অসম্ভবেও আমার তুমি নুসরাত সুলতানা সেজুথি পর্ব–১৫

0
101

#অসম্ভবেও আমার তুমি
নুসরাত সুলতানা সেজুথি
পর্ব–১৫

তনয়া আপু যদি কখনও ফিরে আসে?? কি করবেন আপনি..??

স্নিগ্ধার প্রশ্নে ল্যাবটবের স্ক্রিন থেকে মুখ তুলে তাকালো আবরার।ভ্রু কুঁচকে বলল,
— মানে..??

স্নিগ্ধা তাড়াহুড়ো করে বসলো আবরারের পাশে,,,বলল,,
— আমার না কেমন কেমন লাগছে…! সেদিন তনয়া আপুর বাবা আর উনি দুজনেই আপনাকে কিভাবে শাসিয়ে গেলেন,, অথচ তারপর আর কোনও সাড়াশব্দই নেই…! এরকম কেন হলো?? আমিতো ভেবেছিলাম ওনারা কিছু একটা ঝামেলা করবে।

আবরার সরু চোখে তাকিয়ে বলল,
— তুমি চাও ওরা ঝামেলা করুক..??

স্নিগ্ধা চোখ বড় করে বলল,

— এ বাবা না না,তা নয়! আমি আসলে বলছিলাম যে ওনাদের এত চুপচাপ হয়ে যাওয়ার মানে কি? ওনাদের সাথে যা হয়েছে সেটা সত্যিই কি ওনারা মেনে নিয়েছেন,, নাকি এমন শান্ত পরিবেশ কোনও ঝড়ের পূর্বাভাস?

আবরার চোখ ফিরিয়ে নিয়ে ল্যাবটবের দিকে তাকালো। দৃঢ় গলায় বলল,
— ওসব নিয়ে ভেবোনা। ওদের প্রত্যেকটা পদক্ষেপে আমার নজর রয়েছে,,একটা চাল ও আগে বাড়াতে পারবেনা।

একটু স্বস্তিবোধ হলো স্নিগ্ধার। তবে পরক্ষনেই কাচুমাচু মুখে বলল,
— একটা কথা বলবো ???

আবরার না তাকিয়েই বলল,
— বলো।

স্নিগ্ধা নরম গলায় বলে ওঠে,,

— আপনার সাথে তনয়া আপুরই যায়৷ আমার সাথে নয়। আমি কোনও দিক থেকেই আপনার সঙ্গে মানানসই নই,,,সত্যি বলতে তনয়া আপু যেভাবে আপনাকে ভালোবাসে তাতে ওনাকে মেনে নিলেই আপনি ভালো থাকতেন।হ্যা হয়তো উনি মিথ্যে বলেছে,, আপনার নামে অপবাদ দিয়েছে,,কিন্তু আপনিই তো বলেন,, ভালোবাসায় কোনও অপরাধ নেই। এখানে সব সম্ভব সব সত্যি।তাহলে..??

এটুকু বলে থামলো স্নিগ্ধা।আবরার কপাল কুঁচকে তাকিয়ে রইলো খানিকক্ষন,,ল্যাবটবের স্ক্রিন ঢেকে দিয়ে উঠে দাড়ালো। স্নিগ্ধাও জিজ্ঞাসা নিয়ে দাঁড়িয়ে পরলো,,বলল..

— আপনি কি রাগ করলেন..??

আবরার ঠোঁট কামড়ে কিছু একটা ভেবে বলল,
— তুমি কি চাও?? আমি এখন তনয়াকে এ বাড়িতে নিয়ে আসি.???তারপর তুমি আবার সতীন নিয়ে ঘর করো।

স্নিগ্ধা মাথা নিচু করে নিয়ে বলল,,
— আমি সেটা বলিনি,,আমিতো শুধু বলতে চাইছিলাম,,,

এটুকু বলতেই আবরার স্নিগ্ধার কোমড় জড়িয়ে নিজের কাছে টেনে আনলো,,,প্রথম দফায় হকচকালো স্নিগ্ধা। কয়েক মুহুর্তে নিজেকে সামলে নিয়ে গোল চোখে আবরারের দিকে তাকালো। আবরার মৃদূ হেসে বলল,

