#তোমার_হতে_চাই ২
part : 4
writer : Mohona
.
হিয়া : সরি নীড়।
নীড় : ইটস ওকে। তোমার রুমে যাও। চলো।
হিয়া : হামম।
নীড় : শোনো বিকালে রেডি হয়ে থেকো। ফিরে আমরা বের হবো।
হিয়া : সানডেতেও হসপিটাল?
নীড় : আমি তো এখানে ১টা রিসার্চের জন্য এসেছি। সো সানডে মানডে ম্যাটার করেনা।
হিয়া : তুমি তোমার কাজকে খুব ভালোবাসো। তাইনা?
নীড় : ইয়াহ।
নীড় হিয়াকে ওর রুম পর্যন্ত পৌছে দিয়ে বেরিয়ে গেলো। পৌছালো মেরিনের ফ্ল্যাটে। জানেনা কেনো এসেছে। দরজার বাহিরে দারিয়ে ভাবছে যে নক করবে কি করবেনা। তখন দেখলো তালা ঝুলছে।
নীড় : বাসায় নেই কাকাতুয়া। ভালোই হয়েছে যে ও নেই। দেখা হয়ে গেলে কি বলতাম যে কেনো এসেছি? আমি নিজেই তো জানিনা যে কেনো এসেছি!
নীড় বেরিয়ে গেলো। আর মেরিন ঢুকলো।
মেরিন : আজকে তো ক্ষীরবাদুর সামনে পরলো না। আচ্ছা ক্ষীরবাদুর কোথায় উঠেছে? হোটেলে? দেখি তো খবর নিয়ে পাই কিনা?
মেরিন খোজ নিলো।
মেরিন : হোটেলে উঠেছে। আচ্ছা ওই শাকচুন্নিও কি ওই হোটেলেই উঠেছে! হ্যা তা তো উঠবেই। শাকচুন্নী কি ক্ষীরবাদুরর রুমেই থাকবে! না না কি সব ভাবছি আমি ? ক্ষীরবাদুর অমন না। কিন্তু যেমন করে নিয়ে গেলো শাকচুন্নীকে কে জানে কি কাহিনি। কাকাতুয়া স্টপ থিংকিং স্টপ থিংকিং। আমি ক্ষীর বাদুরকে নিয়ে ভাববো না ভাববো না ভাববো না। আমি আমাকে নিয়ে ভাববোনা । আমি আমার জীবন আমিই আমার জীবন। আমি যে আমার কতো যে আপন তা কেউ জানেনা। কিন্তু আমি জানি। ক্ষুধা লেগেছে। কিছু অর্ডার করি।
তখন ডোরবেল বাজলো। মেরিন খুলে দেখে হানি দারিয়ে আছে।
হানি : লাঞ্চ ফর ইউ।
মেরিন : থ্যাংক ইউ।
বলেই মেরিন খাবার নিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলো।
হানি : আজব মেয়ে তো । আমিই খাবার নিয়ে এলাম আর আ…
মেরিন দরজা খুলে দিলো।
মেরিন : আই ওয়াজ কিডিং ।
বলেই ছোট হাসি দিলো। আসলে তো ও খেয়ালই নেই যে কি ঘটেছে।
হানি : তোমার মতো রাগী-সিরিয়াস মেয়েও মজা করতে পারে বলে আমার মনে ছিলোনা।
মেরিন মনেমনে : ওহ নো আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম যে আমি এখন সিরিয়াস পার্সোন।
মেরিন : মাঝেমধ্যে একটু ভিন্ন পথ ধরতেই হয়। কাম ইনসাইড প্লিজ।
হানি ভেতরে ঢুকলো। দুজন একসাথে খাবার খেয়ে নিলো।
হানি : জানো আজকে আমার মনটা ভীষন খারাপ।
মেরিন : কেনো?
হানি : আজকে আমার ব্রেকআপ হয়েছে।
মেরিন : ভালো হয়েছে।
হানি : কিছু বললে!
মেরিন : বললাম কতো নাম্বার ব্রেকআপ ছিলো এটা?
হানি : ৫৩।
মেরিন : মাশাল্লাহ। হাফ সেঞ্চুরির ওপর দিয়ে। শাইন করবে ভবিষ্যতে।
হানি : থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ। মেরিন…
মেরিন : হামম!
