মৃগতৃষ্ণা #পর্ব:০৮

0
119

#মৃগতৃষ্ণা
#পর্ব:০৮

এদিকে রফিক নিজের বুকে হাত দিয়ে রেখে জোরে জোরে শ্বাস ফেলছে। ভয়ে গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে, আরেকটু হলেই সুলায়মানের কাছে ধরা পড়ে যেতো আর তার আদেশ অমান্য করায় হয়তো বড় ধরনের কোনো শাস্তি তাকে ভোগ করতে হতো।আর তার রহস্য উন্মোচন করাও আর হতো না।
কিন্তু রফিক তেমন কিছুই শুনতে পায়নি বরং সুলায়মানের কক্ষের সামনে যেতেই তার হাতের সাথে ধাক্কা লেগে ফুলের টবটা পরে গেলো নিচে, ভেঙে চুরমার হয়ে গেলো টবটা।
রফিকের ঘুম ভেঙে যায় একটা স্বপ্ন দেখে। আর ওর মাথায় ঘুরতে থাকে যাকে পেছনের দরজা দিয়ে রাজবাড়ীর অন্দরে ঢুকতে দেখলাম সেই বা গেলো কোথায়? পেছনের দরজাটা যেহেতু
সুলায়মান -জুলেখার কক্ষের সামনে দিয়েই পার হতে হয় সেহেতু যে প্রবেশ করলো তাকে সুলায়মানের দেখার কথা। তাহলে সুলায়মান কি কিছু লুকোচ্ছে। যে একটা পাতা পড়লেও টের পায় তার চোখে ধুলো দিয়ে এতদিন ধরে কেউ বাচ্চাদের চুরি করে আনছে আর সে কিছুই টের পাচ্ছে না এটা অসম্ভব। এবার রফিকের মন হতে থাকলো কেন সে রাতে সুলায়মানকে দেখে সহযোগিতা করার কথা আগ বাড়িয়ে বলতে গেলো?আসলে মানুষ ভয় পেয়ে গেলে ভুল করে ফেলে।
নিজের কপাল নিজেই চাপড়াতে লাগলো রফিক, এত বড় ভুল সে কি করে করলো। তাই ঘুম ভাঙতেই রফিক নিজেকে সামলাতে না পেরে আবার সুলায়মানের কক্ষের সামনে গেলো কিন্তু না সে কিছুই করতে পারলো না উল্টো আরেক বিপত্তি বাঁধিয়ে এলো।

চারদিকে এতক্ষণে ভোরের আলো ফুটে উঠলো। সুলায়মান ও রূপাকে পাতালঘরে রেখে এলো।সুলায়মান কি করবে বুঝে উঠতে পারছেনা তাই জুলেখার কাছে সে সবকিছু খুলে বলে। জুলেখা চমকে ওঠে এসব কথা শুনে ,গড়গড় করে বলতে থাকে কি হবে এখন জনাব? আমি কি তবে আর বাঁচতে পারবো না? নাকি সবার চোখে অপরাধী হয়ে বেঁচে থাকবো আজীবন? কি করবেন আপনি? ও যদি সবাইকে বলে দেয় তখন!
সুলায়মান জুলেখাকে শান্ত হতে বলে। – বেগম শান্ত হও এত দুশ্চিন্তা করার কিছু হয়নি। রফিক অবশ্য তেমন কিছু বুঝতে পারেনি তবে তুমি একটা উপায় বের করো যে কি করা যায়।
জুলেখা কিছুক্ষণ ভেবে বললো আপনি ওর প্রাণ নিয়ে নিন জনাব ওর জবান বন্ধ করে দিন তার সাথে ওর কৌতুহলও।সুলায়মান বেশ অবাক হলো তার বেগমের কথায়! বেগমের এতো পরিবর্তন সুলায়মানের মানতে কষ্ট হচ্ছে।এতটা সার্থপরায়ন মানুষ সে ছিলো না। এখন তার দয়ামায়া নেই বললেই চলে।

