এই_মন_তোমারি #পর্ব_১১ #লেখনীতে_নুজাইফা_নূন

0
221

#এই_মন_তোমারি

#পর্ব_১১

#লেখনীতে_নুজাইফা_নূন

-” ঘুমের মধ্যে হঠাৎ কারো গোঙানির আওয়াজ শুনে ঘুম ভেঙ্গে যায় শাফায়াতের। শাফায়াত তড়িঘড়ি করে উঠে তার বিছানার বা পাশ হাতরে দেখে কোথাও সূরা নেই। শাফায়াত তৎক্ষণাৎ রুমের লাইট জ্বালিয়ে দিয়ে বিছানা খালি আর সূরা মেঝেতে বসে কান্না করছে। শাফায়াত আর এক মুহূর্ত দেরি না করে সূরা কে মেঝে থেকে তুলে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে বললো , তুমি ঠিক কি চায়ছো বলো তো?আমাকে কি একটু শান্তিতে ঘুমোতেও দিবে না? জ্বালিয়ে মারছো আমাকে।আমি সত্যিই অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছি। বিছানা ছেড়ে এইখানে এসে ম’রা কান্না জুড়েছো কেন?”

-” শাফায়াতের কথায় সূরা কোনো উত্তর দিলো না।যা দেখে শাফায়াত বিরক্ত হয়ে সূরার বাহু চেপে ধরে বললো, আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি মেয়ে।”

-” শাফায়াতের ধমকে সূরা কেঁপে উঠে বাচ্চাদের মতো আঙ্গুল দেখিয়ে বললো দুই নাম্বারে যাবো । খুব জোরে ইয়ে পেয়েছে পুলিশ।”

-” সূরার কথায় শাফায়াত কপাল কুঁচকে বললো, গা’ধা ওয়াশরুমে যাবে এটা আমাকে বললে কি হতো তোমার? এমনিতে তো তোমার মুখ সারাক্ষণ টেপ রেকর্ডের মতো বাজতে থাকে।আর প্রয়োজনের সময় মুখে কুলুপ এঁটে বসে রয়েছো গা’ধা।”

-” ঐ আপনি অফিস থেকে ফিরে অনেক খাটা খাটনি করে অনেক রাতে ঘুমিয়েছেন ,তাই আর আমি আপনাকে ডাকি নি। আপনার ভালো করে ঘুম না হলে মাথা ব্যথা হবে।তখন তো আমাকেই বকা দিবেন। বলবেন সব তোমার জন্য হয়েছে অ’স’ভ্য বে’য়া’দ’ব গাধা মেয়ে কোথাকার।আমি এসব কথা শুনতে পারবো না বাপু।তাই তো বুদ্ধি করে আপনাকে না ডেকে নিজেই যেতে গিছিলাম।”

-“আহারে কত্তো স্বামী ভক্তি মেয়েটার। শোনো মেয়ে তুমি আমার দায়িত্ব। আমি তোমার দায়িত্ব নয়।সো আমার চিন্তা তোমার করতে হবে না ওকে।”

-” হু বললেই হলো।আপনি আমার সুন্দর পুলিশ বর। আপনার কথা চিন্তা করবো না তো কার কথা চিন্তা করবো পুলিশ?”

-” তোমার সব চিন্তা যদি আমাকে নিয়ে না করে পড়াশোনা নিয়ে করতে তাহলে তুমি অনেক ভালো করতে পারতে পড়াশোনায়। পড়াশোনার চিন্তা বাদ দিয়ে তোমার মাথায় সবসময় বর , ভালোবাসা এসব ঘুরে বেড়ায়। ভালোবাসার মানে বোঝো তুমি? ভালোবাসার উত্তাপ সহ্য করতে পারবে তো মেয়ে?”

-” খুব পারবো পুলিশ।”

-” সামান্য ওয়াশরুমের চাপ সহ্য করতে পারছো না আর ..

-” আর কি?”

