#স্নিগ্ধ_কাঠগোলাপ
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি
#পর্বঃ২৩
আরাবী জায়ানের দেওয়া ভালোবাসায় নিজেকে আজ সাজিয়েছে।অন্যরকম সুন্দর লাগছে মেয়েটাকে।জায়ানের দেওয়া উপহার পরেছে এইজন্যেই কি? লিপি বেগম যেন চোখ সরাতে পারছেন না মেয়ের উপর থেকে।শ্যামবর্ণা আরাবীকে এতো মায়াবতী লাগছে।লিপি বেগম মেয়ের কপালে চুমু খেলেন।আরাবীর কানের পেছনে কাজল ফোঁটা লাগিয়ে দিলেন যাতে কারো নজর না লাগে।মায়ের মন তো।মেয়েকে তৈরি করে দিয়ে তিনি চলে গেলেন রান্নাঘরে।হবু মেয়ে জামাই আসবে।তার জন্যে আপ্যায়নের ব্যবস্থা করতে হবে না বুঝি?লিপি বেগম যেতেই আরাবী আয়নায় তাকালো।পূর্ণ দৃষ্টিতে নিজেকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখল।নিজেকে দেখে নিজেই মুগ্ধ হলো আরাবী।তাকে আজ সুন্দর লাগছে। কেন লাগছে?কই আগে তো নিজের নজরে নিজেকে এতো সুন্দর লাগেনি।তবে আজ কেন ও নিজেই নিজেকে দেখে এইভাবে মুগ্ধ হচ্ছে?আচ্ছা?লোকটা ওকে এই সাজে দেখলে কিভাবে রিয়েক্ট করবে?ওকে এই সাজে দেখে কি পাগলামি করবে অনেক?অবশ্য লোকটা তো সদা পাগলামি করে ওকে নিয়ে।জায়ানের কথা ভাবতেই আরাবী লজ্জায় চোখ নামিয়ে নিলো।এই লোকটাকে নিয়ে ভাবলেই ওর লজ্জা লাগে,অস্থির লাগে,অদ্ভুত অনুভূতি হয় মনের মাঝে।ভালোলাগায় দেহের মাঝে অন্যরকম শিহরণ জাগে।ওর চারপাশে ভালোলাগার রঙিন প্রজাপতিরা এলোমেলো উড়াউড়ি করতে থাকে।হৃদস্পন্দন বেড়ে যায় অস্বাভাবিকভাবে।এমন কেন হয়?তবে কি ও ভালোবেসে ফেলল জায়ানকে?কিন্তু এতো তাড়াতাড়ি কিভাবে ভালোবাসা হয়?হয় কি?হয়েই-ই তো।নয়তো লোকটা যে বলে ওকে নাকি সে প্রথম দেখাতেই ভালোবেসে ফেলেছিলো।যাকে বলে লাভ এট ফার্স্ট সাইট।অতোশতো জানে না আরাবী।আর জানতেও চায়না। ও শুধু এটুকু জানে ওর মন আর মস্তিষ্কে এখন একমাত্র জায়ানের বসবাস।আর তাকেই আজীবন এই মনের মালিকানাধীন রাখতে চায় আরাবী।জায়ানের সাথেই বাকিটা জীবন কাটাতে চায় আরাবী।খুব করে চায় ও লোকটাকে।এই চাওয়া যেন দিনকে দিন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।জায়ানকে আঁকড়ে ধরেই স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে চায়।লোকটার বুকে মাথা রেখে সুখের নিদ্রায় মগ্ন হয়ে চায় আরাবী।লোকটার হাত ধরে দূর থেকে দূরাতে পারি জমাতে চায় ও।খুব বেশি কি ওর চাওয়া পাওয়া?
এটুকু স্বার্থপর তো হওয়াই যায়? তাই নাহ?