হানি : তোমার সম্পর্কে জরাতে ইচ্ছা করেনা । তাইনা?
মেরিন : হামম। নো টাইম ফর লাভ।
হানি : আহারে আমার পোড়াকপাল। এনিওয়ে কালকে কিন্ত মিটিং আছে। তুমি আংকেলের প্রেজেন্টেশন রিপ্রেজেন্ট করবে। মনেআছে?
মেরিন : আমি কিছু ভুলিনা।
.
পরদিন…
মিটিং শেষে।
মেরিন মনেমনে : বাবার জন্য কি বিজনেস মিটিং এ ফেসে গিয়েছিলাম। মিটিংএ মানুষ যায়? ঘুম এসে পরেছিলো আমার।
আপন মনে বকবক করতে করতে মেরিন নিচে নামলো। তখন দেখলো অনেকই সুন্দর ১টা গাড়ি এসে থামলো। আর সেটা থেকে কে নামলো? হিয়া।
মেরিন : শাকচুন্নীর গাড়ি এটা?নো ওয়ান্ডার এটা ক্ষীরবাদুর কিনে দিয়েছে। হুহ।
মেরিন চুপচাপ গাড়ির কাছে গেলো। এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখলো কেউ আছে নাকি? এরপর এরপর মাথার ক্লিপ আর লাল লিপস্টিক হাতে নিয়ে গাড়ির রফাদফা করে দিলো ।
মেরিন : নাও ইটস পারফেক্ট।
বলতে বলতে মেরিন পেছনে গেলো। কারো বুকের সাথে ধাক্কা খেলো। ঘুরে দেখে নীড়। ঢোক গিলল।
নীড় : এসবের মানে কি? পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া করার ইচ্ছা আজও যায়নি তাইনা?
মেরিন : আমি পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া করি? আমি?
নীড় : অফকোর্স। এটা তোমার জন্মগত স্বভাব।
মেরিন : নট অ্যাট অল। সেটা তোমার জন্মগত স্বভাব। তুমি পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া করো। তোমার গলা সবসময় চুলকায় ঝগড়া করার জন্য।
নীড় : তোমার থেকে একটু কম চুলকায়। কারন তুমি বিশ্ব ঝগড়ুটে মেয়ে।
মেরিন : আর তুমি মহাবিশ্ব ঝগড়ুটে ছেলে।
দুজন ফাটাফাটি লেগে গেলো। একটা পর্যায়ে হাতে থাকা লাল লিপস্টিকটা দিয়ে মেরিন নীড়ের সারা মুখে মার্ক করে দিলো।
নীড় : ইউ…
বলেই মেরিনের হাত থেকে লিপস্টিক নিয়ে ওরই মুখে নীড় মার্ক করে দিলো।
মেরিন : আমি তোমাকে দেখে নিবো।
নীড় : হুহ।
মেরিন চলে গেলো। হিয়া ছুটে এলো। ও কেবল মেরিনের পেছনদিক দেখলো।
হিয়া : কি অবস্থা তোমার মুখের? কে ছিলো মেয়েটা?
নীড় : ল… অ্যাসাইলামের রোগী।
হিয়া : কি? সত্যি?
নীড় : হামম।
হিয়া : তাহলে তো অ্যাসাইলানে ফোন করে জানানো উচিত।
নীড় : উইল ইউ প্লিজ শাট আপ। লেটস গো নাও।
হিয়ার ভীষন হাসি পাচ্ছে নীড়কে দেখে।
নীড় : হুয়াট সো ফানি?
হিয়া : সরি।
নীড় : গেট ইন দ্যা কার।
মনেমনে : লালঝুটি কাকাতুয়া ছারবোনা আমি তোমাকে। দেখে নেবো তোমাকে।
হিয়া মনেমনে : কি কিউট লাগছে আমার কিউটিপাইটাকে। এমনিতে তো রেগে লাল হয়ে থাকে। আজকে লাল লিপস্টিকে লাল হয়ে আছে।
.
