কথা দিলাম ‘ 🌸❤️ ||পর্ব ~ ৪৫|| @কোয়েল ব্যানার্জী আয়েশা

0
264

‘ কথা দিলাম ‘ 🌸❤️
||পর্ব ~ ৪৫||
@কোয়েল ব্যানার্জী আয়েশা

দিয়ারা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো অর্জুনের কথায়। ও হেসে কিছু বলবে তার আগেই একজনের গলার স্বর পেলো সবাই।

__আমি কি ফটোশুটের দায়িত্বে থাকতে পারি মিস্টার চ্যাটার্জী??

সিয়ারা: দেব তুই এখানে? (অবাক হয়ে)

দেবাংশু পকেটে হাত গুঁজে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসতে থাকে দিয়ারার চোখে চোখ রেখে। দিয়ারা একভাবে তাকিয়ে আছে দেবাংশুর দিকে। দেবাংশু দিয়ারা আর অর্জুনের সামনে গিয়ে দাঁড়ানোর পরেই চোখ সরিয়ে দেবাংশু অর্জুনের দিকে তাকায়।

দেবাংশু: আপনি চাইলে আপনার সার্টিফিকেট দেখতে পারেন। ভিকি আই মিন আধভিক আমাকে বললো যে এখানে আসতে আর দায়িত্বটা নিতে।

অর্জুন: আপনি চাইলে কাজ করতেই পারেন যদি আমাদের মডেল রাজি থাকে তো! আমার কোনো আপত্তি নেই।

দেবাংশু তৎক্ষণাৎ দিয়ার দিকে তাকালে দিয়ারা নিজের চোখ নামিয়ে নেয়। অর্জুন দিয়ারার বাহুতে হাত রেখে জিজ্ঞেস করে,

অর্জুন: তুমি রাজি দিয়া?

দিয়ারা নিজের হাতের দিকে তাকাতেই সঙ্গে সঙ্গে দেবাংশুর দিকে তাকায় যে কি না নিজের চোয়াল শক্ত করে তাকিয়ে আছে অর্জুনের হাতের দিকে। দিয়ারা দেরী না করে হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়তেই অর্জুন একটা বিরক্তির নিশ্বাস ফেলে দেবাংশুর দিকে তাকিয়ে বলে,

অর্জুন: ঠিক আছে। আপনি জয়েন করতে পারেন।

দেবাংশু: থ্যাংক ইউ, থ্যাংক ইউ মিস্টার চ্যাটার্জী! (জয়ের হাসি হেসে হাত বাড়িয়ে)

অর্জুন একপ্রকার নিজের অনিচ্ছাতে হাত মিলিয়ে ওখান থেকে চলে গেলো। দেবাংশু শুধু মুচকি হাসছে অর্জুনের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে।

সিয়ারা: আভি তোকে পাঠিয়েছে দেব?

দেবাংশু: আব, হ্যাঁ। তুই ডিজাইনস দেখে নিয়েছিস?

সিয়ারা: উম..হ্যাঁ। তোরা একবার ট্রায়াল দিয়ে নে, আমি অর্জুনের সাথে দেখা করতে যাচ্ছি আমার কিছু জিজ্ঞেস করার আছে। ওকে?

দিয়ারা: দি তুই…

দেবাংশু: ওকে তুই যা। আমাদের ট্রায়াল হয়ে গেলে আমি আর দিয়া চলে যাবো তোর কাছে। কনট্র্যাক্ট সাইন করতে হবে তো।

সিয়ারা: হ্যাঁ। আসছি আমি, অল দ্যা বেস্ট!

সিয়ারা চলে গেলে দিয়ারা নার্ভাস হতে শুরু করে। সমানে নিজের আঙুল মোচড়াতে থাকে যেটা দেখে দেবাংশু একটা নিশ্বাস নিয়ে দিয়ারার মুখোমুখি হয়। দিয়ারা সেটা দেখে ওখান থেকে চলে যেতে চাইলে দেবাংশু হাত ওর সামনে এগিয়ে দিয়ে ওকে আটকে দেয় আর জিজ্ঞেস করে,

দেবাংশু: তখন ওভাবে চলে গেলি কেন?

