তোমার_হতে_চাই ২ part : 13 writer : Mohona

0
250

#তোমার_হতে_চাই ২
part : 13
writer : Mohona

.

নিহাল: সো কান্না বন্ধ করো। এই নাও পানি খাও।
হিয়া ঢকঢক করে পানি খেয়ে নিলো।
নিহাল : গুড গার্ল।
হিয়া : আং.. বাবা নীড় কি কখনো আমার হবেনা! আমি জানি ওর মনে আজও ওর লালঝুটি কাকাতুয়া।
নিহাল : আই নো দ্যাট। নীড় মেরিনকে ভালোবাসে সেটা জানি । কিন্তু কথা কি জানো ওদের মধ্যে এখন হিমালয় সমান তালাক শব্দটা রয়েছে। যদি নীড় ভালোবেসে বদ্ধ উন্মাদও হয়ে যায় তবুও কোনো লাভ নেই। সেই ভালোবাসা পূর্নতা আর পাবেনা।
হিয়া : আমি করবো বাবা? আমিও তো ১টা মানুষ।
নিহাল : মিথ্যা আশ্বাস আমি দেইনা। তাই বলছি অপেক্ষা করো। ভাগ্যের হাতে ছেরে দাও।
হিয়া :হামম। থ্যাংকস আ… বাবা।।
নিহাল : ইটস ওকে।
হিয়া : ১টা কথা বলি বাবা?
নিহাল : বলো ।
হিয়া : নীড়ের মনে তো দূরের কথা আমি তোমার আর মামনির মনেও জায়গা করে নিতে পারিনি।
নিহাল : এই কথা বলছো যে?
হিয়া : ভেরি ইজি । এতোকিছুর পর আজও তুমি মেরিনকে মামনি বলে ডাকো । মামনি ডাকেনা সেটা সত্য। তবে কি জানো আমি তোমাদের হবু বউমা। তবুও আমার জন্য তোমাদের মুখে আজও মা-মামনি বের হলোনা।
নিহাল : আসলে কি ডিভোর্স স্বামী-স্ত্রীর হয়। বাবা-মেয়ের নয়। মামনি নিজে জায়গাটা বানিয়েছে। তুমি ওর জায়গা নিতে না চেয়ে নিজের জন্য জায়গা বানাও। দেখবে সবটা সহজ হয়ে যাবে। কারন কারো জায়গা কেউ নিতে পারেনা। আরেকটা কথা… স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক গড়ার অনেক আগেই ওদের দুজনের মধ্যে ১টা সম্পর্কের সৃষ্টি হয়েছে। হয়তো সেই সম্পর্কটার নাম নেই। কিন্তু ওদের মধ্যকার সেই সম্পর্কটাই সবচেয়ে স্ট্রং । কান্নাকাটি বন্ধ করে গিয়ে ঘুমিয়ে পরো। কালকে তো রং খেলা হবে। তাইনা?
হিয়া : জী আ… বাবা।
নিহাল : তুমি আমাকে যেভাবে ডাকতে স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করো সেভাবেই ডাকো।

.