-” কিছু না বলে শাফায়াত সূরা কে পাঁজা কোলে তুলে নিয়ে ওয়াশরুমে দিয়ে নিজে দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে বললো, দেখ আমার পাকনামি করে ওয়াশরুমে ঘুমিয়ে বাকি রাতটুকু পার করে দিও না।কাজ হলে আমাকে বলবে ঠিক আছে।”

-” ঠিক আছে পুলিশ।”

-” প্রায় পাঁচ মিনিট পরে শাফায়াত সূরা কে ওয়াশরুম থেকে নিয়ে এসে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে নিজেও সূরার পাশে‌ শুয়ে পড়ে। কিন্তু শাফায়াতের চোখে ঘুম নেই।সে কপালে হাত রেখে চোখ বুজে পড়ে থাকে।যা দেখে সূরা ভাবে হয়তো সে ঘুমিয়ে পড়েছে। সূরা আস্তে আস্তে শাফায়াতের দিকে এগিয়ে এসে তার বুকের উপর মাথা রেখে শুয়ে থাকে। শাফায়াত কি মনে করে সূরা কে এক হাতে জড়িয়ে নিজেও ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমায়।”
___________________________________
-” ফজরের আযানের মিষ্টি ধ্বনি কর্ণপাত ‌হতেই তন্দ্রা কে’টে যাওয়ার সাথে সাথে আপনা আপনি দর্শনেন্দ্রিয় খুলে যায় শাফায়াতের। শাফায়াত চোখ খুলে দেখে সূরা তার বুকে বিড়াল ছানার মতো লেপ্টে রয়েছে।যেন এটা তার শান্তির নীড়। শাফায়াত অতি সাবধানে সূরা কে তার বুকের উপর থেকে সরিয়ে বালিশে শুইয়ে দিয়ে নিজে ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমে চলে যায়। শাফায়াত ফ্রেশ হয়ে একটা সাদা পাঞ্জাবি পরে মাথায় টুপি নিয়ে মসজিদে চলে যায়। শাফায়াত নামাজ শেষ করে এসে দেখে সূরা এখনো ঘুমিয়ে রয়েছে।সে মাথার টুপি টা রেখে এসে সূরার পাশে বসে কিছুক্ষণ সূরার দিকে তাকিয়ে থেকে তার কপালে লেগে থাকা চুলগুলো সরিয়ে দিয়ে বললো, ঘুমের মধ্যে কি নিষ্পাপ দেখাচ্ছে মেয়েটাকে‌।মনে হচ্ছে যেন ভাজা মাছ টা উল্টে খেতে জানে না।কে বলবে এই নিষ্পাপ মুখের পেছনে একটা বিচ্ছু মেয়ে লুকিয়ে রয়েছে। শাফায়েতের স্পর্শে ঘুম ভেঙ্গে যায় সূরার।সূরার ঘুম ভেঙ্গে শাফায়াত কে নিজের এতো কাছে দেখে ভড়কে হয়ে যায় সূরা।সূরা কি বলবে বুঝতে না পেরে বললো, গুড্ডি মুড্ডি পুলিশ।”

-” হোয়াট ডু ইউ মিন বাই গুড্ডি মুড্ডি?

-” শাফায়াতের কথা শুনে সূরা ফ্যালফ্যাল করে তার দিকে তাকিয়ে বললো , কি হোয়াট ফোয়াট বললেন আমি বুঝি না বাপু।বাংলায় বলেন।”

-” গুড্ডি মুড্ডি দ্বারা কি বোঝালে তুমি?”

-” আরে এটা ঐ যে বড়লোকরা সকালের শুভেচ্ছা বিনিময় করে না সেটা।”

-” গাধা এটা গুড্ডি মুড্ডি নয় গুড মর্নিং।ওকে।”

-” এই রুমে তো শুধু মাত্র আমি আর আপনি।তাহলে ওকে এটা কাকে বলছেন ? এই রুমে আবার কোনো পেত্মী নেই তো।যার সাথে আপনি কথা বলছেন।”

-” গা’ধা ওকে মানে ঠিক আছে।আম্মি তোমার জন্য একজন টিচার ঠিক করেছেন। তুমি সুস্থ্য হলে সে তোমাকে পড়াতে আসবে। তখন মন দিয়ে পড়াশোনা করবে ওকে?”

