#হিয়ার_মাঝে ১৭.
#মেঘা_সুবাশ্রী ®️
এক সাথে সব বন্ধু নিয়ে
সকাল বিকাল বেলা
কতো পুরনো নতুন পরিচিত গান
গাইতাম খুলে গলা।
কত এলোমেলো পথ হেঁটেছি সবাই
হাত রেখে হাতে
ছিল সবাই মিলে জড়াজড়ি
খুঁনসুটি একসাথে।
কত ঝগড়া-বিবাদ
সুখের স্মৃতিতে ভরে আছে শৈশব
তোদের স্মৃতিতে স্মৃতিতে
এখনো তো ভালবাসি অসম্ভব।
কেন বাড়লে বয়স ছোট্ট বেলার
বন্ধু হারিয়ে যায়….
কেন হারাচ্ছে সব, বাড়াচ্ছে ভিড়
হারানোর তালিকায়….
অশ্রুসিক্ত দু’আঁখি নুবাহ, তমার। দু’জনেই গান বন্ধ করতেই মূহুর্তে করতালিতে চতুর্দিক মুখরিত হল। নুবাহ তমাকে জড়িয়ে ধরল। অশ্রুসজল দু’আঁখিতে বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে শেষ আলিঙ্গন তাদের। জেবা, ফারিয়া, লিমা তারাও যোগদান করল তাদের সাথে। ক্লাসের বাকিরাও মঞ্চে পাশাপাশি দাঁড়ানো। তারাও একে অপরকে জড়িয়ে অশ্রু বিসর্জন করছে।
ওবায়দুল স্যার এগিয়ে এসে সবার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। শেষ বিদায় হিসেবে বলে উঠলেন, ‘দোয়া করি, জীবনে সুখী হও। ভালো কিছু করে বাবা-মায়ের সাথে স্যারদের নামও উজ্জ্বল কর।’
সামনে দাঁড়ানো অন্যান্য স্যাররাও একে একে মাথায় স্নেহের পরশ বুলিয়ে দিলেন তাদেরকে। গানের সমাপ্তির মাধ্যমে বিদায় অনুষ্ঠানেরও সমাপ্তি ঘটল। সবাই অশ্রুসিক্ত নয়নে বিদায় নিল স্যারদের থেকে। সবার পরনে বিভিন্ন বর্ণের শাড়ি। কিন্তু নুবাহ আর তমা শাড়ি পরেনি। দু’জনের গায়ে শুধু গ্রাউন। বাকিরা শাড়ি পরে হাঁটতে অসুবিধে হচ্ছে দেখে নুবাহর বেশ হাসি পেল। মঞ্চ থেকে উঠতে নামতে বেশ বেগ পোহাচ্ছে তারা। হুট করে লিমা এসে নুবাহর ডজন খানেক ছবি তুলল। সে কিঞ্চিৎ অবাক হল। এই মেয়ে তার এত ছবি দিয়ে কি করবে? কিছু বলতে গিয়েও দ্বিধায় ভুগল। তার উপর আজকে স্কুল জীবনের শেষ দিন।
তমা, নুবাহ স্কুল থেকে বের হল। কিছুদূর আসতেই তমালের সাথে দেখা। নুবাহ সালাম দিয়ে কুশল বিনিময় করল। জবাবে তমালও কুশলাদি জিজ্ঞেস করল। আচমকাই তমাল একটা প্রস্তাব রাখল।
‘চল রেষ্টুরেন্টে। দুপুরের খাবার সবাই একসাথে খাব।’
নুবাহ তড়িৎ বলল, ‘না ভাইয়া যাব না। দুপুরের খাবার এখানে খেলে আম্মু বকবে।’
হুট করে নিভান বলল, ‘নিতাত আমি বাজার খাব। তার সাথে নীলাভও বলে উঠল, ‘আপু আমি আইস-ক্রিম খাব।’
নুবাহ দু’জনকে চোখ রাঙাল। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হল না। তাদের এমন আবদার দেখে তমাল সুযোগ’টা লুপে নিল। ফের আবার বলে উঠল, ‘ঠিক আছে দুপুরের খাবার খেতে হবে না। কিন্তু হালকা নাস্তা তো করা যায়। এইটুকু আবদার তো করতেই পারি।’
নুবাহ দ্বিধান্বিত। তমা চটজলদি নুবাহর হাত টেনে ধরল। সে কিছু বলার আগেই বলল, ‘আজকে শেষদিন হিসেবে একসাথে নাস্তা তো করতেই পারি। চল না নিশিরাত।’
তারপর নিজের ভাইয়ের দিকে ইশারা করল,
‘ভাইয়া চল তো।’
নুবাহ দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। দু’বিচ্ছুকে এজন্যই সে আনতে চাইনি। এটা খাব, ওটা খাব, সব কিছু চিবিয়ে খাব। দু’জনেই তার মাথাই চিবিয়ে খায় কোথাও নিয়ে গেল।
রেষ্টুরেন্ট থেকে বের হতেই লিমার সাথে দেখা হল। নুবাহর দিকে তার সন্দিহান দৃষ্টি। হুট করে বলে উঠল, ‘তোর পাশে ছেলে’টা কে?’
