ভালোবাসার_কাব্য_গাঁথবো (৭)

0
607

#ভালোবাসার_কাব্য_গাঁথবো

(৭)
লাবিবার দিন কাটে হতাশায়। মেয়েটা আজ ছাদ ছেড়ে নিচে এলো না। কিচেনেও ঢুকলো না। খেলোও না। ইসমাইল রাতে বাড়ি ফেরার সময় হাতে করে মলাই এনেছে। চিনি দিয়ে মলাই লাবিবার খুব ফেভারিট। সাবিনা বাটিতে করে মলাই নিয়ে রুমে এলো। লাবিবাকে পেলো না। বারান্দাতেও নেই। ছুটলো ছাদের দিকে। চুল গুলো ছেড়ে দিয়ে দোলনায় শুয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। কপালে তাঁর চিন্তার ভাজ। এতো কিসের চিন্তা! সাবিনা ডাকে,
” এভাবে শুয়ে আছিস কেন? বলেছিনা রাতের বেলা চুল ছেড়ে শুয়ে থাকবিনা? মুখ টাও শুকিয়ে গেছে। সারাদিন খেতে দেখিনি। কি হয়েছে মা? ”

লাবিবা উঠে বসে। চুলগুলো কয়েকটা চুল দিয়েই মুড়িয়ে উপুড় করে ঝুটি বাঁধে। বাটিটা হাতে নিয়ে চামচে তুলে মুখে দেয়। সাবিনা যায় না। মোড়ার উপরে বইগুলো গুছিয়ে রাখে। মেঝেতে খাতা কলম পড়ে আছে সেসব তুলে এনে ঠিক করে রাখে। লাবিবা গম্ভীর স্বরে ডাকে।
” আম্মু! বস।”

তারপর কিছুক্ষণ নিরবতা। ধীরে সয়ে বলতে থাকে,
” বিয়ের পরের জীবন আর আগের জীবন অনেক পার্থক্য। কখনোই এক হয়না। আমি যে অলস! যে রকম মেয়ে! বিয়ে হলে রান্নাঘরে না গেলেও মাঝে মাঝে হাজবেন্ডের মন রক্ষার্থে ঠিক ই যেতে ইচ্ছে করবে। আমি কাউকে ফোন দেই না। বিয়ের পর শ্বাশুড়ি কে, শ্বশুড়কে,ননদ ননদাই, ভাসুর, জাল, খালা শ্বশুড় শ্বাশুড়ি, মামা শ্বশুর শ্বাশুড়ি, কাজিন দেবর ননদ প্রত্যেকের সাথে কথা বলতে হবে। সবার সাথে প্রতিদিন না বললেও নিজের শ্বশুড় বাড়িতে ঠিকই সবার সাথে কথা বলতে হবে। নয়তো কথা শুনাবে। আমি যে এ বাড়িতে দিনের পর দিন পড়ে থাকবো এতে তারা বিরক্ত হবে। ওদের ও ইচ্ছে করবে শেষ বয়সে ছেলের বউয়ের কাঁধে পুরো সংসার ছেড়ে আরাম করতে। বাবা মায়ের দিকে তাকিয়ে হাজবেন্ড ও একদিন না একদিন ঠিকই প্রেশার দিবে। এইযে আম্মু তোমরা যে এতো চাপ সামলাও, এতো টাকা পয়সা খরচ করো, আমাকে পাবার জন্য যে এতো লোক পাগল! তোমার কি ধারণা বিয়ের পর আমাকে এখানে ফেলে রাখবে? পুরুষ মানুষের ধৈয্য আছে? নেই। চার পাঁচ মাস পর পর ছুটিতে আসবে সপ্তাহ খানেকের জন্য তারা মেনে নিবে? বউ ছাড়া একটুও চলবে না। ঠিকই তার কাছে নিয়ে রাখবে। নতুন একটা সংসার সামলাতে হবে। এদিকে আমার পড়া লেখা গোল্লায় যাবে। তুমিও তো সংসার করো। কতটুকু ফুসরত পাও আম্মু বলবে? ভালো ক্যারিয়ার গড়ার জন্য কি এইটুকুন সময় এনাফ! এইটুকু সময় ও কি আমি পাবো? মন চাইলেই ঘুরতে বেরোবে, আনুষাঙ্গিক আরো কতো কি! জীবনটা আমার সেভাবেই ভেসে যাবে।”

“এতো দূর চিন্তা করছো তুমি! সবকিছু নিগেটিভলি নিচ্ছো কেন? পজিটিভ ভাবে নাও। এসব বিষয়ে কথা বলেই এগুচ্ছি। সব শর্ত মেনেই তারা তোমাকে নিতে চাইছে। তুমি দুশ্চিন্তা করা বাদ দাও না।”

