প্রেমময়নেশা (The story of a psycho lover) #পর্ব-22(বিয়ে স্পেশাল) #Jannatul_ferdosi_rimi(লেখিকা)

0
345

#প্রেমময়নেশা (The story of a psycho lover)
#পর্ব-22(বিয়ে স্পেশাল)
#Jannatul_ferdosi_rimi(লেখিকা)

ঘুমের মধ্যে হঠাৎ অনুভব করি। আমি কিছুতে বসে আছি আর সেইটা নড়ছে। আস্তে আস্তে চোখে খুলে নিজেকে গাড়িতে আবিষ্কার করে আমি ভড়কে গেলাম। আমি গাড়িতে কীভাবে। পাশে উনাকে দেখতে পেয়ে খানিক্টা ভরশা পেলাম। উনি খুব মনোযোগ সহকারে ড্রাইভিং করে যাচ্ছে। বাতাসে উনার তামিল হিরোদের মতো চুলগুলো উড়ছে। আমাকে দেখে উনি বলে উঠলেন- রিমিপরীর ঘুম ভাজ্ঞলো তাহলে? আমি অবাক হয়ে বলে উঠলাম- আমি তো আমার নিজের বাড়িতে নিজের ঘরে ছিলাম। এখানে কীভাবে? অয়ন বাঁকা হেঁসে বলে উঠে- আমি নিয়ে এসেছি!
আমি বলে উঠলাম- কিন্তু কেন? অয়নঃ দেখো কালকে আমাদের বিয়ে। তারমানে শুধু আজকে রাতের জন্য আমি তোমার লাভার আর তুমি আমার!
আমি ভ্রু কুচকে বলে উঠলাম-
লাভার না সাইকো লাভার। প্রতিউত্তরে অয়ন মুচকি হেঁসে বলে উঠলো- শুধুমাত্র আজকের জন্য তোমার সাইকো লাভার কিন্তু কালকে থেকে তোমার সাইকো স্বামী আর তুমি আমার মিস্টি বউ।
উনার মুখে বউ ডাক শুনে আমি মনে এক আলাদা শিহরণ বয়ে গেলো। এই লোকটা কালকে থেকে আমার স্বামী ইসসস🙈🙈!!
রিমিঃ কিন্তু এখন আমরা কোথায় যাচ্ছি আর আপনিই বা আমাকে এইখানে কীভাবে আনলেন।

অয়নঃ ভাবলাম শেষবার এর মতো আমাদের প্রেমিক-প্রেমিকার লাস্ট নাইট টা সেলিব্রেট করলে কেমন হয়? আর আপনাকে কীভাবে আনলাম আপ্নাএ বারান্দার দিয়ে পাইপ বেয়ে।
আমি অবাক হয়ে বলে উঠলাম-
আমাকে নিয়ে অই পাইপ বেয়ে আপনি নিচে নেমেছেন?

অয়ন ঃ তোহ? তোমার অই বাপ কি আমাকে যেতে দিতো? যাহ শ্বশুড় পেয়েছি প্রথম প্রথম তো আমাকে সহ্য করতেঅ পারতো নাহ।

রিমিঃ আম যদি পড়ে যেতাম?

অয়ন ডোন্ট কেয়ার একটা ভাব নিয়ে বলে উঠে-
আমি থাকতে কি আমার রিমিপরীকে পড়তে দিতাম? কিন্তু তুমি যা ভাড়ি।

আমি মুখ ফুলিয়ে ফেললাম অয়ন শব্দ করে হেঁসে উঠলো-

অয়ন আমাকে একটি লেকের পাড়ে নিয়ে আসলো!
জানুয়ারি মাস রাতের সময় কুয়াশায় আচ্ছন্ন পড়েছে.। নরম ঘাসের উপর পা দিয়ে আমি আর অয়ন হেটে যাচ্ছি আমার গাঁয়ে একটা চাঁদর তাও কিছুটা শীত লাগছে অয়ন সেটায় হয়তো বুঝে গেলো। অয়ন তার জ্যাকেট আমাকে পড়িয়ে দিলো।
আমি বলে উঠলাম- আপনার শীত লাগবে তো!
অয়ন বলে উঠলো- এইটুকুতেই আমার কিচ্ছু হবেনা।
আমি আমার জ্যাকেট দিয়ে আমাকে ও অয়নকে দুজনকেই ঢেকে দিলাম।অয়ন মুচকি হাঁসলো। আমরা দুজনেই একই জ্যাকেটের ভিতরে। কি সুন্দর মুহুর্ত। আচ্ছা এই মুহুর্ত যদি এখানেই থেমে যেতো?
আমার কথা শুনে অয়ন আমার দিকে ঝুকে বলে উঠলো- তাহলে আমার রিমিপরীকে আমি আমার বাড়িতে নিয়ে যাবো কীভাবে আমার বউ করে?
আমি বলে উঠলাম- আমি জানিনা কিন্ত মনে হচ্ছে এই মুহুর্তে আমি আর নাও পেতে পারি।
অয়ন আমার হাত টাকে শক্ত করে ধরে বলে-
আমি আছি তোমার সাথে। এইভাবে সারাজীবন থাকতে চাই!
আমি বলে উঠলাম- যদি আমাকে কোনোদিন ভুলে যান! অয়ন আমার কপালের সাথে নিজের কপালে
ঠেকালো!
অয়ন মিহি কন্ঠে বলে উঠে- আমি নিজেকে ভুলে যেতে পারি! কিন্তু আমার রিমিপরীকে নাহ।
অয়নের মিহি কন্ঠে আমার এক আলাদা অনুভুতির সৃস্টি হলো। আমার চোখ থেকে অজান্তেই টুপ করে জল গড়িয়ে পড়লো-
এতোটা ভালোবেসে কবে বেসে ফেললেন আমাকে?
অয়ন প্রতিউত্তরে শুধু মুচকি হাঁসি উপহার দিলো।

