_ল্যাম্পপোস্টের_ঘোলাটে_বাতি । #_পর্ব = ১৬

0
163

#_ল্যাম্পপোস্টের_ঘোলাটে_বাতি ।
#_পর্ব = ১৬

মিতুর মামা ড্রাইভারের পাশে বসেছেন আর সজীব এবং মিতু পিছনের সিটে । কেউ কোন কথা বলছে না , এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনার সম্মুখীন হতে হবে সেটা মিতু বুঝতে পারে নাই । তাহলে হয়তো বাসের ভিতর থেকে সজীব কে বের হতে বলতো না ।

মিতুর মামার কাছে মিতু জানলো যে , ” বিকেলে যখন মালামাল আনতে গিয়ে তারা বুঝতে পেরেছে জামাই আসছে তখনই নাকি মুরগী জবাই করা হয়েছে । আর বাড়ির আশেপাশের অনেক আত্মীয় স্বজনরা সন্ধ্যা বেলা ভিড় করে ছিল । অনেকে চলে গেছে আবার অনেকে একটু পর পর পান খাচ্ছে আর গল্প করছে । তারা মিতুর স্বামীকে৷ না দেখে বাড়ি যাবে না আজকে । ”

সজীব এর বাড়ি থেকে কল আসলো , সারাদিন কয়েকবার সজীব নিজেই কল দিয়ে তাদের জানিয়েছে যে তার ফিরতে দেরি হচ্ছে । কিন্তু এখন মা নিজে কল করেছে তাই রিসিভ করে আস্তে করে বললো , ” পরে কথা হবে ! ” গাড়ির ভিতর মিতুর মামা আছে তাই বেশি কিছু বললে সমস্যা হতে পারে বলে এমন সময় নিল ।

ইজিবাইক মিতুর বাড়ির সামনে দাঁড়াল তখন বাড়ি থেকে বেশ কয়েকজন বেড়িয়ে এলো । রাস্তার পাশেই মিতুদের বাড়ি তবে সজীব যতটা কল্পনা করেছে তারচেয়ে বেশি উন্নত । ইটের দেয়াল ঘেড়া তবে উপরে টিনের ছাউনি দেয়া হয়েছে ঠিক যেন সজীবদের বাড়ি । সজীবদের বাড়ি ঠিক এমনই তবে বাহিরে সিমেন্ট বালু দিয়ে প্লাস্টার করা হয়নি ।

সবাই এসে চারদিক থেকে মিতু আর সজীবকে দেখতে লাগলো । কেউ কেউ বললো , কত সুন্দর জামাই পাইছে আমাগো মিতু দেখলেই হিংসা লাগে আমার । আরেকজন পাশ থেকে বলে , ” আমাগো মিতু কি খারাপ নাকি ? যেমন আমাগো মিতু তেমন তার জামাই । ”

ঘরের সামনে বাঁধানো সিঁড়ির উপর সজীব বসে পরলো , এখন তার কি করা উচিৎ ? সবাই তাকে নিয়ে কি শুরু করেছে ? বাড়িতে প্রবেশ করে মিতুকে আর পাওয়া যাচ্ছে না । সে হারিয়ে গেছে তার সকল পরিচিত মানুষের সাথে কিন্তু সজীব তো শুধু মিতুকে চেনেন । সজীবকে সিঁড়ির বৈঠক থেকে ভিতরে নিয়ে গেল ছোট্ট একটা মেয়ে । সামনের ঘরে একটা খাটের ওপর বসতে দিয়ে বৈদ্যুতিক ফ্যান চালু করে দিল । চারদিকে সবাই নিজেরা নিজেরা আলোচনা করছে কিন্তু সবার কথা শুদ্ধ । সজীব ভেবেছিল মিতুর মামার মতো সবাই বরিশালের ভাষা ব্যবহার করে কিন্তু সজীব দেখলো সবাই মোটামুটি শুদ্ধ কথা বলতেছে ।

একটু পরে একটা বয়স্ক ব্যক্তি প্রবেশ করলো , আর সজীব এর পিছন থেকে কে যেন বললো , ইনি হচ্ছে তোমার শশুর তাকে সালাম দিও ।

— সজীব বললো , আসসালামু আলাইকুম কেমন আছেন আপনি ?

— ওয়া আলাইকুম আসসালাম আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি তোমরা সবাই ভালো তো ?

