মায়াবিনী_(২) #Ayrah_Rahman #পর্ব_৪৯

0
433

#মায়াবিনী_(২)
#Ayrah_Rahman
#পর্ব_৪৯
___________________

আকাশ টা সকাল থেকে বেশ মেঘলা মেঘলা ভাব, মনে হচ্ছে জোরছে বৃষ্টি নামবে, ঠান্ডা মৃদু বাতাসে শরীরের লোম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। শীত মরশুমে এমন মেঘলা আকাশ টা আরুহীর ঠিক ভালো লাগলো না তার উপর এখন একটা কাজে বের হবে, পথিমধ্যে বৃষ্টি নামলে সবকিছু ঘেঁটে ঘ হয়ে যাবে যদিও রেইন কোট আছে!

সেই কখন থেকে রাস্তার পাশে গাড়ি পার্ক করে সুলতানের জন্য অপেক্ষা করছে সে অথচ এই বান্দার আসার কোন নাম গন্ধ নেই! এই সুলতান ভাই টাও আগে বেশ পাংচুয়াল ছিলো যেই গার্লফ্রেন্ড জুটলো কপালে সেই থেকে কেমন অলস হয়ে যাচ্ছে দিনে দিনে অথচ আরুহী নিজে বিয়ে পর্যন্ত করে ফেলেছে তবুও সময়ের ব্যপারে সে সবসময় সচেতন!

আরুহী মোবাইলের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে ভাবতে লাগলো আপাতত কি করবে সে! মাথা উচিয়ে রাস্তার দিকে তাকালো যেই দিক দিয়ে সুলতান আসবে।

দুর থেকে সুলতানকে দেখে দীর্ঘ শ্বাস ফেলল সে।

সুলতান কাছে এসে মুখ টা অপরাধী ভঙ্গিতে ছোট করে বলল,

” সরি আরুহী! আর হবে না ”

আরুহী সোজা হয়ে দাড়ালো, ভ্রু কুঁচকে বলল,

” এই আর হবে না গত এক সপ্তাহে কত বার বলেছো বলো তো সুলতান ভাই! এমন করলে তোমার ব্রেক আপ বেশি দুরে নাই! আর এটা আরুহীর জন্য বা হাতের খেল, আই নোও এটা তুমি ভালো করে ই জানো, আমি যেমন এই মূহুর্তে তোমার বিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে দিতে পারি ঠিক তেমন ই লামিয়ার বিয়ে ও দিতে পারি শুধু পাত্র চেঞ্জ এটাই পার্থক্য!’

সুলতান মুখ ভাড় করে বলল,

” এটা তুমি করতে পারো না আরুহী ”

” আমি এটাই করব! আমার কথা না শুনলে ”

” আর হবে না তো! ”

” ঠিক আছে ঠিক আছে , বুঝলাম ”

আরুহী মুচকি হাসলো, সুলতান আরুহীর দিকে পূর্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে চোখ বড়ো বড়ো করে বলল,

” আরুহী তুমি কি পড়েছো? শাড়ি? আই কান্ট বিলিভ দিস! ”

আরুহী পিছনে ঘুরে সুলতানের দিকে তাকালো,

” চক্ষের সামনে দাড়িয়ে আছি অবিশ্বাসের কি আছে, আমি পরেছি শাড়ি ”

” বাট হুয়াই? ”

” কারণ ছাড়া আরুহী চৌধুরী একটা ধুলো কনাও উড়াই না সেখানে শাড়ি পরেছে! কিছু তো একটা আছেই ”

বলেই একটা সাবলীল হাসি দিয়ে ড্রাইভিং সিটে উঠে আসলো। সুলতান ভাবুক ভঙ্গিতে পাশের সিটে উঠে বসলো। এক পলক সে আরুহীর দিকে তাকালো।

আরুহী আকাশী রঙের তাঁতের শাড়ি সাথে সাদা ফুল সিল্ভের হাতা। চুল গুলো বাঙালি স্টাইলে বিনুনী করা। মুখে না আছে কোন প্রসাধনী আর না কোন অর্নামেন্ট। এতেই যেন অমায়িক লাগছে এই মেয়েকে। সুলতান হাসলো, কল্পনায় একবার এমন সাজে লামিয়াকে দেখে নিয়ে মাথা চুলকে হাসলো, মনে মনে তার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা বিয়ের পরে লামিয়াকে শুধু শাড়ি ই পরাবে তাও নিজের হাতে।