— তুমি চাইলেও কি? আর না চাইলেও কি..?? তনয়া তো এ বাড়িতে আর কোনও দিনও আসবেনা পরি। এই আবরারের বাড়ির সাথে সাথে তার মনের মধ্যেও শুধুমাত্র একজনের রাজত্ব,আর সেটা হলো স্নিগ্ধা,,,আবরার,,চৌধুরীর।
আর রইল বাকি তনয়ার অপকর্মের কথা?? ভালোবাসা ভালো কিন্তু যখন সেই ভালোবাসা এক তরফা হয় তখন তাকে দমানো উচিত,,,অন্তত তাকে হাসিল করার জন্যে কোনও অসৎ উপায় অবলম্বন করা উচিত নয়। তবে সেই ভালোবাসার কোনও সন্মান থাকেনা।

স্নিগ্ধা একভাবে আবরারের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে দেখে আবরার ভ্রু নাঁচিয়ে বলল,

— হ্যা এবার নিশ্চয়ই তুমি ভাবছো যে আমার ভালোবাসাও তো এক তরফা ছিল?? এরকম টা তুমি ভাবলেও আমি ভাবছিনা,,কারণ আমি তোমাকে জোর করে বিয়ে করিনি,,তুমি রাজি ছিলে।আর দ্বিতীয়ত তনয়ার কথা তোমাকে জানাইনি কারন ওতো আমার লাইফে এক্সিস্টই করেনা….

এটুকু বলে থামতেই স্নিগ্ধা তাড়াহুড়ো করে বলল,
—- বুঝতে পেরেছি বুঝতে পেরেছি।এবার আমাকে ছাড়ুন।

কথাটায় আবরার উল্টে আরো চেপে ধরলো স্নিগ্ধাকে।আবরারের বুকের সাথে স্নিগ্ধা লেপ্টে এলো,,আবরার কিছু সময় চোখ ছোট করে তাকিয়ে থেকে
ফিসফিস করে বলল,,
— মে আই কিস অন ইওর লিপ্স..??

স্নিগ্ধা হতভম্ব হয়ে তাকালো,,চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম। কাপা গলায় বলল,,
— ইয়ে মানে,,…অই…

স্নিগ্ধার মুখের ভঙ্গিমায় আবরার মুচকি হাসলো,বলল
— চলো ছাদে যাই।

স্নিগ্ধাকে ছেড়ে দিয়ে সামনে হাটা ধরলো আবরার,,পেছনে বোকার মত খানিকক্ষন তাকিয়ে রইল স্নিগ্ধা।
“” ব্যাপারটা কি ঘটলো?? সেতো আর মানা করেনি…যে এভাবে ইগনোর করতে হবে,,এমনিতেতো হুট হাট চুমু খায়,,,এখন এক্কেবারে অনুমতি নিতে এলো?? যত্তসব ঢং
বিরক্তি তে মুখে মৃদূ ভেঙচি কেটে পা বাড়িয়ে আবরারের পিছু ধরলো স্নিগ্ধা।

,,
,,
,,

ছাদে অনেক রকম ফুলের গাছ লাগানো। আর তার পাশেই গোল করে সাদা রংয়ের চেয়ার পাতানো টেবিলের চারপাশ ঘিরে।আবরার এসেই তার একটা টেনে বসে পরলো। স্নিগ্ধা নরম পায়ে এসে দাড়াতেই চোখ ইশারা করে বলল,
— বোসো।

বাধ্য মেয়ের মত বসলো স্নিগ্ধা। গায়ের চাঁদর টা একটু ঠিকঠাক করে বলল,,
— ছাদে অনেক বাতাস। ভীষণ শীত শীত লাগছে,,,

কথাটায় আবরার স্নিগ্ধার দিকে ঝুঁকে গেলো খানিকটা। দুষ্টু হেসে বলল,
— আমার কোলে এসে বসতে পারো,,ফাকাই আছে।

স্নিগ্ধা চোখ মুখ কুঁচকে তাকিয়ে বলল,
— আপনি দিন দিন খুব বাজে হয়ে যাচ্ছেন।

আবরার অবাক হওয়ার ভান করে বলল,
—- তাই নাকি?? আমি কি আগে ভালো ছিলাম?? কিন্তু আমিতো বরাবর তোমার মুখে শুনে এসেছি আমি বাজে। তবে কি আগের কথা গুলো মিথ্যে ছিলো পরি..?

স্নিগ্ধা ঠোঁট দুটো উল্টে নিলো,বলল,
— আপনি পুরোনো কথা নিয়ে খোঁচাচ্ছেন আমাকে?? আমিতো ক্ষমা চেয়েছি তাইনা???

