#বেলী_ফুলের_সুবাস
#পর্ব :১১
#মেঘকন্যা (ছদ্মনাম)
বেলী এক পলক সুবাসের দিকে তাকিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিলো।দু চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ল।সুবাস বেলীর মুখ নিজের দিকে ঘুরিয়ে আরো ঘাবড়ে গেলো।কি হয়েছে এই মেয়ের।কান্না কেনো করছে?কি এমন হলো যে মেয়েটা মন মরা হয়ে আছে।বেলীকে তো কোনো সময় এমন মন মরা হয়ে থাকতে দেখা যায় না তবে আজ কি হলো?
-বেলী কি হয়েছে তোমার? আমাকে খুলে বলো।
বেলীর চোখের জল মুছে দিয়ে বলল সুবাস।
-আপনি আমাকে প্রমিস করুন আমি যা বলব তা আপনি আমকে করতে দিবেন।
কান্না করতে করতে বলল বেলী
-আচ্ছা দেখা যাবে বলো কি হয়েছে ?
-আমি সবার সাথে ফুপুর বাসায় যেতে চাই।আমাকে প্লিজ যেতে দিন।কত দিন ঘুরতে যাই না।সবাই ঘুরবে আমি বাসায় একা কিভাবে থাকবো।আমিও যেতে চাই তাদের সাথে।আপনি কিন্তু আমাকে প্রিমিস করেছেন যে আমি যা বলবো আমাকে করতে দিবেন।আমি কিন্তু যাবোই যাবো।
একনাগাড়ে কথা গুলো বললো বেলী।
– আমি তো তোমাকে যেতে না বলি নি।শুধু বলেছি এখন না যেতে। আর আমি তো তোমাকে বলেছি যে পরে আমি তোমাকে নিয়ে যাবো।মন খারাপ করো না।
-না আমি এখন সবার সাথে যাবো মানে যাবো।
-দেখো বেলী তুমি জানো আমি এক কথা বড় বড় বলতে পছন্দ করি না।তোমাকে তো বললাম যে,পরে আমি তোমাকে নিয়ে যাবো।
সুবাসের কথা শেষ না হতেই বেলী গাড়ির দরজা খুলে বাইরে বের হয়ে বললো
-আপনি যত ক্ষন পর্যন্ত আমাকে যাওয়ার পারমিশন না দিচ্ছেন ততক্ষন পর্যন্ত আমি গড়িতে উঠবো না।
-বেলী গাড়িতে এসো বলছি।
– নাহ আমি গাড়িতে উঠবো না।
– ভালোই ভালোই বলছি গাড়িতে উঠো।
তাদের কথার মাঝে আকাশ ছেদ করে ধরনীতে বৃষ্টির আবির্ভাব ঘটলো।সাথে আকাশের গগন বিদারী চিৎকারের মতো বজ্রপাতের আওয়াজ। বিজলী চমকাচ্ছে।সাথে আছে দমকা হাওয়ায়
মুহূর্তের মধ্যেই বেলীর সর্বাঙ্গ ভিজে একাকার হয়ে গেলো।ঠোঁট জোড়া কাপতে লাগলো।কাপড় পুরো শরীরে লেপ্টে গেলো।
-বেলী তাড়াতাড়ি ভেতরে এসে
-আমি আসবো না, আসবো না ,আসবো না।
-আচ্ছা বাবা ঠিক আছে যেও। তুমি যদি এক্ষুনি ভিতরে না আসো তবে কিন্তু খারাপ কিছু হয়ে যাবে বেলী।
খানিকটা উচু আওয়াজে বললো সুবাস।
-এখন আমি আসবো না আমি বৃষ্টিতে ভিজবো।
সুবাস গিয়ে বেলীর হাত ধরে গাড়িতে বসিয়ে দিলো।এক দৃষ্টিতে বেলীর দিকে তাকিয়ে ড্রাইভিং মনযোগ দিলো।নাহ এই মেয়ের দিকে বেশি ক্ষন তাকানো যাবে না।নেশা হয়ে যাবে। ঘোরের মধ্যে ডুব দিয়ে ডুবে।কোনো মেয়েকে কি এভাবে দেখলে চোখ ফেরানো যায়? তাও আবার মেয়েটা যদি হয় বিয়ে করা বউ!তাও অবাধ্য চোখ গুলো বার বার বেলীর দিকে গিয়ে পড়লো।না চাইতেও বেহায়া চোখ গুলো বার বার বেলীর ভেজা গলায় বিন্দু বিন্দু জমে থাকা পানির দিকে তাকাতে চাইছে।বার বার চোখ গিয়ে পড়ছে কাপতে থাকা বেলীর ঠোটের দিকে।তবুও নিজেকে সংযত রেখে ড্রাইভিং মনোযোগ দিল সুবাস।গাড়ি পার্ক করে বেলীর হাত ধীরে সোজা নিজের রূমে চলে গেলো। দরজা বন্ধ করে মুহূর্তের মধ্যেই এক হাতে বেলীর কোমর জড়িয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে বেলীর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো। মিনিটে পাঁচেক পরে ঠোঁট ছেড়ে গলায় মুখ ডুবালো।