— জ্বি আলহামদুলিল্লাহ ।

— তোমাকে এখানে একা বসিয়ে রেখে মিতু কোই গেল ? পাগলী মেয়ে , এতদিন পরে আসছে তো তাই সবার সাথে কথা বলে । এদিকে জামাই বাবাজি যে এত কষ্ট করে পরিশ্রম করে এসে বসে আছে তাকে গোসল করতে দিতে হবে না ? তিনি ভিতরের দিকে মুখ বাড়িয়ে ডাক দিলেন , মিতু তুই কোই ? জামাই একা বসে আছে তাকে নিয়ে তাড়াতাড়ি গোসল করে আয় । দুদিন ধরে ভ্রমণ করতে করতে কি অবস্থা হয়ে গেছে তোদের ?

— মিতু ভিতর থেকে বেরিয়ে এসে সজীব কে হাত ধরে টেনে ভিতরে নিয়ে গেল । পিছনের একটা ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিল তারপর সজীব এর দিকে তাকিয়ে বললো , আপনার দুটো পায়ে পরি প্লিজ মাফ করবেন আমাকে ।

— তুমি সবাই কে সত্যি টা বলে দাও মিতু নাহলে কিন্তু একটার পর একটা ঝামেলা আরম্ভ হবে ।

— দেখুন কথাটা চারিদিকে ছড়িয়ে গেছে আপনি শুধু আজকের রাতটা আর কালকে সকালটা আমার জন্য কষ্ট করে অভিনয় করুন । আপনাকে থাকতে হবে না এখানে , আমি আপনাকে পাঠানোর ব্যবস্থা করে দেবো ।

— তবুও আমি কেন করবো এমন ? সবাই সত্যি টা জানলে ভালো হবে ।

— দেখুন আমি আবার চট্টগ্রাম চলে যাবো তখন বাড়িতে আর আসা হবে না । আর সেখানে গিয়ে বাড়িতে কল দিয়ে সবকিছু খুলে বলবো তাতেই হয়ে যাবে সমস্যা নেই ।

— তুমি যতটা সহজ সরল ভাবে বললে ব্যাপার টা মোটেই ততটা সহজ না । সবাই তখন অন্যকিছু ভাবা শুরু করবে সবাই ভাববে স্বামী তোমাকে রেখে চলে গেছে ইত্যাদি ইত্যাদি । তোমার নিজের উপর একটা কলঙ্কিত দাগ পরবে যেটা সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হবে বুঝতে পারছো ?

— আমি কিছু বুঝতে চাই না , ভিতরে মা অসুস্থ আপনি এখন আমার সাথে সেখানে গিয়ে মা’কে সালাম করবেন । তারপর আমি লুঙ্গি বের করে দেবো সেই লুঙ্গি পরে আমার সাথে গোসল করতে যাবেন ৷

— বিষয়টা খুব বাড়াবাড়ি ।

— দরকার হলে আপনার পা ধরি ?

— পাগল নাকি তুমি ?

— হ্যাঁ পরিস্থিতি পাগল করে দিয়েছে ।

— আচ্ছা ঠিক আছে তাই হবে ।

— মেলা মেলা ধন্যবাদ সাহেব ।

— ধন্যবাদ না দিয়ে ধন্যবাশঁ দেও ।

★★
★★

গতকাল রাতে বৃষ্টি যখন শুনলো সজীব মিতুর সাথে সব স্থানে যাচ্ছে তখন থেকে বৃষ্টির মনের মধ্যে ভয় লেগে গেছে । রাগে কষ্টে মোবাইল বন্ধ করে ফেলে রেখে ঘুমাতে গেছে কিন্তু সারারাত দুচোখের পাতা মেলাতে পারে নাই । অজানা কষ্ট এসে চারিদিক থেকে ঘিরে ধরেছে বৃষ্টির মন কিন্তু সে সেই কষ্টের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারে না । আজ অনেক দিন পর রাফসানের স্মৃতি গুলো চোখের সামনে এসে কষ্টটা আরো বাড়িয়ে দিল । আসলে যখন মন খারাপ লাগে তখন সকল মন খারাপের স্মৃতি চোখের সামনে এসে ধরা দেয় । কান্না করতে করতে আর ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে গেছে বৃষ্টি জানেনা ।

সকাল বেলা ঘুম থেকে আর উঠতে মন চায় না , কিন্তু গার্মেন্টসে চাকরি মন না চাইলেও বাধ্যতামূলক ভাবে মনকে চাওয়াবে । দুচোখ ভর্তি ঘুমের পাহাড় নিয়ে বৃষ্টি অফিসে গেল কিন্তু মনের কষ্ট ঠিকই মনে রয়ে গেল । রাগ করে মোবাইল বন্ধ করে বাসায় রেখে চলে গেছে তাই সারাদিনের মধ্যে সজীব কল দিয়ে পায়নি ।

