প্রমত্ত_অঙ্গনা #লেখিকা_আরোহী_নুর ২০,২১

0
148

#প্রমত্ত_অঙ্গনা
#লেখিকা_আরোহী_নুর
২০,২১

আদৃত আঁখিকে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে তাকে ঘুমোনোর কথা বলে কেবিন থেকে বেরুতে যাবে তখন সেখানে প্রবেশ করলেন ডা.আশরাফ ও ডা.আহিল সম্পর্কে আঁখির বড় ভাই।আহিল ছুটিতে ছিল,তবে তার বোন হাসপাতালে জয়েন করেছে শুনে আর নিজেকে আটকে রাখতে পারে নি,আজকেও ছুটি ছিল কিন্তু বোনকে দেখার আশ আর লুকোতে না পেরে চলে আসলো।এসে যখন শুনল তার বোন অজ্ঞান হয়ে পরে গেছে তখন তার ভিরতের অস্থিরতা কতগুণ বেড়ে গেছিল তা শুধু সেই জানে,তবুও নিজেকে কঠিন মানবরূপে উপস্থাপন করার দৃঢ় প্রচেষ্ঠা নিয়ে আসলো বোনের সন্নিকটে,ডা.আশরাফও মেয়ের অবস্থা সম্পর্কে জেনে নিজেকে আর দমিয়ে রাখতে পারেন নি,দু’জনের ভিতরে অস্বাভাবিক ভাবটা থাকলেও বাহিরের দিক থেকে যথেষ্ট স্বাভাবিক হয়ে থাকার চেষ্টা করে আসলেন। ডা.আশরাফ জিজ্ঞেস করলেন আঁখিকে।

ডা.আঁখি আপনার না কি শরীর খারাপ?

আঁখি জানে তার বাবা তার শরীর খারাপ শুনে অস্থির হয়ে আছেন যা উনি আঁখিকে বোঝাতে চাইছেন না কিন্তু আঁখি তা ঠিকই বুঝে নিতে পেরেছে,যার ফলস্বরূপ তার মনে এক উৎফুল্ল ভাব ছেঁয়ে গেল,তার বাবা ও ভাই তার উপর রেগে থাকলেও তাকে নিয়ে ভাবাটা বন্ধ করে নি তারা,এখনও আঁখিকে তারা ঠিক আগের মতোই ভালোবাসে,আঁখির জন্য যে তা খুব বড় পাওনা।আঁখি এবার বেশ খুশি মনে ঠোঁটের কোণে অল্প হাসি টেনে বলল।

″তেমন কিছু না স্যার,এমনিই একটু শরীর দূর্বল।″

″খবর পেয়েছি আপনার শরীর খুব দূর্বল,ডাক্তার আদৃত আপনার চেক আপ করেছেন,আপনাকে ছুটি দেওয়া হলো,বাড়ি গিয়ে বিশ্রাম নিন,শরীর ভালো হলে তখন এসে হাসপাতাল জয়েন করে নিবেন।″

কাঠকাঠ কন্ঠে কথাগুলো বলে চলে গেলেন ডা.আশরাফ,এবার আহিল বলল।

নিজের খেয়াল রাখবেন ডা.আঁখি,এতো বেখেয়ালি থাকলে হয়?

অতঃপর আহিলও চলে যেতে নিলে আঁখি উঠেই তাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে নিল।ফুপিয়ে কেঁদে উঠে বলতে লাগল।

ভাইয়া ক্ষমা করে দে আমায়,বাবা মায়ের কাছে ক্ষমা চাওয়ার কোনো ক্ষমতা আমার নেই রে ভাইয়া,কিন্তু তুই তো আমার সেই ভাইয়া যে কখনও আমার উপর রাগে না,আমায় সবসময় মাথায় তুলে রাখে,যার চোখে আমার কখনও কোনো দোষ থাকে না,যার জন্য সে ম*র*তে বা মা*র*তে কখনও দ্বিধা করবে না তার দিক থেকে আজ কিভাবে সে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে।এই ভাইয়া তুই না ২ ঘন্টার বেশি আমার সাথে কথা বলে থাকতে পারতি না তবে আজ তো ৩ বছর পেরিয়ে গেল,কিভাবে কথা না বলে আছিস বল?ভুল করে গেছি ভাইয়া,আদ্রিশের মিথ্যে ভালোবাসা হারানোর ভয়ে তোমাদের সাথে জড়িয়ে থাকা অকৃত্রিম ও সত্য ভালোবাসার বন্ধনের অসম্মান করলাম আমি,তার সাজাও তো পাচ্ছি আর সাজা দিস না,সহ্যের সীমা অতিক্রম হয়ে গেছে আমার,আল্লাহ আমাকে ছাড় দেন নি দেখ।দয়া করে আর পর করে রাখিস না।

