তোমাতেই_নৈঃশব্দ্য_প্রহরে #তাহিরাহ্_ইরাজ #পর্বসংখ্যা_৭

0
183

#তোমাতেই_নৈঃশব্দ্য_প্রহরে
#তাহিরাহ্_ইরাজ
#পর্বসংখ্যা_৭

” ওই ছেমড়ি! ঘরে আয়। মোর জিনিসপত্র গুছাইয়া বাইর কইরা রাখ। মুই হাত-পা ধুইয়া আইতাছি। ”

ঈষৎ শীতলতম কণ্ঠের সে আদেশ। পালন করতে এ মুহূর্তে নিজেদের ঘরে অবস্থান করছে উক্তি। মানুষটির পড়নে থাকা বাসি কাপড় গুছিয়ে রাখছে নির্দিষ্ট এক স্থানে। গোলাকার প্লাস্টিকের বোলে। মুয়ীয বসে বিছানার এক প্রান্তে। গামছা হাতে ব্যস্ত মুখমণ্ডলে উপস্থিত জলবিন্দু মুছতে। থমথমে মুখশ্রী। নিজের মতো করে বলতে লাগলো সে,

” হোন ছেমড়ি! শান্ত নীরব স্বভাবের হওয়া ভালা। হেই লেইগ্গা উঠতে বইতে খাইতে হগল সময় চুপ থাকতে হইবো, হেইয়া না কিন্তু। ”

উক্তি চুপটি করে দাঁড়িয়ে। বরাবরের মতই অবনত মস্তক। কোনোরূপ রা নেই। তা লক্ষ্য করে মেজাজ চটে গেল মুয়ীযের। আদেশের স্বরে বললো ওকে,

” এদিকে আয়। ”

কেমন চমকিত নেত্রে তাকিয়ে উক্তি! মানুষটি ওকে কাছে ডাকছে! কিন্তু কেন? বিগত ক’দিনে তো এমনটা কখনো হয়নি। সে কি ওকে বকবে এখন? শাশুড়ি মায়ের মতো ওনার চোখেও কি একমাত্র অপরাধী উক্তি কায়সার! আবলতাবল ভাবনায় মগ্ন মেয়েটা। হুঁশ ফিরলো জোরালো ধমকে। ছোট ছোট পায়ে এগিয়ে গেল উক্তি। বসলো। স্বামীর ঠিক বাম পাশেই। দু’জনের মধ্যকার দূরত্ব প্রায় এক হাতের মতো। মুয়ীয নারাজ চোখে সে-ই স্বল্প দূরত্বের বলিরেখা মেপে নিলো। অতঃপর তাকালো স্ত্রীর আদরে ভরপুর ভয়ার্ত আদলে। স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে বলে গেল,

” দুনিয়াডা হইলো এক রঙ্গমঞ্চের লাহান। এহানে হগলেই দিন নাই রাইত নাই নাটক করে। কেউ ভালো, কেউ খারাপ চরিত্রের। দিনশেষে খারাপ মানুষগুলাই ভালা থাহে। আর ভালার পোড়ে কপাল। তাই কইতাছি। বেশি ভালোমানুষী দেহাইতে গিইয়া নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মা°রিস না। নিজের কথা ভাবতে শেখ। নিজে ঠিক তো দুনিয়াডা ঠিক।… এই দুনিয়ায় কেউ কারোর কারোর না। এক আল্লাহ্’র ওপর ভরসা রাইখা নিজের লেইগা নিজেরই বাঁচতে হয়। একটু দুর্বল হইয়া পড়লেই, হা°লা বেগলডির রঙচঙা চেহারা বাইর হইয়া যায়। তহন টের পাওয়া যায়, কেডা আপন আর কেডা পর। তাই বাঁচতে শেখ। মাথা উঁচু কইরা বাঁচতে শেখ। ”