সুলায়মান বললো না!না!বেগম, আমি একাজ করতে পারবো না ওরা আমাদের মেহমান। একাজ করা সম্ভব নয় অন্য কোনো উপায় থাকলে বলো।
জুলেখা মুখ ভার করে রইল কিছুক্ষণ তারপর বললো আপনি যা ভালো বোঝেন সেটাই করেন দয়া করে।তবে আমার বিশ্বাস আপনি যে কোনো মূল্যে আমার সম্মান ও প্রাণ দুটোই রক্ষা করবেন।
সুলায়মানের মুখে হাসি ফুটে উঠলো বেগম তাকে কতটা বিশ্বাস করে সেটা ভেবে।
________
হেমন্তি রফিকের সাথে কয়েকদিন হলো ভালো করে কথা বলেনা। হেমন্তির রাগটাও এখন কমেছে তাই রফিকের সাথে কথা বলতে ওদের কক্ষে আসে। রফিকের চোখ-মুখে চিন্তার ছাপ কি যেন ভেবেই চলেছে, হেমন্তি জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছে? তবে রফিকের কাছে কোনো প্রমান না থাকার ও হেমন্তিকে কিছু বললো না। কিন্তু তবুও অভিমানের সুরে বলে উঠল এখন তো আর আমি তোকে প্রমাণ ছাড়া কোনো কথা বলতে পারবো না তাই বললাম না।
হেমন্তি রফিকের কথার মানে ঠিকি বুঝতে পারলো কিন্তু তেমন পাত্তা দেয়না। বরং বলে এখানে আমরা ভ্রমণে এসেছি রফিক তাই ভ্রমণেটাই মন দিয়ে উপভোগ কর এত প্রমাণ করে কোনো কিছু করতে হবে না।আমি তখন রাগের মাথায় তোকে কিসব বলেছি সেগুলো মনে রাখিস না।
রফিক একটা মিথ্যা হাসি নিয়ে বলল এখন তো আমাকে কোনো প্রয়োজন নেই তোর, আমি ছাড়াও তোর অনেক ভালো বন্ধু রয়েছে।
– তুই সবসময় বেশি বুঝিস আর সেটা আমার বেশ বিরক্ত লাগে। তুই একটা কথা পেচিয়ে অযথা কথা বলে আমাকে রাগিয়ে দিস।
– হ্যা আমি রাগালেই তুই বিরক্ত হোস কিন্তু সিরাজ তোকে রাগালে সেটা তো ভালোই লাগে, তুই উপভোগ করিস মনে হয় ওর রাগানোটা।
এবার যেন হেমন্তির চোখে মুখে আগুনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। হেমন্তি রেগে গিয়ে বললো হ্যা সিরাজের রাগানো আমি উপভোগ করি, ভালো লাগে আমার। তাতে তোর কি?
রফিক বললো -“আমি তোকে ভালোবাসি হেমন্তি।”

হেমন্তি রফিকের বলা কথায় যেন আকাশ থেকে পড়লো এতটা অবাক ও সিরাজের ডায়েরি পড়েও হয়নি। হেমন্তির চোখের পলক পরছে না এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল রফিকের দিকে।
রফিক এবার জোরে জোরে হাসতে হাসতে বলল কিরে ভয় পেয়ে গেলি নাকি? এমন ভাবে তাকিয়ে আছিস যেন মনে হচ্ছে ভুত দেখেছিস।

হেমন্তির মুখ থেকে কোনো কথাই বের হচ্ছে না বরং অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল রফিকের দিকে।

রফিক এবার হাসি থামিয়ে দিয়ে বলল আরে মজা করলাম তোর সাথে। ভয় পেয়ে গেলি নাকি?

হেমন্তি একটা বড় করে শ্বাস ছেড়ে বলল
– হ্যা ভয় পেয়েছি ভেবেছিলাম তোর ওপর জ্বিন ভর করেছে হয়তো।যাইহোক তোকে আমি আমার কেবলই ভালো বন্ধু মনে করি এর বাইরে আর কিছু না।

– আমাকে না হয় ভালো বন্ধু ভাবিস আর সিরাজকে?

