ভালোবাসার_অন্যরুপ 🌸❤ #পর্ব :6 #লেখিকা_aye_sha 🌸

0
200

#ভালোবাসার_অন্যরুপ 🌸❤
#পর্ব :6
#লেখিকা_aye_sha
🌸
ওনার কথা গুলো আমার বুকে তীরের মতো বিঁধলো, এতই যদি নীতা কে ভালোবাসেন তাহলে কিছুক্ষণ আগে এতো কেয়ার কেনো করলেন? কেনো ওসব বললেন? ওহ! দয়া করছেন আমার উপর? আমি আর কিছু ভাবতে পারলাম না অঝোরে কান্না করতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পর হঠাতই উনি কোথ থেকে এসে আমায় হ্যাঁচকা টানে কোলে তুলে নিলেন। আমি অবাকের চূড়ান্ত পর্যায়। কিছুক্ষণ আগেই আমায় এতো কথা শোনালেন, রুড বিহেভ করলেন আর এখন আবার সোহাগ করছেন? আমি এসব ভাবছি আর উনি ওনার মতো আমায় কোলে নিয়ে নিজের রুমে যাচ্ছেন, আমি যে ওনার দিকে তাকিয়ে আছি তাতে জানো কোনো যায় আসে না ওনার। আমাকে রুমে নিতে গিয়ে বেডে বসাতেই আমি আমার সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে ওনাকে ধাক্কা মারলাম আর উনি টাল সামলাতে না পেরে পিছিয়ে গেলেন। আমি চিৎকার করে বললাম।

মীরা– কি মনে করেন আপনি নিজেকে? আমি কি আপনার হাতের পুতুল নাকি যে যখন যেভাবে ইচ্ছে আমাকে নিয়ে খেলবেন? একবার কাছে টেনে নেন তো আরেকবার অপমান করে দুরে সরিয়ে দেন। কি চান আপনি?

আমান– রুম থেকে বেরোতে না করেছিলাম।

মীরা– একদম কথা ঘোরাবেন না আমান। আমি যেটা জানতে চাইছি সেটার উত্তর দিন। আপনার কোন রূপ টা আসল আমাকে বলবেন প্লিজ? আপনি যদি আমাকে ভালোবাসেন তাহলে কি করে ঐ নীতা কে আই লাভ ইউ বলতে পারেন? কি করে ওর কোমড় জড়িয়ে ধরতে পারেন? কেনো ও আপনাকে জড়িয়ে ধরলে আপনি দুরে সরিয়ে দেন না বলুন? উত্তর দিন আমায়য়য়য়য়? (চিৎকার করে)

আমান– তুমি যদি নিজের স্বামী কে বাদ দিয়ে দিনের পর দিন নিজের বয়ফ্রেন্ড এর সাথে ঘুরতে পারো, আমার বারণ করার পরেও লুকিয়ে লুকিয়ে দেখা করতে পারো, তার সাথে হাত ধরে শপিং মল থেকে বেড়াতে পারো আর আমি তোমাদের সামনে গেলে তার পরিচয় নিজের লাভার হিসেবে দিতে পারো, তাহলে আমি কেনো পারবো না মীরাআআ!! (চিৎকার করে)

এই কথাগুলোর পরিবর্তে আমার কাছে কোনো উত্তর নেই তাই বাধ্য হয়ে মাথা নীচু করে নিলাম, আর উনি আমার সামনে এগিয়ে এসে বললো।

আমান– কি হলো? এখন চুপ করে গেলে কেনো? উত্তর চাইছিলে তো তুমি? এখন আমিও চাইছি তোমার কাছে উত্তর। অ্যান্সার মি, অ্যান্সার মি ড্যাম ইট!! (দেয়ালে ঘুসি মেরে)