মুয়ীযের মুখনিঃসৃত একেকটি শব্দ, বর্ণ উক্তি’র শ্রবণ পথে ঝলমলে রূপে প্রবেশ করছিল। দখিনা হাওয়ার মতো ফুরফুরে অন্তঃস্থল। কেউ ওকে সৎ পরামর্শ দিচ্ছে, বাঁচতে বলছে নিজের জন্য, ওর হয়ে ভাবছে কেউ একজন.. এ যে কল্পনাতীত। ভাবনার বাহিরে। কখনো এমনটি হয়নি। এই উনিশ বছরের জীবনে ওর শুভাকাঙ্ক্ষী, কাছের মানুষের সংখ্যা যে বড় নগণ্য। হাতে গোনার মতো। আজ অবধি কেউ ভাবেনি ওর কথা। কেউ একদণ্ড ওর জন্য সময় অপচয় করেনি। ওর হয়ে তিল পরিমাণ ওকালতি করেনি। এ যে স্বপ্ন। আস্ত এক মধুরতম স্বপ্ন। যে স্বপ্নে চিরকাল বাঁচতে চায় সে। এমন সুখকর স্বপ্ন কখনো না ভাঙ্গুক। আবেগে আপ্লুত মেয়েটি কাঁদছে। ভেঙে পড়েছে ক্রন্দনের আধিক্যে। চোখের কার্নিশে বিন্দু বিন্দু সুখের অশ্রুজল। সহসা চমকে গেল উক্তি! মাথায় অনুভব করলো এক পুরুষালি বিশ্বস্ত হাতের স্পর্শ। কানের খুব কাছ ছুঁয়ে গেল সে আদেশ। স্বামীর আদেশ,

” এ্যাম্বালে নিচু কইরা না। মাথা উঁচু কইরা বাঁচতে শেখ। সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত তুই। কোন দুর্বল কীটপতঙ্গ না। বাঁচবি তো বাঁচবি উন্নত শিরে। ”

আলতো করে মাথায় বুলিয়ে গেল হাতটি। কয়েক সেকেন্ডের ছিল সে স্পর্শ। অতঃপর উঠে পড়লো মুয়ীয। উদোম দেহে শ্যাম পুরুষটি। গলায় ঝুলছে গামছা। লুঙ্গি পড়নে তার। উন্নত শির, সদর্পে ঘরের বাহিরে পথ চলছে সে। অশ্রুভেজা চোখে তার গমন পানেই তাকিয়ে উক্তি। হৃদয়ে মোহাচ্ছন্নতার রঙিন রেখাচিত্র।

আঁধারিয়া-নিরংশু রজনী তখন। ঘরটাও মৃদু অন্ধকারে ডুবে। আরামকেদারায় বসে জাওয়াদ। সম্পূর্ণ শরীরের ভর ছেড়ে দেয়া কেদারার সনে। বাঁ হাতের মুঠোয় অবহেলায় তড়পাচ্ছে সে যান্ত্রিক মুঠোফোনটি। ওপ্পো (Oppo). এই তো কয়েক ঘণ্টা পূর্বেই এই ওপ্পো মোবাইলটি ফেরত এলো। একাকী আসেনি কিন্তু। ওই বে^য়াদব, ফ°কিন্নির হাতেই এসেছে। জাওয়াদ শক্ত করে চক্ষু বন্ধ করে নিলো। চোখের বন্ধ পর্দায় ভেসে উঠলো সে মুহূর্তের কিছু অসহ্যকর চাহনি, কিছু যন্ত্রণাপ্রদ বাক্য। এখনো যেন তার সম্মুখে দাঁড়িয়ে মুয়ীয হাসান। চোখে চোখ রেখে অভব্য স্বরে বলে চলেছে,

‘ তোগো ভোপ্পো তোগো ধারেই রাখ। মোর বউয়ের এইসব বা°লছালের কোনো দরকার নাই। বউডা যহন মোর, অর হগল কিছুর দায়িত্বও মোর। মুই যদি ওরে দেড় হাজারের বাটন সেট কিইন্না দিতে পারি, তয় ও হেইডাই চালাইবে। বাপের বাড়ি থে দেয়া দামী সেটের আলগা ফু^ডানি দেহাইবে না। ‘

