‘ কথা দিলাম ‘ 🌸❤️
||পর্ব ~ ৩৭||
@কোয়েল ব্যানার্জী আয়েশা
নিশ্বাস প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হলে আধভিক সরে আসে সিয়ারার কাছ থেকে। আধভিক সরে এলে সিয়ারা ধীরে ধীরে নিজের চোখ খোলে, চোখ খুলতেই দেখে আধভিক একভাবে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। সিয়ারা এক মুহুর্ত অপেক্ষা না করে আধভিকের বুকে মুখ গুঁজে, সে অনুভব করতে চায় আধভিককে। প্রতিটা মুহুর্তে অনুভব করতে চায়।
আধভিক সিয়ারাকে কিছুক্ষণ নিজের সাথে জড়িয়ে রেখে আস্তে করে পিছিয়ে এসে সিয়ারাকে কোলে তুলে নেয়। বিছানার দিকে এগিয়ে গিয়ে আসতে করে সিয়ারাকে বসিয়ে নিজে ওর পাশে বসলে সিয়ারা আধভিকের বুকে মাথা রাখে ওর কোমর জড়িয়ে ধরে। আধভিক মৃদু হেসে ব্ল্যাঙ্কেটটা দিয়ে ভালো ভাবে সিয়ারাকে ঢেকে দেয়। মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে ধীরোজ কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে,
আধভিক: কি হয়েছে? এতো ভয় কেন পেয়ে আছো তুমি?
সিয়ারা: কোথায় ছিলে তুমি আভি? আমার, আমার খুব চিন্তা হচ্ছিলো। (বুকে নাক ঘষে)
আধভিক: (মৃদু হেসে) আমি তো জাস্ট একটু ঘুরতে বেরিয়ে ছিলাম।
সিয়ারা: তাই বলে ড্রিংক করে বাইক নিয়ে বেড়াবে? (সোজা হয়ে বসে)
আধভিক: আমি ড্রিংক করিনি সিয়ু। বিশ্বাস করো আমায়। (সিয়ারাকে কাছে টেনে)
সিয়ারা: তবে আংকেল যে বললো? আর আমিও তো দেখেছি তোমার চোখটা লাল হয়ে ছিলো। তার উপর তুমি এই ঠাণ্ডায় এতো পাতলা জ্যাকেট পরে আছো। ঠাণ্ডা লাগছে না কেন তোমার? আমরা কিছু বুঝি না নাকি? (আধভিকের বুকে আলতো করে ঘুষি মারতে মারতে বলে) তুমি সবসময় এমন করো, আমাকে চিন্তায় ফেলে দাও। খুব মজা লাগে তাই না?
আধভিক: জান আগে আমার কথাটা তো শোনো? কেন কাঁদছো এভাবে?
সিয়ারা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করলে আধভিক ওকে নিজের বুকে টেনে নিয়ে ওকে শান্ত করার চেষ্টা করে। সিয়ারার দু গালে হাত রেখে সিয়ারার মুখটা নিজের সামনে এনে আধভিক বলে,
আধভিক: আমি ড্রিংক করিনি জান। বিশ্বাস করো আমায়। আমার মাথা যন্ত্রণা করছিলো ভীষণ তাই জন্যে চোখ লাল হয়েছিলো আর কিছুই না। মাথা যন্ত্রণা করছিলো বলেই সকাল থেকে কফি খাচ্ছিলাম তাই অতটা ঠাণ্ডাও লাগছিল না। এছাড়া তুমি জানো তো আমার ঠাণ্ডায় থেকে অভ্যেস আছে, এর থেকেও বেশি ঠাণ্ডায় আমি থেকেছি বছরের পর বছর।
সিয়ারা আধভিকের কথা শুনে শুধু নাক টানতে থাকে নীচের দিকে তাকিয়ে। আধভিক স্পষ্ট বুঝতে পারে সিয়ারা বিষয়টা নিয়ে খতিয়ে দেখছে। প্রশ্ন তৈরী হলেই এক্ষুনি তাঁর দিকে সেটা তীরের গতিতে ছুটে আসবে।
সিয়ারা: মাথা যন্ত্রণা নিয়েই বা বেড়ানোর কি দরকার ছিলো হ্যাঁ?
