ভালোবাসার_কাব্য_গাঁথবো (২১)

0
647

#ভালোবাসার_কাব্য_গাঁথবো

(২১)
” প্রপোজ করুন।”

” মানে?”

” এই ঘাসফুল গুলো দিয়ে আমাকে প্রপোজ করুন। আগে হাটু মুড়ে বসুন। তারপর কিছু একটা বলে প্রপোজ করুন। সুন্দর কথা বলবেন। ”

” পাগল তুমি? এই রাস্তার মাঝে?”

” হুম। রাস্তার মাঝে প্রেমিকাকে প্রপোজ! কেমন একটা পাগল প্রেম প্রেম ভাইভ আসে না? আমি হবো সেই পাগল প্রেমিকের পাগলী প্রেমিকা। ”

” তুমি ভীষণ ফিল্মি লাবিবা। সারাদিন মাথায় এসব ই ঘুরে তাহলে পড়াশোনাটা হয় কখন? ”

” একটা সত্যি কথা বলি স্যার?”

” বলো। ”

” আমার না সত্যি পড়তে মন চাইছেনা। আই মিন পারছিনা। যখনি পড়তে যাই দুই লাইন পড়ার মাঝেই মনে পড়ে যায় আমি এখন বিবাহিতা। আমার একজন অস্বামী রয়েছে। নিরামিষ! যে প্রেম কি জিনিস বুঝেই না। ভীষণ দুঃখ লাগে। আর পড়তে পারিনা। প্লিজ স্যার আমার বয়ফ্রেন্ড হয়ে যান আমি প্রমিজ মন দিয়ে পড়াশুনা করবো। একদমি গাফিলতি করবো না। ”

“আমি!আমি তোমার কি হই? অস্বামী! তাইনা?”

” আপনি যে আমার স্বামী এটা তো স্বীকার ই করেননা। তাহলে কি হলো? স্বামী নামের অস্বামী তাইনা?”

” আমি কখন স্বীকার করলাম না? ”

” করেন?তাহলে চলেন আমি সবাইকে জানাবো আপনি আপনি আমার হাজব্যান্ড। আপনাকে কিছু করতে হবেনা। শুধু মাথাটা নাড়িয়ে যাবেন। কি পারবেন না?”

” তারপর তুমি কোথায় থাকবে একবার ভেবে দেখেছো ময়নার মা? ”

“কোথায়?”

” ইসমাইল আব্বুর বাড়ির ভেতর। বাইরের আলো বাতাস আর দেখতে হবেনা। ”

” আপনি আমায় বন্ধি করে রাখবেন? ”

” না। তুমি নিজেই বন্ধি হয়ে যাবে। আমাকে কিছুই করতে হবেনা। ”

” আচ্ছা সমাজ কেন একজন টিচার স্টুডেন্টকে এক হতে দেওয়া পছন্দ করেনা? টিচারদেরও তো বিয়ে করতে হবে। নিজ কলেজের না হলেও অন্য কলেজের হলেও ওরাও তো স্টুডেন্টই থাকবে।”

“সেটা সমাজের প্রব্লেম। আমার দেখার বিষয় না।”

” তাহলে কেনো আমাকে আপনি মর্যাদা দিতে চান না? আমি হয়তো আজ আপনার যোগ্য না। কিন্তু একদিন কি হতে পারবোনা? আমি কি দেখতে একটুও ভালো না?”

বড্ড আবেগের সাথে বলেই লাবিবা হুটহাট কেঁদে দেয়। তানভীর লাবিবার কান্নায় থতমত খেয়ে যায়। হাত ধরে টেনে নিজের পাশে এনে দাঁড় করায়। মাথায় হাত বুলায়।‌ থুতনি উঁচিয়ে মুখোমুখি করে।
” তাকাও।দেখি তাকাও আমার দিকে।”

লাবিবা অশ্রু চোখে তাকায়। তানভীর মুচকি হেসে চোখ মুছে দেয়।
” বলেছিনা এভাবে কখনো কান্না কাটি করে মুখ ফুলাবেনা। তোমার বিদ্ধস্ত মুখ আমার একদমি দেখতে ভালো লাগে না।”

” আপনার কথাই কি চলবে?”

” তাহলে কার কথায় চলবে মেডাম? কার কথা শুনতে চান আপনি? ”

” নিজের কথা।”

“আপনি আর আমি কি আলাদা?”

” একটু তো প্রেমই করেন না। আবার মিষ্টি মিষ্টি ভুজুং ভাজুং কথা!”

