‘ কথা দিলাম ‘ 🌸❤️
||পর্ব ~ ২৩||
@কোয়েল ব্যানার্জী আয়েশা
দেবাংশু: দেখো সিয়া, আমি তোমাকে ভালোবাসি। এখনও আমি তোমাকেই ভালোবাসি, তুমি ছাড়া আমার মনে না কখনও কেউ ছিলো না আছে আর না থাকবে।
সিয়ারা: তাই যদি হয়ে থাকে তাহলে একবারও আমাকে কেন জিজ্ঞেস করলে না যে আমি কেন এমনটা করেছি? একবারও কেন ভাবলে না আমিও কষ্ট পেয়েছি। বোনের হাতে তোমাকে তুলে দিতে আমার কতটা কষ্ট হয়েছে সেটার ধারণা নেই তোমার।
দেবাংশু: আমি ভেবেছিলাম তুমি হয়তো আমাকে কখনও ভালোবাসোনি। সবার মত তুমিও আমাকে ছেড়ে চলে গেছো। আমার ভুল হয়ে গেছে সিয়া। আই অ্যাম সরি! প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও? আমি আর তোমাকে হারাতে চাই না।
সিয়ারা: আমিও তোমাকে আর হারাতে চাই না আ..দেব।
সিয়ারা দেবাংশুকে জড়িয়ে ধরার জন্য হাত বাড়িয়ে এগিয়ে যেতেই কেউ পিছন থেকে চিৎকার করে বলে উঠলো,
কাট!!!!
সবাই একপ্রকার কেঁপে উঠলো চিৎকার শুনে। ডিরেক্টর বাবু উঠে দাঁড়িয়ে পিছনে তাকিয়ে দেখলেন আধভিক রায় চৌধুরী ঠিক প্রথম দিনের মতো এক হাত পকেটে গুঁজে, নিজের ব্লেজার বাম হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।
ডিরেক্টর: কি হয়েছে আধভিক? তুমি হঠাৎ এভাবে, কাট বললে কেন?
আধভিক: কি হচ্ছে এখানে এসব? (রেগে, চিৎকার করে)
আধভিক প্রশ্নটা সিয়ারার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে করলো। সিয়ারা বেচারি বেকুবের মত, ভয়ার্ত দৃষ্টিতে আধভিকের দিকে তাকিয়ে আছে। দেবাংশু একটু ধাক্কা দিতেই যখন ওর দিকে তাকালো তখন দেবাংশু চোখ টিপ দিলো। সিয়ারা বিষয়টা বুঝতে পেরে আধভিকের দিকে তাকাতেই সোহম বললো,
সোহম: শুটিং হচ্ছে স্যার, আর কি হবে?
সোহমের উত্তর শুনে আধভিক ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো। ঘটনাটা সত্যি ভেবে ফেলেছিলো এটা মনে করে নিজেকে দশটা গালি দিয়ে ফেললো। তবে কাওকে বুঝতে না দিয়ে স্বাভাবিক ভেবে বললো,
আধভিক: সেটা তো আমিও জানি শুটিং চলছে। শুটিং সেটে শুটিং চলবে না তো আর কি হবে? আমি বলতে চাইছি যে, এসব কি সিন? আমি এসব সিন আমার সিরিয়ালে রাখবো না।
ডিরেক্টর: কিন্তু আধভিক, এই সিনে তো অশ্লীল কিছু নেই। জড়িয়ে ধরা বিষয়টা তো স্বাভাবিক আর ডায়লগস ও সব সাধারণ। তাহলে থাকবে না কেন?