আধভিক: (কিছুক্ষণ চুপ থেকে) মাইগ্রেনের ব্যাথার জন্য আমার ওষুধের দরকার ছিল, কফিতে হতো না কিছুই। ওষুধ নিয়ে আসা হয়নি তাই বেরিয়ে ছিলাম। ফোনটা ডু নট ডিস্টার্ব মোড প্লাস সাইলেন্ট করা ছিলো বাইক চালাচ্ছিলাম দেখে। তাই কাওর ফোন এসেছে বুঝতে পারিনি। পরে যখন তোমার এতগুলো মিসড কলস দেখলাম, ড্যাড আর দিয়ার মিসড কলস দেখলাম তখন চলে এলাম।
সিয়ারা: তোমার, তোমার মাইগ্রেন কবে হলো?
আধভিক সিয়ারার প্রশ্নে চুপ করে গেলে সিয়ারা আবারও আধভিকের বুকে মাথা রাখে। নিজেই বলে,
সিয়ারা: আসার দিন প্লেনেও মাইগ্রেনের ব্যাথাই করছিলো তাই না? (হতাশ হয়ে)
আধভিক: হম। তখন, তখন ওরকম খারাপ বিহেভ করার জন্যে স্যরি সিয়ু। ইভেন সব কিছুর জন্য স্যরি।
সিয়ারা: ভুল শুধু তোমার হয়নি আমারও হয়েছে। আই অ্যাম অলসো স্যরি। বাট তুমি যদি আমার কথা আগে শুনতে তাহলে এত কিছু হতোই না। কিন্তু পরিস্থিতিই এমন ছিলো যে…
আধভিক: পরিস্থিতি এমন ছিলো না, এমন তৈরী করা হয়েছে। যাতে আমরা একে অপরকে ভুল বুঝি আর সত্যিটা কখনও জানতে বা জানাতে না পারি।
সিয়ারা অবাক চোখে তাকিয়ে সোজা হয়ে বসলো। ও মনে মনে ভাবছে আধভিক সব জানে? মানে ওর সাথে সাথে আধভিকও সব বুঝে গেছে?
আধভিক: (সিয়ারার হাত ধরে) ট্রাস্ট মি সিয়ু, আমি সেদিন তোমাকে অতোগুলো খারাপ কথা শুনতাম না। আমি, আমি দেখেছিলাম অভ্রকে তোমার ঘর থেকে বেরাতে কিন্তু সেই জন্য আমি অতটা রিয়্যাক্ট করিনি। আমি রিয়্যাক্ট করেছি অভ্রর শার্টে, বুকে লিপস্টিকের দাগ দেখে যেটা তোমার ঘরে যাওয়ার আগে ছিলো না। এখন আমি জানি না ও তোমার ঘরে যাওয়ার আগে অন্য কোথাও গেছিলো কি না। ওখানেই আমি ভুল করে ফেলেছি। (মাথা নীচু করে)
সিয়ারা: তুমি ভুল করনি আভি। অভ্র যখন আমার ঘরে এসেছিলো তখন সত্যি ওর শার্টে বা বুকে কোনো লিপস্টিকের দাগ ছিলো না। ও আমার ঘরে এসে, আমার দিকে নিজের শার্টের দুটো বোতাম খুলে যখন এগাচ্ছিল তখন আমি সত্যি ভয় পেয়ে গেছিলাম। কিন্তু ও কিছু না করে বেরিয়ে গেছিলো ওখান থেকে।
কথাটা শুনতেই আধভিকের চোয়াল শক্ত হয়ে যেতে লাগলো। যা দেখে সিয়ারা ঘাবড়ে গিয়ে আধভিকের কাছে এগিয়ে বললো,
সিয়ারা: আমাদের কাছে কোনো সলিড প্রমাণ নেই আভি। আমরা এভাবে সন্দেহের বশে কাওকে কিছু বলতে পারি না। তুমি মাথা ঠাণ্ডা রাখো প্লিজ?
আধভিক: (তাচ্ছিল্য হেসে) আমার কোনো প্রমাণের দরকার নেই অভ্রকে শাস্তি দেওয়ার জন্য। আমি চাইলেই ওকে নিমিষে উধাও করে দিতে পারি, জাস্ট উধাও! কেউ জানতেও পারবে না ও কোথায় গেলো।
সিয়ারা: আভি না। এভাবে মাথা গরম করো না। (ভয় পেয়ে)
আধভিক: তোমার মনে হয় আমি তোমার সাথে কথা বলার পর এই কাজটা করবো? আমার এটা করার হলে এতক্ষণে করে ফেলতাম। আমি কিছু করছি না কারণ ও আমার ড্যাডের প্রাণপ্রিয় ছোটো ছেলে।
আধভিক দাঁতে দাঁত চেপে শেষের বাক্যটা বলে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নিলো। সে রাগে ফুঁসছে কিন্তু যতটা সম্ভব নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
সিয়ারা: আচ্ছা, অভ্র তো এখানে ছিলো না। হঠাৎ করে কীভাবে কি..??
