আশার_হাত_বাড়ায় |৬| #ইশরাত_জাহান 🦋

0
168

#আশার_হাত_বাড়ায় |৬|
#ইশরাত_জাহান
🦋
নতুন টিনের বাড়ির সামনে হাজির হলো শ্রেয়া ও অর্পা।গাড়ি থেকে নামতেই শ্রেয়ার কোলে দৌড়ে আসে ধরে মিমি।শ্রেয়া একটু ব্যালেন্স হারা হয়ে যায়।কিন্তু মিমিকে দেখে আগলে নেয়।অর্পা মিমির হাত ধরে বলে,”ও মিমি। বড় ভাইয়ের মেয়ে।”

বলেই অর্পা মিমিকে বলে,”তোমার কাকাই কোথায়?”

মিমির কোলে একটি পুতুল ছিলো।ওটা কোমরে ধরে বলে,”কাকাই আমাকে দিয়ে চলে গেছে।কিন্তু এই আণ্টি আমাকে চিনেনি?তোমার বিয়েতে তো আমাকে দেখেছিলো।গেটের সামনে দড়ি ধরে দাড়িয়েছিলো টাকার জন্য।পাপা টাকা দিয়েছিলো বলেই তো আণ্টি আমাদের ঢুকতে দেয় তাহলে চিনলো না কেনো?”

মিমির কাছে এসে নিচু হয়ে বসে শ্রেয়া।মিমির দুই গালে হাত রেখে আদর করতে থাকে।অর্পা বলে,”আমার বিয়ের সময় তো কেউ ছিলো না আনন্দ করার।তোমার আন্টিকে তো আমার মা জোর করে পাঠিয়েছিলো।ও তো শুধু নিয়ম রক্ষার্থে দাড়িয়েছিলো।যে লাজুক মেয়ে তোমার আণ্টি কারো দিকে তাকায় না।হয়তো তাই খেয়াল করেনি।”

শ্রেয়া মিমির দিকে তাকিয়ে বলে,”আসলে আমি তো শুধু দাড়িয়ে ছিলাম।কথা বলছিলো বাকিরা।প্রায় দুই বছর আগের কথা আমার তো মনে নেই।কিন্তু তুমি মনে রেখেছো?”

মিমি এবার নিচের ঠোঁটটা উচু করে বলে,”কেনো মনে রাখবো না?আমি প্রতিদিন প্রোটিন খাই। আর তখন তো আমার বয়স পাঁচ বছর ছিলো।”

হেসে দেয় শ্রেয়া।এইটুকু মেয়ে পাকা পাকা কথা বলে।অর্পার দিকে তাকিয়ে বলে,”মিষ্টি একটা মেয়ে।তোর বিয়েতে যে কেনো ওর দিকে খেয়াল করলাম না!তাহলে ওকে নিয়েই বিয়েতে মজা করতাম।বোরিং হয়ে এক পাশে বসে থাকতাম না।”

চোখ ছোট ছোট করে অর্পা বলে,”তোর এই ভীতু লাজুক স্বভাবের জন্যই তো সমস্যা।আচ্ছা চল তোর ঘর গুছিয়ে দেই।তারপর তো অফিসে যাবি।”

মাথা নাড়িয়ে মিমিকে নিয়ে ভিতরের দিকে গেলো শ্রেয়া।সবকিছু গুছিয়ে অফিসের জন্য রওনা হয়।মিমি আর অর্পা চলে যায় বাসায়।

আজ রুবিনা আর তার মেয়েদের অবস্থা খুবই খারাপ।সকালের নাস্তা কোনো রকমে বানালো তারা।দুপুরের জন্য অনলাইনের খাবার অর্ডার দিলেও রুবিনা বাইরের খাবার খেতে পারবে না।রনি আজ অফিসে যায়নি।সোফায় বসে আছে চুপ করে।এখন ফার্নিচার অর্ডার দিতে হবে।ঘর মোছা ও থালাবাটি ধোয়ার কাজ করছে রুহি আর রুমা।ঘণ্টা দুই ধরেও ঠিকভাবে কাজ করতে পারছে না।অথচ শ্রেয়া থাকলে এই কাজগুলো এক ঘণ্টার ভিতরেই হয়ে যায়।আর কাজগুলো ঠিকভাবে করতে না পারলে রুবিনা এসে বলতো,”কি করো সারাদিন?কোনো কাজই তো তোমার মা শেখায়নি।”