মেরিন : ওহ শীট কি করে এলাম আমি? আল্লাহ তোমার কি ইচ্ছা আছে! একে আমাদের ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে । দ্বিতীয়ত মামনি কোনোদিনো আমাকে আর মেনে নিবেনা? কেনো আজকে ঝগড়া করতে গেলাম ক্ষীরবাদুরের সাথে? মনেই ছিলোনা যে আমরা আর আগের সেই ক্ষীরবাদুর আর লালঝুটি কাকাতুয়া নেই। আমাদের মধ্যে অনেক কিছু ঘটে গিয়েছে। যেটা পাল্টানোর না। কেনো ও সামনে এলে সব গুলিয়ে যায়? কেনো নিজেকে সামলাতে পারিনা? কোনো লজিক মাথায় ঢোকেনা। কেবল ভালোবাসার ম্যাজিক চলে। উফফ । যখন ভালোবাসায় অন্ধ হবার সময় ছিলো তখন ঝগড়া করে সব শেষ করে দিয়েছি। আর এখন যখন সব শেষ তখন ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে যাচ্ছি।
মেরিন নীড়ের শার্টটা বের করলো।
মেরিন : আমাদের সম্পর্কটা শুরু থেকেই অদ্ভুত। তা না হলে অমন করে কারো বিয়ে হয়? কেউ কি ডিভোর্সের আগের রাতে প্রথমবার একে অপরের কাছে আসে? এই ফ্ল্যাটটা ছেরে দিয়ে নতুন ১টা রেন্ট নিতে হবে। দেখি ভালো ১টা ফ্ল্যাট পাই কিনা? দ্রুত ফ্ল্যাট খুজি। ক্ষীরবাদুর আর আমার ঠিকানা পাবেনা। বাট ও তো ল’স্কুল চিনে নিয়েছে। অন্য ১টাতে কমপ্লিট করবো তাহলে! কিন্তু এটাই তো বেস্ট।
তখন মেরিনের ফোনটা বেজে উঠলো। অচেনা নাম্বার।
মেরিন : হ্যালো…
নীড় : হ্যালো বলতে শিখে গিয়েছো।
মেরিন : তুমি!
নীড় : কেনো কে হলে খুশি হতে ?
মেরিন : সেটা জেনে তোমার কি? তুমি আমার নাম্বার কোথায় পেলে?
নীড় : সেটা জেনে তোমার কি?
মেরিন : কেনো কল করেছো ?
নীড় : একটু নিচে আসো তো।
মেরিন : কেনো?
নীড় : আসোনা প্লিজ।
মেরিন : তুমি কি নিচে?
নীড় : হামম।
মেরিন : কেনো?
নীড় : এলে বলবো।
মেরিন : আসছি ।
নীড় : হামম।
মেরিন নিচে গেলো। কিন্তু কোথায় নীড়কে পেলোনা। ও কলব্যাক করলো।
মেরিন : কোথায় তুমি?
নীড় : হাহাহা । আসিনি।
মেরিন : ইউ…
বলেই মেরিন পেছনে ঘুরলো তখন ১টা কবুতর ওর দিকে উড়ে এলো। মেরিন তো ভয়ে মারলো চিৎকার।
মেরিন : আ…📢
তখন নীড় হাসতে হাসতে আড়াল থেকে বেরিয়ে এলো।
নীড় : হাহাহা। আজও সেই ভীতুর ডিমটাই আছো। হাহাহা।
মেরিন : ক্ষীরবাদুরের বাচ্চা।
নীড়ের হাসি থেমে গেলো । ৫টা বছর পর এই ডাকটা। থমকে গেলো নীড়। স্থির চোখে তাকিয়ে রইলো মেরিনের দিকে। মেরিন তো ওর কাছে এসে ওকে বকতে লাগলো। মেরিন কি বলছে ও কিছুই শুনতে পাচ্ছেনা। এরই মধ্যে কবুতর আবার উড়ে এলো মেরিনের মাথার দিকে। মেরিন ভয় পেয়ে নীড়কে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন : আ… ক্ষীরবাদুর বাঁচাও।
