নীলফড়িং #ফারহানা_হাওলাদার_প্রকৃতি #পর্ব ১৪

0
110

#নীলফড়িং
#ফারহানা_হাওলাদার_প্রকৃতি
#পর্ব ১৪
.
.
অনেক ক্ষণ বসে সবাই আমাদের শান্ত করল। আমি এখনো হিসকী তুলছি। যা দেখে খালামণি বলে উঠলেন।

……আরে এত কান্নার কী আছে আপা? তুইও কাঁদছিস মেয়েটাকেও কাঁদাচ্ছিস। উঁকি দিলেই মেয়েকে দেখবি, তারপরও এত কান্নার কী আছে?

……তুই কী বুঝবি? তোর মেয়েকে বিয়ে দে তারপর বুঝবি, কাল থেকে আমি আর এই রুমে এসে আমার মেয়েটাকে দেখতে পারব না। সময় মতো নিজের হাতে বেড়ে খাবার ও খাওয়াতে পারব না। আমার কলিজাটা কষ্টে ফেঁটে যাচ্ছে, আর তুই বলছিস উকি দিলেই দেখব। হ্যা উঁকি দিলেই দেখব কিন্তু নিজের মতো করে আর কাছে রাখতে পারব না। সময় পেলেই ছুটে যেতে পারব না। আমি মা আমি নিজেকে কীভাবে শান্ত করব।

মায়ের কান্না শুনে আমি আর নিজেকে আঁটকে রাখতে পারছিলাম। দু-হাতে মুখ গুজে কান্না করতে রইলাম। সবাই মিলে অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে মাকে আর আমাকে থামাল।

আজ মা আমাকে নিজের হাতে খাইয়ে দিল। আজ আমি মায়ের কোলে মাথা রেখে নিশ্চিন্তায় ঘুমাতে চাই। মা মাথায় হাত বুলিয়ে দিল। এরপর আমার পাশেই শুইয়ে পড়ল। কিন্তু কারো চোখেই ঘুম নেই। না মা ঘুমাচ্ছে না আমি। বেশ কিছুক্ষণ পরে দরজা খোলার শব্দে তাকিয়ে দেখলাম আব্বু এসে দাঁড়িয়েছেন। আমি আর মা দুজনেই উঠে বসে পড়লাম। পানি তো আমাদের চোখেও ছিলো, আব্বুর চোখেও পানি। আব্বু দরজা ভেজিয়ে দিয়ে এগিয়ে আসলো। এরপর ৩ জন মিলে খুব খুব কাঁদলাম।

৩ জন সারারাত আর ঘুমালাম না। বসে বসে কথা বলে কাঁটিয়ে দিলাম। মাঝে মধ্যে আমি গিয়ে চা করে নিয়ে এলাম। তারপর মা আব্বুর সাথে বসে খেলাম। কখনো হাসছি, কখনো আবার কাঁদছি, মন ভরে কাঁদছি। এই তো জীবন, মানুষ হয়ে যখন জন্ম নিয়েছি তবে হাসতেও হবে, আবার কাঁদতেও হবে।

{সত্যি মা থাকাটা খুব জরুরি ছোট ছোট জীবনের সুখ গুলোতে মা ছাড়া ভালো থাকা যায় না। যার মা নেই সেই জানে, এমন কিছু কিছু মূহুর্তে মায়ের খুব প্রয়োজন। যখন একটা মেয়ের বিয়ে হয়। যখন একটা মেয়ে মা হয়। যখন একটা মেয়ে স্বামীর হাজারো অত্যাচার সহ্য করে, এই সময় গুলোতে মা নামক মানুষটা কে খুব প্রয়োজন হয় মেয়েদের। যাদের মা আছে তারা কখনো বুঝবে না। তবে যারা মাকে হারিয়েছে তারা খুব মিস করে প্রতিটি মূহুর্তে মা নামক মানুটা কে। “মা” খুব স্পেশাল একটি শব্দ। পৃথিবীর সব চেয়ে ছোট একটি শব্দ। কিন্তু পৃথিবীর সব থেকে বড় ও গভীর একটি সম্পর্ক। মা আমাদের যতটা বুঝতে পারে, বাবাও খুব খুব স্পেশাল, তারপরও সে কখনোই বুঝতে পারবে না। কারণ মা সব সময় তার সন্তানের সাথে জড়িয়ে থাকে, আষ্টেপৃষ্টে থাকে। সেই গর্ভে ধারণ করা নিয়ে মৃ*ত্যু পর্যন্ত}

