেমে গেলো। তুমি এখানেই থাকো?
মেরিন : হামম। বাই আমার ক্লাস আছে।
নীড় : বাই।
মনেমনে : বলবো ড্রপ করার কথা?
মেরিন মনেমনে : একটু বললও না ড্রপ করার কথা।
নীড় : শুনছো।
মেরিন দারালো।
মেরিন : হামম!
নীড় : আমি তোমাকে ড্রপ করে দেই?
মেরিন : নো থ্যাংকস। তোমাকে কষ্ট করতে হবেনা।
নীড় : না কষ্টের কি আছে? প্লিজ সিট।
মেরিন মনেমনে : কি করবো? যেতে তো ইচ্ছা করছে। যাই তবে।
নীড় : আসো।
নীড় গাড়ির দরজা খুলে দিলো। মেরিন গুটিগুটি পায়ে হেটে গিয়ে বসলো। নীড়ও বসলো।
নীড় : কোথায় যাবে?
মেরিন বলল।
নীড় : হামম।
গাড়ি চলতে শুরু করলো । কেউ কারো দিকে তাকাতে পারছেনা।
নীড় : আই থিংক তোমার চুলগুলো ভেজা। খুলে ফেলো। ঠান্ডা লেডে যাবে। স্যুট করেনা ।
মেরিন : এখন অভ্যাস হয়ে গিয়েছে । হা…চি।
নীড় : হামম দেখাই তো যাচ্ছে।
বলেই মেরিনের মাথা থেকে ক্লিপটা খুলে ফেলল। মেরিন দেখলো নীড়ের হাতে ক্ষত।
মেরিন : তোমার হাত কাটলো কি করে?
নীড় : ওই তো কাজ করতে গিয়ে।
মেরিন : ব্যান্ডেজ করোনি কেনো?
নীড় : নট নিডেড।
মেরিন আর কিছু বললনা। কিছুটা সামনে গিয়ে মেরিন ১টা মেডিকেল শপ দেখতে পেলো।
মেরিন : স্টপ দ্যা কার।
নীড় গাড়ি থামালো।
নীড় : কি হয়েছে?
মেরিন : ওয়েট অ্যা মিনিট।
বলেই মেরিন নেমে গিয়ে মেডিসিন নিয়ে এলো। নীড়ের হাতে ব্যান্ডেজ করে দিলো।
নীড় : শ্যাল উই?
মেরিন : হামম।
গাড়ি আবার চলতে শুরু করলো। নীড় লুকিয়ে লুকিয়ে মেরিনকে দেখছে বারবার। ১০টা বেজে ৪০মিনিট হয়ে গেলো। সেদিকে মেরিনের খেয়ালই নেই । নীড় গাড়ি থামালো।।
মেরিন : কি হলো?
নীড় : পৌছে গিয়েছি।
মেরিন : ওহ । থ্যাংক ইউ।
বলেই মেরিন চলে গেলো। মেরিনের আর ক্লাসে মন বসলোনা। বেরিয়ে এলো ক্লাস থেকে। করিডোর থেকে দেখলো নীড় এখনো দারিয়ে আছে ।
মেরিন : এই ক্ষীরবাদুর এখনো দারিয়ে আছে কেনো? না এই ছেলেটা আমার মাথা নষ্ট করে দিবে । এর বউ জানলে যে একে উত্তম মধ্যম দিবে সেটা কি এর মাথায় আছে? ধ্যাত নিচে যাবোনা এখন। এই ছেলে বারবার এমন করে সামনে আসতে থাকলে তো আমাকে দুর্বল বানিয়ে দিবে। উল্টাপাল্টা ভাবনা মাথায় আসবে। এলোমেলো আকাঙ্খা জাগবে । না না। আমি আর ওর সামনে যাবোনা। আল্লাহ তুমি ওকে আমার থেকে দূরে দূরে রাখবে। একদম সামনে আনবেনা। তুমি কেনো এমন করছো বলো তো? আমাদের ডিভোর্স না হতো তাহলে একটা কথা। কিন্তু এখন তো আর কোনো অপশন নেই.।
নীড় : লালঝুটি কাকাতুয়া এখনো আসছেনা কেনো? ব্যাগটা ফেলে গিয়েছে । এর মধ্যে তো বাসার চাবিটা পর্যন্ত আছে। ড
বাসায় ফিরবে কেমন করে? ইডিয়ট।

.

