এই_মন_তোমারি #পর্ব_৮ #লেখনীতে_নুজাইফা_নূন

0
199

#এই_মন_তোমারি

#পর্ব_৮

#লেখনীতে_নুজাইফা_নূন

-” শাফায়াত কে এইভাবে হসপিটালে ছুটে আসতে দেখে অবাক হয়ে গেল শাকিল।শাকিল অবাক হয়ে বললো,

-“স্যার এই গার্ল টা কি আপনার ম্যারিড করা ব‌উ? না মানে আপনি মেয়েটার ডিলেইলস জানার পর ছুটে চলে আসলেন। আবার আপনাকে দেখতে কেমন বিধ্বস্ত লাগছে ।তাই বললাম আর কি।”

-” শাফায়াত শাকিলের দিকে কটমটে চোখে তাকিয়ে বললো, তোমার এইখানে আর কোনো কাজ নেই। তুমি তোমার কাজে যাও।”

-” ঠিক আছে আছে।আমি গো দিচ্ছি।তবে যাওয়ার আগে মেয়েটাকে আর একটু দেখে যাই?কি সুইট একটা মেয়ে।লুক লাইক নায়িকা নায়িকা।জানেন স্যার আজকে আমার নিজের মধ্যে কেমন যেন নায়ক নায়ক ফিল আসছে।নায়িকারা যেমন বিপদে পড়লে নায়ক এসে তাদের কে উদ্ধার করে, তেমনি আমি ও আজ নায়কের মতো এসে মেয়েটার উদ্ধার করেছি। আজ বাসায় ফিরে আমি মাদার কে মেয়েটার ব্যাপারে বলবো । মেয়েটাকে বেশ মনে ধরেছে আমার।মনে হচ্ছে মেয়েটা কোনো পুলিশের আত্মীয়।হয় হোক সমস্যা নেই।সে যতো বড়ই পুলিশ অফিসার হোক না কেন আমি মেয়েটাকে আমার করবোই করবো। আমি যে আমার মনটা মেয়েটা কে গিফট করেছি। এখন শুধু তাকে বলা বাকি আছে #এই_মন_তোমারি‌।”

-” শাফায়াত রাগে গজগজ করতে করতে বললো , তুমি বড্ড বেশি কথা বলছো শাকিল ।”

-” সরি স্যার । আমি চলে যাচ্ছি বলে শাকিল কেবিন থেকে বেরিয়ে গেল।”

-” শাকিল যাওয়ার পর শাফায়াত সূরার দিকে এগিয়ে গেল।সূরার হাতে প্লাস্টার লাগানো হয়েছে। মাথায় ব্যান্ডেজ দেওয়া হয়েছে। চেহারায় কেমন মলিনতার ছাপ ফুটে উঠেছে। নিজের অজান্তেই শাফায়াত সূরার কপালের উপর পড়ে থাকা চুলগুলো কানের পেছনে গুজে দিলো।সূরার সবে মাত্র একটু চোখ লেগে এসেছিলো। মুখে কারো হাতের স্পর্শ পাওয়া মাত্র সূরা এক লাফ দিয়ে উঠে পড়লো।যার ফলস্বরূপ হাতে ব্যাথা পেয়ে কঁকিয়ে উঠে সূরা। ব্যাথায় চোখে পানি এসে যায়।যা দেখে শাফায়াত বললো,

-” তুমি ঠিক কোন ধাতু দিয়ে তৈরি একটু বলবে মেয়ে? যার এতো বড় একটা এক্সিডেন্ট হয়েছে তার এখনো দস্যিপনা যায় নি।তোমাকে শুধু মাত্র বলেছিলাম আমার সামনে আসবে না‌।আমি কি একবারও বলেছিলাম তুমি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাও? গাড়ির নিচে ঝাঁপ দাও? এসব তুমি ইচ্ছে করে করছে তাই না? যাতে আম্মি আমাকে বকাঝকা করতে পারে।”

