#প্রমত্ত_অঙ্গনা
#লেখিকা_আরোহী_নুর
৩০,৩১
হাসপাতালে অনেক তোরজোর শুরু হয়েছে,অনেক এমারজেন্সি দেখার পর ক্লান্ত হয়ে নিজের কেবিনের দিকে হাঁটা ধরল আঁখি,পথিমধ্যে আদৃতের কেবিন,কেন জানি মন টালন সেদিকটায়,মনের টানে সাড়া দিয়ে ঢুকে গেল সেই কেবিনে,আদৃত এখনও কেবিনে ফিরে নি, আঁখি কেবিনের একটা চেয়ারে এসে বসল,আদৃতের সান্নিধ্যে মনের প্রশান্তি তো সেই ছয় বছর আগেও পেত আঁখি,আজ কেবিনে আদৃত না থাকলেও তার গায়ের ঘ্রাণ যেন স্পষ্ট নিতে পারছে সে।বিষাদে মন ছেঁয়ে আছে,একটা ভুল পদক্ষেপ, ভালোবাসার মানুষটাকে ভুল বোঝার পরিণামস্বরুপ ছয় টা বছর নাশ হয়ে গেল তার,সব কিছুই শেষ হয়ে গেল।
আঁখির হঠাৎ চোখ গেল আদৃতের হ্যান্ড ব্যাগের উপর,ব্যাগের চেইন খোলা হয়ত তাড়াহুড়োয় খোলা রেখেই চলে গেছে,ব্যাগের ভিতর থেকে উঁকি মেরে আছে একটা ডায়েরি,আঁখির কৌতূহল জন্মালো তাতে,এমনিতে যে কারো জিনিসে কখনও না বলে হাত না দিলেও আদৃতের ক্ষেত্রে কখনও ফরমালিটি করে নি সে।তাই ওটা হাতে নিয়ে নিল,প্রথম পৃষ্ঠায় বড় করে লিখা সুখপাখি,নিচে ছোটো আকারে লিখা আমার হিটলার আঁখি।আঁখি আলতো করে হাত বুলালো লিখাগুলোর উপর,আন্দাজ করতে পারল কেবিনে কেউ আসছে তখন তাই ডায়েরিটা খুব গোপনে লুকিয়ে নিল তার কাপরের নিচে।
″আরে আঁখি,কখন আসলে এখানে?″
″এই তো একটু আগে।″
″তা বলো কোথায় গিয়েছিলে?তুমি জানো আমি কতটা পেরেশানিতে ছিলাম তোমাকে নিয়ে?″
″এতো ভাবেন কেন আমাকে নিয়ে?আমি কে হই আপনার?″
″সবকিছু কি শুধু বলে বোঝাতে হবে আঁখি?″
″বুঝে নেওয়ার ব্যর্থতায় বছরের পর বছর কাটিয়ে দেওয়া থেকে তো মুখে বলাই শ্রেয়।″
″মানে?″
″মানেটা কি বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করা যায় না?″
ছলছল চোখে আঁখির বলা কথাটা আদৃতকে আরও অস্থির করে তুলল।আদৃত ছোটে গেল আঁখির পাশে।
″কি হয়েছে আঁখি বলো আমায়? তুমি ঠিক আছো তো?এ কি তোমার হাতে কি হয়েছে?অনেকটা কেটে আছে,রক্তও শুকিয়ে গেছে, কি হয়েছে তোমার?কোথায় গিয়েছিলে?দেখি বসো তুমি আমি ফাস্ট এইড আনি।″
তখন সানিয়াকে মা*র*ধ*রে আঁখির হাতের কনুইয়ের নিচ অংশে অনেকটা কেটে গিয়েছিল আঁখির।আদৃত এবার বেগতিক পায়ে ফাস্ট এইড বাক্স এনে আঁখির ক্ষততে ওষুধ লাগাতে শুরু করেছে আঁখি অপলকে তাকিয়ে আছে তার দিকে।
″এখনও ততটাই ভালোবাসা উপলব্ধি করতে পারছি যতটা ছয় বছর আগে করতাম আপনার ওই চোখে নিজের জন্য,তবে কেন আমি তা তখন অবিশ্বাস করে গেলাম,আজ যে বড্ড ইচ্ছে করছে ডা.সাহেব আপনাকে জড়িয়ে ধরি,চিৎকার করে কেঁদে বলি যে ওরা আমাদের ঠকিয়েছে, আমাদের ভালোবাসা ভুলের নিচে চাঁপা দিয়েছে ওরা।″
″তুমি বড্ড বেখেয়ালি,এখনও বাচ্চামো যায় নি তোমার,উপর থেকে শাসন করার তো কেউ নেই তাই এমন।″