সকালে…
মেরিন শাড়ি হাতে নিয়ে বসে আছে। আজকে সবাই শাড়ি পরবে।
মেরিন : ইয়ার শাড়ি পরার আইডিয়াটা যে কার মাথা থেকে বেরিয়েছে কে জানে? এই ঘোড়ার ডিমের মাথা কেউ পরে কিভাবে ?
নীড় : আজও শাড়ি পরতে শিখোনি?
মেরিন : তুমি এখানে কেনো?
নীড় : তোমাকে মেডিসিন খাওয়াতে। আমি সিওর যে তুমি মেডিসিন নাওনি ।
মেরিন : আমি একদম ঠিক আছি।
নীড় : ঠিক আছি বলোনা তো। তুমি ঠিক আছি বললেই তোমার বেঠিকটা সামনে চলে আসে।
মেরিন : শাট আপ।
নীড় : নাও ধরো মেডিসিনটা খেয়ে নাও।
মেরিন : খাবোনা।
নীড় : হয় মেডিসিন খাবা নাহয় আমার হাতের থাপ্পর । এখন বলো কোনটা খেতে পছন্দ করবে?
মেরিন : একটাও না। এখন তুমি যাও আ..
নীড় মেরিনের মুখে ঔষধ ঢুকিয়ে দিয়ে পানি এগিয়ে দিলো।
নীড় : গিলো।
মেরিন বাধ্য মেয়ের মতো খেয়ে নিলো।
নীড় : গুড কাকাতুয়া।
মেরিন : এখন যাও।
নীড় : কেনো?
মেরিন : আমি রেডি… আচ্ছা শোনো মামনি কোথায়?
নীড় : নিজের রুমে।
মেরিন : ওকে থ্যাংক ইউ।
নীড় : শাড়ি-কাপড় নিয়ে চললে কোথায়?
মেরিন : মামনির কাছে।
নীড় : কেনো?
মেরিন : শাড়ি পরতে।
নীড় : তুমি কি ক্ষেপেছো ? যেচে কেনো বকা খেতে যাচ্ছো ?
মেরিন : শাট আপ। এন্ড প্লিজ ডোন্ট ফলো মি। প্লিজ ।
নীড় : এই মেয়ের ঠিক কোথায় সমস্যা কে জানে? নিজেও বকা খাবে মামনিকেও অসুস্থ করবে। যাই গিয়ে দেখি।
হিয়া : নীড়… শোনো।
নীড় দারালো।
নীড় : বলো।
হিয়া : এই ২টা থেকে ১টা চুজ করে দাওনা।
নীড় :যেটা পছন্দ সেটা পরে নাওনা।।
হিয়া : করে দাওনা।
নীড় : লেফ্ট ওয়ান।
হিয়া : থ্যাংক ইউ জান।
নীড় : ওয়েলকাম।
বলেই নীড় চলে গেলো।
মেরিন : মামনি…📢
নীলিমা : আ…
মেরিন : হাহা।
নীলিমা :আবার তুমি!
মেরিন : হামম।
নীলিমা : কেনো আসছো?
মেরিন : শাড়ি পরতে।
নীলিমা : মা-মামির কাছে যাও।
মেরিন : সেটাতো পসিবল না।
নীলিমা : কেনো?
মেরিন : আম্মু আর মামি মনে করে আমি এখন সিরিয়াস হয়ে গিয়েছি। সব পারি। শাড়ি পরতে পারি রান্না করতে পারি। কিন্তু ওরাতো জানেনা যে না তো আমি শাড়ি পরতে পারি আর না তো আমি রান্না করতে পারি। তিনবেলাই খাবার অর্ডার করে খাই। হিহি।
নীলিমা : তিনবেলাই বাহিরের খাবার!
মেরিন : হামম ইয়াম ইয়াম?
নীলিমা : পাগল তুমি? অসুস্থ হয়ে গেলে? এতোবড় হয়ে গিয়েছো তবুও নিজের খেয়াল রাখতে শিখলেনা?
মেরিন : হিহি।
নীলিমা : এখন এই হিহির মানে কি?
মেরিন : শাড়িটা পরিয়ে দাওনা।
নীলিমা : পারবোনা। যাও তুমি।
মেরিন : বেশ… আমি ক্ষীরবাদুরের কাছেই যাই শাড়ি পরতে।
নীলিমা : ছিঃ ছিঃ ছিঃ এটা কেমন তরো কথা?
মেরিন : আমি তো ছিঃ ছিঃ টাইপ কথা বলতেই পারি বলো। আমি ক্যারেক্টারলেস মেয়ে কিনা। গেলাম টাটা
নীলিমা : ১টা থাপ্পর দিবো। দারাও
নীলিমা দরজা লাগিয়ে দিয়ে মেরিনকে শাড়ি পরাতে লাগলো। মেরিন কি আর স্থীর হয়ে দারানোর পাত্রী!
নীড় মনেমনে : মামনির রুমের দরজা বন্ধ এর মানে কি? লালঝুটি কাকাতুয়া এসেছে নাকি না!
নীড় ভাবনাচিন্তা করছিলো তখন রুমের দরজা খুলে গেলো । যেখান থেকে মেরিন লাফিয়ে বের হলো। মেরিন শাড়িও পরলো নীলিমার কাছে আবার নীলিমাকে অস্বাভাবিকও লাগছেনা।
নীড় : এটা স্বপ্ন নাকি সত্যি!

