অসম্ভবেও আমার তুমি নুসরাত সুলতানা সেজুথি পর্ব–১০

0
97

#অসম্ভবেও আমার তুমি
নুসরাত সুলতানা সেজুথি
পর্ব–১০

আপনি আবার কোন নতুন নাটক শুরু করতে চাচ্ছেন মিস্টার চৌধুরী??
আমিনুলের তীক্ষ্ণ প্রশ্নে সামান্য মুচকি হাসে আবরার। দৃঢ় গলায় জবাব দেয়,
— নাটক আমি শুরু করছিনা,,বরং বলতে পারেন নাটক শেষ করছি।
আমিনুল ভ্রুদ্বয় কুঁচকে নেয়,,,বলে
— তাহলে সময় নষ্ট না করে ,যা বলার স্পষ্ট করে বলুন।
আবরার একিভাবে উত্তর দিলো,
— সময় এর যদি আদৌ মূল্য দিতেন তবে তোফায়েল পাঠানের হয়ে এখানে আসতেন নাহ।

কথাটা বেশ গায়ে লাগে আমিনুলের,,উত্তরে এবার দাঁত চেপে বলে ওঠে,
— কি বলতে চাইছেন আপনি? আমি কারো কথায় কাজ করছি? আমি আমার ডিউটি করছিনা?
আবরার মৃদূ হেসে বললো,
— হলেও হতে পারে,
আমিনুল ক্ষিপ্র হয়ে বললো,
— মিস্টার চৌধুরী আপনি ভুলে যাবেন না আমি পুলিশের একজন সিনিয়র অফিসার,,,আমার সাথে এভাবে কথা বলার কোনও রাইটস আপনার নেই।

আবরার ভ্রু বাকিয়ে বললো,,,
— ঠিক যেভাবে বিনা অপরাধে আমাকে আর আমার স্ত্রীকে এ্যারেস্ট করার রাইট নেই আপনার তাইতো?

এ পর্যায়ে আবরারের কথায় সবার মধ্যে এক ঝাঁক কৌতূহল এসে ভিড় করে,,,প্রবল জিজ্ঞাসা নিয়ে আবরারের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে সবাই।

তোফায়লে ক্রুদ্ধ হয়ে প্রশ্ন করেন,
— ফাজলামো করছো তুমি আবরার? এত কিছুর পরেও বলতে চাইছো তুমি অপরাধি নও?
আবরার তোফায়েলের দিকে তাকায়,শক্ত মুখে জবাব দেয়
— বলতে চাইছি না,,,বলছি। না আমি অপরাধি,আর না আমার স্ত্রী স্নিগ্ধা।

আমিনুল এবার ভ্রু ক্রুটি করে বলে ওঠে,
— আপনি কি এখন নতুন আঈন রচনা করতে চাচ্ছেন নাকি?? না মানে,,অন্তত এই দেশের আঈণ যা বলে সেখানে প্রথম স্ত্রীর থেকে অনুমতি না নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করাটা অন্যায়,,আপনি তো সেই পথের ই যাত্রী,,তবে এত ওভার কনফিডেন্স কেন আসছে মিস্টার চৌধুরী?

আবরার শান্ত ভাবে বললো,
— ওভার কনফিডেন্স নয় অফিসার,,এটা আমার বিশ্বাস,আস্থা এবং নিজের প্রতি ভরসা।

কথার এ পর্যায়ে আর চুপ থাকতে পারলোনা তনয়া,,,চোখের নোনাপানি গুলো ধড়ফড় করে মুছে এগিয়ে এসে আবরারের সামনে দাড়ালো,,বললো,
— কিসের বিশ্বাস আবরার? আপনি বিশ্বাসের মানে জানেন? যে লোক তার স্ত্রীর ভরসা রাখতে পারেনা সে কিভাবে নিজের ওপর নিজের ভরসা হতে পারে??
আবরার বাকা ঠোঁটে হাসে,, তনয়ার দিকে তাকিয়ে বলে,
— বিশ্বাসের সঠিক ডেফিনিশন আমি জানলেও আপনি জানেন না,,,
তবে তনয়া আমি কিন্তু একটা ব্যাপার অন্তত বুঝতে পারছি,,,আপনি আর আপনার বাবা কি চাইছেন বা চেয়ে এসছেন।
তনয়া ভ্রু আকিয়ে বললো,
— কি জানেন আপনি? আর আপনি জানলেও এখন আমার কিই বা আসবে যাবে,সব তো খুইয়েই ফেলেছি,,যাকে এতোটা ভালোবেসে নিজের করে পেতে চেয়েছি সে আমার হলোনা,উল্টে আমারই সামনে অন্য একটা মেয়ে নিয়ে ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে, এর থেকে কঠোর শাস্তি অন্য কি হবে আবরার বলতে পারেন??
শেষের কথাগুলো বেশ চেঁচিয়ে বলে ডুকরে কেঁদে উঠলো তনয়া,,তনয়ার কান্নায় তোফায়েল এগিয়ে এসে মেয়ের মাথা বুকে চেপে ধরলো,, তনয়া বাবার বুকে লেপ্টে কাঁদতে থাকলো ক্রমাগত। তোফায়েল এবার আবরারের দিকে চোয়াল শক্ত করে বললো,
— আমার মেয়েটার জীবন টা নষ্ট করে কি পাচ্ছো তুমি আবিরার? কোন রং তামাশার খেলায় মাতাতে চাইছো নিজেকে?