আধভিক: আমাদের বিয়ে উপলক্ষ্যে বিয়ের দিন ও আসে। তারপর চলে গেছিলো কিন্তু তুমি চলে যাওয়ার কিছু দিন পর আবার এসেছিলো আর সেটা স্থায়ী ভাবে। আমি দেখেও কিছু বলিনি ড্যাডকে। সেই মুহুর্তে ওকে নিয়ে ভাবার সময় ছিলো না, আমি তোমাকে খুঁজছিলাম হন্য হয়ে। আর তারপরেই খবর পেলাম যে…
সিয়ারা: যে…আমি বিয়ে করে নিয়েছি আর হ্যাপি আছি?
আধভিক: বিয়ে না, বিয়ের কথাটা বলেনি। শুনেছিলাম তুমি অন্যকাওর সাথে আছো। কয়েকটা ছবি দেখেছিলাম তোমার আর দেবাংশুর।
সিয়ারা: আমার মনে হয় এটাও…
আধভিক: অবভিয়াসলি। নাহলে কেন আমাকে বললো তুমি হ্যাপি আছো, তোমাকে বললো আমি হ্যাপি আছি যেখানে আদতে আমরা হ্যাপি ছিলাম না। আর এটা তখনই সম্ভব যখন নিজের কেউ এই বিষয়ে সম্পূর্ণ অবগত।
সিয়ারা: আমাদের প্রমাণ জোগাড় করা উচিত?
আধভিক সিয়ারার কোমর জড়িয়ে এক ঝটকায় নিজের কাছে টেনে নিল। ওর চুলগুলো কানের পিছনে গুঁজে দিয়ে বললো,
আধভিক: উম, আপাতত প্রেম করা উচিৎ।
সিয়ারা রাগী ভাব করে ভ্রু কুঁচকে আধভিকের দিকে তাকালে আধভিক নিজের হাতের বাঁধন আলগা করে দিয়ে কিছু বলবে তার আগেই সিয়ারা আধভিককে জড়িয়ে ধরে ওর গলায় মুখ গুঁজে দেয়। আধভিক হেসে বলে,
আধভিক: আমাকে ভয় দেখাতে তোমার ভীষণ ভালো লাগে তাই না?
সিয়ারা: যেমন?
আধভিক: প্রথম যেদিন দেখে ছিলাম সেদিনও আমাকে ভয় দেখিয়েছিলে নিজেকে ম্যারেড বলে। আর আবার যখন ফিরে এলে তখনও? ইউ হ্যাভ এনি আইডিয়া আমার ঠিক কেমন অনুভব হয়েছিলো? কোথাও না কোথাও আমার মনে আশা ছিল যে আমাকে যেটা বলা হয়েছে সেটা মিথ্যে। বাট তুমি ওভাবে বলে…
সিয়ারা: আ’ম স্যরি। আসলে আমি যেহেতু শুনেছিলাম তুমি বিয়ে করে নিয়েছো তাই আমি বলেছিলাম। ভেবেছিলাম আমাকে দেখার পর যদি তোমার ম্যারেড লাইফে এফেক্ট পরে তাই…
আধভিক: হ্যাঁ সেই! যখন তোমার বোনের প্রশ্ন আসে তখন তো তুমি আমাকে এক মিনিটে ভুলে যাও। (অভিমান করে)
সিয়ারা: (দু গালে হাত রেখে) এমন না আভি। আমি যখন জেনেছিলাম তুমি বিয়ে করে নিয়েছো তখন আমি খুব ভেঙে পরেছিলাম। তোমার মত আমার মনেও এটাই ছিলো যে তুমি বিয়ে করবে না। তারপর তো তুমিও বোনের কথা যখন জিজ্ঞেস করলাম এমন ভাবে বললে জানো তুমি সত্যি বিয়ে করে নিয়েছো।
আধভিক: কারণ আমিও তো তোমার মতই ভেবেছিলাম যে তোমার ম্যারেড লাইফে এফেক্ট হতে পারে।
আধভিক আর সিয়ারা দুজনেই চুপ করে গেলো। তারপর একে অপরের দিকে তাকাতেই হেসে ফেললো। আধভিক সিয়ারার কপালে ঠোঁট ছুঁয়ে দেয়। সিয়ারা আধভিকের বুকে মাথা রেখে বলে,
সিয়ারা: এর থেকেই প্রমাণ হয় আমাদের একে অপরের প্রতি বিশ্বাস ছিলো আভি।
আধভিক: আর নিজেরা কষ্টে থাকলেও অন্যজনকে খুশি দেখতেই চেয়েছিলাম।
সিয়ারা প্রতিউত্তরে আধভিককে একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। ধীরে ধীরে সিয়ারা আধভিকের শার্টের দুটো বোতাম খুলে, আধভিকের বুকের বাম পাশে নিজের নামটার উপর আঙুল রাখে।
সিয়ারা: আভি!
