যেখানে_দিগন্ত_হারায় #পার্ট_৮ জাওয়াদ জামী জামী

0
109

#যেখানে_দিগন্ত_হারায়
#পার্ট_৮
জাওয়াদ জামী জামী

” ও আম্মা, তুমি এত কিছু নিয়ে এসেছ! বুঝতে পারছি গত দুইদিনে এসব করেই কাটিয়েছ। কেন এসব কর, আম্মা? অসুস্থ শরীরে কেন এতকিছু করতে গেছ?” আয়েশা খানম বাসায় এসে খাবারদাবার বের করতেই আরমান মাথায় হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।

” আমার বাপের কাছে খালি হাতে ক্যাম্নে আসি। তুমি কতদিন হয় বাড়িতে যাওনা। নিজের হাতে রাইন্ধা, কাছে বসাইয়া তোমারে খাওয়াইতে পারিনা। আমার কত আফসোস হয় সেইডা তুমি জানো? হের লাইগাই তো তোমার পছন্দের সব খাবার নিয়া আসছি। আমি যেই কয়দিন থাকতাম, সেই কয়দিন নিজ হাতে রাইন্ধা তোমারে মুখে তুইলা খাওয়া দিব। ” আয়েশা খানম আঁচলে চোখ মুছলেন।

মা’য়ের চোখে পানি দেখে আরমানের বুক ভারি হয়ে আসল। ও তড়িঘড়ি করে মা’কে জড়িয়ে ধরল।

” যা নিয়ে আসার আসছ। কিন্তু এই অসুস্থ শরীর নিয়ে খবরদার রান্নাঘরে ঢুকবেনা। কাজের খালা আছে, তিনিই সব কাজ করবেন। তুমি শুধু বসে বসে সব তদারকি করবে। ”

” তুমি তারে কয়দিন ছুটি দেও। বয়স্ক মানুষটা কয়দিন আরাম করুক। আমি সুধা, শশীরে নিয়া সব কাজ করমু। তুমি এখনই তারে ফোন কইরা আসবার জন্য না কইরা দেও। ”

মা’য়ের জোড়াজুড়িতে আরমান কাজের খালাকে তিনদিনের জন্য ছুটি দেয়। আয়েশা খানম চেয়েছিলেন তাকে আরও কয়েকদিন ছুটি দিক আরমান। কিন্তু আরমান মা’য়ের শরীরের কথা চিন্তা করে খালাকে তিনদিন আসতে নিষেধ করে।

আরমান ভার্সিটিতে এসে লক্ষ্য করল আজকে সবাই একটু বেশিই ব্যস্ত। ডিপার্টমেন্টে এসে জানতে পারল আর কিছুক্ষণ পর চেয়ারম্যান স্যার আসবেন। এমনিতেই তিনি প্রতি দুইমাসে একবার এদিকে আসেন। ভিসিসহ সব শিক্ষক, কর্মচারিদের সাথে মিটিং করেন। কিন্তু এবার তিনি একমাস পরই আসছেন।

যথাসময়ে চেয়ারম্যান আসলে তাকে অভ্যর্থনাকক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনি সবার সাথে কথা বলেন। এবং কিছুটা সময় কাটান। এরপর ভিসি একে একে নতুন শিক্ষকদের সাথে তাকে পরিচয় করিয়ে দেন। গত একমাসে ভার্সিটি থেকে চারজন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

তিনজন নতুন শিক্ষকের সাথে পরিচয় পর্ব শেষ হলে ভিসি আরমানের সাথে তার পরিচয় করিয়ে দেন।

” আসসালামু আলাইকুম, স্যার। আমি শাবাব আরমান। নাইস টু মিট ইউ। ”

মিরাজ মোর্তাজা কিছুক্ষণ আরমানের দিকে তাকিয়ে থাকলেন। তিনি ভাবছেন, এই তাহলে সেই আরমান! আরমানকে দেখেই তার ভালো লেগে যায়। শ্যামলা চেহারার দীর্ঘদেহী যুবকের মাথা ভর্তি কোঁকড়া চুল, তার চোখের তারায় দৃঢ় সংকল্পের ছাপ স্পষ্ট। ঋজু ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে সে।