সারাটাদিন বৃষ্টি খুব কষ্ট করে ডিউটি করেছে , মাঝে বকা খেয়েছে কয়েকবার । কাজের মধ্যেও মন খারাপ করে বারবার চোখে পানি এল কিন্তু কারো কাছে বলার কিছু নেই । মরিয়ম এসে জিজ্ঞেস করেছিল কিন্তু তাকেও কিছু বলেনি বৃষ্টি । ছুটির পরে বাসায় এসে বৃষ্টি প্রথমে প্রতিদিনের মতো রান্না শুরু করলো তারপর রান্না শেষ করে গোসল না করেই ঘুমিয়ে গেল । বৃষ্টি মা এক সপ্তাহ সকাল ছয়টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত ডিউটি আবার আরেক সপ্তাহ দুপুর দুইটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত । আজকে তিনি বাসায় এলেন রাত দশটার দিকে , এসে দেখে বৃষ্টি ঘুমিয়ে গেছে । ডাক দিয়ে জাগ্রত করে তিনি গোসল করতে চলে গেলেন ।

— বৃষ্টি ঘুম থেকে উঠে মোবাইল অন করলো প্রথমে ভাবলো কল দেবে কিন্তু একটু থেমে গিয়ে সে তার বাবাকে জিজ্ঞেস করলােঃ- বাবা সজীব সারাদিনের মধ্যে কি তোমাকে কল দিয়েছে একবারও ? আসলে আমি কাল রাতে রাগ করে মোবাইল বন্ধ করে রাখছি তো তাই আমার নাম্বারে না পেয়ে তোমার কাছে কল দিয়েছে কিনা ?

— বৃষ্টির বাবা মনে মনে ভাবলেন যে বৃষ্টির রাগ এখনো কমেনি তাই তিনি সামান্য মিথ্যা করে একটু বললেন , হ্যাঁ দুই বার দিয়েছিল বললো যে সে নাকি পৌঁছে গেছে ।

— ওহহ আচ্ছা ঠিক আছে ।

বৃষ্টি তার মোবাইল থেকে এবার কল দিল কিন্তু প্রথম বারে রিসিভ হলো না । দ্বিতীয় বার কল দিতেই প্রায় একদম কেটে যাবার আগ মুহূর্তে রিসিভ হলো কিন্তু রিসিভ করেছে একটা ছোট্ট মেয়ে ।

— বৃষ্টি বললো , হ্যালো কে বলছেন ?

— ছোট্ট মেয়েটা বললো , আমার নাম মিম ।

— তোমার এই মোবাইলের মালিক কোথায় ?

— ভাইয়া মোবাইল চার্জে দিয়ে মিতু আপুর সঙ্গে গোসল করতে গেছে ।

— এবার বৃষ্টির বুকের মধ্যে ধাক্কা দিয়ে উঠলো সে বললো , মিতু আপুর সঙ্গে মানে ? তুমি মিতুর কি হও ?

— আমি তার ছোট বোন ।

— তোমার আপু আর এই ভাইয়া কখন তোমাদের বাসায় গেছে ?

— এই আধা ঘণ্টার বেশি হয়ে গেছে কিন্তু আপনি কে ?

— আচ্ছা ঠিক আছে ভালো থেকো তুমি । এ কথা বলে বৃষ্টি কল কেটে দিয়ে ধড়াস করে বসে পরলো ।
সজীব ওই মেয়ের সাথে তাদের বাসায় চলে গেছে এমন কথা বৃষ্টির কানে আসবে সে কল্পনা করতে পারে নাই । মন খারাপ করে বাইরে গিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো কিছুক্ষণ ছাঁদের কিনারে গিয়ে আবার রেলিং ধরে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে ।

— হঠাৎ করে তার মা পিছন থেকে বললো , কিরে গোসল করবি না বৃষ্টি ? হঠাৎ করে ছাঁদে এলি কেন ?

— বৃষ্টি বললো , পরে করবো মা আপাতত আমাকে একটু একা থাকতে দাও ।

— কি হইছে তোর ?

— কিছু না প্লিজ একা থাকতে দাও মা ।

— বলবি তো !

— উহ বললাম তো যাও এখান থেকে ।

— আচ্ছা ঠিক আছে তাড়াতাড়ি আসিস ।

বৃষ্টি আবারও নিস্তব্ধ রাতের আধারে দাঁড়িয়ে আছে আপন করে । সে একা থাকতে চায় কিন্তু সত্যি সত্যি কি সে একা থাকতে চায় ? অনেক মানুষই চিৎকার করে তার প্রিয় মানুষ কে বলে উঠে প্লিজ আমাকে একা থাকতে দাও । আবার ভিতরে ভিতরে শব্দহীন বোবা কান্নায় বলে “Please come back” । শেষ মুহুর্তের সময়েও মানুষ চায় তাকে পিছন থেকে কেউ ডাকুক , কেউ আকুল ভাবে তাকেজড়িয়ে কান্না করুক । অনেকেই শেষ হয়ে যাওয়া স্মৃতির মস্তিষ্কে খোদাই করে রাখে । অনাকাঙ্ক্ষিত কোন শুরুর স্বপ্ন দেখে অথচ শেষের গল্পটির রচয়িতা কিন্তু নিজেরাই।

