# অসম্ভবেও আমার তুমি
নুসরাত সুলতানা সেজুথি
পর্ব–০৯
ড্রয়িং রুমে পিনপতন নীরবতা।তার মধ্যে অবশ্য শো শো শব্দ হচ্ছে জানলার কপাট গুলোয় ক্রমশ এসে সপাটে বাড়ি খাওয়া বাতাস গুলোর।
আবরারের সামনে অনেকটা দুরত্ব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে তনয়া,,,আবরার তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তনয়ার মুখের দিকে,,,যার দরুন তুমুল অস্বস্তি নিয়ে ক্ষনে ক্ষনে আড়চোখে তাকাচ্ছে তনয়া।
স্নিগ্ধা আবরারের পাশেই এক রাশ উৎকন্ঠা চোখে মুখে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,,,বিয়ের পর সামনে আরও কত কি অপেক্ষা করছে তার জন্যে কে জানে?
এতক্ষনে তোফায়েল সোফা ছেড়ে উঠে দাড়ালেন,,,এমন দীর্ঘ নিরবতা ভঙ্গ হলো তার বাজখাই গলার আওয়াজে,
— অনেক হয়েছে এই মিউচুয়াল বোঝাপড়া, আর নয় অফিসার,,,,একটা মেয়ের জীবন নষ্ট করার মূল্য হাড়েহাড়ে টের পাওয়াতে চাই আমি একে,,,আর আপনি এখনও হাত গুটিয়ে বসে কেন আছেন আমি সেটাই বুঝছিনা তো।
তোফায়েলের কথার প্রেক্ষিতে সিনিয়র অফিসার আমিনুল কোনও জবাব দেয়ার আগে,,, আবরার শক্ত মুখে তোফায়েলের চোখে চোখ রেখে বলে উঠলো,
— আমি আপনার মেয়ের জীবন নষ্ট করিনি,,,উল্টে আপনারা আমার জীবন নষ্ট করেছেন,,
আবরারের কথায় স্নিগ্ধার ভীষণ অদ্ভুত অনুভূত হয় এবার,,
তনয়া আবরারের জীবন নষ্ট করলো? আর কিভাবেই বা…আপাতত দৃষ্টিতে সে যা দেখছে তাতে তো স্বামী হিসেবে দ্বিতীয় বিয়ে করে তনয়ার জীবন শেষ করে দিয়েছে আবরার৷ তাহলে এই কথার মানে কি?
স্নিগ্ধার ভাবনার সুতো খোলে,,ওপাশ থেকে তনয়ার তেঁতে ওঠাতে,,
— আমি আপনার লাইফ বরবাদ করিনি,মিথ্যে ব্লেম আমাকে দেবেন না আবরার,,
আবরার পুনরায় কিছু বলতে নিলে সিনিয়র অফিসার আমিনূল ব্যাতিব্যস্ত হয়ে উঠে দাড়িয়ে বলে,,
— আপনারা প্লিজ শান্ত হন!এভাবে রাস্তার লোকেদের মত একে অন্যের সাথে তর্ক করবেন না। আর হ্যা কে কার লাইফ নষ্ট করছে বা করেনি সেসব আমরা বুঝে নিচ্ছি।
আবরার আর তনয়া শান্ত হলেও তোফায়েল ক্রুদ্ধ স্বরে বললো –
” বোঝাবুঝির কি আছে অফিসার? আমি তোফায়েল পাঠান বলছি তো আপনাকে,,এই ছেলে( আবরার কে ইশারা করে) আমার মেয়েকে বিয়ে করে এক বছরের মাথায় আবার নতুন বউ ঘরে তুলেছে,,,আর আপনি নিজেই তো দেখতে পাচ্ছেন,, এই তো এই ধরিবাজ মেয়েটাতো দাঁড়িয়েই আছে আপনার সামনে,,,
তোফায়েল স্নিগ্ধার দিকে তাকিয়ে আগুন চোখে কথাটা বলাতে স্নিগ্ধা মাথা নিচু করে নিলো।আবরার ফোস করে এক দম নিয়ে এগিয়ে গেলো স্নিগ্ধার কাছে,,,নিচু আওয়াজে বললো,
— তুমি ভেতরে যাও,,,
স্নিগ্ধা মাথা তুলে তাকায়,,,দুদিকে মাথা নেড়ে বলে ওঠে,
— না,আমি আজ সব শুনতে চাই।
