প্রেমময়নেশা(The story of a psycho lover) #পর্ব-23(বিয়ে স্পেশাল-২) #Jannatul_ferdosi_rimi(লেখিকা)

0
590

#প্রেমময়নেশা(The story of a psycho lover)
#পর্ব-23(বিয়ে স্পেশাল-২)
#Jannatul_ferdosi_rimi(লেখিকা)

সকালে পুরো চৌধুরী বাড়িতে যেনো বিয়ের ধুম লেগেছে। রুশান সব সামলাচ্ছে।রুশনি খাবারের দিকটা দেখছে। সানা হলুদের অনুষ্ঠান সামলাচ্ছে।মিসেস কলি সব আত্বীয় ও অতিথিদের সাম্লাচ্ছে।কাজ অনেক বেশি। চৌধুরী বাড়ির বিয়ে বলে কথা কম কাজ নাকি। সবাই হিমশিম খাচ্ছে।অয়ন এখনো ঘুমাচ্ছে। কাল রাতে রিমির সাথে অনেকক্ষন বাইরে থেকেছে তাই সকালে ঘুমিয়ে নিচ্ছে। কিছুক্ষন এর মধ্যেই হলুদ এর অনুষ্টান শুরু হবে। মিসেস কলি খেয়াল করলো আজকে পায়েলকে দেখা যাচ্ছেনা। অসুস্হ মেয়েটা কোথায় গেলো?কাল থেকে ঘর থেকেও বের হচ্ছেনা। তাই সে তাড়াতাড়ি পায়েল এর ঘরের দিকে গেলো। কিন্তু একি দরজা তো খুলা পায়েল কোথায়? মিসেস কলি ঘরে গিয়ে দেখে ঘরে কেউ নেই। পুরো ফাঁকা।পায়েল এর লাগেজ টা তো নেই। তার মানে কি পায়েল চলে গিয়েছে নাকি? সে তাড়াতাড়ি অয়নের ঘরে যায়। অয়ন আরামে ঘুমাচ্ছিলো। মিসেস কলি তাকে তাড়াতাড়ি ডেকে তুলে। এতে অয়ন খানিক্টা বিরক্ত হয়। সে ঘুম থেকে হায় তুলতে তুলতে বলে উঠে- মা আরেকটু ঘুমাতে দাও প্লিয।
মিসেস কলিঃ কি ঘুমাতে দিবো।পায়েলকে কোথাও দেখছিনা ।
অয়ন ঘুমমিশ্রিত কন্ঠে বলে উঠে-
দেখো গিয়ে অন্য কোথায় আছে। আমাকে ডিস্টার্ব করোনা ঘুমাতে দাও। মিসেস কলি বলে উঠেন-
পায়েল এর ঘরে তার লাগেজ টাও নেই।
এইবার অয়ন উঠে বসে বলে উঠে-
মানে? ও কোথায় গেলো?
মিসেস কলিঃ সেটাও আমি বুঝতে পারছিনা। তুই আমার সাথে আয়।
মিসেস কলির সাথে অয়ন পায়েল এর ঘরে গিয়ে দেখে সত্যি পায়েল কোথাও নেই। তার একটি জিনিসপত্র ও ঘরে নেই।

অয়ন টেবিল এর কাছে গিয়ে দেখে একটা চিঠি-
অয়ন খুলে দেখে –
পায়েল এর হাতে লেখা।
অয়ন আমি আসলে কি দিয়ে সহ্য করবো বুঝতে পারছি না। আমি নিজের ভুল বুঝে তোমার কাছে ফিরে আসতে চেয়েছিলাম কিন্তু দেখি তোমার লাইফে রিমি অলরেডি চলে এসেছি। আমি সহ্য করতে পারিনি তাই আমি মিথ্যে অসুখের নাটক করি। যাতে তুমি আমার কাছে ফিরে আসো। কিন্তু কালকের ঘটনা থেকে আমি বুঝে গিয়েছি। রিমি তোমার জন্য কি তাই আমি সব ছেড়ে চলে যাচ্ছি বিদেশে। তুমি আর রিমি ভালো থেকো। তোমাদের বিবাহ জীবন সুখের হোক। পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিও।
ইতি তোমার অতীত,,
পায়েল।
পায়েল এর চিঠি পড়ে অয়ন চুপ হয়ে গেলো।