নুবাহ তমার দিকে ইশারা করল।
‘তমাল ভাইয়ার কথা বলছিস, ওটা তমার বড় ভাই।’
লিমা কি বুঝল কে জানে। ফের বলে উঠল, ‘ভালোই। আচ্ছা, আসছি। তোরা ইনজয় কর।’
তমাও অবাক হল। তবে লিমাকে নিয়ে দু’জন খুব বেশি ঘাটাঘাটি করে নি সেদিন।
কিন্তু কে জানত, লিমা তাদের জীবনে মহাপ্রলয় সৃষ্টি করবে?
বাড়ি এসে দ্রুত ফ্রেশ হয়ে ইমদাদকে মেসেজ দিল। এই লোক কি এখনো রেগে আছে তার ওপর। তাই মনের মাঝে যা আসল লিখে দিল।
“বস, আপনি কি এখনো রেগে আছেন কালকের কথার জন্য। সর্যিই, আর কোনদিন এমন কথা বলব না। মফিজ আঙ্কেলের নাম জীবনেও বলব না। মাত্র বাসায় আসছি স্কুল থেকে।”
সে কাউন্ট করল এক, দুই, তিন, চার… এভাবে দশ হয়ে গেল। কিন্তু ফিরতি কল আসল না। বেশ অবাক হল। মনটা বিষাদে পরিপূর্ণ হল তার। লোকটার হল টা’কি? সামান্য কথায় কেউ রাগ করে। মুঠোফোন হাতে নিয়ে বারান্দায় বসল। পাঁচ থেকে দশ মিনিট পেরুল। কিন্তু ইমদাদের কল আসল না। বিক্ষিপ্ত নয়নে তাকাল আকাশ পানে।
‘কি হল তার প্রিয় পুরুষের?’
_____________________
মুঠোফোন হাতে বন্ধুমহলের একজন হো হো করে হেসে উঠল। ভূমিকম্পের মত গা দুলানো হাসিতে সহসাই পাঁচ জোড়া চোখ তার দিকে অদ্ভুতভাবে তাকাল। ইমদাদ হুট করে বলল,
‘ভূমিকম্প হচ্ছে তোর গা দুলানো দেখে। এত খি খি করছিস কোন দুঃখে বল তো?’
হঠাৎই ইমদাদের দৃষ্টি গোচর হল। দেখল তার মুঠোফোনের দিকে তাকিয়েই হাসছে। পরক্ষণেই মনে পড়তেই রূদ্ধমূর্তিতে তাকাল বন্ধুর দিকে।
‘আমার মুঠোফোন নিয়ে কি করছিস তুই? দে জলদি আমাকে।’
ফের আবারো হো হো করে হেসে উঠল সে। ব্যঙ্গ করে বলল।
‘হ্যা’রে, তুই কবে বস হলি?”
