দেওয়ানা_(আমার ভালোবাসা) #লিখিকাঃ_রিক্তা ইসলাল মায়া #পর্বঃ_১৪

1
1103

#দেওয়ানা_(আমার ভালোবাসা)
#লিখিকাঃ_রিক্তা ইসলাল মায়া
#পর্বঃ_১৪

🍁🍁🍁
ব্যস্ততা সময় পার করছে সবাই, সবার এত এত ব্যস্ততা মাঝে আমকে মনে রাখা মতো কাউকে দেখতে পারছি না,, তাই নিজেই নিজের সময় ব্যয় করার জন্য কাউকে খুঁজে চলছি যার সাথে নিজের ফ্রী সময়টা পার করতে পারবো,,, কিন্তুু আফসোস এখনো পর্যন্ত আমি আমার কাজে সফল হতে পারিনি কারণ যার কাছেই যায় না কেন সে আমাকে এটা সেটা বুঝিয়ে পাঠিয়ে দেয়,, আর সাথে বলে দেয়,,, মায়া চুপচাপ গিয়ে এক জায়গায় বসে থাক,,, হাতে কাজ অনেক,, এখন ডিস্টার্ব করিস না যাতো,,, সবার এমন কথা শুনে আমি খন্ন্য হলাম ভিষণ,,, তাই আমি সারা বাড়ি ঘুরঘুর করে বেড়াছি,,,,

🍁
নিহা আপুর আজ এনগেজমেন্ট তাই সবাই এত ব্যস্ত,,, আপুর এনগেজমেন্ট পার্টি বাড়িতে করা হচ্ছে কারণ দাদাজান এর বাড়িটি বড় আর রাজকীয় হওয়ায় সবাই এ সিদ্ধান্ত নেয়,,, পুড়ো বাড়ির চলছে ডেকোরেশন এর দুম,,, একেক জন একেক কাজে ব্যস্ত কয়েকজন ফুল লাগাচ্ছেন তো আবার কয়েকজন লাইটিং এর কাজ করছে, আবার কয়েকজন ফার্নিচার ঠিক করছেন মেহমানরা বসার জন্য,,, বাবুর্চিরা তাদের দলবল নিয়ে আছে তাদের কাজে ব্যস্ত বাহিরে,,,
দাদাজান আর ফুপা তাদের পযবেক্ষণ করে চলছে,,,,

আর বাড়ির ভিতরে দাদী আর ফুপি মেহমান দের আপয়্যন করে চলছে সার্ভেন্ড দিয়ে,,,, ফিহা মার্কেট এ গেছে নিজের কাজে,,, নিহা আপুর ফয়সাল ভাইয়া সাথে কথা বলছে,,, আর উনি (রিদ) কোথায় আছে আমি তা জানি না,,, বাকি রইল আয়ন ভাইয়া তাকে আমি খুঁজে চলছি কাল থেকে, কাল বিষয়টা পর থেকে আমি উনাকে দেখিনি,,,
আমার এ ফ্রী সময়টা পার করার একমাত্র জুগার হল আয়ন ভাইয়া,,, তাই আমি উনাকে মনে মনে বাতি লাগিয়ে খুঁজে চলছি সারা বাড়িতে,,, অবশেষে আমার আফসোস এর কৌটা টা পাশে ফেলে দৌড় দিলাম ভাইয়া উদ্দেশ্য যেখানে উনি কাজের লোকজনকে দেখিয়ে দিচ্ছেন কিভাবে ফুল লাগাতে হয়,,,,

আয়ন ভাইয়া বলে ডাক দিতেই, উনি চমকে পিছন ফিরে তাকায় আমার দিকে, এই মূহুর্তে আমি অপ্রতাশিত ব্যাক্তি বলে তিনি আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন, আমি উনার তাকানো দেখে মিষ্টি হেসে বলে উঠলাম,,,

—” ভাইয়া আমাকে নিবা তোমার সাথে কাজে, আমিও কাজ করবো তোমার সাথে,,,, সবাই ব্যস্ত যার যার কাজে, তাই আমি আজ তোমার সাথে থাকতে চাই,,,, নিবা আমাকে প্লিজ প্লিজ প্লিজজ ( ঠোঁট উলটিয়ে অসহায় ফেস করে)

