ভালোবাসার_কাব্য_গাঁথবো (১৯)

0
536

#ভালোবাসার_কাব্য_গাঁথবো

(১৯)
লাবিবার কোনো পাত্তা নেই। লজ্জা পেয়ে এমন গুটিয়ে যাবে এইটা ভাবনাতেও ছিল না। আজ নাকিব এসে তানভীরকে জিজ্ঞেস করেছে লাবিবা কোথায়? উত্তর দিতে পারেনি তানভীর। বিষয়টা কতটা খাপ ছাড়া হয়ে গেছে বুঝতে বাকি নেই। লাবিবা কল ধরবেনা। ধরেওনি এতোদিন। তাই তানভীর বাড়ির নাম্বারে কল ঢুকালো। রিসিভ করলো ইসমাইল। সালাম জানিয়ে প্রথমেই জিজ্ঞেস করলো,
” লাবিবা কোথায়?”

তানভীরের লজ্জাবোধ বরাবরই একটু কম। তাই বলে শ্বশুর হয়ে ইসমাইল তো জামাইয়ের সাথে সাথে লজ্জায় সেক্রিফাইস করতে পারেনা। ফোনটা ধরিয়ে দিলো সাবিনাকে ডেকে। সাবিনা জানালো তার মেয়ে পড়ছে। ঘরে বসে সারাদিন পড়ছে। বিয়ের টেনশনে কয়েকদিনের মধ্যে সব খেয়ে বসে আছে । গ্যাপ গুলো এখন ফুল করছে। তানভীর লাবিবাকে দিতে বলে। লাবিবার দিকে ফোন এগিয়ে দিলে লাবিবা বেশ বিরক্ত ই হয়। মুখটা খুলতে যাবে তখনি সাবিনা চোখ রাঙিয়ে তাকায়।
” জামাই কল দিয়েছে। তাড়াতাড়ি ধর। ”

তানভীরের কথা শুনে লাবিবা খুশিতে লাফিয়ে উঠে। মেয়ের এভাবে মুড চেঞ্জ দেখে সাবিনা মুচকি হাসে।
” পাগল!” বলে চলে যায়।‌ মনে মনে শান্তিও পায়। সুখে আছে তার মেয়েটা। এদিকে মেয়ের মনে যে লাড্ডু ফুটেছে! তাও আবার দুষ্টুমির লাড্ডু। সেটা তার অজানা।

” হ্যালো স্যার। আসসালামুয়ালাইকুম। ”

” কোথায় তুমি?”

” আগে সালাম নিন। তারপর বলবো।”

” নিয়েছি।”

” মনে মনে না। প্রকাশ্যে নিন। বলুন ওয়ালাইকুমুস সালাম। আমি যেনো শুনি। ”

” বাজে কথা রাখো। ক্লাস মিস দিচ্ছ কেন? তোমার জন্য কি স্যার ম্যামরা আবার ক্লাস নিবে?”

” আপনি চাইলে সে নিতেই পারে। আফটার অল প্রিন্সিপাল বলে কথা!”

” সব কিছুর একটা রুলস আছে। কলেজে আসো। রেগুলার ক্লাস করো।”

” আমার কলেজ যেতে মন চায়না স্যার।”

” রিজন?”

” আপনি আছেন তো। কলেজে গেলেই আপনার সামনে পরতে হবে। আমি পারবো না স্যার। আমার ভীষন লজ্জা লাগে। ”

“ওকে আমাকে দেখতে হবেনা।সোজা ডিপার্টমেন্টে আসবে ক্লাস করবে আর চলে যাবে। ”

“আমার বেহায়া চোখ যে আপনাকে ঠিকই দেখে ফেলে স্যার। আপনি যদি অফিসেও থাকেন থাই গ্লাসেই আমার চোখ আটকে থাকে। আমি যাবো না স্যার। আমার ভীষণ লজ্জা লাগে।”

লাবিবার কথায় তানভীর থামে। দুষ্টু মেয়েটা বউ হয়েছে কদিন এখনি দুষ্টুমি শুরু করে দিয়েছে।
” উল্টাপাল্টা মুভি দেখে লজ্জা বেড়ে গেছে তাইনা? ওকে। রাতে আসছি। দেখবো তোমার কোথায় কোথায় লজ্জা লাগে?”