নীড় মেরিনকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো। চোখ থেকে কয়েকফোটা পানি গরিয়ে পরলো নীড়ের। মেরিন যখন বুঝতে পারলো যে ও কি করেছে তখন সরে আসতে আর ইচ্ছা করলোনা। চোখে পানি এসে ভীর করলো। চাইলেও সেই পানি থামাতে পারলোনা মেরিন। কবুতরটা দুজনের মাথার ওপর দিয়ে উড়ছে। বেশ কিছুক্ষন দুজন একই ভাবে রইলো। হয়তো আরো কিছক্ষন থাকতো যদিনা নীড়ের ফোনটা বেজে উঠতো। দুজন নিজনিজ চোখের পানি মুছে নিলো । সরে দারালো দুজনের থেকে। নীড় আর এক মুহূর্তও দেরি না করে হনহন করে চলে গেলো । নীড় যেতেই হাটু গেরে মেরিন বসে মেরিন কাঁদতে লাগলো। ওদিকে নীড়ও গাড়ির কাছে গিয়ে হাটু গেরে বসে কাঁদতে লাগলো।
নীড় : কেনো ভালোবাসা কাঁদায় লালঝুটি কাকাতুয়া? কেনো কেনো কেনো… যতোদিন তোমাকে ভালোবাসিনি ততোদিন দিব্যি ছিলাম। কতোগুলো বছর আমরা একসাথে কাটিয়েছি কিন্তু কোনো সমস্যা হয়নি। কোনো কষ্ট হয়নি । কারন তোমাকে ভালোবাসিনি। বিয়ে বিষয়টা সব ঘেটে দিয়েছে। বিয়েটা তোমাকে ভালোবাসিয়েছে। আমার দুঃখহীন হাসিখুশিতে ভরা জীবনে দুঃখ এনে দিয়েছে। না পারছি বাঁচতে আর না পারছি মরতে… এমনই হতভাগা আমি যে নিজের সুখ বিসর্জন দিয়ে দুঃখ কিনেছি। এমনই অপদার্থ যে নিজের স্ত্রীকে… নিজের ভালোবাসাকে ভালোবাসি বলতে পারিনি । ছিঃ … ধিক্কার আমার ওপরে। কেনো বেঁচে আছি আমি কেনো…
নীড়ের ফোনটা আবার বেজে উঠলো। দেখলো হিয়া। নীড় মোবাইলটা ছুরে মারলো।
.
দেখতে দেখতে ১৫টা দিন কেটে গেলো। হিয়া সেই কবে চলে গিয়েছে । এই ১৫দিনে নীড়-মেরিনের দেখা হয়নি । গত ৫বছরে হয়তো ওদের মন এতো ভারী হয়নি। যতোটা সেদিনের ঘটনায় হয়েছে।
ডক্টর জনসন : ডক্টর নীড় আর ইউ অলরাইট?
নীড় : ইয়াহ স্যার।
ডক্টর জনসন : নো। ইউ আর নট ওকে। ১টা অ্যাডভাইস দিতে চাই। দেখুন রিসার্চে আপনি এতোটাই ডুবে গিয়েছেন যে অসুস্থ হয়ে পরেছেন । আপনার চোখমুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে আপনি বিগত কয়েক রাত ধরে আপনি ঘুম আসেননি। কাজে ডুবে আছেন। সো আপনি কয়কটা দিনের জন্য ঘুরে আসুন। সাগর-পাহাড়। যেখানে ইচ্ছা। হাওয়াবদলের প্রয়োজন আছে। মন ভালো থাকলে কাজের আউটপুট বারে। আশা করি আপনি বুঝতে পারছেন।
নীড় : ইয়াহ থ্যাংকস।
নীড় বেরিয়ে গেলো। পথের মধ্যে আবার সেই মেরিনের সাথেই দেখা হলো।
মেরিন মনেমনে : স্বাভাবিক রাখ নিজেকে। একদম স্বাভাবিক।
নীড় মনেমনে : রিয়্যাক্ট করিসনা । একদম না। এখন মনে হচ্ছে ডক্টর জনসন ঠিকই বলেছেন। একটু ঘুরে আসলে ভালোই হয়। নিজের কথা না ভেবে মানুষের কথা ভাবাই ডক্টরের কাজ । ফ্রেশ মাইন্ডের জন্য আমার ফ্রেশ এয়ারের প্রয়োজন। ক্যাম্পিং যাবো। আগের এর চোখের সামনে থেকে যাই।
দুজন দুদিকে চলে গেলো।
.