এদিকে
রিমির বাড়িতে,,
আমাকে হলুদের সিল্কের শাড়ি পড়ানো হয়েছে শাড়িটি খুব সুন্দর। মাথায় খোপা করা।পার্লার থেকে সাজানো হয়েছে।
সুমু আমার কাছে এসে বলে উঠে-
বিয়ের কণে কে তো অনেক সুন্দর লাগছে।
আমি বলে উঠলাম-
বিয়ের সব বউকেই একটু আক্টু ভালো লাগে্। এতে নতুন কী?
সুমু আমার আমাকে একটু ভালো করে দেখে বলে উঠলো-
সবার মুখে কি আর তোর মতো মায়া থাকে। তুই তো পরী। আমার অয়ন ভাইয়ার রিমিপরী।
আমি লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেললাম।
সুমু হেঁসে বলে উঠলো-
আমার লজ্জাবতী বোন দেখি লজ্জাও পায় ।
রিমিঃ দূর তুমিওনা
সুমুঃ হুম এইবার আয়! গাঁয়ে হুলুদের সময় হয়ে যাচ্ছে। আমি মাথা নাড়াই।
সুমু আমাকে নিয়ে স্টেজের দিকে যায়। বাবা অতিথি আপ্পায়ন করছে। মা ও খালা চাচিরা মিলে আমার গাঁয়ে হুলুদ লাগিয়ে যাচ্ছে। তারপর আমার বান্ধুবিরাও লাগিয়ে দিচ্ছে। বাবা আমাকে লাগাতে গিয়ে কেঁদেই দিলেন আমিও কেঁদে দিলাম। বাবার কাছে আমি খুব আদরের। আজ অন্য বাড়ির বউ হয়ে যাবো সবার কাছেই এই মুহুর্ত টা কষ্টের।
বাবাঃ আমার মা তুই সবসময় ভালো থাক।
মাও কেঁদে যাচ্ছে। সুমুর চোখেও জল।
এদিকে।
অয়ন কে একেবারে ফারহান আর বাকিরা বন্ধুরা মিলে ভুত বানিয়ে ফেলেছে। অয়ন অগ্নিদৃস্টি নিক্ষেপ করে বলে উঠে-
শালা এটা কী করলি তোরা?
ফারহানঃ দেখ বিয়ের বরকে এইভাবেই দিতেই হবে
অয়নঃ আমারও সময়ও আসবে।
ফারহান হেঁসে উঠলো।

।।।।।দুই পক্ষের হলুদ অনেক সুন্দর ভাবে সম্পর্ণ হলো।

—+++
পার্লার থেকে স্টাফ এসে আমাকে সাজিয়ে যাচ্ছে।
অয়নের সেই বেনারশি পড়িছি আমি শুধুমাত্র আমার সাইকোটার জন্য একেবারে নববধু সাজে।
সোনার অলংকার আমার গাঁয়ে পড়ানো হচ্ছে।
সাজানো শেষ হলে আমি আয়নায় নিজেকে দেখে নিজেই ক্রাশ খাচ্ছি। সবাই আমার দিকে মুগ্ধ হয়ে তাঁকিয়ে আছে।
তখনি আমার ফোনে অয়নের ফোন আসে। আমার কেন যেনো খুব লজ্জা লাগছে। আমি কাঁপাকাঁপা হাতে ফোন তুলি।
রিসিভ করার সাথে সাথেই আমার বুকে ঢিপঢিপ করে আওয়াজ করে যাচ্ছে।
অয়ন বলে উঠলো-
সাজানো কম্পলিট?
আমি ছোট্ট করে বলে উঠি-
হুম
অয়ন এক্সাইটেড হয়ে বলে উঠে- আমার রিমিপরীকে বধু সাঁজে দেখার জন্য
আমার তর সইছে নাহ। এক্ষুনি চলে আসতে মন চাইছে।

আমি হেঁসে দিলাম।
অয়নঃ আজই আমাদের অপেক্ষার শেষ আমার রিমিপরী।

ফোন রাখার সাথে সাথেই আম্মু আমার কাছে এসে ছলছলে চোখে বলে উঠে-
বাহ আমার মেয়েটাকে একেবারে রানি লাগছে।
সুমু এসে বলে উঠে-
রানি না বলো অয়ন ভাইয়ার রিমিপরী!
মা মুচকি হেঁসে বলে উঠে-
আমার ছোট্ট মেয়েটা আজ অন্যের বাড়ির বউ হয়ে যাবে। ভাবতেই কান্না পাচ্ছে।
আমি মাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেই।

সুমু বলে উঠে-
আরে ভাই। ম্যাকাপ নষ্ট হয়ে যাবে তোহ। একেবারে পেত্নি লাগবে। তখন দেখবি ভাইয়া তোকে ভুত মনে করে পালিয়ে যাবে(মজা করে)
আমি স্পষ্ট দেখতে পারছি সুমুর চোখে জল। আমি সুমুকেও জড়িয়ে ধরলাম।

।।।।।।
কিছুক্ষন এর মধ্যে বাইরে থেকে শব্দ এলো বর এসেছে।
সবাই ছুটে চলে গেলো। প্রথমে গাড়ি থেকে অয়ন বেড়িয়ে গেলো। সাথে সাথে বড় কার্পেট বের হয়ে গেলো। অয়ন কার্পেটে পা রাখার সাথে সাথেই ফুলের বর্ষন শুরু হলো।
অয়নকে দেখে সবাই হা হয়ে রইলো।
গোলাপী গোল্ডেন শেরওয়ানী পড়েছে অয়ন চোখে কালো সানগ্লাস হাতে বড় তলোয়ার। আমি একেবারে উনাকে দেখে হা হয়ে রয়েছি আমার হবু বর একেবারে দেখি তামিল হিরোদের ফেল করিয়ে ছাড়বে ইসস🤭!!
সাইন্ড বএক্স এ বেজে যাচ্ছে
💕
Tere ghar ayya mein ayya tujko lena
dilke badleme dil ka najrane leke 💕
tere ghar aaya mein aaya tujko lena
dil ke badle mein dil ka najrane leke
mere har darkan meya bole hain sun sun
sajaan ji ghar ayye sajan ji ghar ayye
dulhan yeeo sarmayee sajan ji ghar ayye
গানের সাথে তাল মিলিয়ে অয়ন ও তার বন্ধুরা নেচদ যাচ্ছে আমি জানালে থেকে দেখছি আর মুচকি হাঁসছি।