” লামিয়াকে লাল রঙের শাড়ি দিয়ে বেশি মানাবে, একদম বউ বউ ঠিক না সুলতান ভাই? ”

সুলতান আনমনেই বলে উঠলো,

” হুমম, একদম লাল পরী! আমার লাল পরী ”

বলেই সুলতান চমকে পাশে তাকালো, আরুহী মিটমিট করে হাসছে, সুলতান তাকাতেই সে এক পলক সুলতানের দিকে তাকিয়ে আবার মিটমিটিয়ে হেসে বলল,

” সারাক্ষণ শুধু বউয়ের চিন্তা মাথায় ঘুরে না? দাড়াও এই মিশন টা কমপ্লিট হলে তোমার বিয়ের ব্যবস্থা করছি একদম হানিমুন প্যাকেজ ফ্রি!

কিছু একটা ভেবে বলল,

উহুম ফ্রি না, হানিমুনে থেকে ফিরে এসে আমার ফুপিমা হবার সংবাদ টা কিন্তু চাই! বুঝলে? ”

সুলতান মাথা চুলকে হাসলো।

প্রায় বিশ মিনিটের মাথায় আরুহীর গাড়ি এসে থামলো শিল্পপতি রাজন চন্দ্রের বাড়ির সামনে।

সুলতান ভ্রু কুচকালো। ঢাকা শহরের অশিক্ষিত বড়লোকদের মধ্যে রাজন চন্দ্র অন্যতম। অশিক্ষিত হলেই যে বোকা সেটা কিন্তু পুরোপুরি সঠিক না অর্ধেক ঠিক, লোক টার মাথায় গোবর ছাড়া কিছুই নেই। এই রাজন চন্দ্র লোকটা আচ্ছা শেয়ানা। আর যুবতী মেয়েদের প্রতি তার আলাদা ঝোঁক আছে। কত মেয়ে যে তার লালসার স্বীকার তার হিসেব টা আরুহীর জানা নেই তবে আরুহী চৌধুরী ই যে তার শেষ লালসার স্বীকার হবে তার সিউর। আর এবারের মতো জন্মের শিক্ষা দিয়ে ছাড়বে।

” এখানে আসলে কেন আরুহী? লোকটা বেশি সুবিধার না, বছর দুয়েক আগে বউটা মারা যাবার পর থেকে মেয়ে দেখলেই ছোক ছোক করে। ”

আরুহী ঠোঁট বাকিয়ে হেসে বলল,

” সে তুমি চিন্তা করো না, অপেক্ষা করো আমি আসছি! ”

বলেই মেইন গেইট পেরুতেই দেখে পাথরের তৈরি রাস্তা বেশ মসৃণ। দুই দিকে ফুলের বাগান, এটা যে ওই খচ্চর রাজন চন্দ্রের কল্পনা নয় সেটা আরুহী বুঝতে পারছে। এমন কুৎসিত মন মানসিকতার মানুষের মনে এমন সুন্দর চিন্তা আসতেই পারে না।

মেইন দরজার সামনে গিয়ে বেল বাজাতেই একটা ছেলে এসে দরজা খুলল। বয়স টা ঠিক বিশের কোঠায়। গলায় গামছা আর পড়নে বেশ পুরনো কিন্তু পরিষ্কার শার্ট আর প্যান্ট।

” কাউকে খুজছেন আপু? ”

আরুহী চমকে তাকালো, ছেলেটার কথা বার্তা ও বেশ মার্জিত সুন্দর আর সাবলীল।

” হ্যা ছোট ভাই। রাজন চন্দ্র বাড়িতে আছেন? ”

ছেলেটা আরুহীর মাথা থেকে পা অবদি দেখে বলল,

” আপনি মনে হয় জেনে বুঝেই শয়তানের আস্তানায় এসেছেন আপু! ওই বদমাশ টা দেখার আগেই আপনি চলে যান আপু! অন্য কেউ হলে বলতাম না, আপনি আমাকে ভাই ডেকেছেন তাই ভাই হয়ে বোনের দিকে কেউ কু দৃষ্টি দেক আমি তা চাইবো না। আপনি চলে যান! ”