“আমি এখন থেকেই প্রিপারেশন নেওয়া শুরু করেছি। দুইটা বছর অন্তত সময় দাও। জবটা পেয়ে যাই। জব পেয়ে গেলে দেখবে কেউ কিছু বলার ফাঁক পাবে না।”

” সারাদিন না খেয়ে না পড়ে এসব উটকো চিন্তা নিয়ে আছো না? তুমি নাও তোমার প্রিপারেশন। কিসের দুইটা বছর দুইটা বছর করছো? বিয়ে হলে কি আর মানুষ জব করেনা? বিসিএস ক্যাডার হচ্ছেনা? আমরা তোমার ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করবো। এখনো বেঁচে আছি। নাকি তোমার কাছে মরে গেছি আমরা?”

সাবিনা বেশ রেগে যায়। লাবিবা মায়ের রাগের উপর অভিমান করে চোখের জল ফেলে। কাঁদতে কাঁদতেই বলে,
” বিয়ের পরে যদি বলে বাড়ি থেকে বেরোতে দিবে না তখন বেঁচে থেকেই কি করবে তোমরা? কয়টা লোক আছে সংসার করা বাদ দিয়ে বাপের বাড়ি রাখে বউকে? যদি এমন করে কি করবে তোমরা? নিজেও তো এক বাপের এক মেয়ে ছিলে। দাদু যেতে দিয়েছে ঘন ঘন তোমাকে বাপের বাড়িতে? মরনের কালে আমার নানু একটা মানুষ কেও পাশে পায়নি। দুই দিনের মরা লাশটা ঘর থেকে বের করতে হয়েছে। যখন দুইদিন খবর না পেয়ে হাউমাউ করে কেঁদে দাদুকে রাজি করিয়ে গিয়েছো তখন। আত্বীয় স্বজন পাশেই থাকা সত্ত্বেও একটা মানুষ ও বুড়ো মানুষটার খোঁজ নেই নি। পঁচা লাশ! কী দুর্গন্ধ! ভুলে গেছো? আমি ভূলি নি। ”

ধপ ধপ পা ফেলে ছাদ থেকে নেমে আসে লাবিবা। সাবিনার চোখ দুটো ছলছল করছে। চোখে ভেসে উঠেছে বাবার পচা মৃত লাশটা। তাদেরও কি একই অবস্থা হবে? মেয়েটা তা হতে দিবে? তাদের নিয়ে এতো চিন্তা! আল্লাহর কাছে দুহাত তুলে দোয়া করে। আঁচল পেতেই হু হু করে কেঁদে উঠে সাবিনা।

ফোন কলে ওপাশে ফাহাদ একের পর এক কথা বলছে। লাবিবা শুধু মাঝে মাঝে উত্তর দিচ্ছে হু হ্যা। তার মাথায় ঘুরছে অন্য চিন্তা। নাকিব কি বললো এসব? কতোটুকু সত্যি?রবিবারে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে যেতে হবে নাকিবের সাথে এক জায়গায়। পুরোটা সেখানেই জানা যাবে। এর আগে না। ফাহাদ বলে,
“এই যে মেডাম! কাল কিন্তু একটা লাল টুকটুকে শাড়ি পড়ে সামনে আসবেন। আমার ধারণা আপনাকে লাল শাড়িতে অসম্ভব সুন্দর লাগবে। সত্যি বলতে লাল টুকটুকে বউ রুপে আপনাকে ঠিক কতটুকু সুন্দর লাগবে তা দেখার জন্য মরিয়া হয়ে উঠছি আমি। তাই লাল শাড়িতে আপানাকে দেখার ইচ্ছা। যাকে বলে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো। হা হা হা।”

এতো প্রশংসনীয় প্রেমালাপে সব মেয়েই হয়তো একটু লজ্জা পাবে। লাবিবার লজ্জার ছিটেফোঁটাও পেলো না। বরং প্রশ্ন করে বসলো,
” আপনি বুঝি রুপের পুজারী? রুপের সাথে সংসার করবেন?”

“মেডাম এভাবে প্লিজ প্রশ্ন করবেন না। রুপের পূজারী সবাই। ছেলেরাও যেমন সুন্দরী মেয়ে চায় মেয়েরাও তেমন সুন্দর ছেলে চায়। প্রথমে দর্শন দারী পরে গুনবিচারী। সামনে দিয়ে একটা সুন্দরী মেয়ে গেলে সবাই ছেলে মেয়ে উভয়েই তাকাবে। মুগ্ধও হবে আবার কেউ কামনার চোখেও দেখবে। সুন্দর ছেলেরা গেলেও মেয়েরা দেখবেন ক্রাশ ক্রাশ বলে এক বান্ধবী আরেকবান্ধবীকে খোঁচা দিবে ইশারা করবে। অহংকার করছি না। আমাকে দেখে ও অনেক মেয়ে ক্রাশ নামক বাঁশ টা খায়। আমিও তাকাই তাঁদের দিকে। কেনো আপনি আমার দিকে তাকান নি? আমি কি সুন্দর না?”