” ওয়ালাইকুমুসসালাম। কেমন আছো, ইয়াং ম্যান? এই কয়দিনে তোমার কথা অনেকবারই শুনেছি। কিছু মনে করোনা, তোমাকে তুমি করে বললাম। ” মিরাজ মোর্তাজা হাসিমুখে কথা বললেন।

” ইট’স মাই প্লেজার। ” আরমান আর কি বলবে ভেবে পায়না। ওকে চুপ থাকতে দেখে মিরাজ মোর্তাজাই কথা বললেন।

” আমি আজ ভার্সিটিতে অন্য কাজে এসেছি। এখানে সবার সাথে কথা বলে তোমার সাথে আলাদাভাবে কথা বলতে চাইলে তুমি মাইন্ড করবে? ”

আরমান বুঝল মিরাজ মোর্তাজা কোন বিষয়ে কথা বলতে চান। আরমান সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলল, আজকে সেদিনের ঘটনার জন্য ওর ওপর দোষ আসলে সাথে সাথে জব ছেড়ে দিবে। তবুও অন্যায়ের সাথে আপোষ করবেনা। চিন্তাভাবনাকে একপাশে সরিয়ে রেখে ও হাসিমুখে কথা বলল।

” আমার কোন অসুবিধা নেই। তবে আর বিশ মিনিট পর একটা ক্লাস আছে, ক্লাসটা নিয়েই আমি আপনার সাথে দেখা করব। ”

আরমানের সততায় মুগ্ধ হলেন মিরাজ মোর্তাজা। যেখানে সবাই তাকে তোষামোদ করতে ব্যস্ত থাকে, সেখানে এই দৃঢ়চেতা যুবককে নিজের দ্বায়িত্ব পালন করতে বদ্ধপরিকর দেখে তিনি অনেকটাই অবাক হলেন।

” ওকে। আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করব। চব্বিশ ঘন্টার এই যান্ত্রিক জীবনের ব্যস্ততাকে একপাশে রেখে তোমার জন্য এক ঘন্টা অপেক্ষা করতে আমার আপত্তি নেই। ”

আরমানেরও এই মানুষটাকে ভালো লেগে যায়। ও চিন্তা করছে, এমন বুঝদার বাবা’র মেয়ে হয়ে মাশিয়া কিভাবে বিগড়ে গেছে? কেন এতটা দাম্ভিক স্বভাবের সে? ওর চিন্তায় ছেদ পরল ভিসি স্যারের কথায়।

আজ মিরাজ মোর্তাজা এসেছেন পুরো ভার্সিটির স্টাফকে ছেলের বিয়ের দাওয়াত দিতে। তিনি সবাইকে দাওয়াত দিয়ে নিজের কেবিনে চলে যান। আরমান যায় ক্লাস নিতে।

” ইয়াং ম্যান, আমি তোমার জন্য কমিউনিটি সেন্টারে অপেক্ষা করব। আশা করছি আমাকে নিরাশ করবেনা। ” আরমান ক্লাস শেষে মিরাজ মোর্তাজার কেবিনে আসলে প্রথমেই মিরাজ মোর্তাজা কথা বললেন।

” আমি চেষ্টা করব, স্যার। কোন প্রবলেম না থাকলে অবশ্যই যাব। ”

” তো কেমন লাগছে এখানে? স্টুডেন্টরা কেমন? ফ্রেন্ডলিতো ওরা? আর শিক্ষকরা? তারা কেমন? ”

” জ্বি সবাই ফ্রেন্ডলি। সবাই নিজ নিজ ক্ষেত্রে বেশ সহযোগিতা করে। ”

” ইয়াং ম্যান, আমি এরপর তোমাকে যেটা বলতে চাচ্ছি, তুমি কিছু মনে না করলে বলব। ” মিরাজ মোর্তাজা ইতস্তত করছেন। যেটা আরমানের চোখ এড়ায়না।

” আমি যা বলতে চান, নিঃসংকোচে বলুন। ”