আবরার ছোট্ট একটা দম নিয়ে বললো,
— রং তামাশা যেটা শেখার সেতো আপনাদের দুজনের থেকে প্রাপ্ত। এখন নিজেদের শিক্ষা নিজেরাই সহ্য করতে পারছেন না?

তোফায়েল বুঝতে না পেরে কৌতূহল নিয়ে তাকিয়ে থাকে,,,এদিকে আমিনুল প্রচন্ড বিরক্ত হয়ে বলে,
— আপনারা কি শুরু করছেন বলুন তো? নিজেদের মধ্যে তখন থেকে লড়াই করছেন,একে অন্যের গায়ে কাদা ছোড়াছুড়ি করছেন,,তাহলে পুলিশ কে ডাকার দরকার কি ছিলো??
আমিনুল এবার আবরারের দিকে তাকিয়ে প্রগাঢ় হয়ে বলে,
— মিস্টার আবরার আপনি কিন্তু আমার সময় নষ্ট করছেন।কথা না বাড়িয়ে আসুন,নাহলে হাত কড়া পরিয়ে নিয়ে যাবো আমি।
আবরার দৃঢ় গলায় বলে,
— আমিতো বললাম আপনি সেটা পারবেন না,,,আমাকে হাত কড়া পরানো আপনার সীমার বাইরে।
আমিনুল এবার রাগে দাঁত চিবিয়ে বলে,
— আপনি এখন আপনার পাওয়ার দেখাচ্ছেন আমায়?
আবিরার মুচকি হেসে বলে ওঠে,
— পাওয়ার দেখালে আজ এখানে দাঁড়িয়ে এতো কথা বলার অবস্থায় থাকতেন না আপনি.. সেটা আপনিও খুব ভালো করে জানেন।

আমিনুল চুপ করে যায়,,,তনয়া বাবার বুক থেকে মাথা তোলে,,চট করে ঝাঁঝালো গলায় বলে,
— ক্ষমতা দিয়ে সব করবেন ভেবেই এতোটা নিচে নামতে পারছেন তাইনা আবরার?
আবরার তনয়ার মুখের দিকে সরু চোখে তাকায়,,,তনয়ার অশ্রুসিক্ত চোখ দেখে মনে মনে আওড়ে ওঠে,
— আমি খুব ভালো করেই জানি তনয়া,আপনার উদ্দেশ্য আমাকে জেলে পাঠানো ছিলোনা,,,পুলিশ ডেকে আমাকে ভয় দেখিয়ে স্নিগ্ধাকে ডিভোর্স দেয়াতে চেয়েছিলেন তাইতো?? কিন্তু ওই যে বললাম ন্যাড়া বেল তলাতে এক বারই যায়,একই ভুল বারবার করবেনা এই আবরার ফাহাদ চৌধুরী।

আবরার কে চুপ দেখে সবাই বেশ সন্দেহীভাবে তাকিয়ে থাকে,,এতক্ষনে চুপচাপ দাড়িয়ে থাকা স্নিগ্ধা এবার দু কদম ফেলে এগিয়ে আসে আবিরারের দিকে,,ধীর শীতল,,মৃদূ গলায় বলে,

— আপনি কেন এত কথা বাড়াচ্ছেন,,আমিতো মেনে নিয়েছে আমার নিয়তি,,আপনিও মেনে নিন। আমাকে ডিভোর্স দিতে চাইলে আমার কোনও অভিযোগ থাকবেনা এখানে,,,যেটাতে আপনার ভালো হয় কিংবা সন্মান বাঁচবে আপনি দয়া করে সেটা করুন,,,এভাবে দুই নৌকাতে পা দিয়ে চলতে গেলে সত্যিই পানির মধ্যে তলিয়ে যেতে হয়,,, আর তাছাড়া আমিতো আপনার আর তনয়া আপুর সংসারে তৃতীয় ব্যাক্তি,,,তাই আমাকে ডিভোর্স দেয়াটাই যুক্তিযুক্ত হবে। আপনি…

