ভালোবাসার_কাব্য_গাঁথবো (২২)

0
621

#ভালোবাসার_কাব্য_গাঁথবো

(২২)
” এভাবে কই থেকে দৌড়ে এলে? লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে নিয়েছো? স্টুপিড! ”

লাবিবা বুক থেকে মাথা তুলে তাকায়। ছলছল নয়নে তাকিয়েই রয়। তানভীর পেছন ফিরে। খইরুল মামা আর সে একসাথেই নামাজ আদায় করে বেরিয়েছিলো। মামা এখন কলেজ পুকুর পাড়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। লাবিবার কর্ম দেখেই সাইড পাস করতে বাধ্য হয়েছে। তানভীর লাবিবার হাত ধরে।
” এসো। ”

পেছন গেট দিয়ে খালি রুম দেখে ভেতরে ঢুকে দরজা চাপিয়ে দেয়। লাবিবার হাত ছেড়ে দিয়ে একটুখানি দু হাত বাড়িয়ে দেয়।
” নাও এবার জড়িয়ে ধরো।”

লাবিবা থায় দাঁড়িয়ে থাকে। না বকতে রিকুয়েস্ট করার পরও যখন ঝাড়ি দিলো তখন আর এগুনো পসিবল না। তানভীর লাবিবার জড়তা বুঝতে পারে।
“এসো। এখন আর বকবো না। ”

লাবিবা মাথা নিচু করে আরেকটু। আর নড়াচড়া নেই। তানভীর নিজে থেকেই এগিয়ে আসে। সেই প্রথম দিনের মতো লাবিবাকে জড়িয়ে ধরে তুলে ধরে। নিজ পায়ের উপর লাবিবার পা রেখে ব্যালেন্স রাখে। লাবিবা দু চোখ বন্ধ করে নেয়। ধীরে ধীরে গাঢ় হয় হাতের বন্ধন। তানভীর মিনিট দুয়েক সেভাবেই লাবিবাকে জড়িয়ে রাখে। কপালে ঠোঁট চেপে সময় নিয়ে গাঢ় চুমু খায়। একহাতে জড়িয়ে আরেক হাতে মাথায় হাত বুলিয়ে জিজ্ঞেস করে,
” কি হয়েছে? হুম? ঘামছো কেন?”

” কিছু না। ”
সময়ের পাল্লা দিয়ে গড়ায় আরো কিছুক্ষণ। লাবিবার চোখ দুটো বন্ধ। তানভীরের দৃষ্টি আধখোলা জানালা দিয়ে বাহির বরাবর। কেউই যেনো ছাড়তে চায়না। নিরবতা টুকু লাবিবাই ভাঙে। বিরবির করে।
” স্যার?”

“হুম?”

” আপনি আমার।”

” আমি সাবিনার মার। ”

চট করে মাথা তুলে তাকায় লাবিবা। চোখে মুখে আতঙ্ক।
” কার?”

“সাবিনার মা’র। ”

” না আপনি আমার। তিনবার কবুল বলে আমাকে বিয়ে করেছেন মনে নেই আপনার?”

” তবুও আমি সোহানার মা’র। ”

” না আপনি আমার। ”

” তাহলে আমি ফিরোজের মা’র।”

শ্বশুরের নাম কানে যেতেই টনক নড়ে লাবিবার। এতোক্ষণ কি কথা ধরে জেদ করছিলো বুঝতে পেরে হটাৎ লজ্জায় সিটিয়ে যায়। দু হাতে মুখ ঢেকে ফেলতেই তানভীর হো হো করে হেসে উঠে। লজ্জানত আবৃত মুখটা টেনে বুকে জড়িয়ে নেয়। ফিসফিসিয়ে বলে,
‘” আমি আমার শ্বাশুড়ীর লাবি মা’র।”