হেমন্তি কেমন যেন একটা ভড়কে গেলো রফিকের প্রশ্নে।তবুও বলল সিরাজকে নিয়ে না হয় পরে ভাবা যাবে।আগে তোকে চিকিৎসা করাতে হবে মনে হয় তুই মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে গেছিস।
রফিক এবার বেদনাদায়ক হাসি হাসলো। মনের মধ্যে একটা তীব্র যন্ত্রণা অনুভব হয়।
এর মধ্যেই সিরাজ আর দিগন্ত কক্ষে প্রবেশ করলো। ওরা গিয়েছিলো রাজবাড়ীর বাইরের স্কেচটা করতে।
সিরাজকে দেখেই হেমন্তির মুখে কেমন যেন একটা লজ্জা মাখা হাসি ফুটে উঠলো।
সিরাজ জিজ্ঞেস করলো কি নিয়ে কথা হচ্ছিল তোদের?
রফিক বললো তোকে নিয়ে কথা হচ্ছিল। সিরাজ হাসলো আর হেমন্তি বললো মি.সুলায়মানকে নিয়ে আমি স্বপ্নেও দেখি স্বয়নে-স্বপনে দিবারাত্রি আমি কেবল আমার সুলায়মানকেই দেখি।
সিরাজের রাগ হচ্ছে ভীষণ, সে যাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে সে নাকি আবার আরেকজনকে নিয়ে স্বপ্ন বুনে।

হেমন্তি মিটমিটিয়ে হাসছে সিরাজের রাগি চেহারা দেখে।সিরাজও কম যায় না ও বলে উঠলো আমি যেদিন থেকে স্কেচে আঁকা সুনয়নাকে দেখেছি সেদিন থেকেই তাকে নিয়ে হাজারো স্বপ্ন বুনে চলেছি।
হেমন্তির প্রথমে রাগ হলেই পরমুহূর্তেই মনে পরে সিরাজতো তাকে রাগান্বিত করার জন্য এ কথা বলছে।তাই এবার সে হাসছে।
এমন সময় আবার সোফিয়া এই কক্ষে প্রবেশ করলো। তার চেহারায় কেমন যেন বেদনার ছাপ বিদ্যমান।মুখটা মলিন করে আছে। সোফিয়া দিগন্তকে উদ্দেশ্য করে বললো- দিগন্ত আজ বিকেলে তুমি রাজবাড়ীর পুকুরঘাটে আসিও, আমি পদ্মপুকুরে থাকিবো আর তুমি সেটা স্কেচ করিবে। কয়েকটা পদ্ম আমার হাতে থাকিলে মন্দ হয় না।
দিগন্ত লজ্জমাখা মুখ নিয়ে হ্যা সূচক মাথা নাড়াল।

সিরাজ আর হেমন্তি বললো আমরাও যাবো সেখানে।
কিন্তু সোফিয়া বারন করল আর বললো- না। কেবল আমি আর দিগন্তই সেখানে যাইবো। আজ একান্তে কিছু কথা দিগন্তকে বলিবার আছে আমার। তোমরা বরং অন্য কোনোদিন যেও।
সিরাজ হেমন্তি আর রফিক একেকজন একেক জনের দিকে তাকাচ্ছে আর হাসছে।
এই কথাগুলো বলেই আবার সোফিয়া তার কক্ষের দিকে পা বাড়ালো।
সোফিয়া চলে যেতেই সিরাজ বলে উঠল ডাল মে কুছ তো কালা হে দোস্ত! তোকে একা যেতে বলেছে সোফিয়া। আমরা গেলে হয়তো তোকে ওর মনের কথাগুলো বলতে পারবে না তাই তোকে একাই যেতে বলেছে।
দিগন্ত মাথা নিচু করে আছে -ধ্যাত! কিসব উল্টোপাল্টা বলছিস বলতো।ওর স্কেচ আঁকতে হবে তাই যেতে বলেছে।
হেমন্তি গুন গুন করে গান ধরলো আর মিটিমিটি হাসতে হাসতে চলে গেলো নিজের কক্ষে।