” করতেই হবে?”

” হুম। ”

” তার আগে মনে রেখো আমি কিন্তু তোমাদের বয়স অনেক আগেই পাস করে আসছি। আবেগী প্রেম টেম আমার কাছে এখন ফিকে হয়ে গেছে। আমি বাস্তববাদী। সম্পত্তির দলিলও আমার হাতে। দু তিন বছর ছাড় দিতে চেয়েছিলাম সেটা তো আর হতে দিচ্ছো না। আমি তোমাদের জেনারেশনের মতো প্রেম করতে পারবোনা। তার উপর তোমার সামনে এলেই আমার মনে পড়বে আমি তোমার হাজব্যান্ড কোন প্রেমিক যুবক নই। ”

” আমার মনে থাকবে। আপনি নাহয় আপনার মতোই প্রেম করবেন। ”

“পা কিন্তু তুমিই প্রথম বাড়াচ্ছো। আমি কিন্তু ফোর্স করছি না। ”

” এভাবেও কি আপনি আমাকে কখনো ভালোবাসবেন না? অভ্যাস থেকেও তো ভালোবাসা জন্মে। নিজ জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকলে তো আর কাছাকাছি আসা যাবে না। আপনিও তো পা বাড়াবেন না। ”

“কাছাকাছি আসতে চাও আমার? ”

” হুম। যতোটা কাছে এলে আর কখ্খোনো দূরে সরে যাওয়া যায় না। ”

” ভালোবাসো?”

” আপনি কোনদিন বাসবেন ভালো আমায়? ”

প্রশ্নের পৃষ্ঠে প্রশ্ন। উত্তরটা ভীষণ দিতে ইচ্ছে করছে তানভীরের। লাবিবাকে বিচক্ষন ই মনে হচ্ছে। এই মেয়ে পিছপা হবার না। তাই নির্ধিধায় উত্তর জানিয়ে দেয়।
” তোমাকে আমার ভালো লাগে লাবিবা । ভীষণ ভালো লাগে।”

” শুধু ভালো লাগায় ভালো থাকার মানুষ তো আপনি না।সত্যি করে বলুন না কেন বিয়ে করেছেন আমায়?”

” এখন অব্দি ভালো লাগার উর্ধ্বে রয়েছো তুমি। বিয়ে যেহেতু করতেই হবে তাই বিয়ে করে নিলাম।”

” এই ভালো লাগার পতন ঘটতে কতক্ষন?”

” যতক্ষন আমি না চাইছি ঠিক ততক্ষন।”

লাবিবার চোখ আবারও ভরে আসে। কিন্তু তানভীর তো দ্বিতীয় বার সেই মুখ অবলোকন করবেনা। দীর্ঘ শ্বাসের সাথে বলে,
” হাহ! কি আর করার? চল। সোজা দাঁড়াও। প্রপোজ করি তোমাকে। ”

লাবিবাকে নিয়ে ফাঁকা রাস্তার মাঝ বরাবর দাঁড়ায়। আশেপাশে তাকিয়ে দেখে নেয় কোন গাড়ি আসছে কিনা। সাইড দিয়ে কিছুক্ষণ পর পর দু একটা বাইক চলে যায়। তানভীর ভাবতে থাকে কি বলে প্রপোজ করা যায় । আর লাবিবা তাকিয়ে থাকে তানভীরের দিকে। জল গড়িয়ে পড়ে দু গালের উপরে। তানভীর লাবিবার হাত ছেড়ে হাঁটু গেড়ে বসে। ঘাসফুল গুলো বাম হাত থেকে ডান হাতের মুঠোয় পুরে। লাবিবার দিকে এগিয়ে দেয়। দম ছেড়ে বলে,
“আমি ভীষণ টিপটাপ গোছানো প্রাণহীন একটা জীবনের মানুষ। আমার জীবনটা অগোছালো করে প্রাণ ফিরিয়ে এনে দিবে কি তুমি? আমার হাতে হাত রেখে প্রিয় শ্বাস ফেলবে লাবি পাখি?”