স্নিগ্ধা কে পুরোটা শেষ করতে দিলোনা আবরার। একেবারে মাঝপথে ধমকে উঠলো ক্ষিপ্ত হয়ে,,,
— চুপ,,,আগেই বলেছি বেশি কথা না বলে চুপচাপ দাড়িয়ে থাকো,এতক্ষন ঠিক যেভাবে ছিলে। বড়দের মধ্যে পাকামো করতে তোমায় কেউ বলেনি বুঝলে?

আবরারের বাজখাই ধমকে কেপে উঠলো স্নিগ্ধা। ঘাবড়ে গিয়ে চোখ নামিয়ে নিলো মেঝের দিকে।
পাশ থেকে তোফায়েল ঠোঁট এলিয়ে বলে উঠলো,
— বাহ,,,এই মেয়ের তো বেশ বুদ্ধি দেখছি৷ এতক্ষনে একটা কাজের কথা বললো,,,এতে ওর ও ভালো আর তোমারো আবরার,,জেলে যাওয়ার অপমানের হাত থেকে দুজনেই বাঁচবে৷ দেখো এখন তোমরা দুজনেই যদি হাজত বাস করো সন্মান তো তোমার যাবে ওর নয়,কারণ ও তো একটা হা ভাতে ঘরের মেয়ে তাইনা?

কথাটায় আবরার তোফায়েল এর দিকে ঘাড় ফিরিয়ে শীতল গলায় উত্তর দিলো,
— ও কি বা কেমন সেসব আমি আপনার থেকে শুনবোনা আঙ্কেল।
তোফায়েল পুনরায় কিছু বলতে নিতে গেলে নিচ থেকে বাবার হাত চেপে ধরলো তনয়া,,,,থমকে গিয়ে চুপ করে রইলো তোফায়েল।
এবার আমিনুল ধৈর্য হারা হয়ে বললো,
— এসব কি হচ্ছে টা কি? মিস্টার আবরার,অনেক হয়েছে আপনার কৌতুক,আর নিতে পারছিনা। চলুন এবার।

আবরার শক্ত গলায় বললো,
— কোন অপরাধে,?
বিরক্তিতে আমিনুলের মুখ তিক্ততায় ভরে এলো,নাক মুখ কুঁচকে নিয়ে বললো,
— বারবার একি কথা শুনতে চাইছেন মিস্টার চৌধুরী?
আবরার একিভাবে বললো,
— অবশ্যই কোন অপরাধে আমাকে নিয়ে যাবেন সেটা শোনা আমার অধিকারের মধ্যে পরে।

উত্তরে আমিনুল তটস্থ গলায় বলে উঠলো,
— বেশ শেষ বারের মতো বলছি,,,প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ব্যাতীত দ্বিতীয় বিয়ে করার অপরাধে আপনাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে,,,আই থিংক বুঝে নিয়েছেন ভালো করে?

আবরার এবার ভ্রু নাঁচিয়ে বললো,
— কে আমার প্রথম স্ত্রী অফিসার,,,আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে,,আমার এক এবং এক মাত্র স্ত্রী স্নিগ্ধা,,

কথাটায় চমকে গিয়ে তাকায় স্নিগ্ধা,,,তনয়া অধীর চোখে একবার বাবার দিকে তাকায় আরেকবার আবরারের দিকে,,
আমিনুল ভ্রু কুঁচকে বলে,
— কি বলতে চাইছেন?
আবরার এবার কপালের বাম পাশে মৃদূ আঙুল বুলিয়ে বলে ওঠে
— ওই যে বললাম,,স্নিগ্ধা ছাড়া আমার আর কোনও স্ত্রী নেই।
পাশ থেকে তনয়া ব্যাস্ত গলায় উত্তর দেয়
— এখন কি বিয়েটাও অস্বীকার করতে চাইছেন?
আবরার মুচকি হেসে বলে ওঠে
— যেখানে বিয়েটা হয়ইনি.. সেখানে স্বীকার ই বা কেন করবো?