আবরার সোজা হয়ে হেলান দিলো চেয়ারের সাথে,হেসে বলল,
— একটু আগে যে আমাকে খোঁচালে তার বেলা..??

স্নিগ্ধা বিস্ময় নিয়ে উত্তর দিলো,
— আমি আবার কখন কি বলেছি ?

আবরার ভ্রু নাঁচিয়ে নাঁচিয়ে বলে উঠলো,
— কেন একটু আগে তনয়ার কথা বললেনা?? বলছিলে না ওর দোষ নেই,,ও যা করেছে সেসব ঠিক,, ,, এই,, সেই আরো কত কি..!!

স্নিগ্ধা উদ্বেগ নিয়ে বলল,,

— ওটা খোঁচানো হলো?? আমি তো এমনি এমনি বলেছি… আপনিতো মহা শয়তান,,কি থেকে কি বানিয়ে ফেললেন..??

আবরার শব্দ করে হাসলো,,বলল,
— তোমাকে গাল ফোলালে কত্ত কিউট লাগে জানো তুমি?? ইচ্ছে হয় গাল টিপে দিতে,

আবরারের কথায় স্নিগ্ধা লজ্জ্বায় মাথা নামিয়ে নিলো,,গোলাপি আভা গালে ফুটে উঠলো স্পষ্ট

আবরার আবারো ঝুঁকে এলো,,,, আস্তে করে বলল,
— লজ্জ্বা পেয়েছো পরি..??

মাথা তুললোনা স্নিগ্ধা। আবরার চঞ্চল গলায় বলল,
—ইশ! জানো তোমার এই লজ্জ্বা মাখা মুখ দেখলে আমার আরো অনেক কিছু ইচ্ছে হয়,বলবো সেসব..??

লজ্জ্বায় এবার গায়ের পশম দাঁড়িয়ে পরে স্নিগ্ধার।
— ধ্যাত!

লাজুক হেসে এটুকু বলে গা কাপাকাপি ঠেকাতে চেয়ার ছেড়ে ধড় ফড় করে উঠে দাড়ায় স্নিগ্ধা। আবরারের চোখের সামনে থেকে দৌড়ে পালাতে উদ্যত হয় । তার আগেই পেছন থেকে এক হাত টেনে ধরলো আবরার।

স্নিগ্ধা ফিরে তাকালোনা। অন্য রকম মিশ্র অনুভূতি খেলে যাচ্ছে তার শরীর জুড়ে। আবরার হাত ধরে রেখেই উঠে এসে স্নিগ্ধাকে পেছন থেকে বাহু বন্দি করে নিলো,,

স্পর্শ পেয়ে দু চোখ বন্ধ করে নিলো স্নিগ্ধা।ঠান্ডা হাতে স্নিগ্ধার কাধের চুল গুলো সরিয়ে আবরার থুতনী ঠেকালো সেখানে,,,
কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল,,

— আকাশের দিকে দেখো পরি..

স্নিগ্ধা চোখে মেলে তাকালো,,সামনাসামনি দূরের আকাশ পথে চোখ নিবদ্ধ করলো। শরীরে অদ্ভূত শিহরন হচ্ছে তার। আবরার স্মিগ্ধাকে নিজের সাথে আরেকটু জড়িয়ে নিয়ে গুনগুন গলায় গেয়ে উঠলো,,

“”” রাতের সব তারা আছে দিনের গভীরে,,
বুকের মাঝে মন যেখানে রাখবো তোকে সেখানে,,
তুই কি আমার হবিরে…

“” মন বাড়িয়ে আছি দাঁড়িয়ে,,, তোর হৃদয়ে গেছি হারিয়ে,
তুই দেখে নে,, সে ছবি রে,,
তুই কি আমার হবি রে…..””!!

এটুকু বলে থামলো আবরার,,,,স্নিগ্ধাকে ঘুরিয়ে নিজের দিকে ফেরালো,,,স্নিগ্ধা কাপা কাপা চোখে গভীর দৃষ্টি নিক্ষেপ করে আছে,,,আবরার আলতো চুমু খেলো স্নিগ্ধার দুই চোখের পাতায়। স্নিগ্ধার মুখটাকে দুহাতের আজোলে নিয়ে পুনরায় গেয়ে উঠলো,

“”””আমার পথ টা চলে যায় তোরই দিকে
চোখের কলম শত কবিতা লিখে”””””

“”””এই হৃদয়ের ভালোবাসা দিয়ে
সেই কবিতা শুধু তোকে নিয়ে………!