দিয়ারা: ওটাই ঠিক মনে হয়েছে। আমি কাওর প্রাইভেট মোমেন্টে ইন্টারফেয়ার করতে চাই না। (শান্ত ভাবে ধীর গতিতে)

দেবাংশু: ওটা কোনো প্রাইভেট মোমেন্ট ছিলো না দিয়া। তুই ভুল বুঝছিস। ওখানে যা হয়েছে সব কিছুই আমার অজান্তে, হঠাৎ করে।

দিয়ারা: আমি তো তোমার কাছে কোনো এক্সপ্লেনেইশন চাইনি দেবদা। তুমি আমাকে কেন এসব বলছো, আমি কে? (অভিমানী সুরে)

দেবাংশু চুপ করে গেলো দিয়ারার প্রশ্নে। কিছুক্ষণ সময় নিয়ে উত্তর দিলো,

দেবাংশু: আমি চাই না আমার কাছের মানুষ বিনা দোষে আমাকে ভুল বুঝুক।

দিয়ারা দেবাংশুর দিকে তাকালে দেবাংশু নিজের নীচের ঠোঁটটা হালকা কামড়ে ধরে ছেড়ে দেয়। তারপর বলে,

দেবাংশু: ও তানিশা। আমার আর ভিকির কমন ফ্রেন্ড ছিলো। আমি ওকে খুব একটা পছন্দ করতাম না প্রথম থেকে ওর কাজকর্মের জন্য বাট ও আমাকে পছন্দ করতো। আমার অজান্তেই ও সবাইকে জানিয়েছিল আমি ওর বয়ফ্রেন্ড। যেটা ছিল না কখনও। আমি ওকে অনেক আগে জানিয়েছিলাম আমার কোনো ইন্টারেস্ট নেই ওর প্রতি, ভালোবাসার প্রতি। তারপরে…তারপরে ওর কারণে ঝামেলা হয়েছিলো আমার আর ভিকির মধ্যে আর আমরা আলাদা হয়ে যাই। আই মিন, আমি আলাদা হয়ে যাই। আজকে হঠাৎ করে ও কেন এসে আবার আগের কথা বলছে আমি সত্যি জানি না।

দিয়ারা: তুমি..তুমি ওকে পছন্দ করো না?

দেবাংশু: একদমই না দিয়া। আমি জাস্ট ওকে আমার ঘাড় থেকে নামাতে চাই। ও কোনো ভালো টালো বাসে না আমায়। সব কিছু নাটক জাস্ট! ভালো ভাবে চিনি ওকে। ওর অনেকের সাথে সম্পর্ক ছিলো, হয়তো এখনও আছে।

দিয়ারা: আব, আমাদের নিজেদের কাজটা করা উচিত।

দেবাংশু: তুই এখনও কি ভুল বুঝছিস আমায়?

দিয়ারা: (মনে মনে — খুব ইচ্ছা করছে জানতে যে তুমি এত কেন ভাবছো এই নিয়ে? আমি তোমায় ভুল বুঝলে, কথা না বললে তোমার কি যায় আসে? কিন্তু কেমন জানো একটা ভয় কাজ করছে, একটা জড়তা।) নাহ! সবটা জানার পর কেন ভুল বুঝবো?