আরুহী দারুন হাসলো, এটুকু ছেলের ভালোবাসা দেখে আরুহী অভিভূত হলো। আরুহী ভেতরে ঢুকে আশেপাশে তাকিয়ে সোফায় বসতে বসতে বলল,

” তা নিয়ে চিন্তা করো না ছোট ভাই, রাজন চন্দ্রকে ডাকো, বলো আরুহী চৌধুরী উনার সাথে দেখা করতে এসেছে”

ছেলেটা কিছু ক্ষন চুপ করে আরুহীর দিকে চোখ দুটো বড়ো বড়ো করে বলল,

” আরুহী চৌধুরী! মানে আপনি নিরাপত্তা বাহিনীতে আছেন না? ”

আরুহী ছেলেটার দিকে তাকালো।

” রাজন চন্দ্রকে ডাকো ভাই! ”

ছেলেটা দৌড়ে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেলো তার মিনিট দুয়েক পরই সিড়ি বেয়ে নামতে দেখা গেলো একজন অর্ধ বয়স্ক লোককে। ছেলেটাও পিছনে পিছনে এসে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে।

কমলা রঙের টিশার্ট আর জিন্সের প্যান্ট পরিহিত বয়স পঞ্চাশের কৌঠায় লোকটা কে দেখতে অদ্ভুত লাগছে। গালে আধা পাকা দাড়ি আর মাথায় সাদা চুল। আরুহী মাথা নুইয়ে হাসলো। লোকটার ড্রেসিং সেন্স জঘন্য!

” কেমন আছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়িক আবরার চৌধুরী আর মাহাবীন খানের কন্যা আরুহী চৌধুরী! হঠাৎ আমার কথা মনে অইলো যে! ”

লোকটা আরুহীর দিকে পূর্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে কথা টা বলল। আরুহী মুচকি হেসে বলল,

” আমাকে চেনেন? ”

” না চেনার কি আছে! কত বড় ব্যবসায়িকের মেয়ে তুমি! ”

আরুহী হাসলো, যাক নিশ্চিন্ত লোকটা তার পেশা সম্পর্কে জানে না।

” কি করবো বলেন! আপনার মতো অমায়িক আর শিল্পপতি দের সান্নিধ্যে যে আসতে হয়! এ যে আমার পরম ভাগ্য ”

আরুহীর কথায় লোকটা গা দুলিয়ে হাসলো।

” আবরার চৌধুরীর টাকার কাছে আমার অর্থ সম্পদ সব কিছু ই ফেলনা। হঠাৎ.. ”

” আসলে কি বলুন তো আমি নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই, বাবার টাকাই পরেও চলা যাবে এখন নিজের টাকা ইনকাম করে তাদের দেখাতে চাই আমি ফেলনা না, তার এই ব্যবসার ক্ষেত্রে আপনার থেকে ভালো উদাহরণ আর কেই বা হতে পারে। এতো কঠোর পরিশ্রম করে এত অল্প সময়ে এত টাকা ইনকাম কি এতো সহজ নাকি! তা ছাড়া শুনলাম আপনি নাকি বাস চালক ছিলেন অতীতে। সে যায় হোক, আমাকে কি আপনার সাথে ব্যবসার কাজে শেয়ার দিবেন?”

লোকটা আরুহীর উপর থেকে নিচে লোলুপ দৃষ্টি তে লক্ষ্য করে বলল,

” তুমি শেয়ারে যাবা? শোনো মেয়ে আমার শেয়ার বাজারে ব্যবসাটা কিন্তু মুল না আমি কিন্তু আরেকটা ব্যবসা করি তুমি কি ওইটা করবে? শোনো তোমার চাই টাকা আর আমার চাই পার্টনার, করবে কি? যদিও আরোও দুজন আছে ”

আরুহী হাসি হাসি মুখ করে বলল,

” কেন নয়! আপনার সাথে পার্টনার শীপ পাওয়া তো আমার সাত কপালের ভাগ্য! আর আপনার সাথে কাজ করলে তো আপনার সংস্পর্শে থাকা যাবে। এটা তো আমার পরম সৌভাগ্য! ”

বলেই আরুহী লাজুক হাসলো, আরুহীর কথা শুনে রাজন চন্দ্রর খুশিতে চোখ চকচক করে উঠলো, তার মনে আরুহীর সান্নিধ্যের সুপ্ত বাসনা তাড়া করলো। রাজন চন্দ্র আরুহীকে আপাতমস্তক দেখে নিলো, চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্যের অধিকারী মেয়েটা। একে পেলে আর কি লাগে জীবনের! কথাটা ভাবতে ভাবতেই জীভে জল চলে এলো তার।

আরুহী লোকটার দৃষ্টি খেয়াল করে ঠোঁট বেঁকিয়ে হাসলো। এটাই তো চেয়েছিলো সে!