আঁখির কথায় চোখের জমে আসা জল উপচে পরল,তবুও নিজেকে দূর্বল পরতে দিলো না আহিল,চেয়েও আঁখির দেওয়া ক্ষত সে ভুলতে পারে না,তাই অনেক করে নিজেকে সামলালো,আঁখিকে নিজের থেকে খুব সাবধানে ছাড়িয়ে নিল যাতে তার হাতের স্যালাইনের সুচের জায়গায় সে ব্যাথা না পায়।অতঃপর পাক না ফিরেই চলে গেল সে বেগতিক পায়ে।

আঁখি সেই জায়গায় হুমড়ি খেয়ে পরে কাঁদতে লাগল।

কয়েক মুহুর্তেই ইন্সপেক্টর ইশতিয়াক এর বাড়ির এড্রেস পেয়ে গেলো জিসান,কিন্তু তার বাড়ি গিয়ে উল্টো আরও নিরাশতায় পরল সে।তার স্ত্রীর কাছ থেকে জানা যায় ইশতিয়াক নিজেই ৭ বছর আগে প্রমত্ত অঙ্গনার হাতে খু*ন হয়।তার লা*শে*র পাশে লিখা ছিল।

অপরাধী হয়ে অপরাধীকে খোঁজে বেড়ানো হিসেবটা মিলে না।ল*ম্প*ট*দের নাশ তো হয়েই থাকে।
প্রমত্ত অঙ্গনা।

তার স্ত্রী জুলেখার কাছ থেকে আরও জানা যায়।ইশতিয়াক একজন চরিত্রহীন লোক ছিলো,মেয়েদের কুনজরে দেখত সে।অনেক নারীর সাথেই তার অ*বৈ*ধ সম্পর্ক ছিল, স্ত্রীকে অনেক মারধরও করত সে,তার একটা ছেলেও আছে,স্ত্রীর যাওয়ার কোনো জায়গা না থাকায় সবকিছুর পরও স্বামীর ঘরে পরে থাকত। কিন্তু ইশতিয়াকের হঠাৎ মৃত্যু হয়,তার স্ত্রী এতে অনিশ্চয়তায় পরে যান নিজের আর ছেলের ভবিষ্যতের কথা ভেবে,অতঃপর এর কয়েকদিন পরেই একটা কোম্পানি থেকে উনার জন্য জব অফার আসে। অথচ উনি এসবের কথা কখনও ভাবেনও নি।উনি এসএসসি পাশ হওয়ায় কোম্পানি টাতে পিয়নের পোস্ট পান উনি তাও সম্পূর্ণ সে কোম্পানির উদ্যোগে,উনি আজও এর পিছনের কারণ খোঁজে বের করতে পারেন নি।কোনো কোম্পানি কেনই বা নিজে থেকে এসে উনাকে জব অফার করবে,কিন্তু সব মিলিয়ে নিজের জব আর স্বামীর পেনশনের টাকায় ভালো যাচ্ছে জুলেখার দিন।তবে প্রমত্ত অঙ্গনা সম্পর্কে আর কিছু জানা নেই জুলেখার।

জিসান কিছুই ভেবে বের করতে পারছে না,কে এই প্রমত্ত অঙ্গনা? চায় কি সে?ইন্সপেক্টর ইশতিয়াককেও মেরে ফেলেছে এবার সে ১৩ বছর আগের কেসটা সম্পর্কে জানবে তো জানবে কি করে!

আঁখির স্যালাইনের সুচ এর জায়গাটা খুব ভালো করে দেখছে আদৃত,সুচটা জায়গা বিচ্যুত হয়েছে কি না।আঁখি অপলকে দেখে যাচ্ছে তাকে,আদৃত কতো খেয়াল করছে তার,একটু আগেই তো ফ্লোর থেকে সযত্নে তুলে তাকে বেডে বসাল।মুছে দিল তার চোখের জল,এবার কতো যত্নসহকারে তার পরিচর্যা করছে।কেন আদৃত এমনটা করে,এমন যত্ন,এমন দরদ তো আদৃত সেই বছর খানিক আগেও দেখাত আঁখিকে কিন্তু তখন যখন এসবের কোনো মানে ছিল না আদৃতের কাছে তবে এখন কীভাবে কোনো মানে থাকবে!সত্যিই কি আদৃত শুধু মনুষ্যত্ব থেকে আঁখির জন্য এমন করে!এবার আঁখি মুখ ফোটিয়ে জিজ্ঞেস করে বসল।

″কেন আমার জন্য এতো করেন আপনি?সবাই তো ছেড়ে চলে গেছে আপনিও চলে যান,কেন আছেন আমার পাশে?″

″বেঁচে থাকতে কখনও তোমাকে ছেড়ে যাব না আঁখি।″

″চাই না আমার কাউকে,যখন পাশে থাকার ছিল তখন তো ছিলেন না আর আজ যখন একা বাঁচতে শিখে গেছি তবে আজ আসছেন পাশে থাকতে।″

কথাটা বলে আঁখি দু′হাতে মুখ ঢেকে কাঁদতে লাগল।আদৃত এবার তার মাথায় সহানুভূতিময় হাত রেখে বলল।