” আসলে আমি মাশিয়ার ব্যাপারে কথা বলতে চাচ্ছি। ও তোমার সাথে যা যা করেছে, তার সবই আমার কানে এসেছে। সত্যি বলতে কি, ও আমাদের আদরের মেয়ে। ছোটবেলা থেকেই ও স্বাধীনচেতা হিসেবেই বড় হয়েছে। আমরাও ওকে প্রয়োজনের অধিক স্বাধীনতা দিয়েছি। আর সেকারণেই হয়তো আজ ও এমন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এটা আমাদের ব্যর্থতা। আমরাই ওকে শাসন করিনি। আর তার ফলশ্রুতিতেই হয়তো সে তোমার সাথে দূর্ব্যবহার করেছে। ওর পক্ষ থেকে আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাইছি। তুমি প্রয়োজনে ওকে শাসন করবে। এতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। একটু দেখ এবার যেন ও অন্তত সেকেন্ড সেমিস্টার উৎরে যায়। ” মিরাজ মোর্তাজা নতমুখে কথাগুলো বললেন।

আজ আশ্চর্য হবার পালা আরমানের। ভার্সিটির চেয়ারম্যান হয়ে কত সহজেই একজন তার দূর্বলতার কথা স্বীকার করছে এটা আরমানকে ভিষণ অবাক করেছে।

” আপনি সরি বলছেন কেন, স্যার! আপসি এভাবে সরি বলে আমাকে লজ্জা দেবেননা।আসলে শুরুটা আমিই করেছিলাম। চোখের সামনে অন্যায় হতে দেখে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। আর সেকারণেই আমার ওপর মাশিয়ার ভিষণ রা’গ। আর এটা অস্বাভাবিক নয়। ”

” তুমি ওর দিকে একটু নজর দিও। সব সময়ই পড়াশোনায় ফাঁকি দিতে চায়। অথচ ও ছাত্রী হিসেবে খারাপ নয়। ওর এসএসসি, এইচএসসির রেজাল্টও অনেক ভালো। কিছু বন্ধুবান্ধবদের পাল্লায় পরে আজ ওর এই অবস্থা। এখানকার টিচাররাও ওকে শাসন করতে ভয় পায়। আর তাই ও আরও স্বেচ্ছাচারী হয়েছে। তবে আমার বিশ্বাস তুমি একটু শাসন করলেই ও ঠিক পথে আসবে। ”

” আমি চেষ্টা করব, স্যার। ” মিরাজ মোর্তাজা আরও কিছুক্ষণ কথা বলে ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে গেলেন।

আরমানের পরবর্তী তিন-চার দিন মা’য়ের চিকিৎসা করাতে কেটে যায়। ডক্টর বলেছেন, নিয়মিত চিকিৎসায় আয়েশা খানম পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবেন। ডক্টরের কথা শুনে আরমান ভিষন খুশি হয়। সে সিদ্ধান্ত নেয় আগামী কয়েকমাস মা আর বোনদের নিজের কাছেই রাখবে।

” বাপ, আর কতদিন আমরা এইখানে থাকমু? বাড়িতে যাইতে হইবো। সরিষা বুননের সময় আইসা পরছে, ধান উঠবো একমাস পরই। সরিষা বুননের আগেই বাড়িতে যাওন লাগব, গোলাঘর ঠিক করতে হইবো। তুমিতো জানোই বাপ, নতুন ফসল উঠার আগে কত কিছু করতে হয়? ” আয়েশা খানম ইতিউতি করে বললেন। কারন তিনি জানেন, আরমান এখন তাকে গ্রামে যেতে দিতে চায়না।

” আমি সবই জানি, আম্মা। কিন্তু এখন তোমাদের কোথাও যাওয়া হবেনা। আমি রফিক চাচার সাথে কথা বলে সরিষা লাগানোর ব্যবস্থা করব। ধান উঠার দুইদিন আগেই তোমাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেব। তবে এখন থেকে তোমাকে কোন কাজ করতে হবেনা। আমি কাজের লোক ঠিক করে দেব। তুমি শুধু সব কিছুর তদারকি করবে। ”

” বাপ, তুমি এইসব কি কও! নিজের সংসারের কাজ নিজে না কইরা কাজের মানুষ দিয়া করামু! কাজের মানুষ কি নিজের মনে কইরা কাজ করব? ”

