বেলী_ফুলের_সুবাস #পর্ব :১৫ #মেঘকন্যা (ছদ্মনাম)

0
193

#বেলী_ফুলের_সুবাস
#পর্ব :১৫
#মেঘকন্যা (ছদ্মনাম)

সকাল থেকেই আজ প্রচুর বৃষ্টি।আজ সুবাসদের যাওয়ার কথা ছিল রাতারগুলে।সব কিছু ঠিক থাকলেও এই বৃষ্টির জন্য কোথায় ঘুরতে বের হতে পারে নাই।তাই এখন সবাই মিলে ঠিক করছে চা বাগান দেখতে যাবে যেহুতু ফুপুর বাসা শ্রীমঙ্গলে তাই চা বাগান যেতেই বেশি সময় লাগবে না।তাই যে যার মতো করে রেডি হয়ে গেলো।মিতা ফুপু রিদিতা এবং সায়েমকে আর বেলী এবং সুবাস কে ম্যাচিং কাপল সেট দিয়েছে শাড়ি ও পাঞ্জাবির।তাই ঠিক করলো আজ তারা শাড়ি পড়বে।নিশি, সামিয়া,সাজিয়া মিতা বেগমের থেকে শাড়ি পরে নিলো।বেলী অনেকবার না করেছে যে শাড়ি পড়বে না পরে ফুপুর জোড়া জুড়ীতে শাড়ি পরতে হয়েছে।বেলীর সাজা শেষ। কোমড় পর্যন্ত চুল গুলো খোঁপা করে নিলো ।সুবাস রেডি হয়ে ডিভানে বসে ফোন চালাচ্ছিল।এক পলক বেলীর দিকে তাকালো।পিছন থেকে সুবাস এসে একদম কাছা কাছি দাঁড়ালো বেলীর।বেলীর পিছন দিক দিয়ে শাড়ি সরে গিয়ে কোমর দেখা যাচ্ছিল।কোমরে ছোট্ট তিল দেখা যাচ্ছে। সুবাস পিন নিয়ে সুন্দর করে শাড়ি পিন আপ করে দিলো।।খোঁপা করা চুল গুলো খুলে দিলো।নিমিষেই কোমর অব্দি ঢেউ খেলানো চুল গুলো পুরো পিঠে ছড়িয়ে পড়লো।বেলীর আরেকটু কাছে গেলো সুবাস।বেলী চুপ চাপ দাড়িয়ে দু হাতে শাড়ি খামচে ধরলো।যতবার এই লোক কাছে আসে ততবার মনে হয় বেলীর প্রাণ পাখি উড়ে যাবে।কেমন সাড়া শরীর জুড়ে শির শির অনুভুতি হয়।বেলীর কোমর দু হাতে জড়িয়ে চুলে নাক ডুবিয়ে সুবাস বললো
-এভাবে বেশি ভালো লাগছে।
-হুম

এবার বেলীকে ছেড়ে দিয়ে বেলীর গলায় ছোট্ট একটা সোনার লোকেট পরিয়ে দিল।হার্ট শেপের ভিতর বি ও এস সুন্দর করে যুক্ত করে লিখা।দেখতে ভীষণ সুন্দর।বেলীকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বেলীর কপালে চুমু খেল সুবাস।বেলীর ঠোটের দিকে নিজের ঠোঁট এগিয়ে নিতেই রূমে প্রবেশ করলো চাঁদ। চাঁদ কে দেখে দুজন দু দিকে ছিটকে গেলো।পিচ্চি চাঁদ কিছু বুজলো কি না কে জানে? শুধু খিল খিল করে হাসতে হাসতে চলে গেলো
-আপনের জন্য এমন হলো। না জানি বাচ্চা টা কি দেখেছে।
নাক ফুলিয়ে বলল বেলী

-দেখলে খারাপ কি ? আমার বউ।আমি রোমান্সে করেছি। আর রোমান্স না করলে তার সাথে খেলার সাথী আনবো কি করে?

-খেলার সাথী?
মুখ কুচকে বললো বেলী

-আরে আমাদের বাচ্চা। চাঁদের খেলার সাথী।

-আজাইরা কথা না বললে কি আপনের ভালো লাগে না?