ভুল করেছিলাম আমি,যার মাশুল আমায় দিতে হয়েছে প্রতিটা ক্ষণে,সে ভুল আর দ্বিতীয় বার করব না আঁখি কথা দিলাম।

আদৃতের কথা পুরো হতে না হতেই আঁখি ঝাপটে ধরল তাকে,মুখ গুজল তার বুকে,অতিরিক্ত কান্নায় ফুঁপানোর হার এবার বেড়ে গেছে তার অনেক,ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে আধভাঙ্গা বাক্যে প্রকাশ করতে লাগল সে তার মনোভাব।

কেন আদ্রিশ এমন করল,বলেন না?মনের পীড়া সহ্য করার ক্ষমতা জুটিয়ে উঠতে পারব না এ ভয়ে তার জন্য আমার সব ছাড়লাম, তবে সে কেন আমার জায়গায় অন্যকে বসাল।কেন?বলেন না,কি কমতি ছিল আমার মধ্যে?কেন আজ আমি একা হয়ে গেলাম,কেনো?এই ভুলের কি কোনো ক্ষমা নেই বলেন না ডা.আদৃত?

আঁখির বলা প্রতিটা অক্ষর আদৃতের বুকে গিয়ে যেন তীরের ন্যায় আঘাত করছে,আঁখির কান্না ধুমরে মুচরে দিচ্ছে তার হৃদয়,যার চোখে কখনও জল সহ্য করতে পারে না আজ তার জল থামানোর জন্যই কোনো বাক্য খুঁজে পাচ্ছে না আদৃত,তবে আদ্রিশকে ইচ্ছে করছে তার শেষ করে দিতে,আঁখির কষ্টের কারণকেই উপরে ফেলতে ইচ্ছে করছে তার মূল থেকে।আঁখির পীড়া নাড়িয়ে দিয়েছে আদৃতকে,চোখ জলে টইটম্বুর হয়ে গেছে মুহুর্তেই,দু’ফোটা জল গড়িয়ে পরল এবার গাল বেয়ে,আদৃত শুধু আঁখির মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে তাকে শান্তনা প্রদানের অল্প প্রচেষ্টা করতে থাকল।

বেশ খানিকক্ষণ সময় আদৃতের বুকে মুখ লুকিয়ে কান্না করল আঁখি, অনেক দিন পর যেন সত্য ও শান্তির এক আশ্রয় তার মন হালকা করার বড় এক মাধ্যম হয়ে ওঠল।হ্যাঁ মনটা এবার বেশ হালকা লাগছে আঁখির,তবে আচমকা এক দুর্বোধ্যতা আঁকড়ে ধরেছে তাকে,একসময় যে বুকে ঠাই খুঁজতে কোনো দ্বিধা দন্দ ছিল না আজ সে বুকখানাতে ঠাই নিতে এক জড়তার মারপ্যাঁচে জড়িয়ে গেছে আঁখি।আদৃতকে ছেড়ে দিয়ে নিজেকে অতি স্বাভাবিক দেখানোর চেষ্টা করল সে।আদৃত এবার হাত বাড়িয়ে তার দু’চোখ আবারও মুছে দিল,আলতো স্বরে বলল।

হিটলার আঁখির চোখে এই জল মানায় না,আমাদের হিটলার কবে থেকে অন্যের দেওয়া শোকে কাতর হওয়া শিখে গেল!দেখো কেঁদে কেঁদে কি হাল করেছো নিজের,পুরো চেহারা লাল হয়ে আছে,এবার বন্ধ করো এসব,আর যেখানে কথা আশরাফ আঙ্কেল আর আহিলের উনারা তোমাকে অনেক ভালোবাসেন।দেখে নিও একদিন না একদিন তোমাকে আবারও আপন করে নিবেন তারা।

আদৃতের বলা এই কয়েকটা বাক্য আঁখির মনকে অসীম এক প্রশান্তির ছোঁয়ায় মাতিয়ে তুলল।মনে এলো তার অদম্য এক তৃপ্তিময় অনুভুতি,সবকিছু ফিরে পাওয়ার আশ্বাসটা হাজারগুণ বেড়ে গেল।বরাবরের মতোই আদৃতের কয়েকটা কথাই আঁখির ক্ষতে ওষুধের কাজ করল।