″আপনি তো খুব শাসন করতেন,এখন কেন ছেড়ে দিলেন?″
″অধিকারটা কি আদোও আছে?″
″ধরে রাখতে জানলে কখনও কিছু হারায় না।″
কথাটা বলে আঁখি উঠে চলে গেল ডায়েরিটা এমনভাবে লুকাল যাতে আদৃত না দেখতে পায়।আদৃত বুঝে উঠতে পারল না আঁখির কথার মানে।
_________
জিসান পৌঁছাল আমিরুল এর বাড়িতে কিছুটা হতাশ হলো সেখানে গিয়েও, কিন্তু পুরো খালি হাতেও তো ফেরে নি সে,সেখানে গিয়ে আমিরুলের পরিবারকে জেরা করে জিসান।অতঃপর সকল তথ্য জানতে পায় তার বাবার কাছে।
″মি.নজরুল,আপনিই তো আমিরুলের বাবা?আমিরুল যশোরে দ্বিতীয় বিয়ে করে থাকত কথাটা আপনি কবে থেকে জানেন?″
″বাবা ও যশোর একটা ভালো জব পেয়েছে বলেছিল,সেখানে থাকত মাঝে মধ্যে টাকা পাঠাত। কিন্তু ১বছর পর জানতে পারলাম ও তারই স্ত্রী নিলিমার দূর সম্পর্কের বোন রিদুকে বিয়ে করে নিয়ে সেখানে থাকছে।কথাটা শুনেই নিলিমা আয়ত্তের বাইরে চলে যায়,আমাদের না জানিয়েই সেখানে গিয়ে ঝগড়াঝাটি শুরু করে।″
″রিদু না তাহমিনা?″
″না বাবা রিদু ই।″
″আপনি এতো শিওর কি করে যে মেয়েটার নাম রিদু।″
″ওই মেয়েটা নিলিমার দূর সম্পর্কের বোন ছিল,কোনো এক কাজে কয়েকদিনের জন্য থাকতে এসেছিল আমাদের এখানে কিন্তু কয়েকদিন গেলে নিলিমা নিজেই তাকে ঘর থেকে বের করে দেয় তার উপর একপ্রকার জোর খাটিয়ে,যাতে আমরা অবাক হই আর তারপর তো জানতে পারি আমিরুল ওকে বিয়ে করেছে।″
″রিদুর কি কোনো ছবি হবে আপনাদের কাছে?″
″না বাবা,ও মানুষের সাথে মিশত কম,ছবিও উঠত না।″
″ওর বাড়ির ঠিকানা আছে?″
″হ্যাঁ ওর বাড়ির ঠিকানা বলতে পারব।″
″ঠিক আছে ঠিকানাটা লিখে দিন আমায়।আর হ্যাঁ ওকে যে আমিরুল বিয়ে করেছে খবরটা কে দিয়েছে আপনাকে।″
″ওর বাবা নিজেই ফোন করে।″
″কি!ওর নিজের বাবা জানিয়েছেন আপনাকে বিষয়টা।″
হ্যাঁ বাবা।আর এটাও বলেছেন উনার মেয়ের মানসিক অবস্থা ভালো নয় পারলে কোনো পদক্ষেপ নিতে ওর বিরুদ্ধে।উনার কথার মানে আমি কিছুই বুঝতে পারি নি তখন।
___________
আজ আর আদ্রিশের ওখানে যেতে চায় নি আঁখি,সারাদিনের কাজে বেশ ক্লান্ত সে,আদ্রিশের সামনা করতে হলে যে অনেক শক্তির প্রয়োজন হবে তার,এদিকে ভেবে পাচ্ছে না আদৃতকে কি সব জানানো উচিৎ? সবকিছু শুনে কি প্রতিক্রিয়া করবে সে?সে কি সব কিছু সহ্য করে উঠতে পারবে?মেনে নিবে কি সবকিছু স্বাভাবিকভাবে না কি সৃষ্ট করবে কোনো ধ্বংসের তান্ডব। আদৃতকে নিয়ে তো একপ্রকার ভয় হয় আঁখির,রাগ তার প্রচুর,হুটহাট চলে না আসলেও যখন আসে তখন ভ*য়ং*ক*র রুপ ধারণ করে আদৃত,তাতে নিজের ক্ষতি হবে কি না সে বিষয়েও কোনো হুশ থাকে না তার।তাই এতো ভাবছে আঁখি,বিষয়টা কি আদোও জানানো উচিৎ হবে আদৃতকে? অনেক ভাবার পর সিদ্ধান্ত নেয় আঁখি আদৃতকে জানাবে সব কিছু।আদৃতকে কক্ষে না পেলে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে আদৃত ছাঁদে,তাই সেদিকটায় যায়।ছাঁদে প্রবেশ করতেই থমকে যায় আঁখি সামনে চলমান দৃশ্য চোখে ভাসতেই,রিংকি একটা শর্ট নাইটি পরে জরিয়ে ধরেছে আদৃতকে,জোরে জোরে বলছে।