আবরার এবার দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
— আমি যা বলছি সেটা শোনো,চুপচাপ ঘরে যাও
।
স্নিগ্ধা আবরারের লাল চোখ দেখে ফাকা ঢোক গিলে একবার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সবার দিকে তাকায়। এরপর নরম পায়ে উল্টো ঘরে পা বাড়াতে গেলেই পেছন থেকে ডেকে ওঠে আমিনূল।
— দাড়ান আপনি।
আবরার ভ্রু কুঁচকে তাকায়,,,সাথে সাথে স্নিগ্ধাও পেছন ফেরে,,,
আমিনূল এগিয়ে এসে আবরার কে উদ্দেশ্য করে বললো,
— মিস্টার চৌধুরী,, আপনার প্রথম স্ত্রী তনয়া,,,শুধুমাত্র আপনার নামেই নন,বরং আপনার দ্বিতীয় স্ত্রীর নামেও কেস ফাইল করেছেন।তাই ওনাকে এভাবে ঘরে তালা দিয়ে রাখতে পারবেন না।
আবরার অবাক হয়ে তনয়ার দিকে তাকায়,,,তনয়া মুখ শক্ত করে অন্যদিক চোখ ফিরিয়ে নেয়,আবরার এবার তাড়াহুড়ো করে বলে,,
— কিন্তু অফিসার,,যা করার সেসব তো আমি করেছি,,স্নিগ্ধার এতে কোনও দোষ নেই।
আমিনুল দৃঢ় গলায় বলে ওঠে,
— সেটা আমরা আমাদের মত ইনভেস্টিগেট করে দেখবো,,,
কে দোষী কে নয়। আসলে কি বলুন তো মিস্টার চৌধুরী,, আপনাদের মত বড় বিত্ত বান লোকেদের জন্যেই আজকাল মেয়েরা অনেক হেনস্তার স্বীকার হচ্ছে,,,আর সেসব মেয়েদের পাশে দাড়ানোর জন্যেই আমরা পুলিশ রা এখনও রয়েছি।
কথাটায় বিদ্রুপাত্মক হেসে ওঠে আবরার,আমিনূল ভ্রু কুঁচকে নিয়ে প্রশ্ন করে,
— আপনি হাসছেন যে?
আবরার চোখ সরু করে বললো,
— কত টাকা পেয়েছেন?
আমিনূল থতমত খেয়ে বলে,
— কি বলতে চান আপনি, আমি ঘুষ নেই?
আবরার বাকা হেসে বললো,
— সেটাতো একবারও বলিনি,,,তবে না বলতেও বুঝলাম যে আমার ধারণাই সঠিক।
আমিনুল এবার ক্রোধান্বিত হয়ে জবাব দিলো,
— আপনি আমাকে অপমান করছেন মিস্টার চৌধুরী? আপনি একজন সন্মানীয় লোক দেখে আমি এখনও আপনাকে হাতকড়া পরাইনি,নাহলে
আপনি যা করেছেন তাতে,,জানেন আমি আপনাকে এক্ষুনি জেলে ভরতে পারি,,
আর আঈন কিন্তু তখন আপনার এইসব অর্থ বিত্ত দেখতেও আসবেনা।
স্নিগ্ধা কাপা চোখে আবরারের মুখের দিকে তাকিয়ে,,এরপর ,তনয়ার দিকে এগিয়ে যায়। তনয়ার সামনে দাঁড়িয়ে মৃদূ গলায় বলে,,
— তনয়া আপু,,আমি এই বাড়ি আর ওনাকে ছেড়ে আজীবন এর জন্যে চলে যাবো,কিন্তু দয়া করে ওনাকে পুলিশে দেবেন না। এতে ওনার সন্মান নষ্ট হবে,,,আমি চলে গেলেই তো আপনারা আগের মত সংসার করতে পারবেন তাহলে এখন দয়া করে মামলা টা আপনি তুলে নিন।
— তুমি কে আমাকে এসব বলার,,তোমার মত নিম্নমানের মেয়ের সাথে আমি একটা কথাও বলতে চাচ্ছিনা। যেই পুলিশ দেখেছো ওমনি
এখন পালাতে চাইছো? কেন সংসার করবেনা আমার স্বামীর সাথে?? করাচ্ছি সংসার,,তোমার হ্যোল লাইফ আমি যাস্ট হ্যেল করে ছাড়বো,,নোংরা বাজে মেয়ে একটা!