আজ স্ত্রী মাসুমার সঙ্গে অনেক ঝগড়া করে এসেছে রিয়াদ।তাকে ছেড়ে দিতে চায় সে,কিন্তু মাসুমা তাকে ছাড়বে না কোনো কিছুর বিনিময়েও,তার সন্তানদের অগোছালো একটা জীবন দিতে রাজি না মাসুমা,তাই সে রিয়াদকে ছাড়ছে না,এদিকে রিয়াদের মন ভরে ওঠেছে মাসুমার উপর,প্রেম করে বিয়ে করলেও এখন আর মাসুমাকে চাই না তার।নতুন বিয়ে করার জন্য এদিক ওদিক লু*চ্চা*মি করে বেড়াচ্ছে,আজ ঝগড়া করে সোজা পা*বে*ই চলে আসল রিয়াদ,এখানে এসেই পাশের বাড়ির মিসেস ইশানা হাফিজ কে দেখতে পেল,তার সাথে বেশ কিছুদিন থেকে আপত্তিকর কথাবার্তা হয় রিয়াদের, প্রায়ই ফোনে কথা বলে,অনেকদিন থেকেই তার উপর নজর রিয়াদের,স্বামী বড়লোক কিন্তু বেশ বৃদ্ধ, টাকা কামাই করতে গিয়ে অর্ধেক জীবন পার করে দিয়েছে,আর টাকার বল আছে বলেই এ বয়সে যুবতী মেয়ে বিয়ে করতে পারল।ইশানার বয়স কম,তার উপর থেকে সুন্দরী, স্বভাব চরিত্রেরও কোনো ঠিক ঠিকানা নেই,স্বামীর টাকায় ফুর্তি করাই তার মুখ্য কাজ,স্বামী সুন্দরী বউ পেয়েছে তাই তার উপর কখনও কোনো কথা বলে না,তাকে তার ইচ্ছে স্বাধীন ছেড়ে দিয়েছে,অন্ধের ন্যায় বিশ্বাস করে তাকে– যার লাভ ইশানা সবসময়ই নিয়ে থাকে।আজকেও একটা পাব এ এসেছে,স্বামী দেশের বাইরে,তাই ফুর্তি করবে আজ রাতভর এখানে ইশানা।হঠাৎ রিয়াদকে দেখে তার ভালোলাগার পরিমাণ দ্বিগুণ হলো,রিয়াদের মতো সুদর্শন পুরুষকে কাছে পাওয়ার তৃষ্ণা তার বহুদিনের।ইশানাকে দেখে রিয়াদেরও সুপ্ত মনের ভাসনা জেগে উঠল,ম*দে*র গ্লাস নিয়ে তার পাশে গিয়ে বসল,ইশানার সাথে অ*শ্লী*ল*তা*র সহিত কথা বলা শুরু করল,আচমকা ইশানা এসে তার কোলে বসে পরল হাতে ম*দে*র গ্লাস নিয়ে,ইশানা তার গ্লাস থেকে কিছু আংশিক ম*দ রিয়াদের মুখে ঢেলে দিল,অতঃপর রিয়াদ কা*মু*ক*তা*য় তাকে জড়িয়ে ধরতে নিলে ইশানা নে*শা*ক্ত হেসে উঠে ডান্স করতে শুরু করল।রিয়াদও সাথে উঠে গেল,একসাথে দুজন একে ওপরের গায়ে ঢলে পরে নাচতে লাগল,ডান্স করে করে ইশানা রিয়াদকে একটা কক্ষের দিকে আসার জন্য ইশারা করল তারপর সেদিকে হাঁটাও ধরল।রিয়াদও তার পিছু নিল।কিন্তু হঠাৎ ভিরের মধ্যে ইশানাকে কোথাও হারিয়ে ফেলল রিয়াদ,এদিক ওদিক খোঁজতে লাগল কিন্তু ইশানাকে কোথাও পেল না।ক্ষণিক পর ইশানার নাম্বার থেকে ফোন আসলে রিয়াদ ফোন ধরল।

″হোয়্যার আর ইউ বেবি?″

″বেবি আমি পা*বে*র বাইরের পিছনের দিকটায় আছি চলে আসো।″

″পিছনের ওই গাছগাছালি পূর্ণ জঙ্গল টাইপ জায়গায় কি করছ তুমি?

″চলে আসো না বেবি, আজ না হয় জঙ্গলে মঙ্গল করব দু’জন।″

″ওকে বেবি তুমি যেখানে বলবে আমি আসতে রাজি,অপেক্ষা করো আমি আসছি এক্ষুণি।″

অতঃপর পা*বে*র বাইরে চলে গেল রিয়াদ,পিছনের দিকটা বেশ গাছগাছালি পূর্ণ একটা জায়গা,সেখানে গিয়ে কাউকে পেল না রিয়াদ,আশেপাশে খোঁজতে লাগল ইশানাকে,কোথাও তাকে পাওয়া যাচ্ছে না,তাই ভিতরের দিকে আর একটু ঢুকে তাকে খোঁজার চেষ্টা করল তার নাম নিয়ে,কিন্তু কোথায় তার সাড়া পেল না,হঠাৎ মাথায় আঘাত পেল,কিছু বোঝার আগেই জ্ঞান হারাল রিয়াদ।