আজকে রুবিনা দেখছে রুহি আর রুমাকে।এতদিন উনি পরের মেয়েকে কথা শুনালেও আজ তিনি নিজের মেয়েদের দেখে চুপ আছে।রুহি না পেরে ঘর মোছা নেকড়া হাত থেকে ফেলে দিয়ে বলে,”এই তিনটা ঘর একটা রান্নাঘর আবার বড় একটা ডাইনিং রুম এগুলো মোছা কি মুখের কথা?আমি পারবো না এতগুলো ঘর মুছতে।অলরেডি আমি ঘর ঝাড়ু দিয়েছি।এখন আবার মুছতে মুছতে হাত ব্যাথা করছে।”

রুমা থালাবাটিগুলো সাবানের ফেনাসহ রেখে দেয় সিংকে।তারপর বলে,”সেই ধরে এই চারপাশে লেগে থাকা ময়লা ওঠাতে বসেছি।উঠছে না তো।তুমি কিভাবে আটা সিদ্ধ করেছো যে হারি ধুতে পারছি না?”

শেষ কথাটি রুবিনাকে বলে।রুবিনা আজ রুটি বানিয়েছিলো। আটা সিদ্ধ দিয়ে রুটি বানানোর জন্য কিছু আটা হাঁড়িতে লেগে আছে।এগুলোতে পানি দিতে ভুলে যাওয়ার কারণে আটা শুকিয়ে শক্ত হয়।কিন্তু কিছুক্ষন ভিজিয়ে রাখলেই ধোয়া যাবে।সেই ধৈর্য তো রুমার নেই।সে এখনই অধৈর্য হয়ে বসে আছে।রুবিনা এবার চেঁচিয়ে বলে,”নবাবজাদি তো ওই মেয়ে না নবাবজাদি হয়েছো তোমরা।একটা কাজ করতে এত কথা শুনিয়ে দেও।শশুর বাড়িতে গেলে কি করবে?”

মায়ের বকা শুনে ভয়তে কাজে মন দিল রুহি আর রুমা।রনিকে ফোন টিপতে দেখে রুবিনা বলে,”ওকে আটকালি না কেনো?”

সোফায় হেলান দিয়ে রনি বলে,”আপদ বিদায় হয়েছে ভালোই হয়েছে।বড়লোক ঘরের মেয়ে পেয়েছি তার উপরে সুন্দরী।অনেক টাকার মালিক ওরা।এখন ওকেই ঘরের বউ করে আনবো।”

চোখ ছোট ছোট করে তাকালো রুবিনা।রনির দিকে তাকিয়ে বলে,”বড়লোক বাড়ির মেয়ে আনবি মানে?তুই জানিস ওদের পিছনে কত খরচ থাকে।আরে এই মেয়েকে তো তাও দমিয়ে রাখতাম।কোন জমিদারের মেয়ে এসে সহ্য করবে এই সংসার?ঘটের বুদ্ধি কি বেচে দিয়েছিস?শ্রেয়া মেয়েটাকে জব্দ করে রাখলেও ওরা মুখ খোলে না কিন্তু আলালের ঘরে দুলালী আসলে ওরা মাথায় চড়ে বসে।”

মুখে চ শব্দ করে বিরক্ত প্রকাশ করে রনি।রুবিনার দিকে তাকিয়ে বলে,”এমন কিছু হবে না।মেয়েটা আমাকে অনেক ভালোবাসে।তাছাড়া মেয়েটার নিজেরও আরেকটা সংসার আছে।ওখান থেকেই আমার কাছে ফিরে আসবে।”

মুখে হাত দিলো রুবিনা।চোখদুটো বড় বড় করে বলে,”তুই অন্যের বউ ভাগাইছিস?”