নিরব হুমকি পেয়ে লাবিবা চাঁপা হাসে।‌ বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে আয়েশ করে বলে,
” গতকাল রাতেও একটা মুভি শেষ করলাম। ফ্রেন্ডস উইথ বেনিফিট! ফ্রেন্ডস! নাকিব! ভাই লাগে আমার। হাজব্যান্ড উইথ বেনিফিটস হলেও তো হতো! ইসস একদমই মন সায় দিলো না স্যার।”

” এই মেয়ে। সায়ের কথা কেন আসছে? কি ঘুরে মাথায় তোমার? আজ থেকে তোমার ফোন ল্যাপটপ আমার কাছে থাকবে। আসছি দাঁড়াও রাতে। ”

তানভীরের কন্ঠে দারুন তেজ! লাবিবা ভীষণ মজা পায়। সেও তেজের সাথে বলে,
” আমার স্বাধীনতা। আমি উড়ছি। দুদিন যেতে না যেতেই আপনি আমার পাখা কাটার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন ? এই আপনার স্বাধীনতা? এই আপনার দায়িত্ব? শুধু মুখেই বড় বড় কথা। ”

“লাবিবা তুমি তর্ক করছো আমার সাথে? এতোটা স্পর্ধা? ”

” অবশ্যই। আমার স্পর্ধা সম্পর্কে আপনার কোনো ধারণা নেই। জানেন আমি কে? দুই আসনের এমপি ফিরোজ খানের ছেলের বউ। মরহুম মাজহারুল ইসলামের নাতি বউ। আর আমার হাজব্যান্ড? একজন প্রিন্সিপাল। আমার মতো ঘাড়ত্যাড়া মেয়েকে যে আদা জল খাইয়ে ছাড়ছে। দ্বিধাদ্বন্দে ঢুবিয়ে চোখের পানি নাকের পানি এক করে ছেড়েছে। একবার ভাবুন তাহলে তার কত ক্ষমতা। তারই ওয়াইফ আমি। আর আপনি আমার স্পর্ধা দেখতে চাইছেন? ”

” তুমি অত্যন্ত অসভ্য একটা মেয়ে লাবিবা। ”

” আমি এখনো ভালো আছি। প্লিজ আমাকে খারাপ করবেন না। ”

তানভীর দমে যায়। ফোন টেবিলে ছুঁড়ে দিয়ে হা হুতাশ করে। যতটুকু সহজ সরল ভেবেছিলো এই মেয়ে আসলে ততটুকু না। তানভীর বেশ ভালো করেই বুঝতে পারছে একে হাতের মুঠোয় পুরে রাখতে হবে চব্বিশ ঘন্টা। কোন মতেই ছাড় দেওয়া যাবে না। এই পাখি একবার আকাশ ছুলে আর নিচে নামবে না। সুতো বেঁধেই ছাড়তে হবে এর আগে না।

সন্ধ্যার পরপরই তানভীর শ্বশুড়বাড়িতে হাজির। কিন্তু সেখানে গিয়ে লাবিবার টিকিটটাও খুঁজে পাওয়া যায় না। সাবিনা জামাইকে দেখে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। শরবত ফল চা সব নিয়ে হাজির। তানভীর শরবতটা শেষ করে জিজ্ঞেস করে,
” লাবিবা কোথায় আম্মু?”

” ওর ছোট কাকার বাসায় গেলো তো এইমাত্র। তুমি নাস্তা শেষ করো বাবা। আমি ডেকে আনছি। ”

“আপনি ব্যস্ত হবেন না আম্মু। আমি আছি। ও আসুক।”

” আচ্ছা।”

তানভীর নাস্তা করে রুমে আসে ফ্রেস হতে। সাবিনাও আসে হাতে কয়েক সেট শার্ট প্যান্ট নিয়ে। তানভীরের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে,
” চেঞ্জ করে নাও বাবা। তোমার জন্য তোমার শ্বশুর আনিয়ে রেখেছে। দেখো সাইজ ঠিক আছে কিনা।”

“উমম আম্মু আমি তো থাকছি না। ”

” এটা আবার কেমন কথা? কোথাও যাওয়া হবেনা। তুমি তো আসোই না। সপ্তাহে চারদিন ঐ বাড়িতে থাকলে তিন দিন ই এই বাড়িতে থাকতে হবে। এটা তো তোমার ই বাড়ি বাবা। আমাদের একমাত্র জামাই তুমি। নাও নাও। আমি আবার তোমার জন্য রান্না চাপিয়েছি।”

“আব্বু কোথায় আম্মু?”