খান বাড়িতে আড্ডা বসেছে। সোহানা ইসলামের বাপের বাড়ী থেকে সবাই এসেছে। লবিবার ফ্যামিলিকেও দাওয়াত করা হয়েছে। কুটুম বাড়িতে প্রথম দাওয়াত। না গেলে খারাপ দেখা যায়। সবাই এসেছে। শুধু আসেনি লাবিবা। তাকে নিয়ে আসা হয়নি। বাড়ির বউ যেদিন তুলে আনবে সেদিনই শ্বশুরবাড়িতে পা রাখতে পারবে। ছোট ছোট কাজিন রা যখন সেজেগুজে দৌড়াদৌড়ি করেছে কখন বেরোবে সেই ফুর্তিতে তখন লাবিবার চোখ দুটো ছলছল করেছে। একেতো কোথাও নিয়ে যায়না। ফ্যামিলির সাথে তাও এদিক সেদিক জেদ ধরে যেতে পারে। আর আজ পুরো গোষ্টী সোদ্দা যাচ্ছে আর লাবিবা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে। জেদ ধরেও কাজ হবেনা। এমনিতেই মনটা খারাপ আবার ইসমাইলের মুখোমুখি হতেই মেজাজ টাও খারাপ হয়ে যায়। সব দোষ এই লোকটার। মেয়ে বেশী হয়েছিলো তাই দুই পাহাড়ের মাঝে ঝুলিয়ে দিয়েছে। ঝুলছে তো ঝুলছেই কোন মাটিতেই পা আটকাতে পারছেনা। তার উপর একমাত্র জামাইটাকে কিভাবে বশ করবে সেই চিন্তা ! চিন্তায় চিন্তায় চুল সব উঠে গেলো। কোন কিছুতেই শান্তি পায়না। কি লাভ হলো তার বিয়েটা দিয়ে? সেইতো নিজের ঘরেই পালতে হচ্ছে। লাবিবা বকবক করতে করতে বেডরুমে গিয়ে দরজা দিল। বই বের করে জোর করে পড়তে লাগলো। একদিন সেও বড় হবে। তারপর পুরো গোষ্টীর দায়িত্ব নিবে। তখন ডেকে ডেকে বলবে,
” আমি তোমাদের কাছে বেশী হলেও তোমরা কোনদিন আমার কাছে বেশী হবেনা।”

তখন তাদের মুখটা দেখার মতো হবে। লাবিবা পারলো না দরজা দিয়ে বেশিক্ষন থাকতে। উড়ু উড়ু মন নিয়ে চলে এলো ছাদে। কর্ণারে দাড়িয়ে দেখতে লাগলো তার বাপ চাচার গোষ্টী কি করে ! দুইটা হাইচ নেওয়া হয়েছে। এলাকার গণ্যমান্য লোক ও কিছু জন যাচ্ছে। লাবিবা গাড়ির পেছন দিকে তাকালো। ছোট কাকা ঝুড়ি ভর্তি ফল তুলছে গাড়িতে। মেজো কাকী মেজো কাকাকে গলা ফাটিয়ে ডাকছে,
” এই বোয়াল মাছ গুলো কোন গাড়িতে রাখবে?”

এলাহি কাণ্ড শুরু হয়েছে। লাবিবা দোলনায় বসে চুপচাপ দোল খেতে লাগলো। নীচে ওকে ডাকা হলেও গেলো না। অগত্যা বাড়ির চাবি গুলো এসে তাকে ছাদেই দিয়ে যেতে হলো।

খান বাড়িতে আপ্যায়নের ত্রুটি রাখছে না কেউ। ফিরোজ খান আজ দুপুর বেলায় বাড়িতে। নতুন আত্বীয়দের নিজে দাঁড়িয়ে খাওয়া দাওয়ার তদারকি করছে। তানভীর ছিলোনা বাড়িতে। এসেই ড্রয়িংরুমে সবাইকে দেখে মামার পাশে এসে বসে। সঙ্গ দেয় তাদের সাথে।‌ছোট ছোট শালা শালীকে হাজার টাকার নোট বের করে দেয় চকলেট খাওয়ার জন্য। মামী জানতে চায়,
“আমাদের বউমা কেমন তানভীর? ঠিকঠাক যোগাযোগ রাখছো তো?”

