বিয়ের আসরে তিশার বিয়ে ভেঙ্গে গেছে একটা অচেনা লোকের জন্য যাকে কি না তিশা এক দিন কত গুলো গুন্ডার সামনে নিজের স্বামী বলেছিল নিজেকে বাঁচানোর জন্য। কিন্তু তিশা ভাবতে পারি নি এই একটা কথার জন্য ওর জীবনটা এভাবে তছনছ হয়ে যাবে। তিশার পরিবারের মানসম্মান সব শেষ হয়ে গেলে শুধু মাত্র এই লোকটার জন্য। তিশা কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না কি করে ও সবাইকে সবটা বুঝাবে।
তিশা আবিরের সামনে দাঁড়িয়ে উঁচু গলায় বলে, “আপনি এসব কি বলছেন? আপনি আমার স্বামী হলেন কবে থেকে? আর আপনি এসে নিজেকে আমার স্বামী বলে পরিচয় দিবেন আর আমি সেটা বিশ্বাস করে নিবো ভাবলেন কি করে? আর যেখানে আপনার সাথে আমার বিয়েই হয় নি সেখানে আমি আপনাকে স্বামী মানলেও বা কি আর না মানলেও কি?
“ও তার মানে তুমি আমাকে নিজের স্বামী হিসেবে মানছো না তাই তো।”
“মানছি না মানে কি? আমি তো আপনাকে চিনিও না আর আপনার সাথে আমার কবে বিয়ে হয়েছে?”
তিশার বাবা ইকবাল আহমেদ এবার বলে উঠেন, “কি হচ্ছে এসব? আপনি কে আর কি আজে বাজে কথা বলে যাচ্ছেন কখন থেকে? আমার মেয়ের বিয়ে আজকে আর আজকে আপনি কোথা থেকে এসে বলছেন ও আপনার স্ত্রী?
আবির ঠান্ডা গলায় বলে, “হে ও আমার স্ত্রী।”
“কি প্রমাণ আছে যে ও আপনার স্ত্রী? আমার মেয়ে এমন কোনো কাজ করবে না যাতে করে ওর বাবার সম্মান নষ্ট হয়ে যায়।
“ও তাই নাকি ঠিক আছে তাহলে আমাদের বিয়ের কাবিন দেখাই আপনাকে।”
তিশা অবাক হয়ে বলে, “বিয়ের কাবিন।”
“হে বিয়ের কাবিন।”
তিশা যেন সাত আসমান থেকে পড়লো। সামনের দাঁড়িয়ে থাকা লোকটা এতটা জোর দিয়ে কথা বলছে কি করে? কিন্তু তার জানা মতে তো এমন কোনো কাজ করে নি।
আবির একজনকে ইশারা করতে লোকটা পেপার গুলো এনে আবিরের হাতে দেয়।
“এই যে দেখেন আমার আর তিশার বিয়ের কাবিন।”
ইকবাল আহমেদ পেপার গুলো চেক করে দেখে সত্যি সত্যি আবির আর তিশার বিয়ের কাবিন। ইকবাল আহমেদ ধপ করে চেয়ারে বসে পড়ে আর পেপার গুলো হাত থেকে মাটিতে পড়ে যায়। স্বামীকে এভাবে বসে পড়তে দেখে রেহেনা বেগম বলেন।
“কি হয়েছে? তুমি এভাবে বসে পড়লে কেন?”
ইকবাল ইসলাম নিচু স্বরে বলেন, “আমার মান ইজ্জত সব নষ্ট করে দিলো তোমার এই মেয়েটা। ও কি করে এসব করতে পারলো এক বারও কি আমাদের কথা চিন্তা করলো না। একবারও কি আমাদের চেহারাগুলা ওর চোখের সামনে ভাসলো না এই কাজটা করার সময়।”
তিশা পেপার গুলো মাটি থেকে তুলে দেখে কনের জায়গাতে সত্যি সত্যি ওর সাইন। তিশা অস্থির গলায় বলে।
“এটা কি করে সম্ভব? বাবা বিশ্বাস করো আমি বিয়ে করে নি এই লোকটাকে….”