.

রাতে…
নীড়-মেরিন গত ১ঘন্টা ধরে যুদ্ধ করছে। কারো সাহস আছে মাঝখানে যাওয়ার? সেদিন কবির-নিহালের যে অবস্থা হয়েছিলো তারপর থেকে আর কে যায়।
হিয়া মনেমনে : অনেক হয়েছে আর না। এখন এই মেরিনকে তো ১টা উচিত শিক্ষাতো দিবোই। কিন্তু কিভাবে?
তখন রাতের খাবারের ডাক পরলো।
হিয়া মনেমনে : আইডিয়া খাবার। ঝাল খেতে পারেনা ওই মেরিন। ওর খাবারে ঝালমরিচ গুরো দিবো। আর ড্রিংকসের মধ্যে কাঁচা মরিচের জুস মিক্সড ।
হিয়া নিজের প্ল্যান মতোই কাজ করেছে । কিন্তু মেরিনের খাবার আর ড্রিংকসের ট্রেটা গেলো নীড়ের হাতে।
হিয়া : এবার বুঝবে মজা মেরিন…
☆ : ম্যাডাম…
হিয়া : এই তোমাকে বলেছিনা আজকে আর কোনো কথা বলবেনা। ধরা পরে গেলে কি হবে?
☆ : ম্যাডাম সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে।
হিয়া : কি?
☆ : যেই খাবারটা আপনি ওই ম্যাডামকে দিতে বলেছিলেন সেটা ওই স্যারের কাছে।
হিয়া : কি? এতোটুকু কাজ ঠিকমতো করতে পারোনা? মাথামোটা।
☆: আমি তো ঠিক কাজই করছিলাম । কিন্তু ওই স্যারটা কেরে নিয়ে গেলো। এখন কি হবে?
হিয়া : শাট আপ এন্ড গো। নীড় এতো ঝাল কি করে খাবে? না করবো! নানা । না করলে সন্দেহ করবে । কি করি?
তিন্নি : হিয়া ভাবি আসো । বসো।
হিয়া গিয়ে বসলো। সবাই খাওয়া শুরু করলো । আর একবার মুখে দিতেই…
নীড় : আ…📢
নীড়ের এমন হঠাৎ চিৎকারে সবাই অবাক হয়ে গেলো । হিয়া পারলে এক দৌড়ে পালিয়ে যায়।
পলক : কি হলো তোর?
নীড় : ঝাল ঝাল…
মেরিন : ওয় স্টুপিড ড্রিংকসটা খাওনা।
নীড় সেটা ঢকঢক করে অর্ধেকটা খেলো।
মেরিন : কি হলো?
নীড় মেরিনের গলা চেপে ধরতে গিয়েও থেমে গেলো এরপর ঝালের চোটে লাফাতে লাফাতে পানি পানি বলতে বলতে বলতে চলে গেলো। এই টেবিলের কোনো খাবারের ওপর ওর বিশ্বাস নেই।
হিয়া : ওএমজি নীড় দেখি একটুও ঝাল খেতে পারেনা এই মেরিনের মতো।
মেরিন নিজের ডেজার্টটা নিয়ে দেখলো যে ওটা ঠিকই আছে। এরপর ওটা নিয়ে ছুটলো নীড়ের দিকে।
মেরিন : ক্ষীরবাদুর ক্ষীরবাদুর… দারাও দারাও।
নীড় দারালো। পুরো লাল হয়ে গিয়েছে নীড়।
মেরিন : নাও ডেজার্টটা খেয়ে নাও।
নীড় একবার ডেজার্টটের দিকে তাকিয়ে মেরিনের দিকে তাকালো।
মেরিন : নাও।
নীড় মেরিনের হাত টান দিয়ে দেয়ালে ঠেকিয়ে ওর ঠোঁটজোরা দখল করে নিলো । ডেজার্টটা পরে গেলো। মেরিন ঝালের মাত্রাটা অনুভব করলো। ওর খুব রাগ উঠলো নীড়ের ওপর। নীড় ছারতেই মেরিন ঠাস করে নীড়কে একটা থাপ্পর মারলো।
মেরিন : অসভ্য কোথাকার।
এই প্রথম মেরিনের মধ্যে নিজের জন্য রাগ দেখতে পারছে।
মেরিন : তোমার লজ্জা করেনা এমন সব করতে? পুরুষজাতটাই এমন।
নীড় মেরিনের গাল চেপে ধরলো ।
নীড় : আমার খাবারে ড্রিংকসে ঝাল দেবার সময় মনে ছিলোনা?
মেরিন নীড়কে ধাক্কা দিয়ে সরালো।
মেরিন : আমি ঝাল দিতে যাইনি।
নীড় : একদম মিথ্যা কথা বলবেনা। আই নো ইউ।
মেরিন : এন্ড আই হ়েইট ইউ।
নীড় : এন্ড আই হেইট ইউ টু।
বলেই দুজন নিজ নিজ রুমে চলে গেলো। পরদিন সন্ধ্যাকটা হলো, এরপর মেহেদি – হলুদ হলো কেউ কারো সাথে কথা বললনা। নীড় কথা বলতে গেলেও মেরিন বললনা । নীলিমার সাথে মেরিন রোজ এক-দেড় ঘন্টা সময় কাটিয়েছে আর নীলিমাকে এটা অনুভব করিয়েছে যে ওর জন্য নীড়-মেরিনের ডিভোর্স হয়নি । নীলিমা আগের থেকে যথেষ্ট ভালো।