বেশ ঝাঁঝালো গলায় জবাব দিলো তনয়া,,,অপমানে চোখ ছলছল করে উঠলো স্নিগ্ধার। তনয়া পুনরায় স্নিগ্ধাকে কিছু বলতে নিতে গেলে আবরার এক টানে ওর সামনে থেকে স্নিগ্ধাকে সরিয়ে নিজের কাছে নিয়ে আসে,,,হকচকিয়ে যায় স্নিগ্ধা। রাগে শরীর জ্বলে ওঠে তোফায়েল আর তনয়ার।
এবার আবরার বেশ তেজ নিয়ে স্নিগ্ধা কে বললো,
— এই মেয়ে,,তোমাকে এত কথা বলতে কে বলেছে? আমি বলেছি? এত বাড়াবাড়ি কে শিখিয়েছে তোমায়,,চুপচাপ এখানে দাঁড়িয়ে থাকো,,আগ বাড়িয়ে একটা কথাও বলবেনা।
স্নিগ্ধা ভয়ে মাথা নিচু করে রাখে,,,আবরার এবার তনয়ার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
— আমাকে জেলে দিতে চাইছেন তনয়া? কিন্ত আপনি খুব ভালো করেই জানেন,,, আপনি সেটা পারবেন না। অন্তত এই আবরার ফাহাদ চৌধুরীর সাথে তো নয়-ই।
কারন ন্যাড়া যে বেল তলায় এক বার-ই যায়।
তনয়া আবরারের কথার মানে বুঝতে না পেরে ভ্রুদ্বয় কুঁচকে নেয়,,
— কি বলতে চাইছেন?
তোফায়লে তড়িৎ গতিতে দাঁত চিবিয়ে বলে,
— ও আবার কি বলবে,,,অভিনয় করছে আমাদের সাথে,বোঝাচ্ছে যে আমি ভাঙছি তবু মচকাচ্ছি নাহ।
আবরার ক্রোধ নিয়ন্ত্রণে চোখ বন্ধ করে মাথা নিচে রেখে দম নিতে থাকে,,
আমিনুল এগিয়ে আসে স্নিগ্ধার দিকে,, ব্যাস্ত গলায় বলে,
— মিসেস স্নিগ্ধা আবরার চৌধুরী, আমি আপনাকে কিছু প্রশ্ন করতে পারি?
আবরার অধৈর্য হয়ে তাকায়,,
হাত উঁচু করে আমিনুল কে নিষেধ করতে গেলে ইশারায় থামিয়ে দেয় আমিনুল। বলে ওঠে,
— প্লিজ মিস্টার আবরার,,,এটা আমার ডিউটি,বাধা দেবেন না।
এরপর আর কথা বাড়ায়না আবরার,,
অন্যদিকে স্নিগ্ধা চোখ নিচে রেখেই হ্যা বোধক মাথা নাড়ে,,আমিনুলের উদ্দেশ্যে।
আমিনুল এবার পেছনে দু হাত বেধে স্নিগ্ধাকে উদ্দেশ্য করে বলে ওঠে,
— আপনার আর মিস্টার আবরারের কি শরিয়ত মোতাবেক বিয়ে হয়েছে,,
স্নিগ্ধা মৃদূ গলায় বললো,
— জ্বি।
— রেজিস্ট্রি হয়নি..??
উত্তরে স্নিগ্ধা কিঞ্চিৎ মাথা ঝাকায়,যার অর্থ ”না
আমিনুল পুনরায় জিজ্ঞাসা করে,
— আপনি কি জানতেন মিস্টার আবরার আগে থেকেই বিবাহিত ছিলেন?
— না!
আমিনুল সন্দেহী ভাবে তাকিয়ে বলে,
— এই বিয়েটা কি আপনাকে জোরপূর্বক করেছেন উনি??
এ পর্যায়ে স্নিগ্ধা আবরারের দিকে তাকায়, আমিনুল তৎপর গলায় বলে ওঠে,
— ওদিকে নয়,,আমার দিকে তাকান!
স্নিগ্ধা চোখ নামিয়ে আবারো নিচের দিকে তাকিয়ে আলোড়িত গলায় বলে ওঠে,
— বিয়ে আমি আমার ইচ্ছেতে করেছিলাম। আমাকে উনি জোর করেন নি।
আমিনুল মাথা ঝাকিয়ে বলে,
— ওহ আচ্ছা,,তাহলে আপনি বলতে চাচ্ছেন,,নিজের ইচ্ছেতে বিয়ে আপনি করেছেন,কিন্তু আপনি জানতেন না যে আবরার আগে থেকেই বিবাহিত ছিলো বা ওনার ঘরে স্ত্রী ছিলো?