২ঘন্টাপর…
মেরিন আড়ালে লুকিয়ে দেখছে যে নীড় আছে কিনা?
নীড় : কাকে খুজছো?
মেরিন : ক্ষ… আ। ততুমি ?
নীড় : হামম আমি। তোমার ব্যাগ গাড়িতে ফেলে এসেছিলে। ধরো।
মেরিন ব্যাগ নিতে গিয়ে দেখলো নীড়ের হাতে সেই ঘড়িটা যে ও গিফ্ট করেছিলো। ঘড়িটা দেখে ও নীড়ের দিকে তাকালো ।
নীড় : চলো তোমাকে পৌছেদি।
মেরিন ; নো। আই ক্যান ম্যানেজ।
বলেই মেরিন এগিয়ে গেলো।
নীড়ও এগিয়ে গেলো।
মেরিন : শুনছো।
নীড় দারালো।
নীড় : হামম।
মেরিন : থ্যাংক ইউ ।
নীড় : ওয়েলকাম।

.

২দিনপর…
ডক্টর কেইন : আপনার কি হয়েছে ডক্টর নীড়? আপনি এমন বিহেভ করছেন কেনো? আপনি তো কেয়ারলেস নন। এমনটা কি করে করতে পারেন আপনি?সব হচ্ছে সেদিনের ওই মেয়েটার জন্য। আই নো।
নীড় : এক্সকিউজ মি। আমার কাজ আমি ভালোভাবেই বুঝি। সো কুয়াইট প্লিজ। স্যার জনসন হেয়ার ইজ ইউর নিউ ভ্যাক্সিন। ইউ ক্যান ট্রাই ইট ইফ ইউ ট্রাস্ট মি।
ডক্টর জনসন : অফকোর্স আই উইল। এন্ড আই ট্রাস্ট ইউ।
নীড় : বাই।
বলেই কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলো। মেরিনের কথা ভাবতে ভাবতে হাটছে। তখন দেখলো মেরিন মোবাইলে কথা বলতে বলতে এগিয়ে আসছে।
নীড় : কাকাতুয়া! হসপিটালে কাকাতুয়া কেনো? মনেহয় আমি ভুল দেখছি।
তখন এক ওয়ার্ড দ্রুত কিছু মেডিসিন নিয়ে আসার সময় মেরিনের কাধে ধাক্কা লাগে। মেরিন পরে যাবে। নীড় এসে ধরে ফেলল।
মেরিন মনেমনে : আবার ক্ষীরবাদুর? কিন্তু ও এই ক্যান্সার হসপিটালে কি করছে? ও না নিউরোলজিস্ট।
মেরিন : থ্যাংকস।
নীড় : ত…
নীড়কে আর কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে মেরিন হনহন করে চলে গেলো । নীড় মেরিনের পায়ের নূপুর জোরা দেখলো।
নীড় : এই নূপুর… এটা তো আমার দেয়া সেই নূপুর জোরা । ও আজও এই নূপুর পরে আছে…! কেনো পরে আছে?
তখন নীড়ের ফোনটা বেজে উঠলো। দেখলো হিয়া। ধরলোনা। হিয়া আবার কল করলো। নীড় ধরলো।
হিয়া : হ্যালো।
নীড় : হামম।
হিয়া : কেমন আছো তুমি?
নীড় : ভালো।
হিয়া : একটু আমাকেও জিজ্ঞেস করো আমি কেমন আছি!
নীড় : কেমন আছো?
হিয়া : ভালো নেই তোমাকে ছারা। সেই কবে গিয়েছো । ১টা ফোনকলও করলেনা।
নীড় : আমি এখানে ট্যুরে আসিনি । কাজে এসেছি ।
হিয়া : হাও রুড। আচ্ছা শোনো কালকে বিকালে একটু লন্ডন এয়ারপোর্টে আসতে পারবে?
নীড় : কেনো?
হিয়া : প্লিজ না।
নীড় : ওকে ট্রাই করবো।
হিয়া : থ্যাংক ইউ জানু। আমি জানি যতোই রাফ এন্ড টাফ সাজার ড্রামা করোনা কেনো তোমার মনটা অনেক নরম। তুমি খুব ভালো।
নীড় : আমার অনেক কাজ আছে। জরুরী কিছু বলার আছে? না থাকলে রাখছি।
হিয়া : হামম আছে তো।
নীড় : কি?
হিয়া : আই লাভ ইউ।
নীড় আর কিছু না বলে রেখে দিলো।
হিয়া : আমার অ্যাংরি ইয়াংম্যানটা। একদিন ঠিকই আই লাভ ইউ টু বলবে। কালকে আসছি আমি তোমার কাছে।

.