পর পর কয়েকটা চু’মু খেল।একটা লাভ বাইট দিয়ে বাথরূমে চলে গেলো।ঘটনা গুলো এত তাড়াতাড়ি হলো যে বেলীর বুঝে উঠতে কয়েক সেকেন্ড সময় লাগলো।চোখে মুখে লজ্জার ছাপ ফুটে উঠলো।নাক সহ দু পাশের গাল লাল হয়ে গেলো।ইস্ কি লজ্জা।তবে মনের মধ্যে নতুন অনুভুতি হচ্ছে।এই লোক যখনই কাছে আসে ঠিক সেই সময়ে অন্য রকম অনুভুতি কাজ করে। সর্বাঙ্গ জুড়ে শির শির অনুভব হয়।বুকে দ্রিম দ্রিম শব্দ হয়।হাত পায়ে কাপন ধরে।বেলী নিজেও জানে না এই অনুভূতির নাম কি?বেলী জানতেও চায় না।
ঘুম থেকে আজ একটু লেট করে উঠলো বেলী।পুরো রূমে চোখ বুলিয়ে কোথাও সুবাস কে পেলো না।লোকটা হয়তো অফিসে চলে গিয়েছে। কাল রাতে বৃষ্টিতে ভেজার ফলে শরীর কেমন যেন লাগছে।মাথাটা ভীষণ ব্যথা করছে।কেনো যে বৃষ্টিতে ভিজতে গেলো? দ্রুত ফ্রেশ গিয়ে নিচে চলে আসলো বেলী।আগে একটু নাস্তা করা দরকার তবেই ভালো লাগবে।
-রিদিতা আপু তুমি কখন এলে?
বলেই রিদিতাকে জড়িয়ে ধরলো বেলী
-তুই যখন ঘুমের দেশে ছিলি তখন এসেছি।
বলেই হাসতে লাগলো রিদিতা।
-তুমি যে আসবে আগে বলো নি কেনো ?
-এতো প্রশ্ন না করে আগে নাস্তা করে নে পরে কথা হবে।
-তোমার বোনের দিক থেকে চোখ সরিয়ে একটু আমার দিকেও তাকিও সালি সাহেবা।
বলেই হাসতে লাগলো সায়েম
-আরে আপনি আবার কখন এলেন দুলাভাই
-তোমার বোনের সাথে এসেছি। তুমিই তো বোনকে পেয়ে আর আমাকে দেখ নি।যাও আগে নাস্তা করে আসো পরে সব কথা হবে।
(রিদিতা হাজব্যান্ড সায়েম।পেশায় একজন শিক্ষক।ভালোবাসে বিয়ের হয়েছে রিদিতার।একটা মেয়ে আছে পাঁচ বছরের।নাম চাঁদ।এত দিন পর বাবার বাসায় এসেছে তাও আবার এক বিশেষ কারণে। কারণ টা হচ্ছে সকলে এক সাথে মিলে ফুপুর বাসায় যাবে।রিদিতা প্রথমে না যেতে চাইলেও সায়েম একদম তৈরি ঘুরো ঘুরি করার জন্য।তাইতো এখানে চলে এসেছে।সকলে এক সাথে ঘুরতে যাবে।
রাত বাজে আটটা।সামিয়ার রুমে বসে আড্ডা দিচ্ছে তিন বোন।মূলত আগামী কাল রাতে তারা ফুপুর বাসায় রওনা ডুবে তাই তো সামিয়া তার প্রয়োজনীয় জিনিস গুলো গুছিয়ে নিচ্ছে।বেলী আর রিদিতা বসে তাকে হেপ্ল করছে।
-কি ব্যাপার বেলী তোর বর মনে হয় তোকে অনেক ভালোবাসে তাই না ?(রিদিতা)
-নাহ আপু তেমন কিছু না।তোমার ভাই একটা গম্ভীর মানুষ। সে আর ভালোবাসা। হুহ(বেলী)
আরে যদি ভালো নাই বসে তাহলেই এই দাগ আসলো কোথা থেকে বেলী?
বলেই মুচকি হাসতে লাগলো রিদিতা।মূলত গলার সেই দাগের দিকে ইশারা করে বলেছে রিদিতা।
-ওহো আপু কি দেখালে কি তুমি আমাকে?ইস্ আমি এতক্ষণ কেনো দেখলাম না।অনেক আদর করে সুবাস ভাইয়া তোকে ,তাই না বেলী? এতো দিনে তো তাহলে ঠিক তোকে চু’মু ও খেয়েছে ভাইয়া,তাই না?ঠোঁটে চু’মু খেতে কেমন লাগে বল না বেলী। ঠোঁটের স্বাদ কেমন?
বলেই বেলীকে হালকা ধাক্কা দিয়ে হাসতে লাগলো সামিয়া।
(আসসালামুওয়ালাইকুম।কেমন আছেন সবাই? ধন্যবাদ সবাইকে এতো সাপোর্ট করার জন্য।ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুলভ দৃষ্টিতে দেখবেন। ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট এবং শেয়ার করবেন।ভালোবাসা নিবেন সবাই)
চলবে……..?