ডিরেক্টরের কথায় আধভিক বিপাকে পরে গেলো। সিয়ারার দিকে তৎক্ষণাৎ চোখ যেতেই দেখলো ও দেবাংশুর সাথে চোখের ইশারায় কথা বলছে আর হাসছে। আধভিকের দিকে তাকাতেই হাসি থামিয়ে দিলো সিয়ারা। এতে আরও বেশি তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো আধভিক।
আধভিক: নায়িকা পছন্দ না।
ডিরেক্টর: কি? (অবাক হয়ে)
আধভিক: হ্যাঁ। নায়িকা পছন্দ নয় আমার। তাই অন্য নায়িকা খুঁজুন। তারপরেই শুটিং হবে।
সোহম: এসব আপনি কি বলছেন স্যার? সুধাংশু স্যারের কথা অনুযায়ী উনিই আমাদের সিরিয়ালের নায়িকা হবে।
আধভিক: ত..তাহলে নায়ক? নায়ক চেঞ্জ করে দেওয়া হোক।
সোহম: নায়ক তো সুধাংশু স্যারের নিজের ছেলে।
আধভিক: তো আমি কি বলেছি নাকি পরের ছেলে? যাই হোক, নায়ক নায়িকা দুটোই চেঞ্জ করে দাও। নাহলে আমি প্রোডিউস করবো না এই বলে দিলাম।
রেগে আগুন হয়ে হনহন করে চলে গেলো আধভিক। গ্রীন রুমে গিয়ে নিজের ব্লেজারটা ছুঁড়ে ফেলে দিলো। কোমরে হাত দিয়ে পায়চারি করতে করতে বলতে লাগলো,
আধভিক: ইচ্ছা করে! ইচ্ছা করে এসব করছো তুমি সিয়ারা। সব, সব বুঝতে পারছি আমি। অন্য একটা ছেলের কাছাকাছি গিয়ে আমার মধ্যে দাবানল জ্বালাচ্ছ। বার করছি তোমার সব চালাকি আমি। আমার সামনে তুমি অন্য ছেলের সাথে হাসবে, জড়িয়ে ধরবে, মিষ্টি মিষ্টি কথা বলবে আর বসে বসে দেখবো? কখনও না! সোহম!!!!
চিৎকার করে সোহমকে ডাকতেই সোহম এসে উপস্থিত হতেই আধভিক ওর দিকে কটমট করে তাকালো। বেচারা সোহমের আধভিকের চাহুনি দেখে আত্মারাম খাঁচা হয়ে গেছে।
সোহম: হ.. হ্যাঁ স্যার ব..বলুন?
আধভিক: সিয়ুকে ডেকে পাঠাও, এক্ষুনি!!
সোহম: ক..কাকে স্যার? কাকে ডেকে পাঠাবো? (ইচ্ছা করে)
আধভিক: সি…সিয়ারা, সিয়ারাকে ডেকে পাঠাও। বলো আমি ডাকছি।
সোহম মুচকি হেসে বেরিয়ে গেলে আধভিক নিজে নিজের কপালে হাত মুঠো করে হালকা ঘুষি দেয়।
আধভিক: কন্ট্রোল ইউর ইমোশানস আধভিক! বেশিই করে ফেলছিস তুই। বুঝতে দেওয়া যাবে না কাওকে তুই কি চাইছিস অর ফীল করছিস। কিপ কাম ইউরসেলফ।
আধভিক নিজেকে একটু শান্ত করার চেষ্টা করে একটা চেয়ারে বসলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই দরজায় টোকা পরলে আধভিক ভিতরে আসতে বলে,
সিয়ারা: আমাকে ডেকেছেন?
আধভিক: (মনে মনে — আবার আপনি করে বলা হচ্ছে। কে বলেছে…ওহ, আমিই তো বলেছিলাম। কখন কি বলছি নিজেই ভুলে যাচ্ছি। এই মেয়েটা! এই মেয়েটা দায়ী এসবের জন্য। সবসময় সামনে আসলেই সব গুলিয়ে যায়।)
সিয়ারা: আধভিক?
আধভিক: হ..হ্যাঁ। বলছি, আমাকে এক্ষুনি দশটা ডিজাইন রেডি করে দেবেন।
সিয়ারা: এক্ষুনি? এক্ষুনি কি করে করবো? আমার তো শুটিং…
আধভিক: করতে হবে না শুটিং!! আপনি কি ভুলে যাচ্ছেন আপনি আমার সাথে কি কনট্র্যাক্ট করেছেন?