★★
★★

মিতুর সাথে সজীব টিউবওয়েল থেকে গোসল করতে গেল সাথে কেউ আসেনি । এতরাতে পাশের বাড়ির কেউ আর রইলো না সবাই পরদিন সকালে আসবে ।

— সজীব বললো , পানি চেপে বালতি পূর্ণ করে দাও তাড়াতাড়ি ।

— মিতু বললো , পারবো না নিজের টা নিজে করে নেন আপনি আমারে বলছেন কেন ?

— বারেহহ জামাই কে পানি চেপে দেবে না ?

— ওই মিয়া ফাজলামো করেন ? আপনি কি সত্যি সত্যি আমার স্বামী নাকি ? যাকে সত্যি সত্যি বিয়ে করে স্বামী বানাবো তাকে ঠিকই পানি চেপে গোসল করাবো ।

— তাহলে সবাই কে বলে দেবো ?

— এই না না তা করবেন না , আমি এখনই কল চেপে দিচ্ছি ।

— এইতো , মেয়ে মানুষ একটু বুদ্ধিতে খাটো তাই প্রথমে সহজে রাজি হতে চায় না ।

— জ্বি না সাহেব , আপনি হচ্ছেন ট্রেনিং প্রাপ্ত ঘাড়ত্যাড়া তাই আপনার সাথে পাকনামি করার ইচ্ছে নেই ।

— বাকি রেখেছ কিছু ?

— হুম অনেক !

— যেমন ?

— আরে মনু , মুই বরিশালের মাইয়া মোর লগে পাঙ্গা নিয়ে বাঁচা এত সোজা না । কিন্তু আপনে মোর মেহমান তাই কিছু কইতে আছি না নাহলে যে কি হরতাম ।

— ধুর এসব ভাষা বাদ দাও , আমার একটা প্রশ্ন আছে ।

— কি ?

— তোমার মামা বরিশালের ভাষা ব্যবহার করে কথা বলে কিন্তু বাড়ির সবাই মোটামুটি শুদ্ধ কথা বলে কারণ কি ?

— আমরা হচ্ছি খুলনা ঢাকার বর্ডার এলাকায় তাই আমাদের এদিকের সবাই মোটামুটি শুদ্ধ কথা বলে । আর মামা ছোটবেলা থেকে বরিশালের বাকেরগঞ্জ মানুষ হয়েছে তাই খাঁটি বরিশাল ।

— ওহহ আচ্ছা এতক্ষণে বুঝতে পারছি ।

★★
★★

দেশি মুরগীর মাংস ও মাংসের ঝোল খেয়ে সজীব এর চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে গেল । কারণ ঝাল অতিরিক্ত বেশি হয়ে গেছে কিন্তু সজীব যেহেতু নতুন জামাই তাই কিছু না বলে চুপচাপ খেয়ে নিল । খাবার সময় মিতুর বাবা দু একটা প্রশ্ন করছি , সজীব এর বাবা কি করে ? কয় ভাই বোন ? বোন কি করে ? ইত্যাদি ইত্যাদি বলতে ।

খাবার খেয়ে সজীব সামনের রুমে গিয়ে বরিশালের বাকেরগঞ্জের মামার সঙ্গে কথা বলছে । কিছুক্ষণ পরে মিতু এসে বললো , ” ঘুমাতে চলো দুদিন ধরে প্রচুর কষ্ট হয়েছে তাই তাড়াতাড়ি ঘুমাতে হবে । ”

— সজীব বললো , কোথায় ঘুমাবো ?

— ভিতেরের রুমে আমি বিছানা ঠিক করে এসেছি চলো আমার ঘুম পাচ্ছে খুব ।

— সজীব বললো , মামার সাথে কথা বলতে আর গল্প করতে ভালো লাগছে । তুমি বরং এক কাজ করো , আমার জন্য মামার কাছে বিছানা ঠিক করে দাও । সারারাত মামার কাছে থেকে গল্প করবো ।

— মিতু বললো , এমন সখ পিটিয়ে মিটিয়ে দেবো চলো তাড়াতাড়ি !