আয়ন ভাইয়া আমার কথা শুনে সামনে দিকে তাকিয়ে বলে উঠে,,,

—-” মায়া ভিতরে যাও, তোমার কোনো কাজ করতে হবে না, আমাকে আমার মতো থাকতে দাও, প্লিজ যাও

আমি উনার সামনে গিয়ে বলি,,,

—-” সবাই এত এত কাজ করছে, আর তুমি আমাকে বেকার কমিটির প্রধান সভাপতি বানিয়ে দিচ্ছো ভাইয়া,,, আমি কাজ না করলে তো কি করবো বলো, কেউ আমার সাথে কথা বলছে নাতো, তুমি চল আমার সাথে তোমাকেও কাজ করতে হবে না, আমি যদি বেকার কমিটির প্রধান অতিথি হয়,,, তাহলে তুমিও হবে বেকার কমিটির বিশেষ অতিথি,,, দুজনই বেকার ভালো হবে না,,, (খুশি হয়ে)

উনি আমার দিকে দৃষ্টি স্থির করে বললো,,,

—” আমি তোমার সাথে কোথাও যাব না,,, আর না কিছু হতে চাই,,, তুমি তো তোমার মতোই মনমানি চল তাহলে আমার প্রয়োজন কেন তোমার,,,,

আমি জেদ করে উনার হাত ধরে বলে উঠি,,,

না তুমি যাবে আমার সাথে চলো,,, ভাইয়া তুমি কি আমার উপর রাগ করেছো কোন বিষয়ে এ,,, তাহলে এম সরি আর এমন হবে না, তবু তুমি রাগ করে থেকো না আমার সাথে,,, এখন চলনা আমরা কোথায় গিয়ে গল্প করি,,, (অসহায় ফেস করে)

আমার এমন কথায় উনি আহত সুরে বলে উঠেন,,,,

—-” মায়াপাখি রাগটাই তো করতে পারছি না তোমার সাথে, আর না পারছি দমে রাখতে নিজের মাঝে,,,, তাই না পারছি তোমাকে বুঝাতে,,, এই বোঝা- পড়ার অংকটা কিভাবে কষি বলতো,,,

ওনার এমন কথায় আমি মিষ্টি হেসে উনাকে টেনে নিয়ে যেতে যেতে বলি,,,,

—-” তুমি আমাকে যা বলবে তাই শুনব আমি,,, কেউ কিছু আমাকে বুঝালে আমি তা বুঝি, তুমি আমাকে যা বুঝাবে আমিও তাই বুঝবো,,, জানো তো আমার মাথায় কত বুদ্ধি আছে আমি নিমিষেই সব বুঝে যায় দাদী বলে,,,, তাই তোমার বোঝা পড়াটাও বৃথা যাবে না,,, আর না কষতে হবে তোমার অংক,,,, বলেই উনাকে নিয়ে বাগানে মধ্যে চেয়ারটায় বসে গল্প জোরে দিলাম,,,, উনিও আমার দিকে শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে আমার সাথে গল্পে মেতে উঠলেন,,,,,

🍂 🍂 🍂

সাজুগুজু পর্বটা আমার জন্য বরাবরই বিরক্তি কর কাজ,,, আর এ বিরুক্তি কর কাজটা করে চলছে দাদী,,, দাদী আমাকে দীর্ঘ এক ঘন্টা যাবত সাজিয়ে চলছে নিহা আপুর এনগেজমেন্ট এ জন্য,,, পার্লার থেকে মেয়েরা আসলেও আমাকে তাদের কাছে সাজতে মানা করেছে আয়ন ভাইয়া দাদীর কাছে,,, কিন্তুু বাকিরা সবাই পার্লার থেকে সাজবে ,,, আর দাদীও চাই না আমাকে অন্য কেউ সাজাক তাই এই মহা বিরক্তিকর কাজটা দাদী করে চলছে আমার সাথে,,,,
কিছুক্ষন পর আপুর এনগেজমেন্ট শুরু হবে তাই,,,