আধভিক নিজের শরীরে সিয়ারার স্পর্শ পেয়ে চোখ বন্ধ করে নেয় আবেশে। একটা শিহরণ বয়ে যায় ওর সারা শরীর জুড়ে।
সিয়ারা: কবে করেছো এটা? (বিনয়ী সুরে)
আধভিক: আমাদের বিয়ের দিন। তোমাকে সারপ্রাইজ দেব ঠিক করেছিলাম আমাদের ফার্স্ট নাইটে।
সিয়ারা না দেখেই বুঝতে পারে আধভিকের কষ্টটা আবারও মাথা চারা দিয়ে উঠেছে। ওর নিজেরও একই অবস্থা। ও চুপচাপ আধভিকের বুকে, নিজের নামের উপর আলতো করে নিজের ঠোঁট ছুঁয়ে দেয়। আধভিকের শরীর শিউরে ওঠে। একটা লম্বা নিশ্বাস ছাড়ে সে।
সিয়ারা: আমি আর কখনও তোমাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাববো না। আমি কখনও তোমাকে ছেড়ে যেতে চাইনি কিন্তু…
আধভিক সিয়ারা মুখ নিজের দু হাতের মাঝে নিয়ে সিয়ারার ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁয়ে দেয় আলতো করে। সরে এসে বলে,
আধভিক: শশশ! আমি আর এই নিয়ে কোনো কথা শুনতে চাই না। আল্টিমেটলি আমাদেরকে কেউ আলাদা করতে পারেনি। এখন থেকে আমরা সবসময় একসাথে থাকবো, সবসময়। ওকেই?
আধভিক সিয়ারাকে বুকের মাঝে টেনে নিলে, একে অপরকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ওরা। সিয়ারা মনে মনে ভাবে,
সিয়ারা: (মনে মনে– শুধু অভ্র নয় আভি, এর পিছনে অনেক বড়ো কেউ আছে। যদি শুধু অভ্র হতো তাহলে আমি পার্টির দিনের রেকর্ডটা শুনিয়ে আংকেলকে প্রমাণ দিয়ে দিতাম। কিন্তু এক্ষেত্রে এত বড় একটা মাস্টার প্ল্যান করা ওর একার পক্ষে সম্ভব নয়। আমাকে তোমাকে ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করার পিছনেও হয়তো তাঁরই হাত রয়েছে। ওদের উদ্দেশ্য অনেক বড়ো কিছু। যেটা আমাকে জানতে হবে।)
আধভিক: (মনে মনে– বিষয়টা শুধু তোমাকে আর আমাকে আলাদা করা নিয়ে নয় সিয়ু। আমাদের আলাদা করাতে ওদের অনেক বড়ো কোনো স্বার্থ আছে। হ্যাঁ ওদের! আমার ভাইয়ের মাথায় এতো বুদ্ধি নেই যে ও একার প্ল্যানে আমাদেরকে এতো সব প্ল্যান করে আলাদা করবে। ওকে কেউ একটা নিয়ন্ত্রণ করছে, কোনো একটা মাস্টার মাইন্ড। কারণ তোমাদের প্রোডাকশন হাউজসহ তোমাদের বাড়ি ঘর সবকিছু এভাবে হঠাৎ বিক্রি হয়ে যাওয়া কোনো দুর্ঘটনা হয়ে পারে না। বার করতে হবে আমাকে সবটা।)
সিয়ারা: আভি? আমরা এরপর কি করবো? মানে, সবাইকে কি বুঝতে দেবো যে, আমাদের মধ্যে সব ঠিক হয়ে গেছে? নাকি অভিনয়…
আধভিক: তুমি খুব ভালো ভাবে জানো আমি অভিনয় জিনিসটা পছন্দ করি না। আর মিথ্যে অভিনয় করা মানে তোমার থেকে দূরে সরে থাকা, তোমার সাথে জেনে বুঝে খারাপ বিহেভ করা যেটা আমার পক্ষে ইম্পসিবল। জাস্ট ইম্পসিবল। এমনিতেই তোমার সাথে যা বিহেভ করেছি তার জন্য নিজের কাছে নিজেই ছোট হয়ে গেছি, কিছুতেই নিজেকে ক্ষমা করতে পারছি না। তার উপর আরও যদি করতে হয় সেটা আমি মেনে নিতে পারবো না।