-” প্রতিত্তরে সূরা কিছু না বলে শাফায়াত কে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে বললো, আপনি এসেছেন পুলিশ? আমি জানতাম আপনি আসবেন। জানেন আমি এতো বড়ো বড়ো গাড়ি দেখে কতো ভয় পাইছিলাম ? দেখেন না আমার হাত লুলা হয়ে গেছে।তার মানে পাড়ার দাদীরা যা বলছিলো সত্যি বলছিলো। পুলিশের পোলাপাইন সত্যি সত্যি লুলা হয়। কিন্তু আমার মনে হয় কখনো পোলাপাইন হবে না।তাই আমিই লুলা হয়ে গেছি।”

-” বেশ হয়েছে হাত লুলা হয়ে গিয়েছে। তোমার মুখ টা যদি বন্ধ হয়ে যেত তাহলে আমি আরো বেশি খুশি হতাম। গাড়ি তোমার হাতের উপর দিয়ে না উঠে মুখের উপর দিয়ে উঠলো না কেন?”

-” এইভাবে বলতে পারলেন পুলিশ? যদি আমি ম’রে যেতাম? তখন ও নিশ্চয় আপনি খুব খুশি হতেন তাই না? অবশ্য খুশি হবারি কথা। আমি ম’রলে আপনি আপনার পছন্দের মতো আর একটা বিয়ে করতে পারতেন।আপনি খুব খারাপ পুলিশ।আমাকে একটু ও ভালোবাসেন না। ছোটবেলায় আমার নাক ঘামতো বলে দাদীরা বলতো, দেখিস সূরা তুই বর কপালে হবে হবি।তোর তোকে অনেক ভালোবাসে , আদর , সোহাগ করবে। কিন্তু এখন বুঝতে পারছি তারা মিথ্যা বলছিলো বলে সূরা শাফায়াতের শার্টে নাক মুছতে যাবে তার আগেই শাফায়াত জোর গলায় বললো, হেই স্টপ।আজ যদি তুমি আমার ইউনিফর্ম নষ্ট করেছো তোমাকে সোজা জেলে ঢুকিয়ে দিবো । বে’য়া’দ’ব অ’স’ভ্য মেয়ে একটা। জ্বালিয়ে মা’রছে আমাকে।
এর‌ই মধ্যে কেবিনে নাজমা দেওয়ান, নুজাইফা আর মাজেদা প্রবেশ করলো। সবাইকে দেখে শাফায়াত তৎক্ষণাৎ সূরা কে ছেড়ে দিয়ে বললো , আপনি এসেছেন আম্মি? ভালোই হয়েছে। আমার থানায় যেতে হবে। আপনি মেয়েটাকে নিয়ে বাসায় চলে যান।”

-” মেয়েটা কে নিয়ে তোর চিন্তা না করলেও চলবে। আমি আছি তো মেয়েটার জন্য।ওর আর কাউকে প্রয়োজন নেই।”

-” শাফায়াত নাজমা দেওয়ান কে জড়িয়ে ধরে চুমু দিয়ে বললো, ইদানিং আপনাকে আমি চিনতে পারি না আম্মি।সব প্রশ্নের ত্যাড়া ত্যাড়া উত্তর দেন।আমাকে আর আগের মতো ভালোবাসেন না। এখন আপনার সব ভালোবাসা ঐ মেয়েটার জন্য।এটা ঠিক নয় আম্মি বলে শাফায়াত কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলো।”

___________________________________

-” রাত দশটা বাজে শাফায়াত বাড়ি ফিরে নিজের রুমে এসে দেখে সূরা নেই। শাফায়াত তৎক্ষণাৎ নুজাইফা কে কল করে তার রুমে আসতে বললো। সাথে সাথে নুজাইফা এসে বললো, পকেট কি ইদানিং বেশি গরম হচ্ছে তোমার? এইখান থেকে এইটুকু কল করে ডেকে আনতে হচ্ছে।”

-” ফালতু কথা বাদ দে। মেয়েটাকে কি হসপিটাল থেকে আনিস নি?”