-তো তুমি কি চাও আমি আজাইরা কথা না বলে কিছুক্ষণ আগের অপূর্ণ কাজ টা পূর্ণ করি। লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই স্বামী হই আমি তোমার।বলতে পারো আমাকে

-ছিঃ।আপনি দিন দিন লু’চুদের মত কথা বলছেন।

-আসো লু’চুগিরি করে দেখাই।

-আপনার সাথে কথাই বলবো না।
বলেই বেলী চলে গেলো।সুবাস হো হো করে হেসে দিলো।এই মেয়েটাকে খেপাতে ভালোই লাগে।

কিছুক্ষন আগে মাইক্রো তে উঠেছে সকলে।সামনে ড্রাইভিং করছে সুবাস।পাশে বসেছে বেলী।বেলীর কোলে চাঁদ।পিছে বসেছে সায়েম,রিদিতা,সাজিয়া ।তার পিছে বসেছে নিহাল,নিশি,সামিয়া সবার শেষে মিহির।গাড়ি চলছে আর যে যার মতো করে কথা বলছে।
-বেলী মামী তোমাল ঠোঁতেও কি মামা তু’মু খায়?
হঠাৎ বলে উঠে চাঁদ।
বেলী তো বিষম খায়।কি বললো এটা চাঁদ।আজ তার মানইজ্জত সব শেষ।সুবাসের কোনো পরিবর্তন নেই।নিজ মতো করে ড্রাইভিং করছে।

-ওহো চালিয়ে যাও বেলী।গু আহেড।
ঠাট্টার সুরে বললো সাজিয়া।

যাহ বেলী এটা ঠিক না রোমান্স করবি তাহলে দরজা টা লাগিয়ে নিবি না? তাহলে আমার মেয়ে আর এত কিছু দেখতো না (রিদিতা)

-বেলী মামী তোমাকে কি ঠিক মামা সেই লোকম কোলে তুমু খায় গালে যেমন তা ম্যাম্মাল গালে পাপা খায়। জানো পাপা তো আমাকেও তু’মু খায়।আমার অনেক ভালো লাগে।তোমারও কি ভালো লাগে জটন মামা তোমাকে তুমু খায়?

চাঁদের কথা শুনে বেলী আর রিদিতা দুজনেই লজ্জা পেলো।এবার বেলীর মনে হচ্ছে শেষ হয়ে যেতে।কি একটা অবস্থা।আল্লাহ উঠাইয়া নাও।

-দেখছেন দুলাভাই আপনের মেয়ে আগে থেকেই এগুলো দেখে । আর আমরা করলেই দোষ।
সায়েমের দিকে তাকিয়ে বললো সুবাস।সায়েম হাসলো।

বেশ অনেক ক্ষন পর চা বাগানে চলে তারা।সুবাস সবাইকে সাবধানে চলতে বললো আগেই কারণ জোক থাকতে পারে।যে যার মতো করে ছবি তুলতে লাগলো ।এত সুন্দর দৃশ্য।চার পাশে শুধু সবুজ আর সবুজ।কিছু উপজাতি কি সুন্দর করে চা পাতা তুলছে।সায়েম আর রিদিটাকে ছবি তুলে দিচ্ছে নিহাল। বেলী ও সুবাস কে ছবি তুলে দিচ্ছে সাজিয়া।।সবাই যে যার মতো খুশি থাকলেও মনের আকাশে মেঘ জমে আছে সামিয়ার।যে কোনো সময় এই মেঘ থেকে জল গড়িয়ে পড়বে। এই যে সামনে দুই জোড়া কপোত কপোতী কি সুন্দর কথা বলছে,ছবি তুলছে দেখতে ভীষণ সুন্দর লাগছে।আজ যদি ইয়াসির তার ভালোবাসাকে গ্রহণ করতো তাহলে তাদের চিত্রও ভিন্ন হতো।তারাও এভাবে সময় টা উপভোগ করতে পারতো।কিন্তু না তা আর হলো কোথায়।উল্টো অন্য জনের সাথে বিয়ে ঠিক হয়ে গেলো সামিয়ার।নিজের ভাগ্যের প্রতি নিজের কোনো অভিযোগ নেই শুধু হাসি পায়। ইয়াসিরকে তার করে দিলে কি স্রষ্টার খুব বেশি ক্ষতি হয়ে যেতো? নাহ এখানে স্রষ্টার কি দোষ? দোষ তোর তার যে ইয়াসিরকে নিজের ভালোবাসা বুঝাতে পারে নাই।নিজেকে আজ ভীষণ ব্যার্থ মনে হচ্ছে সামিয়ার।কেনো এক তরফা ভালোবাসায় এত যন্ত্রণা? কবে এই যন্ত্রণার সমাপ্তি ঘটবে? হয়তো সমাপ্তি ঘটবে নয়তো না।
(আসসালামুওয়ালাইকুম।কেমন আছেন সবাই?আজ একটু বাসার বাহিরে ছিলাম।পর্ব টাও আজ ছোট হলো তাই আমি দুঃখিত।ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুলভ দৃষ্টিতে দেখবেন। ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট এবং শেয়ার করবেন।)
চলবে………?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here