— মামা বললো , জামাই বাবাজি যাও যাও বউয়ের লগে যাই গল্প হরো মোর লগে আড্ডা দেওয়ার মেলা সময় পাবা ৷ আর মিতু তোমারে থুইয়া কি ঘুমাইতে পারবে কও ? পারবে না ।

— সজীব বললো , না মামা আপনার ভাগ্নী একটা দজ্জাল মহিলা তাই তার থেকে একটা রাত যদি আলাদা থাকতে পারি সেটাই অনেক ।

— মিতু বললো , এসব ন্যাকামি করার একদম সময় নেই সজীব তুমি তাড়াতাড়ি চলো ।

সজীব আর কথা না বাড়িয়ে মিতুর সাথে ভিতরে চলে গেল , রুমের মধ্যে গিয়ে মিতু দরজা বন্ধ করে দিল । সজীব দেখলো বিছানায় সুন্দর করে দুজনের জন্য বালিশ সাজানো হয়েছে ।

— সজীব বললো , বাহহ দুজনে এক বিছানায় শুয়ে ঘুমাবো নাকি ?

— আহাহাহা কত সুখ মনে মনে , আপনি খাটের ওপর আর আমি নিচে ঘুমাবো ।

— আমাকে নিচে দেও , নাহলে দুজনেই বিছানায় শুয়ে পরি চলো বিশ্বাস করো আমি কিছু করবো না ।

— কি ভাবে বিশ্বাস করবো ?

— গত রাতে সারারাত তো আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে ছিলে তখন কি কিছু করেছি ?

— সেখানে অনেক লোক ছিল ।

— আচ্ছা ঠিক আছে মজা করছিলাম , তুমি উপরে থাকো আমি নিচে যাই ।

— না সেটা হবে না , আপনি আমার বাড়ির মেহমান আর তাছাড়া আমার জন্য আপনার অনেক কষ্ট হয়েছে । আপনি অনেক ভালো মনের মানুষ না হলে হয়তো আমার এত খারাপ খারাপ কথা সহ্য করতে পারতেন না । বৃষ্টি নামের সেই আপুর জন্য আমি ভাবছি কারণ সে কেন আপনার ভালবাসা গ্রহণ করে না ? আচ্ছা আপনি করেন চট্টগ্রাম ? আর বাড়িতে যাচ্ছেন কেন ?

— আমি চট্টগ্রাম কিছু করিনা , সদ্য পড়াশোনা শেষ করার কথা ছিল কিন্তু খুন আর ধর্ষনের মামলার প্রধান আসামি হয়ে পড়াশোনা বাদ হয়ে গেছে । দুদিন আগে ছাড়া পেয়ে চট্টগ্রামে গিয়ে বৃষ্টির সাথে আবার দেখা হলো ।

— মানে কি ? আপনি খুন আর ধর্ষনের মামলার প্রধান আসামি ?

— হ্যাঁ , কেন ভয় লাগে নাকি ?

— আরে ধুর কি পাগলের মতো কথা বলেন আপনি এমন ফাজলামো করবেন না প্লিজ ।

— আমি সত্যি বলছি , সাত মাস জেল খাটার পরে আমি জামিনে মুক্তি পেলাম ।

— সত্যি সত্যি খুন করেছেন ?

— নাহহ আমি মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত ।

— আপনার মতো মানুষ কিভাবে জড়ালো সেটা বুঝতে পারছি ।

— কিভাবে ?

— আমার সাথে যেমন ইচ্ছে করে এতবড় ঝামেলার মধ্যে জড়ালেন ঠিক তেমন করে মনে হয় কারো কাছে গিয়ে ফেঁসে গেছেন ।

— তোমার আন্দাজ কিছুটা সত্য , আমি চাই এ বিষয় আমাদের মাঝে কোন কথা হবে না ।

— আচ্ছা ঠিক আছে , কিন্তু বৃষ্টি আপু কি আপনার মামলার জন্য আপনাকে অবহেলা করে ?

— নাহহ তার পারিবারিক সমস্যার জন্য সে আমাকে তার সাথে জড়াতে চায় না । আমার কেন যেন বারবার মনে হয় যে আমি তাকে কখনো পাবো না । বৃষ্টি বলেছে সে কখনো বিয়ে করবে না কিন্তু আমার ধারণা বৃষ্টি বিয়ে করবে ঠিকই কিন্তু আমি হয়তো সেই বিয়ের পাত্র হতে পারবো না । তবুও আমি তাকে ভালবাসি , প্রচুর ভালবাসি তাকে এক জনম পেরিয়ে যাবে তবুও তাকে ভোলা সম্ভব হবে না ।

— আপনি বাসের ভিতরে বসে বলেছিলেন বৃষ্টির সাথে প্রথম দেখার পরে নাকি ৫ বছর পরে দ্বিতীয় দেখা হয়েছে । কিন্তু এই বিষয় টা বুঝতে পারছি না একটু বুঝিয়ে বলবেন ?

