#সুখ_পাখি
#Ayrah_Rahman
#part_09
____________
কলেজে..
খুব কষ্ট করে একটা রিক্সা ম্যানেজ করার পর অবশেষে কলেজে এসে পৌছালো আরু ।
রিক্সা থেকে নেমে সোজা চলে গেলো, অডিটোরিয়ামে যেখানে সবাই কাজ করছে, সেখানেই এক কর্নারে দাঁড়িয়ে শুভ্র ও আকাশ কথা বলছে মানে কোন বিষয় নিয়ে ডিসকাস করছে,
আরু ধীরে ধীরে শুভ্র এর সামনে গিয়ে দাড়ালো,
,আরুকে দেখা মাত্র ই শুভ্র আকাশকে একটা কাজ দিয়ে পাঠিয়ে দেই,
আকাশ চলে যাবার পরই শুভ্র আরুর দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো
“কাম উইথ মি”
আরু খানিকটা ভড়কানো গলায় বলল,
“কেন?”
শুভ্র ভ্রু বাঁকিয়ে তর্জনি আঙুল দিয়ে ভ্রু চুলকাতে চুলকাতে বলল,
” Don’t talk, just follow me!”
বলেই শুভ্র হাটা শুরু করলো।
আরু আর কোন কথা না বাড়িয়ে শুভ্রর পিছনে পিছনে নিজেও দৌড় দিলো,
শুভ্র আরুকে নিয়ে একটা রুমে নিয়ে যায় যেখানে টেবিলের উপর এক গাদা জিনিস পত্র…
“এগুলো নিয়ে আমার সাথে এসো”
এতোজিনিস দেখে তো আরুর মাথা ঘুরে যাবার দশা। আরু আমতাআমতা করে বলল,
“এত জিনিস আমি নেবো?”
শুভ্র ভ্রু কুচকে বলল,
“হ্যা তুমি নিবা, তাছাড়া তো আমি আশেপাশে কোন মানুষ দেখছিনা যে সে নেবা, সুতরাং তোমাকেই নিতে হবে”
আরু খানিকটা কঠিন স্বরে বলল,
” আমি নিবো না মানে নিবো না”
শুভ্র আরুর দিকে এক পা দু পা করে এগুতে এগুতে বলল,
” কি বললা? আবার বলো”
শুভ্র র আগানো দেখে আরুর তো গলা শুকিয়ে যাচ্ছে আর উপায় না পেয়ে সে রাজি হলো,
আরু ভেবলা মার্কা হাসি দিয়ে বলল,
” আরে আরে এমন আগাচ্ছেন কেন, আমিই নিচ্ছি তো”
বলেই সে জিনিস গুলো হাতে নিলো,
“কাম উইথ মি”
, বলে শুভ্র হাটা শুরু করলো
আরুও শুভ্রের পেছন পেছন চলল,
দুজন ই বায়োলজি ল্যাব এ গেলো,
আরুর ও তার হাতের জিনিস গুলো টেবিলে রেখে যেই না চেয়ারে বসতে যাবে শুভ্র চেয়ার টা টান দিয়ে বসে গেল,অগত্যা আরুকে দাড়িয়ে থাকতে হলো, কারণ, ল্যাবে শুধু একরাই চেয়ার ছিলো,
আরুর মেজাজ তো তুমুল লেভেলের খারাপ হচ্ছে,
“শা*লা বা*ন্দর, হনুমান, নাইজেরিয়ার হাত্তি,
বি*লাই না না শুধু বি*লাই না ধলা বিলাই,
চেহারা না তো পুরা সাদা ভুত,
এই বেডার উপ্রে নাকি কত মাইয়া কে’রাস খাইছে,
,এহহহ কি না চেহারা নাম রাখছে পেয়ারা,
মন ডা কইতাছে এক স*ট দিয়া উ*গাণ্ডার রানীর কো*লে বয়াইয়া দেই,শালা কু*ত্তা!”
” আমাকে ওয়াস ওইথ আউট ডিটারজেন্ট, করা শেষ হলে কি কাজ শুরু করতে পারি?
বলেই শুভ্র আরুর দিকে পূর্ণ দৃষ্টি দিলো,
কিন্তু আরুর তো সেদিকে কোন খেয়াল নেই সে তো তখনো শুভ্রকে মনে মনে গা*লি দিচ্ছে, শুভ্রর কথা শুনে মুখ ফসকে বেরিয়ে গেলো,
” নাহ শেষ হয় নাই,শালা রে আজ সারাদিন বকলেও মনের শান্তি পামু ন”
বলেই দু হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরলো আরু,
শুভ্র চোখ বড়ো বড়ো করে বলল,
” কিহ? এই কি বললা তুমি?
শুভ্রর ধমকে আরু পিলে চমকে উঠে।
এটা ভেবেই তো তার গলা শুকিয়ে আসছে, এখন শুভ্র তাকে কি করবে!
“আআবব স্যার! আমি কিছু বলি নাই তো,হে হে ”
মিথ্যা হাসি দিয়ে কথা টা বলল আরু।
শুভ্র চোখ ছোট ছোট করে বলল,
“তাহলে কি আমি ভুল শুনলাম?”
” এমা না না কি যে বলেন না”
” যাও অফিস থেকে আমার জন্য এক কাপ কফি নিয়ে আসো”
আরু আমতাআমতা করে বলল,
” আমি?”
শুভ্র চোখ রাঙিয়ে বলল,
” না তো কি আমি?”