সিয়ারা: কেন ভুলবো? আপনি বলেছিলেন এক বছর আমাকে আপনার হয়ে কাজ করতে হবে। আমি তো আপনার হয়েই কাজ করছি। এই সিরিয়ালটা তো আপনিই প্রোডিউস করছেন।
আধভিক: করছি না। করবো না আমি এই সিরিয়াল প্রোডিউস। হয়েছে? আমি প্রোডিউস না করলে তো তোমার কাজ করার কোনো মানে হয় না এই সিরিয়ালের জন্য। সো দ্যাটস ফাইনাল!
সিয়ারা: আপনি এমন কেন করছেন? এই সিরিয়ালটাতে আমি আমার আঙ্কেলের ইচ্ছায় করতে রাজি হয়েছিলাম। আর আপনি আঙ্কেলকে বলেছিলেন আপনি রাজি এই সিরিয়ালটা প্রোডিউস করতে। তাহলে এখন কেন এসব বলছেন?
আধভিক: আমি এটাও বলেছিলাম আমি চাইলেই চেঞ্জ করতে পারি স্ক্রিপ্ট থেকে নিয়ে ক্যারেকটার সব কিছু।
সিয়ারা চুপ করে গেলে আধভিক জয়ের হাসি হাসলো আর স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো। কিন্তু সিয়ারার মুখটা দেখে খারাপও লাগলো। ধীরে ধীরে সিয়ারার কাছে এগিয়ে গিয়ে বললো,
আধভিক: চলুন আমার সাথে। আমার অফিসে বসে ডিজাইনগুলো রেডি করবেন। আগে ডিজাইনগুলো রেডি করুন, তারপর সিরিয়ালের বিষয়টা দেখছি।
আধভিক চলে গেলে সিয়ারা ওইদিকে ঘুরে ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুখ চেপে হেসে ফেললো।
সিয়ারা: এখন মহারাজ বসে বসে ফন্দি আঁটবেন কীভাবে আমার থেকে দেবকে দূরে রেখে সিরিয়ালের শুটিং করা যায়। (হেসে ফেলে) বাচ্চাই রয়ে গেলো ছেলেটা।
আধভিক: কি হলো কখন আসবেন?
সিয়ারা: য..যা..যাচ্ছি। (জোরে) উফ! শান্তি নেই।
সিয়ারা আধভিকের সামনে গিয়ে দাঁড়ালে দেখে প্যাক আপ হয়ে গেছে। সিয়ারা দেবাংশুর দিকে তাকিয়ে চোখের ইশারায় জিজ্ঞেস করে সব ঠিক আছে কি না। দেবাংশু সব ঠিক আছে ইশারায় জানালে সিয়ারা স্বস্তি পেয়ে আধভিকের দিকে তাকাতেই চমকে ওঠে। আধভিক ওর দিকেই তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে, ও তাকালে একবার দেবাংশুর দিকে তাকিয়ে আবার ওর দিকে তাকায়।
আধভিক: একটু বেশিই চোখের ইশারায় কথা বলছেন আপনি আজ কাল? (দাঁতে দাঁত চিপে)
সিয়ারা: (গলায় হাত দিয়ে) ইয়ে..মানে গলায় একটু ব্যাথা তো তাই। ঠাণ্ডা লেগেছে তো…
আধভিক: ঠাণ্ডা লেগেছে তোমার? (চিন্তিত সুরে)
সিয়ারা কোনো উত্তর না দিয়ে তাকিয়ে থাকলে আধভিক নিজের কথা মনে করে অপ্রস্তুত হয়ে পরে। শুধরে নিয়ে বলে,
আধভিক: বেশি শরীর খারাপ লাগলে বলুন, বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবো। বাড়ি বসেই না হয় ডিজাইনগুলো রেডি করবেন। (অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে)
সিয়ারা: কিন্তু তাতে আপনার কি লাভ হবে মিস্টার আর সি কোলা? আপনি তো আমাকে দেবের থেকে দূরে, নিজের চোখের সামনে রাখতে চাইছিলেন। সেটা তো হবে না বাড়ি গেলে কারণ দেব তো বাড়িই যাচ্ছে। চলুন, যাওয়া যাক? (চোখ টিপ মেরে)