অচেতন অবস্থায় পরে থাকা রিয়াদকে লোকারণ্য থেকে দূর করার প্রচেষ্ঠায় তার পা টেনে এক জনশুন্য নির্জন জায়গার দিকে হাঁটা ধরেছে হুডি পরা অজ্ঞাত সে জন, টানতে টানতে রিয়াদকে জনমানবহীন একটা জায়গায় নিয়ে আসে অবশেষে, রিয়াদের নাকে বেশ সময় টিপ দিয়ে ধরে থাকলে তার জ্ঞান ফিরে আসে অল্প সময়ে,জ্ঞান ফিরে আসলেও বুজে ওঠতে পারে না সহজে কিছুই,আশপাশ আর সামনের হুডিওয়ালা ব্যক্তিকে দেখে হকচকিয়ে যায় বেশ,নে*শা*ভ*রা কন্ঠে বোকার মতো প্রশ্ন করে তাকে।

″কে তুমি?আমাকে এখানে কেনো এনেছ?″

″কেনো রিয়াদ বেবি জঙ্গলে মঙ্গল করবে না?″

″তুমি ইশানা নও,কে তুমি?ইশানা কোথায়?

″পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছে সে রূপসী,কিন্তু তোর অপেক্ষায় বসে আছে এখনও,বলছে তোকে সাথে নিবে,যার জন্য এতো আয়োজন।″

″কি যা তা বলছ!কে তুমি,আমাকে এখানে এনেছ কেনো বলো?″

″আমি প্রমত্ত অঙ্গনা,তোর মৃ*ত্যু হয়ে এসেছি।″

দেরি না করে সাথে সাথেই রিয়াদের বুক বরাবর ছু*রি ঢুকাতে গেলে রিয়াদ নিজেকে বাঁচাতে পাশে সরে যায় যাতে ছু*রি*ঘা*ত রিয়াদের পেটে পরে,রিয়াদ আঁতকে ওঠে যন্ত্রণায়,তবুও নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা ছাড়ে না,অজ্ঞাত ব্যক্তি আবারও তার বুকের দিকে ছু*রি ধরলে রিয়াদ ধাক্কা দিয়ে তাকে ফেলে দিলো,আর ছোটতে শুরু করল।

রিয়াদ লোকারণ্যের খোঁজে ছোটছে,চিৎকার করে লোক ডাকছে তাকে বাঁচানোর জন্য।প্রমত্ত অঙ্গনা নামের অজ্ঞাত সে জন তার পিছন ছোটছে,মনে যে নেই তার কোনো ভয়,রিয়াদের শেষ যেন আজ না দেখে যাবে না।রিয়াদকে সে বেশ ভিতরে নিয়ে গিয়েছিল যার ফলস্বরূপ রিয়াদ এতো ছোটেও লোকারন্য খোঁজে পায় নি এখনও,তাছাড়া নে*শা*তে ভরপুর শরীরে অতিরিক্ত দৌঁড়াবেই বা কেমনে,দৌঁড়াতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে পরে গেল রিয়াদ,অজ্ঞাত সে ব্যক্তি আবারও তার উপর ঝাপিয়ে পরে তাকে ছু*রি*ঘা*ত করতে চাইলে তার সাথে ধস্তাধস্তি করে রিয়াদ এবারও সরে যেতে সক্ষম হলো,যাতে ছু*রি*ঘা*ত রিয়াদের পায়ের দিকটায় পরল,রিয়াদ আবারও নিজেকে ছাড়াতে পারল সে অজ্ঞাত ব্যক্তির দাপট থেকে, কোনোরুপ তাকে ধাক্কা দিয়ে উঠে পালাতে লাগল রিয়াদ।

চলবে………

#প্রমত্ত_অঙ্গনা
#লেখিকা_আরোহী_নুর
(২১)

রিয়াদ অন্ধকারে কোথাও মিলিয়ে গেল,আশেপাশে রিয়াদকে হন্তদন্ত হয়ে খোঁজতে লাগল সে অজ্ঞাত ব্যক্তি,রিয়াদ তাকে আড়াল থেকে দেখছে,শরীর থেকে র*ক্ত ঝড়ার বেগ প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে, সাথে দূর্বল হয়ে পরছে রিয়াদ,তাকে যে করেই হোক প্রমত্ত অঙ্গনার হাত থেকে নিজের প্রাণ রক্ষা করতেই হবে,তবে বেরুতেও ভয় করছে রিয়াদের,মৃ*ত্যু যে তার পিছনেই,তার গতির বেগ স্বাভাবিকের তুলনায় বহুগুণ,যেন দক্ষ কোনো দৌঁড় প্রতিযোগী,শরীরের জোরও কম না,তার সাথে পেরে ওঠার শক্তি ও সাহস ঝুটিয়ে ওঠতে পারছে না রিয়াদ,তবুও মন শক্ত করে অজ্ঞাত সে ব্যক্তির অগোচরে বের হলো,কিন্তু পারল না তার চোখ ফাঁকি দিতে,সাথে সাথে ধাওয়া শুরু করল তাকে সে,প্রাণ বাঁচাতে ছুটতে ছুটতে মেইনরোডের বেশ পাশে চলে এলো রিয়াদ,মনে জেগে উঠল বেঁচে যাওয়ার বড় এক আশা।তবুও ভয় দূর হলো না মন থেকে,পিছনের জন যে মোটেও দূর্বল বা মাত দিয়ে যাওয়ার কোনো পাত্র নয়,তাই মেইন রোডের বেশ পাশে এসে গেলে প্রাণপণে ছুটতে লাগল, কিন্তু আবারও পিছন থেকে ভারি কিছুর আঘাতে মুখ থুবড়ে পরল রিয়াদ,শরীর পুরো অবশ হয়ে আসছে তার,হাত পা কাঁপছে,কাজ করা যেন বন্ধই করে দিয়েছে,তাও হুমড়ি দিয়ে নিজেকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করতে লাগল, এবার সেই অজ্ঞাত ঘাতক তাকে টেনে পাক ফিরিয়ে নিল,ঘন ঘন নিশ্বাস ফেলে অস্পষ্ট বাক্যে বলল রিয়াদ।