দাদী আমাকে গ্রিন কালার এ মধ্যে হেবি ভারী, আর লং গেয়ার এর মধ্যে একটা লেহেঙ্গা পড়িয়েছেন,,, লেহেঙ্গাটা চোখ জোড়ানোর মত সুন্দর,,, তবে অনেক ভারী আর নিচ দিয়ে অনেক বেশি ফোলা যার কারণে আমার এটা পড়ে থাকতে সমস্যা হচ্ছে অনেক,,,, পুরোটা লেহেঙ্গায় নিচে দিয়ে গোল্ডেন পাথরের চিটা চিটা কাজ করা সাথে ওড়না মধ্যেও,,, লেহেঙ্গার কমড়ের ফিতায় ডানপাশে বড় বড় ঝুমকো রয়েছে অনেক গুলো,,,, আর ওপরের কুর্তিটা কমড় পযন্ত টানা,,,, দাদী আমাকে দু হাত বরতি সবুজ কাঁচের চুরি পরিয়েছেন সাথে দুপাশে বড় বড় মোটা কাঙ্না রয়েছে,,,, গলায়, কানে, সবুজ পাথরের মধ্যে সেট পরিয়েছন, আর চুল গুলো ছেড়ে দিয়ে মাথা মাঝ বরাবর সিতা করে খুব সুন্দর সবুজ পাথরের মধ্যে একটা টিকলি পরিয়ে দেন আমাকে,,,,
পরে চোখে ঘাড় কাজল আর ঠোঁটে পিংক লিপস্টিক দিয়ে দেয়, কাঁপালে একটা ছোট সাদা পাথরের টিপ পুড়িয়ে দিয়ে আমার দিকে দাদী কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে কপালে একটা চুমু খেতে বলে উঠে,,, অনেক সুন্দর লাগছে আমার সোনামাকে,,, ছেলেটার পছন্দ আছে বলতে হবে তকে অনেক মানিয়েছে এ ড্রেসটাতে সোনামা,,,,
আমি দাদীর কথা শুনে জিগাস্যু দৃষ্টিতে তাকাতেই দাদী হেসে আমাকে কিছু বলতে না দিয়ে আমাকে নিয়ে বের হয়ে যায় পার্টি উদ্দেশ্যে, মাঝ পথে এসেই ফুপি দাদীকে ডাক দিতেই, দাদী আমাকে দাঁড় করিয়ে চলে যায় ফুপির কাছে,,,, আর আমি কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থেকে, কিছু বুঝতে না পেরে সামনে দিকে হাঁটা ধরলাম ফিহাকে খুজে,,,, পরে কিছুটা সামনে এগুতেই একটা কাজের লোক এসে তাড়াহুড়ো করে আমাকে একটা ফুলের ঝুরি ধরিয়ে দিয়ে বললো,,, এটা নিয়ে ছাদে স্টেজ এ দিয়ে আসতে তাড়াতাড়ি করে,,, বলেই চলে গেল লোকটা,,, আমি অসহায় মতো কতক্ষণ চেয়ে থেকে ফুলের ঝুরিটা নিয়ে হাঁটা ধরি ছাদের দিকে,,, কিন্তুু লেহেঙ্গা কারণে আমার হাটতে সমস্যা হচ্ছে বলে এক হাতে লেহেঙ্গাকে উচু করে ধরে অন্য হাতে ফুলের ঝুরিটা নিয়ে হেঁটে চলছি আমি,,, ছাদে উঠে বুকে হাত দিয়ে স্থির নিশ্বাস ফেলে হাসি মুখে সামনে দিকে পা বাড়াতেই ধাম করে নিচে পরে গেলাম আমি, সাথে ফুলের ঝুরি নিয়ে,,, সবগুলো ফুল আমার কোলে আর ঝুরিটা পড়লো বাহিরে,,, আমি উপুতৎ হয়ে পড়ায় আমার দুহাত গিয়ে পরল সামনে আর সাথে সাথে আমার কয়েকটা চুরি ভেঙে হাতে ডুকে যায়,,,আর আমার সবগুলো চুল এলোমেলো ভাবে মুখের এসে পড়ায় আমি কিছু দেখতে পারছি না,,,

