তোকেই_ভালোবাসি #লেখনীতে_আমেনা_আক্তার_আখি #পর্বঃ১০

0
345

#তোকেই_ভালোবাসি
#লেখনীতে_আমেনা_আক্তার_আখি
#পর্বঃ১০

মিথিলা ইয়াশের রুমের দিকে তাকিয়ে কিয়ৎক্ষণ ভাবল রুমে ঢুকবে কি ঢুকবে না!কিন্তু এর থেকেও ভাবার বিষয় ইয়াশ বাড়িতে কখন আসল?ওতো ড্রইংরুমে বসে ছিল ইয়াশের জন্য কই দেখল না তো!মিথিলা এবার রুমের দরজা ভিড়িয়ে রুমে ঢুকে পড়ে।ইয়াশ বিছানার উপর বসে ফোন স্ক্রল করছিল।মিথিলাকে ঢুকতে দেখে ইয়াশ বিছানা থেকে উঠে দাড়ায়।ইয়াশ কে দাড়াতে দেখে মিথিলা মাঝপথে থেমে যায়।ইয়াশ মিথিলার দিকে কয়েক কদম এগিয়ে আসে।মিথিলার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে,,

“ছেলেটার সাথে এতো কি কথা বলছিলি?”

মিথিলা কিছুক্ষণ ভাবল ইয়াশ কার কথা বলছে,বুঝতে পেরে বলে,, “আপুর দেওর উনি!”

“তোর আপুর দেওর না ভাসুর সেটা আমি শুনতে চাইনি!কি কথা বলছিলি দুজন মিলে?”

মিথিলা ভ্রু উঁচিয়ে বলে,,”সেটা তুমি জেনে কি করবে?”

“তোকে বলতে বলেছি বলবি?”

“তাহলে আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দাও!”

“প্রশ্ন তোকে আগে আমি করেছি? ”

“তো!”

ইয়াশ এবার রেগে গিয়ে বলে,, “তোকে আগে আমি প্রশ্ন করেছি মানে তুই আগে উত্তর দিবি।এবার যদি না বলিস তুই ছেলেটার সাথে কি কথা বলছিলি তাহলে আমি ওই ‘তো’এর মানে বোঝাবো?!”

ইয়াশের রেগে যাওয়া দেখে মিথিলা ঠোট টিপে হাসে।ফাজলামো করে বলে,,

“প্রেমালাপ করছিলাম!”

ইয়াশ কপাল কুঁচকে বলে,, “কি করছিলি?”

“বললাম তো প্রেমের আলাপ করছিলাম!”

ইয়াশ মিথিলার দিকে কয়েক কদম আগায় ফের প্রশ্ন করে,,

“সত্যি বল কি করছিলি?”

মিথিলা ইয়াশকে আগাতে দেখে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায় না।সে ঠায় দাড়িয়ে রয়।ফের বলে,,

“আরে বললাম তো প্রেমালাপ করছিলাম।বিশ্বাস করছ না কেন?আজিব!”

ইয়াশ এবার কথাটা শুনে রেগে যায়।মিথিলার কাছে এসে হাত ধরে উল্টো ঘুরিয়ে বুকের সাথে ঠেস দিয়ে দাড় করায়।রাগী কন্ঠে বলে ওঠে,,

“ফাজলামো কম করে করবি? আর কোনোদিন যদি এসব শুনেছি তো আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না!”

মিথিলা প্রতিবাদ জানায়,, “কেন করব না, যাকে ভালোবাসি সে তো ভালোবাসেনা তাইতো অন্যের সাথে প্রেমালাপ করতে গিয়েছিলাম!”

ইয়াশ মিথিলার হাতটা জোরে চেপে ধরে।কানের কাছে মুখ নিয়ে নিচুস্বরে বলে,,

“সে ভালো না বাসলেও তুই তো বাসিস!তো অন্যের সাথে প্রেমালাপ কিসের।যা প্রেমালাপ আছে যাকে ভালোবাসিস তার সাথে করবি।”

কথাটা বলে ইয়াশ মিথিলাকে ছেড়ে দেয়।মিথিলা কিছুক্ষণ সেখানে স্থির হয়ে দাড়িয়ে থাকে।ইয়াশের দিকে ঘুরে বলে,,

“তুমি কি আমাকে ভালোবাসো ইয়াশ ভাইয়া!”

ইয়াশ মিথিলার মুখের দিকে একবার তাকিয়ে জোরে ধমক দেয়।মিথিলা ধমক খেয়ে সুরসুর করে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।কয়েকটা ভেংচিও কাটে ইয়াশকে।

——————————————————-

“তো ভাই পরের মাসে না হয় মেয়েকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে যাই?”

মিনহাজ হক মৃদু হেসে বলেন,, “মেয়েতো এখন আপনারই ভাই। আপনার যেমন ইচ্ছে!”

রাতুল খান মিনহাজ হকের কথায় হাসেন।দুজন আলাপ-আলোচনায় মত্ত হতে দুরে দাড়িয়ে থাকা ইফা আর মিথিলা মিলুকে দুপাশ থেকে খোঁচা দেয়।ইফা বলে ওঠে,,

“মিথু কালকে থেকে শপিং শুরু করি বল?”

“আরে কালকে থেকে কেনো আজকে থেকে শুরু করা উচিত।তাইনা করে মিহু?”