“”” চোখ ভরে তুই,, দেখ পরে তুই,
প্রেম কবিতায় শুধু তোকে ছুই।

তুই চিনে নে সে কবিরে,,,,,,,
তুই কি আমার হবিরে……..!!

আবরারের নিঃশ্বাস ক্রমশ বাড়ি খাচ্ছে স্নিগ্ধার চোখে মুখে,, শীতল স্রোত বইছে সমগ্র রন্ধ্রে রন্ধ্রে,, স্নিগ্ধা নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলোনা,,,নিজে থেকে এই প্রথমবার আবরারের বুকে মাথা ঠেকালো,,,নিজের সাথে ওকে জড়িয়ে নিলো শক্ত করে,,
আবেশে চোখ বন্ধ করে গেয়ে উঠলো,,

হৃদয় ক্যানভাসে মন রঙ মেখে মেখে,,,,,,
“”” তোরই মুখ ছবি যাই নিরবে এঁকে

সব ভালোলাগা মনে ছুয়েছে এসে,,,,,,,,,,,সুখ ছোঁয়াতে আমি গিয়েছি ভেসে,,,,

“”” মন বাড়িয়ে আছি দাঁড়িয়ে তোর হৃদয়ে গেছি হারিয়ে
তুই দেখে নে সে ছবিরে…!!
তুই কি আমার হবিরে…??

স্নিগ্ধা থামতেই আবরার বলে উঠলো, — আমিতো কবেই তোমার হয়ে আছি পরি…!!

চট করে চোখ মেললো স্নিগ্ধা।হুশ ফিরতেই বুঝতে পারলো এতক্ষন লজ্জ্বা সরমের মাথা খেয়ে সে কি করে বসেছে,, মৃদূ জ্বিভ কাটলো।
লজ্জ্বায় আবরারের বুক থেকে মাথা তোলার মত সাহস করে উঠতে পারলোনা।

ব্যাপারটা আবরার বুঝতে পেরে মুচকি হেসে স্নিগ্ধার মাথা তুললো,,,স্নিগ্ধা এদিক ওদিকে চোখ ঘুরিয়ে লজ্জ্বা আড়াল করছে দেখে হাসি ঠোঁটের কোনায় গাঢ় হয়ে এলো আবরারের।বলল,,

— ভালো যখন বেসেইছো পরি, বলেই দাওনা আজ।

বেড়ে ওঠা হৃদস্পন্দন নিয়ে,,,মুখ ফুটে কিছু বলে উঠতে পারলোনা স্নিগ্ধা। কুণ্ঠাবোধ থেকে নিজেকে বাঁচাতে এক ছুট লাগালো সিড়ির দিকে। সিড়ির ধাপে পা বাড়ানোর আগে পেছন ফিরে আবরারের দিকে একবার ফিরে তাকালো,,
পুনরায় মুচকি হেসে দ্রুত পায়ে নেমে পরলো।

সেদিকে ভ্রু কুঁচকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকেই দাঁত বার করে হেসে উঠলো আবরার,,,, মাথার পিছন দিকে চুল্কাতে চুল্কাতে রেলিংয়ের সাথে ঠেস দিয়ে দাড়ালো। ভীষণ ভালো লাগা,,,প্রশান্তিতে ভেতর টা ছেয়ে যাচ্ছে,,,চিৎকার করে করে সবাইকে বলতে ইচ্ছে করছে,,
“” আমার পরি আমার হয়েছে,,ভালোবেসেছে আমায়।
,,
,,
,,

— ওরা এখনও ছাদে কি করছে মকবুল..??

মকবুল প্রশ্নের উত্তরে ডান কান থেকে ফোন সরিয়ে বাম কানে ঠেকিয়ে ফিসফিস করে বলল,

— সেসব তো জানিনা ম্যাডাম,,,উঁকিও দিতে পারবোনা ধরা পরে যাবো। তবে গানের শব্দ পেয়েছি একটু আগে।হয়তো ওনারাই গাইছিলো,,

ওপাশ থেকে তেঁতে উঠলো তনয়া। ক্রোধ নিয়ে বলল,
— প্রেম আজকাল একটু বেশিই উথলে উঠছে মনে হচ্ছে,,,
মকবুল
তোমাকে না বলেছি ওদের প্রত্যেকটা ডিটেইলস আমাকে জানাবে,, ওরা টানা দু ঘন্টা ধরে ছাদে আছে আর তুমি এখন আমায় জানালে?