“চোখ সবারই পরে। কিন্তু সবাই এক না। কেউ কেউ দৃষ্টি নতও করে নেয়। মুগ্ধ হলেও প্রকাশ করতে চায় না। মাথায় ভরসার হাত রাখে। ছুঁয়ে দিবে সেই মনোভাব পোষণ করে না।”

” কে এই সন্ন্যাস গো?”

“আপনি চিনেন না। আমি চিনি। ”

“তা ভালো। অন্যের কথা নাই বলি। এবার আমরা আমাদের কথা বলি।”

” আমাদের থেকে আমার কথা হলো আমি ঘুমাবো। আপনার টা বলে যান।”

” ওহো! রাত তো অনেক হলো। আমার এতো এক্সাইটিং লাগছে কি বলবো! কাল তোমার সাথে আবারো দেখা হবে। সময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছি । সরি। তুমি বলার অভ্যাস টা এখন থেকেই করে নিই। গুড নাইট।”

লাবিবা ফোন রেখে দেয়।‌ উদাস দৃষ্টিতে জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে থাকে। বেলী ফুলের কড়া স্মেল নাকে আসছে। আজ আর তার মন পুলকিত করতে পারে না। মনের উপর পাথর চাপা পড়েছে। ধীরে ধীরে তার সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

বাদ জুম্মা ফাহাদের বাড়ি থেকে লোক আসবে। রান্নাঘরে চলছে এলাহি কাণ্ড। পূর্ব পাড়া থেকে দূজন মহিলা আনা হয়েছে। তারাই কুটে বেছে দিচ্ছে। রান্না করছে লাবিবার দুই কাকি । ছোট কাকির হাতে রান্না বেশ হয়। কাজিন গুলোও আজ এ বাড়ি। ছাদে খেলছে। লাবিবা বার বার সাবধান করে দিয়েছে, খবরদার ফুল গাছ গুলো যেনো একটারো পাতা অব্দি না ছেড়া হয়। ওরা ছিড়বেও না। রাগ উঠলে লাবিবা যা মারে না! হাড্ডি গুড্ডি ওয়ালা ভাই বোনদের মেরে তার ই হাত ব্যথা হয়। তারপর হাউমাউ করে কাদে। তখন লাবিবাকেই তাঁদের সামলাতে হয়। বিনিময়ে গচ্চা যায় চিফিনের টাকা বাঁচানো চুরি করে কেনা চকলেট। উর্মিলা এসেছে সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠেই। সাবিনা ঢেকেছে। একটু সাজিয়ে গুজিয়ে দিবে। এযুগের সাজ কি আর সাবিনা ভালো সাজাতে পারে! কিন্তু লাবিবা বলে বসেছে, ” আমি সাজবো না। না সাজিয়ে যেভাবে রেডি করানো যায় করাও তোমরা।”

এই মেয়ে যে জেদ ধরে সেটাই বজায় রাখে। সাবিনা আর না পেরে কিচেনে ছুটে যায়। ছোট কাকিকে একাই রান্না করতে বলে মেজো কাকিকে লাবিবার কাছে পাঠায়। মেজো কাকি এসে লাবিবাকে দেখেই হৈ হৈ করে উঠে,
” একি! লাবি মা এখনো রেডি হওনি! কি অবস্থা! আমার নতুন বাবা এসে এভাবেই দেখবে নাকি? মুখ দেখাবো কিভাবে আমরা? আমরা থাকতে লাবি মাকে সাজানো হবে না এটা তো হতে পারে না। উঠো উঠো দেখি এদিকে আসো। কোন শাড়ি পড়বে?দাও আমি সিলেক্ট করে দিচ্ছি।”

লাবিবা আলমারির সামনে গিয়ে কাকির হাতের শাড়িগুলো দেখে। উর্মিলাকে জিজ্ঞেস করে,
” লালের অপজিট কি রে?”