দেয়ালের চারদিক জুড়ে আবরারের এই একটা বাক্য বারবার প্রতিধ্বনিত হতে শুরু করে দেয়,,তনয়া বাকরুদ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে,,,আমিনুল তোফায়েল দুজনেই মুখ হা করে একে অন্যের দিকে তাকায়।স্নিগ্ধা ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকে আবরারের মুখের দিকে।
আমিনুল কয়েক দফায় নিজেকে সামলে বলে ওঠে,
— এর মানে?
আবরার শান্ত গলায় জবাব দেয়,
— মানে আমার আর তনয়ার বিয়েটা আদৌ হয়নি।

কথাটা শুনতেই দু কদম পিছিয়ে যায় তনয়া,,চোখের লবনাক্ত পানি গুলো এখন আরো বেশি বেগ নিয়ে ঝরতে শুরু করে,,
তোফায়েল ক্রুদ্ধ গলায় বলে,
— বিয়ে টা হয়নি মানে কি? নাটক করছো তুমি হ্যা নাটক?? খেলনা পেয়েছো আমার মেয়েকে? আমার সামনে তোমার বাবার সামনে,,, তোমাদের পারিবারিক উকিল বিয়ে পরিয়েছেন তোমাদের,তাহলে এখন এসব ভাওতাবাজির মানে কি আবরার?

আবরার জবাবে মুচকি হেসে বলে,
— উত্তর তো আপনার কথাতেই আছে আঙ্কেল,,আমাদের পারিবারিক উকিল বিয়েটা পরিয়েছিলেন,ঠিক বিয়ে পরান নি,,উনি যাস্ট বিয়ের পেপার্স দেখিয়ে আমাকে আর তনয়াকে সাইন করতে বলেছিনে তাইনা? কিন্তু সে সব পেপার্স ই নকল ছিলো,,,ইলিগ্যাল ছিলো,,, আর সত্যি এটাই ওসব সোহরাব কাকা আমার বুদ্ধিতেই করেছিলেন।

স্নিগ্ধা তনয়া দুজনেই হতভম্ব নিষ্পলক চোখে চেয়ে থাকে আবরারের মুখের দিকে,আবরার কে এখন ভীষণ অধম মনে হতে শুরু করে স্নিগ্ধার।তনয়ার কান্না,চোখের জল সব তো এই লোকটার জন্যেই ঝরছে,,,কি অদ্ভূত নিয়ম প্রকৃতির,,যে মেয়ে সংসার করতে মরিয়া তাকে এভাবে ঠকালো,,আর সংসার সামলানোর নূন্যতম ইচ্ছে তার মধ্যে না থাকতেও তাকে আটকে রাখছে আবরার। কেন এরকম হয়,,সব সময় মানুষ যা চায় কেন তার উল্টো হয়,,,?

তনয়া আবরারের দিকে তাকিয়ে ফিচেল গলায় বললো,
— আপনি মিথ্যে বলছেন তাইনা আবরার? আমি জানি আপনি এখন এসব বানিয়ে বানিয়ে বলছেন,,,

আবরার শান্ত গলায় বললো,
— আমি মিথ্যে বলিনি। যা শুনেছেন তার সব টাই সত্যি।
কথাটায় হতাশ চোখে তাকিয়ে কেঁদে ওঠে তনয়া।

তোফায়েল হতবাক হওয়ার পরিমান সামলে ধীর পায়ে আমিনুলের কাছে গিয়ে দাড়ায় এই সুযোগে,,,ফিসফিস গলায় বলে
— আমার মনে হচ্ছে এটা ওর বানানো কোনও কারসাজি,পুলিশের হাত থেকে বাঁচার জন্যে বলছে এসব।
আমিনুল আবরারের দিকে চোখ রেখে মুখ এগোয় তোফায়েলের কানের কাছে,,বলে ওঠে,
— স্যার আমার কিন্তু সেসব মনে হচ্ছেনা,,,পুলিশের সামনে হাওয়ায় ওড়ানো কথা কেউ বলেনা,,,কারণ আমরা তো তদন্ত করবোই সেটাতো উনিও জানেন।তারপরেও আপনার সন্দেহ হলে আমি কথা বলছি দাড়ান।

তোফায়েল চিন্তিত মুখ নিয়ে সোজা হয়ে দাড়ায়,,,পাশ থেকে আমিনুল গলা বাড়িয়ে বলে ওঠে,,
— কি প্রমান আছে মিস্টার চৌধুরী? আপনাদের বিয়েটা যে হয়নি?