সিয়ারা চোখ টিপতেই আধভিকের সেই দেখে কাশি উঠে গেলো। সিয়ারার কথা শুনেই সে ওর দিকে তাকিয়ে ছিলো। এইভাবে যে সিয়ারা মনের কথা জেনে ফেলবে ভাবেনি আধভিক। আর কোনো কথা না বাড়িয়ে গটগট করে হেঁটে বেরিয়ে গেলো সে। সিয়ারা সেটা দেখে মুখ টিপে হেসে দেবাংশুর দিকে তাকালে দেবাংশু থাম্বস আপ দেখায় আর এগিয়ে যেতে বলে। সিয়ারাও প্রতিক্রিয়া জানায় থাম্বস আপ দিয়ে আর চলে যায় আধভিকের পিছনে।
অফিসে,
আধভিক আগে আগে হাঁটছে আর সিয়ারা পিছনে। আধভিক নিজের কেবিনে ঢুকে যায় কিন্তু সিয়ারার শু লেস খুলে যাওয়ায় সে একটু সাইড হয়ে সেটা বেঁধে নিয়ে উঠে দাঁড়ালে, দেখে আধভিক নেই। ও বুঝতে পারে আধভিক কেবিনে চলে গেছে, তবে ওর কি যাওয়াটা ঠিক হবে? এই ভাবতে ভাবতে আধভিকের কেবিনের দিকে এগিয়ে গেলে আগের দিনের মেয়েটা মাঝে চলে আসে,
__কোথায় যাচ্ছেন?
সিয়ারা: আসলে আধভিক…
আধভিক: বাইরে কি করছেন আপনি? আপনাকে বলেছিলাম না আমায় অনুসরণ করুন?
সিয়ারা: আসলে আমার শুর লেস খুলে গেছিলো তাই দেরী হলো।
আধভিক: ওকে এখন ভিতরে আসুন আর কাজ শুরু করুন।
সিয়ারা সম্মতি জানিয়ে মেয়েটাকে ও আধভিককে পাশ কাটিয়ে ভিতরে চলে গেলে আধভিক দরজার সামনে দাঁড়িয়ে মেয়েটার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিয়ে তাকায়। মেয়েটা ভয় পেয়ে মাথা নীচু করে চলে গেলে আধভিক ধরাম করে দরজা লাগিয়ে দেয়।
__তুই বার বার সিয়ারাকে আটাকাস কেন বল তো? তুই জানিস না ও কে রিনা?
রিনা: কে আবার? নরমাল একজন ফ্যাশন ডিজাইনার হবে। আটকাবো না কেন হ্যাঁ? মেয়েটা খালি সুযোগ খোঁজে ভিকির কাছে যাওয়ার। আমার সহ্য হয় না একদম।
__তুই না ভুল দিকে নজর দিয়ে ফেলেছিস রিনা। তুই যাকে স্যার না বলে ভিকি বলছিস, সেই ভিকির জান হয় সিয়ারা। তিন বছর আগে এই মেয়েটার জন্য পাগল ছিলেন স্যার। প্রথম দেখাতেই নাকি মন দিয়ে বসেছিলেন। এক বছর সম্পর্ক থাকার পর কোনো কারণে সিয়ারা চলে যায়।
রিনা: এখন তো তার মানে এক্স তাই না? আমি ওনার প্রেজেন্ট আর ফিউচার হয়ে থাকবো। পাস্টের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।
রিনা: (হো হো করে হেসে উঠে) দেখেছিস স্যারকে কোনো মেয়ের সাথে বেশি কথা বলতে? প্রয়োজনের বেশি কথা বলেন না। তুই না পাত্তাও পাবি না ওনার কাছে, তোর থেকে অনেক বড়ো বড়ো মডেল এসে চলে গেলো সেখানে তুই তো তুই। আমি জানি, সিয়ারাই স্যারের পাস্ট, প্রেজেন্ট আর ফিউচার। স্যারকে আবার আগের মত করে তুলতে ও ছাড়া কেউ পারবে না। তুই বরং নিজের কাজে মন দে।
রিনার বান্ধবী হেসে চলে গেলে রিনার সারা শরীর জানো জ্বলে ওঠে। এইখানে সে নতুন হলেও তাঁর বান্ধবী অনেক পুরনো। রিনার মনে হঠাৎ করেই কুবুদ্ধি বাসা বাঁধতে শুরু করে। সে ধীর পায়ে এগিয়ে গিয়ে একটা ফাইল নিয়ে ডিজাইন দেখানোর বাহানা করে আধভিকের কাছে যাবে বলে ঠিক করে। সেই মতো কেবিনের দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকতেই দেখে সিয়ারা ঠিক যতটা মনে দিয়ে বসে ডিজাইন ড্র করছে, আধভিক ঠিক ততটাই মনে দিয়ে বসে ওকে দেখছে। রিনা জোরে ডেকে ওঠে,
রিনা: স্যার!!