মেরিন : কি নিয়ে কথা হচ্ছে?
হানি : সেটা জেনে তোমার লাভ নেই পাপা কি পারি?
মেরিন : ব্রাউনী আপু কি হয়েছে?
ব্রাউনী : ওরা বন্ধুরা মিলে হিল স্টেশন যাচ্ছে। একটা গ্রুপের সাথে।
মেরিন : ওহ । তো এটা আমাকে বলা যাবেনা কেনো হানি?
হানি : ওই যে বললাম তুমি পাপা কি পারি? ছুইমুই। টাচ করলেই গলে যাবে টাইপ ।উইমা।
মেরিন-ব্রাউনী : শাট আপ।
ব্রাউনী : যাবে তুমি মেরিন?
হানি :হাহাহা । কাকে জিজ্ঞেস করছো আপু। হাহাহা।
মেরিন : হামম যাবো আপু।
হানির হাসি থেমে গেলো।
হানি : আর ইউ সিরিয়াস?
মেরিন : হামম মিলিয়ন পার্সেন্ট।
হানি : খুকি ক্যাম্পিং করা তোমার কাজনা। তোমার গিয়ে লাভ নেই।
মেরিন : আমি যাবো। কোথায় যাচ্ছো তোমরা?
হানি : লন্ডন থেকে অনেক দূরে।
মেরিন : পৃথিবীর বাহিরে তো আর না ।। আমি যাবো। বলো।
হানি : Herefordshire hill station .
মেরিন : ওকে ডান আমি যাবো।
হানি : মেরিন ট্রাই টু আন্ডারস্ট্যান্ড।
মেরিন : তোমার টাকায় যাবোনা হানি বাবাজী। আমি যাবো দ্যাটস ইট।
হানি মনেমনে : আরে এই আজরাইল গেলে আমি আমার হটি গার্লফ্রেন্ডের সাথে রোম্যান্স করবো কি করে?
মেরিন হানির কানের সামনে গিয়ে ফিসফিস করে
বলল : নো ওয়ারি মাই ফ্রেন্ড ।আমি চোখ-নাক-কান বন্ধ রাখবো।
হানি : তুমি কি করে জানলে যে আমি কি ভাবছি?
মেরিন : তোমার সামনে ক্রিমিনাল ল’য়ার লালঝ… মেরিন বন্যা খান দারিয়ে আছে। যে নিজের ৪বছরের ক্যারিয়ের ১টা কেসও হারেনি। বুঝেছো?
হানি : হামম।
মেরিন মনেমনে : এই গুমোট অবস্থা থেকে বের হতে একটু ঘুরে আসা বেশ দরকার।
.
৭দিনপর…
নীড় ওর গ্রুপের সাথে ক্যাম্পিংসাইটে পৌছালো।
নীড় : ওয়াও। ইটস বিউটিফুল। ফ্রিডম… লাভ ইউ ডিয়ার লাইফ…
খুশিতে বেসামাল হয়ে পরে যেতে নীড় পাহাড় থেকে। তখন ১টা হাত এসে নীড়ের হাত ধরলো। শুনতে পেলো ‘বেশি হাত-পা নেরোনা দুজনই পরবো।’ নীড় ঘাড় কাত করে দেখে সেই ওর লালঝুটি কাকাতুয়া। মেরিনের জন্য নীড় বেঁচে গেলো।
নীড় : থ্যাংকস।
মেরিন : হামম।
নীড় : তুমি এখানে?
মেরিন : মশা মারতে এসেছি।
মনেমনে : ছাগল এখানে মানুষ কেনো আসে সেটা লাগে জানেনা।
মেরিন চলে গেলো। নীড় চোখ ছোটছোট করে আকাশের দিকে তাকালো।
নীড় : আল্লাহ আর ইউ কিডিং! যার থেকে দূরে থাকার জন্য আরও দূরে এলাম । এখানেও সেই লালঝুটি কাকাতুয়া! এটা কোনো কথা? এই এক মিনিট লালঝুটি কাকাতুয়া এখানে কি করছে? একে তো ও শীতকাতুরে তারওপরে ভীতু মার্কা পোকামাকড় দেখলে প্যা প্যা করে। কোন দুঃখে এখানে এসেছে? আমাকে ফলো করতে করতে আসেনি তো? না ও তো আমার থেকে দূরেদূরে ভাগছে । আর দেখেতো মনে হচ্ছে ও আগেই এসেছে। ধ্যাত তেরিকি।
.