″প্লিজ আমাকে মেরো না,ছেড়ে দাও প্লিজ। ″

″ভয় পাস নে এখনই ছেড়ে দিব।″

কথাটা বলে রিয়াদকে টেনে দাঁড় করাল,রিয়াদ ভালো করে কিছু বোঝে ওঠার আগেই তাকে শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে প্রবল এক ধাক্কা দিলো যাতে রিয়াদ রাস্তায় গিয়ে আঁছড়ে পরার আগেই একটা গাড়ির সাথে ধাক্কা খেয়ে গেল,পলকেই রিয়াদের শরীর বেশ দূরে গিয়ে ছিটকে পরল,গাড়িটা একটা ব্যক্তিগত কার ছিল,হয়ত চালক ভালো মানুষ ছিল তাই গাড়ি থামিয়ে এগিয়ে গেল রিয়াদের কাছে,প্রমত্ত অঙ্গনা নামক সেই অজ্ঞাত ঘাতক আর পা বাড়াল না সেদিকে,বরং গাছগাছালির আড়াল হয়ে অন্ধকারে মিলিয়ে গেল।

আদ্রিশ ডিভোর্স পেপারে সাইন করে দিয়েছে বুকে পাথর রেখে,হঠাৎ কক্ষে প্রবেশ করল রিদিকা।

″কি এখন তোমার আসার টাইম হলো?″

″আরে কি করব বলো? আমার ওই বান্ধবী তো আসতেই দিচ্ছিল না,বলে না কি আজকে থেকে যেতে,কিন্তু আমি তোমাকে ছাড়া বেশিক্ষণ দূরে থাকতে পারি না বলে এসেছি ওকে।ওর স্বামী নিজে এসে আমাকে বাড়ির সামনে দিয়ে গেলেন।″

″হুম ভালো করেছ।আমি নিজে থেকেই তোমায় কোথাও দূরে থাকতে দিব না কখনও,তুমি শুধু আমার কাছেই থাকবে।″

″হুম বুঝেছি,তা হাতে ওটা কি?″

″আমার আর আঁখির ডিভোর্স পেপার,সাইন করে দিয়েছি।″

″তুমি অবশেষে আঁখিকে ডিভোর্স দিয়ে দিলে?এমনটা কেনো করলে তুমি?আমি কখনও তা চাই নি।আমার জন্যই আজ তোমরা আলাদা হয়ে গেলে।″

″আরে তুমি শুধু শুধু প্যারা নিচ্ছো,আঁখি আমার কাছেই ফিরবে দেখে নিও,যখন দেখবে আমি সাইন করে দিয়েছি ডিভোর্স পেপারে, যখন বুঝতে পারবে আমাকে ও সত্যিই হারিয়ে ফেলছে,আমার থেকে দূরে চলে যাচ্ছে তখন সব ফেলে আবারও আমার কাছে ফিরে আসবে।″

″আর তুমি ওকে মেনে নিবে!″

″অবশ্যই।″

″তোমাকে ও এতো অপমান করল তারপরও!″

″হুম,ও আমার সাথে যা তা করতে পারে কারণ আমি ওকে ভালোবাসি।আমি সেই অধিকার ওকে দিয়েছি।তুমি ফ্রেস হয়ে নাও আমি আসছি।″

অতঃপর আদ্রিশ কক্ষ ত্যাগ করল,রিদিকা বেশ খানিকক্ষণ তার যাওয়ার পাণেই তাকিয়ে রইল।

রাত ১ টা,রিয়াদের এক্সিডেন্ট যে গাড়ির সাথে হয়েছে সে গাড়ির মালিক তারই দূরসম্পর্কের আত্নীয় হন,তার এ অবস্থা দেখে লোকটি তাকে তাড়াতাড়ি করে পাশের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে।ইমারজেন্সিতে নিতে হবে রিয়াদকে,শরীরের বিভিন্ন অংশ তার থেঁতলে গেছে, এদিকে বর্তমানে হাসপাতালে কোনো ডাক্তার নেই,পেরেশানিতে পরল নার্সেরা।নার্স ইরা ফোন করল ডা.আশরাফ খানকে।