রুবিনার চিৎকারে হাজির হয় রুহি আর রুমা।রনি ওদেরকে দেখে বলে,”তোরা যা তো তোদের কাজে।”

রুবিনা এবার রনিকে দাবর দিয়ে বলে,”ওদের কথা রাখ।তুই বল তুই পরের বউয়ের সাথে প্রেম করিস। ছি ছি ছি মান সম্মান থাকবে না আমাদের।কি সুন্দর অবিবাহিত কর্মঠ মেয়ে আনলাম সেই থুয়ে তুই বেচে নিলি এক বিবাহিতা।”

ফোনটা টেবিলের উপর রেখে রনি বলে,”আরে মা তুমি বুঝছো না।মেয়েটা ওর স্বামীর সাথে সুখী না। আর মেয়েটা ওর স্বামীর থেকে অনেক টাকা উশুল করেছে।আমরা বিয়ে করলে ওই সব আমাদের হবে।মেয়ের টাকা সম্পত্তির মালিক আমরা হবো।এত চিন্তা করো না তো।”

বড়লোক টাকাওয়ালী শুনে খুশি হলো রুহি আর রুমা।ওরা লাফিয়ে বলে ওঠে,”আজকাল বিবাহিত অবিবাহিত মেয়ে কেউ দেখে নাকি?ভাইয়া কাউকে ভালোবেসেছে।আমাদের উচিত নতুন ভাবীকে মেনে নেওয়া।তুমি না করনা মা।”

সন্তানদের কথায় চুপ হয়ে যায় রুবিনা।মনের মধ্যে খচখচ করছে তার।কোন বিপদ আসতে চলেছে বুঝতে পারছে না সে।তবে বিপদ যে একটা আসবে এটা তার মন বলছে।

অফিসে এসে সব কাজ শিখে নিলো শ্রেয়া।পুরনো ফাইল সম্পর্কে ফারাজ তাকে বুঝিয়ে দিলো।এছাড়া কর্মচারী থেকে দেখে নিলো কোথায় কি আছে।নিজের কেবিনে এসে বসতেই শ্রেয়ার আলাদা ভালো লাগা কাজ করছে।নিজস্ব একটা পরিচয় তৈরি হতে চলেছে তার।টেবিলের উপর ল্যাপটপ রাখা আরো কিছু ফাইল।ফারাজ দিয়েছে এই ফাইলগুলো।পুরনো কিছু ফাইল চেক করে অভিজ্ঞতা বাড়তে থাকবে।ল্যাপটপে অফিসিয়াল ফ্যাশন সম্পর্কে কিছু ডিটেইলস আছে।যেগুলো দেখতে থাকে শ্রেয়া।এভাবে চলতে চলতে দুপুর হয়ে যায়।এখন লাঞ্চ টাইম।শ্রেয়া বুঝতে পারছে না এখন খাবে কি না।খুদা লেগেছে খুব।অফিস সম্পর্কে অবগত না শ্রেয়া।আশেপাশে তাকাতে থাকে।দেখতে থাকে কাউকে পাওয়া যায় কি না।কিছুক্ষণ এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে শ্রেয়ার চোখ গেলো থাই গ্লাসের পাশে।শ্রেয়ার কেবিন আর ফারাজের কেবিন পাশাপাশি মাঝখানে থাই গ্লাস দেওয়া।শ্রেয়ার কাছে কিছুটা ইতস্তত লাগতে থাকে।আশেপাশে কোনো মেয়ে থাকলে এমনটা লাগতো না।ফারাজ একজন যুবক।এর থেকে কোনো সাহায্য চাওয়া যায় না।কিন্তু বস হিসেবে তো তাদের কেবিন পাশাপাশি হবে এটাই স্বাভাবিক।ফারাজ এক ধেনে ল্যাপটপে কাজ করতে থাকে।তাকাচ্ছে না কোনদিকে।শ্রেয়ার এতেই সুবিধা বেশি।হঠাৎ শ্রেয়ার কেবিনে হাজির হয় এনি।মিষ্টি হেসে এনি বলে,”আসতে পারি?”

শ্রেয়া এনিকে দেখে একটু শান্তি পেলো।মুখে শোভনীয়তা বজায় রেখে বলে,”হ্যা আসুন ম্যাম।”

ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে এনি বলে,”ওহ মাই লেডি।ডোন্ট কল মি ম্যাম।অনলি এনি,ওকে?”