.

একদিন গ্যাপ দিয়ে আজকে বিয়ে। মেরিনের থেকে থেকে কেবল ওদের সেই অদ্ভুত বিয়ের কথাই বলছে। বিয়ে তিনভাবে হলেও ডিভোর্স তো এক ভাবেই হয়েছে ।
মেরিন : এসব নিয়ে আর না ভেবে মামনির কাছে যা মেরিন। এসব ভেবে আর লাভ নেই।
মেরিন আনমনে যেতে যেতে নীলিমার সাথে ধাক্কা লাগলো ।আসল দুজনের মাথা ঠোকা লাগলো ।
নীলিমা : আল্লাহ তুমি কি গো?
মেরিন : লালঝুটি কাকাতুয়া। এই দেখো আমার দুই ঝুটি।
নীলিমা : ধ্যাত। এই একমিনিট তুমি নিজেকে কি বললে?
মেরিন : লালঝুটি কাকাতুয়া।
নীলিমা : তুমি নিজেকে আমার ছেলের দেয়া নামে ডাকলে কেনো?
মেরিন : কেনো তাতে কি হয়েছে শুনি?
নীলিমা : না তো আমার ছেলেকে ভালোবাসো আর নাতো কোনোদিনো স্বামী হিসেবে মেনেছো । তাহলে এমনটা কেনো করলে?
মেরিন : তোমার মেমোরি দেখছি একদমই শেষ। কি বলেছিলাম মনে নেই? আমাদের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ছিলোনা। কিন্তু ক্ষীরবাদুর আর লালঝুটি কাকাতুয়ার সম্পর্ক । ওই শয়তান ক্ষীরবাদুরের সাথে কি সারাজীবন থাকা যায় নাকি? দেখবে হিয়াও পালাবে। হাহা। ওকে কি ভালোবাসা যায় নাকি?নাকি ওর সাথে থাকা যায়?
নীলিমা : তাহলে কেনো আমার কথায় ডিভোর্সটা দিয়েছিলে?
মেরিন : তোমার কথায় ডিভোর্স দিতে যাবো কেনো? আমাদের ডিভোর্সতো হওয়ারই ছিলো।
নীলিমা : সেটা আগের কথা । আসল কথা তো এটা যে ৬মাস সময় পেয়েছিলে সেই ৬মাসে আমার ছেলেকে তুমি ভালোবেসে ফেলেছিলে। আদালতে না করে দিতে যে তুমি ডিভোর্স চাওনা। কিন্তু সেদিন আমার বলা কথাগুলোর জন্য তুমি বলেছিলে তুমি ডিভোর্স চাও।
মেরিন হাহা করে হেসে উঠলো।
নীলিমা : মিথ্যা হাসি হেসে সত্যি গোপন করা যায়না। আমার দিকে তোমার সেই চাহনী আমাকে সব বলে দিয়েছিলো।
মেরিন আরেক দফা হাসলো।
মেরিন : জানিনা তুমি কেনো আর কোন ভিত্তিতে এই কথা বলছো? বাট লেট মি ক্লিয়ার। তোমার ধারনা সম্পূর্ন ভুল। আমি কখনো তোমার ছেলেকে ভালোবাসিনি। শুরু থেকে আমি আলাদা হতে চেয়েছিলাম।
নীলিমা : শুরুতে চেয়েছিলে কিন্তু শেষে না।
মেরিন : ভুল ভাবছো তুমি।
নীলিমা : ঠিক ভাবছি আমি । তাহলে বলো আজও কেনো তুমি অবিবাহিত?
মেরিন : কারন সেদিন তুমি রুমে যাকে আমার সাথে দেখেছিলে সে এখন অন্যকারো হয়ে গিয়েছে। তাকে খুব ভালোবেসেছি। খুব। কিন্তু সে আমার হয়েও হলোনা। আর এখন তো কোনোদিন হবেও না আমার। আজও তাকে ভালোবাসি । তাই অন্যকারো কথা ভাবতেই পারিনি।
এতোক্ষন মেরিনের মিথ্যা যেমন নীলিমা ধরেছিলো এখন তেমন করে সত্যিটাও ধরে ফেলল। নীলিমা ধপ করে বসে পরলো।
নীলিমা মনেমনে : ওর চোখের পানি বলে দিচ্ছে যে ও সত্যিই সেই ছেলেটাকে ভালোবাসে। তাহলে কি আমি ভুল ছিলাম? ভুল অপরাধবোধ নিয়ে এতোবছর ঘুরে বেরাচ্ছি তবে! কিছুই বুঝতে পারছিনা…