জাওয়াদ দাঁতে দাঁত পিষে গর্জে উঠলো,

‘ মুখ সামলে কথা বল। নইলে… ‘

সর্ষে দানা পরিমাণও না টলে, অত্যুগ্ৰ স্বরে বলে গেল অভদ্র মুয়ীয,

‘ তুই মুখ সামলাই কথা ক, হা`লা ফু°ডাঙ্কি। মন তো চাইতেছে নলাডা ধইরা ভাইঙ্গা হালাই। বিয়ার দিন থে আজ অবধি যা করছোছ না.. হগল কিছুই মোর মনে আছে। কিচ্ছু ভুলি নাই। তাই ভালো চাস তো, মুখে সেফটিপিন মাইরা বইয়া থাক। একদম হুশশ! ‘

নিজ ঠোঁটে তর্জনী ঠেকিয়ে নীরবতা বেছে নেয়ার ইশারা করলো মানুষটি। দুপুরের সে-ই মুহূর্তের রেশ এখনো বিদ্যমান। মুয়ীয যেন এখনো চোখের তারায় ধরা দিচ্ছে। তিলে তিলে ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ করে মা•রছে তাকে। আর সহ্য হচ্ছে না। শিরায় উপশিরায় জ্বলছে আগুন। দাউ দাউ লেলিহান শিখায় ছারখার জাওয়াদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ সত্তা। ক্ষোভে তোপে হাতে থাকা দামী স্মার্টফোনটি অজানায় ছুঁড়ে ফেললো জাওয়াদ। মোবাইলটি গিয়ে আছড়ে পড়লো খাটের এক কোণ ছুঁয়ে মেঝেতে। মুষ্টিবদ্ধ দু হাতে, জাওয়াদ বন্ধ চোখে আরামকেদারায় বসে। ভেতরে ভেতরে কি চলছে, তা সম্পূর্ণ অজানা!

নিশ্চুপ চারিদিক। ঘড়ির কাঁটা নির্দেশ করছে রাত্রি তখন দু’টো বেজে পঞ্চাশ মিনিট। গভীর ঘুমে তলিয়ে সকলে। শুধুমাত্র ঘুম নেই দু’টো প্রাণীর চোখে।

” কি হইছে? অমন ভূতের লাহান বইয়া আছোছ ক্যা? রাইত দুপুরে জ্বিনে ধরছে নি? ”

প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকিয়ে মুয়ীয। পাশেই নিশ্চুপ উক্তি। বরাবরের মতই নত মস্তক। আলতো করে কচলে চলেছে নরম কোমল দু’টো হাত।

” কি রে? চুপ কইরা আছোছ ক্যা? কোনো ফাও স্বপ্ন দেখছোছ? ”

ঈষৎ উদ্বিগ্নতা প্রকাশ পেল মানুষটির কণ্ঠস্বরে। এত রাতে মেয়েটি ঘুম ছেড়ে সজাগ বসে। এভাবে চুপটি করে, কেমন অস্বস্তি সহকারে। কেন? ভাগ্যিস আচমকা মুয়ীযের ঘুম হালকা হয়ে গেছিল। তাই তো টের পেলো পাশে শায়িত মেয়েটি অনুপস্থিত। চট করে ঘুম ভেঙ্গে গেল। উঠে বসলো মুয়ীয। পাশে তাকাতেই নজরবন্দি হলো আকাঙ্ক্ষিত অবয়বটি। এরপরের দৃশ্য তো জানা ই। এভাবে নির্বাক বসে উক্তি। মেয়েটা পড়েছে মস্ত বড় ফ্যাসাদে। বলবে তো বলবে, কি বলবে? সত্যিটাই বলবে কি? কিন্তু সে সত্যি কি তার জন্য লজ্জার নয়? কোনোরূপ জবাব না পেয়ে মেজাজ চড়ে গেল সপ্তমে। পেলব হাতটি ঝাঁকিয়ে জেরা করার স্বরে শুধালো মুয়ীয,

” শেষবারের লাহান জিগাইতাছি। হাছা কইরা ক। কি হইছে? ”

এ প্রশ্ন, এই কণ্ঠস্বর! কিছু তো ছিল। এমন কোনো শীতলতা, যা বাধ্য করলো উক্তি’কে তার সমস্যা তুলে ধরতে।
___

চারদিকে আঁধার। একফালি আলোর উৎস রূপে নিয়োজিত হাতে থাকা মোবাইলের ফ্লাশ লাইট। মানুষটি আশপাশে সতর্ক নজর বুলিয়ে নিলো। পাশে থাকা স্ত্রীর পানে একপলক তাকিয়ে বললো,