হানি : কি বলছো কি?
মেরিন : হামম।
হানি : এখন কি করে যাবে? ক্যাম্পিং শেষ হওয়ার আগে তো গাড়ি আসবেনা ।
মেরিন : কেনো এখান থেকে গাড়ি যায়না?
হানি : বিকাল হয়ে এসেছে । এখন যাবেওনা। কালকে পর্যন্ত তো থাকতেই হবে। বাই দ্যা ওয়ে একদিন থেকে দুদিনের দিনই সব সাহস শেষ?
মেরিন : শাট আপ।
বলেই মেরিন চলে গেলো।
হানি : এই মেয়ের আসলে ঠিক কোথায় সমস্যা সেটা আল্লাহ ছারা কেউ জানেনা।
সুইটি : ওহ হানি হানি…কি হয়েছে?
হানি : মাই বেবি… উম্মাহ উম্মাহ।
সুইট : মেরিন কি বলছিলো?
হানি : সে এখন যেতে চায়। রাগীপাজি রামগরুরের ছানা নাম্বার ওয়ান। কিন্তু সে সাংঘাতিক লেভেলের ভীতু। ব্লাডি সফ্টি। এর জন্য তোমার সাথে রোম্যান্সও করতে পারছিনা মন ভরে। ড্যাডকে টুস করে বলে দিবে।
সুইটি : ওহ মাই বেবি। ইটস গেটিং কোল্ড ডিয়ার। ক্যান উই শেয়ার সেইম টেন্ট ।
হানি : ইই… লাভ ইউ বেবি ।
সুইটি : লাভ ইউ টু ডার্লিং
হানি সুইটিকে কোলে তুলে ঘুরতে লাগলো। নীড় দেখলো।
নীড় : এটাতো সেই হানি চিনি ব্রাউনী কোম্পানী। এদের সাথে এসেছে কাকাতুয়া? যাই হোক লালঝুটি কাকাতুয়ার টেন্ট থেকে দূরে আমার টেন্ট বসাতে হবে । বাট লালঝুটি কাকাতুয়ার টেন্ট কোনটা? এই না না ওর থেকে দূরে টেন্ট বসানো যাবেনা। কতো কতো ছেলে আছে এখানে । দেশী-বিদেশী… আর যে তার ঘুম। কেউ টেন্টে ঢুকে গেলে রাতেরবেলা? না রিস্ক নেয়া যাবেনা। ওর টেন্টের পাশেই আমার টেন্ট বসাতে হবে। নিজের খেয়াল তো রাখেইনা কোনোদিন আর না তো আশেপাশে কি হচ্ছে সেটার খেয়াল রাখে। পারে কেবল আমার সাথে ঝগড়া করতে। ইডিয়ট। আই জাস্ট হে… লাভ হার ।
.
রাত…
বিকাল থেকে মেরিন আর টেন্ট থেকে বের হয়নি । বের হওয়ার সাহসই পায়নি। সব অদ্ভুত কিছু ওর সাথেই কেনো ঘটে।
হানি : মেরিন মেরিন।
মেরিন : বলো।
হানি : খাবেনা রাতে? এসো।
মেরিন : আমার ক্ষুধা লাগেনি । খেতে ইচ্ছা করছেনা । তোমরা খেয়ে নাও।
হানি : ভয়ের কিছু নেই রে বাবা । দেখো আরো ১টা গ্রুপ এসেছে। কতো মানুষের সমাগম।
মেরিন বেরিয়ে এলো।
মেরিন : তোমাকে বলেছি যে আমি ভয় পেয়েছি? যেতে ইচ্ছা করছে তাই বলেছি ।
হানি : ওকে ওকে । সরি সরি। আমি কালকে ম্যানেজ করে দিবো।
মেরিন : লাগবেনা ম্যানেজ করতে। থাকবো আমি।
.
চলবে…