.

কয়েকঘন্টা পর…
নীলিমা মেরিনের কথার হিসাব নিকাশ করতে করতে হাটছে। আবারো ধাক্কা লাগলো সেই মেরিনের সাথে।
নীলিমা : কি পেয়েছো তুমি আমাকে বলবে? ২বার ধাক্কা দিয়ে ফেললে আমাকে।
মেরিন : আমি একবার ফেলেছে আর তুমি একবার ফেললে। ইটস ইউর ফল্ট নাও।
নীলিমা দেখলো মেরিনের চোখে কালো চশমা।
নীলিমা : সূর্য মামা ডুবুডুবু। তুমি কালা কালা চশমা পরে আছো কেনো শুনি?
মেরিন : মামনি আমার চেহারা সাদা সাদা কিনা তাই আমি কালা কালা চশমা পরেছি। যেনো নজর না লাগে।
নীলিমা ফিক করে হেসে দিলো।
মেরিন মনেমনে : এতোদিন ধরে হাসানোর চেষ্টা করছি হাসছেনা। অথচ এখন কিছু করলামই না তবুও হেসে দিলো! কি জানি আল্লাহ তুমি কখন কার মুড কেমন করো তা কেবল তুমিই জানো।
নীলিমা হাসতে হাসতে চলে গেলো। মেরিনও গেলো কনিকার কাছে।
মেরিন : আম্মু… আম্মু।
কনিকা : হামম। একি তুমি চশমা পরে আছো কেনো?
মেরিন চশমা খুলল।
কনিকা : একি তোমার আইলানারের এই হাল কেনো?
মেরিন : আইলাইনার দিচ্ছিলাম তখন কোথায় থেকে ১টা তেলাপোকা উড়ে এলো আর…
কনিকা : থাক আর বলতে হবেনা। বুঝেছি। এই নাও ।
মেরিন : থ্যাংক ইউ আম্মু।
কনিকা : দারাও।
মেরিন : কি হলো?
কনিকা মেরিনকে কাজলের টিপ দিয়ে দিলো।
মেরিন : আম্মু আজকে নিহারিকাকে ফেলে কেউ আমাকে দেখবেনা।
কনিকা : আমার পুতুল মেয়েটাতো দেখার মতোই পুতুল।
বলেই মেয়ের কপালে চুমু দিলো।
কনিকা : ১টা কথা জিজ্ঞেস করবো?
মেরিন : করো।
কনিকা : এখানে আসার পর থেকে রোজই তুমি নীড়ের সাথে তুমুল ঝগড়া করে চলছিলে। সেই আগের মতো করে। হঠাৎ কর্ ৩দিন ধরে ভিন্ন কিছু লক্ষ্য করছি। কি হয়েছে?
মেরিন : ও তারমানে তুমি চাও আমি আর ক্ষীরবাদুর ঝগড়া করি?
কনিকা : আমি চাই ওর ছায়াও তোমার জীবনে না পরুক। কিন্তু ওরজন্যই আসল তুমিকে খুজে পেয়েছিলাম। আর এখন এমন একটা কিছু লক্ষ্য করছি তোমাদের মাঝে যেটা কখনো দেখিনি তোমাদের মাঝে।