এরপর সজীব বৃষ্টি সাথে পরিচয় এর সকল ঘটনা আস্তে আস্তে বর্ননা করলো । আর এখন বৃষ্টির বাবার আর পরিবারের জন্য বৃষ্টি তাকে অবহেলা করে সেটাও বলেছে । মিতু শুধু সজীব এর দিকে তাকিয়ে শুনেই যাচ্ছে কিছু বলছে না ।

— সবকিছু শুনে মিতু বললো , আমি ছোটবেলা থেকে একটু অন্যরকম ছিলাম । পড়াশোনায় আমি ছিলাম ক্লাসের প্রথম ছাত্রী কিন্তু তবুও এসএসসি পরীক্ষায় দুই বিষয় ফেল করেছি । সেই অপমান আর রাগ জিদের জন্য চট্টগ্রাম চলে গিয়ে চাকরি শুরু করেছি । গার্মেন্টসে আমি সবচেয়ে ভদ্র একটা মেয়ে কিন্তু যার সাথে খুব ভালো বন্ধুত্ব তাকে আমি সবসময় রাগাতে পছন্দ করি । বাসের ভিতরে আপনাকে প্রথম দেখেই ভালো লেগেছিল তাই তো সারাক্ষণ ইচ্ছে করে বিরক্ত করে রাগানোর চেষ্টা করছি । আসলে খুব প্রিয় মানুষ গুলোকে বিরক্ত কেন যেন খুব ভালো লাগে আমার ।

— একটানা এতদিন শহরে ছিলে কেন ? তোমার বাড়ির অবস্থা খারাপ না তাহলে তবুও কেন গার্মেন্টস নামক কষ্টের কাজ করছো ?

— সেটা আমি জানিনা তবে বাড়ি আসতে কেন যেন ভালো লাগে না তাই আসা হয়ে ওঠে না । কিন্তু এবার কেন যেন হঠাৎ করে মায়ের জন্য আসতে হলো কেন হলো জানতাম না । কিন্তু এখন বুঝতে পারছি ।

— কি ?

— আপনার মতো একটা আশ্চর্য মানুষের সাথে পরিচয় হবে তাই হয়তো বাড়ি আসলাম ।

— হাহাহা হাহাহা ঘুমাবে না ?

— হুম শুয়ে পরুন আপনি ।

— আগে তুমি ঘুমাও তারপর আমি ।

— খুব চালাক তাই না ? আমি ঘুমিয়ে পরবো আর অমনি খাটের মানুষ মেজেতে ট্রান্সফার হয়ে যাবে । তাই না ?

— আরে তা কেন হবে ?

— শুনুন আমার কাছে ছুরি আছে যদি রাতে উল্টো পাল্টা কিছু মতলব করেন তাহলে একদম ফুটো করে দেবো কিন্তু ।

— আচ্ছা ঠিক আছে কিছু করবো না কিন্তু গোসল করার সময় পিছনে একটা বড় বাগান দেখলাম । সেখানে রাতের আধারে সাদা কাপড় পরে কেউ মনে হয় ঘোরাঘুরি করে তোমরা কেউ দেখছো ?

— আপনি ইচ্ছে করে আমাকে ভয় দেখাচ্ছেন তার না ? যাতে করে আমি ভয়ে আপনার সাথে গিয়ে ঘুমাই ।

— আরে ধুর না ।

— চুপচাপ শুয়ে পরুন ।

★★
★★

সজীব বিছানায় শুয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে ঘুমিয়ে গেছে সেটা বোঝা যাচ্ছে । কিন্তু মিতুর চোখে ঘুম পাচ্ছে না তাই সে কিছুক্ষণ মেজেতে শুয়ে থেকে আবার উঠে বসলো । জানালা খুলে বাহিরে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ কিন্তু তবুও চোখে ঘুম আসার নাম নেই তাই আবার শুয়ে পরল ।

ফজরের আজানের কিছুক্ষণ পরেই সজীব এর ঘুম ভাঙ্গলো কারণ তাদের রুমের পাশেই মোরগ ডাকে এবং সে বিশাল বিশাল ডাক । সজীব চোখ বন্ধ করে বিরক্ত হচ্ছে কিন্তু তবুও মোরগ ডাকা বন্ধ হচ্ছে না । সজীব ভাবছে গতকাল রাতে এই মোরগটি খেতে পারলে ভালো হতো তাহলে খেয়েও মজা পাওয়া যেত আর সকালের ঘুমটাও নষ্ট হতো না ।

হঠাৎ করে পাশ ঘুরতেই দেখে মিতু খাটের ওপর তার সাথে শুয়ে আছে । প্রথমে ঘুমন্ত চোখ দুহাত দিয়ে ডলে আবার দেখতে পাচ্ছে ঠিকই মিতু সজীব এর পাশে ।