স্নিগ্ধা দৃঢ় ভাবে জবাব দেয়,
— না জানতাম নাহ।
আমিনুল ভ্রু নাঁচিয়ে বলে,
— তাহলে আপনি কখন জেনেছেন?
স্নিগ্ধা সামান্য সময় চুপ থেকে বললো,
— এখানে আসার পর,,,
আমিনুল এবার কপাল কুঁচকে বললো,
— তাহলে তখন আপনি কেন চলে যান নি? কেন থেকে গিয়েছিলেন?
স্নিগ্ধা কথার প্রেক্ষিতে আমিনুলের মুখের দিকে চোখ উঠিয়ে তাকালে,,,আমিনুল তটস্থ গলায় বলে ওঠে,
— না মানে আপনি বিয়ের আগে জানতেন না যে ওনার আরেকটা বউ আছে,এ অব্দি মেনে নিলাম,কিন্তু যখন জানতে পারলেন তখন কেন গেলেন না? কেন বিয়েটা ভেঙে দিলেন না,,এটাই তো উচিত ছিলো আপনার তাই নয় কি..??
স্নিগ্ধা এবার আর কথা তোলেনা,,,চুপ মেরে শক্ত পাথরের ন্যায় দাঁড়িয়ে থাকে,,,ব্যাপারটায় তনয়া উদগ্রীব হয়ে বলে ওঠে,
— দেখেছেন অফিসার,এবার আর গলা দিয়ে আওয়াজ আসছেনা,,,এই মেয়ে সব মিথ্যে বলছে এটাই তার প্রমান,,,ও জেনেশুনেই এসেছে,,টাকা দেখেছে তো তাই আর লোভ ধরে রাখতে পারেনি,,,
কথাটায় স্নিগ্ধার ভীষণ কান্না পেলেও কোনও মতে ঠোঁট কামড়ে আটকে নেয়,,,অন্যদিকে আবরার চোয়াল শক্ত করে বলে ওঠে,
— আপনি আগে আয়নার নিজেকে দেখুন তনয়া,তারপর অন্যকে নিয়ে কথা বলবেন,,,ও হ্যা আয়নার সামনে দাড়ানোর সময় অবশ্যই আপনার বাবাকে ও পাশে নিয়ে নেবেন,,,আফটার অল তিনি তো আপনার গুরু।
এরুপ বাক্যে তোফায়লে ক্ষিপ্ত হয়ে কিছু বলতে নিলেই আমিনুল চোখ ইশারা করে থামিয়ে দেয়,,
বিরক্তি নিয়ে বলে ওঠে,
— আপনারা সবাই চুপ করবেন? আমাকে বলতে দিন,,,
এবার আমিনুল আবরারের দিকে ঘাড় ফেরায়,,,বলে ওঠে,
— মিস্টার আবরার! আপনি এবং মিস্টার তোফায়েল পাঠান দুজনেই যথেষ্ট সন্মানিত লোক দেখেই আমি ভেবেছিলাম ব্যাপারটা মিউচুয়ালি হ্যান্ডেল করবো,এখন আপনি যদি কো অপারেট করেন তবেই সেটা সম্ভব।
আবরার ভ্রু নাঁচিয়ে প্রশ্ন করে,
— কি করতে হবে?
আমিনুল একবার তোফায়েলের দিকে তাকিয়ে আবার তনয়ার দিকে তাকায়,,, সেদিকে চোখ রেখেই বলে ওঠে,
— মামলা টা যেহেতু উনি করেছেন সেহেতু ওনার দিকে আমাদের থাকাটা আবশ্যক। আর আমি আপনার দ্বিতীয় স্ত্রীর থেকে যা ইনফরমেশন পেলাম তাতে এখানে উনিও পুরোপুরি নির্দোষ প্রমানিত হয়না। তাই এখন এটাই ভালো হবে যদি আপনি অতি সত্তর ওনাকে ডিভোর্স করে শুধুমাত্র তনয়া চৌধুরীর সাথেই সংসার করেন তো।
স্নিগ্ধা চমকে গিয়ে মাথা তুলে আবরারের দিকে তাকিয়ে থাকে,,,তোফায়েল এগিয়ে গিয়ে মেয়ের পাশে দাড়ান। তনয়ার কাধে হাত ঠেকিয়ে ফিসফিস করে বলেন,
— এবার দেখিস মা,,জেলের ঘানি টানার ভয়ে আবরার কেমন সুরসুর করে তোর পায়ের কাছে এসে পরে।আর ওই মেয়েকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাইরে ফেলে দেয়,,
তনয়া বাবার প্রত্যাশার কথা শুনে ফাকা ঢোক গেলে,,,যদিও তার মনের মধ্যে একটুও আশার সূর্য উঁকি দিচ্ছেনা,,তবুও কথাটায় বিশ্বাস রাখতে ভারি ইচ্ছে হচ্ছে তার!