তানভীরের আবেগ মেশানো কাতর স্বরের বাক্য গুলো অন্তস্থ করে ফুল গুলো হাতে নিয়ে নেয় লাবিবা। তানভীরের হাতের উপর হাত রেখে ছোট্ট আওয়াজ করে, ‘ উঠুন ‌’। তানভীর মৃদু হাসে। উঠে দাঁড়ায় লাবিবার সামনে। লাবিবা অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে আছে। থুতনি ধরে মুখ ঘুরিয়ে মুখোমুখি হয় তানভীর। ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটিয়ে জিজ্ঞেস করে,
” নাউ য়্যা য়্যু হ্যাপি? ”

লাবিবা মাথা নাড়ায়। সে হ্যাপি। তানভীর খানের জীবনে নিজের জায়গাটা যে বেশ নড়বড়ে সেটা খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারছে। বুঝ হয়েছে থেকে যে মেয়েটা সব সময় ভাবতো তার জন্য এক রাজকুমার আসবে আর পৃথিবীর যে কোনো মূল্যে তাকে তুলে নিয়ে যাবে সমস্ত সুখ পায়ের কাছে এনে রাখবে আজ সেই মেয়েটাই ভীষণ ইনসিকিউর ফিল করছে। এভাবে সে কখনোই চায়নি। তানভীর খান তার কাছে রুপকথার ই এক রাজপুত্র। কিন্তু সেই রাজা তাকে ভালোবাসে বলেনি। একটা পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়েছে বিয়ে করতে। সেই বিয়ের কোনো পরবর্তী পদক্ষেপ নেই। যে আছে যার মতো। যে কোনো মুহূর্তে দূরত্বটুকু আরো প্রসস্ত হতে পারে। সবটাই তানভীরের হাতে। তানভীরকে লাবিবা কিভাবে বাঁধবে? লাবিবা কি তানভীর কে চেয়েছিল ওর? চায়নি তো। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা তাঁকে খুশি হয়ে এমন মূল্যবান উপহার টা দিয়ে দিলো। লাবিবা কি পারবে ভালোবেসে যত্নে উপহার টি ধরে রাখতে? নাকি কালিমা পড়বে নিজ গায়ে? আজ না চাক সময়ের অপেক্ষায় তো সকল দিওয়ানাকে পিছু হটিয়ে স্বামীর পথ পানেই চোখ রেখেছিল। দিন শেষে সুপুরুষের বুকের ফুল হয়ে ফোঁটার অপেক্ষায় ছিল। এখন যদি সেই সুপুরুষ কে পেয়েও কলির আকার ধারণ না করতে পারে ফুল হয়ে ফোঁটা সপ্ন তার এখানেই মরে যাবে। এই ধাক্কা সামলে উঠতে নাও পারে। চায়ও না ধাক্কা খেতে। তানভীর খানের প্রতি যে সে অতি মাত্রায় দুর্বল হয়ে পড়ছে এটা সে বেশ বুঝতে পারছে। তিন কবুলের স্বামী তার! কিভাবে তাকে ছাড়া থাকবে? লাবিবার খুব বলতে ইচ্ছে করে,
” আপনার কি আমার প্রতি একটুও মায়া হয়না স্যার? দেখুন আমি আপনার চিন্তায় শুকিয়ে গেছি। আমার গাল দুটো যদি শুকিয়ে যায় তাহলে শত কাদলেও তো আর ফোলো ফোলো হবে না। তখন আমি শুনবো কিভাবে তোমার বিদ্ধস্ত মুখ আমার একদমি দেখতে ভালো লাগে না বাক্যটা!”

কতটা কেয়ার জমে থাকে বাক্যটায় তা কি লাবিবা বুঝেনা? এই কেয়ার টুকু লাবিবার ভীষণ প্রিয়। প্রিয় জিনিস কখনো হারাতে হয়না। কিন্তু লাবিবা বলবেনা। আত্মসম্মান বলতেও কিছু একটা আছে। এমনিতেই ছেচড়ার মতো অনেক ভাবেই নিজেকে ছোট করেছে। আর করতে ইচ্ছে হয়না।

এক পা দুই পা করে ফাহাদের দিকে এগিয়ে আসে লাবিবা। ছেলেটা কয়েকদিন থেকে ই কথা বলার চেষ্টা করছে। কিন্তু পেরে উঠছেনা। কেউ না কেউ লাবিবার সাথে থাকেই। আজ কেউ নেই। লাবিবাই একটু আগেই কলেজ থেকে বেরিয়েছে। ফাহাদের সাথেই কথা বলতে। লাবিবার মনে হয়েছে ফাহাদের সাথে কথা বলা উচিত। সে কি বলতে চায় শুনা উচিত। তার কথা শুনেই তাকে বুঝিয়ে বলতে হবে যেনো আর এভাবে না আসে। নয়তো দেখা যাবে আব্বু ভাইয়ের কারো চোখে পড়বে তারপর আরো একটা ঝামেলা সৃষ্টি হবে। এমনিতেই তাদের উপর রেগে বোম হয়ে আছে।

ফাহাদ লাবিবাকে দেখেই প্রানবন্ত হাসে। এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করে,
” কেমন আছো?”