″আই লাভ ইউ আদৃত।আই লাভ ইউ।″
আদৃত তাকে সাথে সাথে টান দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে বেশ কর্কশ গলায় বলল।
″আমি তোমাকে ভালোবাসি না রিংকি,বুঝো না কেন?ভালোয় ভালোয় বলছি আমেরিকা চলে যাও, আমি তোমার টিকিট বুক করে দিয়েছি,কাল রাতে ফ্লাইট।″
″আমি যাব না,তুমি বলো আমার মধ্যে কি কমতি আছে যার জন্য তুমি আমাকে ভালোবাসো না?ওই ডিভোর্সির মধ্যে কি পেয়েছ যে দিন রাত ওর পিছন পরে থাকো?ও এমন কি দিবে তোমায় যা আমি দিতে পারব না?না কি রাত কাটায় তোমার সাথে তাই ওর শরীরের মায়া ছাড়তে পারছ না?″
″রিংকি…″
গর্জে উঠে আদৃত হাত উঁচুতে উঠিয়ে নিলেও রিংকির গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিয়ে ওঠতে পারে না।
″আমি কোনো মেয়ের গায়ে হাত তুলি না নইলে আঁখিকে অসম্মান করার শাস্তি কতটা ভয়াবহ হতে পারত বুঝিয়ে দিতাম তোমায় আজ,কাল রাতে বাড়ি ফিরে যেন আমি তোমাকে না দেখি,নইলে ভালো হবে না।″
আদৃত চলে আসতে নিলে আঁখিকে দেখতে পেল।
″আঁখি তুমি এখানে?″
″ওই আসলে খাবার দেওয়া হয়ে গেছে নিচে, ডাকতে এসছিলাম।″
আঁখি কিছুই শোনে বা দেখে নি এমন ভাব করে চলে গেল সেখান থেকে।
″আঁখি কিছু শোনে নি তো?রিংকির কথাগুলো যদি শুনে থাকে তবে নিশ্চিত খুব কষ্ট পাবে মনে যা আমি মেনে নিতে পারব না।″
আঁখি চলে আসলো নিজের কক্ষে,আজ ছয় বছর পর আদৃতকে নিয়ে সেই জ্বলন অনুভব করতে পারল মনে যা ছয় বছর আগে কোনো মেয়ের সাথে আদৃতকে দেখলে হতো আঁখির। প্রথম ভালোবাসা কখনও ভোলা যায় না,হয়ত জীবন চলতে গিয়ে তাকে মনের এক কোণে ধামাচাপা দিয়ে রেখে দেওয়ার প্রচেষ্টা করে ব্যর্থ প্রেমিকগণ,আঁখিও তো তাই করেছিল,কিন্তু অপ্রিয় এক তিক্ত সত্য আদৃতের প্রতি তার সেই সুপ্ত অনুভুতি যেন আবারও জাগিয়ে তুলল।অনুভুতির মাত্রা আজ আগের মতো এতো প্রখড় না হলেও কম কোথায়।কিন্তু সর্বনাশা আরেকটা সত্য পিছু টানছে আঁখিকে,আঁখির সাথে যে আদ্রিশের নাম জুরে গেছে।ডিভোর্স নামক কলঙ্ক নিয়ে বেঁচে থাকা আঁখি কি করে আদৃতের পবিত্র জীবনে দাঁগ মাখাতে পারে!রিংকির বলা কথাটা, বড্ড আঁচড় কেটে গেছে আঁখির মনে মুহুর্তেই।না আঁখি সেই সত্য আর বর্তমানে আদৃতকে জানাবে না,যদি আদৃত এখনও তাকে ভালোবেসে থাকে,যদি তাকে আবারও ফিরে পেতে চায়,তখন কিভাবে ফিরবে আঁখি তার জীবনের এই কলঙ্ক সহিত?