-” আমি একদম ঠিক আছি পুলিশ। আপনি মাস্টার মশাই কে আজ থেকে পড়াতে আসতে বলেন। আমি মন দিয়ে পড়াশোনা করবো। আমি যতো তাড়াতাড়ি পড়াশোনা শিখতে পারবো , আপনি আমাকে ততো তাড়াতাড়ি ভালোবাসবেন তাই না পুলিশ?”

চলবে ইনশাআল্লাহ।।

#মনের_উঠোনে_রেখেছি_তোকে
-” শিক্ষা নিজের রুমে বসে চোখের পানি ফেলছে। চোখের পানি আর নাকের পানি মুছতে মুছতে তার এক বক্স টিস্যু শেষ হয়ে গিয়েছে।যা পুরো রুমে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সাহিত্যের কথা গুলো বড্ড পোড়াচ্ছে তাকে। খুব কষ্ট পেয়েছে সে সাহিত্যের কথায়।সে কিভাবে পারলো তাকে কালনাগিনী ছলনাময়ী বলতে? শিক্ষার চোখের পানি কিছুতেই বাঁধ মানছে না। তার এই কান্নার গতি বাড়িয়ে দিতে সাহিত্যের আগমন ঘটে। সাহিত্য কে দেখা মাত্র শিক্ষার কান্না আরো বেড়ে যায়। সাহিত্য গিয়ে শিক্ষার চোখের পানি মুছে কপালে গভীর ভাবে চুমু দিয়ে বললো, আ’ ম সরি।এই দেখ আমি কান ধরেছি।তোকে প্রমিজ করছি আর কখনো তোকে বকা দিবো না। এখন থেকে শুধু আদর দিবো।আদরে আদরে পাগল করে দিবো তোকে।’

-“শিক্ষা তৎক্ষণাৎ সাহিত্যে কে ছাড়িয়ে নিয়ে বললো, তুই ছুবি না আমাকে।একটা কালনাগিনী ছলনাময়ীর কাছে কেন এসেছিস তুই?চলে যা এইখান থেকে না হলে কিন্তু বাকি টা বলতে পারে না শিক্ষা। তার আগেই সাহিত্যে তার মুখ বন্ধ করে দেয়।এটা শিক্ষার সাহিত্যের থেকে পাওয়া দ্বিতীয় স্পর্শ।সে নিজেকে ছাড়ানোর বৃথা চেষ্টা করে ও যেন পারলো না। অবশেষে বাধ্য হয়ে নিজেও সাড়া দেয় সাহিত্যের ভালোবাসায়। প্রায় পাঁচ মিনিট পর সাহিত্য শিক্ষা কে ছেড়ে দিয়ে বললো, আমার জায়গায় তুই থাকলে কি করতি অঙ্গনা?পারতি তোর চোখের সামনে আমাকে অন্য মেয়ের সাথে বিয়ে হ‌ওয়া দেখতে?”

-” শিক্ষা সাহিত্যের বুকে মাথা রেখে বললো, আমার প্রতি কোনো বিশ্বাস নেই আপনার? আপনি কিভাবে ভাবলেন আমি আপনাকে ছেড়ে আমার মনের উঠোনে অন্য কাউকে রাখবো?”

-” অনেক ভালোবাসিস আমাকে তাই না?”

-” সব কথা বলে না হৃদয়। কিছু কথা বুঝে নিতে হয়।”

-“আমি আমার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছি বলে সাহিত্য শিক্ষা কে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে কপালে চুমু দেয়, তারপর চোখের পাতায়, তারপর তারপর….? সম্পূর্ণ গল্প ব‌ইট‌ই অ্যাপ থেকে পড়তে পারবে মাত্র ৩০ টাকায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here