রাতে…
মেরিন : ধ্যাত কোনো সুপারশপে পেলামনা। কোথায় পাই? এয়ারপোর্টের সামনের শপটাতে? হ্যা আই থিংক ওখানে পাওয়া যাবে। না পেলে তো মুশকিল হয়ে যাবে । কালকে ফেরার পথে এয়ারপোর্ট রোড হয়ে আসবো।
তখন মেরিনের ফোনটা বেজে উঠলো। দেখলো কনিকা।
মেরিন : হ্যা আম্মু…
কনিকা : কি খবর মা?
মেরিন : ভালো আম্মু । তোমরা সবাই ভালো আছো?
কনিকা : হামম আমরা সবাই ভালো আছি। তোমার ওখানে কোনো সমস্যা হচ্ছে না তো?
মেরিন : না আম্মু আমি ঠিক আছি।
কনিকা : ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া করছো তো মা?
মেরিন : হামম।

.

পরদিন…
সন্ধ্যা ৬টা…
মেরিন এয়ারপোর্টের সামনের শপ থেকে বের হচ্ছে। তখন দেখে নীড়ের গাড়ি এসে থামলো। মেরিন আবার ভেতরে ঢুকে গেলো। লুকিয়ে পরলো।
মেরিন : আল্লাহ নট ডান কিন্তু। আমি ওকে সামনে আনতে না করছি আর তুমি বেশি বেশি আনছো? এমনটা নয়তো যে ক্ষীরবাদুর আমাকে ফলো করছে!
নীড় গাড়ি থেকে নেমে আসতেই হিয়া ছুটে এসে নীড়কে জরিয়ে ধরলো । নীড়ও এক হাত ওর পিঠে রাখলো। মেরিন সবটা দেখলো।
নীড় : তুমি এখানে?
হিয়া নীড়ের গলা জরিয়ে ধরলো।
হিয়া : তোমাকে ভীষন দেখতে ইচ্ছা করছিলো । তাই চলে এলাম। কতোক্ষন ধরে ওয়েট করছি জানো? ভেবেছি তুমি আসবেইনা। তাই বাহিরে চলে এলাম । এতোক্ষনে আসার সময় হলো!
নীড় : কাজ ছিলো। চলো।
নীড় গাড়ির কাছে যাচ্ছে।
হিয়া : নীড়…
নীড় ঘুরলো।
নীড় : হামম।
হিয়া ছুটে এসে নীড়ের কোলে উঠলো বানরের মতো।
নীড় : এসব কি?
হিয়া নীড়ের গালে চুমু দিলো।
হিয়া : আই লাভ ইউ।
আশেপাশের সবাই দেখছে।
নীড় : হিয়া নামো সবাই দেখছে…
মেরিনের পক্ষে দেখা আর সম্ভবনা। ও বের হয়ে ট্যাক্সি নিয়ে চলে গেলো। ট্যাক্সিতে ওঠার সময় নীড় ওকে দেখে নিলো।
নীড় :হিয়া ছারো নামো। অযথা সিন ক্রিয়েট করছো।
হিয়া : সিন ক্রিয়েটের কি আছে ? তুমি আমার উডবি।
নীড় প্রচন্ড রেগে গেলো।
নীড় : বাংলা ভাষা বোঝোনা তুমি? বললামনা নামতে। নামো।
হিয়া চমকে উঠলো। নেমে গেলো। লজ্জা পেলো এতোগুলো মানুষের সামনে।
নীড় : গেট ইন দ্যা কার।
হিয়া বসলোনা গাড়িতে। ট্যাক্সি নিয়ে চলে গেলো।
নীড়ও নিজের গাড়ি নিয়ে চলে গেলো।

.