___________
কাজের লোকগুলো কাজ ছেড়ে চলে গেছে তার কারণ এখন অব্দি বুঝে উঠতে পারে নি আদ্রিশ,শুভ্রতা তার শ্বাশুড়ি মা আর রিহানকে নিয়ে আজ বেশ সকালে হাঁটতে বেড়িয়েছিল, বাড়ির প্রবেশ দ্বার দিয়ে ঢুকছিল তারা,আদ্রিশ তার রুমেই ছিল তখনই আদিলদের কক্ষ থেকে রিদিকার চিৎকার শোনা যায়।
″আদ্রিশ বাঁচাও আমায়,বাঁচাও।″
চিৎকার শুনে আদ্রিশ আর বাকি সবাই ছোটে যায় সেদিকে,আদ্রিশ দরজায় লাথি মারছে আর ডাকছে রিদিকাকে,কিন্তু ভেতর থেকে দরজা আটকানো শুধু রিদিকার চিৎকার শোনা যাচ্ছে।
″আদ্রিশ বাঁচাও আমায়,আদিল ভাইয়া প্লিজ আমার এতো বড় সর্বনাশ করবেন না।″
আদ্রিশ লাথি দিয়েই যাচ্ছে রিদিকাকে ডেকে ডেকে হঠাৎ দরজা খুলেই রিদিকা এসে ঝাঁপটে ধরল তাকে।আদ্রিশ তাকে ঝটপট নিজের থেকে ছাড়িয়ে দেখতে পেল তার ব্লাউজের বিভিন্ন অংশ ছেঁড়া সাথে নখের আঁচড়। চুলগুলো উসকোখুসকো। একপ্রকার কাঁপছে রিদিকা।পিছনে অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে আছে আদিল,পেরেশানিতে জিজ্ঞেস করল আদ্রিশ।
″কি হয়েছে রিদিকা?তোমার এ হাল কেমনে হলো?″
″আদিল ভাইয়া বেশ কয়েকদিন থেকেই আমার উপর কুনজর দিয়ে রেখেছিলেন, আমি ব্যাপারটা বুঝতে পারলে উনাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করি।কিন্তু আজ ঘর খালি পেয়ে আমাকে ফন্দি করে নিজের কক্ষে ডাকালেন।বললেন না কি শুভ্রতা আপু বাইরে এদিকে উনি উনার ওয়ালেট খুঁজে পাচ্ছেন না একটু খোঁজে দিতে আর সেই সুযোগে দরজা লাগিয়ে উনি আমার সাথে… ″
এরপর আর কিছু না বলতে পেরে হু হু করে কান্না করে দেয় রিদিকা,আদ্রিশের শরীর জ্বলে উঠে অল্পতেই।সম্পর্কের সীমা লঙ্ঘন করে তেড়ে গিয়েই বড় ভাইয়ের গালে থাপ্পড় বসিয়ে দেয় আদ্রিশ,প্রবল ঘুষিতে তাকে আছড়ে ফেলে ফ্লোরে,আদিল এতটাই হতভম্ব হয়ে আছে যে এমন কিছুর বিপরীতে প্রতিক্রিয়া কি করা উচিৎ ভেবে বের করে উঠতে পারছে না।শুধু চোখ বেয়ে ঝড়ে চলেছে তার জলের স্রোত,আদ্রিশ আবারও আদিলকে মারতে গেলে শুভ্রতা এসেই আদ্রিশের পায়ে হুমড়ি খেয়ে পরল।
″আদ্রিশ,বিশ্বাস করো আদিল এমনটা করতে পারে না,তুমি তো ওকে ছোটবেলা থেকে চিনো ও এমন নয়,প্লিজ ওকে মে*রো না আর,ও তোমার বড় ভাই,ওই রিদিকা মিথ্যা বলছে।″
″মিথ্যুক আর অন্যায়কারী তো তোরা,মানুষের খেয়ে মানুষের পরে মানুষের পিছনে ছু*রি চালাবি!আজ তোদের আসল অবস্থান দেখিয়ে দিব আমি।
কথাগুলো বলে শুভ্রতাকে লাথি দিয়ে পাশে ফেলে আদিলকে ফ্লোর থেকে তুলে আবারও মারার জন্য হাত উঠালে সেই হাত পাকড়াও করল আঁখি।
চলবে…
#প্রমত্ত_অঙ্গনা
#লেখিকা_আরোহী_নুর
(৩১)
আঁখি আদ্রিশকে কিছু করে উঠার সুযোগ না দিয়েই তার দুই গাল বরাবরই ছয় থেকে সাতটা থাপ্পড় বসালো,তারপর তাকে কয়েকটা ঘুষি দিয়ে ফ্লোরে ফেলে দিল,আদ্রিশ এবার অতিরিক্ত ক্ষেপে গেল,তেড়ে এসে আঁখিকে থাপ্পড় বসাবে তার আগেই তার হাত পিছন দিকে মুড়ে নেয় আঁখি,ওপর হাত দিয়ে আঁখিকে পাকড়াও করতে চাইলে সে হাতও মুড়ে ধরে আঁখি,আঁখি আর আদ্রিশের বেশ কঢ়া টক্কর পরেছে,আদ্রিশ বেশ বলিষ্ঠ হলেও আঁখির দক্ষতার সাথে পেরে উঠছে না।আদ্রিশ নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে দাঁত কটমট করে বলতে লাগল।