ভাবনার মাঝেই কলিং বেলের আওয়াজ ভেসে আসল।ধুকপুকানি শুরু হয়ে গেলো আরাবীর।কিভাবে যাবে ও লোকটার সাথে?ইশ,লোকটা এতো বেহায়া সবার সামনেই না জানি কি বলে ফেলে উল্টাপাল্টা। বাহির থেকে সবার শোরগোলের আওয়াজ ভেসে আসছে।আর ভেতরে অস্থির হচ্ছে আরাবী।
_______
রোবটের মতো জায়ানের পেছন পেছন এসে সোফায় বসল নূর।দৃষ্টি ওর ফাহিমের দিকে। এটা কি ও ভুল দেখছে নাকি সত্যি সত্যিই ওর সামনে ফাহিমই দাঁড়ানো?ফাহিম গিয়ে দরজাটা খুলেছিলো।আর তখনই ফাহিমকে দেখেই যেন নূর চারশ চল্লিশ বোল্টের ঝটকা খেয়েছে বেচারি। ফাহিমক এমনভাবে দেখছে যেন ভুত দেখে ফেলেছে ও।নিজের চোখকেই যেন নিজের বিশ্বাস হচ্ছে না।সবার অগোচরে হাতে চিমটি কাটল নূর।ব্যথা পেয়ে নাক-মুখ কুচকে ফেলল।তবে এটা ওর মনের ভ্রম না।সত্যিই ফাহিম ওর সামনে।কিন্তু এই লোক ওর সামনে কেন?এদিকে জায়ান হ্যান্ডশেইক করল ফাহিমের সাথে।জিহাদ সাহেব আর লিপি বেগমকে সালাম জানিয়ে সবার ভালোমন্দ জিজ্ঞেস করল।নূর নিজেকে সামলে নিয়ে সবাইকে সালাম দিলো।লিপি বেগম ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলেন,
‘ মাশা-আল্লাহ! তুমি দেখতে ভীষণ মিষ্টি নূর।’
নূর মুচঁকি হেসে বলে,
‘ ধন্যবাদ আন্টি।’
এদিকে ফাহিম আঁড়চোখে তাকালো নূরের দিকে।আজকে অনেকদিন পর ঠিকঠাকভাবে নূরকে দেখতে পেলো ফাহিম।কলেজে শিক্ষকতার পেশায় জড়িত হওয়ার পর আর নূরের সাথে ঠিকঠাক দেখা হয় না।মানে ফাহিম সকালের কোচিং ক্লাস নিতে পারে না।তবে নূরকে যে ফাহিম চিনে তা এড়িয়ে গেলো। চুপচাপ সব অবলোকন করতে লাগল।
জায়ান নূরকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে।এইবার ফাহিমের সাথে পরিচয় করালো।
‘ ফাহিম ভাই ও নূর আমার ছোটো বোন।আর নূর ও ফাহিম আমার সম্বন্ধী।মানে আরাবীর বড়ো ভাই।’
নূর যেন আরেকটা ধাক্কা খেলো। শেষমেষ ফাহিমকে ওর ভাবির বড়ো ভাই হতে হলো?এখন কি করবে নূর?
নূর মাথা চুলকালো।তারপর কিছু একটা মনে করে চওড়া হাসল।আরে,ফাহিম তো ওর বেয়াই হয় তাহলে।আর বেয়াই-এর সাথে তো মজা করেই যাই, তাই নাহ?এই সুযোগে ফাহিমকে খুব জ্বালাবে নূর।এমনভাবে জ্বালাবে যেন লোকটা বাধ্য হয় ওকে ভালোবাসতে।শুধু নূর,আর নূরই থাকবে লোকটার মন আর মস্তিষ্কে। এমন ব্যবস্থা করবে নূর।রহস্যময়ী হাসি দিলো নূর।এদিকে নূরের ওমন হাসি দেখে ভ্রু-কুচকালো ফাহিম।তারপর নিজের দিকে তাকালো।নাহ,সব তো ঠিকঠাকই আছে ওর।তাহলে এই মেয়ে ওকে দেখে এইভাবে হাসছে কেন?
পাগল টাগল হয়ে গেলো নাকি?