ইমদাদ মূহুর্তে বুঝতে পারল কে হতে পারে। নিজের মুঠোফোন চাইতে তার বন্ধুর দিকে হাত বাড়াল। কিন্তু তার বন্ধু তাকে ফেরত না দিয়ে উল্টো সবাইকে মেসেজ পড়িয়ে শুনাল। ইমদাদের প্রচন্ড রাগ হল। ফের আবারও মুঠোফোন চাইতে ধস্তাধস্তি করল। তাদের মধ্যে অন্য একজন বলল,
‘মুঠোফোন ফেরত দেব একশর্তে, যদি লাউডস্পিকার দিয়ে আমাদের সামনে কথা বলিস।’
ইমদাদ মূহুর্তে ফুঁসে উঠল। ‘একদমই না, আমাদের কি কোন প্রাইভেসি নেই।’
পাশে বসে থাকা তার সমবয়সী খালাত ভাই টিপ্পনী মারল, ‘কিসের প্রাইভেসি’রে, কথা বলিস তো ছাত্রীর সাথে।’
মূহুর্তেই সবার মাঝে হাসির রোল পড়ে গেল। ইমদাদ দাঁতে দাঁত পিষে মুঠোফোনের জন্য ফের একবার চেষ্টা করল। কিন্তু এবারও ব্যর্থ হল। রাগে হিসহিস করতে করতে নিজের নাড়িভুঁড়িতে যা জমানো কথা ছিল সব উগলে দিল,
‘তোদের সবকটার বাসরঘরে সি সি ক্যামেরা বসাব। তারপর আমিও দেখব তোরা বাসর কিভাবে করিস। এক একটাকেও ছাড় দেব না। অ্যাই প্রমিজড।’
ইমদাদের কথা শুনে সবাই স্তব্ধ। শুধু একজন ছাড়া। সে মিটমিট করে হাসছে। তার যা কাজ করার তা কার্যসিদ্ধি হয়ে গেছে। এতক্ষণে ইমদাদের বিস্ফোরক কথা মুঠোফোনের অপর পাশের ব্যক্তি ঠিক শুনে নিয়েছে।
মুঠোফোন এখনও কানে ধরে আছে নুবাহ। হুট করেই মুখ চেপে ধরল। দ্রুতই কল কেটে দিল। অদ্ভুতভাবে বক্ষস্থল কাঁপছে তার।
____________
অবশেষে সেই কাঙ্ক্ষিত দিন চলে আসল।এস.এস.সি পরীক্ষার প্রথম দিন। নুবাহর সাথে তার বাবা, বড়মামা, ছোটমামা তারা সবাই পরীক্ষার হলের সামনে দাঁড়ানো। তমার সাথে তার বাবা, তমাল এসেছে শুধু। নুবাহর বড়মামা, ছোটমামা এসে তার মাথায় হাত রাখল, ‘ভালো করে পরীক্ষা দিস।’ সে হু’ বলে মাথা নাড়াল শুধু। ফের তার ছোটমামা বলল, ‘তুই বের হলে তো আর দেখা হবে না। মামা’রা চলে যাব।’ তার ছোটমামা হাতে পাঁচশ টাকার কচকচে একটা নোট গুজে দিল। সে নিতে চাইল না। তাও তিনি গুজে দিলেন। তার বড়মামাও দিতে চাইল কিন্তু সে নিল না। বড়মামার অবস্থা খুব বেশি ভালো না, সেটা সে জানে। অটোড্রাইভার হয়ে কত টাকায় বা আয় করে।
নুবাহর মামা’রা চলে গেল। হলের ভিতর প্রবেশ করার আগমূহুর্তে চোখ গেল লিমার উপর। মোটা কালো করে বেটে টাইপের এক লোকের সাথে দাঁড়ানো সে। নুবাহ তমা দু’জনেই অবাক হল। নুবাহ ফিসফিস করল, ‘লিমার বাপ তো পুরাই আফ্রিকান। মা নিশ্চয়ই কোরিয়ান। এজন্য সে মায়ের মতই হইছে।’ তমাও তার কথায় সায় দিল। হতে পারে।
তমাল তাদের দু’জনকে একগাদা উপদেশ দিলেন। দু’জনেই ভদ্র বাচ্চার মত মনোযোগ দিয়ে শুনে হলে প্রবেশ করল।
পরীক্ষার হলে গিয়ে নুবাহর মাথায় হাত। সিট এলোমেলো। প্রথম সারির প্রথম সিট তার। দ্বিতীয় সারির শেষ সিট তমার। তমার সাথে তার যোজন যোজন দূরত্ব। এটাই দেখার বাকী ছিল। সিট বসানোর লোকগুলো তার কোন জন্মের দুশমনির বদলা নিল আল্লাহ্ই জানে। নয়ত এভাবে প্রথম টেবিলে তার সিট বসাত। ফাজিল লোক কতগুলা।