” ডাক দিয়ে আবার ধাক্কা দিল তারপর মিতু চোখ কচলাতে কচলাতে বললো , কি হইছে ? ”

” সজীব বললো , তুমি খাটের বিছানায় কিভাবে এলে বুঝতে পারছি না তো ? ”

” এই সামান্য কথা বলার জন্য আপনি আমার কাঁচা ঘুমটা নষ্ট করলেন ? ”

” কিন্তু অস্বাভাবিক ব্যাপার টা । ”

” আসলে আমি কখনো ফ্লোরে শক্ত বিছানায় কখনো ঘুমাইনি তাই কাল রাতে অনেকক্ষণ অবধি ঘুম আসছিল না । আর রাতে টিউবওয়েলের ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করে ঠান্ডা লেগে গেছে । পরে বাধ্য হয়ে আস্তে আস্তে আমি পাশে এসে শুয়ে পরেছি । ”

” শিয়ালের কাছে মুরগী পাহারা তাই না ? ”

” ধুর চুপ করেন তো আমি আরেকটু ঘুমাবো তাই বিরক্ত করবেন না ”

” আচ্ছা ঠিক আছে আমিও চেষ্টা করছি । ”

★★
★★

ঘুম থেকে দুজনেই উঠলো সকাল আটটার খানিকটা পরে ৷ বাহিরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে সজীব দ্রুত রুমের মধ্যে চলে এলো কারণ বাহিরে অনেক মানুষ । পরে মিতু এসে সজীব কে নাস্তা করতে নিয়ে গেল , নাস্তা করতে বয়সে মিতুর বাবা মামা সজীব আর মিতুর ছোট বোন ৷

” নাস্তা করার সময় হঠাৎ করে মিতু বললো , বাবা তোমাদের জামাই এখন তাদের বাড়িতে যাবে ৷ ”

” মিতুর বাবা বললো , সে কি রে ? আমি তো গরুর মাংস আর ছাগলের মাংসের কথা বলে রেখেছি । আজকে কিভাবে যাবে ? ”

” বাবা তোমাদের জামাই তো চট্টগ্রাম থেকে আসতেই চাইছিল না , কিন্তু আমার শশুর একটা জমি নিয়ে একটু ঝামেলার মধ্যে আছে তাই ও আমার সাথে এসেছে । এখন বাড়িতে গিয়ে ঝামেলা শেষ করে তারপর আজকেই চট্টগ্রাম চলে যাবে ৷ ”

” বলিস কি ? এত তাড়া নিয়ে কেউ আসে নাকি ? তাও আবার প্রথম শশুর বাড়ি আসা । ”

” তোমরা জোড়াজুড়ি করবা সেজন্যই কিন্তু তোমার জামাই আসতে চাইছিল না । এখন ঠিকই সেই সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে , দেখো বাবা ওর বাড়ি যাওয়া খুব দরকার । ”

” আচ্ছা ঠিক আছে রাগ করিস কেন ? তুই যাবার সময় যেন এসে নিয়ে যায় তাহলে তখন ভালো মন্দ সবকিছু খাওয়াবো । ”

” মিতু কিছু বলার আগেই সজীব বললো , আচ্ছা ঠিক আছে বাবা সপ্তাহ খানিক পরে আমি চট্টগ্রাম থেকে এসে ওকে নিয়ে যাবো । ”

কথাটা যে কতটুকু আহাম্মকের মতো হয়ে গেল সেটা বলার পরেই বুঝতে পারছে কিন্তু ততক্ষণে মিতু সজীব এর দিকে অগ্নি দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে আছে ।

” মিতু বললো , তোমার আর কষ্ট করে আসতে হবে না বাবা পিরোজপুর গিয়ে আমাকে চট্টগ্রামের গাড়িতে তুলে দেবে তুমি শুধু ওখান থেকে আমাকে নিয়ে যেও । নাহলে আজকে যাবে আবার সপ্তাহ খানিক পরে আসবে এত ভ্রমণ করে শরীর খারাপ করতে হবে না । ”

নাস্তার টেবিলের আলোচনা এই পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থেকে গেল কিন্তু বাড়ির অনেকেই মেনে নিতে পারে না । কিন্তু মিতু সবাই কে এমন করে বোজাচ্ছে আর রাগ দেখাচ্ছে মানে হয় যেন সত্যি সত্যি তার স্বামী আর স্বামীর জন্য কতততো দরদ ?
আহা ঢং দেখে যেন আমি লেখক আর বাঁচি না ।

|
|

সজীব তার ব্যাগ নিয়ে তৈরী হয়ে রুমের মধ্যে বসে আছে কিন্তু অনেকক্ষণ ধরে মিতুকে দেখা যাচ্ছে না ৷ তাই মোবাইল বের করে কিছুক্ষণ গুতাগুতি করলো কারণ কাল রাত থেকে মোবাইল ধরার বেশি সময় পায়নি । বৃষ্টির কথা মনে পরে কিন্তু মিতুর পাশে থেকে সে আর বৃষ্টির সাথে কথা বলতে চায় না । তাই মিতুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে পরে কথা বলবে বা বোঝানোর চেষ্টা করবে ।