″স্যার ইমারজেন্সি রোগী এসেছে,অনেক র*ক্ত*পা*ত হচ্ছে তার,আধ ঘন্টার মাথায় চিকিৎসা শুরু না করা গেলে নিশ্চিত মা*রা যাবে কিন্তু বর্তমানে কোনো ডাক্তার এখানে নেই।″

″তোমরা যেভাবে পারো রোগীর টেক কেয়ার করো,র*ক্ত বন্ধ রাখার চেষ্টা করো আর হাসপাতালের সবথেকে কাছে যে ডাক্তার থাকেন উনাকে কল করে ইমারজেন্সি আসতে বলো।″

″ওকে স্যার।″

হাসপাতালের সব থেকে কাছে একমাত্র আঁখির বাড়ি পরে,সেখান থেকে তার বাড়ির দূরত্ব মাত্র ১০ মিনিটের রাস্তা তাই নার্স তাকেই ফোন করল।ইমারজেন্সির ডাক কখনও অবহেলা করে না আঁখি।যতো তাড়াতাড়ি করে পেরেছে চলে এসেছে।প্রায় ২ ঘন্টা অপারেশনের পর আঁখি রিয়াদকে বাঁচাতে সক্ষম হলো,যদিও আঁখির তাকে মোটেও পছন্দ না কিন্তু আঁখি নিজের দায়িত্ব পালনে কখনও পিছপা হয় না।এতসময়ে সেখানে রিয়াদের পুরো পরিবারই চলে এসেছে,কান্নায় ভেঙে পরেছে সকলেই।রিয়াদ বেঁচে গেলেও আশংকা মুক্ত নয়,তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে,জ্ঞান ফিরলে ভালো খারাপ কিছু বুঝা যাবে।

কাজ শেষ করেই আঁখি আবারও চলে যায় তার শান্তির নীড়ে।

রাত ৪ টা,ব্যস্ত শহর ঘুমের দেশে তলিয়ে আছে,চারিদিক নিরবতার দখলে,জনশূন্য সবদিক,প্রমত্ত সে অঙ্গনার প্রিয় একটা পরিবেশ যে আশপাশে ভালোই জমে উঠেছে,এই ঘন অন্ধকার জনশূন্য নিরব পরিবেশেই তো পাপীদের মৃ*ত্যু আর্তনাদ শুনতে মজা পায় সে,নিজের কাজ অপূর্ণ রাখার অভ্যেস যে তার কখনোই নেই,তাই চলে আসলো অপূর্ণ কাজে পূর্ণতা দান করতে,হাসপাতালে এসে সোজা আইসিইউ রুমে ঢুকে পরল ,এগিয়ে গেলো রিয়াদের ধারে,অতঃপর খুবই ধীর গতিতেই তার শরীরে দেওয়া সকল সে*লা*ই ও ব্যান্ডেজ আস্তে আস্তে খুলতে লাগল, তার যেন এসব মজাই লাগছে,অতঃপর রিয়াদকে সেই আগের হালে ফিরিয়ে দিয়ে সে তার পথ ধরল।

আদ্রিশ সকাল হতে না হতেই ডিভোর্স পেপার পাঠিয়ে দিয়েছে আঁখির কাছে,প্রফুল্ল মনে নাস্তা সেরে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে যাবার জন্য প্রস্তুত হবে তখনই হাতে আসল পেপারটা,আদ্রিশের সাইন দেখে ব্যাথায় কুঁকড়ে উঠল আরেকদফা তার মন,চোখে শোকের জল থাকলেও মুখে ফুটল তাচ্ছিল্যের হাসি।

অবশেষে তার ভালোবাসার পরাজয় ঘটল আদ্রিশের মিথ্যে ভালোবাসার ধাক্কা সামলাতে না পেরে।তাচ্ছিল্যের হাসিটা প্রখর করে বলল আঁখি।

বাহ রে ভালোবাসা,যে কাল অব্দি মৃত্যুর আগ অব্দি ছাড়বে না বলেছিল সেই আজ নির্দ্বিধায় ছেড়ে দিল।মানুষ এতো নাটক জানে আদ্রিশকে না দেখলে জানতামই না।আল্লাহ তায়ালা আপনার কাছে হাজার শুকরিয়া আমাকে আদ্রিশের মিথ্যে ভালোবাসার জাল থেকে বাঁচানোর জন্য।অবশেষে আত্মসম্মানের সংগ্রামে জয়ী হলাম আমি,শুকরিয়া রাব্বুল আল-আমীন।

আদ্রিশ নাস্তা করছিল তখনই তার ফোনে কল আসে।কলটা রিসিভ করার পর ওপর পাশের বলা কথা শুনে হতভম্ব হয়ে গেল আদ্রিশ,আর কিছু কাউকে না বলেই ছুটে বেরুলো বাইরের দিকে।রিদিকা শুধু লক্ষ্য করল আদ্রিশের কার্যকলাপ।