” আমি বলেছিনা তুমি সব কিছুর তদারকি করবে। সারাজীবন সংসারে অনেক খেটেছ। আর নয়। এবার তোমার বিশ্রাম নেয়ার সময় এসেছে। আমি আমার আম্মা’কে পুরোপুরি সুস্থ দেখতে চাই। এই নিয়ে আর কোন কথা আমি শুনতে চাইনা, বুঝেছ? ”

” একমাত্র তোমার কাছেই আম্মা নিজের কেরামতি দেখাতে পারেনা, ভাইয়া। আমি আর শশী মিলে তাকে বুঝিয়েও পথে আনতে পারিনা। তার সব কাজ করতেই হবে। আম্মাকে এত বলি, একটা কাজের লোক রাখ, এছাড়া আমরাও বড় হয়েছি তোমাকে সাহায্য করব। তুমি শুধু বিশ্রাম নাও৷ কিন্তু আম্মাকে শোনাতে পারলেতো। ” সুধাও আরমানকে আম্মার নামে বিচার দেয়।

” আপা ঠিক বলেছে, ভাইয়া। আম্মা আমাদের কোন কথাই শোনেনা। কাজ করতে গিয়ে নিজের শরীরের যত্ন পর্যন্ত নেয়না। ঠিকমত খাওয়াদাওয়া করেনা। আপু কিছু বললে তবুও চুপ থেকে শোনে, মানুক আর না মানুক। কিন্তু আমার কোন কথাই আম্মা শুনতে চায়না। ” শশীও সুধার সাথে তাল মিলিয়ে বলল।

” তুই থামবি বেয়াদব মাইয়া? খুবতো আমার নামে দূর্নাম করতাছিস। তুই নিজে আমারে কেমন জ্বালাইস সেইডা একবারও কইছস? তোর চিন্তা করবার গিয়া আমার পাগল হইতে দেরি নাই। যেইখানেই যায় সেইখানেই ভুমিকম্প ঘটায় দেয়। গাঁয়ের মানুষের কাছে বাপ-ভাইয়ের সম্মান ধুলায় লুটায় দিতাছে, তার আবার আমার নামে কত অভিযোগ। ” আয়েশা খানম হুংকার ছেড়ে বললেন।

মা’য়ের রা’গ দেখে শশী আরমানের পেছনে লুকায়। আর সুধা খিলখিলিয়ে হেসে উঠে।

” জানো ভাইয়া, তোমার আদরের চন্দ্র কি করেছে? মিজান কাকার মেয়ে রিতা আপার বিয়ের কথা চলছে। তোমার আদরের বোন কোনভাবেই ঘটকের নম্বর জোগাড় করে। এরপর একদিন ঘটক আমাদের বাড়িতে এসে আম্মাকে বলল, ভাবি, আপনার ছোট মেয়ের জন্য একটা ভালো ছেলের সন্ধান এনেছি। আম্মা ঘটককে বুঝিয়েসুঝিয়ে বিদায় করে দেয়। এরপর শশীকে চেপে ধরলে জানতে পারি, তোমার আদরের বোনই ঘটককে ফোন করে নিজের বিয়ের কথা বলেছিল। সে ঘটককে বলেছিল, তার ভাই এখন বিয়ে করবেনা, বড় বোনও পড়াশোনা করতে চায়। এজন্য আম্মা আগে ছোট মেয়ের বিয়ে দিবে। ” সুধার কথা শুনে আরমানের চোখ কপালে উঠল। ও রা’গী চোখে আরমানের দিকে তাকায়। আরমানের তাকানোয় শশী ভয় পায়। ও হাসার বৃখাই চেষ্টা করল।

” ভা…ভাইয়া, আমিতো মজা করে ঘটককে ফ..ফোন করেছিলাম। স..সত্যি বলছি, ভাইয়া। আমি তোমার বোন হয়ে এমন কাজ করতে পারি বল? এমন কিছু করার সাহস আমার আছে বল? আমি শুধু মজাই করতে পারি, এর বেশি কিছু নয়। ” শশী আরমানে সাফাই দেয়ার চেষ্টা করছে।

সবকিছু শুনে আরমানের মাথা চক্কর দিয়ে উঠল৷ একদিকে শশীর কথা শুনে ওর হাসি পাচ্ছে, আবার বিরক্তও হচ্ছে।

” ঠিক আছে, আগে তোর বিয়ে দেব। এরপর সুধার বিয়ে দেব। এবার বল কেমন ছেলে তোর পছন্দ? ”