লাবিবার আলাপ উঠতেই তানভীর আড়চোখে মামার দিক তাকায়। খইরুল ইসলামের ঠোঁটে চাপা হাসি। তানভীর কি বলবে? উত্তর দিতে গিয়ে ‘ মামী ‘ বলে জিহ্বা গুটিয়ে ফেলে। তানভীরের অবস্থা দেখে খইরুল ইসলাম আর নিতু ইসলাম হো হো করে হেঁসে উঠে। ইতিমধ্যে খইরুল ইসলাম তার প্রিয় ভাগিনা আর ভাগিনা বউয়ের কান্ড সম্পর্কে সবাইকে অবগত করেছে। সেই রেশ ধরতেই মামী প্রশ্নটা করে। একটু যদি লজ্জা দেওয়া যায় এবার তানভীর কে। তানভীর মাথা নাড়িয়ে ফিরোজ খানের চোখে চোখ রেখেই হেসে ফেলে। ফিরোজ খান ডেকে উঠে সোহানা ইসলাম কে। লজ্জাহীন তানভীর ও যেন লজ্জা কি জিনিস তা একটু ফিল করে। মামী আবার জিজ্ঞেস করতেই রয়ে সয়ে মাথা নিচু করে উত্তর করে,
” এইতো মামী আল্লাহ তাআলা আমার জীবনে দিলো। ভালোই। আলহামদুলিল্লাহ। ”

ফিরোজ খানের গর্বে বুক ফুলে উঠে। সোহানাকে পাশে বসিয়ে বলে,
” বুঝলে সোহানা! ছেলেরা যে আমার মান রাখবেনা সে আমার আগেই জানা ছিলো। ভাগ্য করে এইতো আল্লাহ তায়ালা আমার জীবনে দিলো এমন পুত্রবধূ। ভালোই আলহামদুলিল্লাহ। ”

তানভীর মৃদু স্বরে রাগ দেখিয়ে বলে,”পাপা!”

আর এক মুহূর্ত সেখানে নয়। এতো দিন যা পারেনি আজ বিয়ে করাতে তারা সেটাই পারছে। ভুল কথা। বিয়ে করার পরেও পারেনি। লাবিবার পাগলামিতে সম্ভব হয়েছে। মেয়েটা ভাঙ্গিয়ে দিলো তানভীর কে একেবারে।

ঘড়ির কাঁটা সাড়ে সাতটার ঘরে। এখনো ফেরার নাম নেই কারো। সাবিনা ফোন দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে ডিনার সেরে তারপর আসবে। পুরো বাড়িতে লাবিবা একা খারাপ লাগছে। গেট লক করে লাবিবা চাদর গায়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে। পিচঢালা রাস্তায় পা চালিয়ে নিস্তব্দ রাতের গুণগুণ আওয়াজ ছড়ায় কোমল কন্ঠে। এক মনে গান গাইতে থাকে। এমন আজ প্রথম নয়। প্রায়ই লাবিবা বেরিয়ে পড়ে রাতের বেলায় সবার আড়ালে। ছাদ থেকে নামার উল্টো দিকে একটা মই লাগানো আছে। সেটাই লাবিবার কাজটা করে দেয়। কখন বেরোয় কখন ঢুকে কেউ জানেনা। সাথে ফোনটা শুধু এনেছে। এটাও আনতো না। সময় দেখার জন্যই এনেছে। লাবিবা ইচ্ছে করেই আজ উত্তরের রাস্তায় বাঁক নিলো। এদিক দিয়ে এক কিলো গেলেই নদী। পানি কম বালু চর বেশী। নদীর উপর বাঁশ কাঠে তৈরী ব্রিজ। দুটো টোটো একসাথে যেতে পারে। সন্ধ্যার পর এদিকটায় লোকাল মানুষ জন ব্যতীত কারো আনাগুনা নেই। তবে লাবিবার পদচারণ ঠিক ই পরে।যে জায়গায় সবাই বাধ্য সেখানেই লাবিবা খেয়াল খুশি মতো অবাধ্য। হাঁটতে হাঁটতে লাবিবা সেই ব্রিজের দেখা পায়। এক হাত সমান বিদ্যুৎ এর লাইটগুলোর আলো পড়েছে নদীর পানির গায়। একপাশে ব্রিজ আরেকপাশে আলোর প্রতিবিম্ব সচ্ছ টলমল করছে জল। কী সুন্দর! লাবিবা ব্রিজের মাঝ বরাবর গিয়ে দাঁড়ায়। বাঁশের উপর হাত রেখে নদীর পানিতে দৃষ্টি ফেলে। জায়গাটা ভীষণ প্রিয়। লাবিবার এরকম বেপারোয়া স্বভাবের জন্য সে নিজেই নিজেকে ধন্যবাদ দেয়। সে যদি এমন না হতো রাতের সৌন্দর্য গুলো মিস করে যেতো না? সময়ের সাথে সাথে রাত গভীর হতে থাকে। লাবিবা ধরে নিয়েছে এগারোটা বারোটার আগে কেউ ফিরবে না। ততোক্ষন তো এখানে থাকা যাবে। কেউ এলে নিশ্চয় ফোন দিবে। তারপর একটা কিছু বলে ঠিকই বুঝিয়ে দেওয়া যাবে। ফোন এলো এগারোটা নাগাদ। লাবিবা তখনো ব্রিজের উপরে। না। ফোনটা বাসার কেউ দেয়নি। দিয়েছে তানভীর খান। আচ্ছা তানভীর খান কি তার বাসার কেউ না?একটু ভাবে লাবিবা। উত্তর পায়না। বাসার মানুষ সব সময় থাকে। তানভীর খান কি আদৌ থাকবে? লাবিবা ফোন রিসিভ করে। তানভীরের অস্থির কন্ঠ কানে আসে।
” কোথায় তুমি? ”