রাত প্রায় ২টো
জানালার ঘেসে দাঁড়িয়ে আছে সুমাইয়া। ভাবতেই অবাক লাগছে কালকে তার ছোট্র বোনটির বিয়ে হবে। কত ছোট ই ছিলো তার বোনটি এইতো তার মনে পড়ে যায় সেদিন ই তার ছোট্ট বোনটি তার হাত ধরে হাটা শিখেছিলো। আর কাল তার বিয়ে অবাক করার বিষয়। আচ্ছা রিমির ঘরে একবার গেলে কেমন হয়? নিজের মনকে পরিবর্তন করে ফেলল সুমাইয়া না থাক। এখন একটু ঘুমাক। তখনি সুমাইয়ার ফোনে অচেনা নাম্বার থেকে কল আসলো।
সুমাইয়া হ্যলো বলে উঠলো-কিন্তু অপাশ থেকে কেউ কিছু বলছেনা। সুমাইয়া জানে কে ফোন করেছে হ্যা ফারহান করেছে সে সিউর তাই সেও চুপ করে চোখ বন্ধ করে ফেলল।
এদিকে ফারহান চোখ বুঝে সুমাইয়ার নিশ্বাসের শব্দ অনুভব করতে লাগলো।।

গাড়ি এসে থামলো আমাদের বাড়ির সামনে।
আমি বলে উঠলাম-
এখন কী হবে?
অয়ন বলে উঠে- এখন আর কি হবে যাও নাকি আরো থাকতে চাও আমার সাথে তাহলে আমার সমস্যা নেই( দুস্টু হেঁসে)
আমি বলে উঠলাম- আমার দরকারও নেই।
এখন কীভাবে যাবো দরজা দিয়ে তো যেতে পারবো নাহ সবাই জেনে যাবে।

অয়নঃ একটা কাজ করো পাইপ বেয়ে উঠে পড়ো।

রিমিঃ ইসস আমি পড়ে গেলে তখন আপনি আমাকে কোলো তুলে দিয়ে আসুন উপরে

অয়নঃ মানে এখন আমি আবার যাবো?

রিমিঃ হুম কে বলেছো আমাকে এইভাবে আনার। এখন আপনাকেই দিয়ে আসতে হবে।

অগত্যা অয়ন আমাকে পৌছে দিতে বাধ্য হয়।

এইসব ভাবতে ভাবতে অয়ন মুচকি হেঁসে দেয় সত্যি তার বউটা একটা বাচ্ছা।

তখনি তার ফোনে একটি কল আসে

অয়ন খানিকটা অভিমান এর সুরে বলে উঠে-
আপনি কে ভাই? এই নাম্বার কেন ফোন করেছেন আপনাকে ঠিক চিনতে পারছিনা

অইপাশ থেকে শব্দ করে হাঁসির শব্দ আসে

পুরুষকন্ঠে বলে উঠে-
তুই তো জানিস দোস্ত আমাকে নিজের ডক্টর এর প্যাক্টিস এর জন্য আমেরিকা আসতে হয়েছে নাহলে আমি তোর বিয়েতে নিশ্চই থাকতাম।

অয়নঃ তুই আর আমাকে কিছুই বলিস না। আমি তো তোর বন্ধু ই নাহ

—–তুই আমার বন্ধু কম ভাই বেশি প্লিয রাগ করে থাকিস না আমি তাড়াতাড়ি পারি বাংলাদেশে আসছি ভাবি আর তোর জন্য।

অয়ন চুপ থাকে।

–এইবার প্লিয মন খারাপ করিস না আমার ভালো লাগেনা। এইভাবে গুমড়োমুখো হয়ে কি বিয়ে করবি? তখন দেখবি ভাবি বিয়েটাই ক্যানসাল করে দিবে।

অয়ন হেঁসে উঠে-

–এই না হলে আমার দোস্ত। শোন ভাবি সম্পর্কে কিছু একটা বল।

অয়ন ঃ তোর ভাবি সে তো আমার মায়াবতীরে তার প্রেমে পড়ে আমি একেবারে সাইকো হয়ে গিয়েছি। একদম বাচ্ছা জানিস। আমার রিমিপরী।

—রিমিপরী বাহ

অয়নঃ হুম রে তুই তো পায়েল এর ব্যাপারে সবই জানিস। রিমিপরী আমার লাইফ এ ইঞ্জেল হয়ে এসেছে।

অপাশ থেকে কেউ মুগ্ধ হয়ে শুনছে

—তাহলে একবার তো ভাবি কে দেখতেই হবে যে আমার দোস্ত তাকে পুরো সাইকো বানিয়ে দিলো।

অয়নঃ আমি অনেক অনেক ভালোবাসি জানিস।
আমি চাই আমার রিমিপরী সবসময় ভালো থাকুক অনেক ভালোবাসি যে তাকে।

—এতোটা ভালোবেসে ফেললি তাকে।

অয়নঃ আমি রিমিপরী মানুষ টায় এমন যাকে সব টুকু দিয়ে ভালোবাসা যায়। যে কেউ তার প্রেমে পড়তে বাধ্য।

—— তার মানে আমিও প্রেমে পড়ে যেতাম(মজা করে)

অয়নঃ খবরদার রিমিপরীকে শুধুই তার সাইকোই ভালোবাসতে পারে।

অইপাশ থেকে শব্ধ করে হাঁসির শব্দ শুনা গেলো।
অয়ন নিজেও হেঁসে দিলো।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here