পরীক্ষা শেষে বের হয়ে প্রধান ফটকের সামনে আসতে চক্ষু ছানাবড়া। এত মানুষ বাপরে! পরীক্ষার্থী’রা বের হবার জায়গা এরা রাখে নি। নুবাহ তমাকে ফিসফিস করে বলল, ‘এত মানুষ ক্যান মিস তামা।’ তমা মজারচ্ছলে বলল, ‘এরা তোরে দেখতে আসছে। সব তোর শ্বশুর বাড়ির লোক।’ নুবাহও ঠাট্টার স্বরে বলল, ‘হু, এখানে অর্ধেক আমার, বাকি অর্ধেক তোর।’
হুট করে লিমা এসে বলল, ‘কি ভাগাভাগি করছিস তোরা।’ নুবাহ রগড় গলায় বলল, ‘আরে শ্বশুর বাড়ি। তোর লাগলে, যা’ তোকেও অর্ধেক দিলাম।’ লিমা হা’ হয়ে বলল, ‘মানে!’
তমা নুবাহ দু’জনে খিলখিল করে হেসে উঠল। লিমা এখনো হা’ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
আচমকাই নুবাহ তমা একটা কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে গেল। কালো মোটু বেটে লোকটাই জাফর মির্জা। লিমার মায়ের জেঠাতো ভাই। তার সম্পর্কে মামা। নুবাহ দু’য়ে দু’য়ে চার মিলাল। তারমানে এই মেয়ে করছে সব।
_____
বাসায় এসে প্রথম ইমদাদকে মেসেজ দিল নুবাহ। দু’সেকেন্ডের মধ্যেই মুঠোফোন কম্পিত হল তার। ওপাশ থেকে ইমদাদের উদগ্রীব কন্ঠস্বর শোনা গেল।
‘কেমন আছ? পরীক্ষা কেমন হয়েছে?’
‘মোটামুটি। রিটেন ভালো হলেও MCQ তেমন ভালো হয়নি।
‘আচ্ছা আমাকে MCQ-র প্রশ্ন বল? কয়টা হয়েছে, নিজেই দেখব।’
নুবাহ সব প্রশ্ন বলল। ইমদাদ কল কেটে আধাঘন্টা পর ফের কল দিল। বলে উঠল,
‘তোমার ঊনিশ’টা হয়েছে।’
নুবাহ মন খারাপ করল। ‘অহহ। মাত্র ঊনিশ।’
ইমদাদ ধমক দিল,
‘তো! কি হয়েছে? এত মন খারাপ হওয়ার কি আছে বলতো? নিজের খেয়াল খুশি মত পরীক্ষা দাও। আজ কি দিয়েছো একদম ভাব্বে না। বরং কালকের জন্য ভাবও। ভালো রেজাল্ট করলে আনন্দ লাগে, ভালো কলেজে ভর্তি হওয়া যায়, সমাজে সম্মান বাড়ে, এটা ঠিক। কিন্তু রেজাল্ট হচ্ছে একটা সার্টিফিকেট মাত্র। এছাড়া আর কিছুই না। কত জিপিএ-৫ সার্টিফিকেটধারী আছে, যাদের সাধারণ জ্ঞানটুকুও নাই। নিজের দেশ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে, দু’লাইন বলতে পারে না। তাই নিজের পড়াশোনার ওপর ফোকাস কর বোকা মেয়ে, রেজাল্টের ওপর নয়।’
নুবাহ হাঁপিয়ে গেল। ওরে বাপরে, কত বড় লেকচার। প্রতিত্তোর করল বেশ সময় নিয়ে। ‘জ্বী, মনে থাকবে।’
ওপাশে ইমদাদের মুচকি হাসির শব্দ শোনা গেল। ‘ওকে, গুড গার্ল।’
____________
রুকাইয়া স্বামীর শিয়রের পাশে দাঁড়িয়ে ইস্ততঃবোধ করছিল। কীভাবে বাড়িওয়ালা খালার কথাটা বলবে? শরিফা খালা বার বার তাদের সিদ্ধান্ত জানতে চাচ্ছে। রশিদ জামান বউয়ের হাবভাব কিছুটা আন্দাজ করলেন। তার দিকে তীক্ষ্ণদৃষ্টি রেখে বললেন, ‘কিছু বলবে রুকাইয়া?’