দিনের অনেকটা সময় সুলায়মান বাড়ীতে থাকেনা সেটা রফিক খেয়াল করে আর জুলেখাও তার কক্ষ ছেড়ে বের হয় না। তাই এই সুযোগে সুলায়মানের কক্ষের সামনে যেতে হবে আর দেখতে হবে যে রাতে ঢুকলো সে কোথায় হাওয়া হয়ে গেলো।তাই রফিক তার ডায়েরি তে সমস্ত প্ল্যান সাজিয়ে নিলো।কিভাবে কি করতে হবে বা ধরা পড়লেই বা কিভাবে সামলে নিতে হবে সবটা। সবটা সাজানো শেষ এবার সেটা কাজে করে দেখানোর পালা। রফিক পর্যবেক্ষণ করতে লাগলো সুলায়মানের গতিবিধি। কখন যাচ্ছে কখন আসছে কখন খাচ্ছে সব রফিক মুখস্থ করে নিলো কিন্তু সমস্যা একটাই সুলায়মানের গতিবিধির পরিবর্তন হতে পারে সে প্রতিদিন একই সময়ে বাড়িতে ফেরে না।এটা নিয়ে রফিকের মনে দুশ্চিন্তা হতে থাকলো।
_________
বিকেলে পদ্মপুকুরে সোফিয়ার আগেই দিগন্ত গিয়ে হাজির। এখন বর্ষার পানি টলমল করছে সরোবর। সোফিয়া গিয়ে দেখে দিগন্ত সোফিয়ার যাওয়ার আগেই স্কেচ আঁকতে শুরু করে দিয়েছে। সোফিয়া বলল – কি দিগন্ত এত তাড়া কিসের? আমার আসার অপেক্ষা পর্যন্ত করিতে পারতেছো না।
দিগন্ত সোফিয়ার দিকে মুগ্ধ চোখে চেয়ে থাকে আর বলে কোনো বিদেশিনী নারীকে শাড়ীতে যে এত সুন্দর লাগে তা আপনাকে না দেখলে বিশ্বাস করতে পারতাম না। আমার দেখা এক আশ্চর্য জাদুকরী আপনি মিস.সোফিয়া। যাকে দেখলে আমার মন খারাপ থাকলেও ভালো হয়ে যায়।নিজেকে উপলব্ধি করতে পারি খুব সহজেই। এই যে দেখুন না আপনাকে না দেখেই কল্পনায় একে নিয়ে সেটাকে স্কেচখাতায় রূপ দিচ্ছি।

সোফিয়ার মুখে হাসির ঝলকানি স্পষ্ট তবে সেটা বেশিক্ষণ স্হায়ী হলোনা মলিন হয়ে গেলো কি যেন ভেবেই।
পাশেই নৌকা বাধা ছিলো তাই সোফিয়াকে দিগন্ত নৌকায় উঠে পদ্ম হাতে নিয়ে বসে থাকতে বলে।দিগন্ত ঠিক তার মতো করে স্কেচখাতায় আঁকছে। এরপর আঁকা শেষ হলে সোফিয়া বলল দিগন্ত আমায় এমন একটা স্কেচ আঁকিয়া দিতে পারিবে যেখানে তুমি আর আমি দুজনে দুজনের খুবিই কাছাকাছি আছি, অপলক চেয়ে আছি।
দিগন্ত তার চুলে হাত দিয়ে মাথা চুলকাতে লাগলো, কি করবে বুঝতে পারছেনা তবুও বললো মিস.সোফিয়া আপনি কি সুন্দর আমার মনের না বলা ভাষাও বুঝতে পারেন।এর চেয়ে বড় পাওয়া আমার কাছে আর কি’বা হতে পারে জানা নেই।
এবার দিগন্তের খুব কাছাকাছি এসে ঘেষে বসলো সোফিয়া। চারদিকে হু হু করে বাতাস বইতে লাগলো দিগন্তের সারা শরীর শিহরিত হয়ে আছে। স্কেচ আঁকছে খুব ধীরে ধীরে যাতে তাড়াতাড়ি শেষ না হয়ে যায়। যতক্ষণ স্কেচ আঁকবে ততক্ষণই সোফিয়া তার পাশে বসে থাকবে। এমন মূহুর্ত জীবনে আর কোনোদিন আসবে কিনা তার কোনো নিশ্চয়তা যে নেই বললেই চলে।
অবশেষে শেষ হলো স্কেচ আঁকা। সোফিয়া স্কেচটা হাতে নিয়ে বললো – স্কেচ দেখিয়াই বুঝিতে পারিতেছি তোমার নিজের প্রতি কোনো যত্ন নাহি বলিলেই চলে।কিন্তু দেখো কি অপরূপ সুন্দর যত্ন নিয়ে আমাকে আঁকিয়াছে তুমি।
-আমার চেয়েও বেশি সুন্দর করিয়া আঁকিয়াছো আমারি ছবি। জানি আমায় পাইয়া গেলে রাখিবে আমার চেয়েও বেশি যতন করি।
কিছুক্ষণ সোফিয়া দিগন্তের দিকে তাকিয়ে রইলো পরমূহুের্ত বললো দিগন্ত তুমি তো বিধর্মী। এই একটা বাঁধাই যে আমাদের এক হইতে দিবে না আমরনকালে।