সকালে মা রান্নাঘরে চলে গেল, আমিও গেলাম কিন্তু মা আমাকে তার পাশে বসে থাকতে বলল, একটা কাজও ধরতে দিল না।

আজকে মা আমার পছন্দের ব্রেকফাস্ট বানিয়ে দিল। এন্ড নিজের হাতে খাইয়েও দিল।

১০ টার দিকে জোর করে সবাই মিলে পার্লারে নিয়ে গেল। আমার যাওয়ার মোটেই ইচ্ছে ছিলনা।

সবার সাথে চলে এলাম পার্লারে। সেখান থেকে রেডি হয়ে স্যারের পছন্দ করা সেই লেহেঙ্গা পড়ে বধু সেজে বেড়িয়ে এলাম পার্লার থেকে। পার্লার থেকে সোজা বরিশাল ক্লাবে চলে এলাম। সেখানে বিয়ের ফাংশন হবে। দুই বাড়ির অনুষ্ঠান একই সাথে করা হয়েছে। আলাদা বউ ভাত করা হবে না আর। তাদের মেহেমান তারা দাওয়াত দিয়েছে আমাদেরটা আমরা। সবাই আমাকে নিয়ে সোজা নিচ তালায় বর বধুর স্টেজে বসিয়ে দিল। ফুল দিয়ে খুব সুন্দর করে সাজানো ছিলো চারিপাশ। আমার সামনেই বসে আছে মেহমানরা।

ক্যামেরা ম্যান, একজন ভিডিও করছে, একজন ছবি তুলছে। দু একজন মিডিয়ার লোকও ছিলো, যারা স্যারের সাথে পরিচিত হবে হয়ত বা। আমি চুপটি করে বসে ছিলাম।

প্রায় ২টা বাজে, কিন্তু এখনো স্যার বা তার ফ্যামিলির কেউ আসেনি। হয়ত নামাজ টাইম শেষে আসবে তাই ভেবে বসে আছি।

বাট দুটা থেকে ৩টা বাজতে চলল, বর যাত্রী এখনো আসছে না, যা দেখে সবাই একটু টেনশনে পড়ে গেল। অনেক মেহেমান খাবার খেয়ে চলে গেছে। অনেকে এখনো আসছে সবাই জিজ্ঞেস করছে বর এখনো কী করছে? আব্বু, আঙ্কেল (স্যারের আব্বু) দেখতে গেল বাড়ি অব্দি। আমার ও খুব টেনশন হচ্ছে। কী করছে এখনো তারা?

একটু পড়েই শুনলাম বর যাত্রী চলে এসেছে। সবাই খুব আনন্দ করে তাদের নিয়ে আসলো। স্যারকে দেখলাম ফুল দিয়ে মুখ ডেকে রেখেছেন। স্যার এগিয়ে এসে আমার পাশে বসে পড়লেন। যা দেখে আমি নিচের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম।

……এত দেরি কেনো হলো?

……ভাবী আমি ভাই নয়।

……হোয়াট? বাট তুমি কেনো? স্যার কোথায়?

……আস্তে ভাবী। আসলে ভাই ১টার দিকে বের হয়েছে এখনো আসছে না। যা দেখে আঙ্কেল আব্বু বলল ভাইয়ের জায়গায় যাতে আমি এখানে কিছুক্ষণ বসে থাকি, ততক্ষণে ভাই চলে আসবে। প্লিজ ভাবী আমাকে আবার ভুল বুঝো না। আমি শুধু বড়দের আদেশ পালন করছি।

……স্যার কে ফোন দিয়েছ?

……ভাই ফোন ধরছেন না।

……স্যার কিছু বলে গেছে?