” আছি।”

” কোথায় আছো?”

” ব্রক্ষপুত্রে। ”

ফোন কেটে যায়। লাবিবা উদাস মনে আবার নদীর জলে দৃষ্টিপাত করে। মুহুর্তেই দম বন্ধ হয়ে আসে। লাবিবা জোরে জোরে শ্বাস ফেলে। চেপে ধরে হাতের নিচের বাঁশ। বিরবির করে, ” তানভীর খান! ”

তানভীর খানকে লাবিবার বেশ বোঝা বাকি আছে। বান্ধবীদের সাথে বিষয়টা আলোচনাও করেছে। বান্ধবীরা যে উপায় সাজেস্ট করেছে সেসব ট্রাই করতে লাবিবার আরো মনবল জোগাড় করতে হবে। নিজের সবটুকু দিয়ে হলেও তানভীরের মনে জায়গা করে নিতে হবে। তানভীর কি চায়? সেটাই তো জানে না। সব পুরুষের চাওয়া পাওয়া কে কি তানভীরের উপর বসানো ঠিক হবে? আগে প্রয়োজন সময় কাটানো। সেটা তো লাবিবা যথেষ্ট চেষ্টা করে। কিন্তু ধরতে কেনো পারে না তানভীরের দুর্বলতাকে? নির্ভীকচিত্তে রয় সদা। তার হৃদয়ে কিছুই কি নেই মন্দা? সেটাই তো জানতে চায় লাবিবা।

বলিষ্ঠ দুটো হাত পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে লাবিবাকে। এতো বছর এখানে এসেছে কখনো চেনা মানুষের মুখটাও দেখেনি সেখানে আজ এমন ঘটনাতে আচমকা লাবিবা চিৎকার করে উঠে। কিন্তু সেখানেই থেমে যায়। কারণ চিৎকারে লাবিবাকে পেছন থেকে চাপ দেওয়া হয়েছে। লাবিবা হাত দুটোর দিকে তাকায়। অতি চেনা হাত দুটো দেখেই লাবিবা স্বস্থি পায়। এই হাত দুটো যদি হাজারটা হাতের মাঝেও রাখা হয় তবুও সে ঠিকই চিনে নিতে পারবে। তানভীরকে কিছু বলার আগেই লাবিবা বলে উঠে ” প্লিজ বকবেন না।”

তানভীর চোখ মুখ খিচিয়ে মাথা নাড়ায়। এই মেয়েটা কিভাবে বুঝে যায় ভেবে পায়না। নরম সুরে বলে,
” আমি না হয় বকলাম না। কিন্তু তুমি যে এতোদূর একা একা চলে এসেছো এটাতো একদমই ঠিক না।”

“এখানে আসাটা আমার নতুন না। কিছুই হয় না।”

“হতে কতক্ষণ? বড় হয়েছো ছেলেমানুষী করো না।”

“আগে আব্বু কথাটা বলতো আজ আপনিও বললেন।”

“সকল গার্ডিয়ানদের একটা দায়িত্ব থাকে। আমার দায়িত্ব তোমাকে সঠিক পথ দেখিয়ে আগলে রাখা।”

” সেটার জন্য তো কাউকে বেতনভুক্ত করে দিলেই হতো। বিয়ে দেওয়ার কি প্রয়োজন ছিলো?”

“ছিলো না? আমার মতো আর কেউ আগলে রাখতো তোমায়?”