তাই তোমাকে দিয়ে দুজনের এক হইবার ছবি আঁকিয়া রাখিলাম। তোমায় বাস্তবে পাইবো না তো কি কল্পনাতে তো পাইবো।সোফিয়ার দুই নয়ন ছলছল করছে কথাগুলো বলার সময়।
দিগন্ত অস্রুশিক্ত নয়নে বললো আমার আর কিছু চাইবার নাই বিধাতার কাছে, যাকে আমি চেয়েছি খুব করে সে তো বুঝেছে না বলিবার আগে।
আপনি আমার অনেক শখের একজন নারী যাকে হৃদয়ে রেখে দিয়েছি খুব যতন করি, আজীবন কাটিয়ে দিবো এই ভেবে আপনিও একদিন ভালোবাসিয়াছিলেন আমারে।

সোফিয়া অবাক হয় দিগন্তের কথা শুনে মানুষটার কোনো অভিযোগ নেই এইটুকু পেয়েই সে মহাখুশি। তবে তার যে কষ্ট হচ্ছে সেটা ঢের বুঝতে পারছে সোফিয়া।

সোফিয়া পদ্ম ফুলগুলো হাতে করে নিয়ে চলে এলো তার কক্ষে। দিগন্ত ও সোফিয়াকে এগিয়ে দিয়ে চলে এলো তাদের কক্ষে। এসেই শুয়ে পড়লো বিছানায়।এমন সময় ও কখনোই শুয়ে থাকেনা। মনটা ভীষণ খারাপ।আসলে পুরুষ মানুষ ভেঙে চুরমার হয়ে গেলোও কাঁদতে পারেনা। কাউকে দেখানো যায় না মনের ক্ষত।

সিরাজ আর হেমন্তি গ্রাম ঘুরতে বেড়িয়েছে।রফিককে যেতে বলেছিলো কিন্তু রফিক ওদের সাথে গেলো না।
বাড়ীতেই রয়ে গেলো সে।আর বসে বসে ডায়েরিতে কি যেন লিখছে নকশা আকঁছে আবার কেটে দিচ্ছে। দিগন্ত এসে শুয়ে পড়েছে সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই রফিকের, সে তার মতো কাজ করে চলেছে।

সোফিয়া দিগন্তের আঁকা স্কেচখাতাটা জড়িয়ে আছে বুকে চোখ দিয়ে অঝোরে পানি ঝড়ছে। মাঝে মাঝে স্কেচ খাতাটা বুক থেকে সরিয়ে আঁকা ছবি গুলোর ওপর হাত বুলাচ্ছে পরম মায়ায়।

সিরাজ আর হেমন্তি গ্রাম ঘুরে ঘুরে দেখছে।সন্ধ্যা নেমে গেছে চারদিকে একটু পরেই অন্ধকারে ছেয়ে যাবে চারদিক। এবার রাজবাড়ীর দিকে রওনা করলো ওরা।
বাড়ী ফিরে এসেই দেখলো যে যার মতো করে শুয়ে আছে। অবাক করা বিষয় হলো আজ কারোই মন বোঝা যাচ্ছেনা।অন্যদিন এমন সময় ওরা কেউ কক্ষে থাকেনা। কেউ কারো সাথে তেমন কথা বলছে না।
রাতে খাওয়া দাওয়া যে যার মতো ঘুমিয়ে পড়লো।

সকাল থেকে রফিককে কোথাও দেখা যাচ্ছেনা। ওরা সবাই পুরো রাজবাড়ী খুজেও রফিককে কোথাও দেখতে পেলো না। ওরা ভাবলো হয়তো গ্রাম ঘুরে দেখতে গেছে। কিন্তু সকাল গরিয়ে বিকেল, বিকেল গরিয়ে সন্ধ্যা এখনো রাজবাড়ী তে ফেরেনি রফিক।
সবার চোখে -মুখে চিন্তার ছাপ,
কোথায় যেতে পারে রফিক?—-

চলবে,,,,
#লেখা: মুন্নি ইসলাম
[ গল্পটি ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করে পাশে থাকবেন। চাইলেও এক দিনে দুইটা পর্ব দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। পড়তে বেশিক্ষণ সময় লাগেনা তবে লিখতে গেলে অনেক সময়ের প্রয়োজন হয়। তবে আমি চেষ্টা করবো যত তারাতারি গল্প দেওয়া যায় সময় নিয়ে না লিখলে বানান অনেক ভুল হয়।ধন্যবাদ সবাইকে]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here