নূর ফাহিমের এমন অদ্ভুত কাণ্ড দেখে মুখ টিপে হাসল।লোকটা কি বোকা।ও একটু লোকটার দিকে তাকিয়ে হেসেছে কিনা লোকটা উল্টাপাল্টা ভাবছে।নূর বাঁকা হাসল।এইটাই মোক্ষম সুযোগ এখন থেকে জ্বালানো স্টার্ট করে দিলো নূর।ফাহিমকে আরও কনফিউজড করার জন্যে নূর ফাহিমের দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসতেই থাকল।একটু পর পর তাকাচ্ছে আর হাসছে নূর।ফাহিম পরে গেলো অস্বস্তিতে।ও সবার থেকে একটু আড়াল হতেই ছুটে চলে এলো নিজের রুমে।তারপর আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে ভালোভাবে চ্যাক করে নিলো।প্যান্টের চেইনও খোলা নেই।তাহলে এই মেয়ে হাসছে কেন?ফাহিমের মাথায় এই বিষয়টাই ঘুরঘুর করতে লাগল।আবারও বেড়িয়ে সবার সাথে গিয়ে বসল।ফাহিম আসতেই নূর আবারও নিজের কাজ শুরু করে দিলো।ফাহিম দাঁতেদাঁত চিপে বসে রইলো।নূর অনেক কষ্টে নিজের হাসি আটকিয়ে রেখেছে।তবে মনে মনে হেসে কুটিকুটি। লোকটাকে জ্বালাতে পেরে বেশ মজা পাচ্ছে নূর।
——
বার বার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে জায়ান।এসেছে পনেরো মিনিট হয়ে আসল। মেয়েটা এখনও আসছে না কেন?মেসেজ করছে তা সিন করছে বাট রিপ্লাই করছে না।অধৈর্য জায়ান এইবার লিখল,
‘ তুমি কি বের হবে?নাকি আমি আসব?’
এইবার মেসেজের আন্সার করল আরাবী।লিখে পাঠিয়েছে,
‘আমার লজ্জা করছে।’
আরাবীর মেসেজ পরে ভারি আশ্চর্য হলো জায়ান।এই মেয়েকে নিয়ে জায়ান কোথায় যাবে?একটু শাড়ি পরতে বলেছে।এতেই নাকি সে লজ্জা পাচ্ছে।জায়ান মেসেজ লিখে পাঠাল,
‘ তো আমি আসছি। এসে তোমার লজ্জা ভেঙে দেই কি বলো?আসব?’
‘ নাহ নাহ।প্লিজ এমন করবেন না।’
‘ তাহলে দু মিনিটের মধ্যে বাহিরে এসো।’
জায়ানের মেসেজটা পড়ে আরাবী তড়িঘড়ি করে উঠে আয়নার সামনে দাঁড়াল।চুলটা আরেকটু ভালোভাবে আঁচড়ে নিয়ে এরপর আস্তে ধীরে বেড়িয়ে আসল।সবার সামনে এসে ধীর আওয়াজে সালাম দিলো।এদিকে জায়ান আরাবীকে দেখে যেন নিজের মধ্যে নেই।হৃৎপিণ্ড থমকে গিয়েছে কি?শ্বাস আটকে আসছে ওর।এতো সুন্দর কেন লাগছে মেয়েটাকে?জায়ান নিজের অজান্তেই বুকের বা-পাশটা চেপে ধরল।মিষ্টি একটা ব্যথা অনুভব হচ্ছে বুকের বা-পাশটায়।জায়ান আরাবীর সেই কোমল মুখটার থেকে যেন নজর সরাতে পারছে না।ওই কাজলটানা চোখ দুটোতে তাকিয়ে যেন নিজের সর্বনাষ ডেকে এনেছে জায়ান।তবে নিজের এই সর্বনাষ জায়ান বার বার করতে চায় শতোবার করতে চায়।ন্যুড লিপস্টিকে রাঙানো ওই পাতলা ঠোঁটজোড়ার দিকে নজর যেতেই শুকনো ঢোক গিলে জায়ান।এই ঠোঁটজোড়া যেন ওকে চৌম্বকের মতো টানছে।একটাবার খুব করে ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে করছে ওই অধরজোড়া।