” না, ভাইয়া। আমি এখনই বিয়ে করতে চাইনা। পড়াশোনা শেষ করেই বিয়ে করব আমি। প্রমিজ করছি আর কখনো বিয়ের কথা মুখেই আনবনা। আমি এমন নিলর্জ্জ মেয়ে নই, যে বিয়ের জন্য পাগল হয়ে যাব। চারপাশে সবার বিয়ে দেখলে শুধু মাঝেমধ্যে বিয়ে করতে ইচ্ছে করে এই যা। ” শেষ কথাটা বলেই দাঁত দিয়ে জিহ্বা কা’ট’ল শশী। আয়েশা খানম দুঃখে কপাল চাপড়ালেন। সুধা খিলখিলিয়ে হাসছে। শুধু আরমান ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে শশীর দিকে তাকিয়ে থাকল।

” শুনছ বাপ, এই ফাজিল মাইয়াডার কথা? এইডা সকাল, দুপুর, রাইতে আমারে এম্নেই জ্বা’লা’য়। প্রতিদিন আমারে ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়, না জানি কোনদিক থাইকা বিপদ আসতাছে। এই মাইয়া বিপদরে নিমন্ত্রণ দিয়া বাড়িতে নিয়া আসে। ”

আরমান বুঝতে পারছে এখনই যদি শশীকে শাসন করা না হয়, তবে ভবিষ্যতে ওর দুষ্টুমি বাড়বে বৈ কমবেনা।

” শশী, তুই করে বল, বিয়ে করতে চাস কিনা? যা বলার আজকেই বলবি। যদি রাজি থাকিস, তবে দুইদিনের মধ্যেই তোর বিয়ে দেব। ”

” নাহ, ভাইয়া। তোমার নিষ্পাপ বোনকে এভাবে দূরে ঠেলে দিওনা। আমি এখন বিয়ে করতে চাইনা। আগে তোমার বিয়ে হবে। আমরা দুই বোন ভাবির সাথে অনেক মজা করব, ঝগড়া করব, খুনসুটি করব, নিজের ক্যারিয়ার গড়ব। তারপর বিয়ের কথা ভাবব। ”

” ঠিক বলছিসতো? ”

” পাক্কা। ”

” এরপর কোন ঘটককে ফোন করবি? ”

” পা’গ’লে কা’ম’ড়ে’ ছে নাকি! ওটাতো শুধু মজা করে করেছিলাম। আগে তোমার বিয়ে দেব। আম্মাতো তোমার জন্য একটা মেয়ে দেখেছিল। কিন্তু আমার পছন্দ হয়নি, তাই না করে দিয়েছে। আমি আমার ভাইয়ার জন্য বেস্ট ভাবী চাই। ”

” বাপ, শশী ঠিক কইছে। তোমার বিয়ের বয়স হইছে। এবার বিয়েডা কইরা নাও। ” শশীর প্রসঙ্গ থেকে কথা ঘুরে আরমানের বিয়ের দিকে চলে যায়। আয়েশা খানম ছেলেকে দ্রুতই বিয়ে করাতে চান।

” আর কিছুদিন যাক, আম্মা। আগে তুমি পুরোপুরি সুস্থ হও। আমার দুই বোনকে মানুষ করি। তারপর বিয়ের কথা ভাবব। ”

” আমি সুস্থ আছি। আর তোমার দুই বোনও মানুষ হইব। তোমার আব্বা তোমাদের জন্য যথেষ্ট সম্পদ রাইখা গেছে। সুধা, শশীরে পড়াশোনা করায় বিয়ে দিতে কোন বেগ পাইতে হইবনা। আমি এখন শুধু আমার ছেলের বউ দেখতে চাই। ” আয়েশা খানম ছেলের কাছে বায়না ধরলেন।

” ঠিক আছে, আম্মা। তবে আর কয়েকমাস যেতে দাও। সবেমাত্র চাকরিতে ঢুকলাম। আগে সবকিছু গুছিয়ে নিই। ”

আরমানের কথায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন আয়েশা খানম। আর সুধা শশী প্ল্যান করতে থাকে একমাত্র ভাইয়ের বিয়েতে কি কি করবে।

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here