″আঁখি ভালো হবে না ছেড়ে দাও আমায়, তুমিও নিজের সীমা লঙ্ঘন করে গেছ,তোমাকেও আমি ছাড়ব না।″
আঁখি এবার তার হাত ছেড়ে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল যাতে ওয়্যারড্রোব এর এক কোনে আদ্রিশের কপাল লেগে কপালের একপাশ বেশ কেটে গেল।এবার রিদিকা আক্রমণ করল আঁখির উপর।
″তোর সাহস কি করে হলো আঁখি আমার আদ্রিশকে এভাবে মারার!″
রিদিকা এসে আঁখিকে থাপ্পড় মারতে নিলে আঁখি ইচ্ছেমতো বেশ কটা থাপ্পড় মেরে তাকে ফ্লোরে ফেলে দিয়ে কয়েকটা লাথিও মারল।আদ্রিশ আবার আঁখিকে জব্দ করতে আসলে আঁখি তাকেও আরও কয়েকটা ঘুষি দিয়ে ফেলে দিয়ে চেঁচিয়ে বলে উঠল।
″কি মনে করিস তোরা নোং*রা*র দল!আঁখির সাথে পেরে যাবি!কি করে ভুলে যেতে পারিস তোরা আমি আঁখি সবকিছু জ্বালিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখি।তোদের তো এখনই মেরে ফেলতে মন চাইছে কিন্তু মারব না,কারণ তোদের সহজ মৃ*ত্যু আর যেই হোক আঁখি মেনে নিতে পারবে না।তোদের হাল তো এমন হবে যে রোজ মরার জন্য প্রার্থনা করেও ম*র*তে পারবি না।″
″আজ তুমি একজন মেয়ে আর কখনও আমার স্ত্রী ছিলে ভেবে ছেড়ে দিচ্ছি আঁখি,নইলে আজ এখান থেকে বেঁচে ফিরতে না তুমি।তোমাকে প্রাণে ছেড়ে দিলেও ভেব না তুমি ছাড় পাবে,কেস করব আমি তোমার নামে,লোকের ঘরে ঢুকে তাদের প্রাণে মারার চেষ্টা করেছ তুমি,দেখি এবার ডাক্তারি লাইসেন্স কি করে আটকাও,ভুলো না আমি উকিল।″
″ওফ যা ল*ম্প*ট উকিল,ডাক্তারি লাইসেন্স তোর বউয়ের মতো সস্তা দ্রব্য না যে চাইলেই তাকে নিয়ে খেলা করবি,আমাকে কেসের ভয় দেখাস!আরে তোর উপর তো কেস করার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও করি নি আমি,কারণ তোর পরিণতি আমি অনেক ভয়াবহ ভেবে রেখেছি, শুকরিয়া কর আল্লাহর কাছে যে তুই এখনও জীবিত আছিস,কিন্তু মনে রাখিস তোর ধ্বংস আমার হাতেই হবে।আমাকে আমার ভালোবাসা আমার ডা.আদৃতের কাছ থেকে দূর করার পরিণাম তো তোকে ভোগ করতেই হবে।
″আদৃতের কাছ থেকে দূর করেছি মানে?″
আমতা করে বলল আদ্রিশ।
″ভালো সাজছিস ল*ম্প*ট, তুই কি মনে করেছিলি আমি কখনও জানতে পারব না?মনে রাখিস আদ্রিশ তুই কার সাথে খেলা করেছিস।তোর এমন অবস্থা করব যে মৃ*ত্যু*র আশায় তুই আফসোস করবি।″
″চলো মা,ভাইয়া, আপু,এখানে আর থাকতে হবে না তোমাদের।″
″তোমার ভাই আর আপুকে নিয়ে যাও আমার মা কোথাও যাবে না।″
আঁখি কথাটার জবাব দেওয়ার আগেই মা বলে উঠলেন।
″বাবারে তোর কামাই খেয়ে বেঁচে থাকার থেকে ভিক্ষে করে খাওয়াটাই সম্মানের হবে আমার কাছে।চল আঁখি মা,আমায়ও নিয়ে চল।তোরা নিজেদের কাপড়চোপড় গুছিয়ে নিয়ে চলে আয়।″
″না মা,ওই স্বার্থপরের দেওয়া কিছুই তোমাদের নিতে হবে না,আমি বেঁচে থাকতে তোমাদের কোনো কিছুর কমতি রাখব না,শুধু আমার সাথে চলো।″