“এখনও ফিরেনি বাবা। তুমি ফ্রেশ হতে থাকো আমি ফোন করে দিয়েছি লাবিবা চলে আসবে এখুনি।”

” ছোট কাকার বাসা কতদূর এখান থেকে?”

” মিনিট দশেক হাঁটার পথ। বেশি দূরে না। ”

” ওহ! আচ্ছা।”

লাবিবা গোল চত্বর হয়ে বসে কাজিনদের সাথে লুডু খেলছে। তিন দান খেলা শেষ একবারো ফাস্ট হতে পারেনি। জেদ নিয়ে বসেছে ফাস্ট হয়েই ছাড়বে। ছোট কাকী ফোন হাতে ঘরে ঢুকেই তাড়া দেয়।
” লাবি মা উঠো উঠো। তাড়াতাড়ি চলো তোমাকে বাড়ি দিয়ে এসেছি। জামাই এসে বসে আছে।”

” যে মন চায় সে এসে বসে থাকুক। আগে আমি ফার্স্ট হবো তারপর উঠবো।”

” জামাই অনেকক্ষন থেকেই এসেছে। উঠ উঠ। ”

” যাও তোমার জামাইকে বলছি। কাকা কাকা! তোমার বউকে নিয়ে যাও। আমি ও ঘরে একদমি উকি দিবোনা।”

লাবিবার জোরে ডেকে এমন ধরনের কথা বলায় পাশের ঘর থেকে ওর ছোট কাকা খুক খুক করে কেশে উঠে। কাজিনরা হো হো করে হেঁসে উঠে। বাচ্চা মেয়ে কাজিন দুইটা তো কিছু না বুঝেই হাসছে। কাকী চোখ রাঙায়।ধমকে উঠে।
” হপ! বোকা মেয়ে। তোমার কাকার কথা বলিনি। তানভীরের কথা বলছি।”

লাবিবা চোখ পিট পিট করে তাকায়।
” উনি আসছেন?”

” তোমার আম্মু কল দিয়েছিলো। ঘন্টা খানেক আগেই এসেছেন। তোমার জন্য ওয়েট করছে। উঠো উঠো পৌঁছে দিয়ে আসি। ”

লাবিবা আরো পা মোড়ে শক্তপোক্ত ওয়ে বসে। বিরবির করে। ” লা ইলাহা ইল্লাল্লা !”

” আমি আর এখান থেকে কোথায়ও যাচ্ছিনা। কাকী আমার জন্য নুডুলস করে দাও। আজকে আমি এখানেই ঘুমাবো। বাড়ি যাচ্ছি না। ”

“জামাই এসে বসে আছে। ”

” উনার কাজ করে উনি চলে যাবেন। আমি আজ বাড়ি যাচ্ছি না।”

” এই শোনো লাবি মা কি বলে! জামাই এসেছে অথচ তোমার ভাতিজি যেতে চাইছে না। ”
লাবিবার কাকাকে ডাকতে ডাকতেই কাকী চলে যায়।

রাত দশটা বেজে যাচ্ছে লাবিবার আসার নাম নেই। সাবিনা বার বার ফোন করছে। তানভীর ও বুঝে গেছে লাবিবা আজ আর আসবেনা। ওকে গিয়েই নিয়ে আসতে হবে। যেরকম ভাবা সেরকম কাজ। সাবিনা মেয়েকে আনতে যাবে তখন তানভীর বাঁধা দেয়।
” আম্মু আপনি থাকুন। আমিই গিয়ে নিয়ে আসছি। লোকেশনটা বলে দিন তাতেই হবে।”

তানভীর যখন পৌঁছালো তখন লাবিবা বিভোর ঘুম। তানভীরকে দেখেই একে একে সবাই লাবিবাকে ডাকতে লাগলো। লাবিবা মোটেই ঘুমায়নি। তানভীর এসে বাসায় বসে আছে তার কি এখন ঘুম হবে? কাকার বাসায় তো প্ল্যান করেই এসেছে। সকালের হুমকি টা যে তার দায়িত্ববান অ-স্বামী পালন করবেই সেটা খুব ভালো করেই জানে। কারো ডাকে লাবিবা সাড়া দিলো না। পাল খেয়ে পড়ে রইলো। একটু নড়লোও না। সবাই যখন তাকে তুলতে ব্যর্থ হলো তখন তানভীর এসে পাশে দাঁড়ালো। লাবিবাকে ভালো করে লক্ষ্য করলো। লাবিবার অবচেতন মন ঠিকই জানান দিলো তার সামনে স্বয়ং তার অ-স্বামীই দাঁড়িয়ে। লাবিবা কাকী যখন লাবিবার পা ধরে টান দিলো তখন তানভীর বললো, ” আমি দেখছি কাকী। ”