দেবাংশু: স..সত্যিই? (করুন ভাবে)

দিয়ারা হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়লো আর দেবাংশু আর কিছু না বলে এগিয়ে গেলো ক্যামেরার দিকে। দিয়ারাও গিয়ে নিজের পজিশন নিয়ে নিলো। একটু অস্বস্তি লাগছে ওর পোজ দিতে, দেবাংশুর চোখের দিকে তাকালেই সব কিছু জানো গুলিয়ে যাচ্ছে দিয়ারার। সেই মুহুর্তে রূহানের অ্যাসিস্টেন্ট দিয়ারাকে পোজ দেখাতে গেলে দেবাংশু সাথে সাথে বলে,

দেবাংশু: স্টপ! আমি ওকে পোজ বলে দিতে পারবো। আপনার এখানে কোনো প্রয়োজন নেই। আপনি আসতে পারেন। আপনার স্যার এই কাজটা যখন করছে না, তখন আমার মনে হয় আপনার এখানে থাকার কোনো মানে হয় না। (দাঁতে দাঁত চেপে)

ছেলেটি একপ্রকার ভয়েই ওখান থেকে চলে গেলো দ্রুত। ও চলে যেতেই দেবাংশু ধীরে ধীরে এগিয়ে যায় দিয়ারার দিকে, দিয়ারা আরো নার্ভাস হতে শুরু করে। দেবাংশু দিয়ারার নার্ভাসনেস দেখে মুচকি হাসলো তারপর ধীরে ধীরে নিজের হাত এগিয়ে নিয়ে গিয়ে দিয়ারার চুলটা সরিয়ে দিলো পিছনে। দিয়ারা সঙ্গে সঙ্গে একটু সরে গিয়ে চোখ বন্ধ করে নিলো।

দেবাংশু: রিল্যাক্স দিয়া, আমি বাঘ, ভাল্লুক নই যে তোকে খেয়ে ফেলব। এতো ভয় কেন পাচ্ছিস তুই আমায়? নাকি…আমি তোর কাছে আসলে তোর কিছু হয়?

দিয়ারা ঝট করে দেবাংশুর চোখের দিকে তাকায়। দিয়ারার বুকের ভিতরের ঢিপঢিপটা ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে। এক তো দেবাংশু এতো কাছে দ্বিতীয়ত, হয়তো মনের কথাটাই বলে দিয়েছে দেবাংশু দিয়ারার।

দিয়ারা: কি, কি বলছো এসব দেবদা?

দেবাংশুর হুঁশ ফিরে আসে দিয়ারার কথায়। সে একটু সরে গিয়ে নিজের মাথা ঝাঁকিয়ে নিয়ে দিয়ারাকে বললো,

দেবাংশু: না কিছু না। আমি তোকে কয়েকটা ছবি দেখাচ্ছি সেভাবে চেষ্টা কর পোজ দেওয়ার।

দেবাংশু নিজের ফোন বের করে কয়েকটা ছবি দেখায় দিয়ারাকে। দিয়ারা সেগুলো ভালো ভাবে দেখে নেয় এবং এরপর ওরা নিজেদের কাজ শেষ করে অর্জুনের কেবিনে চলে যায়।

অর্জুনের কেবিনে গিয়ে দেখে সিয়ারা আর অর্জুন কথা বলছিলো। দেবাংশু দিয়ারার সাথে কেবিনে ঢুকতেই অর্জুনের কপালে একটা ভাঁজ পরলো। আর কেউ লক্ষ্য না করুক দেবাংশু সেটা লক্ষ্য করেছে।

সিয়ারা: আমি সাইন করে দিয়েছি। দিয়া, দেব তোরাও কনট্র্যাক্টটা পড়ে সাইন করে দে। আভি ফোন করছিলো আমাকে।

দিয়ারা কথা না বাড়িয়ে অর্জুনের কাছ থেকে কনট্র্যাক্ট পেপারটা চেয়ে নেয়। দিয়ারা সাইন করে অর্জুনের দিকে তাকালে অর্জুন একটা ছোট্টো হাসি উপহার দেয়। প্রতিউত্তরে দিয়ারাও হালকা হাসে।