……হ্যা বলে ছিলো খুব আর্জেন্ট কাজ আছে। একটা ইমার্জেন্সি পেশেন্ট আছে, চলে আসবে ঘন্টা খানেকের মাঝে। বাট এখনো এলো না।

আমি ওর সাথে আর কথা না বলে স্যারের ফোনে ফোন দিতে লাগলাম। স্যারের ফোন বন্ধ বলছে। খুব টেনশন ফিল করছি। আমি বারবার ঘেমে যাচ্ছি টিস্যু পেপার দিয়ে ঘাম গুলো মুছে নিচ্ছি।

…….ফারিজ স্যারের ফোন বন্ধ তো?

……হ্যা ভাবী।

…….কোন হসপিটালে গিয়েছে বলে গেছে?

……নাহ। কিন্তু তারপরও নয়ন ভাই আর আমি সব প্রাইভেট হসপিটাল গুলোতে খুঁজেছি ভাই যেখানে যেখানে যেতে পারে।

……জুঁথি পানি নিয়ে আয় আমার জন্য।

…….জ্বি আপু।

জুঁথি পানি নিয়ে আসতেই আমি এক চুমুকে সব পানি পান করে নিলাম। এত টেনশন হচ্ছিল না, আমি বসে থাকতেও পারছিলাম না।

প্রায় ৪টা বাজে। এখন সবাই টেনশনে পড়ে গেল। এদিকে কাজি সাহেব বার বার জিজ্ঞেস করছেন বিয়ে কখন পড়াবে? বাট কে কী বলবে? কারো কাছে কোনো উত্তর নেই।

মেহেমান বেশিরভাগ চলে গেছে, শুধু আত্মীয়স্বজনরা বসে আছে। নিজেকে বড়ই অসহায় মনে হচ্ছে। আমি আবার ফোন দিলাম। বাট এখনো ফোন সুইচ অফ বলছে। ওহ গড এটাই বাদ ছিলো। আমি উঠে দাঁড়িয়ে গেলাম। যা দেখে সবাই এগিয়ে এলো।

……কী রে মা কী হয়েছে?

……আব্বু আমি এখনি আসছি, তোমরা এখানে থাকো।

……কোথায় যাচ্ছিস তুই।

……আসছি আমি।

……শোন মা যাস না।

আমি কিছু না শুনে এই বলে দু-হাতে লেহেঙ্গা তুলে আমি জোর পায়ে এগিয়ে যেতে নিলাম। দরজা থেকে বের হতেই দেখলাম একটা অটো এসে থামলো গেইটের ভেতরে। আমার পিছু পিছু সবাই এগিয়ে এলো। এর মধ্যে দেখলাম স্যার অটো থেকে নেমে গিয়ে আমাদের দেখে এগিয়ে এলো। আমিও ছুটে গেলাম তার সামনে।

…….এতক্ষণ কোথায় ছিলেন?

……স্যারি আসলে একটা ইমার্জেন্সি পেশেন্ট ছিলো না গেলেই হতো না। আজ শুক্রবার ছিলো যার জন্য কোনো ডাক্তার পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই আমাকে যেতে হয়েছে। প্লিজ স্যারি। আর কেউ না জানলেও তুমি তো বোঝো।

……ফাইয়াজ ওকে না হয় বুঝিয়ে দিলি। বাট আমাদের? জানিস আজ কতটা অসহায় বোধ করেছি মানুষের প্রশ্নের কাছে? তুই এক ঘন্টার কথা বলে গিয়েছিস এখন কয় ঘন্টা হয়েছে দেখেছিস?

সবাই স্যার কে প্রশ্ন করছিল। বাট আমার চোখ স্যারের হাতের দিকে পড়ল, স্যারের হাতে, শেরওয়ানির হাতায় ব্লাড লেগে ছিলো, যা দেখে আমি স্যারের কাছে এগিয়ে গেলাম। স্যারের হাত ধরতেই সে হাত সরিয়ে নিতে চাইল। আমি জোর করে তার হাত ধরলাম।

…..কী করছ, সবাই আছে এখানে?

……এক মিনিট আমি দেখছি তো?

……পুস্পিতা প্লিজ।

……একদম চুপ করে থাকেন।

এই বলে আমি তার হাত ধরে শেরওয়ানির হাতা সরাতেই দেখলাম হাত ব্যান্ডেজ করা।

…..এটা কীভাবে হলো?