” ক্যাম্পাসের বাইরে চলেন। ”

দুজনে বেরিয়ে দুটো বিশাল বিল্ডিং এর মাঝে গলিতে দাঁড়ায়। লাবিবা ঝাঁঝালো গলায় বলে,
” আপনি জানেন না আমার বিয়ে হয়ে গেছে? ছেচড়ার মতো এখনো কেনো পিছু লেগে আছেন?নাকি স্যারের হাতে সেদিনকার মতো আবার ঘাড় ধাক্কা খেতে ইচ্ছে করছে?”

” আই লাভ য়্যু লাবিবা। ”

ফাহাদের সোজা সাপ্টা উত্তর। লাবিবার রাগ হলেও চুপ থাকে। ভেবে পায়না এতো কিছুর পর কিভাবে এই কথাটা মুখ থেকে উচ্চারণ করতে পারে?
” আপনি আমাকে ভালোবাসলে কখনোই ঐভাবে চলে যেতে পারতেন না। ”

” আমি ভুল ছিলাম লাবিবা। তুমি পবিত্র আমার মনে রাখা উচিত ছিলো। ওসব পিক তো ইডিট করেও আজকাল করা যায়। আমার মাথাতে ছিল না। ”

” কিন্তু পিক গুলো তো এডিট না। সত্যি। ”

” আমাকে আর বোকা বানিও না লাবিবা। আমি তোমাকে ছাড়া কিছুই ভাবতে পারিনা। খেতে পারিনা, ঘুমাতে পারিনা, কাজে মন বসাতে পারিনা। আমি তোমাকে ভালোবাসি লাবিবা। আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না। ”

” মুখস্থ ডায়লগ। এসব কোনো ব্যপার না। বয়সের দোষ। একটা ভালো মেয়ে দেখে বিয়ে করে নেন। একটা রাত কাটতেই বলবেন লাবিবা কে? লাবিবাকে চিনিনা। ছেলে মানুষের ওসব আমার জানা আছে। আমি বিবাহিত। আমাকে ডিস্টার্ব করবেন না। ”

” আমি মানিনা। আমি তোমাকে ভালোবাসি। আমি তোমাকে চাই লাবিবা। সব কিছুর জন্য ক্ষমা করে দাও। আমার ফ্যামিলির কথা মনে রেখো না। প্লিজ। আমাকে ফিরিয়ে দিও না।”

” টাকা চান। টাকা দিতে পারবো। আমার হাজব্যান্ড এর অনেক টাকা। খালি হাতে ফেরত যাবেন না। আর আপনাদের কথা কিছু মনে রাখেনি। আপনারা যা করেছেন ঠিক করেছেন। আসলে আমি নিজেই আমার বিয়েটা ভেঙেছি। আপনাকে তো বলেছিলাম আমার বয়ফ্রেন্ড আছে। ”

” তাহলে তানভীর খানকে বিয়ে করলে কেন?”

” কারণ উনিই আমার বয়ফ্রেন্ড। ”

মিথ্যা কথাটা বলতে গলা আঁটকে যাচ্ছিল লাবিবার। কোনো মতে বলে দিল। পরক্ষনেই মনে পড়ল সত্যিই তো উনি বয়ফ্রেন্ড। প্রপোজ ও করেছে। আগে হোক বা পরে। তাহলে কিসের মিথ্যে? ঠোঁট এলিয়ে হাসলো লাবিবা। ফাহাদ মেনে নিতে পারলো না। শক্ত হয়ে বললো,
” আমি ঘাসে মুখ দিয়ে চলি না। তানভীর খানের ফিটনেস দেখে এক মাইল দূর থেকেও বলে দেওয়া যায় আর পিকের লোকটা তানভীর খান মোটেও না। ”

” পরকিয়া করছি।”

” কিহ?”

ফাহাদ হতভম্ব হয়ে যায়। কি বলছে লাবিবা?
” হ্যা। পরকিয়া। ছিহ! দেখুন তো কতো খারাপ মেয়ে আমি! খবরদার আমার হাজব্যান্ড কে কিন্তু মোটেও বলবেন না। ইটস্ সিক্রেট! তাইনা?”