-” নুজাইফা বুঝতে পারলো সূরার কথা বলছে তবু ও বললো কোন মেয়েটা ভাইয়া?”

-” আরে ঐ বিচ্ছু মেয়েটা।”

-” মেয়েটা মেয়েটা করছো কেন ভাইয়া? ওর সুন্দর একটা নাম আছে সূরা। সূরা ব‌উ হয় তোমার ভাইয়া। গিয়ে দেখো আম্মির রুমে আছে তোমার ব‌উ। যতো দিন না ভাবী মনি সুস্থ্য হয় ততোদিন আম্মির কাছেই থাকবে।”

-” আম্মির কাছে থাকবে মানে কি? আম্মি নিজেই তো অসুস্থ্য। একজন অসুস্থ্য মানুষ অন্য একজনের দেখাশোনা করবে কিভাবে?”

-” তো আম্মি করবে না তো কে করবে?ভাবী মনির যে অবস্থা মেয়েটা না পারবে খেতে ,না পারবে ওয়াসরুম যেতে, আর না পারবে চেঞ্জ করতে। মাজেদা খালা যে থাকবে মেয়েটার কাছে তার ও উপায় নেই। মাজেদা খালার ভাইয়ের মেয়ের বিয়ে তিনি হসপিটাল থেকে এসে সোজা গ্ৰামে চলে গিয়েছে।ফিরতে কিছু দিন দেরি হবে।তাই বাধ্য হয়ে আম্মি কে ভাবী মনির দেখাশোনা করতে হচ্ছে।”

-” শাফায়াত আর এক মুহূর্ত দেরি না করে নাজমা দেওয়ান এর রুমে চলে এলো। শাফায়াত এসে দেখলো সূরা ঘুমোচ্ছে আর বিছানার পাশে রাখা টেবিলের উপর খাবার ঢেকে রাখা হয়েছে।হয়তো এখনো মেয়েটা খায় নি।সূরার ঘুমন্ত মুখ দেখে শাফায়াতের কেন জানি মায়া হলো।তার ইচ্ছা করলো না মেয়েটাকে আর বকা দেওয়ার।সে রুমের বাইরে চলে আসতে যেয়েও কি মনে করে ফিরে গিয়ে সূরা কে কোলে তুলে নিলো।”

চলবে ইনশাআল্লাহ।।
পরের পর্ব :https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=262133850011684&id=100086452137176&mibextid=Nif5oz

________________________________________________
-“আই লাভ ইউ সাহিত্য।”

-“আই লাভ ইউ টু।”

-“একটু নিচের দিকে ঝুঁকবেন আপনি?”

-” কেন?”

-” আমার রাজকন্যারা পৃথিবীতে এসেছে , সেই আনন্দে আপনাকে চুমু দিবো।”

-” সাহিত্য তৎক্ষণাৎ নিজের গাল এগিয়ে দিয়ে বললো, এটা আবার বলতে হয় নাকি? দিয়ে দে ঠাস ঠাস করে।”

আমার প্রথম ইবুক #মনের_উঠোনে_রেখেছি_তোকে সোমবার বিকাল ৫ টা বাজে ব‌ইট‌ই অ্যাপে আসবে ইনশাআল্লাহ।ব‌ইট‌ই অ্যাপ থেকে সম্পূর্ণ গল্প পড়তে পারবে মাত্র ৩০ টাকায়।আশা করি তোমাদের হৃদয় ছুঁয়ে যাবে শিক্ষা , সাহিত্যের ভালোবাসায়।

আমার গ্ৰুপ : নূনের গল্প সাম্রাজ্য-Nuzaifa Nun ❤️নূনের গল্প সাম্রাজ্য-Nuzaifa Nun ❤️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here