” না উঠলে যাবে কিভাবে? তুমিও আজ এখানেই থেকে যাও বাবা।”

“না কাকী। আমি ওকে নিয়ে যাচ্ছি। ”

তানভীর হাতের ফোনটা পকেটে ভরে লাবিবাকে পাজা কোলে তুলে নেয়।
” তুমি পারবে এতোটা পথ কোলে করে নিয়ে যেতে?”

” কোনো ব্যপার না। ”

লাবিবাকে নিয়ে তানভীর হাঁটার রাস্তা ধরে। চারিদিকে শুনশান। রাতের গ্ৰামের রাস্তা। আশে পাশের ডোবা থেকে ঝিঝি পোকার ডাক আসছে। এরকম রোমাঞ্চকর পরিবেশে তানভীর জীবনের প্রথম হাঁটছে। খোলা ফসলের বন থেকে গা শিরশির হাওয়া আসছে। মটকা মেরে পড়ে থাকলেও লাবিবা এবার ঠান্ডায় নড়ে চড়ে উঠে। তানভীর নিজের সাথে আরেকটু চেপে ধরে। ঘাড়ের উপর থুতনি ঠেকিয়ে প্রশ্ন করে,
” খুব ঠান্ডা লাগছে? ”

লাবিবা থর থর করে কেঁপে উঠে। তানভীর মৃদু হাসে।
” আমি জানি তুমি ঘুমাও নি। তোমার এক্টিং নিঃসন্দেহে নিখুঁত। কেউ ধরতে পারবে না। কিন্তু লাবি পাখি আমার চোখ তো তুমি এড়িয়ে যেতে পারবেনা। এটা পসিবলই না। তোমার ভেতরের খবরটাও এখন আমার জানা। যেদিন থেকে তুমি আমার অর্ধাঙ্গীনি হলে সেদিন থেকেই তোমাকে পড়ে নিতে আমার সময় লাগে না।‌ ”

লাবিবা উত্তর করলোনা। কোলের মাঝেই লেপ্টে থাকলো তানভীরের বুকে। মাঝপথে যেতেই বললো,
” অ-স্বামী নামান। আমার সুরসুরি লাগছে।”

” উমম! বাহানা নয়। আমি একদমই তোমাকে সুরসুরি দিচ্ছি না। ”

” আপনার কষ্ট হচ্ছে তো। ”

” সেটা তোমার ভাবতে হবেনা। ”

” আরে সত্যি বলছি আমার শরীর শির শির করছে। ”

” ঠান্ডা হাওয়ার জন্য। উড়নাটা দিয়ে ভালোভাবে বাহু দু’টো ঢেকে নাও। ”

” হাওয়ার জন্য না। আপনার জন্য ই আমার গা শিরশির করছে। ”

” করুক। নামাবোনা। ”

” নামান না! আমি পারছিনা।”

” জড়িয়ে রাখলেই শিরশির করে আর সারা রাত চোখে ধর্ষন করলে বুঝি শিরশির করে না?”

” আমি একটু তাকিয়ে ছিলাম। বেশিক্ষন না। ”

” তাতে কি? আমিও তো একটুই কোলে নিয়েছি । বেশীক্ষণ না। ”

” ঘাড় ত্যাড়ামি করছেন কেন? ছেলেদেরও শিরশিরানি হয় জানতাম নাতো?”

তানভীর উত্তর দেয়না ‌। পুরোটা পথ শেষ করে বাড়ির দরজার সামনে এনে ছেড়ে দেয়। সাবিনা দরজা খোলে দেয়। লাবিবাকে দেখেই বকে দেয়। লাবিবা দৌড়ে ভেতরে ঢুকে পড়ে। ডাইনিং এ আগে থেকেই বসে আছে ইসমাইল। মেয়ে জামাইকে দেখে বসতে বলে। তানভীর বসতেই খাওয়া শুরু করে। সাথে টুকটাক গল্প। লাবিবা এক পিস মাংস খেয়েই বলে,
” আম্মু আমি খেয়ে এসেছি। এখন আর খাবো না। রুমে গেলাম। ”

” তানভীর খাচ্ছে। দেখ কি লাগবে।”

” স্যার আপনার কিছু লাগবে?”