অয়নকে স্টেজে বসানো হলো।
কাজি এখনো পৌছেনি। ২ ঘন্টা এখানো বাকি বিয়ে পড়ানোর। বিয়ে পড়ানোর পরে কণেকে স্টেজে আনা হবে। অয়ন অপেক্ষা করছে আর কিছু সময় পরেই তার রিমিপরী তার সুম্পুর্ন হবে।
ফারহান সুমাইয়াকে দেখে যাচ্ছে।

মিসেস কলি ও রুশনি আসেনি।
তাদের ভাষ্যমতে তাদের বিয়েতে আসাএ নিয়ম নেই।
অয়ন অনেক রিকুয়েষ্ট করেছিলো কিন্তু সে ব্যর্থ। সানা সিল্ফি তুলাতে ব্যস্ত। রুশান ও আশরাফ সাহেব নিজেদের মধ্যে কথা বলে যাচ্ছেন।

তখনি অয়নের ফোনে একটা কল আসে।

সুমু তাড়াতাড়ি রিমির ঘরে এসে বলে উঠে-
তুই জানিস কি হচ্ছে?

আমি বলে উঠলাম- কিহ

সুমুঃ অয়ন ভাইয়া নাকি হসপিটালে যাবে এখন
আমি অবাক হয়ে বলে উঠলাম- কিহ?

আশরাফ সাহেবঃ কিন্তু বাবা আজ তোমার বিয়ে
আজ না গেলে কি নয়.?

অয়নঃ আসলে আংকেল হসপিটালে একটি পেশেন্ট এর অবস্হা ক্রিটিকাল আমি ছাড়া সেই ওটি কেউ করতে পারবেনা

রুশানঃ কিন্তু তোমার জন্য আজকে একটি ইম্পোর্টেন্ট দিন আজকে যেওনা

অয়নঃ একটা মানুষের জীবন-মরনের বিষয়। তাছাড়া এখনো যথেষ্ট সময় আছে। আমি ওটি টা করে এসে পড়বো।
তখনি আমি ছুটে চলে এলাম। রিমিকে দেখে অয়ন যেনো থমকে গেলো। একে কাকে দেখছে সে তার রিমিপরীকে। এই সাজেই তো সে তার রিমিপরীকে দেখতে চেয়েছিলো। অয়নের মিস্টি মায়াবতী বউ।
অয়ন যেনো ঘোরের মধ্যে চলে গিয়েছে। হার্ট বিট জোড়ে জোড়ে বিট করছে।

তাও অয়ন নিজেকে সাম্লে নিলো।

মা এসে বলে উঠে- তুই এখানে আসতে গেলি কেন?

আমি বলে উঠলাম- আমার মনে হয় উনার যাওয়ার দরকার।
সবাই আমার দিকে অবাক দৃস্টিতে তাঁকিয়ে থাকে

বাবাঃ তুই কি বলছিস আজকে তোদের বিয়ে।

আমি বলে উঠলামঃ মানুষের জীবনের থেকে বিয়ে বড় নয় আর তার থেকেও বড় কথা উনি ডক্টর মানুষের জীবন বাঁচানোও উনার কর্তব্য।
আমি জানি উনি ওটি শেষ করে ফিরে আসবেন

অয়ন আমার কাছে এসে আমার হাত টা শক্ত করে ধরে বলে উঠে-
ধন্যবাদ আমার রিমিপরী আমাকে সাপোর্ট করার জন্য। এই না হলে আমার বউ। আমি কথা দিচ্ছি আমি ফিরে আসবো যথাসময়ে।

আমি বলে উঠলামঃ
আমার বিশ্বাস আছে আপনার উপর।

অয়ন ঃ আমার জন্য অপেক্ষা করো রিমিপরী।

রিমিঃ সারাজীবন করবো

অয়ন আমার হাত ধরে শব্দ করে চুমু খায়

এই বলে অয়ন চলে যায় কেউ তাকে আটকাতে পারলো না অয়নের কেন জানি এখন তার রিমিপরীকে ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করছেনা কিন্তু সে নিরুপায় তারও কর্তব্য আছে।
আমি অয়নের যাওয়ার পানে চেয়ে রইলাম

এদিকে আমার মন ও মানছেনা উনাকে যেতে দিতে
কিন্তু আমি জানি উনি ঠিক ফিরে আসবেন।

চলবে কি?

24 part
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=122122554878106573&id=61553197202722&mibextid=Nif5oz

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here