তিশা আর কিছু বলতে পারল না তার আগেই ইকবাল আহমেদ বসা থেকে উঠে বলেন, “চুপ কর তুই চুপ কর। তপর মুখে আর আমি একটা কথাও শুনতে চাই না।”
তিশা কান্নাভেজা গলায় বলে, “বাবা বিশ্বাস করো আমি এমন কিছু করি নি।”
ইকবাল আহমেদ তিশাকে চড় মারতে যাবেন সাথে সাথে আবির তিশার বাবার হাতটা ধরে বলে, “সরি শশুর আব্বা। ও তো আমার স্ত্রী তাই আমার তো কিছু দায়িত্ব আছে ওকে রক্ষা করার তাই ওর গায়ে আপনি হাত তুলতে পারেন না।”
তিশা রেগে আবিরকে উদ্দেশ্য করে বলে, “আপনার সাহস কি করে হলো আমার বাবার গায়ে হাত দেয়ার? আর আমাকে আমার বাবা মারবে নাকি কাটাবে সেটা আপনি আটকানোর কে?”
আবির তিশার দিকে তাকিয়ে বলে, “আমি তোমার স্বামী তাই আমার এই অধিকারটা আছে তোমাকে সব বিপদ থেকে বাঁচানোর।”
তিশা এবার চিৎকার করে বলে, “স্বামী স্বামী,, কিসের স্বামী আমি আপনাকে আমার স্বামী হিসেবে মানি না।”
“তুমি মানো আর না মানো কিন্তু আইনের খাতায় তুমি আমার স্ত্রী।”
“নাহ আমি আপনার স্ত্রী না। বাবা বিশ্বাস করো আমাকে এই লোকটা… ”
ইকবাল আহমেদ মেয়েকে হাত দিয়ে থামিয়ে বলে, “বিশ্বাস করবো আমি তোকে যে মেয়ে আমাকে না জানিয়ে সব কিছু করতে পারে তাকে আমি বিশ্বাস করবো। তুই বেরিয়ে যা আমার বাড়ি থেকে তোকে আমি আর সহ্য করতে পারছি না তিশা। তুই আমার সামনে আর কোনো দিন আসবি না। তোকে আমার মেয়ে ভাবতে ঘৃণা হচ্ছে।”
ইকবাল আহমেদ এটা বলে এখান থেকে চলে যান। ইকবাল আহমেদের পিছন পিছন রেহেনা বেগমও যান। নিসা ধীর পায়ে বোনের কাছে এসে বলে।
“আপু এটা তুমি কি করলে? এক বারও কি আমাদের কথা ভাবলে না তুমি।”
তিশা নিসার হাত দুটো ধরে বলে, “বিশ্বাস কর নিসা আমি সত্যি এসব কিছু করি নি।”
“পেপারগুলো কি তাহলে ভুল, সাইনটা কি অন্য কারোর এটা তো তোমার সাইন।”
“এই লোকটা মিথ্যা কথা বলছে নিসা তুই আমাকে বিশ্বাস কর বোন।”
নিসা আর কিছু না বলে এখান থেকে চলে যায়। তিশার সাথে যার বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো তিশার কাছে এসে বলে।
“কাজটা একদম ঠিক করলে না তিশা এর শোধ আমি তুলবো তোমার কাছ থেকে না হলে আমার নাম রবিন শিকদার নয়। ভালো থেকো বাই।”
রবিন আবিরের পাশ কেটে যাওয়ার সময় আবিরের দিকে রাগী চোখে তাকায়। আবির কম কিসে আবিরও রবিনের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকায়।
তিশা মাটিতে বসে বলতে থাকে, “এমন কিছু করি নি আমি! কেন তোমরা আমাকে বিশ্বাস করছো না কেন?এই লোকটা সব কিছু মিথ্যা কথা বলছে।”
আবির দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে তিশার কাছে গিয়ে হাটু ভেঙ্গে বসে বলে, “তিশা চলো।”
“কোথাও যাবো না আমি কোথাও না।”
আবির এবার রাগী গলায় বলে, “কেন যাবে না আমার সাথে? তুমি কি ভেবেছো আমি আমার বউকে এখানে ফেলে রেখে চলে যাবো তা তো হবে না যদি না যেতে চাও তুমি তাহলে আমি তোমাকে জোর করে নিয়ে যাবো।”
#মিশে_আছি_তোমাতে ❤
#Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_1
এই গল্পটা 2021 সালের। ভাবলাম এডিট করে কিছুটা পরির্বতন করি। কাহিণী চেইন্জ হবে না। জাস্ট গল্পের লেখার স্টাইলটা চেইন্জ হবে। যারা পড়ছেন তো পড়ছেন আর যারা পড়েন নি তারা পড়তে পারেন যদি ইচ্ছে হয়।
অপেক্ষা করুন আগামী পর্বের জন্য, আর পেজে লাইক ফলো দিয়ে কমেন্ট করে রাখেন বাকি পর্ব পোস্ট করেই কমেন্ট বক্সে দিয়ে দেবো লিংক।