……ও কিছু না। একটু লেগেছিল।

……আমি যা জিজ্ঞেস করছি ভালো ভাবে উত্তর দিন না হয় আমি এখনি এখান থেকে চলে যাবো।

…….আসলে ওই তারাহুরো করে আসতে গিয়ে বাইক এক্সিডেন্ট করে ছিলাম। আমি ঠিক ২:৩০ মিনিটের দিকেই রহনা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ একটা অটোর সাথে সংঘর্ষ হলো। আমি মাথায় ব্যাথা পেয়ে কিছুক্ষণ অজ্ঞান হয়ে ছিলাম। যখন জ্ঞান ফিরল নিজেকে শেরে বাংলা মেডিকেল হসপিটালে পেয়েছি। তারা চিকিৎসা দিচ্ছিল। তাই সেখান থেকে তারাহুরো করে চলে এলাম।

স্যারের কথা শুনে আমি আর কিছুই বলতে পারলাম না, শুধু চোখ থেকে দু-ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ল। আমি স্যারের দিকে তাকিয়েই ছিলাম। কতটা কষ্ট করে এখানে এসেছেন সে। অবশ্যই পুরপুরি চিকিৎসা নিতেও পারে নি?

…….তুই ঠিক আছিস তো বাবা?

……হ্যা আম্মু এখন আমি একদম ঠিক আছি।

……আচ্ছা বাকি কথা পড়ে হবে, ফাইয়াজ চল বিয়েটা সম্পূর্ণ করে নে আগে।

……জ্বি আব্বু।

স্যার এক হাতে আমার হাত ধরল। অন্য হাতে তার মায়ের কাঁধে হাত রেখে এগিয়ে গেল। আমি চোখ মুছে তার সাথে এগিয়ে গেলাম।

স্টেজে গিয়ে সবাই দাঁড়িয়ে গেল। স্যার আর আমি বসে ছিলাম। কাজি সাহেব এসে বসে বিয়েটা সম্পূর্ণ করল। এরপর আত্মীয় স্বজনরা যারা চলে যাওয়ার তারা চলে গেলেন, আর যারা থাকার তারা খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমাদের সাথে চলে এলো বাসায়। আমার আর খাবার মুখে দিয়ে গেল না।

আমাদের বাসায় গিয়ে সব রীতিনীতি, যা যা করার সব করল মা খালামণি, মামি ফুপি মিলে। এরপর আমাদের বিদায় দিল।

স্যারদের বাড়িতে এসে তাদের নিয়মকানুন মেনে বাড়ির ভেতর প্রবেশ করলাম। অল্প সময়ের মাঝে তারা সব অনুষ্ঠান শেষ করে আমাকে একটা রুমে দিয়ে আসলো। দেখলাম সেখানে স্যারও আছেন। সে ড্রেস চেঞ্জ করে এলো। একটা হাপ হাতার ট্রি শার্ট পড়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমি তার দিকে এগিয়ে গেলাম।

…….প্রচন্ড লেগেছে তাই না?

……আরে না অতটাও না।

…….মাথায় দেখি কতটা লেগেছে?

……আরে তেমন লাগেনি বলছি তো।

……তবে আমাকে দেখাতে সমস্যা কী? দেখি এখানে বসেন।

এই বলে স্যারকে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে চুল সরিয়ে দেখলাম নর্মাল ব্যান্ডেজ করা। সেলাইয়ের প্রয়োজন হয়নি হয়ত বা।

…….আর কোথায় লেগেছে?

…….বললাম তো আমি ঠিক আছি।

…….পায়ে লাগেনি?

……সামান্য লাগছে।

……দেখি?

……আরে তুমি তো এখন থেকেই পুরো গিন্নি হয়ে গেছ। আরে আর একটু অপেক্ষা করো।

…….আমি একদম ফাজলামোর মুডে নেই প্লিজ স্যার।

……ওকে ওকে আমি মোটেই আর ফাজলামো করছি না। ঠিক আছে তোমার যা ইচ্ছে করো। আমি একটু শুয়ে পড়ছি কেমন প্রচুর ক্লান্ত লাগছে।