″চলে যাবার আগে আরেকবার ভেবে নাও মা,একবার গেলে কিন্তু আবার ফিরতে পারবে না।″
″আল্লাহ যেন মরার আগে আর তোর মুখ না দেখান।″
তাচ্ছিল্য করে কথাটা বলে মা সবার আগেই হাঁটা ধরলেন।কাঁদতে কাঁদতে বেড়িয়ে গেল আদিল,শুভ্রতা রিহানকে কোলে নিয়ে বেড়িয়ে গেল,সবশেষে আদ্রিশ আর রিদিকার দিকে ক্রোধান্বিত চোখে তাকিয়ে চলে গেল আঁখিও।
__________
ড্রয়িংরুমে বসে কান্না করে যাচ্ছেন জাহানারা রাহমান,পাশে বসে আছে আদিল শুভ্রতা,রিহান আশপাশে দৌঁড়ে খেলা করছে।
″কি হয়েছে মা?কয়েকদিন থেকে আমি লক্ষ্য করছি তোমরা কেউ ই আমার সাথে তেমন যোগাযোগ রাখতে চাইছিলে না।আর আজ এমনটা,বলো না আমায় কি হয়েছে?″
″আজ তোমাকে সব বলব আঁখি,আজ আর ভয় নেই আমাদের। ″
″বলো আপু।″
″সবকিছু রিদিকাই করছিল।সেদিন ইচ্ছে করে আমার পায়ে গরম তরকারি ফেলে দেয়,কিন্তু তখনি আদ্রিশের গাড়ির শব্দ পেয়ে আমাদের অবাক করে দিয়ে নিজের হাতেই গরম তরকারি ফেলে দেয়,নিজের গালে নিজেই থাপ্পড় মারে,তারপর আদ্রিশকে আসতে দেখে হাউমাউ করে কান্না করে মায়ের পায়ে পরে যায় আর আমাদের আদ্রিশের চোখে খা*রা*প প্রমাণ করে,সেদিন আদ্রিশ আমাদের কারো উপর বিশ্বাস করে নি,তারপর থেকে আদ্রিশ যখনই বাড়ি থাকত না ও আমাদের দিয়ে অনেক কাজ করাতে চাইত,আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করত,একদিন আমি প্রতিবাদ করতে গেলে আমাদের রিহানের গলায় ছুরি বসিয়ে দেয়,বলে না কি ওর সাথে লাগতে এলে কখন কোথায় রিহানকে লা*শ বানিয়ে ফেলে দিবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।কথাটা বলেই রিহানকে বেশ জোরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়,আমরা চাইলেও তার বিরুদ্ধে কিছু করতে পারতাম না কারণ আদ্রিশ তার কথায় ছিল,উল্টা আমাদেরই দোষারোপ করত,তুমি চলে আসার পরদিনই বাড়ির সকল সিসিটিভি ও নিজেই খুলিয়ে নিয়েছে আদ্রিশকে এই বলে যে ওর এসব ভালোলাগে না,সবসময় নজরবন্দি লাগে,যাতে ওর বিরুদ্ধে চাইলেও প্রমাণ রাখতে পারতাম না আমরা।তাছাড়া ভয় পেতাম,ও কথায় কথায় ছু*রি,এটা ওটা নিয়ে মারতে আসত আমাদের,একদিন আদ্রিশকে ওর কক্ষে রেখে ওকে চ্যালেন্জ করেই আদ্রিশকে বলতে গিয়েছিলাম সবকিছু, কিন্তু তখনই ও নিজের হাতে মায়ের হাত জোর করে তার মাথায় ধরে আদ্রিশকে বোঝালো আমরা ওর উপর অত্যাচার করি।আমাদের না থাকার জায়গা ছিল না নিজেদের হয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা, হয়ত নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করতাম, লুকিয়ে ওর কার্যকলাপ ভিডিও করতে পারতাম কিন্তু ও এসব কিছুরই কোনো সুযোগ দেয় নি আমাদের, অনেক চালাক রিদিকা,এক ধরনের পা*গ*ল,যে নিজের কাজ করিয়ে নেওয়ার জন্য নিজেকেই আঘাত করতে পারে তাকে কেউ কিভাবে ভয় পাবে না , কাজের লোকগুলোর সাথেও এমনটা করত,একদিন ওদের খুব মারে তারপর কাজ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করে।ওরাও চলে যায়,অতঃপর আমরা ঘরের কাজের লোকদের মতো সারাদিন খাঁটতাম।″