আরু যেতে যেতে বলল,
” যাচ্ছি তো,এমন করেন কেন”
বলেই আরু কফি আনতে চলে গেলো,
আরু চলে যেতেই শুভ্র একটা মুচকি হেসে মনে মনে বলতে লাগলো,
পাগলি একটা,কখন যে বড় হবা? এখন তোমাকে আমি কিছুই বলবো না,এখন শুধু তুমি আমাকে চিনবে যা করার তোমার এক্সাম এর পরেই করবো,
এখন শুধু তুমি আমার সাথে সাথে থাকবে এবং কাজ শেষে আমরা চলে যাবো,
ততক্ষণে আরু কফি নিয়ে হাজির,
“এই নেন আপনার কফি,,”
শুভ্র কফি নিতে নিতে বলল
” থ্যাংস, বাট….”
আরু ভ্রু কুচকে বলল,
” আবার কি?”
” কফি তে কি ছু মিশিয়ে আনো নি তো?”
“আপনার কি তাই মনে হয়,”
আরু চোখ গুলো ছোট ছোট করে শুভ্র কে প্রশ্নটা করে
শুভ্র নির্লিপ্ত ভঙিতে বলল,
“তবে তোমাকেও তো বিশ্বাস ও নেই,কখন যে কি করে বসো,”
” মানে?”
” মানে, এখন তুমি এখান থেকে অল্প খেয়ে প্রুভ করবা যে এখানে কিছু মিশানো নেই,
সিম্পল! ”
“ওকে ওকে,,খাচ্ছি,”
বলেই আরএ কফিতে ছোট করে এক চুমুক দেওয়া মাত্র ই শুভ্র কফির কাপ টা আরুর কাছ থেকে নিয়ে যায়,
“ওকে এখন যাও,”
অডিটরিয়াম থেকে কিছু কাগজ পত্র নিয়ে আসো,
নিচে আকাশ আছে গিয়ে বললেই ফাইল টা দিয়ে দেবে।
” যাচ্ছি..”
আরু নিচে গিয়ে দেখে আকাশ নিচে কিছু ছেলেদের সাথে কথা বলছে,
আরু আকাশের সামনে গিয়ে দাড়ালো,,
” আকাশ ভাইয়া”
আকাশ আরুর দিকে ফিরে একটা হাসি দেই,
” আরে আরু যে, কিছু লাগবে?”
“আপনার ওই খ*চ্চর বন্ধু কি একটা ফাইল নিতে পাঠাইছে”
” কে? শুভ্র? ”
আকাশ শুভ্র কে নাম ধরেও ডাকে আবার ভাই ও ডাকে, এটা তার মুড এর উপর নির্ভর করে
“- হুম..”
আকাশ হাসতে হাসতে বলল,
” শুভ্র কে খ*চ্চর বললা?”
” ওফফ আকাশ ভাই হাসবেন নাতো,আমার জীবন পরা তেজপাতা বানাই দিতেছে,”
আকাশ হাসতে হাসতে বলল,
“ওমা তাই নাকি”
” হু তাড়াতাড়ি ফাইল টা দিয়ে দেন না হলে আবার দেরি হলে বকা শুরু করবে”
“আচ্ছা দাড়াও আমি নিয়ে আসছি বলেই”
আকাশ ফাইল টা নিয়ে আসতে গেলো,
আবার ফাইল নিয়ে এসে বলল.
“এই নাও ফাইল”
“ধন্যবাদ ভাইয়া “বলেই আরু সেখান থেকে চলে যায়,
বায়োলজি ল্যাবে,
” এই নেন আপনার ফাইল!”
শুভ্র ফাইল টা নিতে নিতে বলল,
“থ্যাংকস, পাশের রুম থেকে একটা চেয়ার নিয়ে আসো”
” কেন?”
শুভ্র দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বলল,
” মেয়ে তুমি বেশি প্রশ্ন করো,যা বলছি তাই করো”
“ওকে ওকে.”
আরু পাশের রুম থেকে একটা চেয়ার নিয়ে আসে,
” হুম এবার এখানে বসো”
আরু ও বিনাবাক্যে বসে পড়ে,
শুভ্র একটা কলম আরুর দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে..
এই নাও কলম,এই ফাইলে সিগন্যাচার করো,
” কেন? আর এটা কিসের প্যাপার?”
” তুমি কি ডাক্তার হতে চাও?”
“হ্যা অবশ্যই,”
“এই পেপার গুলো হলো মেডিকেল এর জন্য যারা আগ্রহী তাদের জন্য আলাদা কোচিং ব্যবস্থা,করা হয়েছে,এই কলেজের সবার থেকে সাইন নেয়া হবে,এখন তুমি তোমার সাইন করো।
“ওহ আচ্ছা”
আরু আর কিছু না ভেবে সব পেপারে সাইন করে দিলো।
সাইন করা শেষে শুভ্র পেপার গুলো নিয়ে নেয়,
তারপর আরুকে শুভ্র মেডিক্যাল এর কিছু বেসিক জিনিস গুলো বুঝিয়ে দেই এবং কিছু এসাইনমেন্ট দিয়ে দেয়
আরুও লক্ষি মেয়ের মতো বুঝে নেয়।
ছুটি শেষে শুভ্র আরুকে বাসা পর্যন্ত ছেড়ে যায়,
_______________________
এভাবে চলে যায় এক মাস.
এই এক মাসে আরুকে শুভ্র নানান ভাবে হে’নস্তা করছে আবার আরুও শুভ্রের নানান কাজে সমস্যা করেছে,
এক মাস পরে সবার কাজ শেষে শুভ্ররা নিজেদের কলেজে চলে যায়,
আরুদের পরীক্ষা ও কাছাকাছি চলে আসে,
আরু এখন রাত দিন সমানে পরছে যেন এইচ এস সি তে তার ভালো রেজাল্ট হয়,
_____________________
তেমনি একদিন….
চলবে.
[ কেমন লাগলো ]