” তুই খাড়া। দেইখা আহি ভিতরে সব ঠিক আছে নি। ”

মুয়ীয প্রবেশ করলো ভেতরে। বাড়ির বাইরে অবস্থিত এ গণ শৌচাগার। বিবাহিত জীবনের এক সপ্তাহ অতিক্রান্ত হয়েছে। রাতের আঁধারে খুব কমই শৌচাগারে এসেছে উক্তি। সকলে ঘুমিয়ে তলিয়ে যাওয়ার পর তো কখনোই আসার প্রয়োজন পড়েনি। ঘুমানোর আগেই প্রাকৃতিক কর্ম সম্পাদন করে ফেলতো সে। কিন্তু আজ! ঘুমের ঘোরে এই রাত তিনটার দিকে প্রকৃতির ডাক এলো। অনেক চেষ্টা করেছে মেয়েটা। তবে দমিয়ে রাখতে ব্যর্থ হলো। ভেঙে গেল ঘুম। বিছানায় উঠে বসলো সে। উশখুশ উশখুশ করতে লাগলো। এত রাতে একাকী শৌচাগারে যাবে কি করে? আর কাকেই বা ডেকে বিরক্ত করবে? স্বামী মানুষটিকে? অসম্ভব। যদি বকে দেয়! উক্তি’র সমস্ত ভ্রান্ত ধারণা বানচাল করে দিলো মুয়ীয। সহধর্মিণীর হাতটি আলতো করে পুরে নিলো খসখসে পুরুষালি হাতের মুঠোয়। জ্বালিয়ে নিলো মোবাইলের আলো। আস্তে ধীরে দু’টি জীব বেরিয়ে এলো বাড়ির বাইরে। সাবধানে হাঁটল তারা। পৌঁছে গেল শৌচাগারের ধারে। উক্তি’র ভাবনার বাইরে ছিল এই যত্ন। এই আগলে রাখা মুহুর্তটুকু। এই মুহূর্তের প্রতিটি দৃশ্য সে আম`রণ হৃদয়ের গোপন সিন্দুকে যতন করে সংরক্ষণ করে রাখবে। ভুলবে না কভু। এ যে সর্বদা মনে রাখার মতো স্মরণীয়, সুখকর স্মৃতি।

উক্তি’র অধরকোলে তখন এক টুকরো প্রাপ্তির উজ্জ্বলতা। শৌচাগার চেক করে বেরিয়ে এলো মুয়ীয। বললো ওকে,

” ব্যাবাক ঠিক আছে। বদনায় পানিও আছে। যা। মুই এহানেই আছি। ”

ইশারায় আশ্বস্ত করলো অর্ধাঙ্গ। ভয়-জড়তাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে শৌচাগারে প্রবেশ করলো উক্তি। রাতের আঁধারে সে এক অপূর্ব চিত্র! শৌচাগারে অবস্থান করছে নারী। তার ভালোমন্দ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, বাহিরেই পাহারারত একান্ত পুরুষটি।

সুবাহের আকাশে খিলখিলিয়ে হেসে চলেছে দিনমণি। ফুরফুরে মেজাজে আজ দিচ্ছে কম উত্তপ্ত রোদ। তাই তো স্বস্তি পাচ্ছে জনজীবন। শুধু স্বস্তি মিলছে না জান্নাত নামক রমণীর। নিজেদের ঘরে খিটখিটে মেজাজে সে। ব্যস্ত হাতে স্কুলের জন্য তৈরি করে দিচ্ছে একমাত্র পুত্র জীবন’কে। দশ বছর বয়সী ছেলেকে স্কুলের ইউনিফর্ম পড়াতে পড়াতে আওড়ে চলেছে,

” মোর হইছে যত রাজ্যের জ্বালা। হগল কাম করতে করতে মইরা যামু। আর মাইনষে ঠ্যাঙের উপর ঠ্যাং তুইলা খালি খাইবো। মোরে বিনা পয়সার চাকরাণি পাইছে তো! ”

একমাত্র ছেলে জীবন, আগুনে ঘি ঢেলে দেয়ার মতো প্রশ্ন করে বসলো,

” মা, তুমি হাছাই চাকরাণি? ”