আবরার চোখ সরু করে বলে,
— প্রমান আপনারা সোহরাব আঙ্কেলের চেম্বারে গেলেই পেয়ে যাবেন।
আমিতো পেপার্স হাতে নিয়ে ঘুরিনা তাইনা অফিসার। তদন্ত করা আপনাদের কাজ,আপনারাই করুন বরং।

আমিনুল তোফায়েলের দিকে তাকায়,,,চোখ ইশারা করে আস্বস্ত হতে বোঝায়। এরপর তাকায় তনয়ার দিকে,,
— আচ্ছা তনয়া চৌধুরী আপনাদের ম্যারেজ সার্টিফিকেট দেয়া হয়নি?
কান্না ভেজা মুখ নিয়ে দুদিকে মাথা নাড়ে তনয়া,,যার অর্থ নাহ।পরক্ষনে বলে ওঠে,
— আসলে আমিই চাইনি,,আবরার ও চায়নি। সোহরাব আঙ্কেল বলেছিলেন সময় এলে উনিই পাঠিয়ে দেবেন।
এ পর্যায়ে আবরার চট করে উত্তর দেয়,,
— সেটাও আমার কথায় বলেছিলেন উনি।
তনয়া অবাক হয়,,পাশাপাশি সবাই।কিন্তু মুখে কেউ কোনও শব্দ না করে চুপচাপ দাড়িয়ে থাকে নির্বাক শ্রোতার মত।

আমিনুল তাকায় আবরারের দিকে,,বলে
— বেশ ঠিক আছে,,,আমরা খোঁজ লাগাচ্ছি,তবে আপনার কথা প্রমান হলেই যে আপনি মুক্ত হবেন তাও কিন্তু নয়,,,মিস্টার চৌধুরী।

আবরার ভ্রু নাঁচিয়ে বলে ওঠে,
— মানে?
— মানে একটা মেয়েকে মিথ্যে বিয়ে করে ঠকানোর অপরাধেও আপনাকে আমি গ্রেফতার করতে পারি।

আবরার মুচকি হেসে বলে,
— আমি অপেক্ষা করবো,এখন আপনারা আসুন।

তোফায়েল আর তনয়াকে একবার দেখে নিয়ে,
অগত্যা উপায় না পেয়ে বাড়ির সদর দরজা দিয়ে বেরিয়ে পরে আমিনুল আর বাকি দুজন কন্সটেবল।
আবরার সেদিক থেকে চোখ ফিরিয়ে তনয়ার দিকে এগোয়,,
তনয়ার সামনে দাঁড়িয়ে প্রগাঢ় আওয়াজে বলে,
— আমি এজন্যেই বারবার বলতাম তনয়া আমার জীবনের কোথাও আপনি নেই।

তনয়া আহত চোখে তাকায়,,,ফিচেল গলায় বলে,
— আমার অপরাধ কি ছিলো আবরার? আমার ভালোবাসায় তো কোনও খাদ ছিলোনা।
আবরার শীতল গলায় বলে ওঠে,
— আপনার ভালোবাসার পন্থাতে খাঁদ ছিলো তনয়া।

তনয়া কিছু না বলে চুপচাপ তাকিয়ে থাকে,,,তোফায়েল অধৈর্য হয়ে গিয়েই আবরারের কাধের এক পাশে ধাক্কা মারে,,দু কদম পিছিয়ে যায় আবরার,,স্নিগ্ধা ভয়ে মিইয়ে যায় দেয়ালের সাথে। তনয়া ভড়কে গিয়ে বাবার দিকে তাকায়,,
তোফায়েল আগুন চোখে আবরারের দিকে তাকিয়ে বলে,
— তুই আমার মেয়েকে ঠকিয়েছিস আবরার,,,কি ভাবছিস তুই বেঁচে যাবি??
আবরার শার্টের এলোমেলো অংশ ঠিক করতে করতে জবাব দেয়,,
— সেসব আপনি ভাবুন যে আপনি বাঁচবেন কিনা.??
তোফায়েল ভ্রু বাকিয়ে বলে — মানে? কি বলতে চাস?
আবরার এগিয়ে আসে তোফায়েলের সামনে,, ধীর গলায় বলে,
— আমাকে মিথ্যে রেপড কেসে ফাসানোর কথা এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলেন তোফায়েল পাঠান?

চলবে।

আচ্ছা আপনারা এত অধৈর্য কেন? আমিতো বললাম ধৈর্য নিয়ে পড়তে থাকুন,,,নয় পার্ট পড়েই সবাই স্বামী স্ত্রীর হক আদায় নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পরছেন।গল্প কে গল্পের মত নিন। সিনেম্যাটিক চাচ্ছেন আবার বাস্তবতাও খুজছেন একের ভেতর নয় খোজার মত হয়ে যাচ্ছেনা ব্যাপারটা?
এরকম হলে যে লিখে তাদের প্লট সাজাতেও সমস্যায় পড়তে হয়। আগে দেখুন কি হয়? তারপর এই না মন্তব্য।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here