মকবুল আফসোস করে বলল,
— ভুল হয়ে গিয়েছে ম্যাডাম।অনেক রাত হয়েছে তাই চোখ টা একটু লেগে গিয়েছিলো।

— হুম।
শোনো,,,কাল আবরারের বাবার জন্মদিন,, আশা করি ও বাইরে এবারো একাই বের হবে,,আর সেটাই তোমার জন্যে সুযোগ হবে।বুঝতে পেরেছো?.

মকবুল মাথা নেড়ে বলল,
— জ্বি ম্যাডাম।কিন্তু ম্যাডাম! আমি আবার ফেসে যাবো নাতো..??

তনয়া প্রগাঢ় গলায় জবাব দিলো,

— সেসব তোমার পার্ফমেন্স এর ওপর নির্ভর করবে,,,কাঁচা কাজ করলে ধরা পরতেও পারো।কিন্তু যদি সামান্য বুদ্ধি খাটিয়ে কাজ টা করতেই পারো তবে কিন্তু কেউ টিকিও ছুঁতে পারবেনা তোমার।

মকবুল ভয়ে ভয়ে বলল,
— ম্যাডাম পাকা কাজ কিভাবে হবে? আমিকি সিরিয়াল কিলার নাকি?? কোথায় আপনি বলবেন যে আমি ধরা পরলেও আপনি আমাকে বাঁচিয়ে নেবেন তা না বলে আমার ঘাড়ে দায়িত্ব চাপাচ্ছেন?? এরকম হলে কিন্তু আমি এসব করবোনা,,তাও এত বড় ঝুঁকি নিয়ে,,, বাড়িতে আমার ছেলে মেয়ে আছে ম্যাডাম,

তনয়া ক্ষিপ্ত হয়ে বলল,
— এই যে,,, কাজ টা তুমি এমনি এমনি করে দিচ্ছোনা। তার বিনিময়ে মোটা অঙ্কের টাকা দিচ্ছি আমি,,,আর শোনো সিরিয়াল কিলার রা অন্তত তোমার থেকে হাজার গুন ভালো হয়। তারা অন্তত পেছন থেকে ছুরি মারেনা।

( একটু থেমে)
সে যাই হোক,,বাই এনি চান্স পুলিশের কাছে ধরা পরলেও ওসব নিয়ে ভাববেনা,, আমি বা বাবা কেউ একজন তোমাকে ঠিক ছাড়িয়ে নিতে পারবো।তবে আমাদের নাম উচ্চারণ না করলে তবেই।ওকে??

মকবুল সায় দিয়ে বলল,
— ঠিক আছে ম্যাডাম।কাল তাহলে স্যার বের হলেই আমি আমার কাজ সেড়ে ফেলবো। তবে এমন কিছু করবো যাতে সাপতো মরবেই আর আমিও ধরা পরবোনা..

তনয়া বাহবা দিয়ে বলল,,
— সাব্বাশ। তাহলে আজ সারা রাত ধরে ভাবতে থাকো কি করবে?? আর কিভাবে করবে?? তবে একটা কথা বলে রাখছি,,, যদি আমার চাওয়া মত কাজ তুমি করতে পারো মকবুল,,যা টাকা দেবো তোমায়,,গুনেও শেষ করতে পারবেনা।

লোভে চকচক করে উঠলো মকবুলের চোখমুখ,তাড়াহুড়ো করে বলল,
— বেশ ঠিক আছে ম্যাডাম। তাই হবে।

লাইন কাটতেই কান থেকে ফোন নামালো মকবুল।সিড়িতে কারো পায়ের শব্দ পেতেই পিলারের আড়ালে লুকিয়ে পরলো,,, হালকা ঘাড় কাত করে উঁকি দিলো সেদিকে,,,স্নিগ্ধাকে নামতে দেখে আবারো সোজা হয়ে লেপ্টে গেলো দেয়ালের সাথে,,

স্নিগ্ধা হাসিহাসি মুখে এক ছুটে ঘরের দিকে দৌড়ে গেলে বেরিয়ে এলো মকবুল, সেদিকে তাকিয়ে বাকা হেসে বলল,
— ,জীবনের শেষ হাসিটা হেসে নাও স্নিগ্ধা ম্যাডাম। এরপর তোমার সাথে কি ঘটবে তুমি কল্পনাও করতে পারছোনা।

চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here