মেরিন রেস্টুরেন্টে বসে আছে। খাবার অর্ডার করেছে।
মেরিন : আমার কি? আমার কিছুনা। আমি কেনো জেলাস হতে যাবো? আমি জেলাস নই । আমি একদম ঠিক আছি। আম ফাইন। বউ তার বরের কোলে না মাথায় উঠুক। আমার কি? কিছুনা। আমি জেলাস নই আমি জেলাস নই আমি জেলাস নই। আর না আমার জেলাস হওয়ার অধিকার আছে। ক্ষীরবাদুর আমার কেউনা। কি যেনো বলে… বেগানা … হ্যা হ্যা বেগানা পুরুষ । ও এখন আমার জন্য বেগানা পুরুষ। ওকে নিয়ে এমন অনুভব করা পাপ। চরম পাপ। আমার ওকে ভুলতে হবে।
তখন মেরিন কারো চিৎকার শুনতে পেলো।
হিয়া : আই ওয়ান্ট মাই ককটেল…
মেরিন মাথা তুলল। দেখে হিয়া।
মেরিন : পোড়া কপাল আমার। এরা এখানেও হাজির। ১টা তো আছে আরেকটা কোথায়? ককটেল চাইছে? তারমানে ড্রিংক করে? এমন ১টা মেয়েকে ক্ষীরবাদুর বিয়ে করলো কেমন করে? ছিঃ ছিঃ। বাসায় তো কেউ এসব গিলেনা।
হিয়া নিজের সাথে উল্টাপাল্টা কথা বলছে। একটুপর নীড় এলো।
নীড় : কি হচ্ছে এসব? কি শুরু করেছো কি?
হিয়া : জানু ইউ… বাট আম আপসেট উইথ ইউ। তুমি আমাকে একটুও ভালোবাসোনা।
নীড় : শাট আপ এন্ড ফলো মি। বিল প্লিজ।
হিয়া : তুমি হার্টলেস। তা না হলে কেউ নিজের ফিওনসের সাথে রুড বিহেভ করে!
মেরিন মনেমনে : ফিওনসে! ও… তারমানে বিয়ে হয়নি।
নীড় : লেটস গো।
হিয়া : নো। আমি যাবোনা। আমাকে ভালোবাসবে বলো।
নীড় : লেটস গো ।
হিয়া : নো।
হিয়া নীড়ের গলা জরিয়ে ধরলো।
হিয়া : কেনো আমাকে বোঝোনা? কেনো আমার ভালোবাসা বোঝোনা? আমি যে খুব করে তোমাকে চাই।খুব খুব…
হিয়া নীড়কে কিস করতে গেলে নীড় ওকে সরিয়ে দিলো। এতে মেরিনের একটু আনন্দই হলো। নীড় হিয়াকে পিঠে তুলে হাটতে লাগলো। বেরিয়ে গেলো হিয়াকে নিয়ে। যেটা মেরিনের একটুও ভালো লাগেনি।
মেরিন : শাকচুন্নি কোথাকার । আমার ক্ষীরবাদুরের পিঠে ওঠে। ঢং। বেশরম , বেহায়া। পাবলিকের সামনে রোম্যান্স করতে যায়। ভাবের থেকে ঢং বেশি। ক্ষীরবাদুর ওর ঝুটি ধরে লাগালোনা কেনো? আমি হলে তো ঠিকই লাগাতো। না এটা মিথ্যা কথা। ক্ষীরবাদুর আমাকে কখনো আঘাত করেনি। কিন্তু… ধ্যাত ভালো লাগেনা। বেচারা ক্ষীরবাদুরের জীবনে এবারও পারফেক্ট কেউ এলোনা। এর সাথে আমার ক্ষীরবাদুর জীবনেও হ্যাপী হবেনা।
মেরিন না খেয়েই উঠে গেলো।

.