দপ করে জ্বলে উঠলো জান্নাত। ছেলের মাথায় গাট্টা মে•রে বললো,

” শ•য়তান পোলা মুই চাকরাণি? তোর বাপে চাকরাণি। চৌদ্দ গুষ্টি চাকরাণি। মোর জীবনডা এক্কারে শেষ কইরা হালাইলো। কোন দুঃখে যে এই বাড়ির বউ হইয়া আইছিলাম? অহন তো প্রতি ওয়াক্তে ম°রতাছি। যত ম`রণ খালি মোরই। ”

জীবন নাকমুখ কুঁচকে মাথায় হাত বুলিয়ে নিলো। মা ভালোই জোরে আঘাত করেছে। উফ্! লেগেছে রে। জান্নাত সেদিকে ভ্রূক্ষেপ না করে ওয়্যারড্রবের ওপর হতে নোংরা এক চিরুনি নিয়ে এলো। ছেলের চুল আঁচড়ে দিতে দিতে বললো,

” হোন। টিফিনের লেইগ্গা পাউরুটি ভাইজা দিছি। পুরাডা খাবি কিন্তু। যদি আইজও ফেরত আহে না, আর কোনোদিন টিফিন পাবি না এই কইয়া রাখলাম। ”

জীবন অসন্তোষের স্বরে বললো,

” মা তুমি আবার পাউরুটি দিছো? তুমি খালি রুটি পোড়াই হালাও। হ্যারচেয়ে কাকি ভালো বানাইতে পারে। পরশু দিছিল না? সে-ই স্বাদ ছিল! হেব্বি হইছিল। ”

জীবন এমন অভিব্যাক্তি করে বললো যেন এখনো জিভে লেগে সে-ই স্বাদ। এই তৃপ্তিময় মুখশ্রী যে সহ্য হলো না জান্নাতের। ছেলের চুলের পেছনাংশ শক্ত মুঠিতে ধরে, হিসহিসিয়ে বললো সে,

” আরেকবার যদি ওই বেডির নাম ন্যাছ না? এক্কারে কইলজা টাইনা ছিড়া হালামু। মনে থাহে যেন। ”

জীবন আতঙ্কিত নেত্রে তাকিয়ে। মা এমন ডা`কিণীর মতো করছে কেন! সে ভুল কিছু বলেছে কি? জান্নাত ছেলের চুল ছেড়ে দিলো। একাকী ছটফট করতে করতে ছেলেকে পুরো রেডি করিয়ে দিলো। অতঃপর গলায় থাকা ওড়না কোনোমতে ঠিক করে আবৃত করে নিলো বুকের কিয়দাংশ। মাথার চুল সম্পূর্ণ অনাবৃত। ওভাবেই ছেলেকে নিয়ে স্কুলের উদ্দেশ্যে রওনা হলো জান্নাত। ঘরে তখন স্বামী মারুফ। বিছানায় হাত-পা ছড়িয়ে বেঘোরে ঘুমোচ্ছে।

” দ্যাখ ছেমড়ি! মেজাজ এমনিতেই গরম তাওয়ার লাহান উত্তপ্ত হইয়া আছে। আর গরম করিস না। হাছা কইরা ক। পোলাডা কেডা? ”

অত্যন্ত কর্কশ সে শব্দমালা। বুকের ভেতরটা ভয়ে, আতঙ্কে শত টুকরোয় ছিন্নভিন্ন হলো। গলার অভ্যন্তর শুকিয়ে খাঁ খাঁ মরু প্রান্তর। চোখে ভীতিকর ছায়া। কি বলবে সে? মানুষটা কি রেগে দা`নবীয় আকার নেবে না?

চলবে।

[ পোলাডা কেডা? কোনোরূপ আন্দাজ? মুঝে কুচ ন্যাহি পাতা 🥱 ]

📌 আসসালামু আলাইকুম পাঠকবৃন্দ। জয়েন করুন আমাদের গল্প সংক্রান্ত গ্রুপে 👇

https://facebook.com/groups/499389245208190/

—–

টাইপো কৃতজ্ঞতায় ~ রত্না আপু 🩶

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here