“থাপ্পড় চিনিস বেয়াদব।”

“ইফু দেখছিস এই মিহু আমাদের সাথে কেমন করছে?থাকব না বিয়েতে।ও করুক একা একা বিয়ে? ”

ইফা মিথিলার কথায় এক ভ্রু উঁচিয়ে বলে,, “তুমি থাক আর না থাক তাতে আমার কি?আমি থাকব!”

মিহু এ পর্যায়ে হেসে দেয়।মিথিলা রেগে গিয়ে বলে,,

“এই বান্দর মাইয়া!তোর সাথে আমার কোন জন্মের শত্রুতা রে। সবসময় আমার বিপরীতে থাকিস কেন?”

“তোমার সাথে তো আমার শত্রুতা,আমি যেদিন হয়েছি মানে যে মুহুর্তে হয়েছি সে মুহুর্ত থেকে।”

“কালসাপ!”

মিথিলা বিরবির করেই বলে।মিহুর কান অব্দি শব্দটা পৌছালেও ইফার কানে পৌঁছায় না।তাই সে চুপ থাকে।

“আমি রুমে যাচ্ছি থাক তোরা!”

মিহু কথাটা বলে নিজের রুমের দিকে অগ্রসর হয়।মিথিলা সামনে তাকাতে রাফসান ইশারা করে ওর কাছে যেতে বলে।মিহু গুটিগুটি পায়ে রাফসানের কাছে যায়।কান পেতে ফিসফিস করে বলে,,

“কি?”

রাফসান এদিক ওদিক তাকিয়ে ফিসফিস করে বলে,, “মিহু কোথায়?”

মিথিলা ভ্রু নাচিয়ে বলে,, “কেনো?”

“আসলে বলছি,,,”

রাফসান কে মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে মিথিলা বলে ওঠে,, “দেখুন ভাইয়া আমি আপুর সাথে আপনাকে এখন দেখা করিয়ে দিতে পারি।তবে আমার লাভ!”

“কত লাগবে?”

“আপাতত দু’হাজার হলে চলবে।মারব তো বিয়েতে?”

“আচ্ছা দিয়ে দিবো।”

মিথিলা এবার সোজা হয়ে দাড়িয়ে যায়।রাফসানের সামনে দাড়িয়ে জোরে বলে,,

“ভাইয়া শোনেন, আপনি তো আপুর সাথে দেখা করতে চাচ্ছেন চলুন আপনাকে নিয়ে যাই।”

সবাই মিথিলার কথা শুনে মিথিলার দিকে একবার তাকায়।
একবার রাফসানের দিকে তাকায়।রাফসান বোকার মতো মিথিলার দিকে তাকিয়ে আছে।ইফাও মিথিলার দিকে তাকাতে মিথিলা ওকে কিছু বলতে ইশারা করে।এবার ইফাও মিথিলার সাথে সুর ধরে বলে,,

“হ্যাঁ ভাইয়া চলুন না। সেই কখন থেকে দেখা করতে চাচ্ছেন হাসুন আসুন।”

রাতুল খান খুকখুক করে কাশতে মিথিলা রাফসানের হাত ধরে উঠিয়ে নিয়ে আসে ওখান থেকে।মিথিলা আর ইফা রাফসানকে নিয়ে সোজা ছাদে চলে যায়।ছাদে গিয়ে মিথিলা রাফসানের সামনে হাত পাতে,,

“আগে টাকা দিন।তারপর দেখা!”

“ধুরর,!কিসের টাকা?আমার মানসম্মান তো ডুবালে।”

“আরে দুলাভাই মান সম্মান কই ডুবালাম।আপনার আপুর সাথে দেখা করতে ইচ্ছে করছিল আমি সেটা শুধু বলেছি।”

“তাই বলে সবার সামনে এভাবে বলবে?”

“আজকাল সত্যি কথা বললেও মানুষের এমন কথা শোনা লাগে।থাক দরকার নেই আপনার টাকা,আর দেখা করারও দরকার নেই আপনার,থাকেন।একদম বিয়ের দিন দেখা করবেন। বায়!”

কথাটা বলে ইফা আর মিথিলা পিছনে ঘুরে হাটা ধরে।রাফসান পিছন থেকে চিল্লিয়ে বলে,,

“আরে শালিকারা দাড়াও।”

মিথিলা ইফা পিছন ঘুরে বলে,, “না ভাইয়া,একদম বিয়ের দিন দেখা করিয়েন।”

রাফসান কথাটা শুনে মিথিলা আর ইফার সামনে এসে দাড়ায়।দুজনের হাতে হাজার টাকার নোট ধরিয়ে দিয়ে বলে,,

“যাও এবার।”

মিথিলা,ইফা দুজন হাইফাই দিয়ে হেসে বলে,, “এইনা হলো আমাদের বড়লোক্স দুলাভাই।”

চলবে,, ইন শা আল্লাহ 🍁

[অনেকে নাকি আগের পর্বটা কিছু বুঝেন নাই।তাদের বলছি দেখেন আমি ওই পার্টের প্রথমেই বলে দিয়েছিল কয়েকদিন কেটে যাওয়ার কথা।এটা দেখে তো বুঝা উচিত।আর, আর কিছু যদি না বুঝেন তাহলে সেটা বলবেন।বলে দিব]

#তোকেই_ভালোবাসি
সকল পর্বের লিংক
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=122116347122106938&id=61553208165829&mibextid=2JQ9oc

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here