দেবাংশু: তোরা এগো, আমি আসছি সাইন করে।

সিয়ারা সম্মতি জানিয়ে বোনকে নিয়ে ওখান থেকে বেরিয়ে গেলে দেবাংশু কনট্র্যাক্ট পেপারটা পড়তে থাকে। অর্জুন চুপচাপ, স্থির দৃষ্টিতে দেবাংশুর দিকে তাকিয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর চোখ সরিয়ে নিতেই দেবাংশু বলে ওঠে,

দেবাংশু: বেশ কয়েকটা দিন আমাকে সহ্য করতে হবে। পারবি তো? (কনট্র্যাক্ট পেপার পড়তে পড়তে)

অর্জুন: (তাচ্ছিল্য হেসে) সময় বলবে কে কাকে সহ্য করবে। সব তো শুরু, এখনই কোনো কিছু বলতে পারিস না তুই।

দেবাংশু কনট্র্যাক্ট পেপারটা রেখে উঠে দাঁড়ায়। অর্জুন তখনও বসে আছে হালকা হেসে দেবাংশুর দিকে তাকিয়ে।

দেবাংশু: আমার সহ্য ক্ষমতা অনেক বেশি মিস্টার অর্জুন চ্যাটার্জী। কিন্তু আমাকে সহ্য করার ক্ষমতা সবার মধ্যে নেই। তার মধ্যে তুই সবার আগে আছিস। (বাঁকা হেসে)

অর্জুন: (উঠে দাঁড়িয়ে) দেখাই যাচ্ছে কে কি সহ্য করতে পারছে না। আর তোকে সহ্য করার ক্ষমতা না থাকুক, তোর প্রিয় জিনিস কেড়ে নেওয়ার ক্ষমতা আমার আছে।

অর্জুনের কথাতে সঙ্গে সঙ্গে দেবাংশুর চোয়াল শক্ত হয়ে যায় আর অর্জুনের ঠোঁটে একটা হাসির রেখে ফুটে ওঠে।

দেবাংশু: অর্জন করার ক্ষমতা তো নেই তাই ছিনিয়ে নিতে হয় তোকে। আর কতদিন চলবি আমার জিনিস নিয়ে নিয়ে? চল, এইবারও আমার ব্যবহার করা জিনিসই তোকে দেবো। খুশি থাকিস, ওকে? (সাইন করতে করতে, বাঁকা হেসে)

অর্জুন দেবাংশুর দিকে তেড়ে যেতে নিলে দেবাংশু শুধু তাকায় অর্জুনের দিকে।

অর্জুন: রাগ বা জেদের বশে কোনো ভুল করিস না। কাওকে হার্ট করিস না।

দেবাংশু: তোর এডভাইসের প্রয়োজন নেই আমার। নিজের খেয়াল রাখ, অনেক কিছু হতে চলেছে তোর সাথে। এখন জন্য বা-বাই!

দেবাংশু দুই আঙুল স্যালুটের মতো করে দেখিয়ে চলে গেলো ওখান থেকে। অর্জুন রাগে টেবিলে বারি মারলো শুধু। দেবাংশু বেরিয়ে এসে দেখলো দুই বোন দাঁড়িয়ে কথা বলছে।

দেবাংশু: সিয়া, ভিকি তোর জন্য ওই যে দেখ সামনে যে রেষ্টুরেন্টটা আছে সেখানে ওয়েট করছে।

সিয়ারা: কিহ? ও এখানে কি করছে?

দেবাংশু: নজরদারি! (মুখ টিপে হেসে)

সিয়ারা: ধ্যাত! ভালো লাগে না আমার। (লাজুক ভাবে)

সিয়ারা দ্রুত পায়ে ওখান থেকে চলে গেলো রেস্টুরেন্টর দিকে। দেবাংশু দিয়ারার দিকে তাকিয়ে বললো,

দেবাংশু: চল।

দিয়ারা: কোথায়?