খুব গভীরভাবে ছোঁয়া যাকে বলে।মেয়েটা কি তা সহ্য করতে পারবে?হাত পা কাঁপছে।গলাটা এভাবে শুকিয়ে আসছে কেন?শুকনো ঢোক গিলল জায়ান।দৃষ্টি সরিয়ে ফেলল আরাবী থেকে। নাহলে যে নিজেকে সামলাতে পারবে না সে কিছুতেই। মেয়েটার সৌন্দর্য একদম চোখ ধাঁধানো।যা একমাত্র জায়ানই উপলব্ধি করতে পারে।এই পৃথিবীতে যে আর কারও সাধ্য নেই তার প্রিয়তমার এই রূপ উপলব্ধি করতে পারার।আর জায়ান তা কোনোদিন করতেও দিবে না। চোখ দুটোই উঠি’য়ে ফেলবে তার।
উফ এতো গরম লাগছে কেন?সমানে ঘেমে যাচ্ছে জায়ান।দু তিনবার মাথা ঝাকিয়ে নিলো। এরপর গটগট করে দু তিন গ্লাস পানি খেয়ে নিলো। জায়ান বিরবির করল,
‘ জাস্ট কাম ডাউন জায়ান।আর মাত্র কয়েকটা দিনের জন্যে তোর এই নিষিদ্ধ চাওয়াগুলোকে দমিয়ে রাখ।শুধু হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটা দিন।’
কিন্তু মন কি তা মানে?আহ,এই যন্ত্রণা নিয়ে জায়ান কি করবে?এখান থেকে এখন যেতে হবে।তাই জায়ান সবার উদ্দেশ্যে বলল,
‘ এখন তাহলে যাওয়া যাক?নাহলে দেরি হয়ে যাবে।’
সবাই সম্মতি দিলো।ফাহিম বলল,
‘ হ্যা তোমরা বেড়িয়ে পরো।সাতটা বাজে ওলরেডি।’
জায়ান বলল,
‘ ফাহিম ভাই তুমিও চলো আমাদের সাথে।বাসাতেই তো আছ। ‘
ফাহিম হেসে বলে,
‘ জায়ান প্রথমত আমাকে শুধু ফাহিম ডাকো।সম্পর্কের দিক দিয়ে আমি তোমার বড়ো হতে পারি।বাট বয়সে তুমি আমার বড়ো।তবুও দেখো আমি তোমাকে নাম ধরেই ডাকছি।তাই আমি চাই তুমিও আমার নাম ধরেই ডাকো।ওকে?আর আমি যাবো না।তোমরা এঞ্জয় করো গিয়ে।’
‘ প্রথমটা নাহয় বুঝলাম।কিন্তু আমাদের সাথে যেতে তোমার সমস্যা কোথায়?এখানে আমি আর আরাবী কি একা ডেটে যাচ্ছি।যে তুমি গেলে সমস্যা হবে?আমার ছোটো বোনও তো আছে আমাদের সাথে।তুমি চলো তো।’
‘ কিন্তু….’
‘ কোন কিন্তু শুনতে চাই না।’
আরাবী ধীর কদমে এসে ফাহিমের পাশে দাঁড়ালো।ছোটো আওয়াজে বলে,
‘ চলো না ভাইয়া। উনি যখন এতো করে বলছেন আর মানা করো না।’
জায়ান আর আরাবীর এতো করে বলায় আর মানা করল না ফাহিম।রাজি হলো ওদের সাথে যাওয়ার জন্যে।এদিকে নূর যেন খুশিতে আত্মহারা।যাক,আরেকটু সময় কাটানো যাবে ফাহিমের সাথে। আরেকটু জ্বালানো যাবে ফাহিমকে।নূর আবারও ফাহিমদের দিকে আঁড়চোখে তাকালো।ফাহিমকে নিচ থেকে উপর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে মুখ টিপে হাসল।ফাহিম হকচকিয়ে গেলো।আবারও অস্বস্তিতে জর্জরিত হলো বেচারা।এ কোন মুসিবতের পাল্লায় পরল ও?নূর বহু কষ্টে নিজের হাসি আটকিয়ে রেখেছে।হাসতে না পেরে মেয়েটা বা যে ব্লা’স্ট হয়ে যায়।