🍂
আমার এমন করুণ অবস্থায় আমি নিজেকে ঠিক করতে না পেরে সোজা হয়ে বসে দু পা ছড়িয়ে এলোমেলো হয়ে বসে টলমল চোখে সবাইকে একপলক দেখে নিজের কান্নায় মন দিব এমন সময় কোথায় থেকে আয়ন ভাইয়া এসে আমার পাশে বসে অস্থির গলায় বললো,,,

—-” বেশি ব্যাথা পেয়েছো মায়াপাখি,,,, পড়লে কিভাবে তুমি,,,,

আমি কাঁদো কাঁদো গলায় বলি,,,,

—” নিজের নিজের পড়রেছি আমি,,, ওখান থেকে, আমার ভিষণ কষ্ট হচ্ছে আমি একটু কাঁদি এখন,,, (টলমল চোখে)

উনি আমার চোখ মুছে দিয়ে বললো,,,

—” কাঁদে না মায়াপাখি, তুমি এখন কাঁদলে তোমার সুন্দর সাজটা নষ্ট হয়ে যাবে, তখন তোমাকে ভিষণ বাজে দেখাবে, আর তোমাকে বাজে দেখালে নানুমা, আর আমি অনেক কষ্ট পাব তুমি কি চাও আমরা কষ্ট পাই বল,,,,

উনার এমন কথায় আমি না বোধক মাথা নাড়ায় আর বলি,,,,

—-” কিন্তুু আমার তো অনেক কান্না পাচ্ছে, তাই এখন একটু কান্না করি,,, নাহলে আমি কখন কান্না করবো বলো,,, (কাঁদো কাঁদো হয়ে)

উনি আমার দু হাত দেখতে দেখতে বললো,,,,

—-” পরে করবে কান্না,,, যখন সবাই চলে যাবে আর পার্টিও শেষ হয়ে যাবে তখন ঠিক আছে,,, কিন্তুু এখন করা যাবে না ওকে,,,,

—-” পরে যদি আমি ভুলে যাই তো , আমি আর আমার কষ্টে কান্নাটা করতে পারবো নাতো,,,, (আমি)

উনি মিষ্টি হেসে আমাকে বলে উঠে,,,,

—-” তাহলে আমি মনে করিয়ে দিব তোমাকে কান্না করার জন্য ওকে কিন্তুু এখন কান্না করা যাবে না,,, সবাই তোমার জন্য অপেক্ষা করছে তো তাই,,,,,

—-” তাহলে আমি আমার কষ্টে কান্নাটা তুলে রাখছি এখন,,,, তুমি কিন্তুু আমাকে পরে মনে করিয়ে দিবে আমার এ কষ্টে কান্নাটা কথা,,, ঠিক আছে প্রমিস করো আমার সাথে,,,,

উনি হেসে আমাকে দাঁড় করিয়ে বললো,,,,

—” ঠিক আছে প্রমিস,
বলে পরে আমার দু’হাত দেখে বেন্ডেজ করে দিয়ে,,, নিজের হাতে আবার আমাকে চুরি পড়িয়ে দিলেন,,,
তারপর কাতর দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে উঠে,,,৷

—-” আমার এ রংটা তোমাকে এত মানাবে জানতাম না,,, আজ নিজের রং এ প্রিয় মানুষটাকে সাজাতে পেরে এক অদ্ভুত সুখ লাগছে মনে আমার,,,
নিজের অনেক হেপি লাগছে মায়পাখি যা তোমাকে বুঝাতে পারবো না,,,, (বুকে হাত দিয়ে)

চলবে,,,,,,,

1 COMMENT

  1. গল্প তো ভালোই,,,,,,,, কিন্তু গল্পের নায়িকা এমন ন্যাকা মার্কা কেনো,,,,,,বিরক্তিকর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here