এই বলে স্যার বালিশে মাথা দিয়ে শুয়ে পড়ল। আমি তার ট্রাউজার হালকা পায়ের কাছ থেকে সরিয়ে দেখলাম অনেকটা কেঁটে গেছে, আমি ফোন হাতে নিয়ে ফারিজ কে ফোন দিয়ে মেডিসিন বক্স নিয়ে আসতে বললাম। সে অল্প সময়ের মাঝেই এসে দরজা নক করে উঠল। আমি গিয়ে দরজা খুলে তার থেকে বক্সটা নিয়ে এসে স্যারের পায়ে ব্যান্ডেজ করে দিলাম।

সে ঘুমিয়ে গেছে অনেক আগেই। আমি তার পাশে বসে তাকিয়ে ছিলাম তার ওই চেহারার দিকে, কত নিশ্চিন্তায় ঘুমিয়ে আছে সে। আমার যে খুব ভয় করছে, যদি আজ এমন কিছু হয়ে যেত যা ভাবিনি কখনো? আমার চোখ থেকে টুপ টুপ করে অশ্রু পড়ছে যে গড়িয়ে, খুব ভয় করছে।

হঠাৎ দরজায় কড়া নড়ে উঠল। তাই চোখ মুছে এগিয়ে গিয়ে দরজা খুলে দেখলাম দাঁড়িয়ে আছে ফারিজ।

…….ভাবী তুমি কাঁদছিলে?

……..কই নাতো। (ভালো করে চোখ মুছে)

……ভাই কোথায়?

……ঘুমিয়েছে।

……তখন ঘুমিয়েছে আর উঠে নি?

……নাহ, হয়ত মেডিসিন নিয়েছে তাই। তুমি কিছু বলবে?

……হ্যা আম্মু তোমাকে নিচে যেতে বলেছেন।

……ঠিক আছে আমি আসছি।

এই বলে আমি দরজা ভেজিয়ে দিয়ে ওর সাথে এগিয়ে গেলাম। স্যারের মা আমাকে দেখে হাসি মুখে এগিয়ে এলো।

…….কী রে মা সমস্যা হচ্ছে না তো তোর কোনো?

…….জ্বি না আন্টি। আমি ঠিক আছি।

……আরে আন্টি কে তোর? আমি তো তোর আরেক মা হই। মা না বললেও হবে, আম্মু বলে ডাকিস না হয়। আমার তো মেয়ে নেই, আজ থেকে তুই না হয় মেয়ে হয়ে থাকিস।

……আমি মুচকি হেঁসে মাথা নাড়িয়ে দিলাম।

আন্টি আমাকে তার সাথে নিয়ে গেল। অনেক কিছু বুঝিয়ে দিল। কোথায় কী রাখা আছে, কোথায় কার রুম সব কিছু দেখিয়ে দিলেন। আমিও খুব ভালো ভাবেই সব বোঝার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
আন্টি কথায় কথায় বলে উঠলেন।

……..আচ্ছা মা তুই কী আমার ছেলের উপর রেগে আছিস এখনো?

…….কোথায় না তো? আপনার হঠাৎ এই কথা কেনো মনে হচ্ছে?

…….না আসলে ওর আসতে তো অনেক দেরি হয়ে গেছে। তোর অনেক অপেক্ষা করতে হয়েছিল এজন্য।

…….সে যে আজ এসেছে এটাই আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া ছিলো। আচ্ছা আ….আম্মু, সে যদি আজ না আসতো তবে কী হতো? আমি ভাবতে চাইনা এই কথাটা। সে যে সুস্থ ভাবে এসেছে এটাই অনেক। আর আমিও একজন ডক্টর, আমি জানি তার দূর্বলতা কোথায় ছিলো। তাই আমি তার সাথে কোনো ভাবেই রেগে নেই, আপনি নিশ্চিন্তায় থাকতে পারেন।

…….আমি খুব খুশি হয়েছি তোর কথা শুনে। আল্লাহ তায়া’লা তোদের সম্পর্ক সব সময় মিষ্টি মধুর করে রাখুক। এই দোয়াই করি। (মাথায় হাত দিয়ে)

আম্মুর সাথে কথা বলতে বলতে বাকি সবাই এগিয়ে এলো, স্যারের সব কাজিনরা, তারা আমাকে সাথে করে নিয়ে ড্রইং রুমের সোপায় বসিয়ে দিল। তারাও পাশে বসে পড়ল। এরপর অনেক ইয়ার্কি ফাজলামো করতে শুরু করে দিল।



চলবে…………।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here