দেবাংশু: যেতে বলেছি যাবি, এতো প্রশ্ন করিস কেন? চল।

দেবাংশু হাত ধরে টেনে নিয়ে দিয়ারাকে গাড়িতে সামনে বসিয়ে দিল তারপর ওখান থেকে বেরিয়ে গেলো। এদিকে সিয়ারা ক্যাফেতে ঢুকে দেখে তানিশা আধভিকের হাত ধরে বসে আছে। আর ওদের সামনে হোয়াইনের বোতল ও গ্লাস রাখা। সিয়ারা ওদের টেবিলের দিকে না গিয়ে অন্য একটা ফাঁকা টেবিলে গিয়ে বসে পরলো। ওদের মধ্যে কি কথা হচ্ছে সেটা জানতে মোটেও ইচ্ছা হচ্ছে না সিয়ারার। ও শুধু আধভিকের সামনে রাখা হোয়াইনের গ্লাসটা দেখছে।

সিয়ারা: (মনে মনে — একটাবার আমার দিকে তাকানোর প্রয়োজনও মনে করছে না। এতো ব্যস্ত কথা বলতে। আমাকে কথা দেওয়ার পরেও আবার ড্রিংক করছে বাহ! তারপর আমাকে ডেকে এখন দেখবার সময় হচ্ছে না। খুব তো বলে তোমার উপস্থিতি আমি টের পেয়ে যাই আর এখন দেখো! ঠিক আছে, আমিও দেখি কতক্ষন এভাবে চলে।)

সিয়ারা হঠাৎ লক্ষ্য করলো আধভিক ওকে দেখেছে। কিন্তু হাত দিয়ে বসার ইশারা করেই চোখ সরিয়ে নিলো। তার মানে অনেক আগেই ওকে আধভিক দেখেছে। ইচ্ছা করে ইগনোর করছে এবং ওর কোনো যায় ও আসছে না। সিয়ারা দেখছে জেনেও ও গ্লাসে চুমুক দিচ্ছে।

সিয়ারা: (মনে মনে — হাউ কুড হি ডু দ্যাট? আমাকে দেখেও ইগনোর করছে? কোনো যায় আসছে না ওর? এতো ইম্পর্ট্যান্ট তানিশার কথা শোনাটা? আসুক একবার। বোঝাচ্ছি মজা!)

__এক্সকিউজ মি! আমি কি এখানে বসতে পারি?

সিয়ারা: আব আপনি?

__বসে বলি?

সিয়ারা একবার আধভিকের দিকে তাকালো যে কথা বলায় মগ্ন তারপর সম্মতি জানালো মাথা নেড়ে। ব্যক্তিটি সিয়ারার সামনে বসে প্রথমেই অফার করলো কিছু নেবে কি না সিয়ারা।

সিয়ারা: না না আমি কিছু নেবো না।

ব্যক্তিটি জোর না করে নিজের জন্য একটা হোয়াইন অর্ডার করে দিলেন। তারপর সিয়ারার দিকে তাকিয়ে বললেন,

__আমি একজন প্রোডিউসার। তুমি আমার থেকে বেশ ছোটোই হবে তাই তুমি বলছি। তোমাকে আমার সিনেমার হিরোইন হিসেবে আমি ভীষণ পছন্দ হয়েছে। তাই জন্যেই আমি কথা বলতে এলাম।

সিয়ারা: আব, আমি তো অভিনয়ে খুব একটা ইন্টারেস্টেড নই স্যার। আমি পেশায় একজন ডিজাইনার এবং মডেল।

সিয়ারার কথা শেষ হতেই ওয়েটার হোয়াইনের বোতল রেখে গেলো। হোটেলটা ফাইভ স্টার, বেশির ভাগ সময় সেলিব্রিটি মানুষদেরই আনাগোনা এখানে। তাই এই বিষয়গুলো বেশ স্বাভাবিক।