আইসিইউ রুমের বেড জুরে র*ক্তে*র ছড়াছড়ি,রিয়াদের লা*শে*র দিকে যে কারো তাকাতেই ভয় করছে,এতো ভয়াবহ অবস্থা সহ্য করার ক্ষমতা যে সবার থাকে না।রিয়াদের লা*শে*র পাশেও প্রমত্ত অঙ্গনা নামটা লিখা,তাজ্জবের ব্যাপার হলো নামের পাশে এবার বাক্যও লিখা আছে।

ভালোবাসার মর্ম যে প্রতারণা দিয়ে দেয় তার হাল এমনই হওয়া উচিৎ।
প্রমত্ত অঙ্গনা।

ইন্সপেক্টর জিসান নির্বাক হয়ে রইল,পা*ব এর একটা বন্ধ রুমে ইশানারও গলা কা*টা লা*শ পাওয়া গেছে যার পাশে লিখা।

লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু।
প্রমত্ত অঙ্গনা।

কি করবে জিসান ভেবেই পাচ্ছে না,এই প্রমত্ত অঙ্গনা যে তার রাতের ঘুম ও দিনের শান্তি হারাম করে দিয়েছে।তবে ছাড়বে না এই অজ্ঞাত খু*নি*কে পণ করে নিয়েছে সে।সে যেভাবেই হোক না কেনো তাকে তো জিসান ধরবেই।

হাসপাতালের সিসিটিভি ফোঁটেজ চেক করল জিসান,সেখানে শুধু হুডিওয়ালা,মাস্ক পরিহিত একজনকে দেখা গেছে,যার হাতে মোজা পায়ে সু।উপর থেকে নিচ অব্দি কালোতে ভরপুর,চেহারা দেখা বা শরীরের কোনো গড়ন কিছুই তো বোঝা যাচ্ছে না এমতাবস্থায় এই ফুটেজ দিয়েই বা কি হবে।গম্ভীর চিন্তায় পরে গেল জিসান।

হাসপাতালে পরেছে কান্নার রুল,পুলিশের দাবিতে রিয়াদের লাশ তাড়াতাড়িই পোস্টমর্টেমে নেওয়া হয়ে গেল।লা*শ কা*টা ঘরের বাইরের দিকে বসে কেঁদে যাচ্ছে রিয়াদের আত্মীয় স্বজন।একপাশে বসে কেঁদে যাচ্ছে তার স্ত্রী তার দুই সন্তানকে বুকে জড়িয়ে ধরে।রিয়াদ তাকে সত্য অর্থে ভালো না বাসলে কি হলো সে তো ভালোবেসেছিল,তার ভালোবাসায় তো কোনো খুঁত ছিল না।আঁখি দাঁড়িয়ে প্রখড় দৃষ্টি নিক্ষেপ করে আছে মাসুমার উপর,তখন আদৃত চলে আসল সেখানে আঁখির খোঁজে। আঁখির উদ্দেশ্যে বলল।

আঁখি,আধ ঘন্টার মধ্যে একটা ডিফিকাল্ট সার্জারি আছে,আমাদের দু’জনকে থাকতে হবে।

আদৃত লক্ষ্য করল আঁখি যেন তার কথায় কান দিল না,বরং তার পুরো মনোযোগ মাসুমার দিকে।আদৃত এবার আঁখির কাঁধে হাত রেখে বলল।

″এমন কি দেখছ আঁখি?″

″দেখছি কারো ভালোবাসার মানুষ হারিয়ে গেলে কতোটা কষ্ট হতে পারে,তার গভীরত্বে হারিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি,ভালোবাসার মানুষটা যেরকমই হোক না কেনো তাকে মন থেকে কখনও ঘৃণা করা যায় না,দেখো না ও কিভাবে কান্না করছে এক বিশ্বাসঘাতকের জন্য,যে তাকে রেখে অন্য নারীতে আ*স*ক্ত হয়েছিল আজ তার মৃ*ত্যু*তেই সেই অভাগীর চোখের জল ঝড়ছে।″

″রিয়াদ অন্য নারীতে আ*স*ক্ত ছিল মানে?আর এসব তুমি কি করে জানলে?

এবার আঁখি আদৃতের দিকে তাকিয়ে অনেকটা হেসে বলল।

সেটা না হয় আপনাকে নাই বললাম।সবকিছু শোনতে কেনো মন চায় আপনার?মনে এতো কৌতুহল থাকা ভালো না ডা.সাহেব।চলুন সার্জারির আগে রোগীর অবস্থাও তো জানতে হবে।

আঁখি আগে হাঁটা ধরলে পিছনে এলো আদৃত ঠিক তখন আঁখির সামনে পরল আদ্রিশ,আঁখির পিছনে আদৃতকে দেখে মুহুর্তেই তার র*ক্ত জ্ব*লে উঠল।

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here