” হঠাৎ করে মিতু রুমের মধ্যে এসে বললো , চলুন আমি রেডি আপনাকে আমি নাযিরপুর গিয়ে পিরোজপুরের বাসে উঠিয়ে দিয়ে আবার চলে আসবো । ”

” সজীব তাকিয়ে দেখে অবাক , কারণ মিতু এতক্ষণ ধরে শাড়ি পরে এসেছে । নীল শাড়ি পরে হাত ভর্তি লাল কাঁচের চুড়ি , হাতের আঙ্গুলে আংটি , কানে বড় বড় দুল । সজীব বললো , এত সাজগোছ কিসের জন্য জানতে পারি ? ”

” এমনি করলাম ইচ্ছে করছে তাই , আচ্ছা মাথার চুল খোলা রাখবো নাকি খোঁপা করবো ? ”

” তোমার ইচ্ছে । ”

” উঁহু আমি ঠিক করতে পারছি না তাই আপনার কাছে জানতে চাই । ”

” খোলা থাকুক । ”

” ঠিক আছে তাহলে আরেকটু আচড়িয়ে নেই ভালো করে । ”

|
|

বাড়ির সবার কাছে বিদায় নিয়ে সজীব বাড়ি থেকে বেরিয়ে পরলাে ।

মিতু সজীব আর মিতুর ছোট বোন ইজিবাইকে করে নাযিরপুর এলো । ইজিবাইক থেকে নেমে বাসের পাশে গিয়ে দাড়িয়ে আছে । মিতু তার ছোট বোনকে ৫০ টাকা দিয়ে বললো , ” দেখতো কোথাও ঝালমুড়ি আছে কিনা ? থাকলে ২০ টাকার ঝালমুড়ি নিয়ে আসবি । ”

” মিতুর বোনকে টাকা দিয়ে আড়ালে সরিয়ে দিয়ে মিতু বললো , ভালো থাকবেন সবসময় । ”

” সজীব বললো , তুমিও ভালো থেকো । ”

” একটা কথা বলবো রাখবেন ? ”

” চেষ্টা করবো বলো কি কথা ? ”

” বৃষ্টি আপুর সঙ্গে চট্টগ্রাম গিয়ে আমার একটু দেখা করিয়ে দিবেন ? তার সাথে দেখা করে কথা বলার খুব ইচ্ছে করে । ”

” কেন ? কি বলবে তাকে ? তোমাকে তো বলেছি যে সে আমাকে হয়তো কখনো ভালবেসে আপন করে নেবে না । তবুও কি বলবে ? ”

” আমি দেখা করতে চাই , তাকে বলবো সে যেন আপনাকে সারাজীবনের জন্য আপন করে নেয় । আপনার মতো মানুষের ভালবাসা যেন এমন করে অবহেলা না করে । আর…. ”

” আর ? ”

” কিছু না , যান বাসে উঠুন । ”

” আচ্ছা ঠিক আছে ভালো থেকো । ”

” সজীব বাসে ওঠার জন্য পিছনে ফিরে হাঁটা শুরু করলে মিতু বললো , আর কি শুনবেন না ? ”

” সজীব ফিরে তাকিয়ে বললো , তুমি তো বলতে চাইলে না । ”

” সাহস পাচ্ছি না । ”

” তাহলে সাহস যেদিন হবে সেদিন বলিও । ”

” নাহহ যদি সুযোগ না পাই ? ”

” তাহলে বলো । ”

” তাকে বলবো , আর সে যদি সত্যি সত্যি আপনাকে মেনে নিতে না পারে তাহলে আমি হাত পেতে বসে থাকবো । সে যদি সজীব নামের ছেলেটাকে ভালবাসতে না পারে তাহলে যেন এই মিতুকে সে সজীব কে ভিক্ষা দেয় । ”

সজীব মিতুর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে কিন্তু মিতু তাকাতে পারছে না তাই সে অদুরে একটা বড় বাদাম গাছের দিকে তাকিয়ে আছে ।

” সজীব বললো , আচ্ছা ঠিক আছে সত্যি সত্যি যদি তোমার সাথে চট্টগ্রামে আমার দেখা হয়ে যায় তাহলে বৃষ্টির সঙ্গে তোমার দেখা করিয়ে দেবো । ”

চলবে….

লেখাঃ-
মোঃ সাইফুল ইসলাম (সজীব)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here