“জানিনা।”

কিছু সময় ধারাবাহিত হয় নিরবতা। তানভীর লাবিবার পিঠ নিজ বুকে ঠেকায়। হাতের মুঠোয় হাত নিয়ে দেখে প্রচুর ঠান্ডা। অনেকক্ষন থেকেই এখানে আছে বুঝতে পারে।
” তোমার হাত অনেক ঠান্ডা! উষ্ণতা প্রয়োজন। বাসায় চলো। ”

“আপনি আজ থাকবেন? ”

“তুমি বলো।”

লাবিবা ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায়। চোখে চোখ রেখে অদ্ভুত হাসে। এই হাসির মানে তানভীর বুঝে। লাবিবাকে আরেকটু জড়িয়ে ধরে। নাকের উপর ছোট্ট একটা চুমু দেয়।
” আর্জি পেশ করা হোক।”

তানভীরের আস্কারায় লাবিবা দুষ্টু হাসে। মুখ বাড়িয়ে বলে,
” আমি তোমার সাথে এই রাত কাটাতে চাই
মধ্যরাতের গা হিম করা ঠান্ডায় জমতে চাই।
আলিঙ্গনে মন আকাশে ভাসতে চাই।
অপেক্ষা করুক ভোরের আলো।
সেই আলোতে তুমি আমি সকল আঁধার কাটাবো। ”

“মনে তবে এই ছিলো?”

“আমি বহুবার এসেছি নদীর উপর সূর্যোদয় দেখার জন্য।
সুযোগ হয়নি সঙ্গীর জন্য।
আজ আমার সঙ্গী আমার সাথে।
তাই দেখাটা করেই যেতে চাই ভোরের সূর্যের সাথে।”

সায় পেয়েই লাবিবা ঘুরে তানভীরের গলা জড়িয়ে ধরলো। গভীর রাতে একে অন্যের আলিঙ্গনে শুধু শ্বাস প্রস্বাসের শব্দ। তানভীর কি ভুলটা করেছে এখন বুঝতে পেরেছে। বউয়ের ইচ্ছা পূরণে এখন বেশ ঠান্ডা লাগছে। পিঠের দিকে বরফের মতো হয়ে গেছে। বুকের উপর বউ উষ্ণতা ছড়াচ্ছে। তানভীর জ্যাকেটের চেইন খুলে লাবিবাকে ঢুকিয়ে নিয়েছে। একটু পর পর জিজ্ঞেস করছে, “তোমার কি ঠান্ডা লাগছে?”

লাবিবা হাসে। গলা আরো টাইট করে জড়িয়ে ধরে। তার বেশ ভালো লাগছে। ঠান্ডা একটুও লাগছে না। তানভীর তাকে দু পায়ের ভাজে নিয়ে পুরো চাদর দিয়ে ঢেকে নিয়েছে। রাত্রি শেষ প্রহরে তানভীর বলে,
” আরও অনেক সময় আছে। চলো এখন যাই বাসায়।”

“আর একটু। ধৈর্য্য ভাঙবেননা। ”

“এগুলো কি ধরনের পাগলামি লাবিবা?”

“আমি যে পাগলী আপনি জানেন না?”

” এসবের মানে কি?”

“সহজ! আপনি আজ কোথাও যাচ্ছেন না। ”

“লাবিবা!”

“একটু চুপ করুন না! শুক্রবার তো। আজ আপনি আমাকে ছেড়ে কোথাও যাচ্ছেন না।”

তানভীর লাবিবাকে ছাড়িয়ে নিতে চায়। কিন্তু লাবিবা তো ছাড়বে না। আরো চেপে গিয়ে মুখ ঢুবায় তানভীরের গলায়। তানভীর হুসিয়ার করে,
” লাবিবা! মুখ সরাও। আমি কিন্তু মোটেও পজিটিভ ফিল পাচ্ছি না। প্লিজ! নিজের সর্বনাশ ঢেকে এনো না।”

” সর্বনাশ কাকে বলে স্যার?আমি তো সর্বনাশ চিনি না।”

তানভীর শক্ত হয়ে থাকে। অন্যদিকে মুখ করে নিজেকে সামলাতে ব্যস্ত হয়ে যায়। লাবিবার উপর মেজাজ খারাপ হচ্ছে। একেতো সারাটা রাত লেপ্টে ছিলো কোন মতে নিজেকে কন্ট্রোল করেছে আর এখন পুরো নিগেটিভ ফিল দিচ্ছে। এতোটা জ্বালায় কেনো মেয়েটা?

চলবে ___

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here