ফাহাদ কাঁদো কাঁদো হয়ে যায়। লাবিবার সামনে হাঁটু গেঁড়ে বসে বলে,
” প্লিজ ! আমার সাথে আর হেয়ালি করো না। লাবিবা প্লিজ তুমি আমার কাছে ফিরে আসো। আমি কথা দিচ্ছি পৃথিবীর সব সুখ আমি তোমাকে দেবো। কারো কথা মানবোনা। ”

“কিন্তু তানভীর খান তো তার বউকে ছাড়বে না। অনেক ভালোবাসে কিনা!”

” মিথ্যার আশ্রয় আর কতো নিবে বলোতো? আমি ভালো করেই জানি উনি তোমাকে বউ হিসেবে স্বীকার করে না। তোমাদের মধ্যে কোনো গাঢ় সম্পর্ক নেই। তুমি ফুললি আনটাচড।”

” বিশ্বাস করুন আমার কথা। আমাদের মধ্যে ভালো বাসা বাসি হয়ে গেছে। একটুও মিথ্যা না।”

” কিছুই হয়নি। তুমি এখনও আগের মতোই আছো। প্লিজ আমার কাছে চলে আসো। আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না।”

” কিন্তু আমি যে তানভীর খান কে ছাড়া বাঁচবো না! আপনার কাছে গেলে পরকিয়া করতে দিবেন? তানভীর খানের সাথে পরকিয়া!”

” মাথা খারাপ তোমার? ঐরকম লো ক্যারেক্টারের ছেলে আমি না। আর তোমার ঐ তানভীর খান? তার কির্তী তো তুমি জানোই না। তাকে সপ্নে দেখা বাদ রাখো। সে তোমার যোগ্য না। নিজের ভাইয়ের বউ য়ের প্রতি যে খারাপ নজর ফেলে সে কখনোই তোমাকে ডিজার্ব করেনা।”

” কি বলছেন এসব আপনি?”

” বিশ্বাস না হলে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারো। তুমি তো দেখছি তোমার হাজব্যান্ড এর সম্পর্কে কিছুই জানো না। ”

ফাহাদের কথা শুনে লাবিবার মুখের হাসি উধাও হয়ে যায়। কালো ছায়া নেমে আসে মন আকাশে। সেটানেই বসে পড়ে মাথা নিচু করে। ফাহাদ ও দুঃখিত মুখ করে তাকায়। শান্তনা দেয়।
” দেখো লাবিবা তোমার হয়তো কষ্ট হচ্ছে কথাটা শুনে। কিন্তু এটা সত্যি। আমি মিথ্যা বলছিনা। ”

লাবিবা হাউ মাউ করে কেঁদে উঠে। নাকে টেনে বলে,
” এর জন্যই উনি আমাকে ভালোবাসেন না। আমি এখন কি করবো? কিভাবে উনাকে ধরে রাখবো? ঐ ফাহাদের বাচ্চা ফাহাদ! আমার উনি কে ধরে রাখার উপায় বলে দে না! ”

“লাবিবা প্লিজ তুমি কেঁদো না। ঐ শয়তান লোকটার কথা ভুলে যাও। ডিভোর্স দিয়ে দাও। আমরা দুজনে নতুন সংসার পাতবো। আমার কাছে চলে আসো লাবিবা। ”

“ঐ ফাহাইদ্দা যা তো তুই আমার চোখের সামনে থেকে যা। আমার খান সাহেব কে কিভাবে আমার কাছে রাখবো উপায় বলে দে না!”

লাবিবা উঠে দৌড় দেয়। ফাহাদও পিছনে দৌড়ায়। লাবিবার নাগাল পায় না। লাবিবা কলেজে ঢুকেই তানভীর কে খুঁজতে থাকে। কোথাও পায়না। প্রায় দশ মিনিট খোঁজার পর দেখতে পায়। তানভীর টুপি মাথায়। মসজিদ থেকে যুহর আদায় শেষে বেরিয়ে এসেছে। লাবিবা দিক বেদিক না ভেবেই দৌড়ে গিয়ে তানভীরের বুকে ঝাপায়। আষ্টেপৃষ্ঠে আঁকড়ে ধরে কানের কাছে বিরবির করে,
” খান সাহেব! বউ ই তো হই। একটু জড়িয়ে ধরে থাকি। প্লিজ বকবেন না।”

চলবে ___

কতদিন পর গল্প দিলাম ! সুন্দর সুন্দর মন ভালো করা কমেন্ট করবা 🥱

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here