রুকাইয়া স্বামীর অনুমতি পেয়ে প্রসন্ন হলেন। তার পাশে বসে নরম সুরে বলে উঠলেন, ‘যদি ভালা কোন পরিবার থেইকা নিশাতের লাইগা বিয়ের প্রস্তাব আসে, তাইলে তুমি কি বিয়ের কথা আগাইবা?’
‘দেখো রুকাইয়া, মেয়ে বড় হচ্ছে। বিয়ে তো দিতেই হইব। কিন্তু আসল কথা হল, ভালো একটা পরিবার হতে হবে। আজকেও একটা প্রস্তাব পাইলাম নিশাতের জন্য। জাফর মির্জার নাম শুনছো না। তার মেঝো ছেলে বাবলু মির্জার জন্য।’
রুকাইয়া জাফর মির্জার নাম শুনে চিনতে পারল না প্রথমে। পরক্ষণেই মনে পড়ল।
‘তুমি কি উত্তর দিছো জাফর মির্জাকে? হ্যাঁ বলে দিছো তাদের।
রশিদ বউয়ের বিচলিত মুখ দেখে হাসলেন। তাচ্ছিল্যস্বরে বলে উঠল, ‘তার ছেলে বাবলু আমার মেয়েরে অনেক আগে থেকেই পছন্দ করে। এখন আমার মেয়ের পরীক্ষা শেষ হলেই তারা বিয়ের কাজ সম্পন্ন করতে চায়। দশ ভরি অলংকার , দুই লক্ষ টাকার বিয়ের কেনা-কাটাসহ বিয়ের যাবতীয় খরচ তারাই বহন করবে। আমরা শুধু তাদের হাতে মেয়ে তুলে দেব।’
রুকাইয়া হা’ হয়ে স্বামীর কথা শুনছে। ব্যগ্রকন্ঠে বলল, ‘তুমি কি বলছো? প্রস্তাব তো ভালই আছে। ছেলে দেখতে কেমন? কি করে?’
রশিদ জামান বিদ্রুপের সুর তুলল। বউয়ের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে বলে উঠল,
‘একটা প্রবাদ সবসময় শুনে আইছো না, অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ।’
‘মানে,,তোমার কথা কিছুই বুঝলাম না।’
‘জাফর মির্জা সম্পর্কে কে না’ জানে? তাদের কাজ-কারবার, আচার-ব্যবহার সম্পর্কে সব জানি। আমাকে যে ছেলের জন্য প্রস্তাব দিছে সে ছেলে সম্পর্কেও সব জানি। যখন আমাকে প্রস্তাব দিলো খুব হাসিখুশি মুখ তার।’
‘তুমি কি ঐ প্রস্তাবে রাজি।’
‘রুকাইয়া তোমার মাথা গেছে। গা’জা ব্যবসায়ীর ছেলের সাথে আমার মেয়ে বিয়ে দিমু। দুনিয়াতে পাত্রের অভাব পড়ছে।’
‘আচ্ছা শরিফা খালা যে প্রস্তাব দিল, তার কি উত্তর দিমু।
‘বলো, পরীক্ষা শেষ হলে আমরা বিয়ে নিয়ে কথা বলবো।’
চলবে,,,,,,,