আবরার এবার আমিনুল কে উদ্দেশ্য করে ভ্রু বাকিয়ে বলে,,
— তা নাহলে?
আমিনুল জোর গলায় জবাব দেয়,
— নাহলে দ্বিতীয় অপশন টাই আমাকে বেছে নিতে হবে,,,আপনাদের রেপুটেশন এর কথা তখন আর ভাব বোনা আমি।
আবরার খানিকক্ষণ চুপ মেরে থাকে,,,অজান্তেই ধকধক করে কাঁপতে শুরু করে স্নিগ্ধার ভেতরে,,,
তনয়া আর তোফায়েল উদগ্রীব হয়ে তাকিয়ে থাকে আবরারের উত্তরের আশায়,,
কিছু সময় পেরোতেই আবরার চট করে এক দমে বলে ওঠে,
— অফিসার,,,আমি স্নিগ্ধাকে ডিভোর্স দেবোনা,এবং কখনোই না।
আবরারের উত্তরে তনয়া তোফায়েল আহত চোখে তাকিয়ে থাকে ,,রাগ ক্রোধ ছুটে বেড়াতে শুরু করে তাদের সমগ্র শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। কিন্তু স্নিগ্ধার অবাক দৃষ্টি তখনও আবরারের মুখের ওপর আটকে থাকে,,
আমিনুল এবার প্রগাঢ় গলায় বলে ওঠে,
— একটা সুযোগ দিতে চেয়েছিলাম আপনাকে মিস্টার চৌধুরী,, অথচ আপনি?
আবরার দৃঢ় গলায় জবাব দিলো,
— আই ডোন্ট নিড এনিচান্সেস।
আমিনুল এবার ক্ষিপ্র গলায় বললো,
— তবে আর কি,,থানায় চলুন,,,
আমিনুল কথা শেষ করতেই তোফায়েল এবার ক্রুদ্ধতা নিয়ে বললো,
— নিজের ভালো তো পাগল ও বুঝতে পারে,,অথচ তুমি তো তার থেকেও অধম,,আবরার।
আবরার বাকা হেসে বলে,
— হলাম না হয়,তবু ভালো আপনার মতো ধরিবাজ হইনি,,,
তোফায়েল দাঁত চেপে চুপ করে থাকে,,,,আমিনুল বাকি দুজন কন্সটেবল কে উদ্দেশ্য করে বলে ওঠে,,
— ওনাদের নিয়ে আসুন,,
কথা শেষে আমিনুল সামনে হাটা ধরে,,,তোফায়েল মেয়ের দিকে তাকিয়ে আহত হয় তনয়ার পানসে অশ্রুসিক্ত মুখ দেখে,,,যে মেয়ের খুশির জন্যে এত কিছু করলো আজ সেই মেয়ের মুখে আমাবস্যার ঘনঘটা দেখে বুকটা মোচড় দিয়ে ওঠে তার। ছোট্ট একটা দম ফেলে সোফার ওপর বসে পরে,,,তোফায়েল।
অন্যদিকে স্নিগ্ধা গুটিগুটি পায়ে মহিলা কন্সটেবলের সাথে সদর দরজার দিকে হাটতে ধরে,,,হুট করে আবরার সবার উদ্দেশ্যে গলা বাড়িয়ে বলে ওঠে,
— এক মিনিট,,,
আমিনুল দাঁড়িয়ে পরে,,,স্নিগ্ধাও পেছন ঘুরে তাকায়।
উপস্থিত সকলে বিস্ময় এর সাথে সাথে কৌতূহল চোখে মুখে মেখে তাকিয়ে থাকে আবরারে দিকে,,
আবরার আয়েশী ভঙিতে পকেটে দু হাত গুজে দাড়ায়।ঠোঁট বাকিয়ে হেসে বলে ওঠে,,
— এখনি ড্রামা শেষ হলে হবে,,,পিকচার তো আভিবি বাকি হ্যায়…!!
চলবে,
কেউ বলবেন না ছোট হয়েছে। আমি কিন্তু পরীক্ষার পড়ার ফাকেও লিখে দিয়েছি😥