তানভীর মাথা তুলে তাকায়। ইশারা করে বলে,
” বসো।”

ইসমাইল লাবিবার দিকে মালাইয়ের বাটি এগিয়ে দেয়।
” খাও। আসার সময় তোমার জন্য নিয়ে এসেছি।”

” আম্মু আমি লুডুস খেয়ে এসেছি।”

বাটিটা হাত দিয়ে সামনে থেকে সরিয়ে দেয়। সাবিনা বাটি হাতে নিয়ে বলে,
” এখন না খেলি পরে খেয়ে নিস ফ্রিজে তুলে রাখছি। ”

” আমি এখন মলাই খাই না। বমি পায়। ”

ইসমাইল টু শব্দ অব্দি করেনা। তানভীর খেয়াল করে এদের বাবা মেয়ের মাঝে এখনো মনমালিন্য চলছে। বেশ কয়েকবার ইগনোর করতে দেখেছে। লাবিবাকে জিজ্ঞেস করে,
” আব্বুর সাথে তুমি কথা কেনো বলোনা লাবিবা?”

” আমার ইচ্ছা। ”

” জেদ সব সময় ভালো না। আব্বুর সাথে মিটমাট করে নাও সব। আমি বারবার এরকম বেয়াদবি দেখতে পারবো না। আব্বুর মনে কষ্ট দিয়ে কখনোই সুখী হবেনা।”

” আমার সাথে এমন একটা ব্যবহার করতে যার বুক কাঁপে না তার কষ্টে আমার কিচ্ছু যায় আসে না। ”

” কি করেছে তোমার সাথে? বিয়ে দিয়েছে। অন্যায় হয়েছে?”

জামাইয়ের হাইপার হয়ে যাওয়া দেখে ইসমাইল আটকাতে যায়।
” বাবা তুমি প্লিজ রাগা রাগি করোনা। আমার মেয়েটা ছোট। আমাকে অনেক ভালোবাসে তো তাই অভিমান করেছে। ”

” তাহলে অভিমান ভাঙুক এবার। বলো বিয়ে দিয়ে অন্যায় করেছে? আমাকে তোমার পছন্দ না তাইনা?”

“পছন্দ অপছন্দের কথা উঠছে কেন? আপনি শান্ত হন। ”
” আচ্ছা আমার শ্বশুর যে ভুল করেছে সেই ভুলটা নাহয় আমিই শুধরে নিচ্ছি। বলো আমাকে তোমার পছন্দ না? চলে যাবো আমি? বলো। এক্ষুনি চলে যাচ্ছি। ”

” তোমার বাড়ি থেকে কোথায় যাবা তুমি ? রাগ করে না বাবা। ওদের বাবা মেয়ের অভিমান ওরা বুঝে নিবে। তুমি খাবার ছেড়ে উঠবেনা।”

” না আম্মু ও বলুক অন্যায় হয়েছে। আমাকে ওর পছন্দ না। আমি চলে যাচ্ছি। আর কোনদিন আসবো না। ”

লাবিবা কেঁদে দিবে অবস্থা। তানভীরের বাহু ধরে বলে,
” আমি কখন বলেছি আপনাকে পছন্দ না? প্লিজ আপনি যাবেন না। আম্মু উনাকে যেতে না করো না।”

লাবিবা টেনে ধরে তানভীর কে। ইসমাইল ও খোশামত করতে থাকে। তানভীর রাগ নিয়েই গা ঝাড়া দিয়ে আবার চেয়ারে বসে। সাবিনা বোল থেকে তাড়াহুড়ো করে অর্ধখালি প্লেটে পোলাও বেড়ে দেয়। লাবিবাও কাঁদো কাঁদো মুখে পানির গ্লাস এগিয়ে দেয়। ইসমাইল মাথায় রেখে বোঝাতে থাকে। নিচু হয়ে মুখে লুকমা তুলেই তানভীর বাঁকা চোখে লাবিবাকে দেখে। চোখে চোখ পড়তেই মন কাড়া একটুখানি লুকানো হাসি দেয়। লাবিবা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। এই হাসির অর্থ বুঝতে তাকে আরো বুদ্ধিমতী হতে হবে।

চলবে __

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here