ওনার হুঙ্কারে আমি কেঁপে উঠলাম কিন্তু আমার কাছে সত্যি এর কোনো উত্তর নেই, আজ যদি উত্তর দিয়ে দি তাহলে এতদিনের প্রচেষ্টায় জল পরে যাবে। এতদিন ওনার কাছ থেকে নিজেকে দুরে সরিয়ে ওনাকে রক্ষা করার চেষ্টা বিফলে যাবে। উনি আবার বললেন।

আমান– কোনো উত্তর নেই তাই না? হাহ! (তাচ্ছিল্য হেসে) আমি জানতাম তোমার কাছে কোনো উত্তর নেই।

উনি রুম থেকে বেরিয়ে যেতে নিলেই আমি বলে উঠি।

মীরা– প্রতিশোধ নিচ্ছেন? (ছলছল চোখে)

আমান– প্রতিশোধ? (সামান্য হেসে) সেটা নেওয়ার হলে তো কবেই নিতাম, ১ মাস ধরে তোমাকে নিজের ভালোবাসা বোঝানোর চেষ্টা করতাম না। ১ মাস ধরে তোমাকে নিজের করার চেষ্টা করতাম না।

মীরা– আপনি সত্যি আমাকে ডিভোর্স দেবেন? (আনমনে)

আমান– কেনো মীরু! তুমি চাও না আমার কাছ থেকে ডিভোর্স? বলো না তুমি চাও না? আমার সাথে থাকতে চাও তুমি? (উত্তেজিত হয়ে আমার দু-বাহু ধরে)

মীরা– (এটা আমি কি বলে ফেললাম) মনে মনে। ন..না..নাহ আমি চাই। আ..আমি ডিভোর্স চাই আপনার থেকে।

আমার কথাটা শেষ হতেই ওনার হাত আলগা হয়ে গেলো, মুখ টাও ফ্যাকাশে হয়ে গেলো, উনি ছলছল চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন।

আমান– ওহ! তাহলে জিজ্ঞেস করলে কেনো ডিভোর্স দেবো কি না? আর নীতা আমার কাছাকাছি থাকলে রিয়াক্ট কেনো করো?

মীরা– দেখুন আমি আপনার থেকে ডিভোর্স চাই। আপনাকে আমার মোটেও সহ্য হয় না, সেই প্রথম থেকে আপনি আমার উপর জোর খাটিয়েছেন, প্রথমে কোম্পানি তে নিজের এমপ্লয়ি বানিয়েছেন তারপর আমাকে জোর করে বিয়ে করেছেন। আপনি ভাবলেন কি করে ১ মাসের মধ্যে আমার মনে জায়গা করে নেবেন? কখনো না! আমি আপনাকে ভালোবাসি না। নীতাও আপনাকে ভালোবাসে না তাই আমি চাই না আপনি নীতা কে বিয়ে করুন, ওর শুধু আপনার সম্পত্তির উপর লোভ। এই সম্পত্তির জন্য ও আপনার জীবন ও নিতে পারে।

আমান– তোমাকে ডিভোর্স দিয়ে দিলে তো তুমি তুর্য কে বিয়ে করে নেবে আর তুমি তো আমাকে ভালোবাসো না তাহলে আমি বাঁচলাম না মরলাম তাতে তোমার কি যায় আসে?

মীরা– যায় আসে!!

আমান– রিয়েলি? (অবাক হয়ে)

মীরা– আব, আপনার কিছু হলে আম্মুর কি হবে ভেবে দেখেছেন? আম্মুর কোনো ক্ষতি হোক সেটা আমি চাইনা।

আমান– ওহ! আমার আম্মুর কোনো ক্ষতি হবে না। আজ পর্যন্ত আমি যেভাবে আমার আম্মুকে আগলে রেখেছি তাতে আম্মুর কো…

মীরা– আপনি কি ঢ্যারস?

আমান– হোয়াট? ঢ্যারস মানে টা কি?