আধভিক কিঞ্চিৎ চমকে ওঠে তবে তা প্রকাশ পায় না। চোয়াল শক্ত করে চোখ বন্ধ করে নিজের রাগকে কন্ট্রোল করে জিজ্ঞেস করে,
আধভিক: কি দরকার?
রিনা: ডিজাইন দেখানোর ছিলো।
আধভিক: আমি চেয়েছি দেখতে? না নিশ্চয়। নাও গেট আউট, আউট!!
ঠিক যতটা জোরে রিনা “স্যার” বলে উঠেছিলো ততটাই জোর দিয়ে আধভিক “আউট” কথাটা বলে। রিনা কটমট করে একবার সিয়ারার দিকে তাকিয়ে বেরিয়ে যায়। সিয়ারা এতক্ষণ একবার আধভিক একবার রিনার দিকে তাকাচ্ছিলো। শেষে রিনার দিকে তাকালে রিনার চাহুনি দেখে ও কিছু আঁচ করতে পারে।
আধভিক: বসে থাকার জন্য এখানে নিয়ে আসিনি আপনাকে। ডিজাইনগুলো আর্জেন্টলি লাগবে আমার।
সিয়ারা শুধু আধভিকের দিকে তাকায় একবার। সাথে সাথে আধভিক চেয়ার ঘুরিয়ে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নেয় আর মনে মনে বলে,
আধভিক: এই মেয়েটা কেন আমার দিকে এভাবে তাকায়? ওকে আমার দিকে তাকাতে কে বলেছে? তাকালেই আমি কেমন একটা গলে যাই মনে হয়। উফ! চোখের সামনে না থাকলে মনে হয় সামনে নিয়ে এলে শান্তি পাবো আর চোখের সামনে নিয়ে এলে মনে হয় দূরে গেলে… হয়তো দূরে না, আরো কাছে আনলে শান্তি…না নাহ! কি সব ভাবছি আমি।
আধভিক মাথা ঝাড়া দিয়ে ওঠে। তারপর না চাওয়া স্বত্বেও সিয়ারার দিকে তাকালে দেখে সিয়ারা আবার নিজের কাজে মন দিয়েছে। আধভিকও আবার ওকে দেখায় মন দেয়। গত দু বছর ওকে দেখতে পাওয়ার জন্য মনের ভিতরে যেই আগুন জ্বলছিল তারই হয়তো নিবারণ হচ্ছে আজ।
হঠাৎই ওদের দুজনের নজর কাড়লো একজন ব্যক্তি যে সদ্য আধভিকের কেবিনের দরজা খুলে প্রবেশ করেছে। ব্যক্তিটিকে দেখতে পাওয়ার সাথে সাথেই সিয়ারা উঠে দাঁড়িয়ে যায়। ব্যক্তিটিও সিয়ারাকে দেখছে, সিয়ারাকে দেখার পরেই তাঁর ঠোঁটে একটা বাঁকা হাসি ফুটে ওঠে। আধভিকের চোখের সামনেই সব কিছু হওয়ায় আধভিকের চোয়াল শক্ত হওয়ার সাথে সাথে হাত মুঠ হয়ে যায় রাগে। আধভিক একপ্রকার গর্জে ওঠে……
[#ফিরে_আসবো_আগামী_পর্বে🥀]