“কালো।”

” আমাকে কালো শাড়ি পরা । আর একদমি সাজাবি না।”

দুজনে মিলে লাবিবাকে কালো একটা শাড়ি পরিয়ে দেয়। চুলগুলো আচড়িয়ে পেছনে ছড়িয়ে দেয়। থুতনি ধরে এদিক ওদিক মুখ ঘুরিয়ে দেখে।
” একটু মুখে পাউডার দিয়ে দাও তো উর্মিলা। একটু ব্লাসনও দিও। একেবারে সাঝ ছাড়া ভালো লাগছেনা।”

” লাল লিপস্টিক দিবি লাব্বু? সেই লাগবে। আয় একটা টিপ দিয়ে দিই।” উর্মিলা জিজ্ঞেস করে।

“একদম না। যা হয়েছে তাতেই এনাফ।”

” লিপবামটা লাগা অন্তত। একেবারে ফ্যাসফ্যাসা ঠোঁট কেমন লাগছে! ”

“বসার ঘর থেকে আওয়াজ আসছে না? লোকজন কি চলে আসছে?”

“গিয়ে দেখে আয় তো।”

উর্মিলা উকি দিয়ে দেখে আসে।
” হ্যা। সবাই চলে আসছে। একটা মহিলাও আসেনাই। সব ব্যাটা মানুষ। ”

মেজো কাকী লাবিবার মাথায় ঘোমটা টেনে দেয়। তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে যেতে যেতে বলে,
“চুপচাপ বসে থাকো। আমি বা ছোট এসে নিয়ে যাবে। রান্নাঘরে প্রচুর কাজ এখনো পড়ে আছে।”

উর্মিলা ফোন হাতে এগিয়ে আসে।
“আয় দোস্ত সেলফি নেই। তোকে একদম ব্ল্যাক ডাইমন্ড লাগছে। আজকে ঐ সাদা বান্দর টার কি অবস্থা হবে সেটাই ভাবছি আমি। ”

ফটাফট কয়েকটা সেলফি তুলে। লাবিবা নিরুত্তর। ভালো লাগছে না এসব। কেমন জানি অস্থির লাগছে। লাবিবার ডাক আসে। ছোট কাকী এসে তাড়া দেয়। শাড়িটা আরেকটু ঠিক করে কপাল অব্দি ঘোমটা টেনে লাবিবার কাঁধে হাত দিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে যায়। এতো পর পর পা ফেলতে লাবিবার বেশ অসুবিধা।একেতো পড়েছে শাড়ি। তার উপর প্রতিবন্ধী টাইপ হাটা। বিরক্তি ঠেলে আসে ভেতর থেকে।
” কাকী। আমি একাই হাঁটি। কি বাচ্চাদের মতো হাঁটি হাঁটি পা পা করছেন?”

” এভাবেই হাঁটতে হয়। নয়তো উনারা ভাববে মেয়ের পা বেশী চলে। ”

” তাহলে আমি কি তাঁদের সামনে সারাজীবন এভাবেই হাটঁবো?উনারা কি আগে কখনো আমাকে দেখেননি? যদি নাও দেখে থাকে নাটক কেনো করবো? আমার যে হাত পা মুখ বেশী চলে এটা লুকিয়ে যাবো?”

” ত্যাড়ামি করিস কেন?এটা নিয়ম রে মা।মাথা নিচু করে রাখ। খবরদার মাথা উঁচু করবিনা ।”

“আচ্ছা করবো না।চোখও কি নিচু করে রাখবো?”
কাকী চোখ রাঙায়। লাবিবা মাথা নিচু করে নেয়।

ড্রয়িং রুমে বিশাল আলোচনা হচ্ছে। এরই মাঝে লাবিবাকে নিয়ে হাজির হয়। আলোচনা থেমে দৃষ্টিবদ্ধ হয় লাবিবার দিকে। ইসমাইল উঠে লাবিবাকে হাত ধরে এনে বসায় নিজের পাশে। মাথা নিচু করে থাকায় লাবিবার দৃষ্টি পড়ে ফ্লোরের উপর ঠিক তার সামনের সোফায় বসা গোড়ালীর উপর প্যান্ট উঠানো লম্বা ফর্সা মাঝ বরাবর কালো লোমযুক্ত পুরুষালী পায়ের দিকে। চট করে লাবিবার চোখ উঠে যায় উপরের দিকে। দৃষ্টি আটকায় উরুর উপর সোজাসুজি রাখা পুরুষালী হাতের দিকে। কব্জির উপর রিচ ওয়াচের কাটা ঠিক দুইটার ঘরে। প্লাটিনামের উপর গ্ৰীন স্টোন টা আঙুলের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে। সপ্ন গুলো আজকাল বার বার ফিরে ফিরে আসছে। মন মস্তিষ্ক সে দিকেই টানছে। সাইড ইফেক্ট কি পড়েনি?অবশ্যই পড়েছে। দৃষ্টিগুলো আজকাল একজন ব্যক্তির উপরেই চরম বেহায়া হয়ে উঠেছে ।

চলবে ___

®লাবিবা তানহা এলিজা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here