মেরিন : কি এমন দেখলে শুনি?
কনিকা : অভিমান…
মেরিন কনিকার দিকে তাকালো।
মেরিন : পাগল হলে!
কনিকা : না। ইটস দ্যা ফ্যাক্ট ।
মেরিন : নাথিং লাইক দ্যাট মামনি ।অবুঝের মতো কথা আমার ভালো লাগেনা। অভিমান তারসাথে করে যাকে আমরা ভালোবাসি।
কনিকা : আর তুমি নীড়কে ভালোবাসো।
মেরিন : নট অ্যাট অল।
বলেই মেরিন চলে গেলো।
কনিকা : কি হচ্ছে কি না হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছিনা। ভালো তো মেরিন বাসে। কিন্তু ওকে ভালোবাসার তো কোনো কারন নেই। আর এখন ভালোবাসার কোনো মানে নেই।ভালোয় ভালোয় আজকে বিয়েটা শেষ হোক। তারাতারি চট্টগ্রাম ফিরলে রক্ষা পাই।

.

ফোনে কথা বলতে বলতে নীড়ের মনেই নেই যে ও পাহাড়ের কিনারায় চলে এসেছে। পরে যেতে নিলে রবিন টান দিয়ে আনলো।
নীড় : রবিন স্যার!
রবিন চুপচাপ চলে যেতে নিলো।
নীড় : রবিন স্যার রবিন স্যার থ্যাংক ইউ।
রবিন কোনো কথা না বলে হেটেই যাচ্ছে।
নীড় : স্যার আমি জানতাম আপনি আমাকে আজও স্নেহ করেন।
রবিন দারিয়ে গেলো।
রবিন : না । তুমি একদিন আমার হেল্প করেছিলে। এবং তারথেকেও বড়কথা আমার বাবাই জীবন বাঁচিয়েছিলে। দ্যাটস হুয়াই তোমাকে বাঁচালাম।
নীড় : কিন্তু আমি তো লালঝুটি কাকাতুয়ার জীবনও নষ্ট করেছিলাম। সো লজিক অনুযায়ী হিসাব সমান সমান। তাই আপনি যে আমাকে বাঁচালেন সেটার কারন হলো এই যে আপনি আজও আমাকে স্নেহ করেন।
রবিন : শাট আপ।
নীড় : ওকে।
রবিন চলে গেলো।
হিয়া সেজেগুজে টিপটপ হয়ে নীড়কে খুজছে। এমন সাজ সেজেছে যেনো ওরই বিয়ে। তখন কিছুতে হোচটে খেয়ে পরে যেতে নিলো। কেউ এসে ওকে ধরে ফেলল। হিয়া যখন চোখ খুলল দেখলো এটা নীর।
হিয়া : তুমি!
নীর : হাই বিউটিফুল।
হিয়া : ছারো আমাকে।
নীর : ছারবো? পরে যাবে যে…

.

(১০টা বাজে আরো ১টা পার্ট দিবো।)
চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here