ঠোঁটটা একটু হা হয়ে গেলো শ্রেয়ার।মায়ের বয়সী মহিলা কি বলছে এসব শ্রেয়ার মাথায় আসছে না।ওনাকে নাম ধরে ডাকতে বলছে। কাল অবশ্য ফারাজকেও নাম ধরে ডাকতে শুনেছে।প্রায় মানুষই তাকে এনি বলে ডাকে।শ্রেয়াকে এভাবে বসে থাকতে দেখে এনি হেসে দেয়।বলে,”আই এম নট সো ওল্ডি।জাস্ট বয়সের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।মনটা তোমাদের মতই ফ্রেন্ডলি।এই কোম্পানির সবাই আমাকে এনি বলে ডাকে। আর এটাই আমার ভালোবাসা।”

শ্রেয়া চুপ করে শুনলো কথাগুলো।যদিও বড়লোকি ফ্রেন্ডলি বিহেভ বুঝতে একটু কষ্ট হচ্ছে শ্রেয়ার।কিন্তু এনির ব্যাবহার অসাধারণ।শ্রেয়া মুখে মিষ্টি হাসি বজায় রেখেছে।এনি এবার বলে ওঠে,”এখন লাঞ্চ টাইম।আমি শিওর তোমার খুদা লেগেছে। এম আই রাইট?”

লজ্জায় পড়ে গেলো শ্রেয়া।খুদা তো লেগেছে কিন্তু বলতে লজ্জা লাগছে তার।এটাই স্বাভাবিক।মুখ ফুটে কোনো কথা শ্রেয়া বলতে পারে না।এনি শ্রেয়ার চোখ মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে কিছুক্ষণ।তারপর বলে,”আজকে তুমি আমার সাথে লাঞ্চ করবে।আমি ক্যান্টিনের সবকিছু তোমাকে চিনিয়ে দিবো।এমনিতেও আমরা কোম্পানির টিম মেম্বার্স মিলে লাঞ্চে অনেক মজা করি।প্রথম দিন তাই তুমি ভয় পাচ্ছো।কিন্তু এই ফ্যাশন হাউজকে আমরা বন্ধু মহল ভেবে কাজ করি।তুমিও আজ আমাদের এই বন্ধু মহলের অংশ হয়ে গেছো। জড়তা ভাব কাটিয়ে আমাদের সাথে ইনজয় করবে,আসো।”

বলেই চেয়ার থেকে ওঠে এনি।শ্রেয়া নিজেও ওঠে। ফারাজের কেবিনের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,”স্যার তো এখনও খায়নি।উনি খাবেন না?”

এনি তাকালো ফারাজের দিকে।তারপর শ্রেয়ার দিকে ফিরে বলে,”হ্যান্ডসামের ছোট মেয়ে আছে। আই থিঙ্ক তুমি জানো যেহেতু তোমরা পরিচিত।”

শ্রেয়া মাথা নাড়ালো। যার অর্থ হ্যা।এনি বলে,”মিমিকে ছাড়া হ্যান্ডসাম কিছু খায় না।মিমি একটু পর স্কুল থেকে আসবে।তারপর বাবা মেয়ে মিলে লাঞ্চ করবে।মিমি আগে আগে আসলে হ্যান্ডসাম আমাদের সাথেই খেতো।আজ হয়তো জ্যামে আটকে আছে মিমি।তাই আমাদের লাঞ্চ করে নিতে বললো।”

“ওহ,মিমি আসলে আমরা একসাথে খাই তাহলে?”

“তুমি আজকে অনেক কাজ করেছো।বাসায় যেয়েও অনেক কাজ তোমার।শুনলাম সকালে খাওনি।তাই আসো খেয়ে নিবে।”

এনির কথাতে না করতে পারলো না শ্রেয়া।আসলেই সে সকালে না খেয়ে ছিলো।এখন দুপুর দুইটা বাজে।এভাবে চললে দুর্বল হয়ে যাবে।তাই চলে গেলো এনির সাথে খেতে।

শ্রেয়াকে চলে যেতে দেখলো ফারাজ।পাশে থাকা ফোন হাতে নিয়ে মিরাজকে ম্যাসেজ দিলো,”তোর বউকে বল তার বান্ধবী খেতে গেছে।বান্ধবীকে নিয়ে টেনশন না করতে।”

ভাইয়ের ম্যাসেজ পেয়ে হাসলো মিরাজ।অর্পা পাশেই বসে আছে।মিরাজকে হাসতে দেখে প্রশ্ন করে,”এভাবে হাসছো কেনো?”