মীরা– আপনার ক্ষতি হলে আম্মু কি করে ভালো থাকবে? আম্মু তো সারাক্ষণ আপন…

আমান– এনাফ ইস এনাফ মীরা!! তোমাকে এই মিথ্যে ন্যাকামি আর করতে হবে না আমার সাথে। আমার আম্মু তোমাকে কতটা ভালোবাসে তা তোমার থেকে বেশী কেউ জানে না। তারপরেও তুমি আমাকে ডিভোর্স দিতে চাও, একবার ভেবে দেখেছো তখন আম্মু কতটা কষ্ট পাবে? তুমি যখন চলেই যাবে নিজের লাভারের কাছে তখন প্লিজ এসব মেলো ড্রামা নিজের কাছে রাখো। এসব আলগা দরদ একদম দেখাবে না।

আমান হনহন করে বেরিয়ে গেলো কথাগুলো বলে, আমি বেডে বসে পড়লাম, আমার যে কিছু করার নেই, আমি যদি আমার আর তুর্যর সত্যি টা বলেদি তাহলে যে…নাহ! এটা কিছুতেই হতে দেবো না আমি, আমান আপনি জানেন না আপনি এই এক মাসে আমার মনে কতটা জায়গা করে নিয়েছেন। কিন্তু আমি আপনাকে কাছে টেনে নিতে পারবো না আমান। কিছুতেই না। (কাঁদতে কাঁদতে) আমার ফোনে ফোন এলো তখনই, নাম্বার টা দেখতেই মেজাজ গরম হয়ে গেলো।

মীরা– কেনো ফোন করেছো ফুপি?

ফুপি– এই মেয়ে এই! কাকে এতো ঝাঁঝ দেখাচ্ছিস তুই?

মীরা– কি বলতে ফোন করেছো সেটা বলো।

ফুপি– টাকা পেলাম না তো এখনো আমি।

মীরা– টাকা টাকা আর টাকা, টাকা ছাড়া কি তুমি কিছু বোঝো না? আমার জীবনটাই নষ্ট করে দিলে তুমি এই টাকা টাকা করে।

ফুপি– না আমি টাকা ছাড়া কিছু বুঝি না, আর তোর এতো টাকার গরম কিসের হ্যাঁ? যা আছে তা তো আজ থেকে ৫ মাস পর আমার মেয়ের হয়ে যাবে। আর মনে রাখিস এই বাসায় তোর ঠাই হবে না।

মীরা– মরে গেলেও ঐ বাসায় পা রাখবো না আমি।

ফুপি– তা বললে কি করে হবে রে মুখপুড়ি, কালকেই তুই টাকা নিয়ে আসবি এ বাসায়, কথা আছে তোর সাথে।

মীরা– আমি যাবো না, টাকা পাঠিয়ে দেবো।

ফুপি– আহ! তুই আসবি না তোর ঘাড় আসবে, তেরি বেরি করবি তো তোর বিয়ে কথাটা কিন্তু আমি জা…

মীরা– আমি আসবো!! আসবো আমি। (ভয় ভয়ে)

ফুপি– হুহ! রাখছি আমি।

অন্যদিকে…………………….

আমান ছাদের কোণে আকাশের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, হাতে একটা সিগারেট। পায়ের কাছে অনেকগুলো খাওয়া সিগারেট পরে আছে। আমান সিগারেটে টান দিতে দিতে ভাবছে।

আমান– তোমার কোনো ধারনা নেই মীরা আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি, ১ মাস আগে থেকে নয়, অনেক আগে থেকে আমি তোমাকে ভালোবাসি। এই আমান খান নতুন করে বাঁচার উপায় খুঁজে পেয়েছিল তোমাকে দেখে। আমি ভেবেছিলাম জোর করে হলেও তোমার ভালোবাসা আদায় করে নেবো বাট নাহ! তোমার মনে তো কোনো ফীলিংসই নেই আমার জন্য, যা আছে তা সব তুর্যর জন্য। তুমি জানো আমার কতটা খারাপ লেগেছিল যখন…..

[#ফিরে_আসবো_আগামী_পর্বে 🥀]

7part
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=122121838898106573&id=61553197202722&mibextid=Nif5oz

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here