″আজকে কী হয়েছিল?″
″আজ আমি নিজের কক্ষেই ছিলাম,কিছু কাজে বেড়ুনোর ছিল শুধু শুভ্রতা ফিরে আসার অপেক্ষা করছিলাম শুধু কিন্তু তখন হঠাৎ রিদিকা আমার কক্ষে প্রবেশ করে দরজা লাগিয়ে নিজেই নিজের কাপড় ছিঁড়ে চিৎকার করতে থাকে।আমার বোধগম্যে কোনো কথা যাওয়ার আগেই সবকিছু ঘটে যায়,আমার কপাল এতই ভালো যে নিজেরই ছোট ভাইয়ের হাতে মার খেতে হলো।″
″কপাল আপনার না ওই আদ্রিশের খারাপ যে আপনার মতো একজন আদর্শ মানুষের গায়ে হাত তুলেছে।আমার তো খারাপ এক টা বিষয়ে লাগছে যে এতো কিছু হয়ে গেল আর তোমরা আমাকে কিছু বললে না?″
″আমি বলতে চেয়েছিলাম আঁখি,কিন্তু রিদিকা প্রায় সময় আমাদের উপর নজর রাখত,পরিষ্কার ভাবে আমাদের বলেছিল যদি আমরা তোমার সাথে কোনো যোগাযোগ রাখি তবে আমাদের সাথে তোমারও খা*রা*প করবে আর সবার প্রথম ও রিহানকে মারবে।যে মেয়ে আদ্রিশের মতো তোমার পাগল প্রেমিককে বশ করতে পারে,মা পাগল ছেলেকে নিজের আঁচলে বেঁধে নিতে পারে,ভাইয়ের ভক্ত ভাইকে তার শ*ত্রু বানিয়ে দিতে পারে তাকে ভয় কি করে পেতাম না বলো?″
″ভয় তো ওকেও পেতে হবে,আর কাউকে না পেলেও আল্লাহ তায়ালাকে আর তার পরে আর এক জনকে।″
″আর এক জন মানে?″
″তোমাকে ওসব নিয়ে ভাবতে হবে না আপু,তোমরা এখন আমার কাছে নিরাপদে আছো,আর আমার কোনো ভয় নেই,ভয় তো এবার ওই রিদিকার পাওয়ার পালা।আমি কখনও ভাবি নি যাকে আমি কেঁচো ভাবতাম সে নাগিন বেরুবে,যতটুকু আমার ডাক্তারি দক্ষতা বলে পাগলামি তো হুট করে মাথায় চড়ার নয়।তার উৎপত্তি প্রায়ই থাকে অতীত জুরে।রিদিকার ইতিহাস খুলে দেখছি দেখতে হবে এবার।″
″শুধু মানুষের ইতিহাস তুলে ধরো,নিজের ফিউচার নিয়ে ভাবতে হবে না।″
″আরে ডা.সাহেব আপনি!আসুন।″
″হ্যাঁ ডা.সাহেবা,সকাল থেকে সারা ঘর খোঁজছি তোমায় কিন্তু আপনি ম্যাডামের কোনো খোঁজ নেই,কতো ফোন করেছি খেয়াল আছে,পুরো ৪৮ টা কল করেছি,মেসেজ চেক করো কতটা করেছি।তারপর কোথায় কোথায় না জানি খোঁজেছি একমাত্র আমিই জানি অবশেষে তোমার একজন গার্ড খবর দিলো তুমি বাড়িতে এসেছ।″
″আরে খুব সকাল বেড়িয়েছিলাম সবাই তখন ঘুমিয়ে ছিলেন প্রায়ই তাই কাউকে ডাকি নি,আপনি তো এতো পাগল হয়ে পরেছেন আমায় না পেয়ে যেন আমি আপনাদের ঘর ছেড়ে না পৃথিবী ছেড়েই চলে গেছি।″
″খবরদার আঁখি এমন কথা আর বলবে না।″
″আচ্ছা ঠিক আছে এখন আর গম্ভীর মুখে রাগের রেখা না ফুটিয়ে উনাদের সাথে পরিচিত হন।ইনি হলেন মা,ইনি আমার আদিল ভাইয়া আর ইনি উনার সুন্দরী ওয়াইফ আমার শুভ্রতা আপু।আর ওই যে দুষ্টু মহারাজ খেলা করছেন উনি হলেন আপু ভাইয়ার ভালোবাসার পদ্মফুল।″
আর আপনারাও উনার সাথে পরিচিত হন,ইনি হলেন আমেরিকা ফেরত ডাক্তার,ডা.আদৃত মির্জা।
আঁখির দুষ্টুমিতে সবাই বিষাদ ভুলে মুখে হাসি ফুটিয়ে নিল পলকেই।