সকালে…
হিয়া : আই অ্যাম সরি।
নীড় : ইটস ওকে।
হিয়া : তুমি আমার ওপর রাগ করে নেই তো?
নীড় : না।
হিয়া : আসলে আমি তোমাকে ডিস্টার্ব করতে আসিনি। এই উইকেন্ডে তোমার সাথে সময় কাটাতে চেয়েছিলাম। তাই এসেছি। একটুখানি সময় দিবে আমাকে?
নীড় : আমার অনেক কাজ আছে। সরি আই কান্ট । এই নাও আমার কার্ড। যতো ইচ্ছা ঘুরো ফিরো।
হিয়া : নীড়… এই কার্ড দিয়ে আমার কি হবে? আমি তোমার একটুখানি সঙ্গ চাই। আমি তোমার হবু স্ত্রী। এমনটা নয়যে আমাকে বিয়ে করার জন্য তোমাকে জোর করা হয়েছে । আমারও কিছু চাওয়াপাওয়া আছে তোমার কাছে।
নীড় : তুমি আমার দায়িত্ব। বিয়ের পর একজন হাজবেন্ড তার ওয়াইফকে যেভাবে রাখে আমি তোমাকে সেভাবেই রাখবো। কোনো অভিযোগ থাকতে দিবোনা। সেটা আমি তোমাকে আগেই বলেছি। তবুও কেনো এমন বাচ্চামো করছো বলো তো?
হিয়া : আর ভালোবাসা?
এবার নীড় চুপ।
হিয়া : স্ত্রী কি তার স্বামীর কাছে কেবল ইন্টিমেসি চায়? একজন স্ত্রী কি চায় সেটা তুমি হয়তো কখনোই বুঝতে পারবেনা।
নীড় : তুমি এখনো আমার স্ত্রী হওনি। ডোন্ট ফরগেট দ্যাট।
হিয়া : হামম ঠিক বলেছো। কিন্তু সে… সে তো ছিলো। মেরিন। মেরিন তো তোমার স্ত্রী ছিলো । তুমি তার দিকটাও কখনো বোঝোনি। আর তাই সে পরকীয়ায় লিপ্ত ছিলো।
মেরিনের পরকীয়ার কথা শুনে নীড় পক্ষে আর নিজের রাগকে নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হলোনা। ঠাস করে হিয়াকে ১টা থাপ্পর মারলো।
নীড় : ডোন্ট ইউ ডেয়ার টু সে এনিথিং অ্যাবাউট মাই লালঝুটি কাকাতয়া।।
বলেই নীড় রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। হিয়া কেবল তাকিয়ে রইলো। ও বুঝতে পারছেনা নীড় ওকে থাপ্পরটা কেনো মারলো? নীড়ের দোষ ধরিয়ে দেয়ায় নাকি মেরিনের পরকীয়ার কথা বলায়!

.

নীড় : আই অ্যাম সরি কাকাতুয়া। আই অ্যাম রিয়েলি সরি লালঝুটি কাকাতুয়া। আমার জন্য তোমাকে আজও এসব কথা শুনতে হয়। কালকে আমাকে এয়ারপোর্টে তুমি আমাকে দেখেছিলে হিয়ার সাথে। হয়তো কষ্ট পেয়েছো। কষ্ট! তুমি থোরিনা আমাকে ভালোবাসো যে কষ্ট পাবে? এটাতো আমি পাগল যে তোমাকে পাগলের মতো ভালোবাসি। তোমার মনে তো আমার কোনো অস্তিত্ব নেই । তাই তো আমার সামনে আসতে চাওনা । ভাগ্যক্রমে সামনে পরে গেলে অস্বস্তিতে ভোগো। তারাতারি পালাতে চাও। কাটার মতো মনে করো আমাকে। কিন্তু ক্ষীরবাদুর তুই হিয়ার সাথে অন্যায় করছিস। । সেটা ঠিকনা। মামনির খুশির কথা ভেবে তুই হিয়ার সাথে এনগেজমেন্ট করেছিস। মামনির কন্ডিশন খুব বেশি ভালোওনা। হিয়া তোর দায়িত্ব।
নীড় হোটেলে পৌছালো। দেখলো হিয়া স্যুটকেস নিয়ে ট্যাক্সিতে উঠছে। নীড় নিজের বুকে পাথর রেখে ওর হাত ধরলো।
নীড় : সরি। ডোন্ট গো প্লিজ।
হিয়া নীড়ের দিকে ঘুরে ওকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো।
হিয়া : আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি নীড়। খুব। পাগলের মতো। তুমি আমার সব। আই অ্যাম সরি। আমি তোমাকে হার্ট করেছি। সরি নীড়…

.

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here