” তবে তারা দুজন কে? আর ব্যবসা সম্পর্কে একটু বললে সুবিধা হতো মিস্টার রাজন চন্দ্র ”

লোকটা চমকে উঠে আরুহীর দিকে তাকালো, হাসি দিয়ে বলল,

” তুমি মনে হয় সাজিদ খন্দকার এর নাম শুনেছো? ওর বাবা সাফায়াত খন্দকার আর মিরাজ খান! আর আমাদের মুল ব্যবসা টা হলো নারী পাচার করা, তুমি বিশ্বস্ত মানুষ তাই বলছি নয়তো ভুলেও এ কথা বলতাম না, বুঝলে? ”

” ওহ হ্যা শুনেছি, তবে মিরাজ খানের নাম তো বিজনেস ওয়ার্ল্ডে অনেক বেশি শুনেছি! কিন্তু উনার হঠাৎ এই পথে আসার কারণ টা বুঝলাম না, উনার তো অনেক টাকা ”

আরুহীর কথা শুনে রাজন চন্দ্র হু হা করে হাসতে লাগলো, বিদঘুটে হাসি দেখে আরুহীর গা ঘিনঘিন করে উঠলো, দাবার গুটি না হলে এই লোকটাকে এখানেই পুঁতে ফেলতো সে, কিন্তু এটা তো করা যাবে না! খেলা তো আরোও বাকি! একেই কাজে লাগাতে হবে, সময় এলেই বুঝিয়ে দেবে আরুহী কি জিনিস! আপাতত দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করে নিতেই হবে। কথা গুলো মনে মনে আউড়ে ই হাসি দিয়ে রাজন চন্দ্রের দিকে তাকালো।

” হাসলেন যে! ‘

” আরে আর বলো না, মিরাজ খান যে কিভাবে এতো বড় ব্যবসা সামাল দেয় বুঝতে ই পারি না এতো বোকা কেউ হয়? সামান্য ব্ল্যাক মেইলে কেউ এতোটা কপোকাত হয় নাকি! ”

আরুহী ভ্রু কুঁচকালো,

” ব্ল্যাক মেইল!”

” হ্যা তো। আরে একটা বিজনেস প্রোগ্রামে এটেন্ট করে ছিলো মিরাজ খান আর সেখানে আমি আর সাফায়াত খন্দকার ও ছিলাম। প্ল্যান টা যদিও সাফায়াত এর আমিও জানতাম। শুনলাম মিরাজের কোন বোন নাকি অফিসার তাও আবার বড় পদে আর ওই ছুকড়ির কাছে আমাদের অনেক কুকীর্তির প্রমান আছে। কোন ভাবে যদি এটা জনসাধারণের হাতে যায় তাহলে আর রক্ষে নেই তাই সাফায়াত প্ল্যান করে মিরাজ কে টার্গেট করে কোন ভাবে বাগে আনতে পারলেই আর কোন ভয় থাকবে না, কারণ যা শুনলাম মেয়েটা প্রচন্ড ভালোবাসে ভাইকে তাই ভাইয়ের বিরুদ্ধে কোন একশন সে নেবে না এটাই ধারণা তার! ”

বলেই লোকটা থামলো। আরুহী হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে রাজন চন্দ্রের দিকে। এত বড় চক্রান্তের স্বীকার তার ভাই! আরুহী দাঁতে দাঁত চাপলো, একটাকেও ছাড়বে না সে। কু*ত্তার মতো পিটাবে সবগুলাকে!