_____________
জাহানারা রাহমান,আদিল,শুভ্রতা সবাইকে আঁখির বাড়িতে থাকার ভালো ব্যবস্থা করে দিয়ে আঁখি আসল হাসপাতাল। যাওয়ার সময় তাদের ব্যবহার্য জিনিসপত্র নিয়ে যাবে ভেবেছে,তাছাড়াও আদিলকে কিছু টাকা দিয়ে এসেছে, আঁখি আসার আগে তাদের যা লাগে আনিয়ে নিতে পারার জন্য।বর্তমানে বসে আছে হাসপাতালের পিছনের দিকটার সেই বটগাছটার নিচে,অজস্র ভাবনার উপর উঁকি দিয়ে বিরক্ত করছে এক বিষাদময় ভাবনা তাকে,আদৃতকে সেই তিক্ত সত্য না বলে সে থাকতে পারছে না।আঁখি তো ছয় বছর ভালোই ছিল অন্যের হাত ধরে,হোক না সে বিশ্বাসঘাতক,কিন্তু আদৃতের তো ছয় টা বছর বৃথা গেল।আর কতো কাটাবে আদৃত তিক্ততার ক্ষণ।সেই তিক্ততায় আদৃত এখনও জীবনে এগোয় নি,তার যথেষ্ট অধিকার আছে সত্যতা জানার।যাই হয়ে যাক আঁখি আদৃতকে সত্যতা এবার বলে দিবে ভেবে নিয়েছে।আঁখি এবার উঠে গেল আদৃতের কেবিনের দিকে।কিন্তু কেবিনে গিয়ে আদৃতকে পেলো না আঁখি,তখন একটা নার্স এলো আঁখির কাছে।
″রুশা ডা.আদৃতকে দেখেছ?″
″ম্যাম আপনি এখানে আর আমি আপনাকে কোথায় কোথায় খোঁজেছি।আশরাফ স্যার সকল ডাক্তারদের নিয়ে মিটিং ডেকেছেন হঠাৎ, আদৃত স্যার ওখানেই,আপনাকে না পেয়ে আপনার খোঁজে আমাকে পাঠালেন আশরাফ স্যার।সেই কবে থেকে আপনাকে খোঁজছি আমি।″
″আচ্ছা ঠিক আছে আমি দেখছি।″
আঁখি বেগতিক পায়ে গেল সেখানে।
″মে আই কাম ইন স্যার?″
″এখন সময় হয়েছে ডা.আঁখি আপনার আসার,ভুলে যাবেন না এটা আপনার বাড়ি নয় আমার হাসপাতাল এখানে আমার কিছু রুল্স আছে তা মেনে চলতে হবে আপনাকে,আর না পারলে হাসপাতাল ছেড়ে দিবেন,ঠিক সময়ে আপনাকে ডেকে খোঁজে পাওয়া যায় না,খামখেয়ালিপণা নিয়ে পরে থাকার ছিল তো ডাক্তার হলেন কেন?″
এতসকল ডাক্তারদের সামনে কথাগুলো শুনিয়ে দিলেন আশরাফ খান আঁখিকে,অল্পতেই আঁখির মুখ চুপসে গেল,চারপাশে তাকিয়ে দেখল সকল ডাক্তারই তার দিকে কেমন করে তাকিয়ে আছে, খারাপ লাগল আঁখির বড্ড, মৃদুস্বরে বলল।
″সরি স্যার সামনে থেকে খেয়াল রাখব।″
″হুম,এসে জায়গায় বসুন আপনি।″
আঁখি এসে বসল ভিতরে,চোখে জল টলমল করছে,আসছে দিন থেকেই তার বাবা বিভিন্ন ভাবে তার সাথে খারাপ আচরণ করেন,হয়ত তিন বছরের মনের জ্বালার শোধ তুলছেন উনি,নয়ত যে বাবার কখনও তার মেয়েকে ধমক অব্দি দেওয়ার কথা ভাবতেও বুক কেঁপে উঠেছে সেই বাবা আজ তার মেয়ে কেন অপদস্ত করবে কথায় কথায়? আঁখি যে তা মেনে নিতে পারছে না।যে বাবার ভালোবাসা ছাড়া কখনও কিছু পায় নি আঁখি সেই বাবার এমন ব্যবহার কেমনে মেনে নিবে।জীবনের একটা ভুল পদক্ষেপ আজ কেঁড়ে নিল আঁখির সব সুখ,নষ্ট করে দিল সব সম্পর্ক, নিঃস্ব করে দিল তাকে।আজ বুঝতে পারল আঁখি আবেগপ্রবণ হয়ে মানুষ অনেক সময় অনেক সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয় যেটা তখন তার কাছে সঠিক মনে হলেও ভবিষ্যতে ভুল প্রমাণিত হয়,আর যাই হোক কোনো কিছুতে আবেগপ্রবণ না হয়ে বুদ্ধি খাঁটিয়ে চিন্তা করে নেওয়াই জীবন ও মনের ভবিষ্যতের জন্য ভালো ।
চলবে…
দিলাম তো কিছু রহস্য ফাঁস করে,এবার খুশি তো সবাই।পুরো রহস্য জলদিই ফাঁস হবে।আসসালামু আলাইকুম।