লিপি বেগম আর জিহাদ সাহেব থেকে বিদায় নিয়ে তারা বেড়িয়ে পরল।গ্রাউন্ড ফ্লোরে আসতেই ফাহিম আর নূর আগে আগে চলে এলো গাড়ির কাছে।পেছনে আরাবী আর জায়ান।আরাবী মাথা নিচু করে হাটছে।একটু পর পর আঁড়চোখে তাকাচ্ছে জায়ানের দিকে।জায়ান আজ নিজেও সাদা পাঞ্জাবি আর পাজামা পরেছে।শুভ্র রঙ গায়ে জড়ানোতে লোকটাকে স্নিগ্ধ লাগছে। হাতের কনুই অব্দি পাঞ্জাবির হাতাগুলো গুটানো। ফর্সা হাতে ওই কালো লোমগুলো দেখতে বেশ আকর্ষনীয় লাগছে।সুঠাম,পেটানো দেহে পাঞ্জাবিটা যেন আটশাট হয়ে লেগে আছে।বাহুগুলোর মাংসপেশী গুলো ফুলেফেঁপে আছে।পাঞ্জাবির উপর দিয়ে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। আরাবী শুকনো ঢোক গিলল।এই লোকটা এতো সুন্দর কেন?আরাবীর শুধু তাকিয়েই থাকতে ইচ্ছে করে মানুষটার দিকে। আচ্ছা ওকে কেমন লাগছে সেটা তো লোকটা বলল না।ওর খুব করে ইচ্ছে করছে লোকটা ওকে কিছু বলুক।ওর একটুখানি প্রশংসা করুক।কিন্তু এই লোক এমন মুখ বন্ধ করে আছে কেন?
আরাবী ধৈর্যহারা হলো।লজ্জা শরম এক সাইডে রেখে নিজেই প্রশ্ন করল,
‘ ইয়ে মানে,শুনছেন?’
‘ হু বলো।’
আরাবী সময় নিলো।তারপর ধীর আওয়াজে বলে,
‘ আ..আমাকে কেমন লাগছে সেটা বললেন নাহ?’
আরাবী জায়ানের সাথে তাল মিলিয়ে হাটছে।যার ফলে ওর কুচি এলোমেলো হয়ে গিয়েছে।জায়ান হুট করে আরাবীর সামনে বসে পরল।হকচকিয়ে গিয়ে আরাবী দু কদম পিছিয়ে গেলো।জায়ান ভ্রু-কুচকে বলল,
‘ পেছালে কেন?সামনে এসো।’
‘ কিন্তু আপনি কি করছেন?’
‘ আহ,এসো তো। এতো প্রশ্ন করছ কেন?’
আরাবী ধীর কদমে সামনে এগিয়ে আসল।আরাবী আসতেই জায়ান আরাবীর কুচিগুলোতে হাত দিলো।খুব সুন্দরভাবে কুচিগুলো গুছিয়ে দিলো জায়ান।আর আরাবী একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে জায়ানকে অবলোকন করছে।এই মানুষটা এতো ভালোবাসে ওকে কিভাবে?এতোটা ভালোবাসা পাবার যোগ্য কি আরাবী?সত্যিই কি ও এতোটা ভাগ্যবতী? যে আল্লাহ্ ওকে জায়ানের মতো এমন জীবনসঙ্গী দান করেছেন?
এদিকে কুচি ঠিক করে উঠে দাঁড়ালো জায়ান।আরাবী দিকে তাকালে দেখে মেয়েটা ওর দিকেই এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।মুচঁকি হাসে জায়ান।হাত বাড়িয়ে আদুরে স্পর্শে আরাবীর কানের পিঠে চুল গুজে দেয়।আরাবী চোখ বন্ধ করে নেয়। জায়ান অনুভূতি জড়ানো কণ্ঠে বলে উঠে,
‘ সাদা যেমন শুভ্রতার রং
ঠিক তেমনি সাদা শাড়িতে তোমার সৌন্দর্য ফুটে উঠে দ্বিগুন।এই কাঠগোলাপের শাড়িতে অমায়িক লাগছে তোমায়।আমি চোখ সরাতেই পারছি না।এখন তোমাকে দেখলে মনে হচ্ছে, ফুলের মাঝে যেন আরেকটা ফুল।আমার কাঠগোলাপ ফুল।’
#চলবে______
ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন। কেমন হয়েছে জানাবেন।