মুখমণ্ডল স্বাভাবিক রেখে বলল,

” কিভাবে করলেন এসব? ”

” আরে এক ওয়েটার কে দিয়ে মিরাজের শরবত এর গ্লাসে ঘুমের ঔষধ মেশায় সাফায়াত। ছেলেটা এতো ভদ্র সে বুঝতে পারলো না, শুধু বলল এমন ঝাঁজ কেন? ওয়েটার বলল, এটা স্পেশাল ড্রিংকস তাই ঝাঁজ আর কোন প্রশ্নই করলো না সেদিন ই বুঝলাম ছেলেটা ভীষণ ভদ্র , যদিও ড্রিংকসে অরেঞ্জ ফ্লেভার মিশ্রিত ছিলো, তারপর ওকে একটা রুমে নিয়ে গিয়ে শুইয়ে দিলাম আর আমাদের ই একটা মেয়েকে ওর রুমে ঢুকালাম। ঘন্টা খানিক পর ই ওর জ্ঞান ফিরে আসলো আর পাশে কোন মেয়েকে বসে থাকতে দেখেই চমকে উঠলো কিন্তু ও কিছু বুঝে উঠার আগেই মেয়েটা আমাদের শিখিয়ে দেওয়া বুলি আউড়ালো। চিৎকার চেচামেচি করে উঠলো, আমরা ছিলাম দরজার পাশেই, ভেতরে ঢুকে গেলাম আর মেয়েটা বলতে লাগলো মিরাজ নাকি ওর সম্মান নষ্ট করার চেষ্টা করেছে। তারপর থেকে ই ব্ল্যাক মেইল, যদি আমাদের কথা না শুনে তবে সকল রেকর্ড ভিডিও সহ সমস্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি! উপায় না পেয়ে মেনে নিলো সে, তবে কখনো ও কোন কিছু তে সে থাকে না! ”

বলেই রাজন চন্দ্র থামলো, পাশে থাকা গ্লাস হাতে নিয়ে ঢকঢক করে পানি খেলো। আরুহী স্তব্ধ! এতকিছু হয়ে গেলো তার ভাইয়ের সাথে অথচ সে কিছু ই জানে না! বোন হিসেবে সে ব্যর্থ!

” বাব্বাহ্, বেশ বুদ্ধি তো আপনার? আমি সার্থক আপনার দর্শন পেয়ে ”

আরুহীর কথা শুনে লোকটা অহংকার সমেত হাসি দিলো। আরুহী বসা থেকে উঠতে উঠতে বলল,

” আজ তাহলে আসি মিস্টার রাজন চন্দ্র! আবার দেখা হবে, কেমন?”

বলেই ঠোঁট কামড়ে হাসলো। লোকটা খুশিতে গদগদ হয়ে বলল,

” হ্যা হ্যা হতেই হবে, হতেই হবে ”

আরুহী মিষ্টি হাসি দিয়ে বেরিয়ে এলো ড্রয়িং রুম ছেড়ে।

আরুহী ড্রয়িং রুম ছাড়তেই ছেলেটা এসে আরুহীর সামনে দাড়ালো। আরুহীর হাতে গুজে দিলো মোবাইল যা আরুহী রাজন চন্দ্র রুমে আসার আগে ছেলেটাকে দিয়েছিলো।

ছেলেটা মোবাইল ফেরত দিতেই আরুহী কৃতজ্ঞতার স্বরুপ হাসি দিলো। ছেলেটাও অমায়িক হাসি দিয়ে বলল,

” আমি চাই শয়তানটার যোগ্য শাস্তি হোক, খুব জঘন্য শাস্তি! ”

আরুহী মুচকি হেসে পা দাড়ালো গাড়ির দিকে। আরুহী সামনে আসতেই নজরে এলো সুলতানের চঞ্চল পা জোড়া, উদ্বিগ্ন মুখ। আরুহী হাসলো!

আরুহী কে দেখা মাত্র ই সুলতান দৌড়ে আসলো তার দিকে, একের পর এক প্রশ্ন করতে লাগলো আরুহী কে, আরুহী তার জবাব না দিয়ে হাতে থাকা মোবাইল টা বাড়িয়ে দিলো তার দিকে।

সুলতান ভ্রু কুঁচকে নিলো মোবাইল টা। আরুহী এগিয়ে গিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসে সুলতানের উদ্দেশ্যে হাক ছাড়লো,

” যা দেখার গাড়ি তে বসে দেখো সুলতান ভাই! ”

চলবে..

[ আজকের পর্বটা কেমন লাগলো জানাবেন প্লিজ আর গঠন গত মন্তব্য করবেন কিন্তু ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here