অর্পার ডান হাত টেনে মিরাজ তার কাছে এনে বলে,”বান্ধবী দেখেছি তোমার মত না।কতটা চিন্তা করো তুমি শ্রেয়াকে নিয়ে।এই যে ভাইয়া এখন ম্যাসেজ দিলো শ্রেয়া খেতে গেছে।তোমাকে চিন্তা করতে না করেছে।তোমার এই বান্ধবীর প্রতি ভালোবাসা সবাই বুঝে যায়।”

মিরাজের বুকে মাথা রেখে অর্পা বলে,”শ্রেয়া আমার ছোটবেলার বান্ধবী।স্কুল জীবন থেকে একসাথে পড়ালেখা করেছি।আমরা একজন আরেকজন ছাড়া আমাদের কোনো বন্ধু বান্ধবী ছিলো না।যেদিন জানলাম আমাদের বাসা পাশাপাশি আণ্টি আমার হাতে শ্রেয়ার হাত দিয়ে বলে,তোমরা দুই বান্ধবী একসাথে যাওয়া আসা করবা।আমরা বিকাল বেলা একসাথে মিলে খেলাধুলা করতাম।তারপর হলো রিমলি।ছোট মেয়েটাকে নিয়ে আমি আর শ্রেয়া কত দুষ্টুমি করতাম।আমার মা মারা যাওয়ার পর বাবা আরেক বিয়ে করে।তখন শ্রেয়া আমাকে ওর কাছে রেখে দেয়।আমাকে মেন্টালি সাপোর্ট করে।বাবা আমাকে পরে নিয়ে আসে।কিন্তু সৎ মায়ের ব্যাবহারে কষ্ট পেলে শ্রেয়া আমাকে ওর কাছে আগলে রাখতো।আংকেল আণ্টি কখনও আমাকে অবহেলা করেনি।বরং শ্রেয়া ও রিমলির মত আমাকেও ভালোবেসেছে।আমাকেও সমানভাবে খেতে দিয়েছ। ঈদের সময় বাবা সৎ মাকে জামা কাপড় আগে এনে দিতো।ওদিকে শ্রেয়া জামা নিলে আমাকেও একই রকম জামা এনে দিতো।বুদ্ধিমতি শ্রেয়া ওই সময় নিজের জন্য কম টাকায় জামা নিতো। যাতে আমিও এক সেট পাই।আমাকে দিতে হলে তো আংকেলের খরচ বাড়বে।আন্টির হাতের কাজ অনেক সুন্দর।শ্রেয়ার জন্য জামা বানাতো নিজের হাতে।শ্রেয়া তখন আন্টির থেকে আমার জন্যও এক সেট বানিয়ে রাখতো।শুধু তাই না আমার পরীক্ষার খরচ মাঝে মাঝে ওই দিয়েছিলো।আমার বাবা যে আমাকে দেখে রাখেনি এটা ভুল কথা।কিন্তু ঘরে সৎ মা আসাতে বাবার আগের ভালোবাসাটা আর ছিলো না।যেগুলো শ্রেয়া আর ওর পরিবার দিয়েছিলো।আমি দিনে রাতে কিভাবে চলছি এগুলো খোঁজ নেওয়ার সময় আর বাবা পেতো না।হয়তো শ্রেয়া না থাকলে আমি এতটা হাসিখুশি জীবন পেতাম না।হয়তো বা অযত্নে আমি খারাপ কিছুও হতে পারতাম।যেখানে শ্রেয়া আমার ছোটবেলার ঢাল ছিলো তার প্রতি ভালোবাসা আসবে না কেনো বলো তো?ওরকম বন্ধুত্ব কি ভুলে থাকা যায়?আমিও তেমন পারিনি।আমিও শ্রেয়ার ঢাল হয়ে থাকতে চাই এখন।ওর মুখে হাসি দেখতে চাই যেমনটা ও দেখতে চাইতো আমার মুখে হাসি।”

চলবে…?
এলার্জির জন্য চোখ থেকে পানি পড়তেছে। কাল অনেক বেশি অসুস্থ ছিলাম।তাই গল্প দিতে পারিনি।আজকে একটু সুস্থ থাকায় রিচেক দিয়েছি।হয়তো কিছু ভুল পাবেন। আশা করি খুব বেশি অসুবিধা হবে না। হ্যাপি রিডিং🖤🦋

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here