সিয়ারা: আমি বুঝতে পারছি কিন্তু তাতে তো আমরা ওদের ধরতে পারবো না। আমরা যদি বোঝাই ওরা জিতছে, ওদের ফাঁদে আমরা পা দিয়েছি তবেই তো ওরা সামনে আসবে।
আধভিক: আমিও এইটাই ভেবেছিলাম। ওদেরকে ধরাটাও একটা কারণ ছিল তোমার সাথে গাড়িতে খারাপ বিহেভ করার। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি সিয়ু, বরং ঘুরে ফিরে ওরাই জিতে যাচ্ছিলো।
সিয়ারা: (সোজা হয়ে) তখন আমরা সবটা জানতাম না তাই জন্য। এখন আর সেটা হবে না। আমার মনে হয় যেমন চলছিলো, আমাদের তেমনই অভিনয় করে যাওয়া উচিৎ আর…
আধভিক: ফাইন! তুমি চাইছো আমি যাতে তোমার থেকে দূরে থাকি। আমাদের মধ্যে যে দুরত্ব আছে এখনও সেটাই প্রুফ করতে চাও তাই তো? ঠিক আছে সেটাই হবে। বাট আমি কোনো মিথ্যে অভিনয় করতে পারবো না। আমি এমন ব্যবস্থা করবো যাতে তোমাকে আমার কাছে আসা তো দূর আমার মুখ অবধি দেখতে না হয়।
আধভিক কথাটা বলে উঠে ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার উদ্দ্যেশ্যে এগিয়ে গেলো। ঘটনাটা এতো তাড়াতাড়ি ঘটে গেলো যে সিয়ারা রিয়্যাক্ট করার সময়ই পেলো না। আধভিককে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে দেখে ও বিড়বিড় করে বললো,
সিয়ারা: এই ছেলেটার এতো রাগ কেন?
সিয়ারা বিছানা থেকে নেমে দৌঁড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে করিডোরে গিয়ে পিছন থেকে আধভিককে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
সিয়ারা: রাগ করো না আভি প্লিজ! তুমি যেমনটা চাও তেমনই হবে। ভুল হয়ে গেছে আমার।
আধভিক সিয়ারার হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করতে করতে বললো,
আধভিক: আমি নিজের ডিসিশন তোমার উপর চাপাতে চাই না। জোর করে কোনো কিছু করবো না আমি।
সিয়ারা: আমিও চাই না সেটা। আমি শুধু তোমার সাথে থাকতে চাই, তোমার কাছে থাকতে চাই। ভুল হয়ে গেছে আমার বলছি তো? প্লিজ, যেও না। যেও না আভি!
আধভিক সিয়ারার দিকে ফিরতেই দেখলো সিয়ারার চোখ দিয়ে জল গাল গড়িয়ে পরছে। সিয়ারার চোখের জল মুছে আধভিক ওর কপালে কপাল ঠেকালো। ওর ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে নীচের ঠোঁটে আঙুল বুলাতে বুলাতে বললো,
আধভিক: আই লাভ ইউ সিয়ু!
সিয়ারা: আই লাভ ইউ টু আভি!
মুহুর্তেই আধভিক সিয়ারার ঠোঁটজোড়ায় আক্রমণ করে বসলো। সিয়ারা হয়তো জানতো এমন কিছুই হতে চলেছে তাই দু হাত দিয়ে আধভিকের গলা জড়িয়ে আরো কাছে টেনে নিলো আধভিককে। ততক্ষনে আধভিকের দুই হাত সিয়ারার কোমরে বিচরণ করছে। দুজন একে অপরের সাথে মিশে যেতে চাইছে, হারিয়ে যেতে চাইছে একে অপরের মাঝে। যার দরুন ওদের স্থান, কাল, সময় কোনো কিছুর জ্ঞান নেই। ওরা শুধু একে অপরে মগ্ন হয়ে আছে।
[#ফিরে_আসবো_আগামী_পর্বে🥀]