__ঠিক আছে। মডেলিং যদি করো তাহলে একটা সময়ে অভিনয়ে ইন্টারেস্ট আসতেই পারে। আমার অফারটা একটু ভেবে দেখো। এই যে আমার কার্ড, আমাকে জানিও তোমার ডিসিশন।

সিয়ারা হাত বাড়িয়ে কার্ডটা নিতেই আধভিক ওর সামনে এসে দাঁড়ালো। ব্যক্তিটির দিকে আধভিক তাকাতেই ব্যক্তিটি উঠে দাঁড়িয়ে বললো,

__আরে আধভিক বেটা? তুমি?

আধভিক: হ্যাঁ আমি। আপনি যাকে হিরোইন হওয়ার অফার দিচ্ছেন সে আমার…

আধভিকের কথা শেষ হওয়ার আগেই সিয়ারা ওখান থেকে বেরিয়ে গেলো। আধভিক অবাক হয়ে ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে জোরে একবার ওর দেওয়া নামে এবং সাড়া না পাওয়ায় একবার ওর পুরো নাম ধরেই ডাকলো কিন্তু সিয়ারা দাঁড়ালো না। আধভিকও আর কিছু না বলে ওখান থেকে বেরিয়ে গেলো।

আধভিক: সিয়ু, আমার কথাটা শোনো। কোথায় যাচ্ছো তুমি? কি হয়েছে?

আধভিক সিয়ারার হাত ধরে টেনে নিজের দিকে ফিরিয়ে দাঁড় করিয়ে দিল সিয়ারাকে। সিয়ারার দুই বাহুতে হাত রেখে আধভিক জিজ্ঞেস করতেই সিয়ারা নিজের দু হাত দিয়ে আধভিকের দুহাত সরিয়ে দিলো।

সিয়ারা: কিছুক্ষণ আগে ঠিক যেভাবে আমাকে ইগনোর করছিলে এখনও সেটাই করো। নাহলে আমি কি বলতে কি বলে দেবো, খারাপ লেগে যাবে তোমার। দূরে থাকো আমার থেকে।

আধভিক: সিয়ু আমার কথাটা শোনো প্লিজ!

সিয়ারা: তোমার যা কিছু শোনানোর তুমি তানিশাকে গিয়ে শোনাও আর বসে বসে ড্রিংক করো। আমার শোনার কোনো ইচ্ছা নেই। বাই!

সিয়ারা আধভিকের হাত ছাড়িয়ে গাড়িতে উঠে ওখান থেকে বেরিয়ে গেলো ড্রাইভ করে। আধভিক নিজের মাথায় হাত দিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে সজোরে একটা ঘুষি মারলো গাড়িতে।

আধভিক: ড্যাম ইট!

[#ফিরে_আসবো_আগামী_পর্বে🥀]

বিঃদ্রঃ পর্ব গতকাল দেওয়ার ছিলো কিন্তু আমি দিতে পারিনি। আসলে নিউ ইয়ারের দিনটা জীবনে প্রথমবারের মতো খারাপ গেছে। আর নিউ ইয়ারের দিন থেকে আজ অবধি খারাপই যাচ্ছে। আপনাদের অপেক্ষা করানোর জন্য দুঃখিত। যাঁদের মনে হবে যে আমি অজুহাত দিচ্ছি, যাঁদের ধৈর্য্য ধরা আর সম্ভব হচ্ছে না মনে হবে তাঁরা প্লিজ গল্পটা পড়া স্টপ করে দেবেন। কারণ মন মানসিকতা ঠিক নেই দেখে বা লাগাতার সমস্যা চলছে দেখে আমি গল্পটা হুটহাট করে শেষ করে দিতে পারি না। তাতে গল্পটা খাপছাড়া হয়ে যাবে। আমি যেমন ভাবে ভেবেছি, তেমন ভাবেই লিখবো। এখনও বেশ অনেক কিছুই বাকি গল্পের তাই সময় নিয়ে, গুছিয়ে গল্পটা শেষ করবো। ধন্যবাদ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here